মম চিত্তে পর্ব ২৪

মম চিত্তে পর্ব ২৪
সাহেদা আক্তার

এক একজন বোতলটা থেকে এক একটা কাগজ তুলল আর যা লেখা ছিল তাই পারফর্ম করে দেখালো। কেউ গান, কেউ ছড়া, কেউবা কৌতুক আর ধাঁধা। বিভিন্ন রকমের খেলা খেলল ওরা। বেশ ভালো সময় কাটল ওদের। এমন করতে করতে সময়ের কাঁটায় কখন রাত নয়টা বেজে গেল কেউ টের পেল না।

মিনহাজ আরো তিন চারজনকে নিয়ে খাবার আনতে চলে গেল। এই সুযোগে কেউ কেউ উঠে এদিক ওদিক গেল। মম রিয়ানকে দেখতে পেল না। পাশেই ছিল। চট করে কোথায় চলে গেল খেয়াল হল না। দশ মিনিট পর হঠাৎ ওর ফোনে ম্যাসেজ এল। কিছুদূর বাম পাশে একটা হোটেল আছে। ওটার কাছে যেতে বলেছে রিয়ান। মম একটা এক্সকিউজ দিয়ে উঠে গেল। হোটেলটার পাশে আসতেই রিয়ান টান মেরে আড়ালে নিয়ে এল ওকে। মম হঠাৎ টান পেয়ে বলল, কি করছো? হঠাৎ এখানে ডাকলে? রিয়ান বলল, ডান হাতটা দাও। মম ডান হাত বাড়িয়ে দিল। রিয়ান এক ডজন সাদা আর নীল কাচের চুড়ি ওকে পরিয়ে দিল। মম চুড়িগুলো দেখে বলল, এগুলোর জন্য তুমি উঠে এসেছো?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– হুম। তোমার ডান হাতটা কেমন খালি খালি লাগছিল। তাই ভরিয়ে দিলাম। তোমার পছন্দ হয়েছে?
– হুম।
– চলো। সবাই অপেক্ষা করছে।
ওরা দুইজন একসাথে এসে বসল। তৌসিফা ফিসফিস করে ওকে জিজ্ঞেস করল, স্যারকে পেলি কোথায়? মম আস্তে করে বলল, আসার সময়। মমর হাতের চুড়ি খেয়াল করে বলল, চুড়ি কিনলি কবে? মম আমতা আমতা করে বলল, ঐ দিকে গিয়েছিলাম তো আসার সময় দোকানে ভালো লাগল। তাই আর কি। মম কোনোমনে পাশ কাটিয়ে গেল কিন্তু তৌসিফা বিশ্বাস করল কি না বোঝা গেল না।

খাওয়া দাওয়া শেষে যে যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াতে লাগল। মম আর তৌসিফা সমুদ্রের কাছে এসে দাঁড়ালো। এখানের ঢেউ কক্সবাজারের মতো উত্তাল আর হিংস্র নয়। একের পর এক শান্ত ঢেউ আছড়ে পড়ছে পায়ে আর পায়ের তলার বালি ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। কেমন একটা শান্তি আছে ঢেউগুলোয়। মম দাঁড়িয়ে রইল সাগরের দিকে ফিরে। বাতাসে ওর চুল উড়ছে। ইচ্ছে করছে হাত দুটো দুপাশে বাড়িয়ে দাঁড়াতে। ওরা দুইজন সবার থেকে কিছুটা দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল। তৌসিফা একটু এগিয়ে গেল সমুদ্রের দিকে কথা বলতে বলতে। মম ওর কথা শুনে হাসছিল।
হঠাৎ কে যেন ওকে জড়িয়ে ধরল পেছন থেকে। অপরিচিত স্পর্শে সরে যেতে গিয়ে টাল সামলাতে পারল না মম। পড়ে গেল সাগরের পানিতে। উপরের দিকে তাকিয়ে দেখল রাসেল। কেমন একটা হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। সে হাঁটু ভাঁজ করে বসে মমর দিকে ঝুঁকে গিয়ে বলল, তোমার স্মেল তো সুন্দর। কি পারফিউম ইউজ করো? মমর এবার মেজাজ খারাপ হলো। চড় বসিয়ে দিল রাসেলের গালে। অনেক সহ্য করেছে। সবকিছুর একটা লিমিট আছে। শুধরে যাওয়ার সময় দিয়েছে। কিন্তু সে না শুধরে বরং ওর আরো সুযোগ নিচ্ছে।

তৌসিফা পিছন ফিরে রাসেলকে চড় মারতে দেখল। সাথে সাথে মমর কাছে চলে এল ও। রাসেল গালে হাত দিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বলল, তোর তো সাহস কম না। সিনিয়রের গায়ে হাত তুলিস। রাসেল মমর ডানটা হাতটা শক্ত করে ধরে ওকে এক টান দিয়ে উঠে দাঁড় করালো। ওর হাতের চাপে মমর কয়েকটা কাচের চুড়ি ভেঙে হাতে ঢুকে গেল। রাসেল তাতে ভ্রুক্ষেপ করল না। হিড়হিড় করে টানতে টানতে সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে আরো দূরে চলে যেতে লাগল। তৌসিফা বাঁধা দিতে চাইছিল কিন্তু ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল রাসেল। ওর মাথায় রক্ত চড়ে আছে। মম হাতটা ছাড়তে চাইছিল কিন্তু সাড়াশির মতো হাত ছাড়তে পারল না। উপায় না দেখে রিয়ান বলে একটা চিৎকার মারল৷ রাসেল সাথে সাথে টান দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরল। মম ব্যাথায় ককিয়ে উঠল। হাতে কাচের অংশ আরো বেশি ঢুকে গেছে চাপে। গল গল করে রক্ত পড়তে লাগল সমুদ্রের পানিতে। কিন্তু ওরা কিছুটা দূরে থাকায় কেউ ডাকটা শুনতে পেল না।

কেউ খেয়াল করছিল না। সাগরের দিকটা অনেকটা অন্ধকারই৷ কয়জন মিলে গান ধরেছে। সবাই সেখানেই জড়ো হচ্ছে। রিয়ান ওদের মাঝে বসে আছে। গানের মাঝেও মমকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ওকে নজরে পড়ল না। তৌসিফা ভেজা শরীরে হাঁপাতে হাঁপাতে কোথায় থেকে হুট করে এসে ওদের সামনে ধপাস করে বসে পড়ল। কয়েকজন মেয়ে ওর কাছে এসে বলল, কি রে? কি হয়েছে? বালিতে দৌঁড়াতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে ওকে। কোনো রকম কষ্ট করে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল, রাসেল ভাই… মম…। সবাই ভাবল ওদের কোনো বিপদ হয়েছে।

মমর নাম শুনে রিয়ান দৌঁড় দিল সবার আগে। ওদের যত কাছাকাছি যেতে লাগল তত রিয়ানের কাছে ব্যাপরটা স্পষ্ট হতে লাগল। সাথে সাথে ওর দৌঁড়ানোর গতি আরো বেড়ে গেল।
মমকে মুখ চেপে ধরে নিতে কিছুটা ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে রাসেলের। অতিরিক্ত নড়াচড়া করছে। ওর গাল বেয়ে চোখের পানি রাসেলের হাতে এসে ঠেকেছে। মিশকাও ওর মতো ছিল। বেশি তেজ। পার্টির সবার সামনে চড় বসিয়ে দিয়েছিল। ওকে শাস্তি দিয়েছে। মমকেও দেওয়া দরকার। কিন্তু সেটা অন্যভাবে। জয়েনের পর থেকে ওর উপর আলাদাভাবে নজর পড়েছে রাসেলের। সবার মাঝে সাধারণ কিন্তু অন্য রকম সৌন্দর্য। যা ওকে বার বার টেনেছে৷ আজকে ওকে দেখে ভেতরটা পাগল পাগল হয়ে গেছে ওকে কাছে পাওয়ার জন্য। তাই সামলাতে পারেনি নিজেকে। গিয়ে জড়িয়ে ধরেছিল। তাই বলে চড় মারবে?

হঠাৎ পেছন থেকে কেউ রাসেলের শার্টের কলার খাঁমচে ধরল। ও পেছন ফিরে দেখল কেউ একজন ওর শার্ট খাঁমচে ধরে মাথা নিচু করে হাঁপাচ্ছে। রাসেল ত্যাড়া গলায় বলল, ওই, আর কিছু নেই? আমার শার্ট খাঁমচে শ্বাস নিচ্ছিস? দেখছিস না ব্যস্ত? মম মুখ দিয়ে শব্দ করতে চাইল কিন্তু সে এতটা চেপে ধরেছে যে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে। রাসেল হাতটা সরাতে যেতেই একটা ঘুষি পড়ল ওর মুখে। মম হাত থেকে ছিটকে পড়ল সামনে। রাসেল বামে সরে গেল ঘুষির কারণে। পড়তে পড়তেও বেঁচে গেল। তেড়ে আসতেই রিয়ানের হিংস্র চোখ ওর চোখে পড়ল। রিয়ান কাছে এসে ওর কলার চেপে ধরে চিৎকার করে বলল, হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মাই ওমেন? তারপর একের পর এক ঘুষি দিতে লাগল।

সবাই আসতে আসতে অনেকটা সময় পার হয়ে গেল। ততক্ষণে রাসেলের নাক মুখ ঘুষিতে ফুলে গেছে। বাঁধা দিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি। বাঁধা দিতে দিতে উল্টো মারার সময় পায়নি খুব একটা। দুই তিনটা মেরেছে তার পরও। রাসেলের আংটির ঘষায় রিয়ানের গালের খানিকটা অংশ কেটে গেছে। কিছুটা রক্ত গড়িয়েও পড়েছে। তাও মারা বন্ধ হয়নি। মম মুখে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে রিয়ানের দিকে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। রিয়ানকে এমন রাগতে আগে দেখেনি ও।

মিনহাজ আর সাদাফ এসে রিয়ানকে রাসেল থেকে সরিয়ে আনল। রাসেল ঠোঁটের কাছের কাঁটা অংশে হাত দিল। জ্বলে উঠল সাথে সাথে। এমনভাবে রইল যেন কিছু করেইনি। রাসেলের মুখোভঙ্গি দেখে রিয়ান আবার তেড়ে আসতে চাইল। কিন্তু দুইজনের জন্য পারল না। রিয়ান সাদাফকে ঠেলে সরিয়ে দিল। মিনহাজের হাত ছাড়িয়ে যেতে লাগলে মিনহাজ ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল, কি হয়েছে? রিয়ান চিৎকার করে বলল, আমার স্ত্রীকে স্পর্শ করার সাহস হয় কি করে ওর?

আমার স্ত্রী শব্দটা বোমার মতো পড়ল সবার মাঝে। সবাই এক প্রকার শক খেয়ে দাঁড়িয়ে রইল। ফারিজা শুনে ধপ করে বসে পড়ল বালিতে। তাকালো মমর দিকে। ও এখনো বসে আছে বালিতে মুখে হাত দিয়ে। কান্না বন্ধ হয়নি। রিয়ান কিছুটা শান্ত হয়ে মিনহাজের হাত সরিয়ে নিল। গায়ের শার্ট খুলে মমর ভেজা শরীর আবৃত করে দিল। মম ভেজা গায়ে বালিতে একাকার হয়ে গেছে। রিয়ান ওকে উঠিয়ে সবার দিকে ফিরে বলল, ও আমার স্ত্রী। শুনতে পেয়েছো সবাই? ভালো করে শুনে রাখো। আর মি. রাসেল, তোমার বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল। তখন প্রমাণ পাইনি।

তোমাকে আজকে থেকে বরখাস্ত করলাম। এখান থেকে যাওয়ার পর পরই আমি যাতে রিজাইন লেটার পেয়ে যাই। তোমাকে যেন অফিসের আশেপাশে না দেখি আর। যদি কোনো রকম উল্টোপাল্টা কিছু করেছো তো সেক্সুয়াল হ্যারেসমেন্টের কারণে এফায়ার করে আসবো থানায়। মাইন্ড ইট। সবাই তখনো চুপ করে দাঁড়িয়ে। রিয়ান মমকে নিয়ে হাঁটা ধরল। মমর জুতা ছিঁড়ে গেছে। হাঁটতে পারছে না। রিয়ান ওর জুতো জোড়া নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিল একদিকে। তারপর ওকে কোলে নিয়ে হাঁটা ধরল হোটেলের উদ্দেশ্যে।

রুমের সামনে এসে মমকে নামিয়ে দিল রিয়ান। মম জড়সড় হয়ে দাঁড়ালো একপাশে। রিয়ান রুমে ঢুকে বলল, ফ্রেশ হয়ে নাও দ্রুত। ব্যাগ থেকে এক সেট জামা বের করে দিল। মম বাম হাত দিয়ে নিতেই রিয়ান জিজ্ঞেস করল, ডান হাতে কি হয়েছে? মম তাড়াতাড়ি বলল, কিছু না। রিয়ান ওর ডান পাশে তাকাতেই শাড়িতে লাল রক্ত দেখতে পেল। মম দেখাতে চাইছিল না। রিয়ান জোর করে হাত টেনে এনে দেখল অনেকটা রক্ত জমাট বেঁধে আছে। দেখে রিয়ান রাগে ফেটে পড়ল। আবার বাইরে চলে যাচ্ছিল। মম বাঁধা দিয়ে বলল, প্লিজ। অনেক মেরেছো। তোমার গালটাও কেটে গেছে৷ রিয়ান কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থেকে রাগটাকে দমন করল। তারপর ওকে ওয়াশরুমে এনে সাবধানে ভাঙা কাচগুলো বের করে হাতের কাটা জায়গাটা ধুয়ে দিল। বেশ খানিকটা রক্ত বের হলো। মম ব্যাথায় চোখমুখ কুঁচকে ফেলল কিন্তু টু শব্দ করল না। না হলে রিয়ান আবার কি না কি করে বসে। রিয়ান সাবধানে হাত ধুয়ে দিয়ে বলল, তাড়াতাড়ি গোসল করে বের হও। আমি ওষুধ আর ব্যান্ডেজ নিয়ে আসছি। সাবধানে করবে। দেখো আবার হাতে ব্যাথা পেও না। বলে রিয়ান বেরিয়ে গেল।

মম গোসল সেরে বেরিয়ে এল। হাতটা অনেকটাই কেটেছে। নড়াচড়া করলেই ব্যাথা করছে। একটু পর রিয়ান এসে ঢুকল রুমে। হাতে ব্যান্ডেজ আর ওষুধ। মমর পাশে এসে ওর হাতটা টেনে ধরে বলল, খুব ব্যাথা করছে, না? ওষুধ খুলে লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে বলল, এবার ব্যাথা কমে যাবে। মম ওর মুখ দুহাত দিয়ে ধরে বলল, তোমার মুখও তো কেটে গেছে৷ দেখি। ও ওষুধটা হাতে নিয়ে রিয়ানের গালে লাগিয়ে দিয়ে বলল, ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ আনোনি। এখন কি দেবো কাটা জায়গায়? রিয়ান হঠাৎ ওর কোলে শুয়ে বলল, কিছু লাগবে না। মম? মম ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, হুম?
– আজকে থেকে আর লুকাতে হবে না।
মম হুম বলে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। রিয়ান ওর দিকে কিছুক্ষণ পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থেকে ওকে কাছে টেনে নিল।

মম ঘুম থেকে উঠে আড়মোড়া ভাঙল। পাশে রিয়ান গভীর ঘুমে রয়েছে। মম হেসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে কপালে একটা চুমু এঁকে দিল। তারপর ফ্রেশ হতে চলে গেল। বেরিয়ে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা মুছতে লাগল। আজকের দিনটাই অন্য রকম সুন্দর লাগছে। যেন নতুন করে দেখছে সবকিছু। এতদিনের মাথার ভার এক রাতেই নেমে গেছে। বিয়েটার মধ্যে দিয়ে ওর জীবনটা আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। অতীতের পোড়া স্মৃতি ভুলে গেছে। এখন কেবল ওর জগত জুড়ে রিয়ানের আনাগোনা। টাওয়াল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে মুচকি হাসল ও। রিয়ান পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, খুব হাসি হচ্ছে মহারাণীর?
– মহারাজার ঘুম ভেঙেছে তাহলে?

রিয়ান ওর কাঁধে মাথা রেখে বলল, উহু, আরো ঘুমাতে চাই। মম মাথায় হালকা বাড়ি মেরে বলল, সকাল সাড়ে আটটা বাজে। এখনো ঘুমাবেন উনি। যাও ফ্রেশ হও। নাস্তা করতে যেতে হবে না? রিয়ান ওকে ছেড়ে নড়ছেই না৷ ওর কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ জিজ্ঞেস করল, তোমার হাতের কি অবস্থা? মম চোখের সামনে ধরে বলল, ভালোই। ব্যাথা কমেছে। তোমার গাল?
– খুব ব্যাথা।
– তাই নাকি? দেখি দেখি।
মম ওর দিকে ফিরল। রিয়ান ওকে বাহুতে আবদ্ধ করে বলল, একটা কিস দিয়ে দাও গালে ব্যাথা কমে যাবে। মম ওকে ঠেলে সরিয়ে বলল, ধ্যাত। যাও তো। মম জোর করে ওকে ওয়াশরুম পাঠিয়ে দিল।

মম সব গোজগাছ শুরু করে দিল। বিকাল পাঁচটায় লঞ্চ। দুপুরের খাবার খেয়ে তৈরী হয়ে যেতে হবে ফেরত যাওয়ার জন্য। রিয়ান ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দরজায় নক পড়ল। ও গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে বলল, এনেছো? মিনহাজ নাস্তার প্লেট দিয়ে বলল, কেমন আছিস তোরা?
– ভালো।
– ভালো হলেই ভালো। আমি চাচাকে সব জানিয়েছি। রাসেল এতটা ইরোগেন্ট হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।
– ঐ বাস্টার্ডের নাম শুনতে চাই না মিনু ভাই।
– ওকে। তোরা রেস্ট কর। আমি যাই।

মম চিত্তে পর্ব ২৩

মিনহাজ বিদায় নিয়ে চলে গেল। রিয়ান নাস্তার প্লেট এনে মমর সামনে বসল। মম হাত দিতে লাগলে রিয়ান ওর হাতে হালকা চাপড় মেরে বলল, তোমার না হাতে ব্যাথা? জামাই খাইয়ে দিতে চাইছে পছন্দ হচ্ছে না? মম ওকে দেখে হাসল। রিয়ান খাবার মুখের সামনে ধরতেই মম বড় হা করে খেয়ে নিল। ওকে খাইয়ে দিতে দিতে বলল, আমার বউ এত বড় হা করতে পারে জানতাম না তো! মম মিথ্যে রাগ করে বলল, তাহলে আর খাবোই না।
– না খেলে কিন্তু শাস্তি আছে।
মম জিজ্ঞেস করল, কি শাস্তি? রিয়ান ওর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে কিছু বলল। তাতেই ও লজ্জাবতী লতার মতো লজ্জায় গুটিয়ে গেল।

মম চিত্তে পর্ব ২৫