বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ২৯

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ২৯
ইলমা বেহরোজ

বুকে এ কি তোলপাড়।মাঝে কি এক অদৃশ্য দেয়াল?
বিভোর কয়েক সেকেন্ড যাবৎ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
ধারা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল গোপনে।বিভোর আর আগাবে না সে জানে।বিভোর ছটফটানি হৃদয় নিয়ে বেরিয়ে যায়।ধারা শরীরের ভর ছেড়ে বিছানায় বসে।বুঝেনা সে বিভোরের কিসের এতো সংকোচ।সম্পর্কটা তো
হালাল।সে হালাল।তাঁর জন্য বিভোর হালাল।তবুও?ধারা চুল খোঁপা করে হাতে পায়ে লোশন মাখে আনমনা হয়ে।এমনটা কি হতে পারেনা?বিভোর ফিরে আসবে তাঁর কাছে এখুনি!একটু ভালবাসা বিনিময় হলে কি সে অপবিত্র হয়ে যাবে?ধারা অভিমানি কন্ঠে বিড়বিড় করে,

— “ছোঁয়াচে রোগীদের সাথেও বোধহয় এমন হয়না।”
বিভোর রুমে এসে পায়চারি করছে।মাথার ভেতর ভনভন করছে হাজারটা প্রশ্ন।বিয়ে হয়েছে।দুজন স্বামী-স্ত্রী।সম্পর্কটা আরো কয়েক পা এগিয়ে নেওয়াটা কি খুব ভুল হবে?পরিবার তো জানেনা।পরিবারকে জানিয়ে কি সম্পর্ক আগায়?তাঁরা তাঁদের মতো বিয়ে দিয়ে দিল।সম্পর্কটা কতটুকু পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হবে বা আগাবে এটা তো দু’টি মনের ব্যাপার তাইনা?বিভোর পা বাড়ায় ধারার কাছে যাওয়ার জন্য।আবার পিছিয়ে যায় সেদিন সে বড় মুখ করে বলেছিল,পরিবারকে না মানিয়ে দুজন দাম্পত্যজীবন শুরু করবেনা।এখন পা বাড়ালে কথা দু’রকম হয়ে যাবেনা?বিভোর মাথা চেপে বসে পড়ে।প্রেমিকা হলে মনকে মানানো যেতো বিয়ে হয়নি।কিন্তু ধারা যে বউ।তিনবার কবুল বলে নিজের করা বউ।চিন্তায় বিভোরের কপালের রগ ভেসে উঠে।কাঠ হয়ে দাঁড়ায়।দ্রুত পায়ে হেঁটে আসে বেডরুমে।ধারা নত হয়ে গুমোট মুখ করে বসে আছে।বিভোর কন্ঠে শিহরণ নিয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—- “না করেছিলাম,ভেজা চুল খোঁপা করতে।”
বিভোরের কন্ঠ স্বর নিঃশব্দ মৃদু আলোর রুমটায় বার বার প্রতিধ্বনিত হতে থাকে।ধারা চোখ তুলে তাকায়।বিভোর এগিয়ে এসে ধারার চুলের খোঁপা খুলে দেয়।মুহূর্তে ধারার হৃদপিণ্ডে অনুভূতির হামলা শুরু হয়।বিভোরের ছোঁয়া, কন্ঠ অন্যরকম ঠেকছে।সত্যি ফিরে এসেছে!ধারার লজ্জায় পালাতে ইচ্ছে করছে।ধারা উঠে চলে যেতে নেয়।বিভোর আটকায়
ধারা কোনোমতে বললো,
—- “ঘুমাবো না?”
বিভোর পিছন থেকে ধারার কোমর দু’হাতে পেঁচিয়ে ধরে।ধারার ঘাড়ে চিবুক রেখে বললো,
—- “এক রাত নির্ঘুম কাটালে কিছু হবেনা।”
ধারার রগে রগে উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে।হালকা কেঁপে বললো,

—- “কি হয়েছে তোমার?”
বিভোর কিছু না বলে ধারাকে কোলে তুলে নেয়।এরপর বললো,
—- “আজ বরং আমি বৃষ্টি হয়ে নামি।”
ধারা মৃদু হেসে চোখ নামিয়ে বললো,
—- “বৃষ্টিতে ভিজলে আমার জ্বর হয়।”
বিভোর ধারার নাকে নাক ঘষে বললো,
—- “সব বৃষ্টি একরকম হয় না।”

কাচের জানালা ভেদ করে এক টুকরো মিষ্টি রোদ ঝপাৎ করে ধারার মুখে পড়ে।ধারা আড়মোড়া ভেঙে চোখ খুলে।রোদের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসে।তখন অনুভব হয় কেউ একজন আষ্ঠেপৃষ্ঠে শরীরের সাথে মিশে আছে।ধারা হতচকিত হয়ে ঘাড় ঘুরে তাকায়।বিভোর!এক সেকেন্ড সময় নিয়ে মনে পড়ে রাতের কথা।সর্বাঙ্গে তীক্ষ্ণ শীতল স্রোত বয়ে যায়।বিভোর তখন নড়ে উঠে।ধারা লজ্জায় দ্রুত চোখ বুজে।বিভোর চোখ খুলে ধারার ঘুমন্ত মুখ দেখতে পায়।ধারার গালে, কপালে চুমু দিয়ে সময় দেখে।বারোটা বিশ বাজে।অফিস ভেস্তে গেলো!গোসল সেরে রান্নাঘরে ঢুকে বিভোর।গতকাল দুপুরে ধারা এত রেঁধেছে যে এখনো রয়েছে অনেক।খাবার গরম করা শেষে রুমের সামনে এসে দেখে দরজা লাগানো।

—- “ধারা?”
ওপাশ থেকে সাড়া নেই।গোসলে গিয়েছে বোধহয়।কিছুক্ষণ পর আবার এসে ডাকে।সাড়া নেই।বিভোর ভ্রু কুঁচকে আবার ডাকলো,
—- “এই ধারা?কথা বলো।”
ওপাশ থেকে ধারা বললো,
—- “খুলতে পারবনা।”
—- “কেনো?”
—- “জানিনা।”
বিভোর চোখ ছোট করে কি ভাবে।পরে হাসে।বললো,
—- “লজ্জা পাচ্ছো?”
সাড়া নেই।বিভোর আবার বললো,
—- “খেয়ে নাও।পরে সারাদিন দরজা বন্ধ করে বসে থাকো।”
নিশ্চুপ।
—- “এই ধারা।খেয়ে নাও প্লীজ।অনেক বেলা হয়েছে তো।গোসল করছো?”
—- “হু।”
—- “আচ্ছা এবার খেয়ে নাও।খাবার আনছি আমি।দরজা খুলো।”

বিভোর আবার রান্নাঘরে ঢুকে।ধারা ‘দ’ স্টাইলের মতো বসে আছে বিছানায়।লজ্জায় হাত,পা কাঁপছে।বার বার রাতের কথা মনে পড়ছে।কি করে বিভোরের সামনে দাঁড়াবে।চোখ খিঁচে বিড়বিড় করে,
—- “মরেই যাবো ওর চোখের দিকে তাকালে।রক্ষা করো খোদা।”
বিভোর খাবার নিয়ে এসে দেখে দরজা লাগানো।সে টেবিলে খাবার বেড়ে কোমরে এক হাত রেখে কিছুক্ষণ হাসে।ধারা জেদি,একরোখা।এক কথায় বের হবেনা।দরজাও খুলবেনা।বিভোর বললো,
—- “আমি বের হচ্ছি ধারা।তুমি খেয়ে নিও।”

বিভোর দরজায় আওয়াজ করে যাতে ধারা বুঝে সে বেরিয়ে গেছে।এরপর পা টিপে অন্য রুমে এসে চুপটি মেরে বসে থাকে।মিনিট দশেক পর বেডরুমের
দরজা খোলার আওয়াজ পায়।ধারা উঁকি দিয়ে দেখে সত্যি বিভোর গেছে নাকি।না নেই।ধারা টেবিলে এসে বসে।তখনি বিভোর বেরিয়ে আসে।
ধারা অবাক হয়।তাকে বোকা বানানো হয়েছে!খাবার ছেড়ে পালাতে নেয় বিভোর পথ আটকায়।ভ্রু উঁচিয়ে আদেশ করলো,
—- “বসো।”
ধারা ঢোক গিলে কাচুমাচু হয়ে বসে।বিভোর পাশের চেয়ারে বসতে বসতে বললো,

—- “দুপুর একটা বাজে।তাই স্ন্যাকস করিনি।গতকালের খাবার বেঁচে ছিল।গরম করেছি।দাও প্লেটটা দাও।এবার হা করো।”
ধারা চোখ নিচে নামিয়েই হা করে।বিভোর হাসলো।
কিছু বলতে গিয়েও বললোনা।এতদিন কাছে আসার জন্য তর্ক করা মেয়েটা আজ একদম গুটিয়ে যাচ্ছে লজ্জায়।জেদি,একরোখা মেয়েরা মুখে বকরবকর করতে পারলেও পরিস্থিতিতে লজ্জায় নুইয়ে যায়।ব্যাপারটা দারুণ।খাওয়া শেষ করে বিভোর বললো,
—- “নতুন প্রেমে পড়লেও মানুষ এতো লজ্জা পায়না।”
ধারা কিছু বললোনা।নখ খোঁচাচ্ছে।বিভোর খালি গায়ে এখনো।বেডরুমের দিকে পা বাড়ায় শার্ট আনার জন্য।তখন ধারার চোখ পড়ে বিভোরের পিঠে।ফর্সা পিঠে কয়েকটা খামচির দাগ।ধারা তাৎক্ষণিক নিজের নখের দিকে তাকায়।কত বড় বড়।কেটে ফেলতে হবে।বিভোর শার্ট পরে আসে।ধারার কপালে চুমু এঁকে বললো,

—- “শাড়িতে কি দারুণ লাগে তোমাকে জানো?এখন থেকে শাড়ি পরবে।”
ধারা মাথা নাড়ায়।বিভোর ধারাকে নিয়ে বারান্দায় আসে।দোলনায় বসে ধারাকে বুকে জড়িয়ে নেয়।দোলনা মৃদু দুলছে।বিভোর ধারার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
—- “আগামীকাল ছুটি নিবো অফিস থেকে।ট্রেকিং এ বের হতে হবে।”
ধারা মুখ তুলে বিভোরের দিকে তাকিয়ে বললো,
—- “কোথায় ট্রেকিং হবে?”
—- “কুমার পর্বত।”
—- “প্রথম শুনলাম।”
—- “কর্ণাটকের মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ হচ্ছে কুমার পর্বত।এখানে ট্রেকিং করাটা সবচেয়ে কঠিন।যেহেতু সময় কম এখানে ট্রেকিং করাটাই সুবিধা।তবে আরেকটা ব্যাপারও ভাবছি।”

—- “কি?”
—- “তোমার তো ট্রেকিং করা হয়নি কখনো।বান্দরবনের কেওক্রাডং আর বগালেক ট্রেকিং করে তারপর কুমার পর্বত যাওয়া যায়।”
—- “এটাই ভালো।এর আগেও দু বার আমি কেওক্রাডং আর বগালেক গিয়েছি।খুব সুন্দর।তবে দার্জিলিংয়ের কাছে কিছুনা।কিন্তু তোমার তো বেশি ছুটি লাগবে।দিবে অফিসে?”
—- “জানিনা।দরকার পড়লে অফিস ছেড়ে দেব।এমনিতেই সামনে অনেকগুলো দিন অফিসে যেতে পারবনা।অফিসের কতৃপক্ষের সাথে কথা বলবো আমার লক্ষ্য নিয়ে।তারপরও যদি রাখতে চায়।তো রাখলো।নয়তো বাদ।”
ধারা কিছু বললোনা।বিভোর বললো,
—- “ট্রেকিং বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ও দুঃসাহসী অভিযান।তাই ট্রেকিংয়ের পোশাক হতে হয় আরামদায়ক ও টেকসই।আবার পাহাড়ি রাস্তায় জুতা পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।তাই জুতা বা স্যান্ডেল বাছাইয়ের সময় যেসব জুতা পিছলে যাবে না, সেগুলো নিতে হয়।”

—- “তারপর?”
—- “খাবারদাবার, তাঁবু, ম্যাপ, প্রাথমিক চিকিৎসার সামগ্রী, প্রয়োজনীয় প্রসাধন সামগ্রীসহ নানা কিছুই সঙ্গে নিতে হয়।আর এই সবকিছু বহন করার জন্য দরকার ট্রেকিংয়ে উপযুক্ত ব্যাক-প্যাক।”
—- “এতোসব নিতে হলে বড় ব্যাগ লাগবে।আর বড় ব্যাগ নিয়ে সারাদিন কেমনে হাঁটা সম্ভব?”
—- “সব ব্যাকপ্যাকই ট্রেকিং এর জন্য উপযুক্ত নয় ধারা।অনেক ব্যাগ আছে যাতে অল্প জিনিস নিলেও ওজনে ভারি হয়ে যায় ব্যাগের ডিজাইনের কারণে।এতে কষ্ট হয়।যেসব ব্যাগে বুকে এবং কোমরের বন্ধনী থাকে সেসব ব্যাগে অনেক জিনিস নিলেও শরীরের উপর চাপ কম পড়ে।এমন ব্যাগ আমার আছে।তোমার জন্য একটা কিনতে হবে।”
—- “ও।তারপর?”
—- ” তাঁবু আছে আমার।তোমার কিনতে হবেনা।একটার মধ্যেই দুজন থাকবো।আর ডাবল স্লিপিং ব্যাগ কিনে ফেলবো।যেহেতু একসাথে ঘুমাবো।আপাতত তোমার জন্য কিনতে হবে, হালকা স্পোর্টস টি-শার্ট,হালকা ও আরামদায়ক থ্রি-কোয়ার্টার স্পোর্টস প্যান্ট বা ট্রাউজার,জ্যাকেট,হালকা তোয়ালে,মোজা,হ্যাট, রোদচশমা।”

—- “ওমা এত কিছু।”
—- “আরো আছে।শুকনা খাবার যেমন—চিড়া, মুড়ি গুড়, স্যালাইন, গ্লুকোজ, চকলেট, বিস্কুট, নুডলস, স্যুপ, খেজুর নিতে হবে।পরিবহনযোগ্য স্টোভ,রান্নার সামগ্রী।যদি রান্না করার পরিকল্পনা থাকে।আর আমি ট্রেকিংয়ে রান্না করি।সো নিচ্ছি।টয়লেট্রিজ যেমন—ব্রাশ, পেস্ট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু, ট্রেকিং স্টিক,মশার হাত কয়েল,দেশলাই বা লাইটার। এতটুকুই?”
ধারা বিভোরের কাছ থেকে সরে গিয়ে বললো,
—- “এটা এতটুকু?এতকিছু!”
—- “তোমার কয়টা জিনিষ নিলেই হবে।বাকিসব আমি নিবো।”
—- “এত কষ্ট করতে হবেনা।আমারটা আমিই নিবো।”
—- “আরে রান্নার সামগ্রী, দিয়াশলাই, বিস্কুট,নুডলস সহ আর কিছু আমি যতটুকু নেই ততটুকে দুজনের চলবে। ”
—- “আচ্ছা।আচ্ছা।কিনবা কখন?এসব কই পাওয়া যায়?”

—- “ট্রেকিং ব্যাগ-প্যাক,স্লিপিং ব্যাগ এগুলো সব মার্কেটে পাওয়া যায় না।বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের মোস্তফা মার্টে পাবো স্লিপিং ব্যাগ,স্পোর্টস টি-শার্ট ট্রাউজার, ট্রেকিং স্টিক,বহনযোগ্য স্টোভ, ব্যাগ-প্যাক,ট্রেকিংয়ের জুতা।আর পান্থপথে অ্যাডভেঞ্চার শপ ও আজিজ সুপার মার্কেটের কয়েকটি দোকানে ট্রেকিংয়ের প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়।বসুন্ধরা সিটি,নিউমার্কেট,গুলিস্তানের স্পোর্টস মার্কেট ও স্টেডিয়াম মার্কেটে স্পোর্টস টি-শার্ট, ট্রাউজার, মোজা, জুতা পাওয়া যায়।আমার জানামতে।”
—- “আচ্ছা তাহলে কালদিন পর মানে বুধবার বের হচ্ছি?”
—- “উহু।কাল রাতে বের হবো।এরপরদিন সকাল থেকে ট্রেকিং চলবে।”
—- “আচ্ছা।”
—- “কাল তো অফিস যাবো।আজ চলো ট্রেকিংয়ের জিনিষপত্র কিনে ফেলি।”
—- “হুম চলো।”
বিভোর উঠে দাঁড়ায়।ধারা আগে এগোয়।বিভোর আঁচলে টেনে ধরে আটকায়।ধারার চিৎকার করে,”ওয়াও পুরো মুভির মতো হলো।” বলে লাফানোর কথা ছিল।কিন্তু করলোনা।লজ্জায় কুঁকড়ে যায়।বিভোর ধারাকে জড়িয়ে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো,

—- “ত্রিশ মিনিট পর বের হবো।”
ধারা মাথা নত করে নরম গলায় বললো,
—- “তোমাকে অন্যরকম ভেবেছিলাম।”
—- “সারাক্ষন তো ফোনে বলতে, এই মুভির হিরোটা এত রোমান্টিক!ওই মুভির হিরোটা এত রোমান্টিক।আর এখন একটু ছুঁইলেই আমি অন্যরকম হা?”
ধারা ঠোঁট কামড়ে হেসে বিভোরের বুকে আলতো করে কিল দিয়ে জড়িয়ে ধরে।

রাত দুইটা ত্রিশ।বাস বান্দরবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে এগোরাটায়।বিভোর এবং ধারা এক চাদরের ভেতর।বিভোরের বুকে মাথা রেখে চোখ বুজে আছে ধারা।দার্জিলিং যাওয়ার পথে দুজন দু’সিটে ছিল।আর আজ কতটা কাছে।কিছুক্ষণ পর পর ধারা চোখ খুলছে।বিভোর নিচু স্বরে বললো,
—- “ঘুমাও।”
—- “এভাবে আর কতক্ষণ বুকের সাথে চেপে রাখবে।বিরক্তি লাগছেনা?”
বিভোর ধারার কপালে চুমু এঁকে বললো,

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ২৮

—- “মনে হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী মানুষটা আমি।”
ধারা মৃদু হাসলো।বিভোরের চোখের চাহনিতে এতো নেশা!ধারা জোরে নিঃশ্বাস নেয়।তারপর বিভোরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।বিভোরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
—- “তুমি একটা প্রেমের সমুদ্র গড়েছো নিজের অজান্তে।যে সমুদ্রের অতলে ডুবে চলেছি দিনকে দিন।গভীরতা কমেনা।যেন বেড়েই চলেছে।”
ধারার বুকে নাম না জানা অনুভূতির উত্তাল ঢেউ বয়ে যায়।আরো শক্ত করে খামচে ধরে বিভোরকে।ছেড়ে দিলেই যেন উড়ে যাবে এতো প্রেম,এতো ভালবাসা।

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ৩০