ভালোবাসি বলে দাও পর্ব ৪

ভালোবাসি বলে দাও পর্ব ৪
Suraiya Aayat

সকাল সকাল ঘুম ভাঙিয়ে দিয়ে আম্মু আমাকে তার সামনে পুতুলের মতো বসিয়ে রেখে তৈরি হচ্ছে ফারিন আপুর বাসায় যাওয়ার জন্য আর আমি ওনার দিকে বিরস ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছি তার একটাই কারন, আম্মু চাইছে যে আমিও তার সাথে সঙ্গ দিয়ে ফারিন আপুর বাসায় যায়। কিন্তু সে ভালোভাবেই জানে তার মেয়ে বিশ্ব ঘাড়ত্যাড়া তাই যতখন না তিনি বাসার বাইরে পা রাখছে তার আগ অবধি তিনি আমাকে তার সাথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
আম্মুকে দেখেও না দেখার ভান করছি। আম্মু ক্ষনিক ক্ষনিক বলে উঠছে,

‘ফারিন এর মা কাচ্চি খুব ভালো বানায়, বোরহানি টাও। তুই না গেলে কিন্তু পরে আফশোষ করবি।’
আমি আম্মুর দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই তিনি তাতেও একেবারে দমে গেলেন না, পুনরায় বললেন,
‘ওদের বাসাতে সুইমিং পুল আছে, একটা গোলাপী রাঙের কাঠগোলাপ গাছ ও আছে। ‘
কাঠগোলাপ নিয়ে কোন বিতর্ক নয়, আমি মনে করি সাদা কাঠগোলাপের সাথে পৃথিবীর অন্য কোন কাঠগোলাপের তুলনা চলে না তাই এবার আর একেবারেই চুপ করে থাকতে পারলাম না আমি, নিরবতা ভেঙে বললাম,
‘আম্মু কি শুরু করছো কি। কি পাচ্ছো এসব বলে। তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি যাবো না। তারপর আমার প্রিয় জিনিসগুলোকে নিয়ে লোভ দেখাচ্ছো।’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আম্মু এবার তার গোছগাছ ফেলে আমার কাছে বসে আমার গালে হাত রেখে বললেন,
‘কি হয়েছে মা এরম করছিস যে। তুই তো বিরিয়ানির কথাতে না করিস না আর গেলেই বা সমস্যা কি? আর কালকে সকালেই তো ফিরে আসবো। ‘
আমি এবার রেগে গেলাম খুব।
‘তুমি আমার প্রিয় জিনিসগুলো নিয়ে এভাবে ইমোশোনালি ব্ল্যাকমেইল করবে না, আর ফারিন আপুর বাড়ি লাল কাঠগোলাপ কেন কোন ফুল গাছই থাকতে পারে না মোটেও কারন উনি একটা রাক্ষসী, ওনার বাসায় সুন্দর জিনিস কিছু থাকতে পারে বলে আমার বিশ্বাস হয় না। ‘
ওনাকে রাক্ষসী বলাতেই আম্মু ধমক দিল।
‘এভাবে কেও কাওকে বলে? তাছাড়া অতো ভালো মেয়েটাকে নিয়ে তোর এত রাগ কিসের? সামনে থাকলেও কথা বলিস না খুব একটা আমি লক্ষ করেছি। ‘

ওনার প্রতি সাই দিয়ে আম্মু একের পর একটা কথা বলেই চলেছে। আমি আর মানতে পারছি না কোনরকমে। বিরক্তির সর্বোচ্চ সীমায় পৌচ্ছাছে বিষয়টা। আমিও ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে উঠলাম,
‘সে ই বা কখন আমার সাথে ভালোভাবে কথা বলে? ‘
আম্মু তখন বোকা বনে গেল একটু। সত্যিই উনি কখনও নিজে থেকে আমার সাথে কথা বলেন না।
‘ও তোর থেকে বয়সে বড়ো তাছাড়া বুয়েটে পড়ে, দেখতেও সুন্দর। আর তুই ছোট মানুষ তোর সাথে কি এমন কথা বলবে, তাই হয়তো বলে না। ‘
আম্মুর কথাতে রাগ আর একটা চাপা কষ্ট দুই কাজ করছে আমার মাঝে। সহ্য হলো না আর, আমি উঠে দাঁড়ালাম আর বললাম,

‘আর কদিন পরই তো তোমার ভাগ্নার বউ হবে সে, তাদের বিয়ের পর ২৪ ঘন্টা ভাগ্নার শ্বশুর বাসায় গিয়ে সময় কাটিয়ে এসো, আমার সমস্যা নাই কিন্তু আমাকে এর মধ্যে টানবে না তুমি কখনও। আর রেডি হলে বেরিয়ে যআবে আমাকে আর ডাকবে না। ‘
কথাটা বলে রুম থেকে আমি বেরিয়ে গেলাম তড়িঘড়ি করে।
আচ্ছা ফারিন আপু উনি কি সত্যিই এতোটা ভদ্র নাকি ভদ্র হওয়ার অভিনয় করেন? কই আমার সাথে তো উনি তেমনটা নন।

ঘরে গিয়ে দরজাটা সপাটে আটকে দিলাম আমি। কিন্তু এ রাগ আমি কাকে দেখালাম। এই পুরো রুমাটাকে নাকি আমার নিজের মাঝেকার আর এক আরুকে? আফশোষ আমার রাগ বোঝার মতো কেও নেই। বাবা কাজের সূত্রে বাসায় নেই আজ পনেরো দিন, কথা দিয়েছিল আমার উনিশতম জন্মদিনের পরদিনই তিনি ফিরে আসবেন, আমি অপেক্ষাতে আছি। আসলে ওনাকে সব অভিযোগ ব্যাক্ত করবো। বাবার বুকে মাথা রেখে আমি যে শান্তি পাই তা আর কোন কিছুতে পাইনি কখনো।

মুরব্বীরা বলে রাগ হলে নাকি চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়তে হয়, আমার রাগ সহজে কমার নয় তাই চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলাম আমি প্রায় বিশ মিনিট ধরে, আম্মু দশ মিনিট আগে বেরিয়ে গেছে। যাওয়ার আগে আমাকে কতোবার দরজা খোলার জন্য বলেছিলেন তা মনে নেই। যাওয়ার আগে ঠিকমতো সময়ে খাওয়ার কথা বলেছেন। বাসার রহিমা খালা নাকি বিকালে আসবেন আর আজকে রাতে বাসাতেই থাকবেন, কারন আমাকে বাসায় রেখে আমার চিন্তা মাথায় করে আম্মু বেরিয়েছে তাই।

অনেকখন পর রাগটা কিছুটা কমেছে।কালকে রাতের পর আরিশ ভাইয়া আর ফোন করেননি। তার কথা আমার যে সব সময় মনে পড়ে তেমনটা নয়। বিশেষ বিশেষ সময়ে আমার তার কথা মনে পড়ে, যেমন সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়, কলেজে যাওয়ার সময়, বাসায় ফেরার সময় আর সন্ধ্যা থেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত। আমার গোটা টাইম টেবিল জুড়ে ওনারই বসবাস। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার টাইম টেবিল থেকে যদি ওনাকে সম্পূর্ণ রূপে বাদ দেওয়া যেত তাহলে অনেক ভালো হতো। কিন্তু যখন উনি মেডিকেল পারপাস বা ডিউটির জন্য আমার টাইম টেবিল থেকে সাময়িকের বিরতি নেন তখন অদ্ভুত কোন কারণবশত সেই দিন গুলো আমার পার হয়ে উঠতেচাই না। এই যেমন আজ! কেন এমনটা হয় আমি তা জানি না। আর হয়তো কখনো জানতেও চাই না।

আম্মু বলেছে জরুরি তলব ব্যাতিত মাঝে মাঝে ল্যান্ডলাইন থেকে তাকে ফোন করতে। আচ্ছা তাদের কি আমার মতো আরিশ ভাইয়ার কাজকর্মের প্রতি আঙুল উঠাতে ইচ্ছে করে না? যেমন এই যে আমার ফোনটা তিনি নিজের কাছে বাজেয়াপ্ত করে রেখে দিলেন তার জন্য কি আমার বাসার লোক আমার হয়ে কথা বলবে না। উনি কি মি ফারফেক্ট? যার কোন সিদ্ধান্ত ভুল হতেই পারে না এমন এক ধারনা আমার বাসার লোক তাদের মনের মাঝে পুষে রেখেছে ওনার জন্য। কথাগুলো ভাবলেই আমার ব্রেন এর নিউরোন গুলো যেন ক্লান্ত হয়ে যায়। ঘুমাবার চেষ্টা করলাম জানি বৃথা ঘুম আসবে না।

এক বিশেষ রেসিপিতে এক্সপেরিমেন্ট এর কথা মাথায় আসতেই বিছানা থেকে এক লাফে নেমে পড়লাম। এখন সারা বাসা জুড়ে কেও নেই আর এই সময় আর এখনই শুরু হবে আমার নানান রকমের এডভেঞ্চার।
সময়ে অসময়ে কফি বানানো আমার অভ্যাস অবশ্যই তা আরিশ ভাইয়ার জন্য। উনি সবসময় কফি খান, বেশি স্ট্রেস পড়লে চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি। আমি কখনো খাওয়ার চেষ্টা করিনি তবে আজকে নিজেও একটু ট্রাই করে দেখলে কেমন হয়?

কফিটা বানিয়ে দুটো কাপে ঢাললাম, একটা আমার আর একটা আশরাফ চাচার জন্য, উনি আমাদের বাসায় বিগত পনেরো বছর ধরে সিকিউরিটি হিসাবে আছেন,ছোট থেকেই চাচাকে দেখছি। চাচীকে ভীষনরকম ভালোবাসেন তিনি। অবশ্য এখন আর চাচী নেই, চাচীকে উনি ভীষনরকম মিস করেন। মাঝে মাঝে মন খারাপ হলেই চাচার কাছে যাই তার আর চাচীর প্রেমের গল্প শুনতে, আগে বয়স অল্প থাকার দরুন চাচা শোনাতেন না তবে এখন আর বলতে দ্বিধা বোধ করেন না কারন এখন আর আমি তো আর ছোট নেই।
কফিটা নিয়ে চাচার সামনে বসলাম। চাচা আমাকে দেখতেই একগাল হাসি হেসে উঠতেই আমি বললাম,

‘চাচা এটা খেয়ে বলেন তো কেমন খেতে! ‘
চাচা বেশ আগ্ৰহ দেখিয়ে বললেন,
‘এইডা কি বানাইসো আরু মামনি?
আমি পানসে মুখ করে বললাম,
‘এক জন এই কফিটা খাই তাই আমি ভাবলাম কেমন হয় খেয়ে দেখি। ‘
চাচা মুচকি হেসে এক চুমুক নিতেই তার মুখ জুড়ে আধার ছেয়ে গেল, কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম কেমন হবে তাই নিজের আর চাচার প্রতি মহব্বত দেখিয়ে এক চামচ চিনিও দিয়ে এনেছিলাম। আচ্ছা এতো কড়া কফি উনি কি করে খান? চাচার পরপর আমিও এক সিপ নিতেই নিজের জ্বিভের প্রতি মায়া মহব্বত দেখিয়ে আর চাচার প্রতি আমার ভালোবাসা দেখিয়ে বললাম,

‘চাচা এটা আর খেয়ো না ‘
চাচা আমার সাথে মতমিল করে বললেন,
‘এমন কড়া কফি খাই কেমনে? যে খাই তার কি নিজের প্রতি মহব্বত টহব্বত একদম ই নাই নাকি? ‘
আমি বিড়বিড়িয়ে বললাম,
‘তার নিজের প্রতি দিব্যি মায়া মহব্বত আছে, নেই শুধু আমার প্রতিই। হাহ! ‘
চাচকে বললাম,

‘চাচা আজকে তোমার আর চাচীর গল্প শুনবো। আচ্ছা কি হয়েছিল চাচীর? ‘
চাচার গলা ফিকে হয়ে এলো, আর চক্ষু জোড়ার দৃষ্টি শীতল হয়ে এলো। আমিও শান্ত দৃষ্টিতে চাচার দিকে তাকিয়ে শুনতে লাগলাম চাচীর শেষ সময়ের গল্প, ওনার চোখে জল ভাসছে আমি তা বুঝতে পারছি, আমার গলা ধরে আসছে এক চাপা কষ্টে।
চাচা কতোই না ভালোবাসেন তার প্রিয় মানুষটাকে। আচ্ছা আমাকে কি কখনো কেও এভাবে ভালোবাসবে? কিংবা তার থেকেও বেশি!

চাচার গল্প শুনে মনটা ভালো লাগছে না একদমই। রহিমা খালার সাথেও গল্প করেছি বেশ কিছুখন। তাকে আমি কাজকর্ম থেকে ছুটি দিয়েছি, খালা এখন টিভি দেখছেন। কাল আমার উনিশতম জন্মদিন। অন্যবার যেমন অনেক অনেক আনন্দ আমার ভিতরে ফুটে ওঠে এবার তার ছিটেফোঁটাও পাচ্ছি না আমি। চাচার বলা ভালোবাসার কথাগুলো শুনে আমার বুক এর ভিতর হু হু করছে যেন। কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না, সব কষ্টগুলো যেন গলায় এসে দলা পাকিয়ে যাচ্ছে।

আমার স্পষ্ট মনে আছে আগের বার জন্মদিনে আরিশ ভাইয়া যখন একটা নির্জন ঝিলের ধারে আমাকে ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলেন আর উনি তখন বলেছিলেন,
‘মাত্র আঠারো। ভেবো না যে বড়ো হয়ে গেছো। ‘
আমি তখন নাকের ডগায় রাগ দেখিয়ে ওনাকে বলেছিলাম,
‘আমি বাচ্চা? মোটেও না। আঠারো বছর হয়ে গেছি আমি এখন মোটেও বাচ্চা না। আঠারো বছর বয়সে কতো মানুষের বিয়ে অবধি হয়ে যায়, বাচ্চাও হয়ে যায় আর আপনি আমাকে বাচ্চা বলছেন? ‘
ওনার দিক ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই উনি আমার পাশে দাঁড়িয়ে বেশ অনেকটাই ঝুঁকে আমার মাথার সাথে ওনার মাথায় একটা ঠোকর খাইয়ে বলেছিলেন,

‘তুমি আমার কাছে এখনো বাচ্চাই। যেদিন তুমি আমার কাধ অবধি হবে সেদিন তুমি ভাবতে পারো যে তুমি বড়ো হয়েছো! না হলে বুঝবে তুমি আমার চোখে বাচ্চাই। ‘
আমি ওনার দিকে মুখ গোমরা করে অভিমানী সুরে বলেছিলাম,
‘ হ্যাঁ তা তো বলবেনই কারন আপনি তো জানেন যে এই পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চির বেশি আমি আর লম্বা হবো না আর আপনার মতো পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি লম্বা নারিকেল গাছের মতো খাম্বা হওয়ার আমারও ইচ্ছা নেই। ‘
আমার কথা শুনে উনি মুখ চেপে হেসেছিলেন। আমার মাথার সাথে হাত দিয়ে ওনার হাত অবধি ইশারা করছিলেন আর আমি ধানীলঙ্কা হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর উনি মিটিমিটি হাসছিলেন।

এক বছর আগের স্মৃতিগুলো আমার চোখে ভাসছে। এবার আমি একা। ঝগড়া করার জন্য হলেও আমার ওনাকেই দরকার। বুক এর ভিতর একরাশ শূন্যতা কাজ করছে আমার আর মস্তিষ্ক যেন নিষ্প্রাণ। আম্মু অনেকবার কল করেছে ল্যান্ডলাইনে, আমি একবার কথা বলার পর আর বলিনি, বারবার রহিমা খালার হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়েছি।
অনেকখন হলো উপরে এসেছি। নীচ থেকে টিভির আওয়াজ আসছে না আর, এগারোটা বাজে প্রায়। জানালা দিয়ে দেখলাম আবহায়াটা চমকপ্রদ।

ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না আর, ওড়নার আর নিলাম না, এতো রাতে তো আর আমাকে কেও দেখতে আসছে না। কথাটা ভেবে ছাদের দিকে এগোলাম আর গিয়ে বসলাম দোলনায়, দোলনার শিকলে মাথা রেখে নিস্তব্ধতার একান্ত সঙ্গ দিচ্ছি আমি। আজ বড্ড একা লাগছে নিজেকে, মনে হতে লাগলো খুব কঠিন সময় পার করছি। এতোটা একা আমার আগে কখনো লাগেনি। চোখটা বন্ধ করে পায়ের ধাক্কায় দোলনাটা মৃদু পায়ে দোলাতে লাগলাম, হঠাৎ দোলনার ওজনকে ভারী করে কেও একজন অতি সন্তর্পণে আমার পাশে এসে বসলেন। আমার শরীরটা ভয়ে ছমছম করে উঠলো। তৎক্ষণাৎ চোখ খুলে পাশে তাকাতেই ওনাকে দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি। আরিশ ভাইয়া বসে আছেন আমার পাশে আমারই সাথে তবে আমার দিকে ওনার বিন্দুমাত্র নজর নেই, তিনি সামনে তাকিয়ে আছেন অচেনা একটা ভাব নিয়ে। আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে ওনার গায়ে একটা টোকা নিয়ে বললাম,

ভালোবাসি বলে দাও পর্ব ৩

‘আপনি সত্যিকারের আরিশ ভাইয়া তো? ‘
উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকাতেই আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম। ঘোর ভাঙলো ওনার কন্ঠের চিরাচরিত ডাক শুনে,
‘এই মেয়ে! ‘

ভালোবাসি বলে দাও পর্ব ৫