বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ২০

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ২০
ইলমা বেহরোজ

মিরিক থেকে ফেরা হয় সন্ধ্যায়।ডিনার শেষে যে যার মতো ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমে ডুবে।পরদিন ইসলামিয়া রেস্টুরেন্টে নাস্তা করার সময় সায়ন বললো,
—–“তো ফেরা যাক।শুক্রবার তো এসেই গেলো।আর হোটেলো তো ছেড়ে দিতে হবে আজই?”
বিভোর খেতে খেতে বললো,
—–“সিকিম দেখা বাকি।আজ জার্নি করে সিকিম যাবো।কাল সিকিম ঘুরে রবিবার সকালে দেশে ফিরবো।”
সায়ন খাওয়া রেখে বললো,
—–“তোর অফিস?”
—–“একটু সমস্যা হবে।ব্যাপার না।”

উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আরেক লীলাভ সিকিম।তাই বাক্স-পেটরা নিয়ে সকাল নয়টায় হোটেল ছেড়ে দেয়।চকবাজার জিপস্ট্যান্ডে আসে।সেখান থেকে দার্জিলিং টু গ্যাংটকের শেয়ার জিপের টিকেট কাটে।ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ রুপি।গ্যাংটক হলো সিকিমের রাজধানী।সিকিম ভারতের একমাত্র অর্গানিক রাজ্য।এখানে কৃষিজমিতে অজৈব কোনো সার ব্যবহার করা যায় না।আর এই নির্দেশ অমান্যে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।দুপুর ঠিক ১২টায় যাত্রা শুরু হলো।দুপুর সাড়ে তিনটায় রাংপোতে জিপ থামিয়ে পাসপোর্ট, ভিসার ফটোকপি আর এককপি ছবি দিয়ে ফরেইন রেজিস্ট্রেশন অফিস থেকে রেস্ট্রিকটেড এরিয়া পারমিট (আরএপি)নেয়। ভারতীয় নাগরিক ছাড়া সবাইকেই সিকিমে প্রবেশের সময় এই পারমিট নিতে হয়।বিকেল পাঁচ টায় গ্যাংটকের জিপস্ট্যান্ডে পৌঁছায়।জিপস্টান্ড থেকে রিজার্ভ ট্যাক্সিতে ১০০ রুপিতে গ্যাংটক মার্কেটে আসে।বিভোর বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—-“এটা সিকিমের ট্যুরিস্ট হাব।”
ওরা ওখানেই একটি হোটেলে রুম নেয়।নাম হোটেল মেরিগোল্ড।ভাড়া দিনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ রুপি। পাশেই সিকিম পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।হোটেল থেকে মিনিট পাঁচেকের পথ হলো লাল বাজার।বিভোর ট্যুরিস্ট কোম্পানির লোকদের বললো,
—–“আগামীকাল সকালে আমরা পূর্ব সিকিমের সাঙ্গু লেকে যাব।”
একজন বললো,
—–“আপনাদের তিন কপি করে পাসপোর্ট আর ভিসার ফটোকপি আর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি দিতে হবে।”
ওরা কথামতো সব দেয়।তখন তাঁরা বললো,
—–“কাল সকাল ৮টায় এখানে উপস্থিত থাকবেন।”

ওরা সেই অনুযায়ী হোটেলে গিয়ে লম্বা একটা ঘুম দেয়।পরদিন সকাল সাতটায় নাস্তা করে ট্যুরিস্ট কোম্পানিতে আসে।সাঙ্গু লেকের ভ্রমণ খরচ ধরা হয়েছে ৩,৫০০ রুপি।সেটাও পেমেন্ট করা হয়। কিছুক্ষণ পর টয়োটার একটা ১০ সিটের লাক্সারি মাইক্রোবাস এলো।ওরা উঠে বসে।ড্রাইভার একজন নেপালি।
দার্জিলিং শহরের উচ্চতা প্রায় ৭ হাজার ফুট হলেও গ্যাংটকের যে পাহাড়গুলো বেয়ে এখন ওরা উঠছে সেগুলোর উচ্চতা প্রায় ১০ হাজার ফুট।আর তাঁদের গন্তব্য সাঙ্গু লেকের উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৩১৩ ফুট উঁচুতে।যথারীতি পাহাড়ের খোলা পাশটাতে এখানেও কোনো রেলিং নেই।এমন পরিস্থিতিতে ভয় না পাওয়াটাই অস্বাভাবিক।দিশারি সায়নের শার্ট খামচে ধরে চোখ বুজে রেখেছে।ধারা ব্যাপারটা উপভোগ করছে।নিচের দিকে তাকালে গ্যাংটক শহরের ৫-৬ তলা বাড়িগুলোকে চিনির দানার মতো ছোট দেখা যায়।আর ঘন সাদা মেঘগুলো বর্তমান উচ্চতা থেকে কম করে হলেও ২০০ ফুট নিচে মনে হচ্ছে ধারার।সর্পিলাকার পথ ধরে যে পাহাড়গুলো বেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে উঠা হবে সেই পাহাড়গুলোতে ধারা দেখতে পায় ঘন কুয়াশা।সেখানে অনেক ঠাণ্ডা বুঝাই যাচ্ছে।তবুও জিজ্ঞাসা করলো ধারা,

—–“সিকিম কি খুব ঠান্ডা?”
বিভোর বললো,
—–“হুম।”
জিপ আরো প্রায় মিনিট ১০ পরে কয়েকটি দোকানের সামনে থামলো।ওরা দোকানে ঢুকে ডিম দিয়ে ম্যাগি নুডুলস খেলো সঙ্গে কফি।এই দোকানগুলোতে সাঙ্গু লেকে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গরম কাপড় ভাড়া দিয়ে থাকে। একটি হুডি জ্যাকেট, এক জোড়া গামবুট আর হ্যান্ড গ্লাবস ভাড়া পড়ল ২৫০ রুপি।এগুলো পরিধান করে আবার জিপে চেপে যাত্রা শুরু হয়।
বেশিক্ষণ লাগেনি।১৫ মিনিট পরই ওরা পৌঁছলো সাঙ্গু লেকে।অসম্ভব সুন্দর একটি জায়গা।লেকের পানির প্রায় ৮০ ভাগই বরফ হয়ে আছে আর লেকটাকে চারদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে বরফের পাহাড়।এই লেকটা ভারত-চীন সীমানায় পড়েছে।ধারা দু’গালে হাত রেখে বলে,

——“ওয়াও।কত বরফ।”
বিভোর হেসে বললো,
——“তুমি মুগ্ধতা প্রকাশ করতে পছন্দ করো।”
——“আপনার মতো চেপে রাখিনা।”
বিভোর হালকা হেসে আড়চোখে তাকায়।ধারা হেসে অন্যদিকে হাঁটে চারপাশ দেখতে দেখতে।হুডি জ্যাকেট ধারাকে মোটা পুতুল মনে হচ্ছে।ধারা পাহাড়গুলোর উপরে রোপওয়ে দেখতে পায়।পাহাড়গুলোর উপর দিয়ে চলাচল করছে।যেহেতু দার্জিলিংয়ে রোপওতে উঠা হয়েছে তাই আর ইচ্ছে হলোনা উঠতে।দিশারি বরফ হাতে নিয়ে সায়নের দিকে ছুঁড়ে মারছে।সায়ন অনেক মানা করছে তবুও দিশারি তাই করছে।বরফে পুরো মুখ ঠান্ডা হয়ে গেছে সায়নের।সায়ন দৌড়ে এসে দিশারিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,

——“আর দিবিনা।উফ!মুখ ঠান্ডা বরফ হয়ে গেছে তোর জন্য।মুখের জন্য কেন যে শীতের কাপড় নাই।”
——“এমনে ধরছস কেন।ছাড়,
——“আগে বল আর ছুঁড়াছুঁড়ি করবিনা।”
——“আচ্ছা ছাড়,
সায়ন ছেড়ে দেয়।সাথে সাথে দিশারি বড় বরফের টুকরা সায়নের মুখে ছুঁড়ে দিয়ে দৌড়ায়।সায়ন পেছনে ধাওয়া করে।দিশারি দৌড়ে এসে বিভোরের পিছনে লুকোয়।বিভোর চেঁচাতে থাকে,
——“এই ছুঁবিনা।একদম ছুঁবিনা।সর,সর,ছাড়….
দিশারি কিছুতেই ছাড়ছেনা।সায়ন আর দিশারি বিভোরকে ঘিরে দৌড়াতে থাকে।ধারা দূর থেকে দেখে হাসছে।দিশারি বিভোরকে ছেড়ে অন্যদিকে দৌড়ায়।সায়ন খপ করে ধরে ফেলে।দিশারি চোখ খিঁচে বলে,
——“মারবিনা,চুমুও দিবিনা প্লীজ প্লীজ,
সায়ন হেসে ফেলে।দিশারিকে ছেড়ে দেয়।দিশারি চোখ খুলে বললো,

——“গুড বয়।”
সায়ন সেসব পাত্তা না দিয়ে বললো,
——“আম্মা বিয়ের চাপ দিচ্ছে।”
——“কিসের মাঝে কি কথা।তো বিয়া কইরা ফেল।”
——“তুই রাজি হ।”
দিশারি সচকিত হয়।বললো,
——“আমি রাজি হমু কেন?”
——“কারণ বিয়ে তোকে করবো।”
দিশারি এবার চমকায়।সায়নের মতো ছেলে বিয়ের প্রস্তাব দিবে ভাবেনি।এমনকি দিশারি এখনো ভাবছে,সায়ন নিজের ভুলের জন্য বলছে সে দিশারিকে ভালবাসে।আদৌ বাসেনা।কিন্তু বিয়ের প্রস্তাবটা অন্য মোড় নিচ্ছে।দিশারি গাঢ় স্বরে বললো,

——“তুই গাঞ্জা খাইছোস?”
——“গাঞ্জা কেন খামু।তোর বয়স তো কম হয় নাই।বিয়ে করবিনা?আমারো বিয়ে করা উচিৎ।তো তুই আর আমি বিয়া করমু।”
——“এমন ভাবে কইতাছোস যেনো আমি তোর সম্পদ।”
——“বিয়া করবি?পরের মাসেই করমু।শীত কাল আছে।ডিসেম্বর মাস।মজা হবে।”
দিশারি চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে।
——“ফাও কথা না কইলে তোর ভাল্লাগেনা?”
——“না।ক বিয়ে করবি?”
দিশারি সায়নের চোখের দিকে তাকায়।দিশারিও পরিবার থেকে চাপ পায় ইদানিং বিয়ের জন্য।আর সায়নের প্রতি একটা টান তাঁর আছে।সেটা বন্ধুত্বের না।অন্যকিছু।তবে কি ভালবাসা?কে জানে।দিশারি চলে যেতে চাইলে সায়ন আটকায়।দিশারি রেগে বলে,
——“ঘুরতে এসে কি শুরু করছোস?”
——“আগে ক বিয়া করবি আমারে?”
——“জানিনা।”
——“হ্যাঁ বা না একটা বল।”
দিশারি না করতে গিয়েও পারছেনা।আটকে যাচ্ছে গলায়।হ্যাঁ বলতেও পারছেনা।আমতাআমতা করে বললো,

——“সা…সায়ন প্লীজ জ্বালাস না।”
——“বিয়ে করবি?”
——“ওই দেখ কত সুন্দর মেয়েটা।যা পটা।”
সায়ন ওদিকে না তাকিয়েই বললো,
——“তুই বল বিয়ে করবি?”
——“সায়ন চেতাইস না আমারে।”
——“বিয়ে করবি?”
——“যাবি?”
——“বিয়ে করবি?’
—–“করুম হইছে?”
সায়ন হাসলো।দিশারি হতবিহ্বল হয়ে যায়।মনের কথাটা মুখে চলেই আসলো।সায়ন হাত বাড়িয়ে বললো,
——“একবার প্রেমিকা হয়ে জড়িয়ে ধরবি?পরের বার বউ হয়েই ধরিস।”
দিশারি এদিক-ওদিক তাকায়।চেনা মুখের সামনেও কেমন অপ্রস্তুত হয়ে পড়ছে সে।ইতস্তত করে পা বাড়ায়।সায়ন তাড়া দেয়,

——‘বিলাই হয়ে গেছিস কেন।দৌড়ে আয়,
দিশারি ঝাঁপিয়ে জড়িয়ে ধরে।সায়ন শক্ত করে ধরে চোখ বুজে।বুকে কত শান্তি লাগছে।মেয়েটা এতো কাছে ছিল।আর সে এত মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছে।কারোর কাছেই মনের শান্তি পেতোনা।যার কাছে শান্তি ছিল তাকে চিনতেই দেরি হয়ে গেলো।দিশারির হৃদপিণ্ড কাঁপছে।জড়িয়ে ধরার পূর্বে তাঁর মন বলেনি সে এই অসভ্য ইতর ছেলেটাকে ভালবাসে।জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে সর্বাঙ্গে বৈদ্যুতিক কিছু যেন দৌড়ালো।এই উষ্ণতা বড্ড আপন।দিশারি ঘোর লাগা গলায় বললো,

——“অসভ্য,অপছন্দের মানুষটার বুকটায় এতো প্রশান্তি কেনো।”
সায়ন হেসে আরো জোরে চেপে ধরে বললো,
—–“ভালবাসিস বলিস নি কেনো?”
—–“বলেছিলাম তো কলেজে।তখন তো তোর আমাকে পছন্দ হয়নি।”
—–“কলেজে তো তোর কতজনকেই ভালো লাগতো।”
——“প্রপোজ তো তোকে করেছিলাম।”
——“আচ্ছা সরি।”
দিশারি মুখ তুলে বললো,
——“বিয়ের পর তুইই বলা হবে?”
——“উহু তুমি।”
দিশারি হেসে আবার জড়িয়ে ধরে।দূর থেকে বিভোর-ধারা দেখছে।ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অনেক পর্যটক আছে।কিন্তু কেউ তাকাচ্ছেনা।এসব তাঁদের কাছে স্বাভাবিক।ধারা বললো,
——-“প্রেমটা হয়েই গেলো ওদের।”
——-“হুম।”

ধারা বিভোরের দিকে তাকায়।বিভোর দূরে তাকিয়ে আছে।তবে বুঝতে পারছে ধারা তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে।ধারা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।মানুষটা কবে প্রপোজ করবে?আর সে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়বে।শক্ত করে একজন আরেকজনকে আলিঙ্গন করে দাঁড়িয়ে থাকবে অনেক্ষণ।মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তুষারপাত (স্নোফল)শুরু হলো।তার মানে এখানে কিছুক্ষণ পরপরই স্নোফল হয়।
ধারা চোখ মেলে দেখতে থাকে।সেকি দৃশ্য! বাস্তবে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।যেদিকে চোখ যায় শুধু বরফ আর বরফ।এই বরফ দিয়ে কেউ পেঙ্গুইন বানাচ্ছে,ঢালু জায়গা থেকে নিচের দিকে পিছল খাচ্ছে আবার কেউ-বা তার প্রিয়জনকে বরফ দিয়ে ঢিল ছুড়ছে।সত্যিই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।এখানে যে কেউ সামান্য অর্থের বিনিময়ে ইয়াকের পিঠে উঠে ঘুরতে পারে। ধীরে ধীরে ওরা লেকের কাছে আসে। লেকটার সর্বোচ্চ গভীরতা ৪৯ ফুট বা ১৫ মিটার আর আয়তন ৬০.৫ একর। লেকের পানির বেশির ভাগ অংশ বরফ হয়ে যাওয়ায় লেকের ভেতর অনেকটা হেঁটে যাওয়া যায়।ওরা হেঁটে অনেক দূর চলে আসে।ধারার শ্বাস নিতে সমস্যা শুরু হয়।
ঘণ্টাখানেক ঘোরাফেরা করার পর তুষারপাত সহ্যের বাইরে চলে গেল।প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ধারার শরীর স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাতে শুরু করলো।নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো।দিশারি,সায়ন আগেই গাড়িতে চলে গেছে।ধারা জেদ ধরে এতোটা এসেছে।আবার বিভোরকে বলছেও না তাঁর কষ্ট হচ্ছে।একসময় শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে।ধারা পড়ে যেতে নিলে বিভোর ধরে।

—–“ধারা কি হইছে তোমার?”
ধারার চোখ পিটপিট করে খোলা।মুখ,ঠোঁট একদম ঠান্ডা।ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে।বিভোর দ্রুত কোলে তুলে নেয়।ধারার শরীর অসাড় হয়ে আসে।জ্ঞান হারায়নি।তবে দ্রুত হারাবে।জ্ঞান হারালে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে।ঠোঁট কাঁপতে কাঁপতে নিস্তেজের পথে।উষ্ণতা দরকার।বিভোর কিছু না ভেবে ধারার ঠোঁটে ঠোঁট বসায়।নিজের গরম নিঃশ্বাস দ্রুত ছড়াতে থাকে ধারার ঠোঁটের আশে-পাশে।সেই অবস্থায় দৌড়াতে থাকে গাড়ির দিকে।ধারার মস্তিষ্ক টের পায় বিপরীত লিঙ্গের অধর।নিস্তেজ শরীরের ভেতরের অস্তিত্ব কেঁপে উঠে।সে এক হাতে বিভোরের জ্যাকেট ধরতে চেয়েছিল।কিন্তু পারলোনা।পর্যটকরা মুগ্ধ হয়ে দেখছে।প্রায় সবাই ভিনদেশী।তিন-চার জন হাতের তালিও দিচ্ছে।কিছু সংখ্যক ভিডিও করছে।যারা ভিডিও করছে এরা নিশ্চিত বাঙ্গালি!
গাড়িতে ফিরে বিভোর নিজের জ্যাকেট খুলে ধারাকে পরিয়ে দেয়।হুডি জ্যাকেটের উপর আরেক হুডি জ্যাকেট!তারপর ধারার পাশে বসে ধারার মুখ বুকের সাথে চেপে ধরে।বিভোরের শার্টের তিনটা বোতাম খোলা ছিল বিধার পশমে সুড়সুড়ি লাগে ধারার মুখে।তবে উষ্ণতায় মুখসহ সর্বাঙ্গের ঠান্ডা কেটে যাচ্ছে।বিভোর ড্রাইভারকে বললো,

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৯

——“হোটেলে চলুন।এখানে আর নয়।”
আসার সময় যে গতিতে ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিল এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ রাস্তায় বরফের স্তর জমে পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছে।মিনিট বিশিকের মধ্যে ধারা স্বাভাবিক হয়।তবে নড়লোনা।বিভোর বুক থেকে সরিয়ে দিতে পারে।পুরোটা জার্নি সে বিভোরের নগ্ন বুকে থাকতে চায়।পরম আবেশে চোখ বুজে ভাবে,
——“কি হয়ে গেল!”

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ২১