বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৫

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৫
লেখিকা: তানজিল মীম
ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে আহি নীরবের দিকে। সময়টা যেন তাঁর ওখানেই থমকে গেছে, সে ভাবতেই পারে নি নীরব অথৈকে ভালোবাসবে। শরীর যেন ওখানেই আঁটকে গেছে তাঁর বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যথা অনুভব হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। এতদিনের তাঁর একটু একটু করে গড়া অনুভূতিগুলো যেন আজ এক নিমিষেই ভেঙে চুড়ে চুরমার হয়ে গেল। চোখে পানি টলটল করছে আহির এই মুহূর্তে সে ঠিক কি করবে বা কি করা উচিত সবকিছুই যেন ভুলে গেছে আহি। শুধু স্তব্ধ  হয়ে তাকিয়ে আছে সে নীরব আর অথৈর দিকে।’
এদিকে….
অথৈরও যেন সেইম অবস্থা। আহিকে এমন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রচন্ড ঘাবড়ে গেছে সে। হুট করে এমন একটা বাজে পরিস্থিতিতে পড়বে সে এটা যেন একদমই কল্পনার বাহিরে ছিল তাঁর। অথৈ আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল আহির দিকে তারপর আহির হাত ধরতে গিয়ে বললো,
‘ আহি,
আর কিছু বলার আগেই আহি তার হাত উঠিয়ে চুপ করিয়ে দিল অথৈকে। এতে যেন অথৈ আরো বেশি ঘাবড়ে গেল হয়তো সে যেটার ভয় পেয়েছিল সেটাই হয়েছে। আহি ছলছল চোখে একবার নীরব আর একবার অথৈর দিকে তাকিয়ে তেমন কিছু না বলেই এক প্রকার দৌড়ে বেরিয়ে গেল লাইব্রেরি থেকে। আহির কাজে প্রচন্ড খারাপ লাগে অথৈর। অন্যদিকে রিনি এগিয়ে আসলো নীরবের দিকে। নীরব এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছিল সবটা। আহি কেন হুট করে দৌড়ে চলে গেল এটাই যেন বুঝতে পারলো না সে। এরই মধ্যে রিনিকে নিজের দিকে আসতে দেখে বলে উঠল নীরব,
‘ ওই এইভাবে চলে গেল কেন?’
নীরবের কথা শুনে হতাশ হয়ে বলে উঠল রিনি,
‘ তুমি কি সত্যি কিছু বুঝতে পারছো না নীরব ভাইয়া?’
‘ কি হয়েছে সেটা বলবি তো?’
‘ এরপরও তুমি বলবে কি হয়েছে।’
‘ আমি সত্যি কিছু বুঝতে পারছি না রিনি গুছিয়ে বল না আমায়?’
‘ আর কি বলবো তোমায় যা করার সব তো তুমি আগেই করে দিয়েছো।’
রিনির কথা শুনে বেশ অবাক হয়ে বললো নীরব,
‘ আমি সত্যি বুঝতে পারছি না রিনি?’
‘ আরে ভাইয়া আহি তোমায় সেই ছোট্ট বেলা থেকে ভালোবাসে এটা বুঝতে পারছো না অবশ্য এখন আর বুঝে কি করবে তুমি তো এখন অন্য কাউকে ভালোবাসো।’
বলেই একপলক অথৈর দিকে তাকিয়ে চলে যায় সে আহিকে খুঁজতে। অথৈও কোনোদিক আর তাকিয়ে চুপচাপ বেরিয়ে যায় ওখান থেকে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে তাঁর। যদিও এসবে তাঁর কোনো দোষ ছিল না। তারপরও তাঁর খুব কষ্ট হচ্ছে এই মুহূর্তে।’
অন্যদিকে অথৈ আর রিনির যাওয়ার পানে জাস্ট অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো নীরব যেন এইমাত্র রিনি তাঁকে ঠিক কি বললো সব তাঁর মাথার উপর দিয়ে গেল। আনমনে নিজেই নিজেকে বলে উঠল,
‘ আহি আমায় ভালোবাসে?’
__
এদিকে লাইব্রেরির জানালার পাশে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ ঠিক কি কি হলো সবই দেখেছে আদ্রিয়ান। সাথে এতক্ষণ ঠিক কি কি হয়েছে সেই জিনিসটা সাজাতে তাঁর কিছুক্ষন সময় লেগেছে। কতক্ষন আগেই গাড়ি করে ভার্সিটি এসেছিল আদ্রিয়ান আর তখনই গেটের ভিতর আহি সাথে কালকের শুভর সাথে থাকা মেয়েটিকে দেখতে পায় আদ্রিয়ান। শুরুতে তো প্রচন্ডই অবাক হয় পরক্ষণেই ওদের পিছন পিছন লাইব্রেরিতে চলে আসে আদ্রিয়ান। মূলত এখানে আসার মূল কারন হলো রিনিকে একটা ধন্যবাদ দেওয়া যতই হোক কাল সে তাঁর ছোট ভাইটাকে সাহায্য করলো,সেবাযত্ন করলো।
এসব ভাবতে ভাবতেই আদ্রিয়ান আসে লাইব্রেরির দরজা পর্যন্ত আর তখনই আহি আর রিনির কথোপকথন শুনতে পায় সে। আর ওদের কথা শুনে যা বুঝতে পারলো সেটা হলো আহি কাউকে তাঁর ভালোবাসার কথা বলবে। শুরুতে কেমন যেন একটু খারাপ লাগছিল আদ্রিয়ানের কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে পুরো জিনিসটা দেখতে লাগলো সে কিন্তু শেষমেশ যা হলো সেটা যেন আদ্রিয়ানেরও ভাবনার একদমই বাহিরে ছিল। আহি যাকে ভালোবাসে সে নাকি আবার অন্য কাউকে ভালোবাসে। আহির জন্য খুবই খারাপ লাগলো আদ্রিয়ানের। আহির স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সাথে হুট করে দৌড়ে চলে যাওয়া সবকিছুই আদ্রিয়ান দেখেছে। আর সব দেখে সে বেশ বুঝতে পেরেছে খুব গুরুতরভাবেই একটা আঘাত পেয়েছে আহি। আদ্রিয়ান ছোট্ট দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আহি যে পথ দিয়ে গিয়েছিল সেদিক দিয়েই হাঁটা শুরু করলো।’
ভার্সিটির পিছনে একটা গাছের আড়ালে থাকা  বেঞ্চের ওপর বসে আছে আহি। বেঞ্চের পাশেই শুকনো মাটিতে ছিঁড়ে পড়ে আছে আহির আনা গোলাপ আর চিঠিটা। চোখ বেয়ে পরছে তাঁর নোনা পানি, কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে তাঁর। এই জন্যই হয়তো বলে কাউকে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ভালো বাসতে নেই মানুষটা তাঁর না হলে যে প্রচন্ড কষ্ট হয়। এমন সময় আহির কাঁধে হাত রাখলো রিনি, কাঁধে কারো স্পর্শ পেতেই আহি চটজলদি তাঁর চোখের পানি মুছে পিছন ঘুরে তাকালো রিনির দিকে। চোখের পানি মুছলেও আহির চোখ দেখেই বুঝতে পেরেছে রিনি যে আহি এতক্ষণ কেঁদে ছিল৷ রিনি ছলছল চোখে আহির দিকে বললো,
‘ চোখের পানি মুছে ফেললেই কি কান্নার ছাপ চলে যাবে আহি?’
রিনির কথা শুনে আহি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না রিনিকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো সে। আহির কান্না দেখে রিনিরও কান্না পাচ্ছে খুব সেও আহিকে জড়িয়ে ধরে কান্না ভেঁজা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ আই এম সরি দোস্ত তোকে সকালে যদি জোর করে না নিয়ে আসতাম তাহলে হয়তো এসব কিছুই তোকে দেখতে হতো না। সবসময় শুধু তোকে বলতাম নীরব ভাইয়াকে হয়তো এই মেয়ে পছন্দ করে, সেই মেয়ে হা হয়ে তাকিয়ে থাকে, ওই মেয়ে ভালোবাসে কিন্তু কখনো এই জিনিসটা মাথাতেই আসে নি নীরব ভাইয়া নিজেও তো অন্য কোনো মেয়েকে ভালোবাসতে পারে। তোকে কি বলে সান্ত্বনা দিবো ভুলে গেছি আমি। পারলে আমায় ক্ষমা করে দিস বোইন।’
উওরে আহিও কান্নাভেজা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ আমার এতদিনের অনুভূতিগুলো ভেঙে চুরে তছনছ হয়ে গেল রিনি, আমার কল্পনা, নীরব ভাইয়াকে নিয়ে গড়া স্বপ্ন, ইচ্ছে, অনুভূতি, ভালোবাসা সবই যেন এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেল।’
বলতে বলতে ঠুকরে কেঁদে উঠলো আহি। আহির কথা শুনে রিনির কি বলবে ভুলে গেছে সে। আহিও জন্য তারও খারাপ লাগছে খুব।’
আর এদের দেখে অল্প কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে অথৈ। ভিতর থেকে প্রচন্ড ভেঙে গেছে সে তাঁর জন্যই আজ এত কষ্ট পাচ্ছে অথৈ। এক নিজে যাকে ভালোবাসে তাকে তো কখনো খুঁজেই পেলো না উল্টো তাঁর জন্য অন্য আরেকজনের হৃদয় ভেঙে গেল। ভাবতেই খারাপ লাগছে অথৈর। চোখের চশমাটা চোখের পানিতে ভিজে গেছে অনেকটাই। অথৈ তাঁর চোখের চশমাটা খুলে গায়ের ওড়না দিয়ে মুছে নিলো। ভেবেছিল একবার যাবে আহির কাছে কিন্তু সাহস আর হলো না তাঁর, তাই ওখানে দাঁড়িয়ে থেকেই উল্টো দিকে হাঁটা দিলো অথৈ। এরই মধ্যে হুট করেই একটা ছেলে আইমিন আদ্রিয়ানকে দেখে হাল্কা চমকে উঠে একপলক আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে তক্ষৎনাত জায়গা ত্যাগ করলো সে। আজ আর ভার্সিটি থাকবে না অথৈ এক্ষুনি বাড়ি চলে যাবে। হুট করে এমন এক ভয়ংকর সিচুয়েশনে পড়বে অথৈ এটা ভাবতেই পারে নি। চোখের পানি মুছতে মুছতে দৌড়ে বেরিয়ে গেল সে ভার্সিটি থেকে।’
অন্যদিকে আদ্রিয়ানেরও বেশ খারাপ লাগছে আহির জন্য। যদিও আহিকে সে সহ্য করতে পারে না মোটেও কিন্তু কালকে আহির সাথে কিছুটা সময় কাটানোর পর সাথে আজ আহির চোখের পানি দেখে তাঁর ভিতরটা খা খা করছে। এক অজানা শূন্যতা এসে গ্রাস করলো আদ্রিয়ানকে। আদ্রিয়ান বুঝতে পারছে না কিসের শূন্যতা ফিল হচ্ছে তাঁর। আর কিসেরই বা এত খারাপ লাগা। এমন সময় আদ্রিয়ানের ভাবনার মাঝখানে ওর ফোনটা বেজে উঠল উপরে পিন্সিপালের নাম্বার দেখে ফোনটা তুলে বললো আদ্রিয়ান,
‘ এই তো স্যার আসছি আমি?’
আদ্রিয়ানের কথা শুনে অপরপাশে পিন্সিপালও বলে উঠল,
‘ ওকে।’
উওরে আদ্রিয়ান আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিল। তারপর কিছুক্ষন আহির দিকে তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘ শ্বাস থেকে চলে যায় সে পিন্সিপালের রুমের উদ্দেশ্যে।’
আকাশটা রোদ্দুরের চিক চিক করছে খুব। সময়টা কম হলেও দুপুর এগারোটার কাঁটায় ছুঁই ছুঁই। চারিদিকে গাছের পাতারা বাতাসে স্পর্শে হাল্কা হাল্কা দুলছে, পাখিরাও উঁড়ে চলছে দূরে। এসবের মাঝেই কান্নার মাধ্যমে নিজের অনুভূতিগুলোকে একে একে যেন হারিয়ে ফেলছে আহি।’
পিন্সিপালের রুমে চুপচাপ বসে আছে আদ্রিয়ান। পাশেই পিন্সিপাল তাঁকে কিছু বলছে। মূলত আদ্রিয়ানকে এখানে ডাকার পিছনে দুটো কারন এক শুভর ব্যাপারে কিছু কথা বলা সাথে সামনের ভার্সিটির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আদ্রিয়ানকে চিপ গেস্ট হিসেবে নিমন্ত্রণ করা। এসব বিষয় নিয়েই আদ্রিয়ানের সাথে কথা বলছে পিন্সিপাল। আর আদ্রিয়ান চুপচাপ বসে বসে শুনছে হ্যাঁ না কিছুই বলছে না সে, তাঁর মনটা যেন ব্যাকুল হয়ে রয়েছে আহির জন্য। চোখের সামনে বার বার আহির সেই চোখ ভেজা কান্নারত চেহারাটা ভাসছে তাঁর। একরাশ অস্থিরতা ফিল হচ্ছে আদ্রিয়ানের। আদ্রিয়ান এটাই বুঝতে পারছে না এত খারাপ কেন লাগছে তাঁর। কেনই বা বার বার মনে হচ্ছে তাঁর, দৌড়ে গিয়ে বলুক আহিকে,
‘ প্লিজ কেঁদো না তোমার কান্না ভেঁজা চেহারাটা আমি জাস্ট নিতে পাচ্ছি না। তোমার জন্য আমারও ভিষণ কষ্ট হচ্ছে আহি।’
আদ্রিয়ান তাঁর অস্থিরতা নিয়ে বলে উঠল পিন্সিপালকে,
‘ স্যার আমার একটু তাড়া আছে যদি সবকিছু একটু তাড়াতাড়ি বলতেন?’
‘ হুম আদ্রিয়ান বুঝতে পেরেছি, ঠিক আছে আর তোমায় বসিয়ে রাখবো না
এই বলে শুভর কিছু জিনিস সাথে একটা ইনভিটেশন কার্ড দিল আদ্রিয়ানের কাছে। অন্যসময় হলে শুভকে নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করতো আদ্রিয়ান কিন্তু আজ যেন কিছুই ভালো লাগছে তাঁর। আদ্রিয়ান সব জিনিসগুলো হাতে নিয়ে পিন্সিপালকে ‘থ্যাংক ইউ’ বলে চলে গেল। পিন্সিপালও খুশি মনে বিদায় জানালো আদ্রিয়ানকে।’
আদ্রিয়ান ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসার আগে আরেকবার গিয়েছিল ভার্সিটির পিছনে আহিকে দেখতে। কিন্তু আহি নেই হয়তো চলে গেছে। তারপর নানা কিছু ভাবতে ভাবতে আদ্রিয়ান গিয়ে বসলো তাঁর গাড়িতে। সে বসতেই ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করলো। আর আদ্রিয়ানও তাঁর শুন্যতা ঘেরা হৃদয়টা নিয়ে এগিয়ে গেল নিজের গন্তব্যের দিকে।’
বিকেল চারটা…..
ছাঁদের এক কিনারায় চুপ দাঁড়িয়ে আছে আহি। মনটা তাঁর ভিষণই খারাপ। চুপচাপ উপরে থাকা মুক্ত করা সাদা আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে সে। আজ যেন সবকিছুই শূন্য লাগছে তাঁর। এরই মধ্যে মুক্ত করা আকাশ বেয়ে উড়ে যাচ্ছে এক ঝাঁক পাখি, আর এক ঝাঁক পাখিদের ছেড়ে তাদেরই পিছন পিছন উড়ে যাচ্ছে একটা পাখি। হয়তো তারও আহির মতো মন খারাপ খুব। তাই এমন হাজারের ভিড় ছেড়ে একলা পথে হাঁটছে সে।’
এই মুহূর্তে আহির মনে পড়ছে সেদিনের সেই বাবুইপাখিটার কথা, তার অনুভূতিহীনভাবে চলে যাওয়ার কথা। আহিরও মনে হচ্ছে সেই বাবুইপাখিটার মতো তাঁর অনুভূতিগুলোও অনুভূতি হয়েই রয়ে গেল প্রকাশ করা আর হলো না। আহি আনমনেই আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠল,
‘ আমার ‘বাবুইপাখির অনুভূতি’ গুলো যে অনুভূতি হয়েই রয়ে গেল নীরব ভাইয়া। তোমার সাথে আর হাজানো হলো না, অবশ্য এতে তোমার কোনো দোষ নেই, হয়তো আমিই তোমায় নিয়ে বেশি বেশি স্বপ্ন দেখে ফেলেছি। আর তাই আজ এত কষ্ট হচ্ছে।’
এমন সময় ছাঁদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আহির দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে উঠল নীরব,
‘ আহি,,
হুট করেই সেই প্রিয় মানুষটা নীরবের কন্ঠ শুনে হকচকিয়ে উঠলো আহি। চটজলদি চোখের পানি মুছে পিছন ফিরে তাকালো সে। তারপর হাল্কা হেঁসে বললো আহি,
‘ হুম বলো ভাইয়া?’
আহির কথা শুনে নীরব এগিয়ে এসে আহির মুখোমুখি দাঁড়ালো তারপর বললো,
‘ তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে আহি?’
উওরে আহিও বলে উঠল,
‘ হুম বলো না কি বলবে আমায়।’
আহির এই স্বাভাবিকভাবে কথা বলাটায় আজ কেমন যেন লাগছে নীরবের তাহলে কি সকালে রিনি যা বললো তাই সত্যি। নীরব কিছুক্ষন চুপ থেকে ছাঁদের কিনারা দেখিয়ে বললো,
‘ চল ওখানে বসি।’
নীরবের কথা শুনে আহি বেশ স্বাভাবিকভাবে বলে উঠল,
‘ বসতেই হবে?’
‘ হুম কতদিন হলো বলতো এইভাবে আমরা বসি না চল বসি।’
বলেই আহির হাত ধরে ছাঁদের কিনারায় পা ঝুলিয়ে বসে পড়লো নীরব। নীরবের কাজে আহিও বাধ্য হয়ে বসে পড়লো ছাঁদের কিনারায়।’
উল্টোদিক ফিরে চুপচাপ বসে আছে আহি। প্রচন্ড খারাপ লাগছে আহির সাথে কান্নাও পাচ্ছে কিন্তু কাঁদবে না সে। কোনোভাবেই এই মুহূর্তে নীরবকে তাঁর চোখের পানি দেখাতে চায় না আহি। আহি যথাসম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
‘ হুম এখন বলো ভাইয়া তুমি কি বলবে আমায়?’
আহির কথা শুনে নীরবও সরল কন্ঠে বেশি কিছু না ভেবেবলে উঠলো,
‘ তুই আমায় ভালোবাসিস আহি?’