ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৬

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৬
লেখনিতে : মিমি মুসকান

আহিয়ান’র এমন কাজে আমি’সহ সবাই হতবাক।সে এটা কি করলো কেন করলো আমি বুঝলাম কিন্তু মাথায় পানি ঢালা’য় আগের থেকে এখন আমার একটু ভালো লাগছে। আহিয়ান আমার মাথায় পানি ঢালার পর আনিকা তাড়াতাড়ি করে এসে তার ব্যাগ নেয়। সে আহিয়ান কে খুব বকাবকি করতে থাকে কারন তার ব্যাগ নাকি পানি পরে নষ্ট হয়ে গেছে।

এখানে আমিও পুরো ভিজে একাকার। সবাই আহিয়ান কে প্রশ্ন করছে কিন্তু সে কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে যায়। সব বন্ধু’রা তার পিছন পিছন যেতে থাকে। কিন্তু নিতি, আনিকা আর টিনা যাবার আগে আমাকে আবারও শাসিয়ে যায়। সবাই চলে গেলে ইতি এসে আমার পাশে দাঁড়ায়।‌সে আমাকে ধরে নিয়ে সামনের বটগাছের নিচে বসায়। খুব ক্লান্ত আমি।‌ রোদের তাপে যেন পুরে যাচ্ছিলাম এতোক্ষণ। এখন একটু ভালো লাগছে।‌ একটা চড়ের দাম এতো ভয়ানক হবে ভাবি নি।‌শুধু কি তাই আবার শাসিয়ে গেলো তারা আমায়,‌ছেড়ে দেবে না কোনোমতে।
পরেরদিন ভার্সিটিতে অনেক ভয়ে ভয়ে আছি, কালকের ঘটনার জন্য এখনও সবাই আমাকে দেখে হাসছে।।
কি আজব মানুষ নাহ, এখানে আমি ভয়ে মরে যাচ্ছি আর তারা হেসে মজা নেয়। বলে লাভ নেই কারন যুগ’টাই এমন। ক্লাস রুম এ বসে ক্লাস করছিলাম। টিনা, আনিকা আর নিতি ওদের কাউকে দেখি নি এতোক্ষণ। ইতি’কে জিঙ্গেস করতেই বলল..

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– শয়তান এর নাম নিলি আর শয়তান হাজির।
কথাটার অর্থ প্রথমে না বুঝতে পারলেও পরে ঠিক বুঝলাম।‌কারন বাইরে তাকিয়ে দেখি তারা এসেছে আর আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। ইশারায় বলছে বের হতে। পরলাম মহা বিপদে কারন স্যার’র ক্লাস চলছে আমি এখন বের হবো কিভাবে? কিন্তু তাদের রাগি চোখের ধমকানিতে আমি ভয়ে ভয়ে স্যার এর ক্লাস থেকে বের হলাম। ইতি আসতে চাইলো কিন্তু আমি মানা করলাম। কি দরকার শুধু শুধু আমার জন্য ওর অপমান হওয়ার।
আমাকে বের হতে থেকেই নিতি আমার হাত শক্ত করে ধরল। আমি ভয়ে ভয়ে বলতে লাগলাম..

– আপু কি হয়েছে?
– কি হয়েছে জিজ্ঞেস করছিস?
– মানে আপু?
টিনা বলে ওঠে..
– ন্যাকামি ছাড় তো!
আনিকা আমার গাল চেপে বলে ওঠে..
– তোর পানিশমেন্ট এখনো বাকি!
আমি ভয়ে ভয়ে নিতি কে বললাম..
– কাল তো পানিশমেন্ট দিলে আজও পানিশমেন্ট!
নিতি চোখ রাঙিয়ে বলে ওঠে..

– কালকের পানিশমেন্ট কি পূরন করেছিলি, নাহ করিস নো তো তাহলে। বলা হয়েছিলো ভার্সিটিতে ছুটির আগ অবদি,কই তুই তো তার আগেই হার মানলি!
– কিন্তু আপু আমি তো..
– চুপ মুখে মুখে কেন তর্ক করছিস?
– যা বলবো তাই করবি, নাহলে ভার্সিটি থেকে বের করে দেবো!
আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম। এখন যদি ভার্সিটিতে থেকে বের করে দেয় তাহলে পরবো কোথায়? তাই আর কথা বাড়ালাম না। মাথা নিচু করে রইলাম।
নিতি হেসে বলে ওঠে..

– এইতো গুড গার্ল। এখন আমার সাথে চল, বুঝলি!
আমি কিছু না বলে তাদের পিছন পিছন যেতে লাগলাম। তারা আমাকে আবারও ক্যাম্পাসের সামনে নিয়ে আসলো। নিতি ওঠে তার গাড়ি’র ওপর বসলো। তারপর তার পা এগিয়ে দিয়ে বললো…
– নে পরিস্কার কর!
আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমানিত করতে চায় তারা। আমি নিতি’র মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। নিতি ধমকের সুরে বলল..
– কি হলো কি বললাম!
আমি চুপচাপ আপু’র পায়ের কাছে গেলাম। ব্যাগ থেকে একটা কাপড় বের করতে যাবো নিতি চেঁচিয়ে বলে উঠল..

– এটা না তোর ওড়না দিয়ে পরিস্কার কর!
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি। এতো অপমান আর নিতে পারছি না। কিন্তু কিছু বলতেও তো পারছি না। আমার চোখে জল চলে আসলো। মাথা নিচু করে গাড়ি’র সামনে বসে ওড়না দিয়ে’ই পরিস্কার করলাম। আনিকা,টিনা বাকি সবাই দেখে হাসতে লাগলো। আমি নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলাম। জুতা পরিস্কার করা হলে নিতি গাড়ি থেকে নেমে আমার কাছে এসে বলতে লাগল..

– আজকের জন্য এটা যথেষ্ট বাকি টা কাল দেবো।
বলেই তারা ৩ জন চলে গেলো। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আর দাঁড়ালাম না। দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসলাম। ক্যাম্পাসে এক কোণায় বসে কাঁদতে লাগলাম। সত্যি’ই ভাগ্য টা আমাকে বার বার ধোঁকা দিচ্ছে। আচ্ছা আমি কি ইচ্ছে করে এসব করেছি নাকি। ভুলে হয়েছিল মানছি ক্ষমাও চেয়েছি তারপর বার বার এসব করার মানে কি।
ঘাড়ে কারো স্পর্শ পেয়ে তাড়াতাড়ি চোখ মুছে ফেললাম। তাকিয়ে দেখি ইতি..

– তুই!
– ওরা আবার তোকে অপমান করেছে নাহ!
– বাদ দে তো। এসব আমার ভাগ্যে এভাবেই থাকে…
– আমাদের স্যার এর কাছে বিচার দাওয়া উচিত চল আমার সাথে!
– না এমন করিস না প্লিজ তাহলে ওরা আমাকে ভার্সিটি থেকে বের করে দেবে।
– তাই বলে এভাবে অপমানিত হতে থাকবি।
– আরে ওরাও দেখবি এভাবে অপমান অপমান করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাবে। তারপর আর করবে না।
– তুই পারিসও , আচ্ছা ততোদিন কি তুই ওদের অপমান সহ্য করবি।
– ভুল যখন করেছি তাহলে শাস্তি তো পেতেই হবে।
– আহিয়ান ভাইয়া এমন আমি আগে ভাবিনি।
– আচ্ছা বাদ দে এইসব। আমার দেরি হচ্ছে আমি গেলাম।
– হুম চল। আমিও যাবো
– চল!

দুইজন মিলে বেরিয়ে পরলাম। ভার্সিটিতে থেকে বের হবার সময় তাদের সবাইকে দেখলাম আড্ডা মারতে। আহিয়ান ওরা সবাই ছিলো। নিতি ওরা আমাকে দেখে আবার ও হাসতে লাগলো। কিন্তু কিছু বললাম না আমি।

পরদিন ভার্সিটিতে এসে ভয়ে ভয়ে ঘুরছি, আল্লাহ করুক আজ যেন দেখা না হয়।‌ জানি না দেখা হলে কি করবে আজ আমার সাথে। ক্লাসে যেতে যাবো দেখি ৩ বান্ধবী সেখানে দাঁড়িয়ে হয়তো আমার অপেক্ষায় করছে।‌আমি তাদের দেখে দেওয়ালের কোনায় লুকিয়ে পরলাম।

অপেক্ষা করছি তারা সেখান থেকে গেলে আমি ক্লাসে যাবো। হঠাৎ দেখি তারা আমার দিকেই আসছে। কি করবো কি করবো বুঝতে পারছি না। পেছন ফিরে দৌড়াতে যাবো কারো সাথে ধাক্কা পরে যেতে নিলাম। আমি চোখ বন্ধ করে তার শার্ট আঁকড়ে ধরলাম। কিছুক্ষণ পর চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি আমি আহিয়ান এর শার্ট আঁকড়ে ধরে আছি। আমার সারা শরীর কাপতে শুরু করলো। সামনে তাকিয়ে দেখি আনাফ, নাহান আর আকাশ ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আহিয়ান তো ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।‌আমি তাদের দেখে শুকনো ঢোক গিললাম।

কিন্তু এরপর যা হলো আমি তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। পাশে নিতি আমাকে দেখে রাগে ফুঁসছে। আমি ঠিক’ই বুঝলাম আজ আমার শেষ দিন। আহিয়ান শার্ট থেকে আমার হাত ছাড়িয়ে চলে গেলো। কিছু বললো না আমায়।
কিন্তু এদিকে নিতি, টিনা আর আনিকা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। তারা আমার কোনো কথা শুনতে রাজি না। আমি বুঝতে পারছি না এরপর কোন‌‌ বিপদ অপেক্ষা করছে আমার জন্য।

তারা আমাকে টেনে ভার্সিটির স্টোর রুমে নিয়ে গেল। আমি নিতি কে অনেক অনুরোধ করছি কিন্তু সে আমার কথা শুনলো না বরং আমাকে রুমের মধ্যে ফেলে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। পুরো রুম অন্ধকার, কেউ নেই। আমার খুব ভয় করছে।‌আমি‌ খুব জোরে জোরে দরজা বাড়ি দিতে লাগলাম..
– আপু শোন না প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও না। আমার খুব ভয় করছে এখানে, খুব অন্ধকার এখানে।
– ভয় পাওয়ার জন্য’ই এখানে এনেছি। থাক এখানে তাহলে বুঝতে পারবে আহি’র দিকে চোখ তুলে তাকানোর পরিনতি কি।

– আপু বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি।
– অনেক হয়েছে এই চল এখান থেকে।
– আপু না আপু শোন আপু..
নাহ আর জবাব দিলো এলো না।‌ সবাই চলে গেলো,‌আমি আশপাশ দেখছি। সত্যি’ই খুব অন্ধকার চারপাশ। দিনের সময় হলে কি হবে এই রুমে একটা জানালা দূর কোনো আলো নেই। ভয়ে আমার প্রাণ যায় যায় অবস্থা। আমি অন্ধকারে খুব ভয় পাই ছোটবেলা থেকে।
আমি কোনোমতে এক জায়গায় হাত পা গুটিয়ে বসে আছি। কেন জানি মনে হচ্ছে আশ থেকে শব্দ আসছে। আমার খুব ভয় করছে। জানি না কি হবে।

অনেকক্ষণ পার হয়ে গেলো, নিতি এখনো আসে নি। আমি আর থাকতে পারছি না। শুধু কেঁদেই যাচ্ছি।‌ আমার কাছে কোনো ফোন নেই যে কাউকে ফোন করে বলবো আসতে।
হঠাৎ’ই বাইরে কারো চলা ফেরার শব্দ পেলাম। আমি তাড়াতাড়ি ওঠে দরজা বারি দিতে লাগলাম। কিন্তু সে চলে গেলো। আমি আবারও দরজা’র ধারে বসে কাঁদতে লাগলাম। ভয়ে আমার অবস্থা খারাপ হতে লাগে। মাথা ঘুরছে আমার। আমি আবার কারো আসার শব্দ পেলাম। শরীরে কোনো শক্তি‌ পাচ্ছি না তবুও নিজের সর্বস্ব দিয়ে বারি দিতে লাগলাম।‌
কেউ মনে হলো দরজা খুললো। আমি তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকালাম। তাকে দেখে বলে ওঠলাম…

– ইতি..
– নিহা!
জরিয়ে ধরলাম ইতি’কে। ওকে ধরে আবার কাঁদতে, ইতি আমাকে সামলাতে থাকে। আমাকে বসিয়ে পানি খাওয়ায়। আমি কিছু’টা স্বাভাবিক হই।
ইতি বলে ওঠে…
– আমি তোকে পুরো ভার্সিটি খুঁজতে থাকি। কিন্তু খুঁজে’ই পাই না। একজন কে জিজ্ঞেস করায় বললো নিতি আপু নাকি তোকে এখানে নিয়ে এসেছে। তাই আমি এখানে আসি। কিন্তু কোথাও তোকে খুঁজে না পেয়ে চলে যেতে নিলে স্টোর রুম থেকে আওয়াজ পাই। তবে মনের ভুল ভেবে চলে যায় তারপর আবার কেন জানি মনে হলো তুই এখানেই তাই আসলাম। ভাগ্যিস আসলাম নাহলে…
চুপচাপ বসে আছি। কথা বলতে ইচ্ছে করছে না আমার। খুব ক্লান্ত লাগছে নিজেকে। ইতি কে বললাম..

– বাসায় যাবো!
– হ্যাঁ চল আমি তোকে দিয়ে আসি।
– না আমি একাই যেতে পারবো।
– কিন্তু..
– ইতি বললাম তো।
– ঠিক আছে। তাহলে তোকে একটু এগিয়ে দেই।
– হুম চল!

ইতি আমাকে কিছু টা এগিয়ে দিলো। তারপর একা একা বাসায় আসলাম। বাসায় ফিরে দেখি মামী বাসায় নেই। পরলাম বিপদে, দরজা তালা মারা। এখন কি করবো? অনেকক্ষণ ধরে বসে রইলাম কিন্তু মামী আসলো না। দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতে চলল মামী’র আসার নাম নেই। বুঝতে বাকি রইল না মামী তার মা’র বাসায় গেছে, সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরবে না। আমি বেরিয়ে পরলাম টিউশনি করতে।

খুব ক্ষিদে পেয়েছে সকাল থেকে এখনো কিছু খায়নি। ব্যাগ এ হাতিয়ে ৪০ টাকা পেলাম। হুট করেই মনে পরলো আজ তো মাসের ১ তারিখ তার মানে আজ কেউ না কেউ তো বেতন দিবেই। তাই ৪০ টাকা থেকে ১০ টাকা দিয়ছ ঝালমুড়ি কিনলাম। ঝালমুড়ি খেতে খেতে রিতা’র বাসায় গেলাম। রিতা আমার স্টুডেন ক্লাস টু এর ছাত্রী। ওর মা খুব ভালো ১ তারিখে আমার বেতন দিয়ে দেন। আমি জানতাম আজ বেতন পাবোই পাবোই।
রিতা’কে পড়াতে লাগলাম, তখন আন্টি এসে এ’মাসের বেতন দিয়ে গেলো। ২ হাজার টাকা। যাক বই কিনার টাকা হয়ে যাবে। নতুন বই কেনা লাগবে তো আবার।

রাফি আর তারা কে পড়িয়ে বাসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম। তারা বেতন দেয় নি। দিতে একটু দেরি হবে বললো কিন্তু তাও মন’টা খুশি একজনের টিউশনি তো পেলাম।‌
বাসায় এসে দেখি মামী এসে পরেছে, আমার ছোটভাই’টা আমাকে দেখে এসে জরিয়ে ধরল। আমি ওর কপালে চুমু দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। ঘরের সব কাজ যেমন তেমন’ই পরে আছে। জানি আমাকে’ই করতে হবে। কাজ করা শুরু করলাম। কাজ সব শেষ করে গোসল করতে গেলাম। সারাদিন’র খুব ধকল গেছে আমার।
গোসল করে রুমে এসে দেখি মামী আমার ব্যাগ হাতাচ্ছে। আমি অবাক হয়ে মামী কে বললাম..

– কি করছো মামী?
আমাকে দেখে অনেক অবাক হলো। আবার ভয় ও পেল। তারপরও কড়া কড়া গলায় বলল..
– কি করছিলাম মানে টাকা নিতে এসেছিলাম। দেখি তুই গোসল করতে গেলি তাই খুঁজতে লাগলাম কিন্তু টাকা কোথায়? আজ তো বেতন পাবার কথা টাকা নেই কেন?
– টাকা ওখানে নেই মামী আমি সরিয়ে রেখেছি যদি হারিয়ে যায় তাই!
– তুই কি আমাকে বললি!
– না মামী কি বলছো তুমি এইসব।
– অনেক হয়েছে এবার টাকা দে..

– মামী বলছিলাম কি এবার টাকা একটু দেরি করে দেই আমার কিছু বই কেনা লাগবে। শুধু রিতা’র আম্মু বেতন দিয়েছে আর কেউ দেয় নি। ওরা দিলে আমি তোমাকে দিয়ে দেবো।
– তুই মিথ্যে বলছিস কেন আমায়, তোর মতলব কি বলতো টাকা কি দিবি না আমায়
– না মামী এমন কিছু না, সামনে পরিক্ষা বই কেনা দরকার। আমি তো তোমায় বললাম বেতন পেলে তোমাকে টাকা দিয়ে দেবো।
– তার মানে তুই টাকা দিবি না।
– না মা…
কিছু বলার আগেই মামী রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বেরিয়ে গেলো। বুঝলাম খুব রেগে আছে। কিন্তু আমার কিছু করার নেই বই যে কেনা লাগবে।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৫

সারাদিন কিছু খায়নি অনেক ক্ষিদে পেয়েছে, মামী’র কাছে গিয়ে খেতে চাইলাম। মামী আমার সামনে কিছু পান্তা ভাত আর পিঁয়াজ দিয়ে বললো খেতে নিতে। তারা আজ দাওয়াত খেতে গিয়েছিলো তাই কিছু রাঁধে নি। কিন্তু আমার বেশ মনে আছে সকালে আমি রান্না করে গিয়েছিলাম কিন্তু আজ টাকা দেয় নি বলে মামী ইচ্ছে করেই আমার সাথে এমনটা করল।

ভাত মুখে দিতেই বুঝতে পারলাম এগুলো নষ্ট হয়ে গেছে কিন্তু কিছু করার নেই খুব ক্ষিদে পেয়েছে আমার তাই সেগুলো খেয়ে নিলাম। খাবার খেয়ে রুমে এসে পড়তে বসলাম কিন্তু তার আগে টাকা’টা বইয়ের ভেতর থেকে বের করে ব্যাগ এ রাখলাম। পড়তে পড়তে একসময় ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে মামী’র চেঁচামেচি’তে ঘুম ভাঙল। মামী ঘুম চেঁচামেচি করছে। কি হলো জানতে বাইরে গেলাম। গিয়ে দেখি মামী মেঝেতে বসে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছে। আমি বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। আমি মামী’র সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মামী আমাকে দেখে মামা’র কাছে বলতে লাগলো…

– এই তো এসেছে নবাবজাদি, আমার টাকা চুরি করে শান্তি তে ঘুমিয়েছিল মুখপুড়ি।
আমি মামী’র কথা শুনে হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম কি বলছে মামী এইসব।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৭