তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৪

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৪
জাবিন মাছুরা

কারো কোন আওয়াজ না পেয়ে, পিটপিট করে চোখ খুললাম।সামনে তাকিয়ে দেখলাম, তিথি আপু কোমরে হাত দিয়ে দিয়ে, আমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে বোকা বোকা হাসি দিয়ে বলে উঠলাম,
– আপু, ওভাবে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছো কেন? আমার কিন্তু ভয় হচ্ছে।(মেঘা)
– এই মেয়ে এখন পড়ে গেল কি হতো জানিস?তুই কি ঠিক মতো চলতে পারিস না? (তিথি)
– সরি আপু।(মেঘা)
– দৌড়ে দিলি কেন? শাড়ি পড়ে কি কেউ দৌড়
দেয়? (তিথি)

– আসলে আপু, মনে হলো মামি ডেকেছে।তাই তো দৌড় দিয়েছি। সরি, আর কোনদিনও শাড়ি পড়ে দৌড় দিব না। রাগ করে থেকো না প্লিজ। (মেঘা)
– ঠিক আছে। আর সরি বলতে হবে না।নানুরা চলে এসেছে তাই আম্মু তোকে ডেকেছে।আমার সাথে চল।(তিথি)
– হুম চলো। (মেঘা)
আপু আমাকে ধরে নানু মনির কাছে নিয়ে এলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ছোফার উপর মাথা নিচু করে বসে আছি। নানু মনি আমার সামনের ছোফায় বসে আছে।তার পাশে একজন মহিলা বসে আছে।নানু মনি কোন কথা না বলে চুপ করে বসে আছেন। যার ফলে আমর প্রচুর ভয় লাগছে। ভিতরে ভিন্ন ধরনের অনুভূতি কাজ করছে।
হঠাৎ ত্বকি ভাইয়ার আম্মু বলে উঠলেন,
– মেঘা মা, এইযে তোর নানু মনি। মনে আছে তোর, ছোট বেলায় নানু মনির সাথে কত খেলতি? (ত্বকির মা)
আমি নরম সুরে উওর দিলাম,
– উম্মহু।মনে নেই।(মেঘা)
নানু মনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠলেন,

– আমার ত্বকির বউকে বেশ পছন্দ হয়েছে। আমার নানু ভাইয়ের পছন্দ আছে বলতে হবে।
নানু মনির কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। বলে কি, ত্বকি ভাইয়া নাকি আমাকে পছন্দ করে। এই কথা আমার একদমই বিশ্বাস হচ্ছে না।
– আমি কিন্তু মেঘাকে পুতুল বলে ডাকব। (নানু)
আমাদের কথায় মাঝে, নানুর পাশে থাকা মহিলা বলে উঠলেন,
– এই যে বৌমা, আমি সম্পর্কে তোমার মামি হয়।তা বৌমা তুমি কোন ক্লাসে পড়? (ত্বকির মামি)
– ক্লাস টেন এ।(মেঘা)

আমার কথা শুনে ত্বকি ভাইয়ার মামি তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
– তোমাদের বিয়ে হলো কীভাবে? দেখে তো মনে হচ্ছে, তোমার বয়স এখানো আঠারো বছর হয়নি।(ত্বকির মামি)
মামির কথা শুনে আমি কিছু বুঝতে পারলাম না। তিথি আপু মামিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
– চিন্তা করবেন না মামি। এইতো ছয় মাস পরে মেঘার বয়স আঠারো বছর হবে।(তিথি)
– তাই নাকি? তাও তো বাচ্চা মেয়ে। আমি ভেবেছিলাম ত্বকির সমবয়সী হবে। ত্বকি শেষে কিনা একটা বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করল। (ত্বকির মামি)
ত্বকি ভাইয়ার আম্মু বলে উঠলো,

– শোন ভাবি, আল্লাহ ত্বকির জনেই মেঘাকে লিখে রেখেছে। (ত্বকির মা)
– যাই বলো না কেন আফা, তোমার ছেলের বউ বয়স অনুযায়ী একটু বেশিই বুঝে।
মামির কথা শুনে আমার প্রচুর কান্না পেল। ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না আটকাতে চেষ্টা করলাম।
নানু মনি ধমক দিয়ে মামিকে বলে উঠলো।
– বৌমা, বিয়েটা কি তুমি করেছো? (নানু)

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৩

নানুর কথা শুনে মামি চুপ হয়ে গেল। হয়তো নানু মনি বুঝতে পেরেছেন যে আমি কষ্ট পেয়েছি। তাই আমার পাশে এসে বসে, কপালে চুমু খেয়ে বলে উঠলেন,
– পুতুল মনি, তোকে দেখে কিন্তু আমর হিংসা হচ্ছে।
নানু মনির কথা শুনে তিথি আপু বলে উঠলো,
– কেন গো নানু?
– কারন, আমার ত্বকি তো এখন আর আমার দিকে তাকাবে না।এত সুন্দরী বউ থাকলে কি আমার কথা মনে পড়বে। (নানু)
– হুম ঠিক বলেছো। তোমার জন্য আমার কষ্ট লাগছে। (তিথি)
নানুর কথা শুনে আমার অনেক লজ্জা পেলাম। অনেক মজার মানুষ। খুব তাড়াতাড়ি আমার সাথে মিশে গেলেন।

রাতের খাবার খাওয়া পর অনেক ক্ষণ গল্প করলাম। আজকে সারাদিনে একবারও ত্বকি ভাইয়ার সাথে দেখে হয় নি। নানুর সাথে একবার দেখা করতে এসেছিল সে কিন্তু আমর সাথে দেখা হয় নি।

আমি আর তিথি আপু মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম আজকে আমারা নানুর কাছে থাকব।
কিন্তু হঠাৎ করেই কোথায় থেকে যেন ত্বকি ভাইয়া এসে আমার হাত টেনে ধরে তার রুমে নিয়ে আসলে। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে অনেক রেগে আছেন।
রুমে এনে রাগী কন্ঠে বলে উঠলেন,
– ফাজিল, সারাদিন কোথায় ছিলি,, । (ত্বকি)

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৫