তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৩

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৩
জাবিন মাছুরা

আমার কথা শুনে ভাইয়া ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে উঠলো,
– যাব না। আমার ঘর আমি কেন যাব? প্রয়োজন হলে তুই যাবি।(ত্বকি)
ভাইয়ার কথা শুনে আমি কান্না মাখা কন্ঠে বলে উঠলাম,
– প্লিজ ভাইয়া, আপনি একটু বাইরে যান।(মেঘা)
– না, আমি যেতে পারব না। দেখ, আমি প্রচুর ক্লান্ত তাই এখন ঘুমোব। আমাকে ডিস্টাব করবি না। তোর যেখানে ইচ্ছে সেখানে থাক। (ত্বকি)

কথাগুলো বলেই ভাইয়া বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লেন। আমি শাড়ি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ভাইয়া চোখ বন্ধ করে রয়েছে।মানুষ যে কতটা গম্ভীর হতে পারে তাকে না দেখলে কখনো জানতে পারতাম না।
কিছুক্ষণ পর আপু রুমে এসে বলে উঠলো,
– কিরে মেঘা, তুই এখনো শাড়ি পড়িস নি?(তিথি)
আপুর কথা শুনে আমি অবাকের সাথে বলে উঠলাম,
– আমি একা কীভাবে পড়ব?(মেঘা)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– সরি, ভুলে গিয়েছিলাম যে তুই একটা পিচ্চি। আচ্ছা আমি পড়িয়ে দিচ্ছি। (তিথি)
বলেই আপু আমার ওড়নায় হাত দিতেই, আমি বিষ্ময়ের সাথে বলে উঠলাম,
– অসম্ভব, আমি এই ঘরে পড়ব না।(মেঘা)
– কেন রে?(তিথি)
– এই ঘরে তো ভাইয়া শুয়ে আছে। (মেঘা)

– সমস্যা নেই। ভাইয়া ঘুমিয়ে পড়েছে। তাছাড়া তুই তো ছোট মানুষ। (তিথি)
আপুর কথা শুনে আমার মাথা ঘুরে উঠলো। বলে কি আমি নাকি ‘ছোট মানুষ’।কান্না মাখা কন্ঠে বলে উঠলাম,
– তুমি কি পাগল হয়ে গিয়েছ? এমন কথা বললে আমি কিন্তু কান্না করে দিব।
মেঘার কথা শুনে তিথি হতবম্ব হয়ে গেল। সামান্য একটা ব্যাপারে মেয়েটা কেঁদে দিতে চলছে। মেঘার কান্না মাখা মুখ দেখে সে বলে উঠলো,

– আরে বাবা, কাঁদতে হবে না। আমার রুমে চল।(তিথি)
আপুর বলতে দেরি, তার আগেই আমি ভাইয়ার রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। এক দৌড়ে আপুর রুমে চলে এলাম।
আপু আমার পিছু পিছু চলে এসে বলে উঠলো,
– যা বাথরুমে যেয়ে ফ্রেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে আয়। (তিথি)
– কেন?একটু আগেই তো গোসল করলাম।(মেঘা)
– আরে গাধী,তোকে সাঁজাব তাই।(তিথি)
– না ধুলে হবে না। (মেঘা)
– না হবে না। যা,, (তিথি)
– যাচ্ছি।(মেঘা)
আপুর কথা মতো ফ্রেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে এলাম।

আপু আমাকে তার সামনে বসিয়ে ব্যাগ থেকে আটা-ময়দার বের করল। যা দেখেই আমার অস্থির লাগতে শুরু করল। ছোট একটা চোক চেপে আপুকে বলে উঠলাম,
– আপু এগুলো না দিলে হয় না। শুধু শাড়ি পড়ি?(মেঘা)
– না হয় না। চুপ,, (তিথি)
– আচ্ছা বকা দেও কেন? অল্প করে দিও। (মেঘা)
– ঠিক আছে অল্প করেই দিব। (তিথি)

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ২

আপু আমার কথা মতো মুখে হালকা মেকআপ, ঠোঁটে হালকা লাল রংয়ের লিপস্টিক, চোখের নিচে কাজল আরো কি কি যে দিয়ে দিল। মুখের সাজ কমপ্লিট করার পরে, সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিল।
– ওয়াও ভাবি, তোকে তো অনেক সুন্দর লাগছে। আমি তো শেষ,, (তিথি)
আপুর মুখে নিজের প্রশংসা শুনে আমি হালকা হেসে দিয়ে বলে উঠলাম,
– মিথ্যে কথা বলো কেন? (মেঘা)
-মিথ্যে বলছি না। তুই একবার গিয়ে আয়নায় দেখ।
আপুর কথা মতো আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। নিজেকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমাকে একদম চেনা যাচ্ছে না। অনেকটা বড়ো বড়ো লাগছে।

শাড়ি পড়ে আপুর রুমে বসে রয়েছি।ভাইয়ার রুমে আর যায়নি ।আপু আমাকে একা রেখে গোসল করতে গিয়েছে।
হঠাৎ করে মামির আওয়াজ পেলাম। হয়তো আমাকে ডাকছে। তাই মামির কাছে যাওয়ার জন্যে আপুর রুম থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
শাড়ি পরে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।ভুল করে শাড়ির সাথে পা বেজে উঠলো। সাথে সাথে চোখ-দুটো বন্ধ করে ফেলালাম।
কিন্তু পড়ে যাওয়ার আগেই কারো শক্ত হাতে স্পর্শ পেয়ে শিউরে উঠলাম।

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৪