তার শহরের প্রেম পর্ব ৭ || konika Islam sanju

তার শহরের প্রেম পর্ব ৭
konika Islam sanju

গোসল করে মাত্রই আয়াত রুমে এসে বসেছে,, আর ভাবছে একটু নিজের বাড়ি থেকে ঘুরে আসলে মন্দ হয় না,,,, অনেক দিন হলো মা বাবা,, কারো সাথে দেখা হয় না । তখনই দরজায় কেউ নক করে,,, আয়াত বলে
— দরজা খুলা আছে,,, ভিতরে আসে আরিয়ান,,,
আারিয়ান কে দেখে আয়াত বলে
—- কিছু লাগবে?? আরিয়ান আয়াতকে বলে,, তাড়াতাড়ি ছাঁদে চলো,,,,, আয়াত অবাক হয়ে বলে
— কেন??? আরিয়ান বলে
—- আরে চলোই না,,,, আয়াত বলে

— তুমি যাও আমি আসছি। কিন্তু আরিয়ান জিদ্দি কম না আয়াতের হাত ধরে বলে
—- এইবার চলো। বাধ্য হয়ে আয়াত যায় ,, ছাঁদে গিয়ে দেখে বৃষ্টি নেই আকাশ পরিষ্কার,,, আর আকাশ জুড়ে নিজের রঙে রাঙিয়ে দিচ্ছে সেই সাত রঙের রঙধনু টা।। আয়াত তো সেই খুশি,,, সাথে আয়ান আরবি,, আর আলভিও আছে।। তারা আগেই এসেছে।। আয়াত আরিয়ান কে বলে
—- ইয়ারর,,, ধন্যবাদ,,,, ঠান্ডা বাতাসে তাল মিলিয়ে উড়ছে আয়াতের কয়েকটা ভিজা চুল। আয়ান কিছু না বলেই, আয়াতের হাত ধরে নিচে নামতে লাগে । সবাই অবাক!! কি হলো আবার?? আয়াত বলে

—- আরে আরে কি করছেন টাকি?? আয়ান কিছু না বলেই সোজা আয়াতকে নিজের রুমে নিয়ে আসে,, আর দরজাটা লাগিয়ে বসিয়ে দেয় ড্রেসিং টেবিলের সামনে,, আয়ান আয়তের চুলগুলো হেয়ার ড্রাই দিয়ে ড্রাই করছে। আয়াত শুধু অবাক হয় আছে ,,,,,, হঠাৎ করে এমন পরিবর্তন৷ আয়াত আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখে আয়ানও তার দিকে তাকিয়ে আছে,, চুল গুলো শুকানো হয়ে গেলে,,, আয়াত দাড়িয়ে যায়,,, আর যেতে চাইলে আয়ান আয়াতের হাত ধরে এক ঝটকায় নিজের কাছে নিয়ে আসে। আয়াতের হার্ট বেচারা লুঙ্গি ডান্স করছে।। হুট করেই আয়ান আয়াতের চুলে মুখ ডুবিয়ে দেয়,,,, আয়াত এখনো আগের নেয় দাড়িয়ে আছে,, আয়ান আয়াতের কানে কানে ফিস ফিস করে বলে

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—- তোমার চুলে দিব আমি বেলীফুলের মালা,,
তোমায় গান শুনাবো হোক না আমার গলা বেসুরা।
বুকুল ফুলের সাজে সাজাবো তোমায়,,তোমার করা অবহেলা গুলো বড্ড ,পুরায় আমায়,,,,আরিফা। এই দুইটা লাইন যেন যথেষ্ট ছিল আয়াতের অভিমানের পাহাড় ভেঙে গুরিয়ে দিতে কিন্তু না তখনই একটা কথা আয়াতের রাগকে দিগুণ বাড়িয়ে দেয় সেটা ছিল আরিফা কথাটা। এক ঝটকায় নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় আয়াত। আর আয়ানকে বলে

—- আপনি কি হ্যা? কি মনে করেন আমাকে? আমি আরিফা না আয়াত,,,, আমার মাঝেও কেন আপনি আপনার প্রত্তান কে খুঁজে বেরান? বউ হিসাবে মানেন না,, মানলাম। আপনার টাইম চাই!! কিন্তু আপনি সেই প্রথম দিন থেকে নিজেকে বদলানোর একটু চেষ্টা করছেন? আরিফা আরিফা,, আমারতো মনে হয় পাঁচ বছর পর যদি বেইবি নিয়ে আরিফা আপু আপনার সামনে এসে দাড়ায় আপনি আমাকে ছাড়তে দুই মিনিট ভাববেন না। আর আমি পাগল কিছু দিন পরেত এভাবেই আমরা আলাদা হয়ে যাবো।
(আয়াত কান্না করে দেয় এবার আবার বলতে লাগে)

দোষ টা কি আমার?? বলতে পারেন? আপনি বলেছিলেন আরিফা আপু আমার থেকে রূপে সুন্দর,,,, মানলাম আমি আহামরি সুন্দর না কিন্তু লোক সমাজে মাথা নিচু না উচু করে বলতে পারবেন এটা আমার স্ত্রী,, কিন্তু না আপনি তো আমাকে ডিভোর্স দিবেন,, ওকে ফাইন তাই হবে। আর কোনো দিন বলবো না,,,, আমি। আপনার শহরের প্রেমে পরে ভুল করেছি। কারণ আপনি #তার_শহরের_প্রেম এর প্রেমে পাগল।
বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে যাবে তখনই আয়ান রেগে আয়ানায় পান্ঞ্চ মারে সেটা দেখে আয়াত ভয়ে আতকে উঠে হাত দিয়ে গলগল করে রক্ত পরছে , আয়াত তাড়াতাড়ি করে ফার্স্ট-এড বক্স বের করে,, আয়ান কে বিছানায় বসিয়ে দেয় আর বলে

—- এমনটা করার কি খুব দরকার ছিল??? বললামই তো আর আমি আপনার শহরের আশে পাশেও আসবো না। আয়ান অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে
—- আয়াত,,, আয়াত চোখের পানি মুছে হাসি দিয়ে বলে
—- জানেন,, যখন আফিয়া আপুর বদলে আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়,, তখন অনেক খুশি ছিলাম,, ভেবেছিলাম খুব সুন্দর করে সব সাজিয়ে নিব,, হয়তো সময় লাগবে,, কিন্তু সব ঠিক হয়ে যাবে,, কিন্তু সেটা যে ঠিক হওয়ার নয় জানতাম না,,,,,

বেন্ডেজটা করেই আয়াত চলে যায় নিজের রুমে ।।। বালিশে মুখ চেপে ইচ্ছে মতো কাঁদছে আয়াত,, আয়ানও যে খুব ভালো আছে তা কিন্তু না,,, সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। সে যদি আরিফাকে লাইক করে তাহলে আয়াত কে নিয়ে কেন এতো ইনসিকিউর ফিল হয়!! কেন সে জেলাস ফিল করে তখনই আয়ানের রুমে আসে আরবি,,, আরবি দেখে আয়ানের হাত বেন্ডেজ,,, মেঝেতে কাচের টুকরো,,, আরবি বুঝতে পারে দুইজনের মাঝে আবার কিছু একটা হয়েছে।।। আরবি বলে

—– আয়ান,, তোর হাতে কি হয়েছে। আয়ান আরিবকে বিছানায় বসিয়ে দরজটা লাগিয়ে দিয়ে আসে আর বোনের কোলে মাথা রেখে কেঁদে দেয়। আর বলে
—- আপু দেখ,,, আমিতো চেয়েছিলাম আরিফাকে,, কিন্তু পেলাম আয়াতকে,,, আর আরিফার জিদ গুলো আমি সবসময় আয়াতের উপর ঢালি,,,, আজও মেয়েটাকে কষ্ট দিলাম,,, আমার কেন এত খারাপ লাগছে ওকে তো আমি অন্য কারো সাথে সহ্য করতে পারি না,, আরিয়ানের সাথেও না আর আমার তো কখনো আরিফাকে নিয়ে এমন ফিল হয়নি,,, জানিস আপু আজকে আয়াত কি বলেছে আমি নাকি ওর মাঝে আরিফাকে খুজে বেড়াই,,,ও নাকি আমার আশেপাশেও আসবে না। আমি কি করব কি হচ্ছে আমার সাথে হেল্প কর। আমি আর পারছি না। আরবি আয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে

—- কারণ টা যে তোকেই খুজতে হবে আয়ান,,, তোকে বুঝতে হবে,, কিন্তু সময় থাকতে,,, আয়ান চুপ হয়ে যায়। আয়ান বলে
— আমি কি আয়াতের উপর দূর্বল? আরবি হেসে দিয়ে বলে
—- সেটা আজকে জানলি?? আয়ান বলে
— এর মানে?? আরবি বলে
—- এর মানে খুব সোজা,, তুই ওকে ভালোবাসতে শুরু করেছিস,, আর আরিফা ছিল তোর ভালোলাগা,,, জানিসতো সবাই এই দুইটা জিনিস গুলিয়ে ফেলে। আর তোরা একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ আল্লাহর রহমতে তুই,, ঠিক পথেই হাটছিস এখন। আয়ান বলে

তার শহরের প্রেম পর্ব ৬

—- মানে আমি আয়াতকে লাভ করি আমি জানি না??!! আজব না।। আরবি আয়ানের মাথায় গাট্টা মেরে বলে
— দুইটাই আহাম্মক,,, নিচে খেতে চল। আয়ান বলে
—- ইয়ে মানে৷ ? আয়াত? আরবি বলে
— যাচ্ছি,,,, ডাকতে। আয়ান বলে
—- মনে হয় না আসবে। কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেছে,, মাঝ রাতে উঠবে খেতে তোমরা খাও আমি ওর সাথে??? আরবি বলে
— তুমি ওর সাথে কি? আয়ান লাজুক হেসে বলে
—- কমু না আমার লজ্জা লাগে??? আরবি বলে
— তাই না?? আয়ান বলে
—- এক সাথে খাবো আমি ওর সাথে তোমরা যাও খেয়ে নাও। আরবি চলে যায়। আয়ান ভাবছে সত্যি কি সে আয়াতের প্রতি আসক্ত !!! আয়াতের কথা মনে পরতেই মুখে এক চিলতি হাসি চলে আসে।

রাত ২ টা বাজতে ৪ মিনিট বাকি,, খুদায় আয়াতের ঘুম ভেঙে যায়, এটা আয়াতের ছোট বেলার স্বভাব,,, না খেয়ে থাকতেই পারে না। তাই বাধ্য হয়ে নিচে নেমে আসে দেখে ড্রয়িং রুমে কে যেন বসে আছে?? আল্লাহ ভূত না তো। আয়াত শুনেছে রাত ২ টা থেকে নাকি ভূতের উত্তাপ শুরু হয়। মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে সেই ছায়াটার কাছে যায় আর তখনই ছায়াটা আয়াতের দিকে ঘুরে। আর আয়াত চিৎকার দিয়ে বলে
— ভূত ভূত,,,,, আল্লাহ বাঁচাও আমাকে খেয়ে ফেলবে,, ঘাড় মটকে দিবে। আল্লাহ,, আর কিছু বলতে যাবে তখনই আয়ান আয়াতের মুখ চেপে ধরে বলে
— আমি আমি,,, চিৎকার করছিস কেন??

তার শহরের প্রেম পর্ব ৮