প্রেম নেশা পর্ব ৩৪+৩৫+৩৬

প্রেম নেশা পর্ব ৩৪+৩৫+৩৬
শান্তনা আক্তার

রথিকে দেখা মাত্র সামির তার রুমে চলে যায়।
রথি গিয়ে সাহেরা খাতুনের পা জড়িয়ে নেয়,,

আমাকে মাফ করে দিন মা।আমার ভুল হয়েছিল।আপনাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা আমার উচিত হয়নি।(কান্না করে)

না বউমা তুমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছো এটাই অনেক আমাদের কাছে।এর জন্য পা ধরতে হবে না বলে রথিকে ধরে তুললেন সাহেরা খাতুন।

হ্যাঁ,,তোমার শ্বাশুড়ি মা একদম ঠিক বলেছে বউমা।তুমি এখন সামিরের কাছে যাও।(আজমল চৌধুরী)

হ্যাঁ আপু তুই ভাইয়াকে গিয়ে মানা।অনেক অভিমান করে আছে তো উপর।
রথি সকলের কথা মেনে নিয়ে উপরে চলে যায় নিজের রুমে।গিয়ে দেখে সামির বিছানার এক কোণে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।রথি গিয়ে সামিরের পাশে গিয়ে বসে।সামির রথিকে দেখে উঠে যেতে নিবে কিন্তু তার আগেই রথি সামিরের হাত ধরে নেয়।

মাফ করবে না আমাকে?

কেন মাফ করবো তোমাকে?আমার থেকে দূরে থাকতে চাও যেহেতু তাহলে ফিরে এসেছো কেন?আগে মনে ছিল না,যখন তোমাকে ছাড়া থাকতে শিখলাম ওমনি আবার কেন চলে এলে?

এখন আমাকে ছাড়া থাকতে শিখে গেছো তাইতো?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

হুম(অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বলল সামির)

ঠিক আছে তাহলে আমি চলেই যাই।যার জন্য এসেছি সেতো আমাকে ছাড়া নাকি ভালোই আছে।বলে চলে যেতে নেয়,,,

আর এক পা আমার অনুমতি ছাড়া বাইরে রাখলে দেখো কি করি।

কি করবে?রথি কথাটা বলার সাথে সাথে সামির ওর ঠোঁট জোড়া রথির ঠোঁটের ভাজে ডুবিয়ে দেয়।

আপু চলে আসায় আমি অনেক খুশি।

আমিও পিচ্চি।এখন যদি ভাইয়া একটু হাসি খুশি থাকে।

ঠিক তবে শুধু ভাইয়া নয় বাবা মাও।তোমার আমার দুজনেরই।

ঠিক তবে আমার মম ড্যাড হাফ খুশি হয়েছে।

হাফ কেন?(চিন্তায় পড়ে যায় শান্তনা)

হাফ নয়কি?সামিরা তো এখনো আগের মতো হয়নি।তাহলে পুরোপুরি হ্যাপি কিভাবে হলো আমার মম ড্যাড?

কথাটা তো ঠিক বলেছো।সামিরাও যেন আগের মতো হয়ে যায়,,এই দোয়াই করি।

হুম,,,এখন তুমি বলো তোমার খবর।

আমার খবর আবার কি যে বলবো?

কয়দিন তো ঠিক করে কথা বলছো না সেভাবে।আগের মতো কোথায় কি হয়েছে তাও শেয়ার করো না।হয়েছে টা কি তোমার?

কি হবে বলোতো,,আপুকে নিয়ে কতটা টেনশনে ছিলাম।বাড়ির সবার কেমন অবস্থা ছিল দেখেছোই তো।এসবের মাঝে এতটা ডিস্টার্ব ছিলাম কি বলবো আর।

সবার জন্যই ভাবো জাস্ট আমাকে ছাড়া বলে মেঘ ওর ল্যাপটপ খুলে বসে।

আরে রাগ করছো কেন?কি করেছি আমি বলবে তো।

কিছুই করোনি এখন আমার অনেক কাজ বাকি আছে শব্দ করো না কোনো প্রকার।
শান্তনার বেশ মন খারাপ হয়ে যায় মেঘের কথায়।

আচ্ছা যাচ্ছি এখান থেকে আমি।তাহলে কোনো শব্দই হবে না বলে বেরিয়ে আসে সেখান থেকে।
শান্তনা দু কদম চলতেই রথি ওর সামনে প্রকট হয়।

কিরে কোথায় যাচ্ছিস মুখ ভাড় করে?

মুখ ভাড় কেন করবো?আমি একটু সামিরার ঘরে যাচ্ছিলাম।

ওহ,,,যা তাহলে পরে কথা হবে।

কেন,তুমি কি কিছু বলতে আসছিলে আমায়?

হ্যাঁ আসলে আমার ফোনে একটা সমস্যা হয়েছে তাই এফবিতে যেতে পারছি না।একটা দরকারি কাজ ছিল।সামিরের ফোনে একটুও চার্জ নেই যে চালাবো।তাই তোর ফোনটা যদি দিতিস।

জাস্ট এইটুকু কথার জন্য এতো কিছু বলার কোনো দরকার ছিল না আপু।তুমি যদি বলতে তোর ফোনটা দে,,আমি এমনিতেই দিয়ে দিতাম।
এই নাও বলে শান্তনা ওর ফোনটা রথির হাতে দেয়।

thanks রে।তুই দাঁড়া এক্ষুণি আমার কাজ হয়ে যাবে।

তুমি করো যা করবে আমি একটু সামিরার কাছে যাব।

ওহ,,ঠিক আছে যা তাহলে।

আচ্ছা,,,তারপর শান্তনা সামিরার রুমে চলে যায়।সামিরা গল্পের বই পড়ছিল শান্তনাকে দেখে বইটা সাইডে রেখে দেয়।

ছোট ভাবি তুমি,,

আমার জন্য তোমার কাজে বাঁধা পড়ে গেল নাকি?

আরে না।বসো তুমি।এমনিতেই বোর হয়ে গিয়েছিলাম আমি।তোমার সাথে একটু কথা বললে ভালোই লাগতো।

বোর হলে আমার সাথে কেন কথা বলবে?তোমার উনি কোথায়?(দুষ্টমি করে বলল শান্তনা)

ওরতো শুধু কাজ আর কাজ আমার জন্য সময় কই বলো।তুমি বসো,,দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি?

তা বললে কি হয় ননদিনী।শুধু কাজ করলেই তো হবে না,,হবু বউকেও তো একটু সময় দিতে হবে।(বসতে বসতে বলল)

তুমি একটু বকে দিও তো সাহিলকে।খালি বলবে কাজ না করলে তোমাকে বিয়ে কিভাবে করবো?ভালো কিভাবে রাখবো ব্লা ব্লা।

ওর কথাও ঠিক।যাই হোক বাবা মাকে কবে জানাবে সাহিল আর তোমার কথা।বাবা মার কথা বলাতে সামিরার মুখ কালো হয়ে গেছে।

নিজের বাবা মা থাকলে তো বলবো।

কথাটা তুমি ঠিক বলোনি সামিরা।যারা তোমাকে আর তোমার ভাইয়াকে জন্ম না দিয়েও নিজ বাবা মায়ের আদর স্নেহ দিয়েছে তারা কি আপন বাবা মায়ের চেয়ে কম?কখনো তোমাকে আর সামির ভাইয়াকে মেঘের তুলনায় কম ভালবাসেনি এটা কি কম?তোমাদের তিন জনকে সমান চোখে দেখেছে এটা কি কম?তুমি ভালো নেই বলে এখনো তারা চোখের পানি ফেলছে এটাও কি কম?তাছাড়া একবারও কি খোঁজ নিয়েছো তারা এই কটা দিন ঠিক মতো খেয়েছে কিনা?

মানে মাম্মি পাপা খায়নি ঠিক মতো।বলতে বলতে সামিরার চোখে পানি চলে আসে।

না,,একটা দিনও না। তুমি আর সামির ভাইয়া যে খাওনি ঠিক করে,,তাই তারাও খায়নি।

আমাকে আগে কেন বলোনি এসব?

কিভাবে বলি হুম?তুমি কি কোনো কথা শুনেছো আমার?বাবা মায়ের কথা তুললেই আমাকে চুপ করিয়ে দিয়েছো এটা ওটা বলে।তোমার মন খারাপ হয়ে যেতো তাই আর বলিনি আমি।

আমি তো তাদের ভালবাসাকে মিথ্যা বলিনি ভাবি।আর না তাদের উপর রাগ করেছি।আমি তো নিজের প্রতি রাগ করেছি। কেন তারা আমার আসল মাম্মি পাপা নয় তাই অভিমান করেছি।আমি কেন সেদিন সবটা শুনেছিলাম সেই জন্য রাগ করেছি।সেদিন যদি সামির ভাইয়ার ঘরে না যেতাম তাহলে আজ জানতেই পারতাম না এইসব কথা আর না এতটা কষ্ট পেতাম।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি মাম্মি পাপার উপর একটুও রেগে নেই।আমি তো তাদের খুব ভালবাসি আর তাদেরই নিজের আসল মাম্মি পাপা মানি।আমি এখনো মানতে পারছি না যে তারা আমার মাম্মি পাপা নয়।বিশ্বাস করো।

আমি জানি তো তুমি তোমার মাম্মি পাপাকে কতটা ভালবাসো।এখন আর কান্না করবে না।যা হয়েছে ভুলে যাও।সব কিছুই ঠিক হয়ে গেছে।আপু ও ফিরে এসেছে।তুমিও ফিরে যাও তোমার মাম্মি পাপার কাছে।এই বয়সে এতটা কষ্ট নিতে পারছে না তারা।

হুম,,আমি আর কোন কষ্ট দেব না মাম্মি পাপাকে।

এইতো গুড গার্ল।এখন তাহলে কান্না থামিয়ে একটু হাসো।
সামিরা তার চোখের পানি মুছে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল,,

thanks ভাবি বলেই শান্তনাকে জড়িয়ে ধরে।

ফুলি দাঁড়াও তো একটু।

জ্বি কন বড় ভাবি।

কোথায় যাচ্ছিলে?

এইতো ছুডো ভাবির রুমে যাইতাছিলাম।মেঘ ভাইরে কফি দিতে।

ওহ,,তাহলে এই ফোনটাও নিয়ে যাওনা।

কার ফোন এইডা?

তোমার ছোট ভাবির ফোন ওকে একটু দিয়ে দিও কেমন?

আইচ্চা।তারপর ফুলি উপরে চলে যায়।
সাথে সাথে রথি টিনাকে টেক্সট করে দেয় যে কাজ হয়ে গেছে।
ফুলি কফির মগটা মেঘের হাতে দিয়ে বলে,,

ছুডো ভাবি কই?

কেন?নিচে নেই ও?

না দেহি নাইতো তারে।

তাহলে সামিরার কাছে গেছে হয়তো।

হইতে পারে এই নেন ছুডো ভাবির ফোন কুকারে তরকারি বহাইছিলাম আমি যাই বলে ফুলি চলে যায়।

তোমার কাছে শান্তনার ফোন কেন? কথাটা শোনার আগেই ফুলি চলে যায়।চলে গেল কথাটা না শুনেই।এরই মাঝে একটা এসএমএস টোন বেজে ওঠে শান্তনার ফোনে।

মেঘ ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই জানু নামটা দেখে তরিঘরি করে এসএমএস টা ওপেন করে।সেখানে কিছু চ্যাট দেখে মেঘের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়।মেঘের কাছে পুরো দুনিয়াটাই উলট পালট লাগতে শুরু করে।
ছি পিচ্চি তুমি এতটা নিচু।তুমিও তোমার বোনের মতোই ঠক বেরোলে! কথাটা বলে মেঘ তার চোখের পানি ছেড়ে দেয়।

মেঘ অপেক্ষায় আছে কখন শান্তনা আসবে,,বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরও যখন শান্তনা আসল না,তখন মেঘ নিজেই শান্তনাকে খুঁজতে বের হয়।তবে এক পা ফেলতেই শান্তনা চলে আসে মস্ত এক হাসিরসহিত।শান্তনাকে দেখা মাত্র মেঘের রাগ মাথা অব্দি উঠে যায়।

জানো আজ কি হয়েছে?বিশাল হাসি দিয়ে বলল শান্তনা।

সবই জানি,,(দাঁতে দাঁত চেপে বলল মেঘ)

কিন্তু তুমি কিভাবে জানলে?

বেইমানদের আসল চেহারা জানতে বেশি সময় লাগেনা।

বেইমান? কে বেইমান?

নাটক করা খুব ভালোই জানো দেখছি।নাহলে ছটি বছর কিভাবে পারলে।

কি পারলাম ছটি বছর?

নাটক!তুমি তো প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অভিনেত্রী মনে হচ্ছে।

কি বলছো এসব?আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

কি করছো জান?তোমার হাসবেন্ড কি তোমার সাথে আছে?
না নেই জানু।কিছু করছি না জানু।তুমি কি করছো?
এবার বুঝতে পেরেছো বুঝি?

কি বলছো তুমি,আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না।

ব্যাস তোমার আর কোনো নাটক কাজে দেবে না। আজ তুমি শুধু শুনবে আর আমি বলবো।
চোখের কোণে জমে থাকা পানি হাতের কনুই দিয়ে মুছে মেঘ বলতে শুরু করল,,,
তোমাদের মতো মিডিল ক্লাসের মেয়েরা কেমন হয় সেটা আমি আগেই বুঝেছিলাম তোমার বোনের দ্বারা।কিন্তু তাও তোমাকে ঠিক অন্যরকমই ভাবতাম।তবে আজ পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম তোমাদের মতো মেয়েরা বেইমান স্বার্থপর ছাড়া ভালো কিছু হয়না।
মেঘের এক একটা কথা শান্তনার বুকে গিয়ে বিধছে তীরের মতো।শান্তনার চোখ বেয়ে আপনা আপনি পানি পড়ছে মেঘের কথায়।
চোখের পানি পড়ছে!হা হা হা হা হা।

তুমি যেটা করলে তার জন্য আমার কেমন অবস্থা হয়েছে ভাবোতো?এ নিয়ে দুবার ঠকলাম।তোমার বোন যখন আমাকে বলেছিল মেঘ আমি তোমার থেকে বড় লোক কাউকে পেয়েছি,,তাকেই বিয়ে করবো।তখন আমার এতোটাও কষ্ট হয়নি যতটা আজ হয়েছে।সেদিন আমি উপরওয়ালাকে একটাই কথা বলেছিলাম।হে আল্লাহ,তুমি যা করেছো সময় থাকতে করেছো।নইলে আমাকে সারাজীবন এরকম বেইমান মেয়ের সাথে কাটাতে হতো।সেদিন তোমার বোনের জন্য আমার মনে এতটাই ঘৃণা তৈরি হয়েছিল কি বলবো আর।তারপরও আমি ধৈর্যধারণ করেছি।তারপর বাসায় এসে জানতে পারি সামির ভাইয়া আর রথি একে অপরকে ভালবাসে আর বিয়ে করতে চায়।তখন আমি ভাইয়াকে সব কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারিনি কারণ ওর চোখে আমি রথির জন্য যে ভালবাসা দেখেছি সেটা দেখার পর আর মুখ দিয়ে কিছু বেরোলোই না।সেদিনের পর থেকে আমি খুব ভেঙে পড়ি কিন্তু মম আমার পাশে এসে দাঁড়াতে আমি কিছুটা হলেও মনোবল পাই।হঠাৎ আমার মাথায় কিভাবে যেন তোমাকে বিয়ে করার খেয়াল আসে।তোমাকে বিয়ে করার একটাই কারণ ছিল।সেটা হলো রথিকে শিক্ষা দেওয়া।

তবে ধিরে ধিরে আমি তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে যাই।খুব দ্রুত আমি তোমাতে জরিয়ে গিয়েছিলাম।সেই দুর্বলতাটা কবে ভালবাসায় পরিনত হয় নিজেও জানিনা।যখন আমি বুঝতে পারি আমি তোমার প্রেমে পড়েছি তখন আমার কাছে কি মনে হয়েছিল জানো?তখন আমার কাছে মনে হয়েছিল রথিকে আমি কখনো ভালোই বাসিনি।কারণ তোমার জন্য যেই ফিলিংস আমার মনে জমেছে সেটা রথির জন্য কখনো জাগেনি।ওটা হয়তো ভাললাগা ছিল তাই অতি সহজে রথিকে ভুলতে পেরেছি।যেদিন আমরা তোমাদের বাড়ি গিয়েছিলাম আমার আর তোমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।ওইদিন রথির মুখের এক্সপ্রেশন দেখে আমার খুব শান্তি লেগেছিল।

আমি দেখতে চেয়েছিলাম আমি যে গরিব নই আজমল চৌধুরীর ছেলে এটা জেনে রথির কি হাল হয়।অন্যদিকে তোমার এক্সপ্রেশন দেখে আমার খুব মায়া লেগেছিল।পিচ্চি মেয়ে তার উপর বোনের বিএফের সাথে বিয়ে এসব মিলিয়ে তুমি খুবই ডিপ্রেসড ছিলে সেটা তোমার ফেস দেখে আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলাম।ঠিক তখন আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি,,তোমার জীবনটা আমি এভাবে শেষ হতে দেব না।তোমাকে পড়ালেখা শেখাবো যতদূর তুমি চাইবে তারপর তুমি যখন নিজের পায়ে দাঁড়াবে তোমাকে মুক্ত করে দেব।কিন্তু তারপর আমার মত চেঞ্জ হয়ে যায়।আমি তোমার সাথে সারাজীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেই।

কারণ আমি জানতাম তুমিও এটাই চাও।ভাবতাম আমার মতো তুমিও আমাকে ভালবাসো।কিন্তু কতো বড় ইস্টুপিড ছিলাম আমি।কিছুক্ষণ আগে অব্দি এটাই বিশ্বাস করতাম যে তুমি আমাকে ভালবাসো।খুব শীঘ্রই তুমি তোমার মনের কথা আমাকে খুলে বলবে।কিন্তু আমি ভুল ছিলাম।তুমি নিজেই প্রমাণ কর দিলে যে, আই ওয়াজ রং।Shame on you megh,,shame on you…

এতোক্ষন মেঘের কথা দু কান দিয়ে শুধু শুনেই গেল শান্তনা।তবে বুঝতে পারছে না, সে এটা ভেবে খুশি হবে মেঘও তাকে ভালবাসে নাকি এটা ভেবে কষ্ট পাবে যে সে জানেই না আসলে সে করেছে তো কি করেছে।যার জন্য মেঘ তাকে বেইমান স্বার্থপর বলল।নিজেকে কোনো মতে সামলে এবার শান্তনা বলেই ফেলল,,

কি করেছি আমি যার জন্য এতো বড় অপবাদ দিলে আমাকে?
মেঘ শান্তনার ফোনটা ওর হাতে দিয়ে বলল,,

এই এসএমএস গুলো কোন আশিকের সাথে করেছিলে?

এসএমএস!কই দেখি বলে শান্তনা এসএমএস পড়া শুরু করে।এসএমএস গুলো দেখে শান্তনার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম।
এইগুলো আমি করিনি সত্যি।

আবার মিথ্যা।এতোগুলো বছর মিথ্যার মাঝে থেকেছি আর না হ্যাঁ,,আর না।তুমি আর আমাকে বোকা বানাতে পারবে না।তোমাকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দেব তারপর তোমার জানুর কাছে চলে যেও কেমন?

কি বলছো কি তুমি এসব?আমি সত্যি বলছি আমি এই চ্যাট গুলো আমার নয়।

তোমার নয়? তাহলে তোমার ভুত করেছে।নাকি অন্য কেউ তোমার ফোন নিয়ে করেছে?কোনটা?কোন মিথ্যাটা বলবে তাই বলো?এর মধ্যে যেটাই বলোনা কেন আমি বিশ্বাস করছি না।

তাইতো,,আমার ফোন তো আপুর কাছে ছিল।কিন্তু আপু কেন করবে এমনটা?(মনে মনে)

নিশ্চয়ই অন্য কোনো মিথ্যা ভাবছো বলবে বলে।কিন্তু কোনো লাভ নেই শান্তনা।আমি আর তোমার কথায় ফাসছি না।

প্লিজ বিশ্বাস করো আমি এসবের কিছুই জানি না।এসএমএস গুলো যেই টাইমটায় করা হয়েছিল তখন আমি সামিরার সাথে কথা বলছিলাম।আর আমার ফোন আপুর কাছে ছিল।

মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তাকায় মেঘ)

মানে আমার কাছে তখন ফোনই ছিল না তাহলে আমি কিভাবে করলাম এসএমএস?

ছি শান্তনা ছি।নিজের দোষ তাও আবার নিজের বোনের উপর চাপাতে চাইছো তুমি?ওহ গড আমি তোমাকে কি ভাবতাম আর তুমি কি বেরোলে।

আমি আপুর উপর দোষ চাপাচ্ছি না সত্যি বলছি।বিশ্বাস করো আমাকে।

নাহ আর না।আমি তোমাকে আর বিশ্বাস করতে পারবো না বলে নিজের রুম থেকে বেরিয়ে আসে মেঘ।নিচে এসে ফুলির কাছে কফি চায়।
উফ খুব মাথা ধরেছে আমার।মাথা কাজ করা অফ হয়ে গেছে।আমি কি শান্তনার কথা বিশ্বাস করবো?না,না যদি এটাও ওর অন্য কোনো নাটক হয়।মেঘের ভাবনার মাঝে ফুলি কফি নিয়ে হাজির হয়।

এই নেন আপনের কফি।
মেঘ ফুলির হাত থেকে কফির মগটা নেয়।
আপনে কফি খাইতে নিচে আইছেন যে,ছুডো ভাবি কই?এহনো সামিরা আফার লগে কতা কইতাছে নি?

না ওতো রুমেই আছে।

ও আইচ্চা,,,তারপর ফুলি চলে যেতে নেবে কিন্তু মেঘের কথায় থেমে যায়,,

আচ্ছা তুমি তখন শান্তনার ফোন কিভাবে পেয়েছিলে?মানে ওর ফোন তোমার কাছে কেন ছিল?

আমার কাছে ক্যান থাকবো ছুডো ভাবির ফোন?আমারে তো বড় ভাবি কইলো ছুডো ভাবিরে তার ফোন দেওনের লাইগা।

কি,,তুমি সত্যি বলছো তো?

হ মিথ্যা ক্যান কমু।আপনে কি আমারে নুতান চেনেন নাকি।আপনাগো কত টাহা পয়সা নিজের হাত দিয়া ধরছি কুনোদিনও তো একটা টাহাও এদিক থেইকা ওদিক হয় নাইকা।আর এইডা তো সামাইন্য ফোন।

আমি সেভাবে বলিনি।সরি খারাপ লাগলে।আমরা জানি তুমি কেমন।আমি তো শুধু জানতে চেয়েছি মাত্র।

ও আইচ্ছা।তাইলে ঠিকই আছে।কিছু লাইগলে কইয়েন আমি এহন যাইলাম।

হুম,,,,তার মানে শান্তনা ঠিকই বলেছিল।ওর ফোন রথির কাছেই ছিল।আর ওই এসএমএস গুলো?অহ নো,,,আমি কতটা বোকা।ওই এসএমএস গুলোর টাইপিং তো একদম রথির মতোই ছিল।শান্তনা তো ওইরকম টাইপিং করেনা।শেট,,,আমি না বুঝে কি না কি বলেছি পিচ্চিকে।আমার ওইভাবে ইনভেস্টিগেট না করে শান্তনার সাথে খারাপ বিহেভ করা উচিত হয়নি।আমার কথায় কতটা কষ্ট পেয়েছে ও।নাহ সরি বলতে হবে ওকে।কিন্তু রথি এই কাজটা কেন করেছে?কি লাভ হলো ওর এটা করে?বিগত ছয়টি বছরে কোনোদিন এমন কিছু করেনি তো। তবে এখন কেন এমন করলো?কি করতে চাইছে ও?
এখন এটা ভাবার সময় নয়।আগে গিয়ে আমার পিচ্চিকে সামলাই পরে দেখে নেব রথি কে।বলে মেঘ নিজের রুমের দিকে যায়।

চলে যাব আমি মেঘকে ছেড়ে।যার সাথে এতোগুলো বছর এক ছাদের নিচে ছিলাম সেই আমাকে চিনলো না।তাহলে কি লাভ আমার তার সাথে থেকে।আবার বলে ভালবাসে আমাকে।এই ওর ভালবাসার নমুনা!!ভালবাসার কথা বলল,,আর ভালবাসার মানুষকেই বেইমান
স্বার্থপর বানিয়ে ফেলল?নাহ এসব শুনে আমার আর মেঘের সাথে থাকা সম্ভব নয়।বলে ব্যাগ নিয়ে চলেই যাচ্ছিল শান্তনা কিন্ত সামনে মেঘ দাঁড়িয়ে পড়ে।

কোথায যাচ্ছো ব্যাগ গুছিয়ে?

যেখানে ইচ্ছা সেখানে।তবে তোমার সাথে আর একটা মুহূর্তও থাকছি না।এবার আমার সামনে থেকে সরে দাঁড়াও।

এতো সহজ মেঘের কবজা থেকে পালানো?কোথাও যেতে পারবে না তুমি।বলে ছিটকিনিটা লাগিয়ে দিয়ে আসে মেঘ।

দরজার ছিটকিনি কেন লাগালে?(রেগে)

রোমান্স করবো বলে।

দেখো আমার খুব রাগ হচ্ছে বলে দিলাম।ভালোই ভালোই আমাকে যেতে দাও বলছি।

যেতে না দিলে কি করবে শুনি?

চিৎকার করবো,বাড়ির লোক জড়ো করবো।

ঠিক আছে তাই করো।(শান্তনার কাছে গিয়ে বলল)

আমি কিন্তু সিরিয়াস।

আমিও সিরিয়াস।চিৎকার দিতে পারো এখন।
শান্তনা সত্যি সত্যি চিৎকার দিতে নেবে কিন্তু তার আগেই মেঘ শান্তনার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয়।শান্তনা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।নিজেকে মেঘের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু মেঘের সাথে পেরে উঠছে না।প্রায় 10 মিনিট শান্তনার ঠোঁটের সাথে অত্যাচার করার পর ছেড়ে দেয় মেঘ।এতোক্ষন বেচারি ঠিকভাবে দম নিতে পারছিল না।মেঘ ওকে ছেড়ে দেওয়ায় জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে থাকে।

এটা কি করলে?(রক্তচক্ষু নিয়ে মেঘের দিকে তাকায়)

আবার করবো কি?খুব ভালোই লাগছিল আমার।

এটা কেন করলে(কিঞ্চিৎ চিৎকার দিয়ে)

আমার বউকে আমি কিচ দিয়েছি তাতে তোমার কি?

একটু আগে আমাকে মিডিল ক্লাসের মেয়ে,বেইমান, স্বার্থপর বলে এখন প্রেম জাতাতে আসছো?কোনো দরকার নেই তোমার ভালবাসার।আমি থাকতে চাইনা তোমার কাছে।কি বলছিলে যেন?আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে তাইনা?ওকে ফাইন, ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিও আমি সাইন করে দেব।কথাটা বলা মাত্র মেঘ শান্তনাকে এক টান দিয়ে ওর বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।

আমার ভুল হয়েছে পিচ্চি।সরি,,আর হবে না এমন।

আমাকে ছাড়ো বলছি।আর কতো বলবে আর হবে,আর হবে না।আর কতো ক্ষমা করবো তোমায়?প্রতিবার ভুল করে বলো আর হবে না।পরে আবারও একই কাজ করো।এর থেকে আমি চলেই যাব।কারণ তোমার দেওয়া আঘাত আমি নিতে পারিনা।খুব খারাপ লাগে যখন তুমি আমাকে অবিশ্বাস করো।তাই বলছি ছেড়ে দাও আমায়।মুক্তি দাও তোমার বাঁধন থেকে।

সেটা তো পারবো না আমি।কখনোই পারবো না।তোমাকে ছাড়া আমি নির হারা ঢেউ হয়ে যাব।তুমি যে আমার হার্টবিট। তুমিই যদি না থাকো তাহলে আমি তো মারা যা,,,,মেঘ কথাটা শেষ করার আগেই শান্তনা ওর ডান হাত মেঘের ঠোঁটের উপর রাখে।যার ফলে মেঘ চুপ করে যায়।

না তুমি এই কথা বলবে না প্লিজ।তোমার কিছু হলে আমার কি হবে?তুমি তো আমার সোহাগ। আমার স্বামী।আমি তোমার কষ্ট দেখতে পারবো না নিজের চোখে।কথা গুলো বলতে গিয়ে শান্তনার চোখ ভিজে যায় পানিতে।মেঘ শান্তনার চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর দু ডানায় দুহাত রাখে।

দেখেছো পিচ্চি তুমি আমাকে কতটা ভালবাসো।আর আমাকেই ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছো?কি করে থাকবে শুনি আমাকে ছাড়া?

থাকতাম ওই একভাবে কিন্তু এভাবে অবিশ্বাসের পাত্রী হয়ে তো থাকতে হবে না।

সরি বলেছি তো।আসলে আমি তোমাকে অন্য কারো সাথে দেখা তো দূরে থাক কল্পনাও করতে পারিনা।তুমিই বলো তখন আমি কি করতাম এসএমএস গুলো দেখে?এখন যদি আমার ফোনে এরকম কোনো চ্যাট তুমি দেখতে তাহলে কি করতে?

তোমাকে খুন করে ফেলতাম আমাকে ছেড়ে অন্য মেয়ের সাথে লুতুপুতু করলে।

লুতুপুতু আবার কি?

কি জানি হবে হয়তো কিছু একটা তবে খারাপ।

ওহ,,কিন্তু আমি তো তোমার সাথে খারাপ কিছু করিনি।

খারাপ বলতে?

খারাপ বলতে,,,আমি তো এখনো স্বামীর অধিকার আদায় করতে পারিনি তোমার থেকে।

ইশশ শখ কতো।আমার ঘুম পাচ্ছে আমি গেলাম।বলে শান্তনা চলে যেতে নেয়।আচমকা মেঘ শান্তনাকে পাজকোলে নিয়ে নেয়।ফলে শান্তনা বেশ অবাক হয়ে যায়।
আরে আরে কি করছে ছাড়ো আমাকে।

না ছাড়বো না।কতোগুলো দিন, মাস,বছর ছেড়েছি তোমাকে।এখন আর ছাড়তে পারছি না।ছাড়লে লস হয়ে যাবে।আজ খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করছে তোমাকে।

তাহলে তুমি হেরে গেলে আমার কাছে।

কিভাবে?

এইযে তুমি আমাকে আগে বলেছো যে তুমি আমাকে ভালবাসো।

কিছু পেতে হলে হারতে শিখতে হয় যে পিচ্চি।

শান্তনা ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে কি পেয়েছো?

পাইনি তবে পাবো বলে শান্তনাকে নিয়ে বিছানায় চলে যায়।একটু একটু করে শান্তনার পেট ঘাড়ে ভালবাসার স্পর্শ দিতে থাকে মেঘ।শান্তনা চোখ বুঝে মেঘের ছোট ছোট ভালবাসা গুলো উপভোগ করতে থাকে আর বার বার কেঁপে ওঠে।ধিরে ধিরে দুজন এক অজানা সুখের খোঁজে হারিয়ে যায় দুজন দুজনাতে। আজকের রাতটা ওদের ভালবাসার প্রথম সাক্ষী হিসেবে রয়ে যাবে চিরকাল।শুরু হবে এক নতুন অধ্যায়।
আযানের আভাস পেয়ে ঘুম ভেঙে যায় শান্তনার।কি ভেবে মেঘকে ডাকতে গিয়েও ডাক দিলনা।

ওকে অন্য ভাবে জাগাবো আজ বলে মেঘের চোখের নিচের তিলটায় চুমু দিতে থাকে।এক পর্যায়ে মেঘের ঠোঁটে চুমু খেতেই মেঘ জেগে যায় এবং শান্তনাকে পালটি দিয়ে ওর উপর চড়ে যায়।তারপর শান্তনার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দেয়।হঠাৎ সব কিছু হওয়ায় শান্তনা বেশ ভরকে যায়।
এটা কি করলে?

কি করলাম?

সরো আমার উপর থেকে,আমি স্নান করে নামায পড়বো।

বাহ বাহ!এতোক্ষন আপনি যেটা করছিলেন সেটা কি ছিল ম্যাম?তখন মনে ছিলনা নামায পড়ার কথা।
লজ্জায় শান্তনা চোখ নামিয়ে ফেলে।আর বলে,,,

ওটা তো তোমাকে জাগাতে করেছিলাম ডাকলে তো তুমি উঠবে না তাই।

ওহহো আমার বউটা যে এতো রোমান্টিক জানতাম নাতো।

এখন উঠে পড়ো নামায পড়ে নেই দুজনে তারপর আমার খিচাই করো কেমন?

আমি তোমার খিচাই করি?

তা নয়তো কি?(পালটা প্রশ্ন করল)

ঠিক আছে এখন চলো নামায পড়ে নেই তারপর দেখছি তোমায়।

ওকে,,,,,,
নামায শেষে শান্তনা ওর ভেজা চুল গুলো শুকাচ্ছে তোয়ালে দিয়ে।আর মেঘ শান্তনার কাজ দেখছে।

কি দেখছো?

তোমার চুল।

আজ প্রথম দেখছো বুঝি?

না তবে এভাবে কখনো দেখেনি তোমায়। আজ খুব মায়াবি লাগছে তোমাকে ভেজা চুলে। তাই না দেখে থাকতে পারছি না।বাই দ্যা ওয়ে তোমার চুল গুলো খুব ভালো লাগে আমার।আর,,,,,

আর কি?
মেঘ এক পা দু পা করে শান্তনার কাছে গিয়ে ওকে ঘুরিয়ে চুলের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে দেয়।তারপর বলে,,,

আর তোমার চুলের মন মাতানো সুগন্ধ নিতে অসম্ভব ভালো লাগে।

আবার!তুমি এতো রোমান্টিক কেন বলোতো?

তুমি কি কম?আমি যখন ঘুমিয়ে থাকতাম তখন তুমি রোজ আমার তিলটায় চুমু খেতে।তুমি ভাবতে আমি ঘুমিয়ে আছি।কিন্তু আমি যে তোমার ঠোঁটের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য ঘুমের অভিনয় করতাম সেটা তুমি বুঝতেই না।

কিহ!তুমি ঘুমানোর অভিনয় করতে?বাজে লোক একটা বলে মেঘের বুকে কিল ঘুষি মারতে থাকে।কিছুক্ষণ মারার পর আপনা আপনি থেমে যায় এবং মেঘের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে।মেঘও শান্তনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।কেউ কিছু বলছে না।নিরবতা ভেঙে মেঘ বলে,,

পিচ্চি,,

হুম।

তুমি সারাজীবন এভাবে আমার বুকের মধ্যে থাকবে তো?

হুম তুমি রাখলে থাকবো।

প্রেম নেশা পর্ব ৩১+৩২+৩৩

আর যদি না রাখি?
শান্তনা মেঘের মুখের দিকে চেয়ে আবার ওকে জড়িয়ে বলে,,

আমি জানি তুমি তা করবেই না।খুব যত্নে আমাকে তোমার বুকে আগলে রাখবে।

এতোটা বিশ্বাস করো আমাকে?

হুম,,,নিজের থেকেও বেশি।

লাভ ইউ পিচ্চি।

লাভ ইউ টু মেঘ।কথাটা বলে শান্তনা আচমকা বলে ওঠে,,,
ওহ তোমাকে তো একটা কথা বলাই হয়নি।
হঠাৎ বলায় মেঘ কিছুটা ভরকে যায়।

কি বলোনি?আর এভাবে লাফ দিয়ে কেন উঠলে?

সরি,,,,আসলে মাএ মাথায় আসলো তাই চট করে বলে ফেলি।

ইটস ওকে।এবার বলো কি বলা হয়নি আমাকে।

সামিরা বাবা মায়ের সাথে কথা বলেছে।ঠিক আগের মতো তাদের মধ্যে ভাব হয়েছে।

সত্যি বলছো পিচ্চি!

হুম সত্যি।

কিভাবে হলো সব কিছু?

আমি মানিয়েছি সামিরাকে।

এই খুশির খবরটার জন্য মিষ্টিমুখ তো করতেই হয়।

ওকে আমি নিয়ে আসছি ফ্রিজ থেকে।

আরে না তোমাকে আনতে হবে না।এখানেই আছে।

কোথায়? (এদিক ওদিক তাকায় শান্তনা)
দেখছি নাতো মিষ্টি।

আমার সামনেই তো আছে।বলেই শান্তনার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় মেঘ।

প্রেম নেশা পর্ব ৩৭+৩৮+৩৯