প্রেম নেশা শেষ পর্ব 

প্রেম নেশা শেষ পর্ব 
শান্তনা আক্তার

থানায় রিপোর্ট লিখিয়ে রাত 1 টার দিকে হতাশা ভরা মুখ নিয়ে বাসায় ফিরে আসে মেঘ।ক্যানটিন থেকে সকালে ব্রেকফাস্ট করেছিল জাস্ট অতোটুকুই।দুপুর থেকে একটা দানা পানিও পেটে পড়েনি মেঘের।সাহেরা খাতুন খাবার নিয়ে এসেছিল কিন্তু মেঘ তাকে ফিরিয়ে দেয় এটা বলে যে তার শান্তনা হয়তো না খেয়ে আছে।তাই সেও খাবেনা যতক্ষণ না শান্তনাকে পাওয়া যায়।সাহেরা খাতুন অনেক চেষ্টা করেও যখন ছেলেকে খাওয়াতে পারলেন না তখন নিজেও খেলেন না।চুপচাপ মেঘের রুম থেকে চলে আসলেন খাবারের ট্রে নিয়ে।ওইদিকে শান্তনা ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় ছটফট করছে।মুখ বাঁধার ফলে বলতেও পারছে না তার অতৃপ্তটার কথা।খুব অসহায় লাগছে তার নিজেকে।শান্তনা নিজের জন্য কষ্ট পাচ্ছে না।কষ্ট পাচ্ছে ওর বেবিটার জন্য।শান্তনা ভাবছে ওর বেবিটা হয়তো বলছে,মা আমাকে খেতে দাও আমার খুব ক্ষুধা লেগেছে।কিন্তু শান্তনা যে নিরুপায়।এই মুহুর্তে আল্লাহকে ডাকা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই ওর সামনে।সারাটা রাত নির্ঘুমেই কেটে যায় শান্তনা আর মেঘের।

সকাল হলে সবাই স্টোররুমে ভিড় করে।পুলিশ সকলের সাথে কথা বলে।সকলের সাথে কথা বলে পুলিশ তেমন কোনো ক্লু পায়নি যার মাধ্যমে তারা শান্তনার কাছে পোঁছাতে পারবে।রথি খুব স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের সাথে কথা বলেছে।এতোটাই স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছে যেন সে কিছুই জানে না শান্তনার নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে।
একজন ইন্সপেক্টর মেঘকে একটু আলাদাভাবে কথা বলতে বলে।মেঘ ওনার কথা মতো একটু দূরে যায় যাতে তাদের কথা কেউ শুনতে না পারে।তারপর বলে,,

বলুন ইন্সপেক্টর কি বলতে ডাকলেন এভাবে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আসলে আপনার তথ্য অনুযায়ী আমরা মিসেস রথি চৌধুরীর inquiry নিলাম।তবে তেমন কিছুই পেলাম না।ওনাকে দেখে মনেই হচ্ছে না যে উনি আপনার ওয়াইফের kidnapping এর সাথে জড়িত।তাই আমরা ওনাকে এরেস্ট করতে পারবো না।সরি মিস্টার মেঘ চৌধুরী।

কিন্তু রথি গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাড়ির বাহিরে ছিল।হতেও তো পারে রথিই শান্তনাকে কিডন্যাপ করিয়েছে।

নো মিস্টার মেঘ।উনি কাল চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতেই গিয়েছিলেন।

আপনি কিভাবে শিওর হচ্ছেন আমি সেটা বুঝতে পারছি না।

চিল মিস্টার মেঘ।আমি আপনার অবস্থাটা বুঝতে পারছি।তবে আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে উনি কাল ইন্টারভিউ দিতেই গিয়েছিলেন।আমি একজন কন্সেন্টেবলকে পাঠিয়েছিলাম উনি যেখানে ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলেন।সেখান থেকেই জানতে পারি যে মিসেস রথি সত্যিই গতকাল ইন্টারভিউ দিতেই গিয়েছিলেন।

তো এখন আমরা কি করবো?কিভাবে খুঁজে বের করবো আমার ওয়াইফকে?

চিন্তা করবেন না মিস্টার মেঘ।আমরা পুরো শহরে আপনার ওয়াইফের নিখোঁজের বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে দিয়েছি।খুব শীঘ্রই আমরা আপনার ওয়াইফের সন্ধান পেয়ে যাব।
মেঘ কোনো মতে নিজের মনকে শক্ত করে।
ওর বারবার মনে হচ্ছে এসব কিছুর পেছনে রথিই জড়িত।কিন্তু প্রমাণ না থাকায় মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না।এবার মেঘ সিদ্ধান্ত নেয় ও নিজেই রথির সাথে কথা বলবে।তাই রথিকে খুঁজতে থাকে।আশেপাশে রথিকে দেখতে না পেয়ে খুব বিচলিত হয়ে পড়ে মেঘ।সামির সেটা লক্ষ্য করে।সামির গিয়ে মেঘের সাথে কথা বলে।

কিরে এভাবে কাকে খুঁজছিস তুই?

রথি ভাবি কোথায়?

এইতো পাশের মাজারে গিয়েছে।কাল রাতে মানত করেছিল শান্তনার জন্য।আমি সাথে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু ও বলল এখন তোর পাশে থাকাটা বেশি জরুরি।আমিও ভেবে দেখলাম রথি ঠিকই বলেছে তাই ওকে একাই যেতে দিলাম।আর,,,,,,,,,,কিরে কোথায় যাচ্ছিস?
মেঘ সামিরের কথার উত্তর না দিয়ে ইন্সপেক্টরের সাথে কথা বলতে চলে যায়।

তোমাকে কেউ সন্দেহ করনিতো রথি?(টিনা)

না,,,আর তোমাকে ধন্যবাদ ইন্টারভিউের ব্যাপারটা সামলে নেওয়ার জন্য।

এতে ধন্যবাদ দেওয়ার কিছুই নেই।এখন বাদ দাও ওসব আসল কাজ করি আমরা।
তোরা খুলে দে ওর হাত পা।টিনার কথা মতো গুডা গুলো শান্তনার হাত পা ও মুখের বাঁধন খুলে দেয়।তারপর রথি গিয়ে শান্তনার অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকা ক্লান্ত শরীর টাকে হালকা ছুয়ে দিয়ে বলে ওঠে,,,

আহারে আমার ছোট বোনটার একি হাল হয়েছে!ইশ না খেয়ে চেহারার অবস্থা কি হয়ে গেছে এক রাতেই।এই টিনা তুমি এতটা নির্দয় কেন বলোতো?

আমি নির্দয়?(টিনা বলে ওঠে)

তা নয়তো কি হুম?বেচারি কিছুক্ষণ পরে ইন্তেকাল করবে আর তুমি এখনো অব্দি কিছুই খেতে দাওনি?যাক ভালোই হয়েছে এক দিক দিয়ে।

কোন দিক দিয়ে?

না খেয়ে থাকার ফলে শান্তনার প্রানটা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসবে।এটা ভালো নয়কি?

তা যা বলেছো রথি।

হুম এবার শুভ কাজটা শুরু করা যাক তাহলে।

নেকি আর পুছ পুছ।তবে প্রথম শুটটা আমি করবো বলে দিলাম।

ওকে তাই হোক টিনা।তোমাকে দিয়েই নাহয় শুভ কাজটার উদ্বোধন হোক।
এরপর টিনা এক পা দু পা করে শান্তনা দিকে এগিয়ে যায়।রিভলবার টা শান্তনার বুক সোজাসুজি তাক করতেই কোথা থেকে গুলি এসে টিনার বাম হাতে লাগে।ফলে টিনার হাতে থাকা রিভলবার টা নিচে পড়ে যায়।তারপর টিনা আর রথির চারপাশে পুলিশ ঘেরা দিয়ে ফেলে।

কেউ এক পা নড়লে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব।(ইন্সপেক্টর টিপাটি)

টিনার গুলি লাগা হাত থেকে টপাটপ রক্ত পড়ছে। টিনা ডান হাত দিয়ে বাম হাত চেপে রেখেছে।পুলিশকে দেখে রথি আর টিনার কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে।রথি বারবার ঢোক গিলছে ভয়ে।
মেঘ শান্তনা বলে বিরাট এক চিৎকার দিয়ে শান্তনাকে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।শান্তনাকে ওইভাবে দেখে ভয়ে মেঘের হাত পা কাঁপছে।
পিচ্চি কথা বলো।দেখো তোমার মেঘ এসে গেছে।চোখ খুলে দেখো তোমার মেঘকে।কেউ একটু পানি দিন না আমাকে।
সাথে সাথে একজন পুলিশ পানি নিয়ে হাজির হয়।মেঘ শান্তনার মুখে পানির ছিটা দিতেই ওর জ্ঞান ফিরে আসে।শান্তনা আসতে আসতে চোখ খুলতেই একটা শুকনো হাসি দিয়ে বলে,,

মম ম্মম মেঘ।গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে কথা গুলো আটকে আটকে আসছে শান্তনার।
মেঘ সেটা বুঝতে পেরে শান্তনার মুখে পানির বোতলটা ধরে পানি খাইয়ে দিল।
মেঘ আমার খুব কষ্ট হয়েছে এখানে আমাকে কাল থেকে বেঁধে রেখেছে ওরা।দেখো আমার হাতে পায়ে দাগ হয়ে গেছে।মেঘকে দাগ গুলো দেখিয়ে বলল শান্তনা।মেঘ শান্তনার হাতের দাগ গুলোতে চুমু দিয়ে ভরিয়ে দেয়।

এবার ব্যাথা কমেছে কি পিচ্চি?

হুম অনেকটা কমে গেছে মেঘ।

এবার তোমাকে যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের কষ্ট পাওয়ার পালা।

আপনি ঠিক বলেছিলেন মিস্টার মেঘ।আপনার ভাবিই এসবের সাথে জড়িত। এবার ওনাকে আমরা থানায় নিয়ে যেতে চাই আপনি কিছু বলতে চান মিস্টার সামির।সামিরের নামটা বলা মাত্র রথি তার চোখ বড় বড় করে ফেলে।মাথা উঁচু করে তাকাতেই রথি তার সামনে সামিরকে দেখতে পায়।

সামির ভেজা চোখে বলল,,,
আমার আর কিছুই বলার নেই ইন্সপেক্টর সাহেব।নিয়ে যান এই খুনিকে আমার চোখের সামনে থেকে।

সামির তুম,,,,,

চুপ,,,?একদম চুপ।তোর ওই মুখে আমার নাম।নিবি না।আমি তোকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ছাড়বো।তোর মতো মেয়ে মানুষের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।চলে যা তুই আমার চোখের সামনে থেকে।নিয়ে যান ওকে প্লিজ।তারপর
রথি,টিনা আর বাকিদের হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে পুলিশ নিয়েই যাচ্ছিল কিন্ত শান্তনার কথায় থেমে যায় তারা,,,,

দাঁড়ান পুলিশকাকু।আমার আপুকে নিয়ে যেয়েন না।ওর কোনো দোষ নেই।
পুলিশসহ সবাই বেশ অবাক হয়ে যায়।

আমরা ওনাকে হাতে নাতে ধরেছি আর আপনি বলছেন মিসেস রথির কোনো দোষ নেই।

হ্যাঁ,,আপুর কোনো দোষ নেই।ওতো আমাকে বাঁচাতে এসেছিল।আসলে ওরা যখন আমার বাড়ির কারো নাম্বার চেয়েছিল তখন আমি আপুর নাম্বারটা দেই।তখন আপু এখানে ছুটে আসে আমাকে বাঁচাতে।তবে ওদের কথা মতো আপু টাকা আনতে পারেনি বলে আমাকে টিনা মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।ঠিক তখনি আপনারা চলে আসেন।

কিন্ত পিচ্চি,,এটা কিভাবে সম্ভব।তুমি মিথ্যা কেন বলছো?

আমি সত্যিই বলছি প্লিজ আমাকে বিশ্বাস করো।
মেঘ আর কিছু বলতে পারলো না।জাস্ট দাঁতে দাঁত চেপে বসে রইল।

শান্তনা তুমি তোমার বোনকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যেটা বললে তাইনা?(টিনা)

আপনার সাথে আমার কোনো কথা বলার নেই।খুব খারাপ আপনি।আর আমি কাউকে বাঁচাতে কিছুই বলিনি।আর আপনি আমার বোনের নামে একটাও বাজে কথা না বললে খুশি হবো।এরপর টিনা আর একটা টু শব্দও করেনি।
রথিকে সরি বলে ইন্সপেক্টর।তারপর রথির হ্যান্ডকাফ খুলে দিয়ে টিনা আর বাকি সবাইকে নিয়ে চলে যায়।এদিকে রথি ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।নিজের অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে খুব লজ্জিত বোধ করছে।

সরি রথি আমি তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম।আমাকে মাফ,,,সামিরকে থামিয়ে রথি বলে ওঠে,,,

না সামির আমার কাছে এসো না।আমি পাপী।

কি বলছো কি রথি।আমি সরি বলেছি তো।

নাহ আমি সরি পাওয়ারও যোগ্য নই।

আপু তুই কথা বাড়াস না।

তুই চুপ কর শান্তনা।কেন বাঁচালি আমাকে হুম?কেন জেলে যেতে দিলি না আমাকে?কেন মিথ্যে বললি যে আমি তোকে বাঁচাতে এসেছিলাম?যেখানে আমি তোকে মেরে ফেলার জন্য উঠে পড়ে লেগে ছিলাম।কেন মিথ্যা বললি কেন?

কারণ তুই আমার আপু।তোর কষ্ট হোক সেটা আমি কখনোই চাইতে পারি নারে।
সব শুনে মেঘ বলে ওঠে,,,

তারমানে রথি টিনার সাথে মিলে,,,

ঠিক ধরেছো মেঘ।আমি টিনার সাথে মিলে সব কিছু করেছিলাম।তারপর এক এক করে সব কথা খুলে বলে রথি।সবটা শুনে সামির রথিকে কষে এক চড় মারে।
আজ তোমাকে আটকাবো না সামির।যত পারো মারো আমাকে।আমি পাপী।মারতে মারতে খুন করে ফেল আমায় তাও আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত শেষ হবে না।জানো সামির,আমি শুধু শান্তনার গুনাহগার নই।তোমার আর মেঘের ও।আজ নিজের সব অপকর্মের কথা প্রকাশ করল রথি।আজ সে সত্যিই অনুতপ্ত তার কাজে।তাই বলছি তুমি আমায় মেরে ফেল।তুমি না মারলেও আমি নিজেই নিজেকে শেষ করে দেব বলে একটা লোহার রড খুঁজে পেয়ে সেটা হাতে নিল।জানি আমি পাপী তবুও তোমরা আমাকে মাফ করে দিও বলে রড দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করতে যাবে তার আগেই সামির রথিকে আটকে নেয়।

কি করছো কি তুমি?আরে ভুল করেছো তাই বলে আত্মহত্যা করে জাহান্নামে যেতে চাইছো?

জাহান্নামে তো আমি এমনিই যাব যা সব করেছি আমি ছি আজ নিজের প্রতি ঘেন্না হচ্ছে আমার।প্লিজ সামির সরে যাও আর আমাকে আমার কাজ করতে দাও।সামির রথির হাত থেকে রডটা কেঁড়ে ফেলে দেয় আর রথিকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়।

তুমি তোমার ভুল বুঝতে পেরেছো এটাই অনেক।আমি আর কিছু চাইনা রথি পাখি।জানো আমি একটা ছোট দুতলা বাড়ি করেছি আমাদের জন্য।আমরা আজ থেকে আমাদের ছোট সংসার শুরু করবো।সেখানে তুমি আর আমি থাকবো।থাকবে তো আমার পাশে?

হুম থাকবো।সারাজীবন থাকবো।
এদিকে মেঘ শান্তনাকে কতো গুলো চুমু খেলো হিসেব নেই।

আরে আরে আর কতো চুমু খাবে মেঘ?

কাল রাতের গুলো উশুল করছি।জানো কাল সারারাত আমি দু চোখের পাতা এক করতে পারিনি।

আমি ও না।জানো ওরা আমাকে খেতে দেয়নি এমনকি পানি ও দেয়নি।আমার বাবুটা কতো কষ্ট পেয়েছে বলোতো?

কিহ তুমি এখনো অব্দি না খেয়ে আছো!

হুম,,,কিন্তু তার জন্য আমার কোনো কষ্ট হয়নি জাস্ট আমাদের বেবিটার জন্য হয়েছে।আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছিল এটা ভেবে যে আমি মনে হয় আর তোমার বুকে মাথা রাখতে পারবোা না।

এটা বলোনা প্লিজ।আমি থাকতে তোমার কিছুই হবে না আমি হতে দেব ও না।

হুম জানি তো।কিন্তু তুমি আমাকে কিভাবে খুঁজে পেলে।মানে আমি যে এখানে আছি সেটা কিভাবে বুঝলে?

রথিকে বাসায় না দেখে আমার সন্দেহ হয়।তারপর সেটা আমি ইন্সপেক্টর টিপাটিকে বলি।উনি সামির ভাইয়াকে বলেন রথিকে ফোন দিতে।তারপর আমরা রথির নাম্বার ট্র্যাক করি।আর তোমার কাছে পৌঁছে যাই।

ওহ,,

হুম,,,,ইশ আমি যে কি?

কেন? কি হয়েছে মেঘ?

আমার পিচ্চি না খেয়ে আছে আর আমি তাকে খাবার না খাইয়ে কথা বলেই যাচ্ছি।আমার বেবিটাও তো না খেয়ে আছে।তারপর শান্তনার পেটে কান পেতে বলে,,,,,আর কিছু মিনিট ওয়েট করো আমার মা অথবা বাবা।তোমাদের ড্যাড এখনি তোমাদের খেতে নিয়ে যাবে বলে শান্তনাকে পাজকোলে নিয়ে নেয়।
~~~~~~~~~~~5 বছর পর,,,,,,,,,
আয়ান বাবা ছুটোছুটি করোনা প্লিজ।খাবার টা খেয়ে নাও।

লা মাম্মাম লা আমি তো খাব না। বলে মেঘের কোলের মধ্যে ঢুকে যায় আয়ান।

বেরোও তোমার বাবাইয়ের কোল থেকে।বেরোও বলছি।

পিচ্চি তুমি প্রতিদিন আমার ছেলেটার পিছে কেন লাগো বলোতো?

তোমার ছেলে না ধিরে ধিরে অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে ঠিক তোমার মতোই।

আমার মতো?

তা নয়তো কি হুম?একটা কথাও শোনে না আমার।এখন খেতে চাচ্ছে না।

কি আমার আয়ান দাদু ভাই খেতে চাচ্ছে না কেন?(আজমল)।আজমলকে দেখে দাদু বলে আজমল চৌধুরীর কোলে ঝাপিয়ে পড়ে আয়ান।

কোলে আসলে তো হবে না দাদুভাই।খাবারটা যে শেষ করতে হবে।

খালি দাদু কে আদর করবে নাকি?দাদি কি দোষ করেছে?(সাহেরা)
দাদিকে দেখে এবার দাদির কোলে চলে যায় আয়ান।

দাদিয়া দাদিয়া তুমি মাম্মামকে বকে দাওতো।আমালে কালি খেতে বলে।

ওকে বকে দেব।কিন্তু আমার হাতে খেতে হবে তাহলে।

ইয়ে থিক আছে থিক আছে।তারপর সাহেরা শান্তনার হাত থেকে খাবারের প্লেট নিয়ে নেয়।পরে আয়ানকে নিয়ে আজমল আর সাহেরা নিজেদের রুমে চলে যায়।
কিছুক্ষণ পরে শান্তনার ফোনে কল আসে।
শান্তনা ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরে,,,

হ্যাঁ আপু বল?কেমন আছিস?

………..

আমরাও ভালো আছি।কি খবর তোদের?

…….

ওহ এটা তো খুব ভালো কথা।

……….

প্রেম নেশা পর্ব ৩৭+৩৮+৩৯

ওকে আল্লাহ হাফেজ বলে ফোন রেখে দেয় শান্তনা।

কে ফোন করেছিল পিচ্চি?

আপু ফোন করেছিল।

ও কি বলল?ভাইয়া কেমন আছে?

ভালোই আছে।
ওরা আজ বাচ্চা দত্তক নিতে যাচ্ছে।তুমি তো জানোই ডাক্তার বলেছে আপু কখনো কন্সিভ করতে পারবে না।সামিরার একটা মেয়ে হয়েছে আমাদের ছেলে আছে।তাদের ওতো বাচ্চার বাবা মা হতে ইচ্ছে করে।তাই এই সিদ্ধান্ত নিল।

কথা তো ঠিক তবে তুমি আর যাই বলো না কেন এটা তোমার বোনের পাপের ফল।জীবনে অনেক পাপ করে ফেলেছে ঠিক তার জন্যই কখনো নিজের সন্তানের মুখ দেখতে পারবে না।
মাঝ দিয়ে সামির ভাইয়া কষ্ট পেল।এটাকে অবশ্য কষ্ট বলে না।এটাকে ভোগান্তি বলে।

প্লিজ এভাবে বলো না।আপু নিজের ভুল বুঝতে পেরে এখন ভালো হয়ে গেছে।সামির ভাইয়া আর আপু দুজনেই এখন ভালো আছে।

তা ঠিক। ভালো থাকলেই ভালো।এখন আমার ভালো থাকার ডোসটা দাও না গো।

তোমার ভালো থাকার ডোস মানে দুষ্টোমি।আমি তা খুব ভালো করেই জানি।

জানলে তো ভালো বলেই শান্তনার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় মেঘ।

( লেখাঃ শান্তনা আক্তার ) এই লেখিকার আরও লেখা গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন এই গল্পের সিজন ২ পড়তে চাইলেও এখানে ক্লিক করুন