ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৫

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৫
লেখনিতে : মিমি মুসকান

আহিয়ান আমার হাত থেকে বোতল নিয়ে বলল…
– কি করছিলে তুমি?
– এটা মদের বোতল নাহ? ছিঃ কি বিচ্ছিরি গন্ধ এটা আপনি এইসব খান কিভাবে?
– তুমি আমার জিনিসপত্র না বলে হাত দিলে কেন?‌( আমার থেকে চোখ সরিয়ে )
– আগে এটা বলুন আপনি কি সত্যি’ই এসব খেয়ে থাকেন? ( উনার দিকে তাকিয়ে )
– তুমি বের হও এখান থেকে।
– আমি কিন্তু বাবা কে বলে দেবো।

– বাবা এখন অফিসে গেছে। বুঝলে তাই তুমি কথা বলা বন্ধ করো। ( আমার দিকে ফিরে )
– রাতে তো আসবে আমি তখন বলে দেবো দেখিয়েন।
– আচ্ছা কি জানতে চাও বলো। ( দাঁতে দাঁত চেপে )
মুখ টিপে হেসে বললাম…
– এসব কেন খেয়ে থাকেন আপনি?
চোখের পাতা এক বার বুঝে, আমার দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গলায়…

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– একাকীত্ব দূর করতে!
– কিহহহহহ ( চেঁচিয়ে বললাম )
– চেঁচামেচি করছো কেন? ( বেলকনি থেকে বেরিয়ে রুমে গিয়ে )
– আপনার একাকীত্ব বোধ হয়! ( দৌড়ে উনার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে )
– হ্যাঁ ( পাশ কাটিয়ে চলে গিয়ে )
– আরে আরে কোথায় যাচ্ছেন শুনুন তো ( আবার উনার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে )
– কি হলো যা জানতে চেয়েছো তা তো বলে দিলাম তাহলে…

– আপনার কি সত্যি”ই একাকীত্ব বোধ হয়!
– কেনো? (ভ্রু কুঁচকে ) আমি কি মানুষ না নাকি?
– এতো সুন্দর পরিবার থাকতে আপনার একাকিত্ব কেন বোধ হয়!
আমার কথায় উনি থতমত খেয়ে গেলেন। বিস্মিত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন..
– পরিবার থাকালে একাকিত্ব থাকে না মানুষের?
– একদম না! আর এক্ষেত্রে আপনার ফ্যামিলি তো কতো ভালো, কতো বোঝে আপনাকে! তাহলে…
– জীবনে এমন কিছু কথা থাকে যা কখনো সবাইকে বলা যায় না বুঝলে!

– না বুঝলাম নাহ, আপনি আমার কথা শুনুন। জীবনে কোন কথাই মানুষ এভাবে এভাবে গোপন করে এ কথা যেমন সত্য তেমন এটার বিকল্প ক্ষেত্রও কিন্তু আছে। সেটা হলো পরিবার। একটা পরিবার এর মূল্য কিন্তু সবাই বোঝে না আর যে বোঝে তার থাকে না। পরিবার এমন একটা রহমত যা সবার ভাগ্যে থাকে না। আল্লাহ তাআলা সবাকে এই ভাগ্য দেন না। সত্যি’ই খুব ভাগ্যবান সে যার একটা পরিবার আছে, আর দুর্ভাগ্য সে যার কোনো পরিবার নেই। আপনি জানেন আপনি মারা যাওয়ার পর এই পরিবার’ই আপনার কথা মনে করবে কিন্তু যার কোনো পরিবার নেই সে বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়া পুরো একটাই কথা। একাকিত্ব দূর করার জন্য তাদের থেকে দূরে না গিয়ে তাদের সাথে সময় কাটান। দেখবেন একাকিত্ব বলে কোনো কথাই থাকবে না।
উনি নিচে খুব মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনলেন।আমি তাড়াতাড়ি করে উনাকে প্রশ্ন করলাম…

– বুঝলেন!
আমার দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গালয় বললেন..
– তোমার বোঝানোর ক্ষমতা আসলে ভালো না বুঝলে আরো প্রাকটিস করতে হবে তোমায় বুঝলে। ( বলেই আমার পাশ দিয়ে চলে যেতে লাগলেন )
আমি আহাম্মক’র মতো উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি আমাকে পুরো বেকুব বানালেন। আমি উনার দিকে তাকিয়ে বড় বড় চোখ করে বলতে লাগলাম…
– আপনার জায়গা একটা মুরগির থাকলে এতোক্ষণ’এ আমি তাকে বুঝিয়ে মানুষ করে ফেলতাম আপনি জানেন!
আমার দিকে ফিরে..

– মানুষ গাধা কে পিটিয়ে মানুষ করতে পারে না আর তুমি কিনা মুরগি’কে মানুষ করতে বাহ্!
– হ্যাঁ তো। সত্যি’ই তো বললাম।
– হ্যাঁ বুঝেছি মুরগি টা তাহলে নিশ্চয়ই তোমার মতো পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসেছিলো। তাহলে পারতে…
– এতো বড় অপমান!
– অপমান কোথায় করলাম?
– ওহ্ আচ্ছা তাহলে কি প্রশংসা করলেন!
– না তাও না!
– আপনি দেখি সেধে সেধে আমার সাথে ঝগড়া করছেন। ওহ্ আমি তো ভুলেই গেছিলাম আপনি তো আহিয়ান চৌধুরী, আর আহিয়ান তো সেধে সেধে’ই ঝগড়া করে এটা তো উনার অভ্যাস।

– কি বললে তুমি!
– একবারে সত্যি’ই কথা!
– খুব বেশি কথা বলছো ইদানিং ধরে.. ( আমার দিকে আগাতে আগাতে )
পিছুতে লাগলাম। হঠাৎ করেই বিছানায় গিয়ে বাঝলাম। হাত দিয়ে পেছন থেকে একটা বালিশ নিলাম আর উনাকে বলতে লাগলাম…
– তো ভয় নাকি আমি আপনাকে যে কথা বলা যাবে না!
– তাহলে ভয় পাওয়া ছেড়ে দিয়েছো…
– নিহা কাউকে ভয় পায় না বুঝলেন। বলেই উনার গায়ে বালিশ মারতে লাগলাম।
– আরে নিহা কি করছো ছাড়ো ছাড়ো।
– আজ তো মোটেও ছড়বো না। সবকিছু’র শোধ নেবো আজ।

বলেই আরো জোরে জোরে মারতে লাগলাম। উনি আমার দৌড়াতে লাগলেন। আমি উনার পিছু পিছু যাচ্ছি। একসময় উনি গিয়ে সোফায় বসলেন। আমি তবুও মারছি। কিছুক্ষণ পর’ই বালিশের সব তুলে বের হতে লাগল। আমি তাও মারছি। তুলো সব উড়ছে। একসময় বালিশ পুরো ফাঁকা হয়ে গেলো। আমি উনার দিকে তাকালাম।
উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি উনাকে দেখে এক পা পিছু হলাম। উনি দাঁড়িয়ে শরীর ঝেরে নিলেন। তারপর আমার দিকে ফিরে আমার মাথা থেকে একটা তুলো হাতে নিয়ে বললেন…

– বাহাদুরি শেষ.. ( ঠান্ডা গলায় একদম )
উনার কথায় আমি শুকনো ঢোক গিললাম। কারন উনি ঠান্ডা গলায় মানেই এখন বোম বাস্ট হবে। এটার প্রমাণ আগেও পেয়েছি! আমি দাঁত বের করে হেসে যেতে নিবো উনা আচমকা আমার দুই হাত ধরে পিছনে নিয়ে আটকে ধরলেন। আমি উনার খুব কাছে ছিলাম। উনি দাঁতে দাঁত চেপে আমাকে বলতে লাগলেন..
– এখন ইচ্ছে করছে তোমাকে আছাড় মারতে বুঝলে…
– কি আপনি আমায় আছাড় মারবেন। আমার কোমর ভেঙ্গে ফেলবেন। মাআআআআআআআ… ( চেঁচিয়ে )
উনি আমার মুখ চেপে ধরলেন..
– এই এই কি হচ্ছে, চেঁচাচ্ছো কেন?

– ….
– কি হলো কথা বলছো না কেন?
আমি চোখ দিয়ে ইশারা করলাম উনার হাত আমার মুখে। কথা বলবো কিভাবে?
– ওহ্ আচ্ছা সরি সরি, ( হাত সরিয়ে ) এখন বলো!
– কি বলবো‌ আবার, আপনি আমাকে আছাড় মারবেন আর আমি চেঁচাতে পারবো না, বাবাআআআআআআআ! ( আবার চেচালাম )
আবার আমার মুখে হাত দিয়ে..
– কি করছো আবার কেন চেঁচাও কেন?
– উমম উমম
– আচ্ছা আচ্ছা ( হাত সরিয়ে ) বলো!
– মাআআআআআ,বাবাআআআআআ

– আরে আরে তুমি তো দেখছি কথা’ই শুনছো না ( মুখে আবারও হাত দিয়ে )
– উমম উমম..
– আচ্ছা তুমি কি চাও বলো তো? আমি আগের মতো তোমাকে কথায় কথায় পানিশমেন্ট দেই। ভালো লাগবে তোমার। আচ্ছা তোমার না লাগলেও বলতে পারো আমার কিন্তু বেশ লাগবে। ( ভ্রু নাচিয়ে )
– করুণভাবে তাকিয়ে মাথা নাড়লাম যার অর্থ না।
– ঠিক আছে।‌

মুখের থেকে হাত সরিয়ে আমাকে একটা ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো। আমি দাঁড়িয়ে সারা ঘর দেখছি। আসলেই অবস্থা অনেক খারাপ। উনি যেতে গিয়ে আবারো বেক নিয়ে বললেন..
– সার্ভেন্ট পাঠিয়ে দিচ্ছি ও পরিষ্কার করবে তোমার কিছু করা লাগবে না।
আমি উনার দিকে তাকানোর আগেই সে চলে গেলো। আমি হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে বেলকনিতে দাঁড়ালাম। এখান থেকে আকাশ টা খুব সুন্দর দেখায়। আজ আকাশ’টা খুব পরিষ্কার। এই আকাশ টাও না অদ্ভুত। কখনো সাদা থাকে তো কখনো নীল। সচরাচর দিনের বেলায় নীল’ই দেখা যায় আর মাঝে মাঝে’ই দু’বর্ণ ধারন করে।‌ আর সন্ধ্যা’য় তো আছে’ই লাল বর্ণ।

আকাশের দিকে তাকাতে তাকাতে দোলনায় বসে পরলাম। দোলনা টা খুব সুন্দর দেখতে আর বসতেও বেশ।‌ হুট করেই উনার পানিশমেন্ট’র কথা মনে পড়লো।
উনাকে চড় মারা’র কারনে ভয়ে দু’দিন ভার্সিটিতে যায় নি। সেদিন ভার্সিটিতে গিয়ে চোরের মতো ঢুকলাম। ক্যাম্পাসে কোথাও উনাদের দেখলাম না। আমি চুপচাপ ক্লাস রুমে গিয়ে ইতি’র পাশে বসে রইলাম। ইতি তো আমায় দেখে বেজায় খুশি। আবার অভিমান ও করলো। ২ দিন আসিনি বলে।
আমি ওকে সব কথা খুলে বললাম। আমার সাথে সাথে সেও ভয় পেয়ে গেল। দু’জনেই চুপ। হঠাৎ’ই কয়েকজন মেয়ে আসল। তাদের চিনতে কষ্ট হলো না কারন তারা আহিয়ান’র এর ফ্রেন্ড নিতি , আনিকা আর টিনা। এদের দেখে ভয়ে আমার আত্না শুকিয়ে গেল। ওরা রুমে আসা পর’ই বলতে লাগল..

– নিহা কে?
আমি ভয়ে ঢোক গিলে ইতি’র দিকে তাকালাম। ইতি মাথা নাড়িয়ে না বললো। যেহেতু আমাকে তেমন কেউ চিনে না তাই কেউ’ই বলতে পারলো না। তারপর ওরা হাতে কিসের পেপার বের করলো। সেটার দিকে তাকিয়ে আমাদের সবার দিকে তাকাতে লাগল। হুট করেই আনিকা আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল…
– এই তো এই মেয়ে..
সাথে সাথে সবাই আমার দিকে তাকাল। আমি ভয়ে ভয়ে উঠে দাঁড়ালাম‌। নিতি আমার কাছে এসে গাল ধরে এদিক ওদিক করে পেপার টা দেখতে লাগলো। আমি বুঝতে বাকি রইল না এই পেপারে আমার ছবি আছে। আমি মনে মনে বললাম…
– নিহা আজ তো তুই শেষ!

নিতি আমার হাত টেনে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। ইতি আমার পিছন পিছন দৌড়াতে দৌড়াতে আসল। নিতি আমার হাত ধরে ‌ক্যাম্পাসে নিয়ে গেল। তারপর আমার হাত ছিটকে ফেলল। আমি গিয়ে একটা গাড়ি তে বারি খেলাম।চোখ তুলে উপরে তাকিয়ে দেখি আহিয়ান গাড়ি’র ওপরে বসে ফোন টিপছে। আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।

আশপাশ তাকিয়ে দেখি আরো কয়েকজন ছেলে, এরা সবাই তার বন্ধু।‌ আকাশ,‌ নাহান আর আনাফ। সবাই বাঁকা হাসি হেসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ইতি দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আহিয়ান’র সামনে দাঁড়িয়ে বলে..
– ভাইয়া ও বুঝতে পারে নি।‌প্লিজ এবারের মতো ক্ষমা করে দিন ওকে।‌
টিনা ইতি কে একটা ধমক দিয়ে বলে..
– এই মেয়ে তুমি এতো দরদ কিসের,‌ এতো দরদ থাকলে পানিশমেন্ট নিতে পারো।
এদিকে আহিয়ান এর কোনো পাত্তা নেই। সে একধ্যানে ফোন টিপছে।‌ আমি ইতি কে চোখের ইশারায় চুপ থাকতে বলি। সে চুপ হয়ে যায়।

আনাফ বলে ওঠে…
– আচ্ছা কি পানিশমেন্ট দেবো!
নাহান বলে ওঠে..
– যেটাই দেবার দে, কিন্তু শিক্ষা হওয়া চাই।
আনিকা আমার কাছে আসতে আসতে..
– হ্যাঁ এটা ঠিক বলেছিস, এমন পানিশমেন্ট দেবো যেন সারাজীবন মনে থাকে!
নিতি এসে আমার গাল চেপে ধরে..
– ঠিক বলেছিস, সাহস কতো আমার আহি’র দিকে হাত বাড়ায়। ওকে তো আমি..
টিনা নিতি’র ঘাড়ে হাত রেখে বলে ওঠে…
– আরে আরে থাম থাম, একটা কাজ করতে করলে কেমন হয়, ওর হাত টা মুচরে দেই।
নিতি বাঁকা হাসি দিয়ে বলে..

– ঠিক বলেছিস, হাত’টাই মুচরে দেই তাহলে বেশ হবে। যে হাত দিয়ে আমার আহি’কে মারল সেই হাত’টা রাখার দরকার কি।
আমি ব্যাথায় কুঁকড়ে ওঠছি। খুব জোরে গাল চেপে ধরে আছে আমার। আমি কোনো কথাই বলতে পারছি না।ভয়ে আমার মুখ থেকে কথাই বের হচ্ছে না।
আকাশ বলে ওঠে..
– নিতি থাম, এসব আহি পছন্দ করে না। হাত ভাঙা, মুচরে দেওয়া এসব বাদ। অন্য কিছু বল!
– টিনা : আজকের রোদ টা কিন্তু সেই?
– আনিকা : হ্যাঁ ঠিক বলেছিস, এখন রোদের তাপ অনেক।
নিতি বাঁকা হাসি দিয়ে…
– আমি বুঝতে পেরেছি।

বলেই আমাকে মাঠের মাঝে রোদে দাঁড় করিয়ে দেয়। তারপর আমাকে ধমক দিয়ে বলে..
– এক পা ওঠাও!
আমি তাড়াতাড়ি করে এক পা ওঠা’ই। টিনা ধমকে বলে ওঠে..
– কানে হাত দাও!
আমি কানেও হাত দেই। আনিকা এসে তার ব্যাগ গুলো আমার হাতের মধ্যে রেখে বলে..
– ব্যস! ছুটি হওয়া অবধি এভাবে সং সেজে দাঁড়িয়ে থাকো।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৪

বলেই সবাই জোরে হেসে ওঠে। তারপর তারা গাড়ির কাছে যায়। আমি এখান থেকে আহিয়ান কে গাড়িতে বসা অবস্থায় দেখছি। সবাই আমাকে দেখছে, হাসছে, মজা করছে। ইতি অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে।‌আমি মুচকি হেসে ওর দিকে তাকাই । কিন্তু এতো কিছু’র মধ্যে আহিয়ন একবারও আমার দিকে ফিরে তাকালো এটা। কিন্তু আমি ওর দিকেই তাকিয়ে আছি। কিন্তু এতে ওর কোনো ভাবনা নেই। ওকে দেখে মনেই হচ্ছে না এখানে কিছু হচ্ছে। কেমন শান্ত ভাবে বসে আছে ‌। মানুষ এভাবে বসে থাকে কিভাবে।

প্রায় ২ ঘন্টা হয়ে গেছে,আমি এখনও এভাবে দাঁড়িয়ে আছি। রোদের তাপ মনে হচ্ছে আরো বাড়ছে। মাথা ঘুরছে এখন আমার। পা আর রাখতে পারছি না। বার বার পরে যাচ্ছে। চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। নাহ আর সম্ভব না। পরে যেতে লাগলাম মনের কথা হলো কেউ এসে আমার বাহু ধরল। আমি ঝাপসা ঝাপসা চোখে আহিয়ান কে দেখলাম। মনে হলো উনি আমার বাহু ধরে আছে। আসলেই এক হাত দিয়ে উনি আমার বাহু ধরে আছে আর অন্য হাত দিয়ে ফোন টিপসে। কি ছেলেরে বাবা এখানে মানুষ মরে যাচ্ছে তবুও উনার ফোন টেপা কমছে না।

উনি আমাকে ধরায় উনার সব বন্ধু দৌড়ে আসে। তার সাথে ইতিও। উনি আমাকে দাঁড় করিয়ে আকাশের কাছে পানির বোতল চায়। আকাশ অবাক হয়ে পানির বোতল উনাকে দিলে উনি এবার ফোন টা পকেটে রাখে। তারপর বোতলের ছিপি খুলে আমার মাথায় সব পানি ফেলতে লাগে। আমি অবাক হয়ে উনার কান্ড দেখছি। উনি আমার দিকে’ই তাকিয়ে আছে।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৬