প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ২৬

প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ২৬
আরোহী নুর

সন্ধ্যা নেমেছে মাত্র,আদ্রিশ ঘরে প্রবেশ করল,আজ দু’দিন পর ঘরে ফিরল সে,ঘরে প্রবেশ করতেই কর্মচারী রহিমা একটা খাম এনে দিলো আদ্রিশের হাতে।
ছোলটো সাহেব এটা একটা লোক এসে দিয়ে গেল,বলল আপনি ছাড়া কাউকে না দিতে।

আদ্রিশ খামটা হাতে নিলে রহিমা চলে গেল,খামটার ভিতর দু’টো রিপোর্ট দেখতে পেল আদ্রিশ,বুঝতে পারল হাসপাতাল থেকে আসছে,প্রথম রিপোর্টটা উন্মুক্ত করে পড়ার পর আদৃত বাকরুদ্ধ হয়ে গেল,হাত পা তার মুহুর্তেই কেমন কাঁপতে লাগল,পলকেই যেন তার মাথায় আকাশ টা ভেঙে পরল।না,এ কীভাবে হতে পারে!কীভাবে মেনে নিবে সে এতো বড় সত্য!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

না, এ তো হতে পারে না!আদ্রিশ অক্ষম হতে পারে না!বাবা হবার সক্ষমতা নেই কথাটা কি করেই কোনো পুরুষ সহজে মেনে নিতে পেরে যায়।বাবা হবার কারণ দেখিয়েই তো জীবনে রিদিকাকে আনল আদ্রিশ,তবে সে আজ নিজেই অক্ষম তাতে কি করে মন মানাবে রিপোর্টটা কি মিথ্যে?কী করে হতে পারে তাও!

আদ্রিশের খুব ভালো করে মনে আছে রিদিকাকে বিয়ে করে নিয়ে আসার আগের দিন আঁখি আর আদ্রিশ দু’জনই একটা হাসপাতালে নিজেদের টেস্ট করাতে গিয়েছিল,আর্জেন্ট কাজের বাহানা দিয়ে রিপোর্ট আনার তাড়া আদ্রিশ দেখায় নি সেদিন, রিদিকাকে বিয়ে করার একটা সুযোগ যে তার চাইছিল তাই আঁখির রিপোর্টের অপেক্ষা করে নি,তারপর তো আর সেই রিপোর্টগুলোর কথা মাথায়ই আনে নি আদ্রিশ,কিন্তু আজ হঠাৎ হাসপাতাল থেকে রিপোর্টগুলো কে পাঠাল!

তখনই আঁখির কল আসলো আদ্রিশের ফোনে,আদ্রিশ ঝটপট ফোন উঠাল,আঁখি আদ্রিশকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বলল।
কি ব্যপার উকিল সাহেব?নিশ্চয়ই সুখবর পেয়েছেন?খুশি হননি খবরটা পেয়ে,আপনার না বাবা ডাক শোনার খুব ইচ্ছে ছিল,তাই তো রিদিকা নামক সুন্দরী রমণীকে ঘরে এনেছিলেন রাত কাটানোর জন্য,যাতে নিজেরও শরীরের নতুন চাহিদা পুরণ হয় আর বাবা ডাক শোনার শখটাও মিটে,যাক শরীরের চাহিদা তো পুরণ করেই নিলেন তবে বাবা ডাক শোনার চাহিদার এবার কি হবে বেবি?হা হা হা হা।

আদ্রিশ কিছুই বলছে না,পাথরের ন্যায় দাঁড়িয়ে শুনে যাচ্ছে আঁখির বলা তাচ্ছিল্য বাণী,আঁখি আবারও বলল।
তুমি কী করে ভুলে গেলে আদ্রিশ আমি একজন ডাক্তার?সেদিন টেস্ট করানোর পর অল্পসময়েই আমার কাছে রিপোর্ট চলে এসেছিল,

তুমি তো ফালতু তাড়া দেখিয়ে চলে এসেছিলে,আমি যখন রিপোর্টে দেখলাম তুমি বাবা হতে পারবে না তখন কতটা খারাপ লেগেছিল আমার তা শুধু আমি জানি তবে খারাপ লাগাটা নিজের জন্য ছিল না ছিল তো শুধু তোমার জন্য,ভেবেছিলাম আমি কথাটা কখনও তোমাকে জানাব না,

তোমাকে ভালোবেসে বুকে আগলে রেখে পার করব সারাটা জীবন,নাই বা শোনলাম কখনও মা ডাক, কিন্তু তোমার তো সে ভালোবাসার প্রয়োজন ছিল না।প্রয়োজন ছিল নতুন চাহিদার,যাক পুরণ করলে তো,তোমাকে বেশি কিছু বলব না, তোমার জন্য আমার তরফ থেকে রইল পাঁচ বালতী সমবেদনা,হা হা হা হা,আর হ্যাঁ তুমি কি দুইটা রিপোর্টই দেখেছ?

না দেখলে দেখে নাও নিচে থাকা রিপোর্টাও,আরশিয়া আনজুম আঁখি ইজ পার্ফেক্ট ফর হেবিং এ চাইল্ড,বর্তমানে তোমার চুপসে যাওয়া চেহারাটা দেখার ইচ্ছেটা চাঁপা দিয়ে রাখতে পারছি না,সত্যিই খুব মজা হতো চেহারাটা একবার দেখতে পেলে,কিন্তু কি করব বলো তোমার মতো ল*প্ট*টের চেহারা দেখার রুচি আর আমার নেই।বাই বেবি ভালো থেকো,কেমন।

আঁখি ফোনটা রেখে দিয়ে প্রশান্তির একটা নিশ্বাস ছাড়ল,উজ্জ্বল হাসি মুখে টাঙিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখতে লাগল,কতোদিন পর আজ নিজের চেহারায় সত্য সুখের হাসি দেখে ভালোই লাগল তার।
খামের অন্য রিপোর্টটা খুলে পড়তেই আদ্রিশের চোখ বেয়ে গড়িয়ে পরল কিছু জল,আঁখি সত্যিই মা হবার জন্য পুরোপুরি সক্ষম।

আঁখি আদৃতকে দেখতে তার বাড়ি যাবে বলে মন মানিয়ে নিল,কতদিন হয় মির্জা হাউজে যায় না যেখানে একসময় পরেই থাকত সারাদিন আদৃতের ধান্দায় আঁখি,আজ আবার যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো,আজ কেন জানি বড্ড ইচ্ছে করল তার শাড়ি পরতে,গতকাল নিজেই একটা শাড়ি কিনেছিল দেখতেই ভালো লাগায় তাই ওটাই পরে নিল,

চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে চোখে কাজল টেনে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়ে বেড়িয়ে আসল,চুরি পরে নিল কিছু,যাওয়ার পথে হঠাৎ একটা দোকানে শুভ্রতা আর রিহানকে দেখতে পেলে গাড়ি থামাতে বলল আঁখি ড্রাইবারকে,অতঃপর গাড়ি থেকে নেমে ছুটে গেলো দোকানের ভিতর, নিজের ঠিক সামনে হঠাৎ আঁখিকে দেখতে পেয়ে শুভ্রতা আঁখিকে জড়িয়ে ধরল কিছু না বলেই,আঁখিও তাকে জরিয়ে ধরল হাসিমুখে। অনেকদিন পর আপনজন বলতে কাউকে পেয়ে আঁখি অনেকটা আবেগপ্রবণও হয়ে উঠল।আহ্লাদী স্বরে বলল।

″অনেক মিস করি আপু আমি তোমায়। ″
″আমিও মিস করি আমার পাগলি বোনটাকে।″
″এবার আঁখি শুভ্রতাকে ছাড়িয়ে বেশ অভিমানী হয়ে বলল।″

″তাই বুঝি?তবে ফোন করলে উঠাও না কেনো?প্রথম প্রথম তো কতো কথা বলতে সারাদিন আমার সাথে কিন্তু এ ক’দিন থেকে একদম ফোন করই না আর আমি ফোন করলে ধরো না,এমনটা কেনো করছ?রাগ করেছ আমার উপর?
আঁখির কথায় শুভ্রতা বেশ হকচকিয়ে উঠল, আমতা আমতা করে বলল।

″আসলে, আসলে এখন কাজে সময় পাই না,তাছাড়া রিহানকেও পড়াই স্কুল যাবে তো সামনের বছর থেকে,আচ্ছা আমি চলি রাত হয়ে গেছে বাড়ি ফিরতে হবে,আজ আদিল জরুরি কাজে আছে তাই কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিতে এসেছিলাম আমি।চলি,ভালো থেকো।″

″এ কি আপু?চলে যাবে কেন?এতদিন পর আমার সাথে দেখা হলো,ভালো করে কথাও বলবে না?
″কাজ আছে আঁখি,অন্যদিন সময় করে ফোন করব নে,চলি এবার। ″
″আপু কি হয়েছে বলো আমায়?এমন করছ কেনো তুমি?″
″কই কিছু হয় নি তো।″
″আমি জানি আপু কিছু হয়েছে,বলো আমায়?″
″আরে আঁখি তুমি শুধু শুধুই অতিরিক্ত ভাবছ,কিছুই হয় নি,চলি আমি।″

কথাগুলো বলতে বলতেই হুটহাট পায়ে রিহানকে কোলে নিয়ে বেড়িয়ে গেল শুভ্রতা,ভালো করে রিহানকে আদরটাও করতে দিল না।
শুভ্রতার এমন আচরণে আঁখির বেশ খটকা লাগল,শুভ্রতা কেমন জানি আঁখিকে এড়িয়ে যেতে চাইছে কিন্তু কেন?

″আর একটু খেয়ে নে বাবা আমার।″
″মা আর খেলে আমি বমি করব।″
″ওকে করে নিস,মা আছি তো পরিষ্কার করার জন্য,তবুও খেয়ে নে বাবা আমার,দেখ না জ্বরে মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে দিনে দিনেই।″

″আন্টি,ছাড়েন শুধু শুধু ওকে জোর করছেন কেন?সুস্থ হলে এমনিতেই খেতে পারবে।″
″হ্যাঁ আর তার আগে আমার ছেলে শুকিয়ে ভুঁ*ত হয়ে তোমার দলে চলে যাক।″
″আমার দল মানে?″
″শেওড়া গাছের পে*ত্নী*দে*র দলে তো ভুঁতই থাকবে।″
বিড়বিড়িয়ে বললেন শায়েলা মির্জা,কথাটা আর কেউ না শুনলেও আদৃত শুনে নিল,রিংকি আবার জিজ্ঞেস করল।

″কি যেন বললেন আন্টি।″
″আরে রিংকি তুমি খাওয়াতে মন দাও তো,মা এমনিই বলছিল।″
মায়ের দিকে আঁড়চোখে তাকিয়ে বলল আদৃত,শায়েলা মির্জা মুচকি হেসে গেলেন।

তখনই কলিংবেলটা বেজে ওঠলে কর্মচারী রুবাইয়াত দরজাটা খুলে দিল, দরজার সামনেই আঁখিকে দেখতে পেল সবাই,আঁখিকে শাড়ি পরিহিত দেখে আদৃত যতটা মুগ্ধ হয়ে তখন দেখছিল ততটাই অবাক হয়ে দেখছিল বাকি সবাই।আদৃতের মা তো এক প্রকার বাকরূদ্ধ হয়ে গেছেন,আদৃতের জন্য হাতে যে লোকমাটা মাখিয়ে নিয়েছিলেন সেটাও হাত থেকে পরে গেল,তাড়াহুড়োয় হাত ধুয়েই ছুটে গেলেন আঁখির কাছে,ঝাপটে ধরলেন তাকে।কান্না করে দিলেন পলকেই।
এতবছর পর আজ মনে পরল তোর এই মায়ের কথা?

শায়েলা মির্জার এমন ছোঁয়া আঁখির কোমল হৃদয়ে আঘাত করে গেল,আবেগি হয়ে জবাব দিলো সেও।
″ভুলটার পরিমাণ এতো ছিল যে কারো কাছ থেকে ক্ষমা পেয়ে ওঠব ভাবতেও পারি নি।″
″পাগল মেয়ে আমার,মা বাচ্চার সাথে রাগ করে থাকতে পারে না কি!ঘরে আয়,আজ তোকে আর কোথাও যেতে দিব না।″
আঁখি ঘরে আসতেই ইশিকা এসে আঁখিকে জড়িয়ে ধরল?

″কেমন আছিস?আমাকেও ভুলে গেছিলি?″
″সরি রে।″
″থাপ্পড় দিব যদি আবারও সরি বলেছিস তো।″
ইশিকার কথায় আঁখি হাসল,এবার আরিয়ান মির্জা বললেন।

″কেমন আছো মা?″
″এইত আঙ্গেল আলহামদুলিল্লাহ।″
″কেমন আছো লাভ গুরু?″বলল সিয়াম।
″এইত আছি যেভাবে ছিলাম।″
″তা আপনার কি অবস্থা ডা.সাহেব,হটাৎ করে জ্বর বাঁধালেন কেমনে?″
″আর বলিস না ছেলেটার উপর কুনজর পরেছে তাই অসুখ নামছে না।″

আরচোখে রিংকির দিকে তাকিয়ে বললেন শায়েলা মির্জা,আঁখি জিজ্ঞেস করল।
″ও কে?ওকে তো চিনলাম না।″
″আমি রিংকি,আদৃতের ক্লোজ ফ্রেন্ড।″

আরে না না এতো ক্লোজও না,দূরের ফ্রেন্ড,অনেক দূর থেকে এসেছে,আমেরিকা থেকে,তুই ওসব নিয়ে ভাবিস না,আমি তো আদৃতকে বিয়ে করাব ভাবছি জানিস,ওর জন্য বউ দেখছি,একদম তোর মতো কেউ,তুই হলেও চলবে।শেষের কথা একদম হালকা করে বললেন শায়েলা মির্জা।
″কি বললে তুমি মামুনি?″

″আরে মা তুমি কী আমার বিয়ের কথা ছাড়া আর কিছু পাও না?ও এতদিন পর বাড়ি এসেছে ওকে এমনিই দাঁড় করিয়ে রাখবে?″
″আরে না মা তুই বস,আমি খাবার আনি কতদিন হয় তোকে মুখে তুলে খাওয়াই না।″
″না মামুনি আমি এখন কিছু খাব না।″
″কী বলে পাগলি মেয়ে আমার,আগে আসলে মামুনির হাতে খাবে বলে পাগল করত,আর আজ আমি তোকে না খাইয়ে ছাড়ব ভেবেছিস?″

অতঃপর শায়েলা মির্জা আঁখিকে খাওয়ার টেবিলে বসিয়ে তার জন্য খাবার বাড়তে লাগলেন,আদৃতও এবার পাশের চেয়ারে এসে বসল,বাকিরা নিজেদের অবস্থানে বসলেন।আদৃত আঁখির দিকে বিমোহিত দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে বার বার যা রিংকি খেয়াল করছে খুব প্রখরভাবে,যাতে বড্ড জ্বা*লা*পো*ড়া অনুভূতি হচ্ছে তার মনে।ইশিকা এদিকে সিয়ামকে কানে কানে বলল।
″দেখো না সিয়াম আজ এতটা বছর পর ভাইয়ার চেহারাতে সেই খুশি সেই ভালোলাগা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যেমনটা সেই ছয় বছর আগে আঁখিকে দেখলে ভাইয়ার চেহারাতে ভেসে ওঠত।″

″জানোই তো তুমি, আদৃত আঁখিকে কতটা ভালোবাসত,আর এখনও বাসে,কিন্তু আঁখির মনোভাব তো আমরা এখনও জানি না,আমার তো ভয় হচ্ছে আদৃতকে নিয়ে,যদি এবারও আঁখিকে পেতে ব্যর্থ হয় তবে না আবার নিজের সাথে কিছু করে বসে।

″এমনটা বলো না তুমি,দেখবে আল্লাহ সব ঠিক করে দিবেন।″
রিদিকা ভাবতে ভাবতে পেরেশান,কে করল তার সাথে এমনটা!বাড়িতে এসেই পুরাতন সকল ব্যবহার্য জিনিস ফেলে দিয়ে নতুন করে আনিয়েছে,কিন্তু চিন্তা তো মাথা থেকেই নামছে না কে করল এমনটা?আবার যে করবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে,কিন্তু তার ব্যবহার্য জিনিসে কে ই বা কিছু মেশাবে আর কেমনে?

ঘরের মানুষ ব্যতীত বাইরের কারো সাথেই তো রিদিকার তেমন কোনো মেলামেশা নেই।তার মানে কি আদিল, শুভ্রতা বা মায়ের মধ্যে কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু ষড়যন্ত্র করে চলছে।ব্যপারটা কি আদ্রিশকে জানাবে সে?না,ভয় হচ্ছে তার বড্ড,পরে যদি আদ্রিশ তাকে নিজের অযোগ্য মনে করে ছেড়ে দেয়।

আয়নাতে চুল আঁচড়ে আনমনে ভেবে যাচ্ছে রিদিকা কথাগুলো,বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে আদ্রিশ,মাঝে মধ্যে আরচোখে দেখছে রিদিকাকে,মনে চলছে হরেক চিন্তা, নিজের অযোগ্যতা সম্পর্কে কি রিদিকাকে তার জানানো উচিৎ?কি করবে সে ভেবে কূল পাচ্ছে না।

″শুভ্রতা আঁখির সাথে আমার কথা হয়েছিল,আমি চাইছি ওর দেওয়া টাকা দিয়ে নিজেই একটা ব্যবসা খুলি,আমার একটা বন্ধু আছে তাছাড়া আঁখি বলেছে তার কাছেও একজন লোক আছে যে এমন ব্যবসা করতে চায়,আমরা তিনজন মিলে শেয়ারে একটা ব্যবসা খুলব,তারপর ব্যবসা বড় হলে আমরা নিজেরা নিজেদের ব্যবসা আলাদা করে নিতে পারব।″

″অভাগী টা কতই না করছে আমাদের জন্য,আর আমরা চেয়েও ভালো ব্যবহারটা তার সাথে করে ওটতে পারছি না।″
″কী হলো শুভ্রতা তুমি কাঁদছ কেনো?″
″আজ আঁখিকে পেয়েছিলাম, কিন্তু ধরা পরার ভয়ে আর ওর কথা চিন্তা করে পালিয়ে এসেছি ওর কাছ থেকে চুরের মতো,বেশি কথাও বলি নি।″

″কি করবে বলো?আমরা যে নিরুপায়,কিন্তু খুব বেশি দিন থাকব না,চিন্তা করো না।″
″হুম,তা আঁখির সাথে তোমার যোগাযোগ আছে কেউ জানে না তো?″
″না না,আমি সম্পূর্ণ লুকিয়ে কথা বলছি ওর সাথে।″
″হুম।″

আঁখির মুখে খাবার তুলে দিলেন শায়েলা মির্জা,আঁখির চোখ ভরে উঠল সুখের জলে,কতদিন পর এভাবে মায়ের আদর পেল সে।শায়েলা মির্জা ওপর হাতে তার চোখ মুছে বললেন।

″কাঁদছিস কেন পাগলি?″
″এতবছর পর আমার দ্বিতীয় মাকে যে আবার ফিরে পেলাম আমি।″
″হয়েছে আর ইমোশনাল করতে আসিস না আমায়,পরে কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলে গেলে দেখতে আমায় বিশ্রি লাগবে″
কথাটা শুনে সবাই হু হু করে হেসে দিল।

প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ২৫

দেখুন আমি আবারও বলছি চাইলে আমি রহস্য খুব সহজেই উন্মোচন করতে পারি কিন্তু এতে কারোই ভালো লাগবে না,গল্পের রহস্য উন্মোচন হওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে,আগামী পার্ট থেকেই আস্তে আস্তে সব খুলতে শুরু হবে তাই ধৈর্য্য ধরে রাখার অনুরোধ রইল সবাইকে।আসসালামু আলাইকুম।

প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ২৭