তার শহরের প্রেম পর্ব ৪ || konika Islam sanju

তার শহরের প্রেম পর্ব ৪
konika Islam sanju

প্রচুর আচার খেতে ইচ্ছে করছে আয়াতের হস
পিটালে ৭দিন থেকে আর সেই খাবার খেয়ে মুখের টেষ্ট একদম নষ্ট হয়েগেছে।। তাই কিছু না ভেবেই কিচেনে চলে আসে,,, জারটা বেশ উপরে রাখা,, চেয়ার দিয়েও জারটা নাগাল পেলো না আয়াত,, তাও সে চেষ্টা করতে থাকে। এক হাতে ব্যাথাটা এখনো অনেক । তখনই আয়ান কিচেনে আসে পানি নিতে,, আর দেখে আয়াত আচারের জারটার জন্য একরকম যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে,,, আয়ান বলে

—– পোনে চার ফিটের ডোরেমন দের কাম্য নয় এই জার নামানো সাইড দে আমি নামিয়ে দিচ্ছি।
আগের আয়াত হলে ঠাস ঠাস কথা শুনিয়ে দিত,, কিন্ত না সে আর এখন আর আয়ানের সাথে ঝামেলা করতে চায় না। সে নিজের চেষ্টা চলাতে থাকে,, আয়ান গিয়ে সোজা কোলে তুলে নেয় আয়াতকে,,, সময়িক ব্যাপারে আয়াত অবাক,,, এটা কি আয়ান নাকি অন্য কেউ,, আয়ান,, আয়াত কে চেয়ারে বসিয়ে জারটা ওর হাতে দিয়ে চলে যায়। আর আয়াত এখনো জার হাতে বসে আছে।।। তখনই কিচেনে আসে আরিয়ান। আয়াতকে এভাবে আচারের জার হাতে নিয়ে বসে থাকতে দেখে বলে

—- কি হয়েছে আয়ু?? আয়াতের ঘোর কাটলে বলে
—- না না কিছু হয়নি তেমন,, আসলে ঐ আর কি,, আচার খাবো ভাবছিলাম জার ওপেন হচ্ছিল না,,,,,,,,আরিয়ান মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—-আমার কাছে দাও,, আমারও ঝাল ঝাল কিছু খেতে ইচ্ছে করছে,,, ।। আয়াত খুশি হয়ে বলে
—- চল মুভি দেখি আর আচার খাই,,ঘুম আসছে না । আয়াতের কথায় আরিয়ানও রাজি হয়ে যায়। তারপর ডানিং টেবিলে বসে পরে সামনে আরিয়ানে ফোন দুজন একসাথে বসে বসে আচার খাচ্ছে আর মুভি দেখছে। রাত তখন ১২/৪০ নাগাত। আয়ান আবার আসে কিচেনে কারণ সে পানি না নিয়েই চলে গিয়েছিল,,,,, পরে ফিরে এসে আয়াত আর আরিয়ানকে দেখে থমকে যায়,,,, কেন জানি সহ্য হচ্ছে না। দুজনেই বেবি বস মুভি দেখছে আর হাসছে। সেটা দেখে আয়ান তাদের সামনে গিয়ে বলে

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—- কি হচ্ছে এখানে?? আয়ানকে দেখা মাত্র আয়াত আরিয়ানকে বলে
—- আরিয়ান তুমি থাকো আমি যাই,,, ঘুমাবো। কালকে থেকে তো কলেজ যাবো ওয়েট কর কেমন? আয়াত এই বলে চলে যায়,,, আয়ান এখনো সেখানে দাড়িয়ে আছে আর আয়াতের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। সত্যি মেয়েটাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে নয়তো কেউ এতটা ইগনোর করতে পারে না। ঐ দিনের পর থেকে আয়াত আয়ানের সাথে কথা বলে না,, ইভেন বাসার সবাইও। আরিয়ানও আয়ানকে বলে
— গুড নাইট বিগ-বি।

সেদিন আয়াত বেচে যায়,,,সময় মতো হসপিটালে নেওয়াতে। আয়াত চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে উপরে সাদা ছাঁদ,,, হাত ব্যাথায় মুভ করতে পারছিল না,,,পানি তেষ্টায় গলা শুকিয়ে গেছে,,, ধীরে ধীরে উঠে বসতে যাবে,, তখনই পাশে তাকিয়ে দেখে আয়ানের মা,, আর চাচাি,,, আরবি আর আলভিরা,, সোফায় ঘুমানো। ইশশ শুধু শুধু তার জন্য অন্যরা কষ্ট পাচ্ছে,, । তখনই আলভিরার ঘুম ভেঙে যায় দেখে আয়াত উঠে বসছে তাড়াতাড়ি করে গিয়ে বলে

—- আপু কি হয়েছে? কি লাগবে তোমার,, আয়াত খুব কষ্টে বলে
— পানি খাবো।। তাদের কথায় আয়ানের মা জেগে উঠে
,,, আয়াতের সেন্স ফিরতে দেখে আয়ানের মা আয়াতের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
—- কিরে এখন কেমন লাগছে।জানিস কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম,, এমনটা কেউ করে? তখনই আরবি এসে একটা চড় বসিয়ে দেয় আয়াতের গালে।। আয়ানের চাচি বলে

— কি শুরু করলি!! আরবি বলে
— বড় মা তুমি চুপ কর,,, কি মনে করে নিজেকে!! ওর যদি কিছু হয়ে যেত!!! কার জন্য এইসব করছে!! যে তাকে চায় না। নিজেকে সট্রং করতে হবে। আমার দিকটা দেখে না তিন বছরের সংসার ত্যাগ করেছি কই আমি ভেঙে পরেছি!! বেশ তো আছি,,,। আয়াত কান্না করছে। আরবি বলে

— এখন থেকে আয়াত আমাদের সাথে থাকবে,, আর এই ছয় মাসে যদি আয়ান ভালো না হয় তাহলে ওদের ডিভোর্স হওয়াটাই উত্তম,, কারণ আয়াত বেটার কাউকে ডিসার্ভ করে তোমার ছেলের থেকে। আর সুস্থ হলে কলেজ যাবি,, আরিয়ান ভার্সিটির সাথেই কলেজ সেখানে যাবি তুই আর আলভিরা । আর এর উপর আমি কোনো কথা চাই না।
বলেই কেবিন রুম থেকে চলে যায়,,,,,, তারপর একে একে সবাই আয়াতকে বুঝায়। পরে সবাইকে আয়াত বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে,,শুধু আরিয়ান আছে, কারণ সবাই রাত জাগা,,, আলভিরাকে দিয়ে নিজের ফোনটা আনিয়েছে। কয়টা বাজে দেখতে ফোনটা হাতে নিতেই ফোন স্কিনে ভেসে ওঠে তার আর আয়ানের রিসিপশনের একটা পিক,,, আয়ান কেমন একটা বার দেখতে আসলো না,, কি করে হতে পারে এমন একটা মানুষ রেগে ফোনটা সজোরে মেঝেতে ছুড়ে মারে,, আর সেই আওয়াজ শুনে আরিয়ান দৌড়ে কেবিনে আসে।। দেখে আয়াত বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে আর ফোনটা মেঝেতে পরে আছে। আরিয়ান বলে

—- কি হয়েছে আয়াত?? কোনো সমস্যা!! আয়াত বলে
—- না কিছু না,,এমনি, । আরিয়ান মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—- আয়ান ভাইয়াকে মিস করছ? আয়াত মুখ ফিরিয়ে বলে
—- আমি কাউকে মিস করি না যার আমার থাকা না থাকাতে কিছু যায় আসে না তার জন্য আমি কেন মন খারাপ করব!! আরিয়ান আয়াতের পাশে বসে৷ হাতটা ধরে বলে
—- তুমি আমার বোনের মতো,,, তুমি জানো ভাইয়া কত বার কল দিয়েছে,, আর আসতে পারেনি দিদুনের জন্য,, বুঝইত বয়স হয়েছে তার । আয়াত বলে

—- দেখ আমি তাকে আসতে বলিনি,,, আর আমার ভালো লাগছে না,,, তখনই দরজা ঠেলে কেবিনে প্রবেশ করে,, কেউ। আয়াত দেখে আয়ান। চুলগুলো ভেজা এখানো,, শার্টের হাতাও ঠিক নেই, হয়তো শাওয়ার নিয়ে আর লেট করেনি,, আয়ান তাকিয়ে আছে আরিয়ানের হাতের দিকে,,, আরিয়ান তা দেখে হাতটা সরিয়ে নিয়ে বলে
— তোমরা কথা বলো। আমি বাইরেই আছি কিছু লাগলে বলো। আয়ান বলে
—- এখন আমি আছি তোর লাগবে না। আরিয়ান একটা হাসি দিয়ে চলে যায়। আয়াত বেডে শুয়ে পরে,, আর চোখ বুজে নেয়। আয়ান দেখে মেঝেতে আয়াতের ফোনটা পরে আছে। ইশশশ কি হাল করেছে মেয়েটা একদিনেই। আয়ান ধীরে ধীরে আয়াতের পাশে বসে বলে

—- আয়াত আই এম সরি,,,, প্লিজ মাফ করে দে আমার এভাবে বলাটা উচিত হয়নি,,, কিন্তু না আয়াতের কোনো রেসপন্স নেই। তখনই একটা নার্স কেবিনে আসে আর বলে
—- আপনি বাইরে জান পেসেন্ট কে কিছু সময় আগে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে।৷ আয়ান মন খারাপ করে চলে যায় । আয়ান যেতেই চোখ মেলে তাকায় আয়াত,,মনে মনে বলে
না আর না,,, অনেক হয়েছে। এভাবে ভেঙে পরলে চলবে না। আজকে থেকে সে দূরে চলে যাবে আয়ান নামক মানুষটার থেকে,, তাকে নিয়ে আর ভাববে না। নিজেকে সময় দিবে এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরে আয়াত,,

প্রায় ৭ দিন পর আয়াত বাসায় ফিরে হসপিটাল থেকে,,,, তার বাড়িতে এখনো জানানো হয়নি,, আয়াত নিজেই বারণ করেছিল। গাড়িতে উঠার সময় আয়াত পরে যেতে চাইলে আয়ান ধরতে আসে কিন্তু তার আগেই আরিয়ান আয়াতকে ধরে ফেলে। আয়ানের কেন জানি সেইসব সহ্য হচ্ছিল না। আয়াত বাসায় আসে,,, ,, দিদুন আয়াতকে দেখে কান্না জুড়ে দেয়,, আর আয়ান এসেই রুমে চলে যায়। আয়ান ভাবে আয়াত তো রুমে আসবেই তখন না হয়,,, কথা বলে সব ঠিকানা করে নিবে। কিন্তু রুমে আসে আরবি। আরবিকে দেখে আয়ান অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে বলে

তার শহরের প্রেম পর্ব ৩

—- তুই এখানে??? আরবি বলে
—- আয়াতের,, জামা-কাপড় কোথায়!!! আয়ান অবাক হয়ে বলে
— কিন্তু কেন? আরবি তাচ্ছিল্যের সুরে বলে
— তোর না জানলেও চলবে,, আলভিরা রুমে আয়। বলেই কাবার্ড খুলে জামা গুছিয়ে লাগেজে ভরে। আয়ান এইবার কিছুটা রেগেই বলে
—-কি হচ্ছে এই সব? আলভিরা বলে
— তোমার জন্য গুড নিউজ আয়াত আপ্পি আমাদের সাথে থাকবে বলেই চলে যায়। আয়ানের এতে খুশি হওয়ার কথা কিন্তু তার কোনো রিকেয়শন নেই।
সারাদিনে আর আয়াতের দেখা মিলেনি আয়ানের,,সব শেষে কিচেনে গিয়ে দেখে,,, আয়াত জার এর জন্য লাফালাফি করছে।। আয়ানের এইসব বিরক্ত লাগছে,, বিশেষ কর আয়ত আর আরিয়ানের,, ব্যাপারটা

তার শহরের প্রেম পর্ব ৫