তার শহরের প্রেম পর্ব ৯ || konika Islam sanju

তার শহরের প্রেম পর্ব ৯
konika Islam sanju

এক হাতে বিয়ারের বোতল আরেক হাতে ফোনের স্কিনে হাস্যজ্জ্বল এক যুবতীর ছবি,,, জ্বল জ্বল করছে।৷ ছবিটা আর কারো না আয়াতের,,, ব্যক্তিটার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরছে নুনা জল। ব্যক্তিটা নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না,, তাই আয়াতের ছবিটায় চুমু খেয়ে বলে

—- আমি জানি তুমি এখন আয়ানের,, তাও কেন তোমার উপর আমি এতো দূর্বল,,, জানতো খুব ইচ্ছে ছিল তুমি বউ সাজবে,, লাল লেহেঙ্গা ভারি গহনা,, বউ বউ সাজ,, তুমিতো সাজলে ঠিকই কিন্তু আমার জন্য না অন্য কারো জন্য,, অনেক চেষ্টা করেছি আর পারব না। আমার তোমাকে চাই এট এনি কস্ট,,, বলেই চমুক দেয়,,,,,,,,
অপর দিকে আয়াত ভাবছে সে কালকে সকালেই চলে যাবে,,, কলেজ শেষে সেখান থেকে সোজা নিজ বাসায়,,,,
অন্য দিকে আয়ান ভাবছে খুব জলদি সব কিছু ঠিক করে,, আয়াতকে তার কাছে নিয়ে আসবে।।।। কালকে কলেজ শেষে এক জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাবে,, আয়াতকে তার জন্য তার আরিয়ান আর আলভিরার হেল্প লাগবে।। আলভিরা জানে কিন্তু আরিয়ানকে এখনো বলতে পারেনি,,, সে তাদের বন্ধুদের সাথে বেরিয়েছে। ফিরতে বেশ রাত হবে।

আমাদের এই ব্যাস্ততম জীবনে সকালই হলো এমন একটা বিশেষ এবং শান্তি পূর্ণ সময় যখন আমরা কিছু নতুন আশা ও লক্ষ নিয়ে জীবনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি। প্রতিটি সকাল আমাদের জীবনকে নতুন ভাবে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটায়। আয়াত ঘুম থেকে উঠে বসে,, তারপর ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই একটা সার্ভেন্ট এসে আয়াতের হাতে একটা ঝুড়ি ধরিয়ে দিয়ে বলে

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—- ম্যাম এটা আপনার জন্য।
আয়াত ভাবে তাকে আবার কে কি দিল!! ঝুড়িটা খুলে দেখে একটা পিংক কালারের টেডিবিয়ার,, সাথে আর কিছু সূর্যমূখী ফুল আর একটা চিরকুট রাখা।
।।চিরকুটে লিখা।।♥️
আজকের সকালটা না হয় তোমাকে দিয়েই শুরু করি,, Good morning ?
উপর থেকে এইসব দেখছে আয়ান!! চোখ মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট,, কারণ এটা সে করেনি,,, তাহলে কার কাজ?! আয়াতেরও সেম প্রশ্ন।
সেদিন সকালে আয়ান আর ডাইনিং এ আসেনি, তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায়। আয়াত আয়ানের মাকে বলে

—- ফুপি আমি,, আমাদের বাসায় যেতে চাই,, আম্মুর কথা অনেক মনে পরছে। আয়ানের মাও এতে আপত্তি করেনি,, আয়াত নিজের ব্যাগ পেক করছে আলভিরা নিজের নখ কামড়াচ্ছেন আর রুম জুরে পাইচারি করছে। অন্য দিকে আরবি আয়াতকে বলছে
—- আয়াত না গেলে কি হয় না?? আয়ান আসুক তারপর না হয়,, আয়াত বেগ গুছিয়ে বলে
— আমাকে নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আমি যদি চলে যাই তাহলে সে মুক্ত।।।।
তখনই সাদী চলে আসে,, আয়াতের চাচাতো ভাই। সাদী আসতেই নিজ বাড়িতে চলে যায় আয়াত। হাজারো মায়া আর পিছুটান ভুলে পা বারায় নিজের জন্য আলাদা এক জীবনে

বাসায় এসে হাজারো প্রশ্নের সমক্ষীন হতে হয় আয়াতের সে একা কেন কিসের জন্য একা এসেছে। আয়াত রেগে গিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে
—- একা এসেছি বেস করেছি,, আর কোনো কথা চাই না আর এখন থেকে আমি এখানেই থাকবো,, আয়াতের মা কিছু বলতে চাইলে,, আয়াতের বাবা বলে
—- বেস মামুনি তুমি এখানেই থাকবে আমাদের সাথে,, । আর আয়াতের আম্মু তুমি রুমে আসো কথা আছে। আয়াতের চাচা বলে

—- তাহলে জেইনাব,ফারিন ওদের আসতে বলো (ছোট ফুপির ছেলে মেয়ে)। সবাই একসাথে গেট টুগেদার করা যাবে। আয়াত আর কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে আসে। আর লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে ঘুমিয়ে পরে নিজের ফোনটা বন্ধ করে। রাত ১০টার দিকে আয়াতের ঘুম ভেঙে দেখে তখনই ওয়াশরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে আয়ান। আয়াত তো আয়ানকে দেখে লাফিয়ে ওঠে বসে,, সে এখানে কি করে নাকি ঘুমের ঘোরে উল্টা পাল্টা কিছু দেখছে। আয়াতকে উঠতে দেখেই আয়ান তোয়ালেটা সোফায় ছুড়ে মারে,, আর একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে

—- বাহহ মহারানীর ঘুম ভাঙলো তবে। কথায় রাগ স্পষ্ট ,, আয়াত বলে
—- আপনি এখানে? আয়ান দাঁত চেপে চেপে বলে
—- কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলি বুঝি। আয়াত বলে
—- বাজে বকা বন্ধ করুন,, আর এটা বলেন এখানে কি চাই? আয়ান বলে
—- তুই এখানে কার পারমিশনে এসেছিস? আয়াত বলে
—- আমি ফুপিকে বলে এসেছি,, আর আমার কারো পারমিশন লাগে না। আয়ান রেগে আয়াতের গাল চেপে ধরে বলে
— বাহহহ,, ভালোই তো মুখে খই ফুটেছে। আয়াত আয়ানের হাত সরিয়ে বলে
—- কেন এসেছেন? আমি তো আপনার থেকে দূরে সরে এসেছি, তাহলে কেন আবার আমাকে আপনার মায়াতে ফেলছেন। বলেই কেঁদে দেয়। আয়ান তা দেখে একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলে

—- দেখ তুই তো একটা শাঁকচুন্নি তোকে ছেড়ে দিলে আর কেউ বিয়ে করবেনা তাই তোর ভাই হিসাবে একটা দায়িত্ব আছে না? আয়াত রেগে গিয়ে বালিশ দিয়ে আয়ানকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগে আর বলে
—- তুই জীবনে ভালো হবি না,,,, আমি শাকচুন্নি না!! তুই কি হ্যা,আমার রুম থেকে বেরহ,, তখনই আয়ান আয়াতকে বেডের সাথে চেপে ধরে,, আয়াত মূহুর্তেই চুপ হয়ে যায়,, আয়ান আয়াতের দিকে একমনে তাকিয়ে আছে। কখনো এতটা কাছ থেকে মেয়েটাকে দেখেনি সে,,, এক অন্য রকম অনুভূতি কাজ করছে। তখনই দরজায় নক করে আয়াতের মা,,তাদের খেতে,, যেতে বলছে, আর আয়াত আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে উঠে বসে পরে আর বলে

—- হ্যা আম্মু তুমি যাও আমরা আসছি৷ আয়ান আয়াতের উড়না ধরে বলে
—- বউগো,,, আয়াত বিরক্ত হয়ে বলে
— হ্যা ৫ মাসের বউ। আয়ান বলে
— সেটা দেখা যাবে এখন খাবো প্রচুর পরিমানে খুদা লেগেছে। আয়াত আর আয়ান নিচে এসে দেখে সবাই ডাইনিং রুমে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য,,, আয়াতের দিদুন বলে
—- কি হয়েছে দাদুভাই,,,,? আয়ান চেয়ারে বসতে বসতে বলে
— দেখ না,, কেমন ভরকে আছে,,,,!! আয়াত কথা না বলে চুপচাপ নিজের খাবার খাচ্ছে।। আয়ান আয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলে
—- বউ কথা কয়না,,,,, আমার সাথে। আয়াত তাও কিছু বলেনা,,, সবাইতো ওদের কান্ড দেখে হাসছে। বেচারা আয়ান এত কথা বলার চেষ্টা করেও ব্যার্থ।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাত্রই রুমে ঢুকেছে আয়ান,, আর আয়াত। রুমে আসতেই আয়াত কাবার্ড একটা বালিশ নিয়ে সোফায় শুতে যাবে,, তখনই আয়ান পাশে টিবিলে রাখা পানিটা সোফায় ঢেলে দেয়। আর আয়াতের দিকে তাকিয়ে একটা বাচ্চাদের মতো হাসি দিয়ে বলে
— সরি বেইবি,,,। আয়াত রেগে আয়ানকে বলে
— আবার কি নাটক শুরু করেছেন আপনি?? কি চাই!! আয়ান একটু ভাবার চিন্তা করে গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে বলে

—- তোমার নামের রোদ্দুরে
আমি ডুবেছি সমুদ্দুরে
জানি না যাব কতদূরে এখনও
আমার পোড়া কপালে
আর আমার সন্ধ্যে সকালে
তুমি কেন এলে জানি না এখনও
ফন্দি আঁটে মন পালাবার
বন্দি আছে কাছে সে তোমার
যদি সত্যি জানতে চাও
তোমাকে চাই, তোমাকে চাই
যদি মিথ্যে মানতে চাও
তোমাকেই চাই
যদি সত্যি জানতে চাও,,,

তার শহরের প্রেম পর্ব ৮

আয়াত অবাক চোখে তাকিয়ে আছে এর মানে আয়ান তাকে মেনে নিয়েছে,, কিন্তু পরক্ষণেই আয়ান বলে
— গানটা কিন্তু সেই। আয়াত রেগে এবার কান্না করে দিয়ে বলে
—- তোর গান তুই শুন,,,, এই বলে সোজা বেলকনিতে চলে যায়,, আয়ান বলে
— হায় মে মারযাওয়া।। বউ পালতে এত জ্বালা,, বউগো ও বউ,, কই গেলা,, আমারে ছাইড়া। আয়ান বেলকনিতে গিয়ে দেখে আয়াত আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখ মুছে চলেছে,, আয়ান বলে
—- আয়াত চল ঘুমাবি। আয়াত বলে
— আপনি জান আমাকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না। তখনই আয়ান আয়াতকে কোলে তুলে নেয়। আয়াত ভয় পেয়ে আকরে ধরে আয়ানের গলা। আয়ান আয়াতকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে টেবিল লাইটা ওফ করে দেয়। আয়াত বলে
— ছাড়ুন আমাকে। আয়ান বলে
—- এখন আমি ঘুমাবো,, কোনো কথা হবে না।

তার শহরের প্রেম পর্ব ১০