তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ২৩ || Suraiya Aayat

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ২৩
Suraiya Aayat

আরূ সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠতেই দেখল আরিশ ওকে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে, মাথার চুলগুলো তা কপাল বেয়ে খানিকটা আছড়ে পড়ছে ৷ আরিশ কতটা বিরক্তি বোধ করছে সেটা আরু জানে না তবে ওর খুব বিরক্ত লাগছে ৷ আলতো করে হাত দিয়ে ঠিক করে দিতে গেলেই কালকের পুরনো সব কথা মনে পড়ে গেল ওর ৷ কালকে আরিশের বলা কথাটাই সব থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছে যখন আরিস ওকে বলেছে যে ও আরুকে বিয়ে করতে পারবে না ৷ এটা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আরিশের কাছ থেকে প্রত্যাক্ষিত হল ও আর এটা একটা মেয়ের জন্য চূড়ান্ত সীমার অপমান ৷ আরূ চেয়েও অভিমানে হাতটা নামিয়ে নিল

পরমুহূর্তেই যেন বিরক্তিটা আরো জোরালো হলো ৷ চুলগুলোকে যতক্ষণ না আলতো করে হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে ততক্ষণে যেন ওর অস্বস্তিটা কাটছে না, যদিও বা কালকে রাতে আরিসের এতটা কাছে আসার পর এটুকু অধিকার ও খাটাতেই পারে সেটা আরিশ চাক বা না চাক ৷
এবার খানিকটা উদ্বেগ নিয়ে আরিসের চুলগুলো সরাতে গেলেই আরিশ আরুকে জড়িয়ে ধরে অনেকটা নিজের কাছে নিয়ে চলে আসলো ৷
আরিশ চোখ খুলে বলতে লাগলো,,,,,
__” একটা মেয়ে হয়ে একটা ছেলের ভার্জিনিটি নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলতে তোমার একবারো মনে মায়া হলোনা আরুপাখি? আমার ঘুমের ঘোরের সুযোগ নিতে চাইছিলে তুমি ৷ কি লজ্জার ব্যাপার আমি এবার সকলের সামনে মুখ দেখাবো কি করে !”
আরূ চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে গেল,,,,,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

__” এ ছেলে বলে কি?একেতো আমি ওনার কপালের উপর পড়ে থাকা চুলগুলোকে ঠিক করে দিতে চাইছিলাম আর সেখানে আমি নাকি ওনার ভার্জিনিটি নিয়ে টানাটানি করছি ৷”(মনে মনে)
চরম বিরক্তি নিয়ে বললো আরু আরিশকে ধাক্কা মারলো, ধাক্কা মেরে চটপট বিছানা থেকে নেমে পড়ল ৷
__” আপনার মত লুচু একটা ছেলের ভার্জিনিটি আছে কি তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে ৷”
আরিশ এবার উঠে বসে হাই তুলতে তুলতে বলল,,,, __” ভার্জিনিটি আর নষ্ট করলাম কোথায় , তুমি তো কিছুই করতে দিলা না ৷”
আরুর ইচ্ছা করছে এই মুহূর্তে গিয়ে আরিসের মাথার চুলগুলো টেনে ছেড়ে দিতে, সব সময় ওর কথার জালে ওকেই ফাসায়….
আরিস আরূর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে বলল,,,,

__” কি হল চুপ করে আছো কেন, বল তুমি কি কিছু করতে দিয়েছো?”
__” আপনার মনে তো শুধু আমি নেই , হাজারো নারীর সমাবেশ , তাই সকলের মাঝখানে আমাকে গুলিয়ে ফেলছেন আর তাদের পর্যায়ে আমাকে তুলনা করছেন মিঃ আরিশ ৷”
আরিশ এবার উঠে গিয়ে আরূর দেওয়া বিয়ের কার্ড টা হাতে তুলে নিয়ে এদিক ওদিক করে দেখতে দেখতে আরূকে বলল,,,,
__” এটা তোমার বিয়ের কার্ড না ?”
__” শুধু আমার না, আমার আর আশফির বিয়ের কার্ড ৷”
__” তোমার বিয়ে, তাহলে আজ তুমি এখানে কি করছো? বিয়ের আগের দিন রাতে একা একটা পর পুরুষের সাথে সারা রাত কাটিয়েছ,,, তওবা তওবা আস্তাগফিরুল্লাহ , নাউজুবিল্লাহ ৷ সে যাই হোক আমার বউ আমার কাছে থাকলে সমস্যা নেই যদি আমার কাছে না থাকতে তাহলে তোমার খবর ছিল ৷”

আরু রাগ মিশ্রিত চোখে আরিশের দিকে তাকালো, আরিশের কথার ভাষা বোঝার ক্ষমতা ওর নেই ৷ মানুষটা যেমন জটিল তেমনি জটিল তার সমস্ত কথোপকথন ৷ কখনো আরূ তা বুঝে উঠতে পারেনি সবসময় কথার মারপ্যাঁচে আর ওকে বোকা বানায়, যেমনটা এখন ওকে বোকা বানিয়েই চলেছে ৷
__” আপনার লজ্জা করেনা এক মুখে 10 রকম কথা বলতে ৷”
__” লজ্জা! সেটা আবার কি জিনিস ? লজ্জা নামক জিনিসটা আমার ডিকসনারিতে নেই আরূপাখি ৷ আর এমনিতেও লজ্জাটা আমার ঠিক আসে না তো তাই ঠিক জানিনা বিষয়টা কি ৷”

__” ইডিয়ট ৷”
__” তোমার বর ৷”
__” একদম আমার বরকে নিয়ে উল্টোপাল্টা বলবেন না ,সে আপনার মতো না ৷”
__” এই তো দেখেছো তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো , এই জন্য আমিও তো তোমাকে এত্তগুলো ভালোবাসি ৷”
__” বিয়ে যখন করবেন না এতো নাটক করা বৄথা আপনার ৷ সে যাই হোক আপনাকে যেনো আমার বিয়েতে না দেখি ৷”
কথাটা বলে আরূ চলে যেতে নিলেই আরিশ বলে উঠলো,,,,,

__” এই যে মিস আপনার বাপকে বলবেন সে যেন ভালোভালো ডিস রান্না করে , আমরা কিন্ত খেতে যাবো ৷ আর ভালো খেতে না দিলে সারাজীবন তোমার বাপের বদনাম গাইবো এটা মনে রেখো ৷”
__” আপনার মুখটাও যেনো আমি আর দ্ধিতীয়বার না দেখি আমি ৷”
__” উহহহ, বললেই হলো,,,নিমন্ত্রণ দিয়েছে আর আমি যাবো না এটা কখনো হয়! কথাটা তোমার বিয়ের পর বললে মানতে পারতাম বাট এই মূহুর্তে আর মানতে পারছি না , রিয়েলি সরি টু সে ৷”
__” উফফফফ,,, বিরক্তিকর ৷”
কথাটা বলে আরু বেরিয়ে গেল ৷
আরু চলে যেতেই আরিশ বিছানায় হেসে গড়াগড়ি দেওয়ার অবস্থা ৷
কোনক্রমে হাসিটাকে থামিয়ে বেলকনিতে গিয়ে ফোনটা ধরালো ৷

__” তূর্য তোর ফোনে একটা ছবি পাঠিয়েছি ওটা ভালোকরে বাধিয়ে দে ফটোফ্রেমে, আমি আমার ঘরে লাগাবো ৷”
তূর্য ছবিটার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল,,,,
__” দোস্ত এটা আমি কি দেখছি ৷ তুই আর এই মেয়েটা তাও আবার এভাবে , মানে কিভাবে কি?”
অরিস মুচকি হেসে বলল,,,,,
__” তোর ভাবি ৷”
কথাটা শুনে তূর্যর জন্য মাথাটা চক্কর দিতে লাগলো,,,, যেই মেয়েটার সাথে একদিন ওরা ঝামেলা করেছে , ইভেন এতদিন আরিশ যে মেয়েকে পাত্তা দেয়নি তাকে ই আরিশ বিয়ে করবে ব্যাপারটা যেন ঠিক হজম হচ্ছে না তূর্যর ৷
তূর্য আমতা আমতা করে বলল,,,,,

__” কিন্তু ওর তো আজ বিয়ে ৷”
__” হমমম , বিয়ে আজ তারমানে বিয়ে তো হবেই ৷”
__” তাহলে তুই এসব বলছিস কেন?
__” অতশত জানিনা তুই আর সাহেল তাড়াতাড়ি দুপুরের মধ্যে ফিরে আয় সন্ধ্যাবেলা আমার বিয়ে বরযাত্রী হিসেবে আমার সাথে তোরা না গেলে আমার বিয়ের আনন্দটাই মাটি ৷ আর শালা প্রান্ত তো হানিমুনে চলে গেছে এখন আর কী করার ৷ তোরা তো আসছিস নাকি !”
তূর্য আনন্দে লাফিয়ে উঠে বলল,,,,,

__” আর আমরা আসবো না মানে সেটা কখনো হয় নাকি , এক্ষুনি আসছি আমরা ৷ তুই ফোন রাখ সাহেল কে খবরটা দিই ৷”
কথাটা বলেই আরিশ ফোনটা রেখে দিল ৷ আরিশ মুচকি হাসছে,,,,,
ফোনটা বিছানার ওপর রাখতেই আবার ফোনে ফোন আসলো,,,,,,
ফোনের দিকে সানশাইন নামটা ভেসে আসতেই উচ্চস্বরে হেসে উঠলো আরিশ ৷
__” কি হলো , আমার বাড়ি থেকে এক পা বাইরে রাখতেই আমাকে মিস করতে শুরূ করে দিয়েছো তাইনা ?”
__” ফালতু কথা কম বলেন কাজের কথাটা শোনেন ৷”
__” বলো জান ৷”.
__” উফফফ, আপনার রুমেই কোথাও আমার পায়ের একটা নূপূর খুলে পড়ে গেছে আপনি একটু ওটা নিয়ে নীচে আসবেন ? প্লিজ ৷”

__”আমার দেওয়া জিনিসকে এতোটা ভালোবাসো !ওয়াও ইমপ্রেসিভ ৷”
__”দেবেন কি বলুন ৷”
__” একটা শর্তে দিতে পারি যদি আপনি রাজি থাকেন তো ৷”
__” কি?”(ভ্রু কুচকে )
__” আগে বলুন আমাকে ঘৄনা করেন ৷ বাট এখন ঘৄনা করি বলে পরে ভালোবাসি বললে কিন্ত পানিশমেন্ট পেতে হবে ৷”
__” আমার বয়েই গেছে আপনাকে ভালোবাসি বলতে, আমি তো আপনাকে ঘৄনা করি , শুধু ঘৄনা করি ৷”

__” পানিশমেন্ট পাওয়ার জন্য রেডি থাকুন ৷ আজকে সুধে আসলে উশুল করে নিব ৷ বাট নূপুরটা রাতে পাবেন, এখন আমি এত কষ্ট করে সিড়ির ধাপ বেয়ে নীচে নামতে পারবো না, আমি সামান্য এটুকু কাজ করে নিজের এনার্জি লস করতে চাইনা ৷ তাই যেখানে আছেন ঐখান থেকেই বাসায় ফিরে যান, আর যা হবে তার জন্য প্রস্তুত হও ৷ লাভ ইউ সানশাইন ৷”
বেশকিছুখন আরিশের রূমের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে এবার ফুপিয়ে কেদে উঠলো আরু ৷
__” কেন উনি সবসময় আমার সাথে এমনটা করেন, আমার ফিলিংস এর কোন ভ্যালু নেই ওনার কাছে ৷ উনি খুব খারাপ আর এক বালতি পচা ৷”
কথাটা বলে আরু কাদতে কাদতে বাসার দিকে হাটা দিল ৷

একটা সিএনজি করে আরূ বাড়ি ফিরেছে ৷ বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে ওর বুকের ভিতর ধক ধক করছে,বারবার শুধু এটাই ভাবছে যে এরপর বাড়ির লোকের সন্মুখিন হবে হবে কিভাবে? আর সারাটা রাত ও কোথায় ছিল তার জবাব ই বা ও কি করে দেবে! হাত পা যেনো আর সামনের দিকে এগোতে চাইছেনা,,,, তবুও এই পরিস্থিতির সম্মুখিন যে ওকে হতেই হবে তাই আর বেশি দেরি করে লাভ নেই দেখে একটু সাহস নিয়ে বাড়িতে ঢুকলো ৷
বাড়ির ভিতর ঢুকতেই দেখল সব আত্মীয় স্বজনদের ব্যাবহার অন্তত স্বাভাবিক , তা দেখে আরুর ভ্রু জোড়া কুচকে এলো ৷ সবাই ওকে দেখে ওর কাছে এগিয়ে এলো,,,,,
ওকে আসতে দেখেই ওর কাজিন রাহী এগিয়ে এসে বললল,,,,,

__” আপু তুমি কেমন আছো?”
__” আমি তো ভালো আছি বাট হঠাৎ এমন কথা জিঞজাসা করছিস যে?”
__” কালকে রাতে তুই যে হসপিটালে ছিলি তার জন্য আমরা তো চিন্তাই চিন্তাই ঘুমাতেই পারিনি ৷”(আরুর ফুপি)
__”আমি আর অসুস্থ আর হসপিটাল !”(অবাক হয়ে)
__” হমমম তুই তো কালকে হসপিটালেই ছিলি, আর তুই এখন যথেষ্ট ক্লান্ত আর সারাটা দিন অনেক ধকল যাবে তোর ওপর তাই এখন রুমে গিয়ে রেষ্ট নে ৷”(আরুর মা কথার সামাল দিতে তৎক্ষণাৎ এসে বললেন )
আরু বুঝতে পারলো যে কিছু একটা ঘটেছে আর তা বেশ বড়োশড়ো ৷ তাই আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আরু ঘরে চলে গেল ৷
রূমে গিয়ে মাথা নীচু করে বসে আছে আরু আর সাথে সাথে কোথা থেকে সানা এসে বলল,,,,

__” কিরে তুই এখন কেমন আছিস?”
__” আমি ভালো আছি তা আ আমাকে দেখে বুঝতে পারছিস না! আর. হঠাৎ এমন প্রশ্ন করার মানে কি?”
__” বাহ রে, এটা আবার কেমন প্রশ্ন? যা হয়েছে আমিতো তার পরিপ্রেক্ষিতেই বলছি ৷ কালকে রাত্রে যখন তোকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তখন হঠাৎ আসফি ভাইয়াই তো ফোন করে বলেছিলেন যে তুই খুব অসুস্থ তাই হসপিটালে নিয়ে গেছেন উনি, আর স্যালাইন চলছে রাত্রি বাড়ি ফিরতে পারবি না সকালে ভাইয়াই তোকে বাসায় পৌঁছে দেবে ৷”

আরূ ও সানার কথা শুনে অবাক হয়ে গেল, আশফি যে কেন এরকম বলল সেটা ও বুঝতে পারছে না কিন্তু সানা যে আসল সত্যিটা জানে না সেটা আরু ভাবলো তাই আসল কথাটা সানার কাছে স্বীকার করল না, করলেই হাজারো প্রশ্ন উঠবে তখন ৷তবে পরে আশফির কাছ থেকে ও জানবে যে আশফি কেন মিথ্যা বললো ৷
হঠাৎ আরু দৌড় দিল ওয়াশরুমে,,,,,সানা আরুর পিছন পিছন গিয়ে দেখলো আরু বমি করছে আর তা দেখে সানা তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷
সানা গার্ডেন এ গিয়ে আরিশকে ফোন করলো,,,,

__” ভাইয়া আরু বাসায় এসেছে আর আসামাএই বমি করে দিয়েছে ৷”
আরিশ মুচকি হেসে বলল,,,,
__” তোর ভাবীর খেয়াল রাখ যাতে রাতে আবার অজান না হয়ে যাই ৷”
__” ভাইয়া এখনই এতো কিছু?(অবাক হয়ে)
__” একটা থাবড় দিবো,,, ছোট হয়ে বড়োদের মতো কথা বলিস ৷ ”
__”ছোট কোথায় আমারো তো বিয়ের বয়স হয়েছে তা তোর চোখে পড়ে না !”
__” তোর খুব শীঘ্রই একটা ব্যাবস্থা করছি ওয়েট ৷ বাই দা ওয়ে আরুপাখির একটু খেয়াল রাখিস ৷ আর ওকে আপাতত ঘুমাতে বল আর উঠলে আমাকে একটু ফোন করিস ৷”
__” আচ্ছা ভাইয়া ৷ আর বাই দা ওয়ে বেষ্ট অফ লাক ফর রাত্রিবেলা ৷”(চোখ মেরে).
__” সেটা কি তুই বলবি তারপর ৷”
__” ? ৷”

ওয়াশরুম থেকে আরু বেরিয়ে এসে বিছানায় ধপ করে বসে পড়লো,,,, মাথার মধ্যে কেমন ঝিমঝিম করছে আর শরীরটাও দূর্বল লাগছে,,, এগুলো এতদিন খাওয়া দাওয়ার অনিয়মের ফল তা এখন ভালোই বুঝতে পারছে আরু ৷
চোখটা বন্ধ করলেই এখুনি একরাশ ঘুম এসে ভর করবে আর তাছাড়া এখন ও ঘুমাতে চাই না ওর কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলোই করার জন্য উঠে দাড়াতেই পেটের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠতেই আর ক্ষমতায় কুলালোনা সামনে এগিয়ে যাওয়ার তাই না পেরে বিছানায় শুয়ে পড়লো ৷
ওর আরিশের মায়ের সাথে কিছু দরকারি কথা ছিলো সেগুলোই বলতো ৷

__” আসফি congrats ৷Happy marriage life ৷”
__” ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনি না থাকলে বিয়েটা হয়তো এতদূর এগোতো না ৷”
__” হাস,,,আল্লাহ আমাকে উছিলা করে পাঠিয়েছে মাএ আর কিছুই না ৷ বাই দা ওয়ে ফ্লাইট কটাই ?”
__” ভাইয়া রাত 8.45 এ ৷ আর আপনারা কখন আসছেন?”
__” আমি আজকে এখানে একদফা বাসর সেরে দুদফা বাসরটা কক্সবাজারেই করবো ইনশাআল্লাহ ৷ ”
__” বাট ভাইয়া অসংখ্য ধন্যবাদ ,আমাদের পাশে থাকার জন্য ৷ ”
__” এবার কিন্ত আমি রেগে যাবো,,, এসব বাদ দাও কালকে দেখা হচ্ছে কক্সবাজার ৷”
__” ইনশাআল্লাহ ৷”

কথাটা বলে আরিশ ফোনটা কেটে দিলো ৷ কালকে রাত্রে আশফি আর ওর গালফ্রেন্ডের বিয়ের ব্যাবস্থা করেছে আরিশ তাদের পরিবারের অমতেই ৷ এজন্য হয়তো আশফি সারাজীবষ ৠনী হয়ে থাকবে আরিশের কাছে ৷
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো 5.25 বাজে,,,,,
6.12 তে ওর আর আরূর কাবিন ৷ জীবনের ভালোবাসার মানুষটাকে একান্তে পাওয়ার চূড়ান্ত আর শেষ ধাপে আরিশ , এখান থেকে আর কখনো পিছু পা হতে চাইনা ও ৷
তূর্য আর সাহেল দুজনে 1 ঘন্টা আগেই ফিরেছে ৷ দুজনের আনন্দের শেষ নেই ৷ ওদের তো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আরিশের বিয়ে ৷

টাওয়ালটা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢূকে গেল আরিশ ৷শাওয়ারটা অন করতেই সারা শরীর ঠান্ডা জলে ভিজে গেললল,,,,এই শীতেও ওর শরীরে ঐকরাশ কাঁপুনি নেই আছে আরূর দেওয়া একরাশ ভালোবাসার ছোঁয়া ৷ চোখ বন্ধ করে কালকের সব কথা গুলো বারাবার ভাবতে চেশষ্টা করছে ৷ বারাবার কেবলই মনে পড়ছে আরুশির কম্পমান ঠোঁটজোড়া কিভাবে নিজের আয়ত্তে এনেছিলো ও আর কতটা গভীরভাবে আরুশিকে ছুতে পেরেছে ও ৷

আরমাত্র কিছুখনের অপেক্ষা তারপর ওর প্রেয়শী চিরকালের মতো ওর ৷ সারাজীবন বুকের মাঝে আগলে রাখবে ও ৷
আরিশ শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসে রুমে এসে ঢুকতেই ফোনটা হাতে তুলে নিল, কল করলো আরুশি এর কাছে ৷
আরূ সেই সকাল বেলা ঘুমিয়ে ছিল তারপর থেকে আর ঘুম থেকে ওঠেনি , একেবারে যখন উঠেছে তখন বিকাল চারটে তারমধ্যে পার্লার থেকে লোকজন চলে এসেছে সাজানোর জন্য,তাই আর বেশি সময় পাইনি আরিশের মায়ের সাথে কথা বলার জন্য ৷
যেটুকু সময় পেয়েছে সেটুকু সময়ের মধ্যে আরিশের প্রতি নিজের অভিযোগ জানিয়েছে অনিকা খানকে ৷
উনি ঘরে বসে ছিলেন তখন আরু উনার পাশে গিয়ে বসলেন,,,,

__” কেমন আছিস মা এখন?”
__” আলহামদুলিল্লাহ্ আমি ভালো আছি আন্টি, তোমার সাথে আমার একটা কথা ছিল ৷”
__” কি কথা আরু মা ৷”
__” আসলে আন্টি আমি কালকে সারারাত ওনার সাথে মানে তোমার ছেলে আরিশের সাথে ছিলাম ৷ তো উনি জানিয়েছেন যে উনি আমাকে ভালোবাসেন , তারপর আমাকে হলুদ ও দিয়েছেন উনি, আর বললেন যে ভালবাসলে যে বিয়ে করতেই হবে সেটা ওনার ডিকশনারিতে নেই, উনি আবার আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন যেখানে উনি নিজেই প্রথমে নিজের ভালোবাসাটাকে ব্যক্ত করেছেন ৷ আন্টি তুমি বল এখানে আমার কি দোষ , একটা মানুষের মনটাকে আর কতবার টুকরো টুকরো করে ভাঙলে উনি শান্তি পায় ৷”
__” একটা কথা মনে রাখিস যে ভাঙে জোড়াটাও কিন্ত আবার সেই দিতে জানে তাই অপেক্ষা কর ৷’
উনি আরুকে আর কিছু বলতৈ না দিয়ে একটা জুয়েলারি বক্স বার করে তা থেকে হারটা বকর করে আরুর গলায় পরিয়ে দিলেন৷

__” একি আন্টি তুমি এটা আমাকে দিচ্ছ যে তুমি তো এটা !”
__” হ্যাঁ আমি এটা আমার ছেলের বউয়ের জন্য বানিয়ে ছিলাম তবে আমার ছেলের বৌয়ের জায়গায় আমি সবসময় তোকেই ভেবেছি তাই এটা যদি তোকে না দিয় আমি অন্য কাউকে কিভাবে দিব বল ৷”
উনি অনেক জোর করলেন হারটা নেওয়ার জন্য তাই আর আরু না করতে পারল না ৷
পার্লারের লোকজন এখন আরুকে সাজাচ্ছে আর তখনই আরুর ফোনে ফোন আসলো,,,,

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ২২

__” আপু এখন সাজাচ্ছি তাই ফোনটা না ধরলেই ভালো হয় ৷”
__” কিন্তু আপু যদি জরুরি কল হয় তাহলে !”
__” আচ্ছা আপনি শুধু হ্যাঁ হু করবেন তার বেশি নয় ৷”
__”আচ্ছা ঠিক আছে ৷”
আরু ফোনটা হাতে নিতেই দেখলে আরিসের ফোন ৷ সকলের সামনে ফোনটা ধরবে বলে এতটা হুজুগ নিয়ে বলল আর এখন কলটা না ধরে ফোনটা কেটে দিতেও পারছে না, তাই না পেরে ফোনটা কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে আরিশ বলে উঠলো,,,

__” আরূপাখি তোমার শরীরটা খারাপ ?”
__” হুমম ৷”
__” তুমি বমি করেছো?”
__” হমম ৷”
__” এখন ঠিক আছ তুমি ?”
__” হুমম ৷”
__” তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো তাইনা ? ”
__” হমম ৷”(চটজলদিতে )

__” দেখেছো তুমি আমাকে ভালোবাসো কিন্ত তুমি আমাকে বলেছিলে যে তুমি কখনো বলবে না যে তুমি আমাকে ভালোবাসো , বাট এখন তুমি বলেই ফেললে ভালোবাসো তার মানে পানিশমেন্ট তোমাকে পেতেই হবে ৷ পানিশমেন্ট এর জন্য রেডি থাকো আরুপাখি ৷ আর কংগ্রাচুলেশন আমার বাবুর আম্মু হওয়ার জন্য ৷”
কথাটা শুনে আরূরর চোখ বড় বড় হয়ে গেল , কারণ ওদের মাঝে এমন কিছুই হয়নি যে তার জন্য আরিশ এই কথা বলবে, শুধুমাত্র একটা ঘটনার ভিত্তিতে আরিশ এসব বলছে ৷ এর থেকে আরূ আরো বেশি কিছু শোনার আগেই ফোনটা কেটে দিল ৷ আরিশ ফোনটা কেটে দিয়ে হো হো করে হাসতে লাগলো ৷সত্তিই মেয়েটাকে ও কোনদিন পাগল না করে দেই ৷

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ২ পর্ব ২৪