ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৩

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৩
লেখনিতে : মিমি মুসকান

হঠাৎ’ই কেউ পেছন থেকে আমার কোমর ধরে তার কাছে টানলো। ভয়ে আমার শরীর শিউরে উঠলো। আমি সাথে সাথে সামনে ঘুরলাম। আর যাকে দেখলাম তাকে দেখে আমার চোখ কপালে তুলে গেল। কারন এটা আহিয়ান ছিল। আমি তার খুব কাছে ছিলাম। তার চোখে একটা সানগ্লাস ছিল। তার সামনের চুল গুলো কপালে ঢেকছে। আমি তাকিয়ে আছি ওর দিকে কিন্তু উনি তাকিয়ে আছে কিনা বুঝতে পারছি না।

আমার বোধ হলো ওর হাত আমার কোমরে। আমি তাড়াতাড়ি করে কোমর থেকে উনার হাত সরিয়ে পেছনে যেতে নিলাম। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো উনি এখনো আবারও আমার কোমর ধরে নিজের কাছে টানলেন। এবার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলো আমার। আর কিছু না ‌ভেবে একটা চড় বসিয়ে দিলাম ওনার গালে। উনি সাথে সাথে ছেড়ে দিলেন আমাকে। হয়তো এটা আশা করেন নি। উনি চোখের সানগ্লাস টা খুলে রাগি চোখে আমার দিকে তাকালেন।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তবুও কিছু’টা সাহস জুগিয়ে বললাম…
– কি হচ্ছে টা কি, আপনি এভাবে আমাকে ধরছেন কেন? দেখুন আমি কিন্তু চিৎকার করবো। একদম আমার কাছে আসবেন না। ( একদমে বলে ফেললাম। )

এবার উনার দিকে তাকালাম। উনি একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। হঠাৎ উনি হাত উঠালেন, আমি ভাবলাম হয়তো আমাকে মারবেন। আমি কিছু বলতে যাবে তার আগে উনি আমার গাল ধরে পিছনে ঘোরালেন।
পিছনে ঘুরে আমার চক্ষু ছানাবড়া। কারন একটা সাপ এই দিক যাচ্ছে। হয়তো আমি ওখানে থাকলে কামড় দিতো আমাকে। সাপ’টাকে দেখে অনেক’টা ভয় পেয়ে গেলাম।‌ সাথে সাথে উনার কাছে গিয়ে উনার শার্টটা আঁকড়ে ধরলাম। কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম দুজনে দুজনের দিকে।

হুট করেই উনি আমার হাত শার্ট থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পেছনে ঢেলে দিলেন। আমি তাড়াহুড়ো করে আগে পেছনে তাকিয়ে সাপ খুঁজতে লাগলাম। নাহ্ সাপটা আর নেই। একটা হাঁফ ছেড়ে আবার পিছনে ঘুরলাম উনাকে সরি বলবো বলে। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো সেখানে উনি নেই। এতো তাড়াতাড়ি চলে গেলেন এখান থেকে। খানিকটা ভয় পেয়ে গেলাম। আসলেই উনি ছিলেন নাকি ভুত। ভুতের কথা ভাবতেই আমার হাত পা কাঁপতে লাগলো। আমি এক দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেলাম।

দৌড়াতে দৌড়াতে অনেকটা পথ চলে এসেছি। পেছনে ঘুরে বাগান’টা কে দেখতে লাগলাম। হঠাৎ করেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে ধপাশ করে পরে গেলাম। যার সাথে ধাক্কা খেলাম সে আমার দিকে ফিরল। এমা এতো দেখি আহিয়ান। আমি চেঁচিয়ে বলে ওঠলাম…

– ভুত!
– কিহ?
এতো দেখি কথা‌ বলছে, তার মানে এটা ভুত না।
– নাহ কিছু নাহ!
আমি পরে যাওয়াতে আহিয়ান আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে হাত বাড়ালো। আমি হাত ধরতে যাবো তখন’ই সে হাত সরিয়ে ফেলল। বেশ অবাক হলাম! এটা কি হলো? সে আশপাশ তাকাচ্ছে। বোঝার চেষ্টা করলাম সে কি করছে।

দূরে পরে থাকা একটা গাছের ডাল তুলে এনে আমার দিকে ধরল। আমি বড় বড় চোখ করে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। সে ধমকের সুরে বলল…
– ধরো এটা!
উনার ধমক খেয়ে তাড়াতাড়ি করে গাছের ডাল ধরলাম। সেটা ধরেই টেনে তুললেন আমাকে। আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন ছুরলাম উনার দিকে..
– আপনি এটা দিয়ে আমাকে তুললেন কেন?
– আর চড় খাবার শখ নেই আমার ( রেগে বললেন কথা’টা )
– সরি আসলে আমি বুঝতে পারি নি।
– এই সময় বাগানে কি করেছিলে?

– বাদাম তুলছিলা… মনে পরলো বাদামের কথা। আশপাশ তাকালাম। কুড়িয়ে নেওয়া বাদাম গুলো উড়ানায় রেখেছিলাম সে সব নিচে পরে গেলো। আমি সেগুলো তুলতে লাগলাম। হঠাৎ করেই উনি অবাক হয়ে আমাকে বলতে লাগলেন…
– এগুলো কেন তুলছো!
– ( তুলতে তুলতে ) খাবো বলে!
– এগুলো খাওয়া যায়!
– হ্যাঁ! কেন কখনো খান নি আপনি?
– না ( গম্ভীর হয়ে )
– খাবেন?
– নাহ! যাই হোক আমাকে চড় মারার ‌দাম তোমাকে দিতে হবে।

বলেই চলে গেলেন তিনি। আমি অবাক হয়ে উনার যাবার পানে তাকিয়ে রইলাম। এটা কেমন হলো? এই তো ভালো মতো কথা বলছিলো এই আবার কি হলো?
তখনও যেমন উনাকে বুঝতে পারি নি আজও পারছি না। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দরজার দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু কেউ আসছে না। আমি বুঝে ফেললাম আমার মতো মেয়ে’কে তারা বউ হিসেবে মনে নেয় নি।‌এটা আমার আশা করাই ছিলো তাই আর বেশি দুঃখ পেলাম না।

নিচে’র দিকে তাকিয়ে রইলাম।‌ কারো পায়ের আওয়াজ শুনে সামনে তাকালাম। দেখি আয়ানা হাসি মুখে আসছে, তার পিছু পিছু আরো কতোজন মেয়ে। কিন্তু আয়ানা’র সামনে একজন ভদ্রমহিলা আসছেন। তার সাথে বরনডালা। দেখে মনে হচ্ছে ইনি আহিয়ান এর মা। উনার মুখেও কিঞ্চিত হাসি কিন্তু সেটা কি আমাকে দেখানোর জন্য।
আহিয়ান এর মা সামনে আসলেন। আহিয়ান এখনো ফোনের মধ্যে মুখ গুঁজে আছে। আহিয়ান’র মা এসে আহিয়ান এর হাত থেকে ফোন টা কেড়ে নিলেন। আহিয়ান রেগে সামনে তাকাতেই দেখে মা। সে innocent face করে। মা আহিয়ান কে টেনে আমার পাশে দাঁড় করায়। তারপর বলে ওঠে..
– চুপচাপ দাঁড়াও বরন করতে দাও আমায়।

আহিয়ান কিছু বলে না। ভালো ছেলের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। এখন উনাকে দেখে আমার মনে হচ্ছে উনার মতো ভদ্র ছেলে আর একটাও নেই। মা হেসে আমাকে আর আহিয়ান কে বরন করে নিলেন। তারপর আমার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে যেতে লাগলেন।
ভেতরে এসে আমি তাকিয়ে আছি। বাড়ি’টা বাইরে থেকে যত’টা না সুন্দর ভেতর থেকে আরো সুন্দর দেখতে। প্রত্যেক টা জিনিস খুব সাজানো গোছানো। আমি তাকিয়ে দেখছি। মা আমাকে নিয়ে সোফায় বসালেন। আহিয়ান সিঁড়িতে ওঠতে ওঠতে বললেন…

– মা আমার খুব ঘুম পাচ্ছে, আমি ঘুমাতে গেলাম।
– খাবি না কিছু?
– আমি খেয়েছি, গুড নাইট।
বলেই চলে গেলেন তিনি। আমি চুপচাপ বসে আছি। আয়ানা আমার পাশে সোফার ওপরে বসলো।
মা থিতুনি তে হাত দিয়ে আমাকে দেখছেন। তারপর মুচকি হাসি দিয়ে আয়ানা’র দিকে তাকিয়ে বললেন…
– মাশাআল্লাহ! বলতে হবে তোদের পছন্দ আছে!

তোদের পছন্দ মানে, আহিয়ান কি পছন্দ করেছে আমাকে নাকি! কেমন জানি সব ঘোলাটে লাগল। মা”র কথায় কোথায় জানি রহস্য লুকিয়ে আছে এমন লাগছে আমার। আয়ানা হেসে বলল..
– দেখতে হবে আমি কার মেয়ে..
এমন সময় একজন ‌ভদ্রলোক আসলেন। আয়ানা আর মা তাকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। তাদের দেখা দেখি আমিও দাঁড়ালাম। সে এসে আমার সামনে দাঁড়াল। চোখে চিকন ফেমের গোল চশমা, পরনে একটা পাঞ্জাবি, মুখটা খুব গম্ভীর করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি তার চাহনি তে মাথা নিচু করে ফেললাম। আড়চোখে আয়ানা’র দিকে তাকালাম। আয়ানা ফিসফিসিয়ে বলল…

– তোমার বাবা!
তার মানে এনি কবীর চৌধুরী। আমি তার দিকে তাকিয়ে অজান্তেই মুখ থেকে “আব্বু” বেরিয়ে গেলো। তাড়াতাড়ি করে তাকে সালাম করলাম ‌ হয়তো উনি এরকম টা আমার কাছে আশা করছিলেন। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন..
– নাম কি তোমার?
– নিহারিকা নিহা!
– ( ভ্রু কুঁচকে গম্ভীর গলায় বললেন.. ) আহিয়ান চৌধুরী কে বলবে!
বাবা’র কথায় আমি বোকা’র মতো উনার দিকে তাকালাম। উনি আমার থেকে চোখ সরিয়ে মা’র দিকে তাকিয়ে বললেন…

– ওকে খাইয়ে দিয়ে ঘুমাতে যেতে বলো অনেক রাত হয়েছে।
বাবা’র কথা শুনে আমি বলে উঠলাম..
– কথা’টা আমাকে বললেন না কেন?
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে মা’কে বললেন …
– তোমার ছেলে কোথায়?
আমি আবার বললাম…

– উনি ঘুমাতে চলে গেছেন!
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন..
– তোমাকে আমি প্রশ্ন করেছি যে তুমি উওর দিচ্ছো?
আমি তাড়াতাড়ি করে বললাম..
– সেটাই তো আপনি আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছেন না কেন?
আবারও মা’র দিকে তাকিয়ে…
– আমি ঘুমাতে গেলাম। বলেই চলে গেলেন।

আমি বাবা’র চলে যাওয়া দেখতে লাগলাম। আয়ানা আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলল…
– কি সাহস তোমার! তুমি বাবা’র মুখে মুখে তর্ক করলে!
– আমি তর্ক করলাম কোথায়?
মা হেসে বলে ওঠল..

– যেমন শশুড় তেমন বউ মা! শশুড় এবার জব্দ হবে।
– তা আর বলতে মা ও কিভাবে বাবা’র প্রত্যেকটা কথার উওর দিলো। আচ্ছা তোমার ভয় করলো না।
– মেয়েরা কখনো বাবা কে ভয় পায় নাকি! ভয় পেলে তো মা’কে পায়।
– কেন? তুমি আমাকে ভয় পাও? ( ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে )
– না মানে… আমি তো কথার কথা বললাম মা! ( মাথা নিচু করে )
– ঠিক আছে মা বলায় ছেড়ে দিলাম। আয়ানা খাবারের ব্যবস্থা করো। অনেক রাত হয়েছে।
– আচ্ছা মা।

আসলেই অনেক রাত হয়েছে, প্রায় রাতের ১ টা বাজে।‌আমি সোফায় বসে আছি। মা আমার পাশে বসে আমার সাথে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছেন। আমার ছোটবেলার কথা, মা বাবা’র কথা সব জিঙ্গেস করলেন। আমি নিজেকে অনাথ বলেই পরিচয় দিলাম।‌মা আমার মাথায় হাত রেখে বললেন…
– আর কোনো নিজেকে অনাথ বলবে না বুঝলে, আমি আছি না তোমার মা।

মা’র কথাটা শুনে ‌আমার চোখের কোণে জল চলে এলো। বিয়ের প্রথম রাতে নিজের শাশুড়ি এমন আচরণ আমি আশা করি নি। বলতে হবে তারা অনেক ভালো। আমাকে অনেক ভালো ভাবেই মেনে নিয়েছে তারা। যা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টসাধ্য ছিল। স্বপ্নের মতো লাগছিলো সবকিছু।

একটু পর’ই আয়ানা আসল। তার সাথে একটা মেয়ে আসল, তার হাতে খাবার ছিলো। মেয়েটা এসে খাবার গুলো আমার আমার সামনে রাখল। এতো ভারী পোশাক পরে কিভাবে খাবো ভাবছি। ক্ষুদাও লেগেছে অনেক সেই সকালে একটু খাবার জুটেছিলো কপালে। হঠাৎ দেখি মা আমার মুখের সামনে খাবার তুলেছে। আমি মা’র দিকে তাকালাম। মা চোখ দিয়ে ইশারা করলেন খেয়ে নিতে। আমি হেসে খেতে লাগলাম। ভালো লাগছিলো খুব, আজ এতো বছর পর মা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে। আমি মা’র দিকে তাকিয়ে আমার মা’র কথা মনে করতে লাগলাম। তেমন একটা মনে নেই কারন তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। মা’র সাথে কাটানো শুধু কিছু মূহূর্ত ছাড়া আর কিছু’ই মনে নেই আমার।

খাওয়ার পর আয়ানা আমাকে নিয়ে রুমে আসলেন। দরজার বাইরে থেকে’ই চলে গেলো সে। দরজা খোলা’ই ছিলো। আমি তাও একবার দরজায় কড়া নাড়লাম। আহিয়ান ভিতর থেকে বলল “আসো”। উনা’র আওয়াজ পেয়ে আমি ভেতরে ঢুকলাম। ব্যাপার খুব মজার ছিলো। নরমালি ছেলেরা অনুমতি নেয় কিন্তু আমার পক্ষে তার ব্যতিক্রম ঘটল। অনুমতি আমি নিলাম। ঘরে ঢুকে দেখলাম স্যার বিছানায় শুয়ে বই পরছেন। ঘরটা খুব সুন্দর ছিলো। গোছানো, পরিপাটি। বিছানার ওপরে একটা বড় ছবি দেখা যাচ্ছিল। ছবি’টায় মুখ ভালো মতো দেখা না গেলেও আমি হলফ করে বলতি পারি ছবি টা উনার।

আমি গুটি গুটি পায়ে তার কাছে গেলাম। উনি আমাকে দেখে বই টা রাখলেন। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন…
– এখানে বিছানা আছে, ওখানে সোফা আছে, ঘর থেকে বের হয়ে সামনে ১০ পা হেঁটে বামে মোড় নিয়ে আরো ১০ পা হেঁটে ডানে মোড় নিলে গেস্ট রুম দেখবে। সব বলে দিলাম যেখানে ইচ্ছে শুতে পারো। আমি এখন ঘুমাবো গুড নাইট। ( একদমে সব বলে দিলো )

আমি হা করে তাকিয়ে আছি। কিছু জিজ্ঞেস করবো তার আগেই উনি উনার মতো সব বলে দিলো এটা কোনো কথা। আর বলার পর’ই চাদর টেনে শুয়ে পরল। আমি আহাম্মক’র মতো তাকিয়ে আছি। কি আর করার। জানি এখন কিছু বললেও উনি আমার কথা’র দাম দিবে না। কারন উনার ঘাড়ে কয়েকটা রগ বেঁকা সেটা আমি ভালো’ই বুঝতে পেরেছি। হঠাৎ করেই কেউ আবার দরজা নক করল। আমি গিয়ে দেখি একটা সার্ভেন্ট হাতে আমার ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একেক সময় একেক সার্ভেন্ট দের দেখছি। সে আমাকে বলল…

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২

– আয়ানা ম্যাম বললো এটা আপনাকে দিতে।
– আচ্ছা দাও আমাকে।
ব্যাগ টা দিয়ে’ই সে চলে গেলো। আমি দরজা লক করে ব্যাগ নিয়ে সোফায় বসলাম। ব্যাগ থেকে একটা থ্রি পিস বের করে ওয়াশরুম এ গেলাম ফ্রেশ হতে।
একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে বের হলাম। চুল‌ গুলো’র অবস্থা মারাত্মক। তারা সাজানোর সময় কতো’ই না মেডিসিন দিলো আমার চুলে। পুরো চুলের সর্বনাশ করে ছাড়ল। কোনোমতে চুল গুলো আঁচড়ে নিলাম। এখন ভাবছি কোথায় শোব।‌ সোফায় আমার পক্ষে শোয়া সম্ভব না। অভ্যাস নেই, শেষে পরে গিয়ে কোমর ভেঙে লাভ নেই। আচ্ছা গেস্ট রুম’এ গেলে কেমন হয় কিন্তু যদি কোনো সার্ভেন্ট দেখে ফেলে তাহলে…

মান সম্মান সব যাবে। আচ্ছা উনার পাশে.. না বাবা এতো সাহস আমার নেই। উনার পাশে তো কোনোমতে শোয়া যাবে না।
হঠাৎ করেই মেঝেতে চোখ পরল। ভাবলাম এখানেই শুয়ে পরি। যেই ভাবা সেই কাজ। আলমারি’তে হাত দিলাম। আলমারি খোলাই ছিলো। আমি ওখান থেকে একটা চাদর আর একটা বালিশ নিয়ে নিচে বিছানা পাতলাম। শুতে যাবো তার আগে উনার দিকে একবার তাকালাম। ঘুমিয়ে পরেছে উনি। বাচ্চাদের মতো লাগছে তাকে। আসলেই বাচ্চাদের মতো কারন উনার দুই পাশে বাচ্চাদের মতো দু’টি কোল বালিশ। আমি একবার হেঁসে ঘুমিয়ে পরলাম। রুমের লাইট অফ করলাম না।

শোবার সাথে সাথেই ঘুম চলে এলো। খুব ক্লান্ত ছিলাম। সারাদিনে যেই ঝড়’টা গেলো আমার ওপর এর পরে আর পারলাম না। কিছুক্ষণ’র মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলাম।
মাঝরাতে কারো গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পরায় জেগে ওঠলাম আমি। অনুভূতি হচ্ছে আমি বিছানায়, আর আমার ঘাড়ে কারো মাথা। শুধু তাই নয় পেটে’র ওপর কারো হাতও আছে। চিৎকার করতে যাবো বোধ হলো রুমের লাইট অফ। কিন্তু আমি তো জ্বালিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। তাহলে..

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৪