বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৬

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৬
লেখিকা: তানজিল মীম

বিষন্ন ভরা মুখ আর ছলছল চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আহি নীরবের দিকে। এই মুহূর্তে ঠিক নীরবের ‘ভালোবাসিস’ প্রশ্নের উওর হিসেবে কি দেওয়া উচিত আহি বুঝতে পারছে না। এই প্রশ্নটা যদি আর আট ঘন্টা আগে করতো নীরব তাহলেও হয়তো হাসি মুখে খুশি হয়ে উওর দিতো আহি। হুম তোমায় আমি ভিষণ ভালোবাসি ভাইয়া। সেটাও আজ থেকে নয় সেই ছোট্ট বেলা থেকে। সেই ছোট বেলা থেকেই তোমায় নিয়ে হাজারো অনুভূতি, হাজারো ছন্দ, হাজারো গল্প, হাজারো কল্পনার রাজ্য বুনেছি আমি। কিন্তু আজ যেন এক নিমিষেই সব শেষ হয়ে গেল। আহিকে ভাবনাশীল হয়ে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আবারো প্রশ্ন করলো নীরব,

‘ কি হলো কথা বলছিস না কেন ভালোবাসিস আমায়?’
নীরবের আবারো একই প্রশ্ন শুনে মুচকি হেঁসে বললো আহি,
‘ হঠাৎ তোমার মাথায় এই ধরনের প্রশ্ন এলো কোথা থেকে?’
‘ কথা না ঘুরিয়ে সোজাসাপ্টা উওর দে আমায় তুই কি ভালোবাসিস আমায়?’
এবার আর আহি চুপ থাকতে পারলো না নীরবের দিকে তাকিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে বলে উঠল আহি,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘ হুম তোমায় ভালোবাসি আমি। সেই ছোট্ট বেলা থেকে তোমায় আমি ভালোবাসি ভাইয়া।’
আহির কথা শুনে এবার যেন সত্যি সত্যি শকট হলো নীরব সে ভাবতেই পারে নি সকালের রিনির বলা কথাগুলোই সত্যি হবে। এখন কি বলবে নীরব ঠিক বুঝতে পারছে না। সে কখনোই আহিকে সেই নজরে দেখে নি দেখেছে শুধু নিজের ছোট বোন হিসেবে। সবসময় ছোট বোনের মতোই আগলে রেখেছে আহিকে। কিন্তু আহি যে তাকে নিয়ে অন্য স্বপ্ন দেখছিল এটা কল্পনাও করতে পারে নি নীরব। নীরবকে চুপ থাকতে দেখে আহি বেশ বুঝতে পেরেছে নীরবের মাথায় এখন কি চলছে। আহি নিজেকে সামলে নিয়ে হাল্কা হেঁসে নীরব কন্ঠে বললো,

‘ তবে তুমি চিন্তা করো না ভাইয়া আমি বুঝতে পেরেছি তুমি আমাকে কখনোই সেই নজরে দেখো নি। তাই বেশি ভাবার প্রয়োজন নেই, তোমায় আমায় ভালোবাসতে হবে না।’
বলেই মুক্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো আহি। আহিকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে নীরব কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো আহির দিকে তারপর আহির হাত ধরে বলে উঠল সে,
‘ বিশ্বাস কর আহি আমি কখনোই তোকে নিয়ে এইরকম কিছু ভাবি নি বা তুই যে আমায় নিয়ে অন্য কোনো স্বপ্ন দেখছিলি সেটাও বুঝতে পারি নি। আমি তোকে সবসময় আমার ছোট বোনের চোখে দেখেছি আর এখন তো আমি অথৈকে ভালোবাসি। প্লিজ আমায় তুই ক্ষমা করে দে, আহি?’

নীরবের কথা শুনে মুচকি হাসলো অথৈ। তারপর নীরবের দিকে তাকিয়ে বললো আহি,
‘ ক্ষমা কিসের চাইছো ভাইয়া? এতে তোমার কোনো দোষ নেই। আমি যাকে ভালোবাসবো সেও যে আমাকে ভালোবাসবে এমনটা তো না। সবাই যে সবার ভালোবাসার মানুষটাকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পাবে সেটাও যে সবসময় হতে হবে এমনটা তো নয়। আর দুনিয়াতে এমন কত মানুষ আছে যারা তাদের ভালোবাসার মানুষকে পায় না আমিও না হয় তাদের দলেরই একজন। তুমি টেনশন নিও না আমি ঠিক আছি।’
নীরব শীতল ভেজা কন্ঠে নিরাশ হয়ে বললো,
‘ এখন কি তবে তুই আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিবি,আহি?’

নীরবের কথা শুনে শরীরটা যেন কেঁপে উঠলো আহির। নীরবের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিবে এটা তো কাল্পনিক কালেও সম্ভব নয়। আহি ছলছল চোখে নীরবের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ না কথা কেন বন্ধ করবো? শুধু আজ যা হয়েছে সব ভুলে যাবো আর তুমিও ভুলে যেও যে ‘আমি তোমায় ভালোবাসি’ এই কথাটা।’
উওরে নীরব কি বলবে বুঝতে পারছে না। আজকের সময়টা যেন সত্যি খুব বেমানান। সে ভাবে নি আজকের দিনটা তাঁর এমন কাটবে। অথৈকে ভালোবাসার কথা বলতে গিয়ে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে এটা একদমই কল্পনার বাহিরে ছিল নীরবের। নীরব হাল্কা হেঁসে বললো আহিকে,

‘ দেখবি তুই আমার থেকেও খুব ভালো কাউকে পাবি জীবন সঙ্গী হিসেবে।’
নীরবের এবারের কথা শুনে আহি শুধু হাসলো তবে কিছু বললো না। আহিকে চুপ থাকতে দেখে নীরব আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ আজ আকাশটা খুব নিরিবিলি তাই না আহি?’
উওরে আহিও বেশি কিছু না ভেবে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ হুম।’
এরপর আর কোনো কথা হয়নি দুজনের মধ্যে। দু’জনেই শুধু চুপচাপ ছাঁদের কিনারায় বসে তাকিয়ে রইলো মুক্ত করা আকাশটার দিকে।’
এরপর সময়ের গতি পথে,

বলতে না বলতেই বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে এলো। আলোকিত আকাশটায় ধীরে ধীরে নেমে আসলো লালচে আলো। ওই যে সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বাভাস। চারপাশ দিয়েই বয়ে আসছে মুক্ত করা ঠান্ডা বাতাস। সন্ধ্যা নামতেই উল্টো দিক দিয়ে উড়ে আসলো এক ঝাঁক পাখি তবে এবার আর সেই একলা চলা পাখিটা এলো না। আহি নীরব দুজনেই তাকিয়ে রইলো সেদিকে। কিছুক্ষন যেতেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো আহি। তারপর নীরবকে উদ্দেশ্য করে বললো সে,
‘ ঠিক আছে ভাইয়া এখন যাই, তুমি তো জানো আম্মু সন্ধ্যার সময় বাহিরে বা ছাঁদে থাকা পছন্দ করে না। তাই এখন যাচ্ছি পরে আবার কথা হবে? আর হ্যাঁ কিছুক্ষন আগের কথাগুলো ভুলে যেও কিন্তু?’..

বলেই উল্টো দিক ঘুরে হাঁটা শুরু করলো আহি। আজ আর ঘুরে তাকালো না সে নীরবের দিকে। হয়তো ঘুরে তাকালেই নীরব তাঁর কান্না ভেঁজা চেহারাটা দেখে ফেলতো। এতক্ষণ নিজেকে শক্ত রাখতে পারলেও এবার আর পারলো না আহি। এতক্ষণ আঁটকে রাখা চোখের পানি সব এক নিমিষে বেরিয়ে যেতে লাগলো।’
অন্যদিকে নীরব বেশ বুঝতে পেরেছে আহি ভিষণ কষ্ট পেয়েছে কিন্তু সেই বা কি করবে সে তো আর আহিকে ভালোবাসে না। সে তো ভালোবাসে শুধু অথৈকে আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো নীরব এ কোন মায়াজালে আঁটকে পড়লো তার জীবন, আর কবেই বা সব ঠিক হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে নীরব একটাই প্রার্থনা করলো,
‘ আহি যেন বেশি কষ্ট না পায়, আর খুব তাড়াতাড়ি সব ভুলে আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যায়।’

রাত ৯ঃ০০টা…
হসপিটাল থেকে বেরিয়ে একটা সুনসান রাস্তা দিয়ে হাঁটছে আহি। কয়েক ঘন্টা আগেই আহি এসেছিল হসপিটালে। আজ বড্ড মন খারাপ থাকায় বিকেলে হসপিটালে আসে নি আহি। কিন্তু সে না আসাতে একজন লিটেল ফ্রেন্ড যে না খেয়ে থাকবে এটা সত্যি অজানা ছিল আহির। ভিতরে ভিতরে খুবই ভালো লেগেছে আহির। তাই তো হসপিটাল থেকে ফোন আসতেই চলে আসলো সে হসপিটালে তারপর সেই লিটেল ফ্রেন্ডকে খাইয়ে দাইয়ে তাঁর সাথে কিছুক্ষন কাটিয়ে জাস্ট হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসলো আহি। আজ সারাদিন ঠিক কি কি ঘটলো সবই যেন চোখের সামনে ভেসে আসলো আহির।

আহি হাঁটতে হাঁটতে একটা ছোট্ট গোলাকার পুকুর পাড়ের সামনে এসে দাঁড়ালো। আশেপাশে তেমন কোনো লোকজন নেই। আর যারা আছে তাঁরা খুবই ব্যস্ত। আহি চুপচাপ পুকুরের চারিদিকে গোল করে ঘিরে থাকা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। আকাশটায় মেঘে ঢেকে আছে পুরো, হয়তো কিছুক্ষনেই মধ্যে বৃষ্টি হবে। চারপাশে হিমশীতল বাতাস বইছে। বাতাসে আহির চুলগুলো উড়ছে। আহি নিমিষেই তার চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো। আজ সারাদিন কি কি ঘটলো সবই একে একে মাথা থেকে ঝেরে ফেলছে সে। শেষমেশ আহি আঁটকে পড়লো অথৈ আর নীরবের মাঝখানে। যেন নীরবের অথৈকে বলা ‘ভালোবাসি’ কথাটা কিছুতেই বের হতে চাচ্ছে না তার মাথা থেকে। বুকের বাম পাশে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করছে আহি। আবারো হয়তো তাঁর অনুভূতিগুলো বাহিরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। আহির ইচ্ছে করছে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে তাহলে হয়তো তাঁর যন্ত্রণাটা একটু কমবে।’

আহি নিমিষেই তার চোখ খুলে তাকিয়ে রইলো আকাশের দিকে। এরই মধ্যে আকাশ বেয়ে ছিঁটকে আসলো বৃষ্টির একফোঁটা পানি আহির চোখের পাশে। চোখে পাশে কিছু পরতেই পুরো চমকে উঠলো আহি। আকাশে মেঘেরা ডাকছে ভিষণ। সাথে বাতাসের প্রবণতাও যেন বেড়ে গেছে অনেক। আশেপাশের লোকজন ছোটাছোটি করছে। হয়তো তাঁরা বৃষ্টিকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। আহি তেমন কিছু না ভেবে রেলিং ছেড়ে উল্টোদিক ঘুরে ভাবনাহীনভাবে হাঁটা শুরু করলো। সে চায় বৃষ্টি নামুক এখন, তুমুল বেগে বৃষ্টি নামুক, যেন বৃষ্টির পানিতে সে তাঁর সব কষ্টকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে নতুন ভাবে সবকিছু শুরু করতে পারে।’

আহি হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় অনেক দূরে কিন্তু বৃষ্টি জোরে নামে নি তখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে তবে। সাথে মেঘ চিঁড়ে গর্জন দিচ্ছে। হঠাৎই এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে পড়লো আহি, এখানেও একটা পুকুর আছে চতুভূজ আকারের, তবে এটার চারদিক জুড়ে নেই কোনো রেলিং। চারপাশে ছোট বড় কিছু গাছ আছে সাথে চারদিক জুড়ে রয়েছে বসার জন্য বেঞ্চ। এখানে এর আগেও এসেছিল আহি নীরবের সাথে। একসাথে অনেকটা সময় কাটিয়ে ছিল তাঁরা। চোখ বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো আহির।

এরই মাঝে ঝিরঝিরে তুমুল বেগে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। আহি আনমনেই গিয়ে বসে পড়লো সামনে থাকা বেঞ্চটাতে। বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে সে, আশেপাশে বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাচ্ছে সবকিছু, সামনের পুকুরটাও ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে। তাঁর থেকে কিছু দূরে থাকা ল্যামপোস্টটা তখনও আলো দিচ্ছিল আহিকে। আহি বৃষ্টির মাঝে ঠুকরে কেঁদে উঠলো। কষ্ট হচ্ছে তার, বড্ড কষ্ট, কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে আহির। আহি বসে বসেই কেঁদে উঠলো বৃষ্টির মাঝে, তাঁর সাথে ভিজছে সামনের এই পুকুরটা, পাশে থাকা গাছগুলো, গাছে থাকা সবুজ পাতাগুলো আর কিছুটা দুরত্বে থাকা ওই আলোকিত ল্যাম্পপোস্টটা।’

তাঁর পিছনেই রয়েছে শহরের সরু রাস্তা, রাস্তা বেয়ে ছুটছে মিনিট পাচেক পর পর গাড়িরা। তাদের কেউ কেউ হয়তো পিছন থেকে দেখেছে আহিকে। কেউ কেউ কিছু ভাবছে না, আবার কেউ অবাক হয়ে চলে যাচ্ছে নিজেদের গন্তব্যে। এদের কারোই হয়তো কোনো ইন্টারেস্ট নেই আহির ওপর। কারন এটা তো ব্যস্ত শহর। আর ব্যস্ত শহরের মানুষগুলো ভিষণ ব্যস্ত।’
বেশ কিছুক্ষন পর…

হঠাৎই গায়ে বৃষ্টির পানি না লাগাতে কিছুটা অবাক হলো আহি। কারন সে দিব্বি দেখতে পাচ্ছে সামনে প্রবল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে। তাহলে তাঁর গায়ে কেন বৃষ্টি পড়ছে না? এখন যে বৃষ্টির খুব দরকার তার কম হলেও চোখের পানি আড়াল করার জন্য তাঁর বৃষ্টি প্রয়োজন। আহি আনমনেই পিছন ঘুরে তাকালো সামনেই আদ্রিয়ানকে ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক চোখে তাকালো সে। অবাক হয়েই বললো আহি,
‘ আপনি?’

কিছুক্ষন আগেই আদ্রিয়ান অফিস থেকে বেরিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কিন্তু হুট করে মাঝরাস্তায় পিছন থেকে আহিকে দেখে ভিষণই অবাক হয় সে। প্রথমে বুঝতে পারে নি আদ্রিয়ান এটা আহি কিন্তু পরক্ষণেই এটা সত্যি সত্যি আহি বুঝতে পেরে গাড়ি থামিয়ে ছাতা নিয়ে চলে আসে আদ্রিয়ান। সে বুঝতে পেরেছে আহির আজ বড্ড মন খারাপ। আদ্রিয়ানকে চুপচাপ নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আহি নীরবে বললো,
‘ কি হলো আপনি কোথা বলছেন না কেন?
উওরে আদ্রিয়ান তাঁর ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে বললো,
‘ এত রাতে এখানে কি করছো তুমি?’

‘ না তেমন কিছু করছি না তো জাস্ট বৃষ্টিটাকে ভালো লাগছিল তাই ভিঁজছিলাম।’
‘ এত রাতে বৃষ্টিতে ভেঁজে কেউ ঠান্ডা লেগে জ্বর আসবে তো?’
‘ কিছু হবে না, আর আপনি এখানে কি করছেন বাড়ি যান নি?’
‘ চলো আমার সাথে আমি তোমায় তোমাদের বাড়িতে পৌঁছে দেই?’
‘ তাঁর কোনো প্রয়োজন নেই আমি একাই যেতে পারবো।’
‘ তুমি এতো জেদ করো কেন বলো তো?’
এবার আহির বিরক্ত লাগছে কোথায় চুপচাপ বসে ছিল এতক্ষণ কোথা থেকে এই রাগী হনুমান এসে তাকে বিরক্ত করছে। আহি আস্তে আস্তে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো তারপর আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো সে,

‘ আপনার কি আর কোনো কাজ নেই বলছি একা যেতে পারবো তাও শুনছেন না কেন?’
‘ নিজের অবস্থা দেখছো একবার ভিঁজে তো পুুরো একাকার হয়ে গেছো।’
এবার আহির রাগ উঠলো সে আদ্রিয়ানের দিকে তেঁড়ে এসে আঙুল দেখিয়ে বললো,
‘ আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি ভিঁজেছি তাতে আপনার কি? আপনি যান না আপনার কাজে…
‘ আমিও তো সেটাই বলছি চলো আমার সাথে এভাবে রাতের বেলা একা একা এখানে থাকা ঠিক হবে না।’

এবার চোখে ঝাপসা দেখছে আহি, চোখ জ্বলছে তাঁর, মাথাটাও ভাড় হয়ে গেছে, সারাদিন তেমন কিছু না খাওয়ায় মাথাটাও ঘুমাচ্ছে তাঁর।’ আহি তাঁর মাথাটাকে একবার ঝাঁকিয়ে আদ্রিয়ানের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যেতে নিলো সে। সাথে সাথে আদ্রিয়ান ধরে ফেললো আহিকে তারপর বললো,
‘ ঠিক আছো তুমি?’
আহি নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো কিন্তু শরীরটা যেন অবশ হয়ে যাচ্ছে তাঁর। চোখ দুটোও যেন মেলে তাকাতে নারাজ। তারপরও যথাসম্ভব তাকানোর চেষ্টা করলো আহি আদ্রিয়ানের দিকে। কিন্তু চমৎকার বিষয় হলো আহি ঝাপসা চোখে আদ্রিয়ানের জায়গায় নীরবকে দেখছে। ছলছল চোখ নিয়ে বলে উঠল আহি,

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৫

‘ এমন কেন করলে ভাইয়া আমায় কি একটু ভালোবাসা যেত না?’
উওরে আর কিছু শোনা বা বলার আগেই জ্ঞান হারালো আহি আদ্রিয়ানের বুকে।’
আকাশ ফেটে মুসল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে সবকিছু এরই মাঝে ছাতা হাতে আহিকে বুকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিয়ান। সে বুঝতে পেরেছে অত্যাধিক হারে বৃষ্টিতে ভেজার কারনে আর ক্লান্ত শরীর থাকায় জ্ঞান হারিয়েছে আহি,,

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ২৭