বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৩

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৩
লেখিকা: তানজিল মীম

চিন্তিত মুখ নিয়ে রুমের মধ্যে পায়চারি করছে রিনি। কারন আজ দু’দিন যাবৎ সে তাঁর নিজের মোবাইলটা হাতে পাচ্ছে না। সেদিন বুক শপে শুভর সাথে ধাক্কা লেগে যখন তার মোবাইলটা পড়ে গিয়েছিল তখন রিনি নিজের মোবাইলের বদলে শুভর মোবাইল নিয়ে আসে কারন দুজনের পিছনের কাভারটা প্রায় সেইম ছিল। কিন্তু পরে যখন বুঝতে পারে তখন নিজের ওপর নিজেরই রাগ হয় তাঁর। রিনি সেদিনই কল করেছিল শুভর কাছে শুভ তো তখন বুঝতেই পারে নি পরে ফোনটা দেখে বুঝতে পারে সে। রিনি বলেছিল তাকে সে যেন পার্কে এসে তাঁর ফোনটা দিয়ে যায় শুভও বলেছিল ঠিক আছে। আর কথা মতো সেদিন বিকেলেই রিনি যায় পার্কে কিন্তু শুভ আসে নি এরপর যতবারই রিনি ফোন করে শুভকে শুভ ফোন ধরে নি। লাস্ট দু’দিন যাবৎ শুভর সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে রিনি কিন্তু পাচ্ছে না। অন্যদিকে শুভের ফোনেও বার বার কল আসতে থাকে কিন্তু কার না কল এটা ভেবে রিনি আর ধরে নি শেষমেশ বাধ্য হয়ে ফোনটা বন্ধ করে দেয়। বিরক্তির চরম সীমানা নিয়ে রুমের মধ্যে পায়চারি করছে রিনি। এমন সময় বিছানার ওপর থাকা তাঁর আরেকটা ফোন বেজে উঠল। তক্ষণাৎ ফোনটা গিয়ে তুললো সে উপরে তাঁর এক ফ্রেন্ডের নাম দেখে তাড়াতাড়ি ধরে বললো,

‘ হ্যালো লোকেশনটা কি পেয়েছিস?’
রিনির কথা শুনে ওপর পাশের ব্যক্তিটাও তার কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠল,
‘ হুম তোর নাম্বার ট্রেক করে তোর মোবাইলটা কোথায় আছে সেটা জানতে পেরেছি।’
‘ খুব ভালো এড্রেসটা বল আমি গিয়ে নিয়ে আসি?’
‘ হুম আমি তোর এই নাম্বারে টেক্সট করে দিচ্ছি।’
‘ ওকে থ্যাংক ইউ দোস্ত।’
‘ ইট’স ওকে।’
উওরে রিনি আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিল। তারপর বলতে না বলতেই টুং করে তাঁর মোবাইলকে মেসেজ আসলো। রিনিও বেশি কিছু না ভেবে তাঁর বন্ধুর দেওয়া এড্রেস মতো বেরিয়ে পড়লো।’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

হসপিটালে চুপচাপ বসে আছে আহি সামনেই বাচ্চারা খেলছে। কিছুক্ষন আগেই আদ্রিয়ান চলে গেছে হুট করে আদ্রিয়ানের চিন্তিত মাখা মুখ দেখে বেশ বিষম খায় আহি। পরক্ষণেই সে জিজ্ঞেস করেছিল আদ্রিয়ানকে ‘কি হয়েছে?’–
কিন্তু আদ্রিয়ান তেমন কিছু না বলেই চলে যায়।’ এই জন্যই বেশ চিন্তিত আহি। এমন সময় আহির দিকে একটা বাচ্চা ছেলে একটা বল ছুঁড়ে দিয়ে বললো,
‘ চলো আপু খেলি?’
আহিও আর বেশি কিছু না ভেবে বাচ্চাদের সাথে আবারও মিলিত হলো। আবারো জুড়ে হাসি ঠাট্টা আর আনন্দ।’
সময়টা তখন ঘড়ির কাঁটায় প্রায় বিকেল চারটার ছুঁই ছুঁই।’

একটা বিশাল সাদা রঙের দু’তলা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে রিনি। তার যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না ভিতু কুমার এত বড় বাড়িতে থাকে। আশেপাশে বড়বড় গাছপালা রয়েছে সামনেই সবুজে ঘেরা মাঝারি সাইজের মাঠ। চারপাশ দিয়ে সুন্দর হাওয়া আসছে। রিনি বেশি কিছু না ভেবেই কলিং বেল চাপ দিল কিন্তু কারোই যেন কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না। এভাবে বেশ কয়েকবার কলিং বেল বাজানোর পরও কেউ দরজা না খোলাতে বেশ হতাশ হয় রিনি। আরেকবার মোবাইলের স্কিনের দিকে তাকিয়ে সামনেই দেয়ালটার দিকে তাকালো সেইম টু সেইম লেখা। বাড়িটার সামনেই বড় বড় অক্ষরে লেখা শুভ মাহমুদ। নামটা দেখে সে বেশই বুঝতে পারছে এটা শুভরই বাড়ি কিন্তু দরজা কেউ খুলছে না কেন এটাই বুঝতে পারছে না রিনি। সামনেও তো তালা ঝুলানো নেই রিনি বেশ বুঝতে পারছে ভিতরে কেউ না কেউ আছে।

রিনি এবার আর কলিং বেল না বাজিয়ে দরজায় একবার নক করলো দুটো বার নক করতেই দরজা আপনাআপনি খুলে যায় এতে বেশ ঘাবড়ে যায় রিনি। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বাড়ির ভিতরে উঁকি ঝুঁকি মারতে থাকে সে। কিন্তু আশেপাশে কাউকে না দেখে বেশ হতাশ হয়ে ভিতরে ঢুকলো সে। তারপর আশেপাশে তাকাতে তাকাতে এগোতে থাকে সে। পুরো বাড়িটাই বিশাল আর বিভিন্ন আসবাবপত্রে ঘেরা রিনি বেশি কিছু না ভেবে আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। উপরে উঠতেই পাশাপাশি কয়েকটা রুম চোখে পড়লো রিনির। প্রত্যেকটাতেই চোখ বুলালো সে কিন্তু আশেপাশে কাউকেই না দেখে এবার রিনির ভয় হতে লাগলো এত বড় বাড়িটা ফাঁকা আবার দরজাও খোলা ভূত টূত আছে নাকি ভেবেই ভয়ে শুঁকনো ঢোক গিললো রিনি। এমন সময় হঠাৎই তাঁর সামনের থাকা একটা রুম থেকে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ পেতেই ভয়ে আঁতকে উঠলো সে। কিন্তু দৌড়ে না পালিয়ে সামনে এগোতে লাগলো রিনি। সামনের দরজার কাছে গিয়ে উঁকি মারতেই নিচে কাউকে পড়ে থাকতে দেখে রিনি দৌড়ে গিয়ে দেখলো তাঁকে সামনেই শুভকে দেখে আরো যেন অবাক হয় রিনি। রিনি শুভর দিকে তাকিয়ে চিন্তিত কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ কি হয়েছে আপনার?’
উওরে শুভ কোনো সাড়াশব্দ করলো না শুভকে চুপচাপ থাকতে দেখে রিনি ধরলো শুভকে। শুভকে ধরতেই পুরো কেঁপে উঠলো রিনি। জ্বরে পুরো গা পুড়ে যাচ্ছে। রিনি শুভকে ধরে বলে উঠল,
‘ আপনার তো গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে আপনার বাড়িতে আর কেউ নেই নাকি?’
হুট করেই কোনো মেইলি কন্ঠ আসতেই মিটমিট চোখে তাকালো শুভ। আজ দু’দিন যাবৎ শুভ জ্বরের কারনে বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না। সেদিন আদ্রিয়ানের অফিস থেকে বাসায় ফিরতেই গা কাঁপিয়ে জ্বর আসে শুভর। আর জ্বরের কারনেই শুভ সেদিন বিকেলে যেতে পারে নি পার্কে। শুভকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আবারো বলে উঠল রিনি,
‘ কি হলো আপনি কথা বলছেন না কেন, আর কেউ নেই বাড়িতে আপনি একাই থাকেন নাকি এখানে?’

উওরে মাথা নাড়ায় শুভ। শুভর মাথা নাড়ানো দেখে বেশ অবাক রিনি এত বড় বাড়িতে নাকি উনি একা থাকে। এরপর রিনি আস্তে আস্তে শুভকে ধরে উঠে দাঁড়ালো তারপর ধীরে ধীরে শুভকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে উঠল,
‘ আমি আসলে আমার ফোনটা নিতে এসেছি আপনাকে কতবার কল করেছি আমার ফোনে আপনি ধরেন নি কেন?’ মানুষ তো একবার ফোনটা তুলে বলে আমি অসুস্থ এখন যেতে পারবো না। আপনি জানেন আপনার জন্য সেদিন কতক্ষণ অপেক্ষা করতে ছিলাম আমি?’

এতক্ষণ পর যেন শুভর মনে পড়লো রিনির ফোনটার কথা। সেদিন রিনির সাথে ফোনে কথা বলে সেটাকে যে ড্রয়ারের ভিতর রেখেছিল সেটা সেখানেই আছে এখনো। শুভ একপলক রিনির দিকে তাকিয়ে ধীর কন্ঠে বললো,
‘ আসলে জ্বরের ঘোরে আপনার ফোনটার কথা একদম মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, সরি আ…
আর কিছু বলার আগেই রিনি শুভর মুুখ চেপে ধরলো। হুট করে রিনির এমন কাজে চোখ বড় বড় হয়ে যায় শুভর। রিনি শুভর চোখের দিকে তাকিয়ে শীতল কণ্ঠে বললো,
‘ আমি এখানে আপনার সাথে ঝগড়া করতে আসে নি সো বি কেয়ারফুল।’
রিনির শীতল ভেজা কন্ঠ শুনে যেন এক শিহরণ বয়ে গেল শুভর ভিতর দিয়ে। সে শুধু মিটমিট চোখে তাকিয়ে রইলো রিনির মুখের দিকে। আজ যেন এক অন্যরকম ভালো লাগার মুখশ্রী ফুটে উঠেছে রিনির চেহারায়। অন্যদিকে রিনির হঠাৎই চোখ যায় তাঁর শুভর কপালের দিকে কপালের ডান দিকটায় লালচে হয়ে আছে যেন দু’দিন আগের ক্ষততে কিছুই করা হয় নি। রিনি শুভ মুখ থেকে হাত সরিয়ে বললো,

‘ কপালে কি হয়েছে?’
বলতে না বলতেই রিনির আবার চোখ যায় শুভর বাম হাতের তালুর দিকে অনেকখানি কেটে গেছে। রিনি তো এতক্ষণ খেয়ালই করি নি বিষয়টা। রিনির শুভর কপাল এবং হাতটা দেখিয়ে বললো,
‘ আপনার এই কপাল এই হাত এগুলো কাটলো কি করে?’
বলেই রিনি তাকালো নিচে ফ্লোরের দিকে নিচে কিছু কাঁচ ভাঙা পড়ে আছে। এরই মধ্যে শুভ বলে উঠল,
‘ আসলে তখন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাই তখন সামনে ওই কাঁচের ফুলদানিটা হাতে লেগে পড়ে যায় নিচে আর তখনই হয়তো কাঁচের ওপর হাত লেগে কেঁটে যায়।’
‘ ওহ আর কপালের টা?’

কপালের কথা শুনতেই সেদিনের আদ্রিয়ানের অফিসের কথা মনে পড়ে গেল শুভর। ছোট্ট দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো সে,
‘ ওটা দুদিন আগে ওয়াশরুমে পড়ে গিয়েছিলাম আর কি?
‘ আশ্চর্য আপনি কি চোখে দেখেন না কি,এত বড় হয়েও ওয়াশরুমে পড়ে যান।’
উওরে কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠল শুভ,
‘ আপনার ফোনটা আমার ওই সামনের ড্রয়ারের মধ্যে আছে দেখে নিন?’
উওরে রিনি আর কিছু না বলে এগিয়ে যায় ড্রয়ারের দিকে তারপর আস্তে আস্তে নিচের ড্রয়ার খুলতেই নিজের ফোনটা দেখতে পেল সে। ফোনটা পেতেই মুখে যেন হাসি ফুটে উঠলো রিনির। যেখানে দু’মিনিট ফোন ছাড়া থাকতে পারে না রিনি সেখানে আজ দু’দিন পর নিজের ফোনটা হাতে পেল সে। এরই মধ্যে ড্রয়ারের মধ্যে ফার্স্ট এইড বক্স আর একটা ফটো দেখতে পেল রিনি। রিনি বেশি কিছু না ভেবে দুটোই হাতে নিলো কারন ছবিটা আর কারো নয় আদ্রিয়ানের। রিনি বেশ অবাক হয়ে বললো,

‘ এই ছবিটা তো?’
রিনির কথা শুনে সামনের দিকে তাকিয়ে বললো শুভ,
‘ ওটা আমার বড় ভাই আদ্রিয়ানের ছবি।’
শুভর কথা শুনে চোখ বড় বড় করে শুভর দিকে এগোতে এগোতে বললো,
‘ উনি আপনার বড় ভাই।’
উওরে মাথা নাড়ায় শুভ। শুভর কথা শুনে রিনি বলে উঠল,
‘ ওনাকে চিনি আমি। আমার বড় আপুর বিয়ের সময় উনি আমাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন।’
‘ ওহ।’
‘ হুম। আপনার হাত দেখি?’
হুট করে রিনির এমন কথা শুনে শুভ চমকে বলে উঠল,
‘ কি?’
‘ আপনার হাত?’
এই বলে ফার্স্ট এইড বক্স থেকে স্যাভলন আর তুলো বের করে শুভর হাতটা ধরে পরিষ্কার করতে লাগলো রিনি। রিনির কাজে শুভ পুরোই অবাক হুট করে হাতে একটু জ্বলা অনুভব হতেই পুরো চমকে উঠলো সে। মুখ থেকে অটোমেটিক বেরিয়ে আসলো তাঁর,
‘ উফ।’
শুভর কাজে রিনি কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে শুভর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ সরি সরি
বলেই শুভর হাতে ফু দিতে লাগলো রিনি। আর শুভ জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে রইলো রিনির মুখের দিকে। যেন আজ এক নতুন রিনিকে দেখছে সে। খোলা চুল,হাতে সাদা রঙের চুড়ি, পড়নে হাল্কা সবুজ রঙের জর্জেট থ্রি-পিচ, ঠোঁটে লাল রঙের লিপস্টিক, চোখে কাজল, মুখে হাল্কা মেকাপ এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে শুভর ভিতর। আনমনেই মুচকি হাসলো সে।’

তুমুল বেগে দৌড়ে গাড়ি থেকে নেমে শুভর বাড়ির ভিতর ঢুকলো আদ্রিয়ান। কিছুক্ষন আগে তার রাখা গার্ডগুলোর কথা শুনে বেশ অবাক হয় আদ্রিয়ান পরক্ষণেই শুভ কোনো ভুলভাল কিছু করে ফেললো নাকি। যতই হোক আপন ভাই তো দরজা পর্যন্ত আসতেই থেমে পড়লো আদ্রিয়ান কেমন যেন এক সংকোচতা ফিল হচ্ছে তাঁর। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে শান্ত করে ভিতরে ঢুকে পরলো সে দরজা খোলাই ছিল শুভর। আদ্রিয়ান বেশি কিছু না ভেবেই সিঁড়ি বেয়ে চলে যায় উপরে দরজার কাছ পর্যন্ত আসতেই ভিতরে শুভর সাথে একটা মেয়েকে দেখে দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে পড়ে সে। মেয়েটি আসলে কে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না আদ্রিয়ান তবে মেয়েটাকে তার চেনা চেনা লাগছে কোথাও জেনো দেখেছে এর আগে কিন্তু কোথায় দেখেছে সেটা ঠিক মনে করতে পারছে না আদ্রিয়ান। আনমনেই কথাগুলো ভেবে চুপচাপ দরজার আড়াল থেকে দাঁড়িয়ে রইলো আদ্রিয়ান। শুভ ঠিক আছে এটা ভেবেই তাঁর শান্তি।’
এদিকে….

রিনি শুভর হাত ব্যান্ডেজ করতে করতে বলে উঠল,
‘ আপনি কি এখানে একা থাকেন? আইমিন আপনি কি একাই আপনার বাবা মা ভাই কেউ থাকে না এখানে?’
রিনির কথা শুনে শুভ নীরব কন্ঠে বললো,
‘ না আসলে ভাইয়া অফিসের কাজে খুব বিজি থাকে তো তাই আর কি?’
‘ তা তো বুঝলাম উনি থাকেন না আপনার সাথে না মানে আপনার এত জ্বর আসছে কেউ নেই তাই আর কি?’
‘ ছিল আপাতত কেউ নেই, আমার বাড়িতে একজন কাজের লোক আছে দু’দিন আগেই তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গিয়েছে।’
‘ ওহ আর আপনার বাবা মা?’
‘ ওনারা আমি যখন ছোট তখনই মারা যান।’
‘ ওহ আই এম সরি।’
‘ ইট’স ওঁকে।’
‘ তবে যাই বলুন আপনার ভাইয়ের এই মুহূর্তে আপনার সাথে থাকা উচিত ছিল আপনার শরীর দেখে যা বুঝলাম তাতে আপনার গায়ে অনেক জ্বর।’
‘ ওসব ঠিক হয়ে যাবে ঔষধ খেয়েছি আমি, আর তাছাড়া ভাইয়া আমায় খুব ভালোবাসে বুঝলেন।’
‘ ওহ খুব ভালো তা দু’দিন যাবৎ জ্বর ডাক্তার দেখিয়েছেন কি?’
‘ ডাক্তার..
‘ হুম দেখিয়েছেন?

উওরে মাথা নিজের দিকে একবার তাকিয়ে মাথা নাড়ায় শুভ। শুভর মাথা নাড়ানো দেখে রিনিও আর বেশি কিছু না ভেবে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো তারপর শুভর কপালের জায়গাটাও ঠিক করতে লাগলো।’
এদিকে আদ্রিয়ান এদের হাল্কা কথোপকথন শুনে ভিতরে ভিতরে খুবই খারাপ লাগলো আজ দু’দিন যাবৎ ছোট ভাইটা অসুস্থ অথচ সে জানতেই পারলো না। নিজেকে খুবই অপরাধী মনে হচ্ছে তার আদ্রিয়ান আর ভিতরে ঢুকলো না বাহির থেকেই শুভকে দেখে। আর কিছু একটা ভেবে নিজের মোবাইলে ওদের একটা ছবি তুলে বেরিয়ে যায় সে। অতঃপর শুভ জানলোই তার ভাই এখানে এসেছিল।’
পুরো বিকেলটা জুড়েই রিনি ছিল শুভর সাথে শুভর হাল্কা সেবাযত্ন করে সাথে তাঁর রুমের কাঁচ ভাঙাগুলোও পরিষ্কার করে শুভর মোবাইলটা শুভকে ফেরত দিয়ে আর নিজের ফোনটা নিয়ে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরে যায় সে। অবশ্য যাওয়ার আগে শুভ ‘থ্যাংক ইউ’ বলে রিনিকে। রিনিও মুচকি হেঁসে ‘ইট’স ওকে’ বলে চলে যায়।’

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২২

পরেরদিন সকালে…
মুখে পানি পড়তেই এক প্রকার লাফ মেরে বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো আহি। সামনেই সক্কাল সক্কাল রিনিকে দেখে অবাক হয়ে বললো সে,
‘ তুই এখানে?’
‘ হুম আমি কারন আজ তোর বদলে আমি নীরব ভাইয়াকে প্রপোজ করবো?’
রিনির কথা শুনে ঘুম গায়েব আহির চোখ বড় বড় করে বললো সে,
‘ কি?’

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৪