নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২০

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২০
লেখিকাঃ Tamanna Islam

সকাল ১১ঃ৩০ ~~
সূর্যের আবছা আলো জানালার পর্দা ভেদ করে আইরাতের মুখের ওপর আছড়ে পরছে। আইরাত এতোক্ষন গভীর ঘুমে তলিয়ে ছিলো। মুখের ওপর তীর্যক ভাবে আলো আসাতে চোখ-মুখ খানিক কুচকে ফেলে। মিটমিট করে চোখ মেলে তাকায়। ঘুমের রেশ টা এখনো কাটে নি তার। তবুও আড়মোড়া ভেঙে উঠে পরে। দুই হাত দিয়ে চোখ গুলো ডলছে। হাত-পা গুলো কেমন লেগে গেছে।

হয়তো অতিরিক্ত আর বেকায়দায় ঘুমানোর ফল এটা। বিছানাতে উঠে বসে পরে। ছোট ছোট হাই তুলছে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে প্রচুর। চুল গুলো হাত দিয়েই কোন রকমে ঠিকঠাক করে নেয়। ছোট ছোট চোখে নিজের আশে পাশে দেখে। কিন্তু সবকিছু খেয়াল করতেই যেন আইরাতের মাথায় আকাশ ভেঙে পরে। এই কোথায় সে?এটা কার ঘর? আইরাত নিজের দিকে খেয়াল করে। এবার আরো বেশি অবাক সে ।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

একটা বড়োসড়ো সাদা ধবধবে বিছানাতে রয়েছে সে৷ তার ওপরে সাদা চাদর। পুরো রুমটা বেশ আকর্ষণীয়। সামনে একটা ছোট ফায়ার ওয়াল্ক আছে। সেখানে হয়তো রাতের সময় আগুন লাগানো হয় কিন্তু বর্তমানে সেখানে রয়েছে কিছু শুকনো কাঠ। অন্যান্য দিকে আরো অনেক জিনিস রয়েছে। আইরাত তার বাম পাশে তাকায়। দেখে বা পাশে বেশ বড়ো বড়ো দুটো থাই গ্লাস। আইরাত ঝট করে উঠে পরে। উঠেই থাই গ্লাস টা কিছুটা জোরেই ধাক্কা দেয়।

সেটা সরে যায়। আইরাত বাইরে চলে যায়। বাইরে গিয়ে আইরাতের মুখ আপনা আপনিই হা হয়ে যায়। বাইরে করিডর। অর্থাৎ আইরাত যেখানে শুয়ে ছিলো সেটা রুম আর রুমের পাশেই থাই গ্লাস, সেটা সরালেই করিডর৷ খোলা মেলা মন মাতানো বাতাস এখানে। বাতাসে আইরাতের চুল গুলো অনেক উড়ছে।

করিডরের রেলিং এ দাঁড়িয়ে আইরাত নিচের দিকে তাকায়। দেখে বেশ উঁচু তার মানে সে কোন এক ওপরের তালায় আছে। একদম নিজের সামনের দিক তাকাতেই সব কেমন গুলিয়ে যায়। নিজের সামনে যতদূর চোখ যায় ততদূর শুধু সমুদ্র আর সমুদ্র। সমুদ্রের পাশে সাদা বালি,, বালি গুলোর ওপর সূর্যের আলো পরে কেমন চিকচিক করছে। আর মাঝে মধ্যে সমুদ্রের স্রোত এসে বালি গুলোর ওপর আছড়ে পরছে। মানে কি..!

এটা তো কোন হোটেল বলে মনেই হচ্ছে না। তাহলে কি এটা কোন এক রিসোর্ট। কিন্তু গতকাল রাতেই তো সে হোটেলে ছিলো সবার সাথে তাহলে ঘুম থেকে উঠতেই এখানে কীভাবে এলো। আইরাতের মাথায় কিছুই ঢুকছে না। এলোমেলো চুল গুলো তে হাত বুলাতে বুলাতেই আইরাত রুমের ভেতরে এসে পরে। মনে করার চেষ্টা করছে যে গতকাল রাতে আসলে হয়েছিলো কি। পরক্ষণেই আইরাতের মনে পরে যে আব্রাহাম রায়হান কে অনেক মেরেছিলো কাল।

আইরাতের হাত কেটেছিলো। তারপর রুমে এসে আব্রাহাম তার হাতে ব্যান্ডেজ করে দেয়। তারপর একটা জুস খেতে দেয় ব্যাস শেষ তারপরই তো আর কিছুই মনে নেই। জুসে কিছু মেশানো ছিলো। ঘুম, হ্যাঁ ঘুমের মেডিসিনই মেশানো ছিলো৷ আইরাত এগুলো নিজের মনে মনেই আওড়িয়ে নেয়। নিজের হাতের দিকে তাকালেই দেখে কাল রাতের হাতের সেই ব্যান্ডেজ টা, আব্রাহাম যে করে দিয়েছিলো। তাহলে কি আব্রাহাম তাকে এখানে নিয়ে এসেছে নাকি..!

আইরাত বিছানার ওপর বসে বসে এসব ভাবনাতেই মগ্ন ছিলো। তখনই আব্রাহাম রুমের দরজা খুলে ভেতরে আসে। হাতে তার গরম গরম দুই কাপ কফি, একদম ধোঁয়া ওঠা। আব্রাহাম এসেই দেখে আইরাত চিন্তামাখা মুখ নিয়ে বেডে বসে আছে। আব্রাহাম আইরাতকে দেখে মুচকি মুচকি হাসে।
আব্রাহাম;; Wish you a very very good morning dear ❣️….

আব্রাহাম একটা মিনি টেবিলের ওপর কফির কাপ দুটো রাখে। তারপর একটা সাদা কালারের সিটিং টুলে বসে পরে। আইরাত সরু দৃষ্টি তে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে৷ তার পাশাপাশি আব্রাহাম কে খেয়ালও করছে। আব্রাহাম একটা সাদা কালারের পেন্ট আর রেইনবো কালারের টি-শার্ট পরে আছে, হাতে সিলভার কালারের ওয়াচ। অন্যান্য দিনের থেকে বেশ ভিন্ন লুকে সে। মানে রিফ্রেশিং একটা লুক দিচ্ছে। আইরাত কে নিজের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আব্রাহাম বলে ওঠে….

আব্রাহাম;; এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে। নজর দিও না তো। কখনো দেখো নি নাকি?
আইরাত ভেবাচেকা খেয়ে যায় তার এমন কথায়। সে মোটেও আব্রাহামের দিকে নজর দিচ্ছিলো না।
আইরাত;; আমরা এখানে কি করে এলাম। মানে এক রাতের মাঝেই জায়গা কি করে পালটে গেলো?
আব্রাহাম;; যাক জায়গা যে চেঞ্জ হয়েছে সেই ধ্যান টুকু তো আছে তোমার৷
আইরাত;; একদম কথা ঘুড়াবেন না। যা জিজ্ঞেস করি তার জবাব দিন।
আব্রাহাম;; আগে এট খাও।

আব্রাহাম এক গ্লাস পানি নিয়ে আর কিছু মেডিসিন নিয়ে আইরাতের কাছে যায়।
আইরাত;; এগুলো আবার কি?
আব্রাহাম;; মেডিসিন আফ কোর্স।
আইরাত;; কিন্তু কেন, মানে কিসের মেডিসিন?

আইরাত বেডে বসে ছিলো। তার এমন একটার পর একটা প্রশ্ন শুনে আব্রাহাম আইরাতের দুই পাশে হাত রেখে দিয়ে একদম তার দিকে ঝুকে পরে। কেমন এক নেশাক্ত নয়নে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত তো মুখ ফুলিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম ক্রমশ আইরাতের মুখের কাছে এগিয়ে আসতে থাকে। আইরাত ভেবেছে আব্রাহাম হয়তো এখনই কিছু করে বসবে তাই সে ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়। আব্রাহাম হেসে দেয়। একদম স্লো ভয়েসে আইরাতের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে আব্রাহাম বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল, এখন যদি তুমি এই মেডিসিন গুলো না খাও তাহলে তোমার কনসিভ করার সম্ভাবনা প্রায় 99.9%।

আব্রাহামের এমন খাপছাড়া কথায় আইরাতের চোখ গুলো রসগোল্লার ন্যায় বড়ো হয়ে গেলো। কিসব বাজে বকছে আব্রাহাম.! আব্রাহাম এই কথা বলেই আস্তে করে উঠে এসে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আইরাত তো ফাটা নয়নে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে দেখে সে দুই হাত ভাজ করে মুখে বাকা হাসি ঝুলিয়ে রেখেছে। আব্রাহাম কেন জানি আইরাতের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।

আইরাত নিজের দিকে তাকায়৷ সাথে সাথেই তার আক্কেলগুড়ুম। মাথা শূন্য হয়ে গেলো। আইরাতের ড্রেস চেঞ্জ। রাতে শাড়ি পরা ছিলো আর এখন হাটু অব্দি একটা পেন্ট আর সাদা শার্ট। আইরাত ছোট খাটো একটা চিৎকার দিয়ে বিছানার চাদর টা আবার নিজের ওপরে নিয়ে নেয়। তাহলে কি কাল রাতে আব্রাহাম আর তার মাঝে কি কিছু হয়েছে নাকি। মানে কোন খারাপ কিছু হয় নি তো৷ আর কনসিভ করবে মানে। আইরাত এগুলো ভেবেই হুহু করে কেদে ওঠে। আর এখন বেশ ভালো করেই বুঝতে পারলো যে কেন আব্রাহাম তার দিকে তাকিয়ে হাল্কা হাল্কা হাসছিলো। আইরাত তো বেশ জোরে সোরেই কেদে দিয়েছে। তা দেখে আব্রাহাম তড়িঘড়ি করে বলে দেয়।
আব্রাহাম;; আরে আরে হেই ওয়েট এভাবে কাদছো কেন?

আইরাত;; আপনি খুব বেশির থেকেও বেশি বাজে। আপনি এটা আমার সাথে করতে পারলেন? একটা বারও বাধলো না আপনার। আপনি একটা মেয়ের পারমিশন ছাড়া এটা কীভাবে করলেন?
আইরাতের যেন নাকের পানি আর চোখের পানি এক হয়ে গেছে। আব্রাহাম বোকা বনে গেলো।
আব্রাহাম;; আরে প্লিজ থামো বেইব। তুমি যেমন টা ভাবছো তেমন কিছুই হয় নি। আরে আমি তো মজা করছিলাম শুধু। কিছুই হয় নি। আমি কিছু করি নি তোমার সাথে। আর এখানকার একজন মেয়ে স্টাফ কে দিয়ে তোমার কাপড় চেঞ্জ করিয়ে দিয়েছি পাগল মেয়ে। প্লিজ স্টপ ক্রাইং।

আইরাত;; এহহ সত্যি ?…!
আব্রাহাম;; তিন সত্যি। আর মেডিসিন গুলো হচ্ছে ব্যাথার। কাচের চুড়ি দিয়ে হাত কেটেছে আর হাতের ব্যাথায় রাতে জ্বর এসে পরেছিলো তোমার। হিতে বিপরীত যেন না হয় তাই মেডিসিন। এবার প্লিজ খাও। আর হ্যাঁ যা দেখার আমি কাল রাতেই দেখে নিয়েছি এতো ঢাকা ঢাকির কিছুই নেই।
আইরাত;; কিইইইইই?
আব্রাহাম;; আরে বাবা মানে এই ড্রেসাপে কাল রাতেই দেখেছি তো আর সকালেও দেখেই ফেলেছি তো বাদ দাও। মেডিসিন খাও।
আব্রাহাম মেডিসিন গুলো আইরাতকে খাইয়ে দেয়। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে দেখে আইরাতের পুরো মুখে কেমন একটা স্নিগ্ধতা ভাব।
আব্রাহাম;; যতোটা বড়ো আর ম্যাচিউর তোমাকে ভেবেছিলাম আসলে ততোটা নও তুমি।
আইরাত;; মানে?

আব্রাহাম;; বডি তে অনেক কিছুর চেঞ্জ আসে। কেউ যদি ফিজিকালি ইনভলভ্ হয় কারো সাথে তাহলে নিজের ভেতরের চেঞ্জ টা সে নিজেই বুঝতে পারে। ছোট তুমি অনেক।
আইরাত;; হয়েছে হয়েছে। আর আমরা এখানে কি করে আর কেনোই বা এলাম বলুন না।
আব্রাহাম;; কাল রাতে তোমার জুসে আমিই স্লিপিং পিল মিক্স করেছিলাম। আসল কারণ ছিলো দূরে চলে আসা সেই হোটেল থেকে। তোমাকে বললে তো হাজার টা প্রশ্ন করে বসতে। আর এছাড়াও অনেক কাজ ছিলো আমার তাই। রাতেই এই রিসোর্ট বুক করি। গাড়ি নিয়ে এসে পরি। আর এছাড়াও সেখানে রায়হান ছিলো। And I just don’t want to see his ugly face again… (বিরক্তি নিয়ে)

আইরাত;; কিন্তু আমিই কেন? আমাকে নিয়ে এলেন কেন এখানে?
আব্রাহাম;; ওহহ হ্যালো মিস. আমার পিএ কে?
আইরাত;; ?।
আব্রাহাম;; উঠে পরো বেবিগার্ল তুমি পুরো ১৩ ঘন্টা ঘুমিয়েছো।
আইরাত;; হুয়াট? ১৩ ঘন্টা।
আব্রাহাম;; ডোজ নিয়েছিলে তো তাই অবাক হবার কিছুই নেই। আর হ্যাঁ রেডি থেকো। আমরা বাইরে বের হবো।
আইরাত;; বাইরে মানে?
আব্রাহাম;; এটা অনেক বড়ো একটা রিসোর্ট। পুরো টা ঘুড়ে দেখতে হলে কমপক্ষে দুই দিন সময় লাগবে।
আইরাত;; ওহহ।

আব্রাহাম;; সামনের রুম টাই আমার। যদিও আলাদা রুম নেবার কোন ইচ্ছেই আমার ছিলো না কিন্তু আমি বাধ্য। আমি গেলাম কিছুক্ষন পর ড্রেস পাঠিয়ে দিবো আমি। রেডি হয়ে বাইরে এসো।
আব্রাহাম বাইরে চলে যায়। আর এদিকে আইরাত যেন হাফ ছেড়ে প্রাণে বাচে। আব্রাহাম বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলতে থাকে। আসলে হোটেলে কেউই জানে না যে আব্রাহাম এসে পরেছে একমাত্র রাশেদ বাদে। রাশেদ সেইদিক টা হ্যান্ডেল করে নিবে।

বিকেলের দিকে আব্রাহাম আর আইরাত বাইরে বের হয়। সমুদ্রের পাড়ে। এখানে অনেক মানুষ আছে। অনেকে ড্রিংকস শপের পাশে দাঁড়িয়ে আছে আবার অনেকে মিউজিকের তালে তালে নাচছে। আবার অনেকে সমুদ্রে ভেসে বেড়াচ্ছে। আইরাতের কোন ইচ্ছেই ছিলো না এখানে আসার কিন্তু আব্রাহাম এক প্রকার জোর করেই এনেছে। আইরাতের কেমন যেন লাগছে এটা। মেয়েরা অনেক ছোট ছোট ড্রেস পরে চারিপাশে ঘুড়ছে। আর আব্রাহাম কে দেখেই পিক ক্লিক করার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে। এগুলো যেন আইরাতের বিরক্তি টা আরো দ্বীগুণ মাত্রায় বাড়িয়ে দিচ্ছে। যখনই কোন একদম ছোট ড্রেস পরা মেয়ে কে আইরাত দেখছে তখনই নিজের জামার হাতা গুলো টেনে টেনে আরো বড়ো বানাচ্ছে। আইরাত একটা পেন্ট আর হাটু সমান লম্বা জামা পড়ে আছে। আইরাতের এমন কান্ড দেখে আব্রাহাম হাসছে। আব্রাহাম তার চোখ থেকে সানগ্লাস টা খুলে দুই হাত পকেটে ভরে আইরাত কে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; এখানে এমনই। বিচ সাইড।
আইরাত;; হুম বুঝেছি।
আব্রাহাম আইরাত কে নিয়ে একটা জায়গায় বসে। তখনই একটা ওয়েটার এসে তাদের দিকে দুটো জুস এগিয়ে দেয়। আব্রাহাম একটা জুস হাতে নিয়ে আইরাত কে দেয়। কিন্তু আইরাত তার চোখ গুলো একদম ছোট ছোট করে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে। আইরাতের এমন চাহনি দেখে আব্রাহাম বলে।

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ১৯

আব্রাহাম;; আরে বাবা এভাবে তাকিয়ে থাকার কিছুই নেই। মিশাইনি কিছুই এতে। এটা ঠিক আছে খেয়ে নাও।
আইরাত জুস টা হাতে নিয়ে নেয়। বেশ কিছু সময় সেখানে থেকে যে যার যার রুমে চলে যায়। তবে আব্রাহাম এবার বসে আছে তার রুমে। সামনে বড়ো একটা কাগজ নিয়ে স্টেম্পে লাগিয়ে রেখে দিয়েছে। নিজের হাতে রঙ তুলি নিয়ে বসে আছে। পেইন্টিং আকছে আইরাতেরই অবশ্যই। পেইন্টিং এ আইরাত নিজের গালের সাথে একটা লাল গোলাপ ঠেকিয়ে আবেশে চোখ গুলো বন্ধ করে রেখেছে। এত্তো বড়ো একটা পেইন্টিং ১৭ মিনিটে একেছে সে। ছোট বেলা আকাআকির অনেক শখ ছিলো। আব্রাহামের এই শখ টা এতোদিন কোথায় যেন গায়েব ছিলো কিন্তু আইরাতের সাথে দেখা হবার পর আবার উঁকি দিয়ে বসেছে শখ টা।

আব্রাহাম;; আমি তোমাকে ভালোবাসি আইরাত। তুমি আমার। আমার ছিলে আর থাকবে। আমার থেকে দূরে যেতেই দিবো না আমি তোমাকে। আই রেলি ভেরি লাভ ইউ আইরাত৷ আই নিড ইউ বেডলি বেবিগার্ল ।
আব্রাহাম হাজারো কথা আইরাতের পেইন্টিং এর সামনে বসে বসেই বলছে। একটা সময় পেইন্টিং কমপ্লিট হয়ে গেলে আব্রাহাম তা খুব যত্নের সাহায্যে রেখে দেয়। এখন আইরাতের কাছে যেতে হবে তার, আইরাতকে জ্বালাতে হবে নয়তো তার রাতের ঘুম হবে না। যেই ভাবা সেই কাজ আব্রাহাম চলে যায় আইরাতের কাছে।

প্রথমে আইরাতের রুমে চলে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে আইরাতকে পায় না। তারপর আবার ছাদে চলে যায়। গিয়েই দেখে ছাদে খোলা বাতাসে আইরাত এক কিণারে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম আলতো পায়ে আইরাতের কাছে এগিয়ে যায়।
রুমে ভালো লাগছিলো না দেখে আইরাত ছাদে চলে আসে৷ এখানের পরিবেশ আর এমন মনোমুগ্ধকর বাতাসে মেজাজ টা কেমন ফুরফুরে গয়ে গেলো। তবে নিজের কোমড়ে কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে আইরাত চমকে পেছন ঘুড়ে তাকায়৷

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২১