মম চিত্তে পর্ব ২৩

মম চিত্তে পর্ব ২৩
সাহেদা আক্তার

লঞ্চে ওঠার সময় অনেক মানুষের ভীড়ে কে কোন দিকে হারিয়ে গেল খুঁজে পাওয়া গেল না। সবাই মানুষের মাঝে মিশে গেল। পাছে হারিয়ে যায় এই ভেবে মমর হাত শক্ত করে ধরে রইল রিয়ান। লঞ্চে উঠে হাফ ছাড়ল ওরা। নিচে বসার জায়গা নেই। সব ভর্তি। তাই দুইজনেই উপরে লঞ্চের ছাদে চলে এল। সেখানে অনেকজনকে পাওয়া গেল ওদের অফিসের। ওদের দেখে মম রিয়ানের হাত ছেড়ে দিল।

তৌসিফা ওকে ডাকল। ছাদে ইঞ্জিনের এত শব্দ যে কিছুই শোনা গেল না। ওর হাত নাড়ানো দেখে মম এগিয়ে গেল ওর দিকে। লঞ্চের ছাদের কিনারায় রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে ওরা। ওখান থেকে চারপাশের দৃশ্য সুন্দর দেখা যায়। বেশ কয়েকটা উঁচু পাহাড় ঘেরা জায়গার পাশ দিয়ে পার হয়ে গেল লঞ্চ। একটু পর কেবল পানিই দেখা গেল। চারদিকে পানির ঢেউগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগছে। পাখিরা উড়ে বেড়াচ্ছে লঞ্চের চারপাশে। অনেকে বিস্কিট ছুড়ে দিচ্ছে। সেই বিস্কিট পাখিগুলো লুফে নিচ্ছে। কিন্তু লঞ্চে থাকা লোকেরা মানা করল বিস্কিট ছুড়ে দিতে। মমর ইচ্ছে করছিল পাখিদের খাওয়াতে কিন্তু মানা করায় আর করল না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

তৌসিফা আর মম নিজেদের মধ্যে গল্প করতে লাগল। নতুন কিছু দেখলেই দেখাতে লাগল একে অপরকে। ওদের পেছনে কখন ফারিজা এসে দাঁড়ালো টের পেল না। মমর খুব কাছ ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে ও। একটা ধাক্কা দিলেই পানিতে পড়ে যাওয়ার মতো বিপদ ঘটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু কিছু করার আগেই কোথায় থেকে রিয়ান এসে মমর পাশে এসে দাঁড়ালো। ফারিজা রিয়ানকে দেখে অপর পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল। রিয়ানকে দেখলেই ওর খুশিতে মন ভরে ওঠে। ও হেসে হেসে কথা বলতে লাগল রিয়ানের সাথে। রিয়ান হু হা করল কিন্তু তেমন একটা পাত্তা দিল না। ও বিরক্ত হচ্ছে টের পেয়ে ফারিজা কতক্ষণ কথা বলে চুপ করে গেল। তারপর মুখ গোমড়া করে ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেল। যেতে যেতে ঘন্টা দুয়েক লাগবে। তাই মম একবার রিয়ানকে চেয়ারে বসে বিশ্রাম নিতে বলেছিল কিন্তু এত মানুষের মাঝে বসার জায়গা পেল না।

দুই ঘন্টা জার্নি শেষে ওরা সেন্টমার্টিন পৌঁছালো। রিয়ান আর মম লঞ্চ থেকে নেমে এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে সবার জন্য। জায়গাটা সুন্দর। মিনহাজ লঞ্চ থেকে নেমে ওদের পাশে এসে গলার সর খাদে নামিয়ে রিয়ানকে বলল, ব্রো, হানিমুনটা না হয় এখানেই সেরে ফেলো। বলে হাঁটা দিল। কথাটা আস্তে বললেও মমর কানে গিয়ে ঠেকেছে। তাই না চাইতেও কান অবধি লাল হয়ে গেছে লজ্জায়। সত্যি বলতে বিয়ের পর এটাই ওদের একসাথে কোথাও বেড়াতে আসা।
সবাইকে খুঁজে নিয়ে হোটেলের দিকে হাঁটা ধরল ওরা। রুম নেওয়া হয়েছে ছয়টা। তিনটা মেয়েদের, দুটাে ছেলেদের আর একটা রিয়ানের জন্য। সবাই সবার মতো সেটেল হয়ে গেল। কিন্তু মম রুম পেল না। এক রুমে চারজন করে মেয়ে। ওরা মোট তেরজন মেয়ে। তাই মম বাকি রয়ে গেল। যে যার মতো রুমে চলে গেছে৷ মম তৌসিফাকে খুঁজল কিন্তু পেল না৷ মিনহাজ এসে জিজ্ঞেস করল, কি হল? দাঁড়িয়ে আছো?

– জায়গা নেই ভাইয়া৷ সব রুম ব্লক।
– আমার সাথে এসো।
মিনহাজ ওর ব্যাগ নিয়ে দোতলায় চলে এল। মম ওকে অনুসরণ করল। একটা রুমে ব্যাগটা রেখে বলল, এই রুমে থাকো তাহলে। মম কাঁধের ব্যাগ রেখে বিছানায় বসতে বসতে বলল, এটা কার রুম? মিনহাজ একটা গোয়েন্দা হাসি দিয়ে বলল, জানতে পারবে। রেস্ট নাও। আমি যাই। মিনহাজ বেরিয়ে গেল। ওয়াশরুমে শব্দ শোনা যাচ্ছে। কেউ আছে রুমে। মম ঝুঁকে ব্যাগটা রাখতেই লাগেজটা চেনা চেনা লাগল। পেছন থেকে কেউ বলল, তুমি? মম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। এবার বুঝতে পারল মিনহাজ এভাবে হাসার কারণ। মম পিছন ফিরে দেখল রিয়ান ভেজা গায়ে দাঁড়িয়ে আছে। চুলগুলো এখনো মোছেনি৷ মম বলল, কোনো রুমে জায়গা ছিল না। তাই মিনুভাই আমাকে এখানে দিয়ে গেল।

রিয়ান ওর দিকে এগােতে লাগল। মম পেছাতে পেছাতে দেয়ালে গিয়ে ঠেকল। রিয়ান ওর কানে ফিসফিস করে বলল, হানিমুনটা তাহলে হয়েই যাচ্ছে। কি বলো? মম ওকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে বলল, আমি অন্য রুমে চলে যাচ্ছি। কেউ বুঝতে পারলে জানাজানি হয়ে যাবে। রিয়ান ওর হাত ধরে বাঁধা দিয়ে বলল, কিচ্ছু হবে না। এদিকে আসো তো। নাও, মাথা মুছে দাও। রিয়ান টাওয়ালটা এগিয়ে দিল। মম অন্যদিকে ফিরে ওর মাথা মুছে দিতে লাগল। রিয়ান অভিযোগ করে বলল, অন্য দিকে তাকিয়ে আছো কেন? যেন অন্য কারো জামাইকে দেখছো? নিজেরই তো। মম টাওয়ালটা ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, হয়ে গেছে মোছা। যাও ঘুমাও, সারারাত গাড়ি চালিয়েছো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। বলে মম ওয়াশরুম চলে গেল।
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখল রিয়ান বিছানায় হেলান দিয়ে ফোন টিপছে। মম মাথার চুল মুছতে মুছতে বলল, ঘুমাও নি? রিয়ান ফোনটা রেখে বিছানায় আস্তে আস্তে বাড়ি মেরে বলল, এখানে এসে বসো। মম জিজ্ঞেস করল, কেন?

– আহা, আসো না। বসো।
মম এসে বসলে রিয়ান ওর কোলে মাথা রেখে বলল, তোমার কোলে ঘুমানোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম৷ এখন ঘুমাবো। রিয়ান চোখ বন্ধ করল। মম হালকা হেসে ওর মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে লাগল। কিছুক্ষণের মধ্যেই রিয়ানের চোখ ভেঙে ঘুম চলে এল। ষোল সতের ঘন্টার টানা জার্নি ওকে ক্লান্ত করে দিয়েছে। রিয়ান ঘুমিয়ে গেলে মম বালিশে ওর মাথাটা আস্তে করে রেখে দিল। তারপর পাশে শুয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইল। ওকে যত দেখে মন যেন ভরতে চায় না মমর। রিয়ানকে দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল টের পেল না।

দরজায় শব্দ হতেই মমর ঘুম ভেঙে গেল। নড়তে গিয়ে দেখল ও রিয়ানের বুকে। রিয়ান ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে৷ রিয়ান কখন এমন করল টেরই পেল না ও। রিয়ানের বাঁধন থেকে সরে এসে ফোন হাতে নিল। প্রায় দুটো বাজে। একটানা তিন ঘন্টা ঘুমিয়েছে। দরজায় আবার নক হলো। মম উঁকি মেরে দেখল ফারিজা দরজা নক করছে। ও কি করবে বুঝতে পারল না। এখন যদি ওকে রিয়ানের রুমে দেখে তাহলে সবাইকে বলে দেবে। আবার রিয়ানকেও জাগাতে ইচ্ছে করছে না। খুবই ক্লান্ত ও। মম পায়চারি করতে লাগল আর ভাবতে লাগল কি করা যায়। তারপর বাইরে কারো কথা শুনতেই ওয়াচ গ্লাসে চোখ রাখল। দেখল মিনহাজ এসেছে। ওকে দেখে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল মম। মিনহাজ ফারিজা বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিল নিচে। তারপর নক করতে মম দরজা খুলে দিল। মিনহাজ জিজ্ঞেস, কি অবস্থা? সব ওকে? খাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছি। রিয়ান কোথায়? মম পিছনে বিছানায় ঘুমন্ত রিয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে বলল, ঘুমাচ্ছে। মিনহাজ ওকে দেখে বলল, তাহলে খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি সময় করে খেয়ে নিও দুজনে। মম মাথা নাড়ল। মিনহাজ চলে গেলে মম দরজা মেরে দিল।

বিশ মিনিট পর ওদের দুটো প্লেট দিয়ে গেল। মম প্লেট টেবিলে রাখতেই রিয়ান ঘুম ঘুম চোখে উঠে বলল, খাবার দিয়ে গেছে?
– হুম, উঠে গেছো? ঘুম হয়েছে?
– হয়েছে মানে? তোমাকে জড়িয়ে ধরে যে ঘুম দিলাম! সারারাতের ঘুম উসুল হয়ে গেছে।
মম ওর হাতে প্লেট ধরিয়ে দিয়ে বলল, এখন খাবারটা খেয়ে পেট ভরিয়ে নাও৷ রিয়ান অস্বীকার করে বলল, খাইয়ে দাও৷ আজকে তুমি আমাকে খাইয়ে দেবে। আমি তোমাকে খাইয়ে দেবো৷ দাঁড়াও হাত মুখ ধুয়ে আসি। রিয়ান ওয়াশরুম থেকে মুখ হাত ধুয়ে এসে বসল মমর পাশে৷ প্লেট থেকে খাবার নিয়ে মমর মুখের সামনে ধরল। উপায় না দেখে মম খেয়ে নিল। রিয়ান বলল, এবার আমাকে দাও। আ……। মম ওকে লোকমা ধরে খাইয়ে দিল। খাওয়া শেষে প্লেটগুলো রেখে দু’জনে হাত ধুয়ে এল।

রিয়ান বিছানায় বসে বলল, তোমার হাতে খেয়ে আমার পেট কত বড়ো হয়ে গেছে দেখো। ভুঁড়ি দেখা যাচ্ছে। মম ওর পেটে হালকা একটা ঘুষি দিয়ে বলল, তাহলে আর খাইয়ে দেবো না। রিয়ান ওর হাত দুটো ধরে বলল, ইস্। দেবে না মানে? একশবার দেবে। ভাবছি এবার থেকে তোমার হাতে খাবো। মম বলল, পাগল নাকি? রিয়ান ওর মুখের পাশে হাত দিয়ে বলল, তোমার জন্য। মম কিছু বলল না। দুইজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইল।
ফোনের রিংটোন বাজতেই দু’জনে চমকে উঠল। রিয়ান বলল, ফোন বাজছে, ওয়েট। মম লজ্জামিশ্রিত সম্মতি জানিয়ে সরে বসল। রিয়ান ফোন রিসিভ করে বলল, হ্যাঁ বলো ভাইয়া। মিনহাজ অপর পাশ থেকে বলল, সন্ধ্যার সব রেডি হয়ে গেছে।

– ওকে। তাহলে বিকালের পরে সবাইকে সমুদ্র পাড়ে চলে আসতে বোলো।
– আচ্ছা। খেয়েছিস? শরীর কেমন আছে?
– হুম খাওয়া হয়ে গেছে। শরীর এখন ফ্রেশ ঝরঝরে। থ্যাংক ইউ ব্রো।
– হঠাৎ।
রিয়ান একটা হাসি দিল। মিনহাজ বুঝতে পেরে বলল, ওটা তোর ভাগ্য। যাক, হানিমুনটা হয়ে গেল ফাঁকে দিয়ে তোদের। না হলে কোথাও হয়ত যাওয়াও হতো না। আচ্ছা আরেকটু বিশ্রাম নে। আমি বাকি কাজগুলো সেরে নেই। রিয়ান রাজি হয়ে ফোন কেটে দিল। মম জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে? রিয়ান আড়মোড়া ভেঙে বলল, আজকে সন্ধ্যার পর সবাই সমুদ্র পাড়ে বসবে। সেখানে আড্ডা হবে, রাতের খাওয়া দাওয়া হবে।
– ও আচ্ছা।

রিয়ান মমর কাছে এসে ওর কাঁধে মাথা রেখে বলল, ইস্ কেউ না থাকলে তুমি আর আমি একসাথে সমুদ্র পাড়ে হাত ধরে হাঁটতাম। একসাথে ঝিনুক কুড়তাম। ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতাম। মম?
– বলো।
– চলো না সবাইকে বলে দেই। তাহলে আর কিছু লুকাতে হবে না। নিজেদের ইচ্ছে মতো থাকতে পারব।
– তারপর যে সবাই তোমার বউকে কথা শোনাবে, টিটকারি করবে। ভালো লাগবে?
রিয়ান দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এই সমাজের সব কিছুতে সমস্যা। ভালো করলে একজনকে প্রসংশা করবে আর অপরজনকে দেখিয়ে বলবে তুমি পারোনি। আর খারাপ করলে তো কথাই নেই। তাকে বাজে মন্তব্য করতে করতে ডিপ্রেশনে নিয়ে ফেলে। এই নষ্ট সমাজের মানুষ দুইদিন আগের করা ভালো কাজের কথা মনে রাখে না৷ কিন্তু দশদিন আগের করা খারাপ কাজ ঠিকই মনে রাখে।

বিকালবেলা মম তৈরী হয়ে রিয়ানের আগে বেরিয়ে গেল। রিয়ানের চাইছিল না। কিন্তু সন্দেহের তালিকায় পড়ার কোনো ইচ্ছে নেই মমর। মিনহাজকে ফোন করে জানতে পারল ওরা কয়েকজন সমুদ্র পাড়ে আছে। মম ওখানে চলে গেল। ও একটা হালকা নীল আর সাদা রঙে কাজ করা সুতির শাড়ি পড়েছে। হাতে মুক্তার ব্রেসলেট। গলায় রিয়ানের দেওয়া মুক্তোর লকেটটা। কানে সাদা দুল জোড়া। রিয়ান থেকে অনেক বলে উদ্ধার করেছে। দিতেই চাইছিল না। পরে আবার ওকে দুলটা ফেরত দিতে হবে এই শর্তে দিয়েছে। কি যে পেয়েছে দুলটাতে! কোমর পর্যন্ত চুল খোলা রেখেছে। ওকে দেখে অনেকে তাকিয়ে ছিল। মম তৌসিফাকে দেখে ওর কাছে গিয়ে বসল। তৌসিফা ওকে বলল, তোকেই মানিয়েছে এই সাগরপাড়ে। আমরা সবাই বেমানান।

– ধুর।
– সত্যি। সুন্দর লাগছে। সাগরের সাথে মিলে গেছে। আচ্ছা ভালো কথা। তোকে দেখলাম না যে। আমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। তারপর বেরিয়ে সবাইকে জিজ্ঞেস করলাম তোর কথা। কেউ বলতে পারল না। উঠেছিস কোথায়?
– অন্য রুমে।
– ও আচ্ছা। আমি ভাবলাম রুম পেলি কি না। বাস আর লঞ্চে যা করল! তা স্যারের সাথে যে এলি কেমন লাগল?
– কেমন আর লাগবে? সে ড্রাইভার আর আমি প্যাসেঞ্জার।
মম আর তৌসিফা হাসতে লাগল। ওদের কথার মাঝে রাসেল মমর পাশে এসে বসল। খেয়াল করেনি ওরা৷ কাঁধে কারো স্পর্শ পেয়ে মম তাকিয়ে দেখল রাসেল ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে। হাতটা কাঁধেই রয়েছে ও তাকানোর পরও৷ মম কাঁধ সরিয়ে বলল, কিছু বলবেন ভাইয়া?
– সমুদ্র পাড়ে এভাবে চুল খোলা রেখো না। বেঁধে ফেলো।

বলে উঠে গেল। মম খোঁপা করে নিল। লোকটাকে মোটেই ভালো লাগে না। কিন্তু সিনিয়র তাই কিছু বলতেও পারে না। কিছুক্ষণ পর রিয়ান এসে উপস্থিত হলো। গায়ে আকাশি রঙের শার্ট আর নীল জিন্স। শার্টের বোতাম খোলা। ভেতরের সাদা টি শার্ট দেখা যাচ্ছে। ওর নায়কের মতো হেঁটে আসা দেখে মমর হাসি পেল। রিয়ান মিনহাজের কাছে এসে দেখতে লাগল কি কি কাজ হয়েছে। এখানে অন্যান্য গাছ থেকে নারিকেল গাছ বেশি। তাই আগুন জ্বালানোর কাঠ পেতে বেগ পেতে হয়েছে। খাবার দাবারের ব্যাপারটাও হ্যান্ডেল হয়ে গেছে। কাছের একটা হোটেল থেকে খাবার আনা হবে। নিজেরা রান্না করবে ভেবেছিল। পরে ব্যাপারটা বাদ দিয়ে দিল।

মম চিত্তে পর্ব ২২

সন্ধ্যা নামতে সবাই কাঠ জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে গোল হয়ে বসল। রিয়ান আগেভাগে মমর পাশে এসে বসে পড়ল। ফারিজা গিয়ে বসল ওর পাশে। তৌসিফা মমর অপর পাশে বসল। রাসেল কয়েকবার ঘুর ঘুর করেও যখন মমর পাশে জায়গা পেল না তখন তৌসিফার পাশে বাধ্য হয়ে বসে বার বার মমর দিকে তাকাতে লাগল। মিনহাজ একটা গোল বোতলে অনেকগুলো কাগজের টুকরো নিয়ে হাজির হলো। বলল, খেলা প্রথমে কাকে দিয়ে শুরু করব বলো তো? সবাই রিয়ানের নাম বলল। মিনহাজ রিয়ানের কাছে গিয়ে বলল, ওকে ব্রো, নাও, সবার সম্মতি নিয়ে তোমার থেকেই শুরু করি। রিয়ান একটা কাগজ তুলে ওকে দিল। মিনহাজ কাগজটা খুলে বলল, কবিতা।

মম চিত্তে পর্ব ২৪