তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৫

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৫
জাবিন মাছুরা

রুমে এনে রাগী কন্ঠে বলে উঠলেন,
– ফাজিল,সারাদিন কোথায় ছিলি? (ত্বকি)
– নিশ্চুপ, (মেঘা)
– এই কথা বলছিস না কেন? (ত্বকি)
– আসলে ভাইয়া, নানু মনিরা এসেছে তো,, (মেঘা)
– চুপ, নানু মনিরা এসেছে তাই বলে একবারও রুমে এলি না? যা বই বের কর। পড়তে বস।(ত্বকি)
ভাইয়া কন্ঠে শুনে বুঝতে পারলাম, খুব রেগে আছে। তাই কোন কথা না বলে চুপচাপ ভদ্র মেয়ের মতো বই বের করে পড়তে বসলাম।

ভাইয়া আমাকে কয়েকটা অংক করার জন্য দাগ দিয়ে দিল। আর গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,
– তিনটা অংক দিয়েছি। যদি পনেরো মিনিটের মধ্যে শেষ না করতে পারিস, তাহলে তোর খবর আছে।(ত্বকি)
বলেই ভাইয়া ফোন স্কোল করতে লাগলেন। আমার অংক গুলো দেখেই ভয় লাগতে শুরু করল। কারন একটা অংক পারি না।
খাতায় অংক তুলে বার বার চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু একটা অংকও মিলছে না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কোথায় দিয়ে যে সময় শেষ হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। ঠিক পনেরো মিনিট পর ভাইয়া ফোন থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন,
– শেষ করেছিস? (ত্বকি)
আমি ভয়ে কোন উত্তর দিলাম না। মাথা নিচু করে খাতার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
হঠাৎ করে ভাইয়া আমার হাত থেকে খাতা নিয়ে দেখতে শুরু করলেন। আমি মনে মনে দোয়া পড়তে লাগলাম।

ভাইয়া কিছুক্ষণ পর খাতা থেকে চোখ তুলে রাগী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।শান্ত কন্ঠে বলে উঠলেন,
– মেঘা,,, (ত্বকি)
তার গম্ভীর কন্ঠ শুনে আমার হাত পা কাঁপছে শুরু করল। ভয়ে আমি নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
– লুক এক মি।(ত্বকি)
ভাইয়ার ধমক শুনে আমি ছিট্টে উঠলাম।অসহায় চাউনিতে তার দিকে তাকালাম।
– তুই কি আমার মান-সম্মান রাখবি না? (ত্বকি)
– নিশ্চুপ (মেঘা)
– তোর পরীক্ষার আর এক মাস বাকি নেই, আর এখন তোর অংক ভুল হয়। পরীক্ষার খাতায় কি লিখবি? (ত্বকি)

– নিশ্চুপ(মেঘা)
– বার বার তোকে বলি মাথা থেকে আজেবাজে চিন্তা বাদ দিয়ে পড়ালেখায় মনোযোগ দে।(ত্বকি)
আমি কোন কথা না বলে চুপচাপ শুনে যাচ্ছি। প্রচন্ড অস্থির লাগছে। হঠাৎ করে ভাইয়া আমার মাথা থেকে শাড়ির আঁচল ফেলে দিল। চিৎকার করে বলে উঠলো,
-এত সাজে গুঁজে থেকে প্রমাণ করতে চাস যে তুই আমার ওয়াইফ?(ত্বকি)
তার কথা শুনে এক পলক তার দিকে তাকালাম। ভাইয়া আবারো বলে উঠলো,

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৪

– তোর কি কোন যোগ্যতা আছে ডক্টর আবিদ রহমান ত্বকির বউ হওয়ার? (ত্বকি)
আমি আর সহ্য করতে পারলাম না।বুকের মাঝে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হতে লাগল ।প্রচুর কান্না পাচ্ছে।
– শোন, আমার বউ হওয়ার স্বপ্ন বাদ দিয়ে পড়াশোনা কর। আমি এই বিয়েটা রাখতে চায় না।তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছয় মাসের মধ্যে তোকে ডিভোর্স দিয়ে দিব।(ত্বকি)
কথাগুলো বলেই ভাইয়া টেবিলে থাকা ফুলদানি ফেলে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন।

আমি ভাঙা ফুলদানির দিকে তাকিয়ে কাঁদতে লাগলাম। আমার সাথে কেন এমন হচ্ছে? আমি তো তাকে বিয়ে করতে চায় নি। তাহলে কেন সে এমন করছে? সেদিন সে চাইলে পারত তো বিয়ে ভেঙে দিতে। এখন বিয়ে করে কেন ডিভোর্স দিতে চাইছেন?

রাত তিনটে বাজে আমি কান্না থামাতে চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না। রাতে সে আর রুমে আসেনি।সে কোথায় গিয়েছে তাও যানি না।

সকাল বেলা জানালা ভেদ করে মিষ্টি আলো মুখে পড়তেই আমার ঘুম ভেঙে গেল। পিটপিট করে চোখ খুলতেই চারপাশে কাউকে দেখতে পেলাম না। হয়তো রাতে ভাইয়া আর ফিরেনি।
মাথায় প্রচুর ব্যথা করছে।আস্তে আস্তে উঠে বাথরুমে গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে রুমে বাইরে আসতে ভাইয়ার ফোনের আওয়াজ পেলাম।মনে হয় ভাইয়া ভুলে ফোন রেখে গিয়েছে।
ফোন বার বার বেজে চলেছে। প্রথমে ধরতে না চাইলেও অবশেষে ব্যাধ্য হয়ে ফোন রিসিভ করতেই আমি অবাক,,

তোর নামের বৃষ্টি পর্ব ৬