নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ১৯

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ১৯
লেখিকাঃ Tamanna Islam

আব্রাহাম হোটেলের হলরুমেই ফাংশনে ছিলো। সাথে বাকি সবাই আছে। তবে তখন হোটেলের ভেতরে রাশেদ আসে। বেশ তাড়াহুড়ো তে আছে সে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। রাশেদ দ্রুত পায়ে আব্রাহামের কাছে আছে। আব্রাহাম এতোক্ষন হেসে হেসে কথা বলছিলো কিন্তু রাশেদ কে এভাবে আসতে দেখে সে খানিক কপাল কুচকায়। রাশেদ আব্রাহামের পাশে এসে দাড়িয়ে ফিসফিস করে বলে ওঠে….

রাশেদ;; স্যার ঝামেলা পেকে গেছে।
আব্রাহাম;; কি হয়েছে?
রাশেদ;; রুবেলের লাশ তো এখন হয়তো পচেও গেছে কিন্তু…
আব্রাহাম;; বলো..!
রাশেদ;; কিন্তু স্যার যখন আপনি রুবেল কে ওমন ভাবে মেরে ওই রুমে লক করে রেখে এসেছিলেন। তখন সেই ভাবেই কেউ রুবেলর বেশ কিছু ছবি তুলে নিয়েছে। মানে রুবেলের আধা মরা অবস্থায় কিছু ছবি।
আব্রাহাম;; হুয়াট ননসেন্স। কীভাবে সম্ভব?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রাশেদ;; জানি না স্যার। একটু আগেই আমার ফোনে ছবি গুলো সেন্ড হয়েছে। কে দিয়েছে জানি না। যেই একাউন্ট থেকে এসেছিলো সেটাও এখন ডিসএবেল দেখাচ্ছে।
আব্রাহাম;; রায়হান করেছে। (চোখ মুখ শক্ত করে)
রাশেদ;; জ্বি স্যার?
আব্রাহাম;; I am damn sure এটা রায়হানের কাজ।
রাশেদ;; কিন্তু স্যার যদি এটা রায়হান ই করে থাকে তাহলে সে কেন পুলিশ অফিসার দের ইনফর্ম করলো না বা মিডিয়ার লোকজন দের ডাকলো না?

আব্রাহাম;; রুবেল রায়হানের পিএ, আর সেই ক্ষেত্রে পুলিশরা রায়হান কেই জিজ্ঞসা বাদ বেশি করবে। অর্থাৎ ভেতর থেকে সব নাড়ি ভুড়ি একদম খুচিয়ে বের করবে। রায়হানের যে বেআইনি কাজ গুলো আছে সেগুলো তো আগে থেকেই সবার জানা তবে এবার যেহেতু মার্ডার কেস তো তাকেই জেল-হাজতের চক্কর বেশি কাটতে হবে। নিজের কাজ গুলোতে পর্দা ফালানোর জন্য রুবেলের জন্যে সে কোন স্টেপ নেয় নি।
রাসেদ;; ওহহ আচ্ছা আচ্ছা।
আব্রাহাম;; ছবি গুলো কোথায়?

রাশেদ;; স্যার আমার ফোনেই। (ফোন টা আব্রাহামের দিকে দিয়ে)
আব্রাহাম;; লিসেন তোমার ফোন আমার লাগবে। আর চিন্তা করো না আমি শুধু পিক গুলো নিয়ে তোমার মেমোরি তোমাকে দিয়ে দিবো। আর নিউ ফোন পেয়ে যাবে কিছুক্ষনেই মাঝেই।
রাশেদ;; জ্বি স্যার সমস্যা নেই। আপনি নিন।

রাশেদ তার ফোন টা আব্রাহামকে দিয়ে এসে পরে। আব্রাহাম ফোনের ভেতরে থাকা পিকচার গুলো ভালোভাবে খেয়াল করে। আব্রাহামের সন্দেহ হচ্ছে ওই রুমের কোথাও ক্যামেরা ছিলো না তো। কারণ আব্রাহাম যে শক্ত ভাবে গার্ড দের বলে রেখে এসেছিলো তাতে কারো ভেতরে প্রবেশ করা ইম্পসিবল। আর যদি ক্যামেরা থেকে থাকে তাহলে সেখানেই ক্যাপচার্ড হয়ে গেছে। যাই হোক এতে আব্রাহামের কোন কিছুই যায় আসবে না So let it be….

আব্রাহাম ফোন টা নিজের কাছে রেখে দেয়। তবে এতোক্ষনে আব্রাহামের মাথায় আইরাতের খেয়ল আসে। আইরাত ওয়াসরুমের কথা বলে গেছে বেশ অনেক সময় এখনো আসার নাম নেই। আব্রাহামের কপালে এবার চিন্তার ছাপ পরে। আব্রাহাম সারা হলরুমে আইরাত কে খুজতে শুরু করে। কিন্তু পায় না, আসে নি এখনো তার মানে। আব্রাহাম আর কিছু না ভেবে সোজা ওয়াসরুমের দিকে হাটা ধরে।

অন্যদিকে~~
আইরাতকে একটা অন্ধকার রুমে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একটা হাত আইরাতের মুখ চেপে ধরেছে। আইরাত ইচ্ছে মতো ছুটাছুটি করছে ছাড়া পাবার কিন্তু পাচ্ছে না। ক্রমশ তাকে একটা অন্ধকার রুমের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেতে যেতে একটা সময় আলোতে এসে পরে। আইরাতের মুখ চেপে ধরে দেওয়ালের সাথে কিছুটা লাগিয়ে ধরে। এতোক্ষন সেই ব্যাক্তিটির মুখ দেখতে না পারলেও এবার আইরাত স্পষ্ট দেখতে পারছে। সে রায়হান। রায়হান কে এমন ভাবে দেখে আইরাতের চোখ গুলো বড়ো বড়ো হয়ে গেলো। আইরাত কখনো ভাবেই নি যে রায়হান এমন কিছু করবে। আইরাত এবার যেন ছাড়া পাবার আরো বেশি চেষ্টা করছে কিন্তু রায়হান ছাড়ছে না। আইরাতের মুখ টা নিজের হাত দিয়ে চেপে ধরে রেখেছে।

আইরাত;; উম উমম উম।
রায়হান;; হুসসসসসসসসস। আমি, ভয় পেয়ো না।
আইরাত;; (আইরাত ইশারা দিয়ে তার মুখের ওপর থেকে হাত সরাতে বলে)
রায়হান হাত সরিয়ে নেয়।
আইরাত;; মানে কি এইসবের। আপনি কেন এখানে আনলেন আমায়?
রায়হান;; শুনো কিছু কথা…
আইরাত;; আমি আপনার কোন কথাই শুনতে চাই না।
আইরাত রেগে চলে আসতে নিলে রায়হান আবার আইরাতের হাত ধরে ফেলে। এবার আইরাতের মেজাজ চরমে পৌঁছে যাচ্ছে।

আইরাত;; সমস্যা টা কি আপনার?
রায়হান;; শুনো আমি তোমার খারাপ চাই না বুঝলে। আর এছাড়াও এতো সুন্দর একটা মানুষের খারাপ কেউ কি করে চাইতে পারে বলো।
আইরাত;; আলতু ফালতু বকা বন্ধ করুন। ছাড়ুন।
রায়হান;; এতো সহজেই কীভাবে?
আইরাত;; আব্রাহাম আপনাকে আমার সাথে দেখলে খুন করে ফেলবে আপনাকে।

রায়হান;; হয়েছে আব্রাহামের তারিফ করা। আব্রাহাম আব্রাহাম আব্রাহাম সবার মুখে এই একই কথা। তোমার যে এই সো কল্ড আব্রাহাম আছে না এর কাম কাজ জানলে এরপর থেকে ওর নাম নিজের মুখেও আনবে না।
আইরাত;; সে যাই হোক। আপনি ছাড়ুন, যেতে দিন আমায়।
রায়হান;; লিসেন পছন্দ করি আমি তোমাকে। আর তোমার যে ওই আব্রাহাম আছে না সে মানুষ খুন করে ঘুড়ে বুঝলে তুমি। আর এখানে আমি তোমাকে এনেছি ওর ব্যাপারেই কিছু বলতে।
আইরাত;; আমি শুনতে চাই না কিছু।

রায়হান;; শুনো আব্রাহাম বিজনেস ম্যানের পাশাপাশি এক বড়ো মাফিয়াও বটে বুঝলে। খুন-খারাবা তার নিত্ত দিনের কাজ। এমনকি একটু আগেও একজন কে মেরে রেখে এসেছে ও।
আইরাত;; কি বলছেন এইসব?
রায়হান;; কি বিশ্বাস হয় না তো তাই না। তাহলে এটা দেখো আমি প্রমাণ ছাড়া কিছুই বলি না।

এই বলেই রায়হান আইরাতের সামনে ফোনে একটা ভিডিও ক্লিপ রাখে। আইরাত অবাক হয়ে ফোন টা হাতে নিয়ে নেয়। ভিডিও এর প্রথমেই দেখা যাচ্ছে একটা লোককে বেধে রাখা হয়েছে। তার সামনেই অন্ধকারে একটা লোক বসা ছিলো হাতে কিছু একটা নিয়ে। ভিডিও তে লোক টি আলোর কাছে আসতেই আইরাতের মুখ হা হয়ে যায়। লোকটি আব্রাহাম আর তার হাতে বড়ো ধরনের একটা রড৷ আইরাত দেখলো আব্রাহাম লোকটির সামনে গিয়ে কিছু না বলেই তার মুখ টা ওপরে তুলে হাতে থাকা রড টা একদম ঢুকিয়ে দিলো সেই লোকটার চোখে। ইশশশশশ কি ভীবৎশ দৃশ্য রে বাবা। এটা দেখার সাথে সাথে আইরাত একটা চিৎকার দিয়ে হাত থেকে ফোন টা নিচে ফেলে দেয়। আর রায়হান বাকা হাসি দেয়। আইরাতের হাত পা গুলো যেন কাপছে ভয়ে। মাত্রই কি দেখলো নিজেই বিশ্বাস করতে পারছে না। আইরাত স্পষ্ট দেখেছে যে সেটা আব্রাহাম ছিলো।

রায়হান;; কি হলো তো এবার বিশ্বাস..!
আইরাত;; _____________
আইরাত এবার কিছু না বলেই সোজা চলে আসতে নেয় কিন্তু রায়হান আবার তার হাত ধরে থামিয়ে দেয়। এবার যেন কিছুটা অসভ্যতামোই করতে লাগলো রায়হান। আইরাত ছাড়া পাবার জন্য চিল্লাচ্ছে।

আব্রাহাম এদিক সেদিক আইরাত কে অনেক খুজেছে কিন্তু আইরাত কোথাও নেই। খুজতে খুজতে আব্রাহাম ওয়াসরুমের পাশে চলে গেলো। আরো কিছুদূর যেতেই আব্রাহামের কানে চিল্লানোর আওয়াজ ভেসে আসে কিছুটা। আব্রাহামের বুঝতে এক মিনিট দেরিও হয় না যে এটা আইরাতের গলা। আব্রাহাম সেদিকেই দৌড়ে চলে যায়। গেতেই দেখে রায়হান আইরাতের হাত ধরে আছে আর আইরাত হাত মুচড়াচ্ছে। বারুদে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে যেমন দাও দাও করে আগুন জ্বলে এখন ঠিক তেমন ভাবেই আব্রাহামের শরীরে আগুন জ্বলছে।

চোখ গুলো হুট করেই লাল বর্ণ ধারণ করে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিতে দেখে আইরাতের হাতের পাশে কিছুটা কেটে গেছে চুরি দিয়ে। হাত বেশি মুচড়ানোর ফলে কেটে গেছে। আইরাত অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে। আইরাতের চোখে পানি দেখে আব্রাহামের যেন এবার রাগের বাধ ভেঙে গেলো। আব্রাহাম সোজা গিয়ে রায়হানের বুক বরাবর দেয় এক লাথি মেরে। এতে রায়হান ছিটকে গিয়ে বেশ দূরে সরে যায়। আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে নিজের জেকেট থেকে রুমাল বের করে আগে আইরাতের কাটা স্থানে বেধে দেয়। রক্ত ঝড়ছে৷ আইরাত তো মাথা নিচু করে দিয়ে আছে৷ তবে আব্রাহাম আইরাতের হাত বাধছে আর রক্তচক্ষু নিয়ে এক মনে আইরাতের দিকেই ফাকিয়ে আছে। আব্রাহাম আইরাতের হাত ছেড়ে দিলে আইরাত এক সাইডে গিয়ে দাঁড়ায়। আব্রাহাম এবার রায়হানের কাছে গিয়ে তার শার্টের কলার ধরে তাকে তুলে।

আব্রাহাম;; তোর সাহস হয় কি করে আইরাত কে টাচ করার। তোর কলিজা টা ছিরে ফেলবো আমি। জানোয়ার আর কতো মেয়ে বাজি করবি। কবে মানুষ হবি৷ আর যাই করিস না কেন আমার আইরাতের দিকে চোখ তুলে তাকালে মনে রাখিস তোর জীবনের শেষ দিন হবে।
রায়হান;; হাহ, কিছুই করতে পারবি না তুই।

আব্রাহাম রায়হানের কলার খামছে ধরে এগুলো রাগে বলছিলো। কিন্তু এই রায়হান তবুও শয়তানি হাসি দিয়ে এগুলো বলছে। মানে কি পরিমাণ নির্লজ্জ হলে মার খাবার পরও কেউ হাসে। এবার তো আব্রাহামের মাথায় রক্ত জমাট ধরে গেলো। নিজের যতো শক্তি ছিলো সব দিয়ে আব্রাহাম লাগাতার রায়হানের মুখে ঘুষি দিতে থাকে। ঘুষি দিচ্ছে তো দিচ্ছেই থামার কোন নাম গন্ধ নেই। একের পর এক ঘুষি সোজা রায়হানের মুখের ওপর পরছে৷ আইরাত ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে রুমের এক কিণারে হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

খুব ভয় লাগছে তার। আব্রাহাম কে হিংস্র লাগছে দেখতে। প্রচন্ড রকমের রেগে আছে। আব্রাহাম মনে হচ্ছে আজ রায়হানের মুখ টা একদম থেতলেই দিবে। ইতোমধ্যেই রায়হানের নাক-মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত পরতে শুরু করেছে। হোটেলের সব স্টাফ আর বাকি লোকজনরা ওপরের রুম থেকে বেশ চিল্লা পাল্লার আওয়াজ পেয়ে সবাই সেখানে ছুটে যায়। গিয়ে দেখে আব্রাহাম পাগলের মতো একের পর এক পাঞ্চ মেরেই যাচ্ছে রায়হান কে। সবাই দ্রুত গিয়ে আব্রাহাম কে থামায়। কিন্তু আব্রাহামের ধারে কাছেও তো কেউ ঘেষতে পারবে না। সবাই রায়হান কে ছাড়িয়ে আনে আব্রাহামের কাছ থেকে খুব কষ্টে। আব্রাহাম এবার ছেড়ে দেয়। রাগে ফুসছে সে। আব্রাহামের হাতের আঙুল গুলোর ওপরে লাল লাল একটা আভা পরে গেছে। এত্তো রেগে আছে আব্রাহাম বলার বাইরে। তবে এই রাগ টা যেন আব্রাহামের ওপর বেশ সুট করে। মানানসই।

আব্রাহাম;; আজ বেচে গেলি। এর পরেরবার থেকে না ই তোকে বাচানোর জন্য কেউ আসবে আর না ই আমি তোকে বাচিয়ে রাখবো।
এই বলেই আব্রাহাম সেখান থেকে আইরাতের হাত ধরে নিয়ে বাইরে এসে পরে। সবাই রায়হান কে ধরাধরি করে নিয়ে আসে। আব্রাহাম এখনো প্রচুর রেখে আছে৷ যেভাবে আইরাতের হাত ধরেছে আর যেই গতিতে আইরাতকে নিয়ে যাচ্ছে এতেই আব্রাহামের রাগ প্রকাশ পাচ্ছে। আইরাত ভয় পেয়ে আছে অনেক। আইরাতকে হলরুমের সবার সামনে দিয়ে নিয়ে সোজা তার রুমে চলে যায় আব্রাহাম। রুমে গিয়ে আইরাতকে বিছানাতে ধপ করে বসিয়ে দেয়। তারপর নিজের ওপর থেকে জেকেট টা খুলে ছুড়ে মারে।

শার্টের হাতা গুলো গুটিয়ে আইরাতের সামনে বসে। চোখ মুখ বেশ শক্ত তার। পাশে থাকা ফার্স্ট এয়িড বক্স টা নিয়ে আইরাতের হাত টা টান দিয়ে ধরে নিজের কাছে আনে। রুমাল টা খুলে রেখে দেয়। বেশ খানি কেটেছে আইরাতের হাত। আব্রাহামের রুমাল টা রক্তে ভিজে গেছে। আব্রাহাম খুব রুডলি বিহেভ করছে। তা সম্পূর্ণই রাগের বশে বুঝাই যাচ্ছে। আব্রাহাম কিছু না বলেই সেভলনের শিশি টা নিয়ে তুলি তে ভরায়। তারপর তা সোজা আইরাতের হাতে চেপে ধরে। কাটা স্থানে সেভলন যেন মরিচের মতো জ্বালা পোড়া শুরু করে দিলো। আইরাত ফট করে হাত টা টান দিয়ে এনে পরে তারপর ফুপিয়ে কেদে দেয়। আইরাতের এই চোখের পানি দেখে যেন আব্রাহামের রাগ এক নিমিষেই উড়ে গেলো।

আব্রাহাম আলতো ভাবে আইরাতের হাত টা নিয়ে এবার খুব যত্নের সাথে সেভলন লাগিয়ে দিতে থাকলো সাথে আস্তে আস্তে ফু ও দিচ্ছে। আইরাত তাকিয়ে তাকিয়ে আব্রাহাম কে দেখছে। আইরাতের বিশ্বাসই হচ্ছে না যে এই সেই আব্রাহাম যে কিনা এতো ভয়ংকর ভাবে একজন কে মেরেছে। তখনই তার আরেক রুপ আর এখনই তার আরেক রুপ। আইরাত আর এভাবে চুপ করে থাকতে পারলো না।
আইরাত;; আ আপনি, আপনি রা..রায়হানের পি পিএ কে মেরে ফেলেছেন?
আইরাতের কথায় আব্রাহাম কিছুটা অবাক হয় কিন্তু আইরাতের দিকে তাকায় না। তার হাতে ব্যান্ডেজ করতে করতেই বলে ওঠে.৷

আব্রাহাম;; হ্যাঁ মেরেছি তো।
আইরাত;; কেন মারলেন?
আব্রাহাম;; তোমার জন্য।
আইরাত;; আমার জন্য মানে কি?
আব্রাহাম;; এতোকিছু তোমার ওই ছোট্ট খুলিতে ঢুকবে না। (আইরাতের দিকে তাকিয়ে)
আইরাত;; এভাবে কেউ কাউকে মারে?!
আব্রাহাম;; আমি মারি তো।
আইরাত;; দয়া-মায়া কিচ্ছু নেই আপনার মাঝে?
আব্রাহাম;; না নেই। কারণ আমি এমনই। যে অবস্থা তে আমি আছি সেখানে এইসব দয়া-মায়া থাকা নেহাত হাস্যকর।
আইরাত;; _________________
আইরাতের হাতের ব্যান্ডেজ করা শেষ। নিজের পা গুটিয়ে বিছানাতে বসে আছে। আর আব্রাহাম সোফাতে বসে বসে ফোন ঘাটছে৷

রায়হান এখন ডাক্তারের আন্ডারে। আব্রাহাম তাকে আধা মরা করে দিয়েছে। আব্রাহাম এখন বেশ বুঝতে পারছে যে সব রায়হানের কারসাজি ছিলো এগুলো। আইরাত যখন নিচে নামে ওপর থেকে রায়হান তখন থেকেই আইরাতের দিকে নিজের নজর রেখে দিয়েছিলো। আইরাত আব্রাহামের সাথেই ছিলো। অবশ্যই তা রায়হান দেখতে পারে নি তাই ওয়েটার কে সেই ডেকে নিয়ে সব শিখিয়ে দিয়েছে। আর ওয়েটার তাই করেছে।

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ১৮

সে আইরাতের শাড়িতে ইচ্ছে করেই জুস ফেলে দিয়েছে আইরাত তা ক্লিন করার জন্য ওয়াসরুমে গিয়েছে আর রায়হান তখনই সুযোগ পেয়েছে। এটা ভেবে ভেবেই আব্রাহামের মাথা টা যেন ফেটে যাচ্ছে রাগে।। যাই হোক এবার কিছু একটা করতেই হবে। আব্রাহাম বেশ কিছুক্ষণ ভেবে দুই গ্লাস জুস অর্ডার করে। কয়েক মিনিট পর ওয়েটার এসে রুমের সামনে নক করে। আব্রাহাম গিয়ে জুস দুটো পিক করে। তবে আব্রাহাম জুসের দিকে কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম এক গ্লাস জুস নিয়ে আইরাতের দিকে এগিয়ে যায়। আইরাত আব্রাহামের দিকে তাকায়।

আইরাত;; এটা কেন?
আব্রাহাম;; Drink this,, It’s good for your health…
আব্রাহাম আইরাতকে তা খেতে বলে৷ আইরাত কিছু না বলে খেয়েও নেয়। কিন্তু খাওয়ার পরই আইরাতের কেমন মাথা ঘোড়াতে শুরু করলো। একদম ভনভন করে ঘোড়াচ্ছে। আইরাত আবছা আবছা চোখে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আইরাত কিছুটা শুয়েই পরে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে ঝুকে পরে
আব্রাহাম;; It’s sleeping time babygirl….

আইরাত বুঝলো যে তার ড্রিংক এ আব্রাহাম ই কিছু একটা মিশিয়ে দিয়েছে। আব্রাহাম আইরাতের কপালে একটা চুমু দেয়। আর ততক্ষণে আইরাত চোখ একদম বন্ধ করে ফেলে। আব্রাহাম আইরাতকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। আব্রাহাম এক ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে থাকে। এবার যা করতে হবে তা দ্রুত আর রাতের মাঝেই করতে হবে।

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২০