পথান্তরে প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩১

পথান্তরে প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩১
মম সাহা

মাথার উপর শব্দহীন ঘুরছে ফ্যান। পরিবেশটা একদম নীরব। এতক্ষণের কৌতূহল, আনন্দ সব চাপা পরে গিয়েছে আকষ্মিক ভীতির কাছে। দর্শিনী হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে এখানে হলোটা কি! তাকে দেখে ভদ্রলোকের এমন আচরণের কারণটাই বা কি! লোকটা চিৎকার দিয়ে বাক্য দু’খানা উচ্চারণ করেই গটগট পায়ে বের হয়ে গিয়েছে। দর্শিনী কেবল বোকার মতন তাকিয়ে ছিলো। তার জানামতে সে এ লোকটাকে চেনে না, তাহলে তাকে দেখে এমন রিয়েক্ট করার কারণ কী?

লোকটা বাক্য দু’খানা ব্যয় করে বেরিয়ে যেতেই সবাই যেন স্বস্তির শ্বাস ফেললো। মৃত্যুঞ্জয়ের কাকী ধীর গতিতে বললো,
“গুড লাক আমাদের। মৃত্যুঞ্জয় এমন উচ্চ কণ্ঠ শুনলে ভয়ঙ্কর কিছু হয়ে যেতো।”
দর্শিনীর পাশের ভদ্র মহিলাও মাথা নাড়ালো। দর্শিনী তখনও সবাইকে দেখে যাচ্ছে। তার মাথায় কিছুই ঢুকলো না।
মৃত্যুঞ্জয়ের মায়ের দিকে তাকিয়ে দর্শিনী শীতল কণ্ঠে প্রশ্ন করলো,
“উনি কে? আর আমাকে দেখেই বা এমন করলো কেনো? আমি তো উনাকে চিনিই না।”
মৃত্যুঞ্জয়ের মা দৈবশ্রী রায়,মিষ্টি হাসলেন। দর্শিনীর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“উনি মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা। আমরা গ্রামে থাকি না বলে হয়তো চিনো না।”
ভদ্রমহিলার কথায় দর্শিনী ধীর কণ্ঠে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“ওহ্ আচ্ছা।”
দৈবশ্রী আর মৃত্যুঞ্জয়ের কাকী হেলেনা কি যেন চোখাচোখি করলো। অতঃপর হেলেনা মিষ্টি হেসে আমতা-আমতা করে বললো,
“দাদা ভাইয়ের কথায় কিছু মনে করো না ডার্লিং। ইউ আর ভেরি ভেরি বিউটিফুল লেডি। দাদাভাইয়ের উচ্চ বাক্যের কথা বড় সানকে বলো না কেমন?”
দর্শিনী ভ্রু কুঁচকালো। সে তো এটাকে স্বাভাবিক ভাবেই নিতে পারছে না, তার উপর দু’জন মহিলার মুখেই কেমন যেন একটা আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে। দর্শিনীর কুঁচকানো ভ্রু আরও কুঁচকালো। অবাক কণ্ঠে বললো,

“আরে আমি এটা উনাকে বলতেও বা যাবো কেনো! সামান্য ব্যাপার।”
“ডার্লিং ইউ নো,বড়বাবা আর দাব্রো দু’জন দু’জনের এনিমি। কেউ কারো সাথে কথা বলে না।”
ছোট্ট ধ্রুবের কথায় দর্শিনীর সন্দেহের তীর আরও ধারালো হয়। ভ্রু যুগল কুঁচকে যায় আরো খানিকটা। নিজের বাবার সাথে কথা বলে না মৃত্যুঞ্জয়! কিন্তু কেনো! যতটুকু মৃত্যুঞ্জয়কে দর্শিনী চেনে,ছেলেটা যথেষ্ট ভদ্র, সভ্য। অথচ সে নিজের বাবার সাথে কথা বলে না?
হেলেনা নিজের ছেলেকে ধমক লাগিয়ে দিলো নিজের ঘরে পাঠিয়ে দিলো। ব্যতিব্যস্ত কণ্ঠে কথা ঘুরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে বললো,

“আরে বিউটিবার্ড,তুমি কিচ্ছুটি মনে করো না ধ্রুবের কথায়। ও উল্টাপাল্টা বলে।”
দর্শিনী অবাক হলো। কথা ঘুরানোর ভঙ্গিমা দেখে তার অবাক ভাবটা আরও বাড়লো। কিন্তু সে প্রকাশ করলো না। তন্মধ্যেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো মৃত্যুঞ্জয়। সুঠাম দেহে কালো টি-শার্ট টা বেশ আঁটসাঁট হয়ে সেঁটে আছে। মুখভর্তি চাপদাড়ি। ফর্সা ধবধবে গলার বামদিকে কালো কুচকুচে তিল। মুখের মাঝে গাম্ভীর্যের ছোঁয়া। চোখ মুখে ফুটে উঠেছে ঘুম ঘুম ভাব। বোঝাই যাচ্ছে মাত্র ঘুম থেকে উঠে এসেছে।
দর্শিনী হালকা ঠোঁট এলিয়ে হাসলো। সচারাচর মৃত্যুঞ্জয়ের এমন এলোমেলো কিন্তু গুছানো ভাব দেখা যায় না। বেশ সুদর্শন বলা যায় লোকটাকে নির্দ্বিধায়।

মৃত্যুঞ্জয় শেষ সিঁড়িটায় পা রেখে বরাবর তাকাতেই ঘুম ঘুম চোখের ঘুম উবে গেলো। রাজ্যের বিষ্ময় নিয়ে সে মূর্তি হয়ে গেলো যেন। প্রিয়দর্শিনী! প্রিয়দর্শিনী এখানে! কীভাবে? আর কেন?
মৃত্যুঞ্জয়ের হতভম্ব অবস্থা দেখে তার কাকী হেসে উঠে। মেয়েটা বিদেশি হলেও বাঙালিদের মতন আন্তরিক। খুব সুন্দর বাংলাও পারেন। শরীরে শাড়ি জড়ানো,বাদামি রাঙা চুল গুচ্ছ,ধবধবে সাদা মুখ খানায় শোভা পাচ্ছে লাল টকটকে টিপ, সিঁথির মাঝে মোটা করে সিঁদুর। নির্দ্বিধায় বলা যায় সে ভীষণ সভ্য নারী। এদেশে এলে যে ভিনদেশী চালচলন দৃষ্টিকটু লাগবে এটা যেন তার ঢের জানা তাই এই দেশের মতনই তার সাজগোজ।
মৃত্যুঞ্জয় নিজের অবাক ভাবটা গিলে নিলো। দর্শিনীর দিকে এগিয়ে গিয়ে ধীর কণ্ঠে বললো,

“বাহ্, আজ যে চাঁদের হাঁট বসেছে আমার বাড়িতে। তা চন্দ্রাবতী, আমাদের বাড়িটা আপনার পদধূলি দিয়ে ধন্য করার কারণ জানাবেন কী এই অধমকে? আমার টানে যে আসে নি সে আমি বড্ড জানি।”
শেষের কথাটা বলেই খিলখিল করে হেসে উঠলো মৃত্যুঞ্জয়। ওর সাথে তাল মিলিয়ে মা,কাকীও হেসে দিলো। দর্শিনী বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে রইলো মৃত্যুঞ্জয়ের দিকে। আজ সে একের পর এক অবাক হয়েই যাচ্ছে। আজ যেন তার অবাক হওয়ার দিন।
দর্শিনীকে ঠাঁই বসে থাকতে দেখে মৃত্যুঞ্জয় হাসি থামালো। স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো,

“আরে মজা করেছি ম্যাডাম। আপনি হঠাৎ এসেছেন দেখে অবাক হলাম। আপনি আমাকে একটা কল দিলেই তো চলে যেতাম। এতটা পথ কষ্ট করে এ শরীরে এসেছেন। কোনো সমস্যা!”
“বাহ্, হিরো,এমন মিষ্টি মেয়েটাকে আমাদের সাথে তো পরিচয় করালে না আবার মেয়েটা নিজে এসেছে তাতেও দেখছি প্রশ্নের পাহাড় গড়ে তুলেছো। ভেরি ব্যাড হিরো।”
মৃত্যুঞ্জয় মুচকি হেসে মাথা নিচু করে ফেললো। এদিক ওদিক তাকিয়ে কথা ঘুরিয়ে বললো,
“আরে ফুলবৌ,তুমিও না অনেক পিঞ্চ মারতে জানো।”
হেলেনা মৃত্যুঞ্জয়ের কথায় হো হো করে হেসে উঠলো। দর্শিনী অবাক হয়ে দেখলো তাদের কথপোকথন। কী সুন্দর বন্ডিং! এই পরিবারটাকে তার দারুণ লেগেছে।
তাদের মাঝে টুকটাক আরও কথা হলো। অবশেষে দর্শিনী বিদায় নিলো। মৃত্যুঞ্জয়কে নিয়ে সে আপাতত দৃষ্টান্তের কাছে যাবে। কিছু একটা যে করতেই হবে।
দর্শিনীকে দরজা অব্দি এগিয়ে দিলো হেলেনা আর দৈবশ্রী। ভীষণ যত্নও করলো। দর্শিনী মুগ্ধ হলো। পরিবারটা দারুণ।
মৃত্যুঞ্জয় দরজা অব্দি এসে কিছু একটা ভেবে থেমে গেলো। মৃত্যুঞ্জয় থামতেই থেমে গেলো আরও তিন জোড়া পা। মৃত্যুঞ্জয় হুট করে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,

“দর্শিনীকে কেউ কিছু বলে নি তো, মা?”
মৃত্যুঞ্জয়ের এমন প্রশ্নে হতভম্ব সবাই। দর্শিনী হতভম্ব কণ্ঠেই বললো,
“কে কী বলবে আমাকে? অদ্ভুত প্রশ্ন!”
মৃত্যুঞ্জয় উত্তর দিলো না। বরং তার মায়ের দিকে তাকিয়ে ধীর কণ্ঠে বললো,
“ভদ্রলোক কোথায়?”
দৈবশ্রী আর হেলেনার বোধগম্য হলো সবটা। মৃত্যুঞ্জয় ঠিক কাকে বুঝাতে চেয়েছে সেটা আর বুঝতে বাকি রইলো না কারো। দৈবশ্রী কোনোরকমে আমতা-আমতা করে বললো,
“না,কেউ কিছু বলে নি। আর তোর বাবা গ্রামের পূর্ব দিকের দিঘিটা দেখতে গিয়েছে। কিনবে বোধহয়।”
“দেখো মা,ভুল করেও কোনোরকম কিছু যেন না ঘটে।”
“কিছু হবেনা। তুই চিন্তা করিস না।”

দর্শিনী পুরোটা সময় চুপ করে ছিলো। মৃত্যুঞ্জয়ের কণ্ঠটা তার কাছে এখন অন্যরকম লাগলো। নিজের বাবাকে এই ছেলেটা ভদ্রলোক কেনো বললো! মৃত্যুঞ্জয় তো এমন মানুষ না তাহলে?
মৃত্যুঞ্জয় ছোট্ট শ্বাস ফেলে বের হতে নিলেই দৈবশ্রী অসহায় কণ্ঠে বললো,
“তিনটা বছর যাবত এই কাঠিন্যতা বজায় রেখেছিস। একটু নরম হওয়া যায় না, বাবা?”
মৃত্যুঞ্জয় গটগট পায়ে বের হয়ে গেলো উত্তর বিহীন। হতাশার শ্বাস ফেললো দৈবশ্রী আর হেলেনা। দর্শিনী কেবল কুড়িয়ে নিয়ে গেলো কতগুলো প্রশ্ন। তিন বছর যাবত মৃত্যুঞ্জয় কিসের কাঠিন্যতা বজায় রেখেছে? আর নিজের বাবার প্রতি তার এত উগ্র আচরণই বা কেনো? এ যেন এক গোলকধাঁধা।

দু’তালা বাড়িটা নির্জন। কেমন ভয়ঙ্কর নিস্তব্ধতা বিরাজমান। মায়া ও হৈমন্ত তন্নতন্ন করে খুঁজলো চিলেকোঠার ঘরখানা। নাহ্,এই ডায়েরীটা ছাড়া আর কোনো রকমের কিছু পায় নি তারা। দু’জন আপাতত ক্লান্ত হয়ে বসে আছে বিছানাতে। ভয়,উত্তেজনায় শরীর ঘেমে-নেয়ে একাকার।
নিস্তব্ধতা ঠেলে হৈমন্তের ফোন খানা বেজে উঠলো। মায়া খানিকটা কেঁপে উঠলো। মায়ার অস্বাভাবিক কেঁপে উঠা দেখে ভ্রু কুঁচকালো হৈমন্ত। মায়ার বাহুতে হাত রেখে শুধালো,
“তুই কী ভয়ঙ্কর কিছু ভাবছিস মায়াবতী? অতিরিক্ত ভয় পাচ্ছিস? কিছু হবে না তোর। আমি আছি না? বিশ্বাস রাখ আমার উপরে।”

“আমার মনে হচ্ছে আমরা বড় কোনো বিপদে পড়তে যাচ্ছি হৈমন্ত ভাই। খুব খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।”
“ধূর পাগলি,কিছু হবে না। আমি আছি তো তোর সাথে।”
মায়া তবুও ঘামছে। অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটতে পারে সে ভয়ে তার অন্তর আত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ বাড়ির গেইট দিয়ে গাড়ির হর্ণ ভেসে এলো। চমকে উঠলো দু’জনেই। দু’জনের মাঝেই চোখাচোখি হলো। মায়া দ্রুত চিলেকোঠার ঘর থেকে বের হয়ে উঁকি দিলো ছাঁদের কার্নিশ ঘেষে নিচের দিকে। গেইট দিয়ে গাড়ি প্রবেশ করছে। গাড়ি থেকে বিহঙ্গিনী বেরিয়ে এলো। অতঃপর মোহনাকে ধরে বের করলো। মায়া অবাক হয়ে গেলো। এই অসুস্থ মহিলা হসপিটাল থেকে চলে আসলো কেনো? তবে কী মহিলার মাথায় অন্য কিছু আছে? মৃত্যুক্ষুধা কী তবে তাকে বাড়ি অব্দি টেনে আনলো?
হৈমন্তও ততক্ষণে চিলেকোঠার ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। অসুস্থ মোহনাকে বাড়ির ভেতর ঢুকতে দেখে সেও চমকে গেলো। মায়ার দিকে তাকিয়ে চঞ্চল কণ্ঠে বললো,

“এ মহিলা না অসুস্থ? তাহলে চলে এলো যে হসপিটাল থেকে? কিছু কী টের পেলো?”
“আমি জানিনা হৈমন্ত ভাই। তবে যা-ই হোক,এখন এ বাড়িতে আরও গেঁড়ে বসতে হবে। অনেক রহস্য বাকি আছে। তুমি এখন তাড়াতাড়ি লাফ দিয়ে তোমাদের বিল্ডিং-এ যাও।”
হৈমন্ত মাথা নাড়িয়ে “সাবধানে থাকিস” বলে এক লাফে চলে গেলো নিজের ছাঁদে। মায়া একটা স্বস্তির শ্বাস ফেললো। শাড়ির আঁচল দিয়ে কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছে বললো, “বাঁচা গেলো।”
কিন্তু মায়া জানেনা,বাড়ির নিচ থেকে একজন রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে এ দৃশ্য খানা দেখে।

“তুমি কী কিছুই করবে না, দৃষ্টান্ত দা?”
পুকুর পাড়ের নির্জন জায়গাটাতে বসে আছে দর্শিনী। তার সামনের পাঁকা করা বসার জায়গাতেই মৃত্যুঞ্জয় আর দৃষ্টান্ত বসা। দর্শিনীর প্রশ্নে নড়েচড়ে বসলো দৃষ্টান্ত। দৃষ্টি তার পুকুরের শ্যাওলা জলে।
মৃত্যুঞ্জয় গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
“তোকে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়েছে।”
“আমার হাত থেকে সবটা বের হয়ে গেছে মৃত্যুঞ্জয়। আপাতত ভাগ্যকে মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই যে।”
ক্ষ্যাপে উঠলো দর্শিনী। বেশ উচ্চস্বরেই বললো,
“এসব বলে কাপুরুষেরা। আর যাই হোক, প্রেমিকদের মুখে এসব মানায় না। যদি প্রেমিকাকে আগলে রাখার সামর্থ্যই না থাকে তবে প্রেম করেছিলে কেনো!”

“নিজের বেঁচে থাকার কারণকে কে চায় হারাতে বল? আমিও চাই নি। যখন একবার হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছিলাম তখন এই মেয়েটা আমার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে আমাকে শক্ত করে আগলে রেখেছিলো। কত হেলা,অপমান সহ্য করেও টিকে ছিলো। অতঃপর তাকে ফিরাতে ফিরাতে ক্লান্ত হয়ে আমি জড়িয়ে গিয়েছিলাম তার মায়ায়। কিন্তু কে জানতো,ভাগ্য বরাবরই আমার বেলাতে নিষ্ঠুর হবে?”
দৃষ্টান্তের কথায় দর্শিনীর সাথে সাথে মৃত্যুঞ্জয়ও অবাক হয়। বিষ্মিত কণ্ঠে বলে,

পথান্তরে প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩০

“একবার হারিয়েছো মানে! তৃণা তবে তোমার প্রথম ভালোবাসা না?”
দৃষ্টান্তের অকপটে স্বীকারোক্তি,
“না,দ্বিতীয় আর শেষ ভালোবাসা।”

পথান্তরে প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩২