ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২
লেখনিতে : মিমি মুসকান

আয়ানা’র কথায় আমি অবাক হয়ে গেলাম। কি বলবো বুঝতে পারছি না কিন্তু আয়ানা’র‌ বলা প্রত্যেক’টা কথা সত্যি। আসলেই আজকের ঘটনার পর কেউ’ই আমায় বিয়ে করতে চাইবে না, সমাজ আমাকে নষ্টা আর কলঙ্কিনীর উপাধি দিবেন। কিন্তু তাই বলে উনার মতো একটা লোক’কে বিয়ে করবো এটা ভাবতেও ভালো লাগছে না। দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম আমি। অসহায় মুখ করে আয়ানার দিকে তাকালাম যার অর্থ আমি বুঝতে পারছি না আমি কি করবো।

আয়ানা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে বলল…
– আমি লোকজন পাঠিয়ে দিচ্ছি তারা তোমাকে তৈরি করে দিবেন। ( আমার হাতে হাত রেখে বললেন ) বিশ্বাস করতে পারো আমায়।
– ওর কথায় ভরসা পেলাম। তাই মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নাড়লাম।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আয়ানা বের হয়ে সাথে সাথে আমার মামা আর মামী আসলো। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করছে আমি কি বলেছি? আমি কিছু বলতে যাবো তখন’ই কয়েকজন মেয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করল। তাদের সবার পরনে এক ধরনের পোশাক। তাদের মধ্যে একজন বলে উঠল…
– আপনারা বউ কে রেখে বাইরে যান আমরা উনাকে সাজাতে এসেছি।

মামা মামী বেশ বুঝতে পারলো আমি বিয়েতে হ্যাঁ বলেছি। তারা খুশিতে গদ গদ হয়ে বের হয়ে গেলেন। মেয়ে গুলো আমাকে ধরে আয়নায়’র সামনে বসাল। তারপর আমাকে সাজাতে শুরু করল। আমি আয়নার দিকে তাকিয়ে আছি। শ্যামলা গায়ের রঙ আমার, দেখতে ওতোটা সুন্দর না। শুধু চুল গুলো লম্বা এছাড়া আমার কোনো গুন নেই। না আছে পোশাকে আশাকে কোনো সৌন্দর্য। ভাবছি আহিয়ান এর দেখতে খুব সুন্দর তিনি। ভার্সিটির সবাই তাকে খুব পছন্দ করে।

আমার এখনো মনে আছে, ভার্সিটিতে প্রথম দিনের কথা। আমি দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম ইতি’র সাথে। বলা হয় নি ইতি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। বন্ধু বলতে শুধু ওই ছিলো আমার। আমার গেয়ো অবস্থার কারনে কখনো কেউ আমার বন্ধু হয় নি। যাই হোক কথা বলতে বলতে দেখি একটা গাড়ি ঢোকে ভার্সিটিতে। সবার নজর ওখানে থাকায় আমি কৌতুহল’টা মেটাতে পারিনি। কে এসেছে যে সবাই এভাবে তাকিয়ে আছে। ইতি’কে জিঙ্গেস করায় বলল “একটু পর’ই বুঝতে পারবি। আমিও অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছি। গাড়ি থেকে একে একে কয়েকটা ছেলে মেয়ে বের হলো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বড় লোক। কিন্তু আমার চোখ আটকালো একটা ছেলের দিকে। ছেলেটা দেখতে খুব সুন্দর। কালো জ্যাকেট , কালো জিন্স পরা ছিলো। উনার সিল্কি চুল গুলো বাতাসে উড়ছিলো। কিন্তু আমার চোখ ছিল তার সানগ্লাস’টার দিকে। কারন এটা দেখতে চমৎকার ছিলো।

সে বের হবার পর পর’ই কয়েকটা মেয়ে তার কাছে গিয়ে প্রেম নিবেদন করল। কিন্তু উনি কাউকে কখনো পাত্তা দেয় নি। সে পাশ তাদের দিকে না তাকিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। এমনে মেয়ে গুলো বেশ সুন্দর ছিলো। তার এই অ্যাটিটিউড দেখে আমি হা হয়ে ইতি’র দিকে তাকালাম। ইতি ভ্রু নাচিয়ে বলল,
– কেমন?
– এতো অহংকার!
– শুধু বলে অহংকার, ভার্সিটির ফার্স্ট বয়। তার রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেউ ভাঙ্গতে পারে নি।
– ওহ্ তাই এতো অহংকার!
– হুম বলতে পারিস। এমনে তে সব মেয়ের ক্রাস তা তোর কি ক্রাস হলো নাকি?
– আমার আবার ক্রাস, না রে এতো ভাবার সময় নেই। আচ্ছা আমার লেট হচ্ছে।
– এখন’ই চলে যাবি! রান্না তো করেই না এসেছিস আরেকটু থাক।
– না রে লেট হয়ে যাবে। তারমধ্যে রাফি’র পরীক্ষা। ওর আম্মু বলেছে একটু বেশি করে পড়াতে। এখানে থাকলে ওর বাসায় যেতে দেরি হয়ে যাবে।

– আচ্ছা সাবধানে যা।
– হুম, তুই ও সাবধানে থাকিস।
বের হয়ে গেলাম ভার্সিটি থেকে। ব্যাগ এ খুঁজে ৫০ টাকা পেলাম কিন্তু এখনও মাস শেষ হয় নি। এই টাকা খরচ হলে চলবে না তাই হাঁটতে লাগলাম। হেঁটেই বাসায় যেতে হবে। ১ ঘন্টার মতো লাগবে যেতে তাই তাড়াতাড়ি হাঁটা শুরু করলাম। ৩ টা টিউশনি করি এতে আমার খুব একটা ভালো চলে না। তারমধ্যে মামী কেও টাকা দিতে হয়। কিন্তু আর টিউশনি তো পাচ্ছি না করবো কিভাবে। ভার্সিটির বেতনও দিতে হবে, তার মধ্যে নতুন বইও কেনা লাগবে। খুব টেনশনে আছি.. কি করবো বুঝতে পারছি না।

এসব ভাবতে বাসায় চলে আসলাম। এসে দেখি আমার মামী রেগে আছেন। কিন্তু রেগে যাবার কারন কি বুঝে ওঠতে পারার আগেই গালে খুব জোরে একটা চড় খেলাম। চোখ থেকে সাথে সাথে নোনা জল পরতে লাগল। মামী রুদ্রকন্ঠে বলে ওঠল…
– এতোক্ষণ সময় লাগে আসতে নবাবজাদি, সারাদিন টই টই করলে হবে। ঘরের কাজ গুলো কে করবে। কতো গুলো থালাবাসন পরে আছে, জামাকাপড় পরে আছে এগুলো কে পরিস্কার করবে। জমিদারি পেয়েছো নাকি যখন খুশি আসবে।

– হেঁটে এসেছি মামী তাই দেরি হয়ে গেছে আমি এখন’ই সব করে দিচ্ছি।
– হ্যাঁ করো তাড়াতাড়ি, সব কিছু আমার ঘাড়ের উপর এসে পরে।
রেগে চলে গেলেন মামী। ঘরের সব কাজ করতে করতে ৩ টা বেজে গেল। না খেয়েই বেরিয়ে পরলাম টিউশনি করতে। টিউশনি করে আসতে আসতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল। সারাদিন কিছু না খাওয়াতে খুব ক্ষিদে পেল। মামী’র কাছে গিয়ে খেতে চাইলে মামী বলল আরেকটু পর তো রাত হয়ে যাবে তখন যেন খেয়ে নেই। কিছু না বলেই পেটে বালিশ নিয়ে চাপা দিয়ে পরতে বসলাম। জানি এখন যা কিছু হোক না কেন মামী খেতে দেবে না। কিন্তু ক্ষিদের কারনে পড়তেও পারলাম না। তখন আমার সামনে একটা বিস্কুট রাখল শুভ। সে আস্তে আস্তে বলল,
– আপু এটা খেয়ে নাও ক্ষিদে কমে যাবে।

চোখের কোণে জল এসে গেল। আমার এই ছোট্ট ভাইও বুঝেছে আমার অনেক ক্ষিদে লেগেছে। ওকে কোলে নিয়ে বিস্কুট টাকে দু’টুকরো করে ওকে একটা দিলাম। সে আদরে আমার গালে একটা চুমু খেল। অজান্তেই হেসে দিলাম। কানে যেন কারো কথা ভেসে আসল…
– ম্যাম সাজানো হয়ে গেছে!

ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলাম। মনে পরল আমাকে সাজানো হচ্ছিল। আয়নাতে তাকালাম। নিজেকে দেখেই অবাক হয়ে গেলাম। বলতে হবে মেকআপ এর নিজস্ব যাদু আছে তা না হলে আমার মতো খেয়ো ভুত কে কি বানিয়ে দিলো। আয়নাতে নিজেকে দেখেই হেসে দিলাম।
আয়ানা আবার আসল, এবার হাতে করে একট প্যাকেট আনল। আমি তাকে দেখে ওঠে তার কাছে গেলাম। সে আমার থিতুনি’তে হাত রেখে বলল…

– বাহ্ বেশ লাগছে তো তোমাকে!
– এটা আমার না মেকাপের যাদু আপু।
– ( হেসে দিয়ে প্যাকেট টা আমার হাতে দিয়ে ) আচ্ছা এই নাও।
– কি এটা?
– খুলে দেখো।
– প্যাকেট খুলে দেখলাম সবুজ রঙের চমৎকার একটা লেহেঙ্গা। অনেক সুন্দর কারুকাজ। আমি আয়ানা’র দিকে তাকালাম
– পছন্দ হয়েছে!
– অনেক সুন্দর এটা, কেউ না পছন্দ করে কিভাবে থাকবে।
– তাহলে পরে নাও এটা। আমি একটু পর এসে তোমায় নিয়ে যাবো।
– আপু একটা কথা বলবো।
– হ্যাঁ বলো।

– আচ্ছা উনি কি এই বিয়েতে রাজি?
– এই উনি’টা কে আহিয়ান! ( ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে )
– মাথা নিচু করে ফেললাম।
– বেশি টেনশন করো না, সাজ নষ্ট হয়ে যাবে। পরে আমি মা’কে কি দেখাব!
– বুঝতে পারলাম কথা’টা এড়িয়ে যাচ্ছেন। আমি আর প্রশ্ন করলাম না। যা আছে ভাগ্যে দেখা যাবে।
আপু চলে গেলেন। আমি লেহেঙ্গা পরে আয়ানায় দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছি। মা- বাবা’র কথা খুব মনে পরছে। আজ আমাকে এভাবে দেখলে অনেক খুশি হতো। চোখের কোনে পানি জমে গেল। আয়ানা দরজা টোকা দিয়ে বলল আমি “তৈরি তুমি?

আমি চোখের পানি মুছে বললাম “হ্যাঁ!
আয়ানা এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে নিয়ে গেল। ভাবছি এখন নতুন কি দেখবো। ভয়ে আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। মেহমান’রা এখনও সবাই আছে। সবার মুখ কেমন জানি লাগছে। আমি মাথা নিচু করে হেঁটে যাচ্ছি। কারো চাহনি আমার ভালো লাগছিল না।
কাছে আসতেই মামী আমার হাত ধরলেন। আমি সামনে তাকিয়ে দেখি আহিয়ান হাতে মোবাইল নিয়ে চেয়ারে বসে আছে।তার মানে কি উনি বিয়ে’টা করবেন?

আমি আয়ানা’র দিকে তাকালাম। সে আমার দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিত হাসল। এর মানে বিয়েটা উনি করবেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি মিস নিহারিকা নিহা থেকে মিসেস নিহারিকা নিহা আহিয়ান চৌধুরী হয়ে গেলাম। উনি বিয়ে’টা করেছেন কোনোরকম প্রশ্ন ছাড়াই। খুব একটা সহজ বিষয় নাহ এটা। কেমন ঘোলাটে লাগল ব্যাপার’টা।
এখন বিদায়ের সময়। মামা আর মামী অনেক কাঁদলেন কিন্তু এটা কি সত্যি’ই আমার প্রতি তাদের মায়া নাকি সবাইকে দেখানোর জন্য বুঝলাম না। আহিয়ান আমার পাশেই দাঁড়ানো। তার চোখ এখনো মোবাইলের দিকে। সেই কাবিন এর সময়ও ফোনের দিকে তাকিয়েই কবুল বলেছেন তিনি। এখনও তাই!

মামা মামী’র এই কান্নাতে আমার ওপর কোনো প্রভাব পরল না কিন্তু যখন আমার সেই ছোট্ট কলিজার ভাই’টা আমাকে জরিয়ে ধরল আমি আর পারলাম না কেঁদে দিলাম। ওকে জরিয়ে ধরেই কাঁদলাম। কারন আমাকে বোঝার মতো একমাত্র ওই’ই ছিলো। শুভ আমার গলা জড়িয়ে বলল …
– আপু তুমি যেয়ো না, তুমি চলে গেলে আমার সাথে কে খেলবে, আমাকে কে গল্প শোনাবে।
– আমি ওকে জরিয়ে কাঁদছি, কিভাবে বলবো আমি ওকে এখানে আমি আর থাকতে পারবো না। ওর বাচ্চা মন আমি কিভাবে বোঝাবো। আমি ওর চোখ দুটো মুছিয়ে দিয়ে বললাম আমি আবার আসবো। তুমি কেঁদো না।তবুও সে কাঁদতে থাকে।

হঠাৎ’ই আহিয়ান তাকে নিজের দিকে টানে।‌পকেট থেকে চকলেট বের করে তার হাতে দিয়ে বলে…
– ছিঃ তুমি না একটা ছেলে, ছেলেরা এভাবে কাঁদে। আমি কাল এসে তোমাকে নিয়ে যাবো ঠিক আছে।
আহিয়ান’র কথায় শুভ থেমে গেল। সে চকলেট’টা দেখিয়ে বলল…
– এটা আমার!
– হ্যাঁ তোমার।
– তুমি কাল আসবে সত্যি!
– হ্যাঁ আসবো।
– প্রমিস করো! ( হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দেখিয়ে )
– ( শুভ’র আঙ্গুলে নিজের আঙ্গুল মিলিয়ে ) প্রমিস।
শুভ গলা জরিয়ে ধরল আহিয়ান’র। মামী শুভ ‘কে নিয়ে বলল..
– এমন করে না বাবা আপু এখন চলে যাবে, যেতে দাও।
আয়ানা বলে উঠলো…
– গাড়িতে বসো দেরি হচ্ছে আমাদের।

আমি গাড়ি’র দরজা খুলতে যাবো আহিয়ান নিজেই খুলে দিলো। আমি ভিতরে বসলাম। আহিয়ান আমার পাশে এসে বসল। গাড়ি ড্রাইভার চালাবে। আয়ানা সামনের সিটে বসল।
খুব কষ্ট হচ্ছিল ওদের ছেড়ে আসতে। গাড়িতে বসে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলাম। হঠাৎ আহিয়ান আমার সামনে রুমাল ধরল। আমি তার দিকে তাকালাম। উনি রুমাল আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো উনি আমার এখন পর্যন্ত কথা বলেন নি। অবাক লাগল খুব!

গাড়ি এসে থামল চৌধুরী ম্যানশন এর সামনে। গাড়ি’র দরজা এসে গার্ড খুলে গেল। আমি বের হতেই ওই মেয়ে গুলো এসে আমাকে আবার ঠিকঠাক করতে লাগল। তারা আমার মুখের মেকআপ, ড্রেস সব ঠিক করে দিলো। এবার আমি সামনে দাঁড়িয়ে চৌধুরী ম্যানশন দেখতে লাগলাম। সত্যি’ই বাড়ি’টা প্রাসাদের চেয়ে কিছু কম না। এই বাড়ি’তে বিয়ে হয়েছে আমার। কেমন জানি বিশ্বাস হচ্ছিল না।

বাড়ি’র দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর আহিয়ান। ভেতরে ঢুকতে দেয় নি তা না। আপু ভেতরে গেছে। হয়তো উনার মা – বাবা এই বিয়ে’র ব্যাপারে কিছুই জানেন না। আমি আড় চোখে আহিয়ান এর দিকে তাকালাম। তার কোনো ভাবনা নেই। এখনো তার চোখ দুটি মোবাইলে’র দিকে। তখনও পুরো রাস্তায় তার চোখ এই ফোনের স্কিন থেকে সরে নি। এখনও না। কিন্তু এখন তার কানে হেডফোনও আছে। তাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে না আজকে তিনি কি কি করেছেন।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১

আমার চোখ তার গালের দিকে গেল। সেই দিনের’র চড় এর কথা মনে পড়লো। আচ্ছা এই চড়’র শোধ নিতেই কি তিনি আমাকে বিয়ে করেছেন। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। চোখের সামনে ভেসে ওঠল সেই দিনের কথা।
আমাদের ভার্সিটির পেছন’টায় খুব বড় একটা বাগান ছিলো। কিন্তু কথা সেটা না কথা হলো সেই বাগানে অনেক কাঠ বাদাম এর গাছ ছিলো। আমার লোভ ছিলো সেই কাঠ বাদামের।

সেদিন ইতি আসে নি ভার্সিটিতে। তাই আমি ছুটি’র পর পর’ই চলে আসলাম সেই বাগানে। বাগান’টা সত্যি’ই অনেক বড় ছিলো। কিন্তু খুব স্নিগ্ধ পরিবেশ ছিলো। আমি বাগানের ভিতরে প্রবেশ করলাম। কাঠ বাদামের গাছের নিচে অনেক কাঠ বাদাম ছিলো আমি সব কুড়িয়ে নিতে লাগলাম। যখন দাদি’র সাথে গ্রামে ছিলাম তখন এমন বাগান আমাদের ও ছিলো। আমি সারাদিন ঘুরে বেড়াতাম, গাছে চড়তাম। ভাবতে লাগলাম দাদি’র সাথে কাটানো সেই মূহুর্ত গুলো। দাদি খুব ভালোবাসতেন আমায়। মা বাবা ও খুব ভালোবাসতেন আমায়। যারা’ই আমাকে ভালোবাসে তারাই ছেড়ে চলে যায় আমাকে ছেড়ে।

এসব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। মন’টা হুট করেই খারাপ হয়ে গেল। হঠাৎ’ই কেউ পেছন থেকে আমার কোমর ধরে তার কাছে টানলো। ভয়ে আমার শরীর শিউরে উঠলো। আমি সাথে সাথে সামনে ঘুরলাম। আর যাকে দেখলাম তাকে দেখে আমার চোখ কপালে তুলে গেল।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৩