তুমি নামক প্রশান্তি পর্ব ২০

তুমি নামক প্রশান্তি পর্ব ২০
জেনিফা চৌধুরী

ক্যাম্পাসের সবার সামনে রাফিন আর নীলাভ্র দুজন দুজনের কলার চে’পে ধরে আছে। উচ্ছুক দৃষ্টিতে সবাই চেয়ে আছে ওদের দিকে। বেলী ভয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এমন একটা বিশ্রি ঘটনা ঘটবে ভাবতেই পারেনি কেউ! নীলাভ্র চিৎকার করে বললো,

“আমার ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে, আমার ফুলের গায়ে হাত দেওয়ার মতো সাহস, কে দিয়েছে তোকে?”
রাফিনের মুখটা বিরক্ত আর রাগ মিশিয়ে কুঁচকে এলো। দাঁতে দাঁত চে*পে বললো,
“আমার কলারটা ছাড়ো। নয়তো এর ফলাফল…। ”
বলতে পারলোনা। নীলাভ্র ওর মুখের কথা কেড়ে নিলো। বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আজকে যা করার আমি করব। তুই না। তোর ফাঁকা ধমকে আমার বেলীফুল ভয় পেলেও, আমি ভয় পাইনা।”
রাফিন রাগে ‘নীলাভ্র’ বলে চেঁচিয়ে উঠলো। ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকরাও অবাক দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। বেলী এবার আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলোনা। এখনও যদি দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে জল অনেক দূর অব্দি গড়িয়ে যাবে। এগিয়ে গেলো নীলাভ্রদের কাছে। অনুরোধ বাক্যে বললো,

“নীলাভ্র ভাই, এইসব বন্ধ করুন প্লিজ।”
নীলাভ্র অগ্নী দৃষ্টিতে বেলীর দিকে তাকালো। রাগান্বিত স্বরে বললো,
“আজকেও তুই এই লোকটাকে ভয় পাচ্ছিস? এখনো কিসের ভয় তোর? ফুপ্পিকে হারানোর ভয় না-কি আমাকে হারানোর ভয়? আজকেও যদি তুই এই লোকটার ভয়ে চুপ করে থাকিস,তাহলে আমাকে সারাজীবনের জন্য হারাবি। দূরে চলে যাব। তোকে মুক্ত করে দিব। হারিয়ে যাব গভীরতলে।”

কথাগুলো শুনেই বেলীর বুকটা ধক করে উঠলো। সাথে সাথে চেঁচিয়ে বললো,
“নাহ! এমন করে বলবেন না, আপনার দোহাই লাগে। না পাওয়ার যন্ত্রণা তো সহ্য করা যায়, নীলাভ্র ভাই। মন বুঝানো যায়, সে আমার ছিলোনা। কিন্তু পেয়ে হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা সহ্য করা যায়না। মনকে বুঝানোর মতো শব্দ থাকেনা। মনকে কি বলে বুঝাব ‘সে আমার ছিলো। কিন্তু ধরে রাখতে পারিনি’। এর চেয়ে বড় ব্যর্থতা আর নেই। কিছু হতে পারেনা। আমি এই যন্ত্রণার শামিল হতে চাইনা।”

বলে বেলী নিঃশব্দে কান্না করে উঠলো। নীলাভ্র ওর দিকে অসহায় চাহনী দিয়ে আছে। কিছুসময় থেমে বেলী পুনরায় বলে উঠলো

“আমার জীবনটা এলো-মেলো, দিকশূন্য, কূল-কিনারাহীন। এই এলোমেলো জীবনটাকে একটু গুঁছিয়ে নিতে চাই। আপনার হাত ধরে একটু বাঁচতে চাই। খোলা আকাশের নিচে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে চাই। সমাজের যেসব মানুষ আমাকে নিন্দা, মন্দ করেছে। আমাকে সমাজের ময়লা-আবর্জনা মনে করেছে, তাদের আমি দেখিয়ে দিতে চাই ‘আমি সমাজের ময়লা-আবর্জনা না’। শুধু আপনি আমার পাশে থাকবেন প্লিজ।”

বেলীর অসহায় স্বরের কথাগুলো শুনে উপস্থিত অনেকের চোখের পানি টলমল করছে। এতক্ষণ যাবৎ সবাই অল্প হলেও বেলীর অতীত সম্পর্কে জানতে পেরেছে। নীলাভ্র কিছু বললো না। বলার ভাষা নেই। রাফিন ঝারি মে*রে নীলাভ্রর থেকে, নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে উঠলো,

“তোমাদের এইসব নাটক দেখার টাইম আমার নেই, এইসব নাটক অন্য কোথাও গিয়ে করো। আমার সামনে না।”
কথাটা শেষ হতেই নীলাভ্র হা হা করে হেসে দিলো। হঠাৎ নীলাভ্রকে এমন করে হাসতে দেখে, সবাই অবাক! নীলাভ্র হাসতে হাসতে বললো,

“আমাকে মা*রার জন্য দুইবার এক্সিডেন্ট করালি। বেলীকে আঘাত করলি। সব জেনেও চুপ ছিলাম, কেনো জানিস? বেলীপ্রিয়ার জন্য, কারণ আমি জানতাম ও ‘তোকে ভালোবাসে’। কিন্তু, আমি ভুল জানতাম। তাই আজকে তোর সব খেলা শেষ করার সময় এসে গেছে।”

কথাটা শুনে রাফিনের মুখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো। নীলাভ্রর কথা শুনে বেলীর বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো। তার মানে নীলাভ্রর যেই দুইবার এক্সিডেন্ট হয়েছিলো, তা রাফিন করিয়েছে। ভেবেই বেলীর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। কতটা বাজে হতে পারে একটা মানুষ! রাফিনের কন্ঠস্বর নুইয়ে গেলো। নুইয়ে যাওয়া স্বরে বললো,

“কি বলছো কি তুমি?”
“আরে বাহ! এক মিনিটেই তুই থেকে তুমি!”
নীলাভ্র তাচ্ছিল্যের স্বরে বলে উঠলো কথাটা। পরক্ষণেই দেরি না করে উঁচু স্বরে হাঁক ছাড়লো,
“অফিসার৷ সামনে আসুন।”

নীলাভ্রর কথা শেষ হতেই ভীড় ঠেলে দুইজন পুলিশ ভেতরে ঢুকলো। পুলিশ দেখেই রাফিনের চোখ কপালে। ভয়ে কয়েকপা পিছিয়ে যেতেই নীলাভ্রর সাথে ধাক্কা খেলো। নীলাভ্র রাফিনের হাতটা চে*পে ধরে শান্ত স্বরে বললো,
“ভয় পাচ্ছিস ?”

রাফিন ভয়ে ঢোক গিললো বারকয়েক। ওর মুখের স্পষ্ট ভয়ের ছাপ ফুটে উঠেছে। তবুও দৃঢ় কন্ঠে বললো,
“ভয় পাবো কেনো? তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি কে? আমি এই ভার্সিটির শিক্ষক। আমার সাথে অভদ্রতা করার শাস্তি কি হতে পারে, জানো তো?”

“আর এটেম টু মার্ডারের শাস্তি কি হতে পারে, আপনি নিশ্চয়ই জানেন?”
নীলাভ্র ঠোঁটের কোনে রহস্যময় হাসি ঝুলিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো। কথাটা শুনে রাফিন পুরোদমে ভয় পেয়ে গেলো এবার। পুলিশ দুজনের মধ্যে একজন রাফিনের দিকে তাকিয়ে বললো,

“বেলী ও তার পরিবারকে খু**নের চেষ্টার অভিযোগে আপনাকে গ্রেফতার করা হলো মিস্টার রাফিন এনায়েত।”
কথাটা বলেই রাফিনের হাতে হ্যান্ডকাফ পড়ানোর জন্য ইশারা করলো পাশের জনকে। রাফিন তৎক্ষনাৎ চেঁচিয়ে প্রশ্ন করলো,

“দাঁড়ান অফিসার! আমার বিরুদ্ধে আপনাদের কাছে কী প্রমাণ আছে অফিসার?”
পুলিশ অফিসার শাহাজান হোসেন শান্ত স্বরেই জবাব দিলো,
“আমাদের কাছে আপনার বিরুদ্ধে সব প্রমাণ আছে। সঠিক সময়ে আদালতে তা জমা দেওয়া হবে। এখন আপনি আমাদের সাথে চলুন।”

রাফিন চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করে দিলো। এইসব কি হচ্ছে? বেলী কিছু বুঝতে পারছেনা। হঠাৎ পুলিশ আসলো, কি করে এখানে? আর রাফিনের বিরুদ্ধে প্রমাণ কি করে পেলো নীলাভ্র? প্রশ্ন গুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। রাফিনকে কিছু বলার সুযোগ দিলোনা আর।

সবার চোখের সামনে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলো। বেলী এখনো নির্বাক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে। এই মুহূর্তে এখানে থাকলে হাজারটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে, নীলাভ্র আর বেলীকে। তাই নীলাভ্র সময় নিলোনা। বেলীর হাত ধরে বেরিয়ে আসলো ভার্সিটি থেকে। রাজনীতিতে নীলাভ্র নামটা সবার বেশ পরিচিত। তাই নীলাভ্রকে সবাই খুব ভালো করে চিনে। সবাই জানে অকারণে কিছু করার মতো ছেলে নীলাভ্র না। গাড়িতে উঠেই নীলাভ্র কোনো রকম শব্দ করলো না। গাড়ি স্টার্ট দিলো। মিনিটের মাথায় বেলী প্রশ্ন করলো,

“আপনি এত সব কিছু কি করে জানলেন?”
নীলাভ্র চুপ রইলো কিছুক্ষণ। তারপর শান্ত স্বরে বলতে লাগলো,

“এই ক্যাম্পাসের সবাই আমাকে চিনে তা তোর অজানা নয়। সেই হিসেবে সবাই তোকেও খুব ভালো করে চিনে। রাফিনকে আর তোকে একসাথে দেখে, ফার্স্ট ইয়ারের তামিম আমাকে ফোন করেছিলো। আমিও তখন বের হয়েছিলাম, তোকে আর রাকিবকে সঙ্গে নিয়ে তানিশাদের বাসায় যাব বলে।

রাফিনের বিরুদ্ধে সব প্রমাণ অনেক আগের থেকেই, পুলিশের কাছে জমা দেওয়া ছিলো। শুধুমাত্র আমার অনুরোধে ওকে অ্যারেস্ট করা হয়নি এতদিন। শাহাজান স্যার বাবার বন্ধু, বলে কাজটা আমার কাছে সহজ হয়েছে। নয়তো কেউ প্রমাণ হাতে রেখে, অপরাধীকে ঘুরে বেড়াতে দিতোনা।”

বলে থামলো। বেলী কিছু বুঝতে পারলোনা। বোঝার চেষ্টাও করলো না। শরীরটা আর সাঁয় দিচ্ছেনা আজ। ঢাকা টু শরীয়তপুর জার্নি করার মতো অবস্থাটাও নেই। কিন্তু, আজ যে তানিশার খোঁজ নিতেই হবে। যে করেই হোক। তাই কথা বাড়ালো না আর। কিছুক্ষণ সিটে মাথা হেলিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলো। নীলাভ্র বেলীর ক্লান্তিমাখা চেহারাপানে তাকিয়ে শীতল কন্ঠে ডেকে উঠলো,

“বেলীপ্রিয়া”
“হ্যাঁ, শুনছি। বলুন?”
বেলীর ছোট্ট জবাবে। নীলাভ্র প্রশ্ন করলো,
“খারাপ লাগছে? গলা ব্যাথা করছে?”
“না, ঠিক আছি।”

চোখ বন্ধ করেই উত্তর দিলো বেলী। নীলাভ্র নাছোড়বান্দার মতো পুনরায় প্রশ্ন করলো,
“তাহলে, তোর চোখ, মুখ শুকনো লাগছে কেনো?”
প্রশ্নটা শুনে বেলী, চোখ মেলে তাকালো। নীলাভ্রর দিকে তাকিয়ে বললো,
“এত প্রশ্ন করেন কেনো?”

“আমার বেলীফুলটা এমন করে থাকলে আমার কি ভালো লাগে, বল?”
নীলাভ্রর কথায় বেলী অবাক হয়ে, চোখে পাতা ঝাপটালো। অবাক স্বরে বললো,

“বাবাহ গো বাবা! কি ভয়ংকর সব কথার্বাতা?”
বলে হেসে দিলো। সাথে নীলাভ্রও তাল মিলিয়ে হেসে উঠলো। দুজনেই হাসতে লাগলো। এই মুহূর্ত মিষ্টি! খুব মিষ্টি! প্রণয়ের দহনে পু*ড়ে আজ দুটো মন, দুটো প্রাণ ভালোবাসার ছোঁয়া পেয়েছে। এর চেয়ে বড় খুশি আর কি হতে পারে? নীলাভ্র হাসি থামিয়ে বললো,

“বেলী ফুল মানেই স্নিগ্ধতা। যার সুভাসে চারদিক ভরে উঠবে। কাছে গেলেই, ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হবে। অবাধ্য হাত ছুটে যাবে সেদিকে। আর আমার সেই ফুল হলো ‘তুই’। আমার বেলীফুল। যে গাছে ফুটে না, সুভাস ছড়ায় না। কিন্তু আমার বেলীফুলও স্নিগ্ধ। যার স্নিগ্ধতায় আমি ডুবে ছিলাম। আছি। থাকব।”

নীলাভ্রর কথায় বেলী হাসলো। লজ্জামাখা হাসি। কিছুক্ষণ আগের সব বিষাদ ভুলিয়ে দিলো মুহূর্তেই। ছেলেটার মাঝে জাদু আছে। কত সুন্দর করে সযত্নে সব বিষাদ ভুলিয়ে দেয়। এমন করে কতজন ভালো বাসতে পারে? নীলাভ্র বেলীর দিকে খেয়াল করতে গিয়ে, অন্যমনস্ক হয়ে গেছিলো। এমন সময় কানে তীব্র হর্ণের শব্দ আসতেই নীলাভ্রর ধ্যান ফিরে। বড়সড় একটা এক্সিডেন্ট হতে হতে বেঁচে গেলো ওরা। জোরে ব্রেক কষলো নীলাভ্র। এতে বেলী আর নীলাভ্র দুজনেই সামনে ঝুঁকে পড়লো। বেলী ভয়ে চোখ, মুখ খিচে ‘মা’ বলে চেঁচিয়ে উঠলো। তখনি কানে ভেসে আসলো,

“বেলীপ্রিয়া! কিছু হয়নি। ভয় পাসনা।”
নীলাভ্রর থেকে অভয় বানী পেতেই বেলী চোখ খুললো। চারদিকে তাকিয়ে দেখলো সবটা স্বাভাবিক আছে। তখনি, তীব্র রাগ মাখা স্বরে বললো,

“আপনি কোন দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালান, বলুন তো? গাড়ি চালানোর সময় এত কথা বলতে বলেছে কে আপনাকে? এক্ষুনি কত বড় একটা বিপদ ঘটে যেতো। ভাবেন তো?”
ভয়ে বেলীর হার্টবিট বেড়ে গেছে, কয়েকগুণ। নীলাভ্রও ভয় পেয়ে গেছে বেশ। তাই চুপ করে আছে। বেলী বুকে হাত দিয়ে বলে উঠলো,

“এক্ষুনি মনে হচ্ছিলো ‘প্রাণ পাখিটা উড়াল দিয়েছে ‘বোধহয়।”
বেলীর মুখে এমন কথা শুনে, নীলাভ্র বিরক্তের সহিত বললো,
“বেলীপ্রিয়া! কিসব উল্টা পাল্টা কথা বলছিস?”
“যা সত্যি তাই বলেছি।”

বেলীর সোজা উত্তর। নীলাভ্রর এবার রাগ হলো। প্রচন্ড রাগ। নিজের উপর সাথে বেলীর উপর। তাই, চুপ থাকলো উত্তর দিলোনা আর। বেলী পুনরায় বলে উঠলো,
“যদি ম*রে যেতাম তখন বুঝতেন, কত ধানে কত চাল?”

কথাটা নীলাভ্রর কানে বারি খেলো কয়েকবার। রাগে শরীর শিরশির করে উঠলো ওর। রক্তিম চক্ষু নিয়ে তাকালো বেলীর দিকে। নীলাভ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে বেলী চুপসে গেলেও, নীলাভ্র থামলো না। জোরে ‘বেলীপ্রিয়া’ বলে থা*প্পড় উঠালো বেলীর দিকে। বেলী ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো ।

তুমি নামক প্রশান্তি পর্ব ১৯

ওর ভয়ার্ত মুখটা দেখে নীলাভ্র হাত নামিয়ে নিলো। রাগটা গিলে নিলো। কি করতে যাচ্ছিলো ও? রাগের চো*টে ওর বেলীপ্রিয়াকে আঘাত করতে যাচ্ছিলো? কা-পুরুষের মতো ব্যবহার যাকে বলে। বেলীকে সযত্নের আগলে নিলো নিজের সাথে। নীলাভ্রর শরীরের উষ্ণ ছোঁয়া পেয়ে বেলী চোখ খুলে, নিজেকে নীলাভ্রর বাহুডোড়ে আবিষ্কার করলো। নীলাভ্র পরম আদরে বেলীর কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো। অস্পষ্ট স্বরে বললো,
“ভালোবাসি বেলীপ্রিয়া। ”

তুমি নামক প্রশান্তি পর্ব ২১