প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ১৫

প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ১৫
আরোহী নুর

আদৃতের মনের আনচান ভাবটা বেড়েছে আজ হাজারগুণ,প্রিয়সীকে ফিরে পাওয়ার এক তীব্র আকাঙ্খা ধরা দিয়েছে মনের কোণে,তাকে না দেখে ছয় টা বছর কোনোরূপ পার করে দিতে পারলেও তাকে দেখার পর থেকে তার দূরত্ব আর সয়ে উঠতে পারছে না,আঁখির জীবনে তো এখন আদ্রিশ নামক সেই ব্যক্তি,যাকে আঁখি খুব করে পাশে চেয়েছিল,

তার ভালোবাসার সেই মানুষটা তো এখন আর নেই,সে তো আঁখির অনুভুতি নিয়ে খেলা করেছে, তাই আদৃত কি তার বদলে একটা সুযোগ নিতে পারে না?পারে না চেষ্টা করতে তার মনের রানীকে আবারও জীবনে ফিরিয়ে আনার?আঁখির জীবন থেকে তার বি*ষা*ক্ত সেই অধ্যায় কি মুছে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে না আদৃত?খুব বড় কি কোনো ভুল হবে তাতে?না তাতে ভুল কই,সত্য ভালোবাসাকে পবিত্রভাবে নিজের জীবনে নিয়ে আসার চেষ্টা করা ভুল কেন হতে যাবে!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নিজের উপরই হাসি উঠল আদৃতের, কোনো এক সময় আঁখি পা*গ*ল ছিল আদৃতের প্রেমে,কতরকম ভাবে অদেখা করত আদৃত তাকে,কতভাবে অবহেলা করত,তবে আঁখি কখনও হার মানে নি,আদৃতের মন চু*রি করে নেওয়ার কোনো রাস্তা বাদ দেয় নি,অবশেষে যখন আদৃত আঁখিতে মন হারাল ততক্ষণে আঁখিকেই সে হারিয়ে গেল।

নিয়তির খেলা এতটাও হাস্যকর হতে পারে নিজের সাথে না ঘটে গেলে হয়ত কেউ তার পরিমাণ বুঝে উঠতে পারবে না।বিছানায় গা এলিয়ে আঁখির স্মৃতিতে ডুব দিল আদৃত আবারও।সেদিন আদৃতের জন্মদিন ছিল,আদৃত শুয়ে ছিল বিছানায়,হঠাৎ নিজের রুমের বারান্দায় কারো আগমণ আন্দাজ করতে পারল আদৃত,আদৃত উঠে বারান্দার দরজার সামনে আসতেই দরজায় ধাক্কা পরা শুরু হলো,বাহির থেকে ধীমি স্বরে বলছে আঁখি।

″ডা.সাহেব,দরজা খুলুন,আমি আপনার প্রিয়তমা আঁখি।″
″তুমি এতো রাতে এখানে কি করতে এসেছ?″
″আপনার বারান্দা ভাঙতে এসেছি।″
″কি….!″
″ওফ অসহ্য,দরজা খুলুন পরে দেখবেন কি করতে এসেছি।″

আদৃত বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দিতেই আঁখি ঘরে ঢুকে আদৃতের চোখে কালো কাপড় বেঁধে দিল।
″আরে আরে কি করছ!″
″আরে এতো কথা বলবেন না তো একটু অপেক্ষা করুন খুলবেন না এটা।চলুন আমার সাথে।″

আদৃতকে হাত ধরে নিয়ে গেল আঁখি,১২ টা বাজতেই আদৃতের চোখ খুলে দিল,বড় করে বলে উঠল শুভ জন্মদিন আমার ডা.সাহেব।আদৃত দেখতে পেল অনেকগুলো বেলুনের মধ্যেখানে উঁচু কিছুর উপর একটা কেক রাখা,সেখানে আদৃতের ছবি খুবই স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তোলা আর তাতে শুভ জন্মদিন ডা.আদৃত লেখা। আদৃত বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।

″তুমি এখানে আসলে কি করে?তাও এসব নিয়ে?″
″ওই যে আপনাদের বাগানে বড় একটা সিঁড়ি রাখা আছে না,ওটা এখানে এনে বারান্দা দিয়ে ঢুকেছি,আপনার একজন গার্ডকে হাত করে,হিহি হা হা।হয়েছে এসব ছাড়ুন আর কেক কাটুন।″
″আমার এসব জন্মদিন পালন পছন্দ না তুমি জানো।″
″আপনার পছন্দ অপছন্দ কে দেখছে!আমার পছন্দ এসব এটাই যথেষ্ট, তাছাড়া আপনার মতো নিরামিশের এসব পছন্দ হবেই বা কি করে।″

″কি আমি নিরামিষ।″
″না, আপনি আমিষ বিহীন,এবার চুপচাপ কেক কাটুন তো।″
আদৃত বাধ্য হয়ে কেক কাটলে তার হাত থেকে জোর করেই নিজে কেক খেয়ে অর্ধেকটা আদৃতের হাত থেকে নিয়ে তাকে খাওয়ালো,তারপর হাতে লেগে থাকা কেকের ক্রিম আদৃতের পুরো মুখে লাগিয়ে এক ছোটে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে বলল।

বর্তমানে আর এখানে থেকে আপনার বকা খাওয়ার কোনো রুচি নেই আমার,আমি না হয় আসি,সকালে আপনার জন্য গিফ্ট নিয়ে আসব আবার।

আদৃত বেশ বিরক্ত হয়ে আঁখির দিকে তাকিয়ে থাকল,তবে আঁখি চলে যাওয়ার পর বেশ একটা মুচকি হাসি দিয়েছিল,সে সময়টাতে আঁখিকে ভালোবাসার স্বীকৃতি না দিলেও আঁখির আদৃতকে নিয়ে পাগলামি বড্ড ভালো লাগত আদৃতের।
রিদিকা শুয়ে আছে অগোছালো অবস্থায়,

আদ্রিশ তার পাশেই শুয়ে আছে,আজ আর তার কক্ষে যায় নি সে,হঠাৎ রিদিকা বারান্দার দিক থেকে কিছু শব্দ শুনতে পেল,রিদিকার ঘুম বরাবরেরই হালকা,অল্পতেই ভেঙে যায়,তাই উঠে গেল শব্দটা শুনে,দেখতে পেল বারান্দার দিকের দরজাটা খোলা,দরজার সামনে সাদা রঙের পর্দা ঝুলানো,বাতাসে বেশ নড়ছে,

রিদিকা নিজের কাপড় ঠিক করে পরে নিল,রোজ বারান্দার দরজা লাগিয়ে ঘুমোয়,আজ খেয়াল করে নি,তাই উঠে গেল দরজা বন্ধ করবে বলে,তখনই কারো হেঁটে যাওয়া বড় ছায়া পর্দার উপর দিয়ে ভেসে উঠল,ওপরদিকে কেউ হেঁটে গেছে বুঝে উঠতে পারল সে।রিদিকা সেদিকে এগিয়ে গেল ঝটপট।

কে?কে ওখানে?কে?
রিদিকা বারান্দায় তাড়াতাড়ি ছোটে গেলেও কাউকেই পেল না সেখানে,তখনি পিছন থেকে আদ্রিশ ডাক দিল তাকে।
″রিদিকা কি হয়েছে?″
″কেউ এখানে ছিল আদ্রিশ।″
″কি বলছো এতো রাতে এখানে কে হবে!তোমার ভ্রম হবে,চলে এসে শুয়ে পরো।″

অতঃপর আদ্রিশ রিদিকাকে নিয়ে কক্ষে চলে যেতে লাগল,কিন্তু রিদিকা মানতে নারাজ হলো যে এটা তার ভ্রম ছিলো,যাচাইয়ের জন্য আরো একবার পিছু ফিরে তাকালো,কিন্তু কাউকেই পেলো না।

বাড়ি ফিরে আবারও সেই বিষাদে ছেঁয়ে গেল আঁখির মন,সাথে এক রাশ ভাবনার ঢল নামল।আদৃত কেন একা রয়ে গেছে জীবনে!কি হলো এমন আদৃত আর ডা.সানিয়ার মধ্যে যে ওরা আলাদা হয়ে গেল!যাদের কথা ভেবে নিজের ভালোবাসা বিসর্জন দিয়েছিল আঁখি তারাই কেন একসাথে থাকছে না!কেন?

কিছুই ভেবে পাচ্ছে না আঁখি, তবে জবাবটা জানার কৌতুহল ধরে রাখতেও পারছে না,যে করেই হোক জবাবটা তাকে জানতেই হবে।ভাবনার দখল পেরিয়ে ঘুমের দেশে তলালো অবশেষে আঁখি,ভোর হওয়ার পূর্বে ঘুম ভাঙল তার,ফজরের আযান ভেসে আসল কানে,উঠে নামাজটা আদায় করে নিল।মোনাজাতে চাইল আজ বেশ জিনিস।

আল্লাহ, রাব্বুল আল আমিন,আমি বড্ড একা হয়ে পরেছি মালিক,পারছি না একাকিত্ব মানিয়ে নিতে,যে ভালোবাসার সুখের জন্য তাকে ছাড়লাম সেই সুখী নয়,যাকে হারানোর ভয়ে সব ছাড়লাম সেই প্রতারণা করল, আদ্রিশ বা রিদিকা কারো ভালো খারাপ কিছুই চাইব না আমি আপনার কাছে শুধু চাইব আমার মা বাবাকে।

মনের টানের জন্য নাড়ীর টান ছিঁড়ে ফেলা আমি এক পাপী গুনাহগার,বাবা মায়ের চোখের জলের দাম দেওয়ার সাধ্য আমার নেই,জানি না কেমনে তাদের কাছে ক্ষমাটাও আমার চাইতে হবে।শুধু চাই উনারা আমায় ক্ষমা করে দিক,আমার জীবনে আবারও ফিরে আসুক,

আমি আর কোনোদিনও প্রাণ থাকতে তাদের অবাধ্য হবো না মালিক,একবার তাদের ফিরিয়ে দিন,একটা সুযোগ দিন আমায়,রহম করুন এই অসহায়ের প্রতি ,ক্ষমা করুণ আমায়।হেদায়াত দান করুন আমাকে।ডা.আদৃতকে দান করুন উনার কাঙ্ক্ষিত সুখ।আমিন…….

অপরদিকে আদৃতও মোনাজাতে হাত পেতেছে।
আল্লাহ, আমি জীবন সঙ্গিনী হিসেবে চেয়েছি তো শুধু আঁখিকে,আমার চাওয়ায় তো কোনো খুঁত ছিল না, তবে কেন ও আমার হলো না?রাব্বুল আল আমিন এবার আর শুণ্য হাতে ফিরিয়ে দিবেন না আমায় দয়া করে,দ্বিতীয় সুযোগ যখন পেয়েছি তবে তাতে জয়ী হওয়ার সক্ষমতাও আমায় দান করুন মালিক।আমিন……

হাসপাতাল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া শেষ আঁখির, কথাও বলে নিয়েছে কতৃপক্ষের সাথে এ নিয়ে।আজকে সেই হাসপাতালে শেষ দায়িত্ব পালনে যাচ্ছে আঁখি,নতুন কোন হাসপাতালে জয়েন করবে তা এখন অব্দি নির্ধারণ করা হয় নি।হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বের হবে তখনি একজন গার্ড আসলো তার কাছে।তার হাতে একটা লেটার ধরিয়ে দিল।
ম্যাম,একটু আগে একজন এসে এই লেটারটা দিয়ে গেছেন,বললেন উনাকে ডা.আশরাফ খান পাঠিয়েছেন আপনাকে এই লেটারটা দেওয়ার জন্য।

বাবার নাম শুনেই অতি খুশিতে লেটারটা তাড়াতাড়ি খুলে নিল আঁখি।লেটারটা পরে এবার চোখে জল চলে এলো তার,আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল।
শুকরিয়া আল্লাহ,আপনি সর্বশক্তিমান,পরম দয়ালু,আমার চাওয়া এতো জলদি পূরণ করে দিবেন কখনও ভাবী নি,শুকরিয়া মাবুদ।

লেটারটাতে আশরাফ খান নিজের মেয়েকে উনার হাসপাতালে জয়েন হবার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।
যাতে খুশিতে আঁখির মন আত্নহারা হলো। হাসপাতালে চলে আসলো আঁখি,বসে ছিল কেবিনে তখনই ইন্সপেক্টর জিসান প্রবেশ করলেন সেখানে।

″আসসালামু আলাইকুম ডা.আঁখি।″
″আরে ইন্সপেক্টর জিসান আপনি?ওয়ালাইকুম আসসালাম।তা কেমন আছেন?″
″এইতো আলহামদুলিল্লাহ।″
″হুম তা হঠাৎ এখানে?″

″ওই আসলে কিছু প্রয়োজনে এসেছিলাম,নয়ত ডিউটি টাইমে এভাবে কখনও আসতাম না।″
″হুম,তা বলুন কি সাহায্য করতে পারি আমি আপনার?″
″আমি আসলে কলি মা*র্ডা*র কেস নিয়ে কথা বলতে এসেছি আপনার সাথে।″
″আমার সাথে কলিকে নিয়ে কি কথা বলতে এসেছেন!″

″ সুত্র অনুযায়ী খবর পাওয়া গেছে মিস কলির সম্পর্ক আপনার সাথে ভালো ছিল না,তাছাড়া উনি না কি আপনার পার্সোনাল খবর ফাঁস করে দেওয়ার হু*ম*কি দিচ্ছিলেন আপনাকে,কলির মৃত্যুর একদিন আগেই সে না কি আপনার সাথে দেখা করতে এসেছিল?″
″হ্যাঁ এসেছিল,আর আমার ওর সাথে সম্পর্ক ভালো চলছিল না এটাও সত্যি।কিন্তু এসবে আপনি কি প্রমাণ করতে চাইছেন?

″আমি কিছু প্রমাণ করতে চাইছি না মিস আঁখি।আসলে পুলিশ মানুষ সন্দেহের তালিকায় সবাইকেই রাখতে হয়,হোক না কেন সে নিজের মা বা বাবা।বুঝতেই পারছেন,কলি কেসে আপনিও সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন মিস আঁখি,তাই কেসটা চলাকালীন আপনি আমাদের না জানিয়ে দেশের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না।″

আঁখি কি বলবে কিছু ভেবে পাচ্ছে না।চুপ করে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে,জিসান আবার বলল।
″আচ্ছা তবে আসি ডা.আঁখি,আমার আরও কাজ আছে।″
জিসান চলে গেল,আঁখি আবার নিজের কাজে মন দিল,কিন্তু হঠাৎ কেবিনে প্রবেশ করল আদ্রিশ,আদ্রিশের আগমণে বেশ বিরক্ত হলো আঁখি।ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল।

″তুমি এখানে কি করতে এসেছো আদ্রিশ?″
″তোমার কাছে এসেছি ফুলপরি।″
″আর ইউ মেড।আমার তো মনে হয় তুমি মেন্টালি সিক,কি করে ডাকতে পারো আবার আমায় ফুলপরি বলে,লজ্জা করে না তোমার?″
″লজ্জা করবে কেন!আমি আমার বউকে ডাকছি।″

″ছিঃ আদ্রিশ,দ্বিতীয় বউয়ের সাথে রাতের পর রাত কাটাও আর প্রথম বউয়েও উপরও অধিকার খাটাও,ছিঃ″
″কারণ তোমরা দু’জনই আমার স্ত্রী, আমার দু’জনেরই উপর অধিকার আছে।″
″ওহ,এবার বুঝেছি,তোমার এক বিছানায় এক নারীতে হচ্ছে না,দু’জন চাই একসাথে তাই না,তবে বিয়ের মতো পবিত্র পথ কেন বেঁছে নিলে আদ্রিশ পতি*তা*ল*য়েই যেতে পারো।

″আঁখি……কি বলছ এসব তুমি!এতো নোংরা জিনিস কি করে বলতে পারো তুমি?″
″কেনো রে তুই যা তা নোংরামি করবি আর আমি তা মেনে নিব,সম্মান করব তোকে,রাত কাটাব তোর সাথে।শুনে রাখ আমি আঁখি রিদিকা না যে শুধু শরীরের টানে স্বামীর ঘরে পরে থাকে।ভালোবাসায় শুধু শারিরীক চাহিদাই সবকিছু হয় না,তবে তুই কি বুঝবি সেটা, অধম কি বোঝে ভালোবাসার মানে।″

″তুমি কিন্তু লিমিট ক্রস করছ আঁখি।″
″লিমিটের কি দেখেছিস রে তুই,এটা হাসপাতাল,আজকে আমার শেষ দিন এখানে,চিৎকার চেঁচামেচি করতে বাধ্য করিস না আমায়,চলে যা ভালোয় ভালোয়,গার্ড ডেকে ঘাড় ধাক্কা দেওয়াতে চাই না আমি তোকে।″

″বড্ড তেজ না তোমার?আমার সাথে তেজ দেখাও,যাব না আমি,কি করবে শুনি?তোমাকে আমার সাথে যেতেই হবে।″
আঁখির দুই হাতের বাজু আদ্রিশ নিজের দু′হাতে চেঁপে ধরে কথাগুলো বললে আঁখি তাকে ধাক্কা দিয়ে নিজে থেকে ছাড়িয়ে নেয়,আর তাল গালে কষিয়ে একটা থাপ্পড় মেরে গর্জে ডেকে উঠে তার গার্ডদের।
গার্ডস,গার্ডস।
গার্ডেরা ছোটে আসে সাথে সাথে।

এই কু***ত্তা টাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বাইরে ছেড়ে আসো,এ যেন আমার আশেপাশেও আর আসতে না পারে কখনও।
গার্ডেরা আদ্রিশকে ধরতে এলে আদ্রিশ কর্কশ গলায় বলল।
ধরতে হবে না চলে যাচ্ছি। কিন্তু মনে রেখ আঁখি আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে তুমি ভুল করছ।আমার মতো কেউ তোমাকে কখনও পাগলের মতো ভালোবাসবে না।ভালোবাসি বলেই পিছনে পরে আছি,নয়তো তোমার মতো মেয়ের দিকে চোখ তুলেও তাকাতাম না আমি।

কথাটা কানে যেতে ওপর হাতে আরেকটা থাপ্পড় আদ্রিশের ওপর গালে বসিয়ে দেয় আঁখি,আদ্রিশ থাপ্পড় টায় বেশ রেগে এবার আঁখির দিকে এগিয়ে গেলে তার ঢালস্বরূপ তার দুই গার্ড সামনে চলে আসে,আঁখি এবার ঝাঁঝালো স্বরে উত্তর দিলো।
″কে ভুল করছে বা করেছে,এখন না হয় বলা বাদ দিলাম কু****ত্তা,সময় তোকে বলে দিবে।চোখের সামনে থেকে দূর হো এবার।″

″পস্তাবে তুমি আঁখি।″
অ*গ্নি*দৃ*ষ্টি*তে আঁখির দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলে চলে গেল আদ্রিশ,আঁখি এবার গার্ডদের উদ্দেশ্যে বলল।
″তোমাদের কাজে কেন রেখেছি?আমার কেবিনে যে কেউ কিভাবে ঢোকে যায় তোমরা থাকতে?″
″দুঃখীত ম্যাম,আমরা সামনে থেকে খেয়াল রাখব।″

হাসপাতালে আজকের শেষ দিন এতো বা*জে কাটবে ভাবে নি আঁখি, সবাই আঁখির বিদায়ের ব্যবস্থা ভালো রকম করলেও সেই ভালোলাগার অনুভুতি ধরা দিল না আঁখির মনে।দিনটাই নষ্ট করে দিলো আদ্রিশ।
হাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে অন্যান্য ডাক্তারেরা তাকে বিভিন্ন গিফট আর ফুলের তোড়া দিয়েছে।আঁখির চলে যাওয়া নিয়ে যে সবাই শোকাহত।

নিরাশ মন নিয়ে আঁখি বেরুলো হাসপাতাল থেকে,কিন্তু হাসপাতালের গেটের দিকে চোখ যেতেই আরেকদফা বিরক্তি ধরা দিলো আঁখির চোখেমুখে, গেটের বাইরে রিপোর্টারদের ঢল নেমেছে,গেটের দারোয়ানেরা তাদের আটকানোর অসীম চেষ্টা করছে,সবার মুখে যেন একটাই কথা।

ডা.আঁখির সাথে কথা আছে, ভিতরে যেতে দিন।পুরো হাসপাতালের লোক প্রায় বাইরে চলে এসেছেন।আঁখি জানে তার আর আদ্রিশের ব্যাপারটা নিয়ে এরা তাকে জেরা করতে এসেছে,যেখানে আঁখিকে হেনস্তা করার কোনো পথ ছাড়বে না এরা।আঁখি চোখ দিয়ে শুধু দুই গার্ডদের ইশারা করল,যাতে তারা দু’জন তার দু’দিকের ঢাল হলো।হিজাব এর উপর মাস্ক টা লাগিয়ে নিল,তারপর হাঁটা ধরল গেটের দিকে।

প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ১৪

আদ্রিশরে কেউ গা*লি দিয়েন না,ওর মতো ভালোবাসে ক’জন?।
আসলে হয়ত অনেকেই আমার উপর রা*গ করছেন আদ্রিশের কেরেক্টার আমি এমন কেন দিলাম,আমি চাইলেও তো তার কেরেক্টার আরও একটু ভালো দিতে পারতাম,কিন্তু ভেবে দেখেন আমাদের আশেপাশে আদ্রিশের মতো অনেক লোক আছে,আমি শুধু এমন কিছু লোকের ব্যক্তিত্ব গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরতে চেয়েছি মাত্র,আসসালামু আলাইকুম সবাইকে।

প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ১৬