প্রণয় বোনাস পর্ব 

প্রণয় বোনাস পর্ব 
তানিশা সুলতানা

“শাড়ি কেনো পড়েছিস?
সূচক পূনরায় চোখ পাকিয়ে বলে।
” আপনাকে কেনো বলবো?
তানহাও চোখ পাকিয়ে বলে।

“কথা শিখেছিস?
” ভুলে গেছিলাম কবে?
মুখে মুখে তর্ক করতে দেখে বেশ ঘাবড়ে যায় সূচক। থতমত খেয়ে তাকায় তানহার দিকে।
“থাপ্পড়ে গাল লাল করে দেবো।
সূচক হাত উঁচু করে বলে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” পারবেনই শুধু তাই। ভালো টালো তো আর বাসতে পারেন না।
তানহা গোল হয়ে সোফায় বসে বলে। সূচকও তানহার পাশে বসে তবে বেশ খানিকটা দুরুত্ব বজায় রেখে।
“আর কখনো শাড়ি পড়বি না বুঝলি?
সূচক মাথা নিচু করে দুই হাতে চুল গুলো খামচে ধরে বলে।

” কেনো সূচক ভাই? কেনো পড়বো না? আপনার কথা কেনো শুনবো? কে আমি? কে আপনি? সম্পর্ক কি আমাদের? আদোও কি চিনেন আপনি আমায়? কখনো কি আমার কোনো কথা শুনেছেন আপনি? আমাকে একটুও কি গুরুত্ব দেন আপনি?

বলতে বলতে তানহার চোখে পানি চলে আসে। শব্দ করে কেঁদে ফেলে।
সূচক তানহাকে নিজের দিকে ঘুরায়। আলতো হাতে চোখের পানি মুছিয়ে দেন।
“হুশশশশ কাঁদে না।
ফিসফিস করল বলে সূচক।
তানহা নাক টেনে সূচকের হাত সরিয়ে দেয়।

” একদম ছোঁবেন না আমায়। একটুও না। কথাই নাই আপনার সাথে। কি পেয়েছেন আমায়? বদ লোক একটা। মানুষ মনে হয় না আমায়? পুতুল আম
বাকি টুকু আর বলতে পারে না তানহা। তার আগেই সূচক নিজের ওষ্ঠদ্বয় দ্বারা তানহার ওষ্ঠদ্বয় আঁকড়ে ধরেছে। একহাতে তানহার কোমর ধরেছে অন্য হাতটা তানহার চুলের ভাজে।

এতো দ্রুত এমন হয়ে গেলো যে তানহা কিছু বুঝে উঠতে পারলো না। যখন বুঝতে পারলো তখন চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে নেয়। দুই হাতে সূচকের চুল গুলো মুঠো করে ধরে।
কতোখন তানহার নাক দিয়ে শ্বাস টেনেছে তার হিসেব নেই। সূচক এখন তানহার মাথার সাথে নিজের মাথাটা ঠেকিয়েছে। দুজনই জোরে জোরে শ্বাস টানছে। কান্না থেমে গেছে তানহার।

“আই মিস ইউ তানহা। তোকে ছাড়া থাকতে আমারও কষ্ট হয়।
সূচক জোরে শ্বাস টানতে টানতে বলে। কথাগুলো কেমন জড়িয়ে যায়। তানহার বুকটা এখনো ধপধপ করছে। হাত পা আর ঠোঁটও কাঁপছে।

সূচক মাথা তুলে তাকায় তানহার মুখের দিকে। দুই গালে দুই ফোঁটা পানি চিকচিক করছে। সূচক তানহার চোখের পাতায় চুমু দেয়। তারপর গাল থেকে পানি টুকু শুষে নেয়।
তানহার গাল দুটো লাল হয়ে যায়। ভীষণ অপ্রস্তুত ও। অন্যরকম অনুভূতী মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। এই অনুভূতির সাথে তানহা পরিচিত নয়।

এক টানে তানহাকে কোলে বসায়। তানহার মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে।
তানহা সূচকের শার্ট খাঁমচে ধরে।
” খুব ব্যস্ত আমি। লাইফ সেটেল্ড করা এতো কঠিন কেনো রে? আমার না মাঝেমধ্যে দম আটকে আসে। কিন্তু থেমে যায় না আমি। কোনো কিছুর জন্য আমি তোকে হারাতে চাই না। সারাজীবন এভাবে আগলে রাখতে চাই। আর তার জন্য আমি সব করতে পারি। সব

তানহার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে সূচক। তানহা এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। কি বলছে সূচক কিছুই মাথায় ঢুকছে না।
লোকটা ঠিক আছে তো?
তানহা মাথাটা উঁচু করার চেষ্টা করে।
“একটু স্থির থাকো না জান। অনুভব করো আমায়। এভাবে নরো না।

মাথাটা শক্ত করল চেপে ধরে বলে সূচক। তানহা ভরকে যায়। একেতে তুমি তারওপর আবার জান। নির্ঘাত লোকটা ঠিক নেই। নাহলে এসব বলতো? কখনোই না। সূচক চোখ বন্ধ করে আছে।
বেশ অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। কেউ কোনো কথা বলছে না। দুজন দুজনের নিশ্বাসের শব্দ গুনছে।
” তানহা

সূচক ছোট্ট করে ডাকে। তানহা এতখন ঘ্রাণ নিচ্ছিলো সূচকের পারফিউমের। সূচকের ডাকে চমকে ওঠে।
“হুমম
তানহা আরও ছোট করে বলে।
“একবার ভালোবাসি বলবি।
আহা কি নিষ্পাপ আবদার। তানহা মুখ টিপে হাসে। ইচ্ছে করছে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলতে ” হ্যাঁ ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে আমি”

কিন্তু বলবে না ও। মনে মনে বুদ্ধি এঁটে নেয়। কেনো বলবে? এতোদিন কি কষ্টটাই না দিলো ওকে। আর এখন এসেছে ভালোবাসি শুনতে। মামা বাড়ির আবদার। হুহহহ
সব কষ্ট সুধে আসলে ফেরত দিয়েই ভালোবাসি বলবে। তার আগে নয়।

“একদম ভালোবাসি না। যে আমাকে কষ্ট দেয় তাকে কেনো ভালোবাসাবো।
তানহা জোর করে সূচকের কোল থেকে নেমে গিয়ে গাল ফুলিয়ে বলে। সূচক নিঃশব্দে হাসে।
” ওকে ভালোবাসতে হবে না। আপাতত ঘুমাবো আমি। তারপর জন্য তোর হাত দুটো দরকার।
আড়মোড়া ভেঙে হাই তুলে বলে সূচক।

তানহা মুখ বাঁ কায়। সূচক উঠে দাঁড়িয়ে এক টানে তানহাকে পাঁজা করে কোলে তুলে নেয়। তানহা ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে সূচকের শার্ট আঁকড়ে ধরে।
খাটের ওপর বসিয়ে দেয় তানহাকে। তানহা হা করে তাকিয়ে আছে। কি করতে চাইছে বুঝতে পারছে না।
“করতে চাইছেন টা কি?

তানহা কপালে তিনটে ভাজ ফেলে বলে।
সূচক আরেকটা হাই তুলে তানহার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। তানহা হা করে কিছু বলার জন্য সূচক দুই আগুল দিয়ে তানহার ঠোঁট দুটো এক করিয়ে চেপে ধরে।
” কোনো কথা শুনবো না। জাস্ট আমার কথা শুনবি।

আজকে তোর সাথে শেয়ার করতে চাইছি। আমার ফিউচার প্লান। বর্তমানে কি করছি। কেনো তোকে ইগনোর করি।
শুনবি?
আঙুল সরিয়ে বলে সূচক। তানহা তার ছোট কোমল হাত দুটো সূচকের চুলের ভাজে রেখে মাথা নারায়। মানে সে শুনতে চায়।

সূচক মুচকি হাসে। তানহার নরম তুলতুলের গালটা টেনে দেয়।
“এতো নরম কেনল তুই? ইচ্ছে করে খেয়ে ফেলি।
নাক টেনে দিয়ে বলে সূচক।

তোহা খোলাখুলি কথা বলতে চাইছে ইমনের সাথে। এরকম ফ্লার্ট একদম ভালো লাগছে না ওর।
ইরিনের কোলে তুলতুলকে দিয়ে ইমন ছাঁদের দিকে চলে যায়।
তোহাও পেছন পেছন যায়।
” এরকম করছেন কেনো আমার সাথে? ফ্লার্ট করার মানে কি?

প্রণয় পর্ব ৩১

ইমন ছাঁদে পা রাখতেই পেছন থেকে তোহা বলে। ইমন পেছন ঘুরে তাকায় তোহার দিকে।
“কেনো ফ্লার্ট করছি শুনলে তুমি এখান থেকে পড়ে যাবে সেন্স লেস হয়ে তাই বলতে চাইছি না।
সময় হলেই বলবো।

প্রণয় পর্ব ৩২