ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১২

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১২
লেখনিতে : মিমি মুসকান

আহিয়ান এর আগে আজ আমার ঘুম ভাঙে। ঘুম থেকে উঠে আহিয়ান এর মুখ দেখি। তাকে একদম বাচ্চাদের মতো না একটা বাচ্চাই লাগছে আমার কাছে। আমি কিছুক্ষণ তার মুখে’র পানে তাকিয়ে রই। অতঃপর বিছানা ছেড়ে উঠি। ভোরের আলো এখনো এসে পড়েনি অথচ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। সবসময় এই সময়’টাই ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস আমার। বেশি কিছু না ভেবে শাওয়ার নিতে চলে গেলাম। বাথরুমে শাড়ি পড়া আমার পক্ষে সম্ভব না তাই দরজা’র উঁকি দিয়ে দেখি উনি উঠেছেন কিনা। নাহ এখনো ঘুমাচ্ছেন তিনি। আমি আস্তে আস্তে করে আয়নার সামনে এসে দাড়িয়ে শাড়ি পড়তে শুরু করি। একটু পর পর তার দিকে তাকাচ্ছি।

উনি এখনো ঘুমাচ্ছে, যত তাড়াতাড়ি পারি শাড়ি টা পড়ে নেই। শাড়ি পড়া শেষ, এবার তোয়ালে নিয়ে চুল মুছতে থাকি। হঠাৎ করেই ভয়ে লাফিয়ে উঠি আমি। আসলে এলার্ম এর আওয়াজে ভয় পেয়ে যাই। সম্ভবত এলার্ম উনি সেট করে রেখেছেন। ভালোই হলো আমার জন্য এখন তাহলে বুঝতে পারবো উনি কখন ঘুম থেকে উঠে। এলার্ম এখনো বাজছে, আহিয়ান ঘুম ঘুম চোখে এলার্ম বন্ধ করে আমার দিকে তাকায়। চোখ ঢলতে ঢলতে আমার দিকে তাকিয়ে বলে “গুড মর্নিং”. আমি মাথা নাড়ি। উনি উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়। একটু অবাক লাগল এটা ভেবে উনার টাইমিং সেন্স এতো ভালো। আমি হলে এলার্ম বন্ধ করে আরো কিছুক্ষণ ঘুমাতাম।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

চুল মুছে বেলকনিতে এসে দাঁড়াই, সূর্য আরো কিছুক্ষণ পর উঁকি দেবে মনে হচ্ছে। দরজার আওয়াজ পেয়ে রুমে এসে দেখি উনি জুতা পরছে। আমার আসাতেই উনি আমার দিকে তাকায়। একটা কালো রঙের জ্যাকেট আর জিন্স পড়া। হয়তো জগিং করতে যাচ্ছে। জুতা পড়ে নিজেকে আয়নায় দেখে আমাকে বলে…
– এতো তাড়াতাড়ি উঠে পড়লে যে!
– আমার অভ্যাস আছে।
– ওহ্ আচ্ছা। আমি জগিং করতে যাচ্ছি।
– হুম।

উনি চলে গেলেন, আমি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে উনাকে দেখছি। উনি হালকা ভাবে দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন। উনার পিছু পিছু আরো দুজন যাচ্ছে। হয়তো গার্ড হবে। একবার ভাবলাম উনাকে আমার মামা মামী’র কথা বলবো কিন্তু পারলাম। আচ্ছা ঠিক কি বলতাম আমি। উনি তো আর আমার মামা মামী’র সম্বন্ধে কিছু জানে না। আমি কিছু বললে যদি ভাবে আমি তাদের বদনাম করছি তখন…এর চেয়ে কিছু না বলাই ভালো। থাক!
আকাশের দিকে তাকিয়ে সূর্য উদয়’র অপেক্ষা করছি, অনেক দিনের সাধ ছিলো সূর্য উদয় দেখবো। আমার বাসা থেকে তো আর দেখা যেতো না কিন্তু যখন গ্রামে ছিলাম তখন রোজ’ই দেখতাম ভোরের আলো।

এখানে বেলকনি থেকে সেটা অনেক ভালো না হলেও কিছু টা দেখা যাবে। দেখতে দেখতে খানিকক্ষণ বাদেই সূর্য উদয় হলো। আমি তাকিয়ে দেখছি সূর্য কিভাবে তার উজ্জ্বল আলো দিয়ে চারদিক ভরিয়ে দিচ্ছে। সূর্য উদয়ের সাথে সাথে আশপাশ চমৎকার রুপ ধারন করলো। পাখিরা বাসা থেকে বের হতে শুরু করলো। তাদের আর কি সারাদিন পাখা মেলে উড়বে আর খাবারের সন্ধান করবে। যদি পাখির মতো এই মুক্ত আকাশে উড়ার স্বাধীনতা টা পেতাম তাহলে খুব ভালো হতো। আরো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চারপাশ দেখতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষণ হলো, উনার আশার সময় হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। হঠাৎ করেই একটা ঠান্ডা বাতাস আমার শরীর ছুঁয়ে গেলো। আমি চোখ বন্ধ করে সেটা উপভোগ করলাম। চোখ মেলে দেখি উনি নিচে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখছে। আমি সাথে সাথে উনার থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম।

আসলে উনার চাহনি দেখে আমার কেমন একটা অনুভুতি হলো বোঝানোর মতো না। তাড়াতাড়ি করে নিচে নামলাম। যত’ই হোক উনার স্ত্রী আমি উনার প্রতি কিছু দায়িত্ব আছে আমার। নিচে এসে দেখি সব সার্ভেন্ট উঠে কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমি হাঁটতে হাঁটতে রান্না ঘরের দিকে গেলাম। রান্না ঘর থেকে তাকিয়ে দেখি উনি রুমের দিকে যাচ্ছে। একটা সার্ভেন্ট কে জিজ্ঞেস করলাম উনি এখন কি খাবে। সে বলল ব্লাক কফি! সে সেটাই বানাতে লাগল। আমি এইসব পারি না বলে দাড়িয়ে সেটা বানানো দেখছিলাম। অনেক সহজ এটা বানানো। সার্ভেন্ট আমাকে জিজ্ঞেস করল কিছু লাগবে কিনা। আমি মুচকি হেসে মাথা নাড়লাম যার অর্থ না। পাশে তাকিয়ে দেখি আরো দুজন সার্ভেন্ট সকালের নাস্তা বানাতে ব্যস্ত।

কফি বানিয়ে সার্ভেন্ট আমার হাতে তা দিয়ে দিল, হয়তো বুঝতে পরেছে আমি এটার জন্য’ই দাঁড়িয়ে আছি। আমি মুচকি হেসে তার থেকে সেটা নিয়ে রুমে চলে এলাম। এই বাড়িতে আজ আমার দ্বিতীয় দিন, ভাবতেই কেমন লাগছে এতো বড় বাড়ির বউ আমি অথচ তেমন কিছু’ই জানি না। এসবের সাথে মানায় না আমাকে।
রুমে এসে দেখি উনি নেই, মনে হয় শাওয়ার নিতে গেছে। আমি কফি মগ টা বিছানার পাশে টেবিলে রাখলাম। এরপর বিছানা ঠিক করতে লাগলাম। এর মাঝেই উনি বের হয়ে এলেন। আমি এসে তাকে কফি টা হাতে দিলাম। উনি কফি মগ টা আমার হাত থেকে নিয়ে মুখে চুমুক দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করেন…

– তুমি বানাও নি!
উনার কথায় আমার মুখ মলিন হয়ে গেল। আমি মাথা নাড়িয়ে বলি…
– না!
উনি সোফায় গিয়ে বসে বলেন..
– কোনো ব্যাপার না, তোমাকে বানাতে হবে এমন না। আমি তোমাকে রান্না ঘরে যেতে দেখলাম ভাবলাম তুমি বানিয়েছো তাই!
– নাহ আমি পারি না বানাতে, তবে শিখেছি আপনাকে বানিয়ে খাওয়াবে।
উনি কফি মগ এ চুমুক দিয়ে বলেন.
– ঠিক আছে, তা আজ ভার্সিটিতে যাবে না।
আমি অবাক হয়ে বলি…

– ভার্সিটি!
আহিয়ান কপাল আমার দিকে তাকিয়ে বলে…
– হ্যাঁ ভার্সিটি! এতো অবাক হবার কি আছে।‌কি ভাবছো পড়াশোনা ছেড়ে দেবে নাকি।
আমি চট করে বলি…
– না না করবো তো, কিন্তু আপনি আমাকে ভার্সিটিতে যেতে দিবেন।
– দেবো না কেন?
আমি খুশি তে চেঁচিয়ে বলি…
– সত্যি!
উনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো বুঝতে পারছেন না আমি এতোটা excited কেন!
উনি আবার ও কপাল কুঁচকে আমাকে জিজ্ঞেস করে..

– তো আজ যাবে ভার্সিটিতে!
– আজ! আজ কিভাবে যাবো।
– হ্যাঁ তাও ঠিক বাসায় মেহমান আছে, এখন তুমি ভার্সিটি গেলে মা’র কাছে ভালো লাগবে না। আচ্ছা তাহলে কাল যেয়ো।
– আচ্ছা। ( একগাল হেসে )
– আর হ্যাঁ আমার সাথে যাবে, টাইমলি রেডি হয়ে থাকবে বুঝলে।
– আচ্ছা! ( চমকে উঠে ) কি বললেন? আপনার সাথে যাবো।
– হ্যাঁ আমার সাথে! কেন কোনো সমস্যা!
– সমস্যা আমার না আপনার হবে।
– কেন?

– আমার মতো একটা মেয়ে কে আপনার সাথে নিয়ে গেলে আপনার বন্ধুরা আপনাকে নিয়ে মজা করবে, এছাড়া ভার্সিটির আরো মানুষ তো আছেই।
– কারন কি? তুমি কি একটা ছাগল নাকি যে আমার সাথে গেলে সবাই মজা করবে।
– নাহ তা না।
উনি দাঁড়িয়ে আমার কাছে আসতে থাকে..
– তো!
– কিছু না ।
বলেই চলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই শাড়ি’র আঁচল টান খেলো। আমি অবাক হয়ে গেলাম। মানে কি আহিয়ান আমার শাড়ি’র আঁচল ধরেছে। চোখ বড় বড় করে পিছনে ঘুরলাম। আমার তাকানো দেখে আহিয়ান কপাল কুঁচকে তাকালো। ইশারা করে বলল…
– কি?

আমি রেগে নিয়ে কিছু বলতে যাবো তখন খেয়াল হলো শাড়ি খাটের পাশে টাকা ছোট টেবিল’র সাথে আটকে আছে। লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলাম। ভাগ্যিস কিছু বলেনি নাহলে আমাকে নিয়ে খুব হাসতেন উনি। আমি উনার কাছে এসে শাড়ি টা ছাড়িয়ে নিয়ে চলে এলাম।
কপাল চাপড়ালাম। ইশ্! কতো বোকা আমি। এটা তো ভাবা উচিত ছিলো উনি কেন আমার শাড়ি ধরে টানবেন। আজব তো! এতোটুকু কমন সেন্স কেন নেই আমার।

এসব ভাবতে ভাবতে নিচে এলাম। সার্ভেন্ট’রা খাবার সাজাচ্ছে। বাবা আর আপু এসে খাবার টেবিলে বসল। মা তাদের খাবার সার্ভ করছে। আমি সাথে গিয়ে মায়ের সাহায্য করছিলাম। বাবা আমাকে দেখে বলে উঠেন..
– শুনলাম তোমার মামা মামী নাকি এসেছেন।
– জ্বি বাবা!
– দেখো তাদের যেন যত্নে কোনো অভাব না হয়। আমি আর আয়ানা তো দেখা করতে পারলাম না।
– জ্বি বাবা। কিন্তু আপনারা এতো তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করছেন।
আয়ানা বলে উঠল…
– আসলে আজ বিদেশ থেকে আমাদের একজন ক্লাইন্ট আসবে। তাকে পিক করতে যাবো তারপর মিটিং তাই।
– ওহ্ আচ্ছা।

বাবা আর আপু খাবার খেয়ে চলে গেলেন। মা আমাকে বলেন..
– তোমার মামা মামী উঠলে তাদের খাবার ব্যবস্থা করো আমি একটু ঘরে যাচ্ছি।
– জ্বি মা!
মা ও চলে গেলেন, আমি একবার শুভ’র ঘরে উঁকি দিলাম। সে এখনো ঘুমাচ্ছে। আমি ওর কপালে আদর করে আলতো করে একটা চুমু দিই। তাকিয়ে দেখি শুভ উঠে গেছে ঘুম থেকে। আমাকে দেখেই সে জরিয়ে ধরে। তারপর আহিয়ান এর কাছে যাবার জন্য আবদার করে।‌আমি তাকে ফ্রেশ করিয়ে নিয়ে আসি আহিয়ান এর কাছে।‌ আহিয়ান’কে দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরে।‌কিছুক্ষন দুজন মিলে খুনসুটি করে, আমি দূর থেকেই তাদের খুনসুটি দেখতে থাকি।

মামা মামী উঠে গেলে সবাই মিলে একসাথে সকালের নাস্তা করি। মামা মামী বাবা’র কথা জিজ্ঞেস করায় তাদের ব্যবস্তার কথা বলি।
সবার সাথে গল্প করেই সকাল কেটে যায়। মামা মামী’রা দুপুরে খাবারের পর’ই চলে যায়। আহিয়ান তাদের সাথে গেছে। শুভ’র জন্য মন টা খুব খারাপ জানি না আবার কবে আসবে। যাবার আগে অনেক কাঁদল। কিন্তু আহিয়ান তাকে সামলে নিল। তারা চলে যাবার পর ঘরে এসে বসে রইলাম। হঠাৎ করেই চোখ গেল আহিয়ান এর bookshelf এর দিকে। অনেক গল্পের বই তাতে। গল্পের বই পড়ার খুব শখ আমার কিন্তু মামী’র কারনে কখনো কিনি নি। তার bookshelf থেকে একটা বই বের করলাম। বইটা ছিলো শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবদাস উপন্যাস’টি।‌ এটা পড়ার খুব ইন্টারেস্টি ছিলো আমার, অনেক শুনেছি এটার ব্যাপারে।

ভাবলাম মন ভালো করার জন্য এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়। তাই পড়তে শুরু করলাম। কিছুটা পৃষ্ঠা পরলাম। ভালোই লাগছিলো তাদের প্রেমের সূত্রপাত গুলো। আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো। পরের পৃষ্ঠা পড়ার জন্য ‌বইয়ের পাতা উল্টাতে যাবো তখন’ই কেউ আমার হাত থেকে বই টা নিয়ে গেলো। মেজাজ গেলো বিগড়ে! রেগে তাকিয়ে দেখি আহিয়ান বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। রেগেই বললাম..
– এটা কি করলেন আপনি! বই টা নিলেন কেন?
– কোনো কাজ নেই তোমার কি পড়ছো এইসব?
– বই টা পারছিলাম! জানেন কতো ইন্টারেস্টিং ছিলো!

– হ্যাঁ মেয়েদের প্রেমের ব্যাপারে ইন্টারেস্টি বেশি আমি জানি, কিন্তু তোমার পড়াশোনা নেই! পড়াশোনা রেখে এইসব পড়ছো।
কোমরে হাত দিয়ে বলি…
– ওহ্ আচ্ছা মেয়েদের ইন্টারেস্টি বেশি তাহলে বই টা আপনার কাছে কেন? এটা নিয়ে আপনি কি করছিলেন!
বইটার এদিক ওদিক করে…
– কিনেছিলাম একসময় পড়ার জন্য! কিন্তু কখনো পড়া হয় নি।
অসহায় মুখ করে বলি….
– আচ্ছা আপনি পরে পড়ে নিয়েন এখন আমাকে দিন না আমি পড়বো।
– আগে পড়তে বসো যাও! ( ধমক দিয়ে )
মুখ ফুলিয়ে বলি…

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১১

– আমার কোনো বই নেই কি পড়বো।আপনি এটা দিন! বলেই উনার হাত থেকে নিতে যাচ্ছিলাম উনি বইটা উঁচু করে নেয়। আমি ধরতে পারি না ফসকে যায়। উনি এবার বলতে শুরু করে…
– তোমার বই নেই আমার আছে ‌। যাও টেবিলে গিয়ে পড়তে বসো। ( ধমক দিয়ে )
আমি মুখ ফুলিয়ে টেবিলে গিয়ে বসি। উনি বই টা রেখে ফোন নিয়ে বসে। এটা কি হলো? আমাকে পড়তে বসতে বলে নিজে ফোন টেপা হচ্ছে। নাহ এটা হতে পারে না। বুদ্ধি আটলাম কিভাবে উনাকে জব্দ করা যায়।আমি বলে উঠলাম…

– এই সাবজেক্ট টা বুঝতে পারছি না বুঝিয়ে দিন।
উনি ফোনের স্কিন থেকে চোখ সরাতে আমার দিকে তাকিয়ে বলে…
– আমাকে বলছো!
– হ্যাঁ আপনকে বলছি, ভার্সিটির ফার্স্ট বয় নিন বুঝিয়ে দিন। ( মনে মনে হাসতে লাগলাম। উহু কি ভেবেছিলো আমাকে পড়তে বসতে বলে নিজে মজা করবে। হুহ এতোই সহজ নাকি।)
উনি উঠে এসে চেয়ারে বসল। তারপর আমার কাছ থেকে বই টা নিয়ে বলতে লাগল…
– আমার রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেনি বুঝলে।

উনার কথায় মুখ ভেংচি দিলাম। হুহ আসছে মেধাবী ছাত্র। এবার উনি আমাকে পড়াতে শুরু করলেন। নাহ আসলেই খুব ভালো করে পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছে আমায়। বোঝানোর পর হুট করেই আমাকে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। আমি সেটা না পাড়ায় খুব জোরে আমায় ধমক দেয়। ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে নিই। কিছুক্ষণ পর উনার ধমকানি আর শুনতে পেলাম না। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি উনি আমার দিকে আছে। আমি মাথা নিচু করে নিই। উনি আবার আমাকে বোঝাতে শুরু করে। পাক্কা ৩ ঘন্টা ধরে আমাকে পড়াশোনা করায় আমার স্বামী। নিজে উঠছে না আমাকেও উঠতে দিচ্ছে না। বুঝতে পারি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছি। পড়াশোনার প্রতি এতো ভালোবাসা জানলে উনাকে কখনো বলতাম না আমাকে বুঝিয়ে দিতে।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৩