মনের পিঞ্জরে পর্ব ২৯+৩০+৩১ || Ariyana Nur

মনের পিঞ্জরে পর্ব ২৯+৩০+৩১
Ariyana Nur

ফ্লাশব‍্যাকঃ
পার্কের ঘটনার পরের দিনঃ
আজ ইশফা ভার্সিটিতে না যাওয়ার ফায়দা উঠালো ইশরা।ইশরা,তুশির সাথে যোগাযোগ করে ইশফা সেজে ভার্সিটিতে গেল।যেহেতু তারা দেখতে এক রকম তাই কাছের মানুষ ছাড়া তাদের কে কেউ সহজে চিনতে পারে না।
ইশরা,তুশি ভার্সিটিতে আসার পর থেকে হন‍্য হয়ে সানকে খুজেই যাচ্ছে।
ইশরা বিরক্ত হয়ে বলল……

—ঐ তুলশি পাতা।ঐ সূর্য টূর্য কি আজকে ভার্সিটিতে আসছে নাকি আহে নাই।ব‍্যাটারে খুজতে খুজতে কিন্তু আমার পায়ের দফা রফা হইয়া যাইতাছে।
তুশিঃকথা কম ক’ তুই।তুই যে কি করতে চইতাছোস তা আমি কিছুই বুঝতে পারতাছি না।যদি তোর লিগা ইফু আমারে কিছু কয় বা কোন বিপদে পরি তইলে তর খবর আছে।
ইশরা বিরক্ত হয়ে বলল……
—পরের ডা পরে দেখা যাইবো এখন ঐ সূর্য ব‍্যাডারে খোজ।আমার গারে থাপ্পড় মারার মজা তো তারে বুঝামুই।ব‍্যাটায় আমারে যেই থাবড়া মারছে গালডা আমার এহনও ব‍্যাথা করতাছে।
—তখন তো থাপ্পড় মারলে সান ভাইয়ার যেই রাগি দেখিস তোরে যেন আছাড় না মারে।
—ধুর ছেড়ি ভয় দেখাইস না তো।যা হওনের হইবো এহন চল ব‍্যাটারে আগে খুইজা বের করি।

সান ফাকা এক ক্লাশরুমে মন মরা হয়ে বসে রয়েছে।সাথে শিপন,নিরব বসে সানকে পর্যবেক্ষণ করছে আর টুকটাক কথা বলছে।কি হয়েছে কয়েকবার জিগ্যেস করার পর সানের থেকে কোন উওর না পাওয়ায় তারা আর সানকে বিরক্ত করেনি।সানের হাতে,মাথায় বেন্ডেজ।চেহারা কেমন ফ‍্যাকাসে হয়ে রয়েছে।চোখ গুলো অসম্ভব লাল হয়ে রয়েছে।চোখগুলো জানিয়ে দিচ্ছে সান যে কাল না ঘুমিয়ে কাটিয়েছে।
হুট করে এলি সানের সামনে এসে ন‍্যাকা কন্ঠে বলে উঠল……

—সান জান কেমন আছো তুমি?শুনলাম তুমি নাকি অসুস্থ।কি হয়েছিলো তোমার?জানো কত টেনশন হচ্ছিল তোমার জন‍্য।আমি তো তোমার সাথে দেখা করতে তোমার বাড়িতেও যেতে চেয়েছিলাম।কিন্তু মাম্মাম যেতে দেই নি।মাম্মাম কি বলেছে জানো,বলেছে বিয়ের আগে নাকি মেয়েদের হবু শ্বশুর বাড়ি যেতে নেই।(লাজুক হেসে)
এলির কথা শুনে শিপন ফিসফিস করে নিরব কে বলল…..

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—দোস্ত আমাদের এলি আফায় তার জানের জন‍্য এতোই টেনশনে ছিলে যে টেনশনের জন‍্য আটাময়দার জায়গায় মুখে ভেসন মেখে বসে রয়েছে।দেখোস না মুখ কেমন লাল হয়ে রয়েছে।
এলির কথার উওরে সান কিছু না বলে চুপকরে বসেই রইল।
এলির নজর সানের হাতের ব‍্যান্ডেজ এর দিকে পরতেই এলি সান এর হাত ধরে ব‍্যাস্ত গলায় বলল……
—সান জান তোমার হাতে কি হয়েছে?এতো বড় ব‍্যান্ডেজ করেছো কেন?কিভাবে ব‍্যাথা পেয়েছো?
সান গম্ভীর গলায় বলল…..
—এলি হাত সরা।
এলি ন‍্যাকামি করে বলল…..

—কেন জান ব‍্যাথা পাচ্ছো।দাড়াও আমি এখনি ব‍্যাথা ঠিক করে দিচ্ছি।
কথাটা বলেই এলি সান এর বেন্ডের এর মধ‍্যে ফু’দিয়ে হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।
শিপন আবারো ফিসফিস করে বলল…..
—নিরব এর ন‍্যাকামি থামা।এর ন‍্যাকামি আমার আর সহ‍্য হচ্ছে না।
নিরবঃসান যে কেন এভাবে চুপ করে বসে রয়েছে তাই তো বুঝতেছি না।এর ন‍্যাকামি তো আমারও সহ‍্য হচ্ছে না।
ইশরা আড়ালে থেকে এতোক্ষন এলির কাহিনী দেখছিলো।ইশরা ফিসফিস করে বলল…..
—ঐ তুলশি পাতা এই রঙিঢঙি মাইয়াডা কেরে?
—আর বলিস না এ হলো এলি।সান ভাইয়ার পিছে আঠার মত পরে থাকে।জানিস এই মেয়েটা না ইশফাকেও বহুত কথা শুনিয়েছে।এর কথাই তো বলেছিলাম তোকে।তোর মনে নেই?
ইশরা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল…..

—মনে থাকবো না ক‍্যান।খুব ভালো করে মনে আছে।এবার দেখ এই এলি,চেলির কিভাবে ব‍্যান্ড বাজাই।আমার কলিজারে কথা শোনানোর মজা আজ এরে টের পাওয়ামু।
এলি সান এর হাতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সাথে এটা সেটা বলে যাচ্ছে।সান চুপ করে থ’ মেরে বসেই রয়েছে।
ইশরা এসে এলির হাত খপ করে ধরে রাগি গলায় বলল…..
—লজ্জা করে না পর পুরুষের গায়ে হাত দিতে।আপনার সাহস কি করে হয় আমার জি…থুক্কু আমার সান এর গায়ে হাত লাগানোর?আর এই যে আপনি এমন দেবদাস হয়ে বসে রয়েছেন কেন?বউ মরে গেছে না প্রেমিকা পালিয়ে গেছে।(সানকে উদ্দেশ্য করে)
সান ইশরার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকাতেই ইশরা সাথে সাথে মাথা নিচু করে ফেলল।
এলি রাগি গলায় বলল…..

—এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমার গায়ে হাত লাগানোর?তুমি জানো আমি কে?
ইশরা ভেংচি কেটে বলল…..
—জানবো না কেন আপনি হলেন,এলি, চেলি, রঙি,ঢঙি।
এলি রাগে গজ গজ করে বলল…..
—এতো বড় সাহস তোমার তুমি আমাকে রঙি,ঢঙি বলছো।তোমাকে তো আমি…..
এলি ইশরাকে থাপ্পড় মারার জন‍্য হাত উঠাতেই ইশরা এলির হাত ধরে ফেলল।
এলি ইশরার থেকে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু পারলো না।
ইশরা এলির হাত মোচড় দিয়ে বলল……
—ভুলেও এই ভুল করতে আসবেন না।
আপনিও কথা বলছেন আমিও বলছি এর মধ‍্যে হাত কেন চালাতে গেলেন।এবার তো মুচড়ে দিয়েছি দ্বিতীয় বার পুরো ভেঙে দিব।
কথাটা বলেই ইশরা এলির হাত ঝাড়া মেরে ছেড়ে দিল।
এলি সানকে হাত দেখিয়ে ন‍্যাকা কান্না করে বলল……

—দেখো জান এই মেয়েটা আমার হাতের কি করেছে?কিছু বলো একে।
ইশরাঃএ কি বলবে আমাকে হ‍্যা এ কি বলবে?আপনার সাথে আমার লেগেছে একে কেন মাঝে টানছেন।
এলিঃসান দেখেছো এই ছোটলোকটা আমার সাথে কেমন ব‍্যবহার করছে।
ছোটলোক শুনেই ইশরার মাথায় রক্ত উঠে গেলো।ইশরা দাতে দাত চেপে বলল……
—আমি ছোটলোক না।এবার দেখবেন এই ছোটলোক কি করে?
সান,হাত ভাজ করে চুপ করে দাড়িয়ে রয়েছে।সবাই হা করে ইশরার দিকে চেয়ে রয়েছে।ইশরা ব‍্যাগ থেকে খুজে ছোট একটা প‍্যাকেট বের করল। প‍‍্যাকেট থেকে কালারিং গ্লিটার হাতে নিয়ে এলির মুখের লাগিয়ে দিল।
ইশরার এই কাজে সবাই হা হয়ে গেলো।এলি রাগে গজ গজ করতে করতে কিছু বলার আগে ইশরা পুনরায় গ্লিটার এলির চুলের মধ‍্যে লাগিয়ে দিল।
রিধি ওদের খুজতে এখানে এসে এলির এমন অবস্থা দেখে নিজের হাসি আটকিয়ে রাখতে না পেরে ফিক করে হেসে দিল।হাসতে হাসতে বলল…..

—হায় আল্লাহ্ এলি আপু তুমি এমন সং সেজে দাড়িয়ে রয়েছো কেন?
কথাটা বলে রিধি আবার হাসতে লাগলো।
শিপন মিটমিট করে হেসে বলল…..
—এলি এমনিতেও তো তোর সান জানুর জন‍্য চিন্তা করতে গিয়ে আটাময়দার জায়গায় ভুলে ভেসন মেখে এসেছিলি। এখন ইশফা তোর মেকআপ পুরো সেট করে দিয়েছে।
নিরবঃআহা শিপন এভাবে কেউ বলে।এলি এদের কথায় কান দিস না বিশ্বাস কর তোকে পুরো চমকিলা লাগছে।
নিরবের কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো।ইশরাও মিটমিট করে হাসছে।
এলি রেগে গর্জে উঠে বলল…..

—ইউ ইশফা তোমাকে আমি দেখে নিব।
ইশরা ভেঙচি কেটে বলল…..
—যান যান আগে নিজেকে দেখেন পরে না হয় আমাকে দেখবেন।
এলি সবার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে ধুপধাপ পা ফেলে চলে গেলো।সবাই এলির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো।
ইশরা হাসতে হাসতে সান এর দিকে চোখ পরতেই ইশরার হাসি থেমে গেলো।সাথে সাথে ইশরা মাথা নিচু করে ফেলল।সান ইশরার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
সান, ইশরার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল……
—কে আপনি?
ইশরা কিছুটা সাহস জুগিয়ে তুতলিয়ে বলল…..
—ঢ-ঢং এ-এখন আমাকে চিনছে না।
চিনতে পারছেন না আমি কে?
সান আবারো গম্ভীর গলায় বলল…..
—প্রশ্নটা আমি আগে করেছি?

সান এর লাল লাল চোখ রাগি ফেস গম্ভীর গলার আওয়াজ শুনে ইশরা ভিতরে ভিতরে কাপতে লাগল।ইশরা যতটুকু সাহস নিয়ে সান এর তেরোটা বাজাতে এসেছিল তা আস্তে আস্তে ফুস হতে লাগলো।
ইশরা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।মনে মনে ভাবতে লাগলো কিভাবে এখান থেকে পালাবে।ফোনের রিংটন কাজে যেতেই ইশরা চেচিয়ে বলল…..
—ফোন!কার যেন ফোন বাজছে।
সান ইশরার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই ইশরা মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বলল……..
—না মানে দরকারি ফোন ও তো হতে পারে তাই বলছিলাম।
রিধির ফোনে কল এসেছে।ইশরার কথা শেষ হতে না হতেই রিধি ব‍্যাগ থেকে ফোন বের করে স্কিনে ইফু নামটা দেখে বলল…….
—ইফু তোর ফোন কি বাড়িতে রেখে এসেছিস?দেখ তোর নাম্বার থেকে কল এসেছে।
ইশরা মনে মনে ইশফাকে বকে বলল…..

—ইফুরে হাটে হাড়ি ভেঙে দিলিরে হাটে হাড়ি ভেঙে দিলি।আসছিলাম এই সূয‍র্রে মজা দেখাতে এখন আমি আমার নান্নিছি জান নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবো কিনা কে জানে।আল্লাহ্ গো….তুমি আমারে দেইখো।যদি আমি এখান থিকা জান নিয়া ফিরা যাইতে পারি তাইলে আমি রাস্তায় যেই ভিক্ষুক পামু তারে দুই টাকা না,না পাচ টাকা দিমু।এর বেশি কিন্তু আল্লাহ্ আমি দিতে পারুম না। তুমি তো জানো আমি নিজেই বড় ভিক্ষুক।মা,ইফুর কাছ থিকা ভিক্ষা কইরা টাকা নেই।আল্লাহ্ গো আমারে বাচাইও।
ইশরা তুতলিয়ে বলল……
—লা-লাইন কেটে দাও।ধরতে হবে না।আমার ফাজিল বোনটা মনে হয় দুষ্টুমি করে কল দিচ্ছে।(মুখের মধ‍্যে মিথ‍্যে হাসি ঝুলিয়ে)
—রিধি ফোনটা ধর।আর স্পিকারে দাও।
সানের কথা শুনে রিধি একবার সান এর দিকে আরেকবার ইশরার দিকে তাকাচ্ছে।রিধি দোটানায় পরে গেলো কল রিসিভ করবে কি না। এর মধ‍্যে কলটা কেটে গেলো।দ্বিতীয় বার রিং হতেই সান রিধির হাত থেকে ফোন নিয়ে কল রিসিভ করে স্পিকারে দিল।সাথে সাথে অপর পাশ থেকে ভেসে এল…….

—হ‍্যালো রিধি।আমি ইশফা বলছি।
কথাটা শোনার সাথে সাথে সবাই অবাক হয়ে ইশরার দিকে তাকালো।রিধির কোন কথা না শুনতে পেয়ে ইশফা আবার বলল….
—রিধু আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস?
সান রিধিকে ইশারা করে কথা বলতে বললে রিধি কাপাকাপা গলায় বলল……
—হ‍্যা বল শুনছি।
—আমি অসুস্থ মা কিছুতেই ভার্সিটিতে যেতে দেয় নি।শোন বলছিলাম কি ঐদিকের কোন খবর আছে?(কিছুটা আমতা আমতা করে)
রিধি ইশরার দিকে তাকিয়ে ঘোরের মধ‍্যে থেকে বলল……
—কিসের খবর?
—না কিছু না এমনি।রাখি আল্লাহ্ হাফেজ।
সবার নজর ইশরার দিকে আর ইশরা মাথানিচু করে কাচুমাচু করে দাড়িয়ে আছে।সান রাগি গলায় বলল…..
—কি হল কিছু বলছেন না কেন?কে আপনি?
কথাটা বলার পর ইশরার থেকে কোন উওর না পাওয়ার সান ইশরার দিকে আগাতে নিলেই ইশরা দু’গালে হাত রেখে কাদো কাদো হয়ে বলল…..

—ভাইয়া মারবেন না প্লিজ।কালকের ব‍্যাথা এখনো কমেনি।
ইশরা কথা শুনে সান মুচকি হেসে ইশরার সামনে গিয়ে এক হাতে কান ধরে নরম গলায় বলল……
—সরি আপু ভুল হয়ে গেছে।আসলে কালকে তোমাকে ঐ অবস্থায় দেখে ইশফা ভেবে মাথা কাজ করাই বন্ধ করে দিয়েছিল।তাই তো অমন রিয়েক্ট করেছিলাম।সরি এই ভাইয়া প্লাস জিজুকে কি মাফ করা যায় না শালিকা সাহেবা।
ইশরা হা করে সানের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল……
—তার মানে আপনি ধরে ফেলেছেন আমি ইশফা নই?
—প্রথমেই বুঝে গেছি।
—তাহলে এতোক্ষন ধরে?
সান কিছু না বলে মুচকি হাসলো।
এখানে কি হচ্ছে তুশির মাথায় ঢুকলেও বাকিদের সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। তারা অবাক হয়ে তাকিয়েই রয়েছে।কোন কথা বলার ভাষা খুছে পাচ্ছে না।

রেস্টুরেন্টে সবাই এক টেবিলে গোল হয়ে বসে রয়েছে।সবার নজর খাবারের দিক থেকে ইশরার দিকে বেশি।ইশরার দিকে সবাইকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইশরার নিজেকে এলিয়েন মনে হচ্ছে।
ইশরা সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে বলল……
—আমি কি এলিয়েন সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে রয়েছো কেন?
রিধিঃআমার তো মনে হচ্ছে তুমি ভূত।ইফুর রুপ নিয়ে এখানে এসেছো সবার ঘাড় মটকাটে।
ইশরা হাসতে হাসতে বলল…..
—আসলেই আজ আমি ইফু সেজে ভাইয়ার তেরোটা বাজাতে এসেছিলাম।কিন্তু ভাইয়ার ঐ রাগি ফেস,ভূতদের মত চোখ দেখে আমার হাওয়াই ফুস হয়ে গেছে।
ইশরার কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো।
নিরবঃইশফার যে একটা জমজ বোন আছে তা আমরা কেউ জানতাম।তোমাকে দেখার পরেও দুজনকে আমি একসাথে দেখলে গুলিয়ে ফেলবো কে কোনটা।

ইশরাঃআমাদের কাছের লোকরাই গুলিয়ে ফেলে।কিন্তু আমি আপনাদেরকে একটা টিপস দিতে পারি সহজে আমাদের চেনার।ইফুর নাক বোচা।তাই সবার আগে নাকের দিকে খেয়াল করবেন তাহলেই বুঝে যাবেন।
শিপনঃতা না হয় বুঝলান কিন্তু সান তুই কিভাবে ইশরাকে চিনলি?
সান চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে কালকের পার্কের ঘটনা বলল।কিছুক্ষন সময় চুপ থেকে টেবিলের উপর হাত রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে মিনমিনে গলায় বলল…..
—পার্ক থেকে বাসায় যাওয়ার পর কিছুক্ষন ভাঙচুর করেও নিজের মধ‍্যে কেমন যেন একটা ফিল হচ্ছিল।বার বার ইশরার এক কথাই কানে বাজছিলো, চোখের দেখাও ভুল হতে পারে।তাই মাথাটা একটু ঠান্ডা করে ইশফার সম্পর্কে অন‍্যের মাধ‍্যমে ঘন্টাখানেক এর মধ‍্যে সব খবর জোগার করি।সারা রাত গিল্টি ফিল করেছি কিভাবে আমার দ্বারা এতো বড় একটা ভুল হয়ে গেলো।
সান একটু থেমে আবার বলল…..

—আজ যখন এলি এসে কথা বলছিলো তখন আমি ইশরাকে আড়ালে গিয়ে লুকতো দেখেছি।তাই তো চুপ ছিলাম।
নিরবঃসব না হয় বুঝলাম কিন্তু তুই বুঝলি কিভাবে এটা ইশফা নয়?
সান মুচকি হেসে বলল……
—ইশফা কখনো কারো সামনে মাথা নিচু করে না।মাথা সোজা রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে।যেই জিনিসটা ওর আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগে।ও যতোই সামনের মানুষটাকে ভয় পাক না কেন তা তার চোখে ফুটে ওঠে না।আর সব থেকে বড় কারন হল….
সান থেমে যেতেই শিপন সান এর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল….
—আর…….
সান আবারো মুচকি হেসে বলল……
—মন বলছিলো এটা ইশফা নয়।চেহারা এক বললেও চোখ বলছে ও ইশফা নয়।
ইশরা হেসে বলল……
—আয় হায় আপনি দেখি এক দেখাতেই আমাদের চিনে নিয়েছেন।
সান অনুতপ্ত হয়ে বলল……

—সরি কালকের ব‍্যবহারের জন‍্য।আসলে কাল মাথা ঠিক ছিলো না।
ইশরাঃকি যে বলেন না।সরি বলে আর লজ্জা দিবেননা প্লিজ।আপনাকে কিন্তু আমার খুব পছন্দ হয়েছে আপনার মত একজনকেই খুজছিলাম আমার ঐ পাজি বোনটার জন‍্য।
সানঃযাক ভালো একজনের তো তাহলে পছন্দ হলো আমাকে।তোমার বোন তো আমাকে দেখতেই পারে না।
ইশরা মুচকি হেসে বলল……
—কে বলেছে ইফু আপনাকে দেখতে পারে না?ইফু চাপা সভাবের ওর মনের কথা মুখে আনা বাঘের মুখ থেকে খাবার ছিনিয়ে আনা সমান। ইফুকে আমি ফাষ্ট দেখেছি ফেমেলি ছাড়া অন‍্য কারো জন‍্য কান্না করতে।তুমি যেদিন হাসপাতালে ছিলে সেদিন প্রচুর কান্না করেছে।ইশরা মলিন হেসে বলল…..

—সরি তুমি বলে ফেললাম।আসলে আমার অভ‍্যাস খারাপ। হয় তুমি বলি না হয় তুই।আপনি শব্দটা মুখ দিয়ে বেরই হয় না।
সানঃসমস‍্যা নেই তুমি তো আমার ছোট বোনের মতই।ভাইয়া যখন বলছো তাহলে তুমি করেই বলো।
ইশরা কিছু না বলে মুচকি হাসলো।
সান তারপর কিছুদিন ইশফার মতিগতি বুঝার জন‍্য ইশফা থেকে লুকিয়ে থেকেছে।আর রিধিকে দিয়ে বলিয়েছে,ও বেড়াতে গিয়েছে।ইশফার চোখ যে ভার্সিটিতে গিয়ে প্রতিদিন সানকে খুজেছে তা রিধি,তুশি দুজনই বুঝতে পেরেছে।ওরা নানান ভাবে ইশফার মনের কথা জিগ্যেস করলে ইশফা সব সময় এড়িয়ে গিয়েছে।

এদিকে এলির বাসা থেকে বিয়ের জন‍্য জোর দিতেই সান সরাসরি মানা করে দেয়।সান সাফ জানিয়ে দেয় বিয়ে করলে ইশফাকে করবে নয়তো কাউকে নয়।সান এর জিদ সম্পর্কে সবাই জানে।তাই আর কেউ অমত করেনি।মিঃশিকদার অমত করলেও তার মায়ের জন‍্য আর বেশি কিছু বলতে পারে নি।মেয়ের খোজ খবর নিয়ে তাড়াও রাজি হয়ে যায়।
সান এর ফেমেলি রাজি হবার পর সান ভার্সিটিতে এসে সবাইকে খবর দেয় তার ফেমেলি রাজি।আর কালকে তার ফেমেলি ইশফাকে দেখতে যাবে।

সান এর সাথে এলির বিয়ের ব‍্যাপারটা রিধি মজা করে ইশফাকে বলেছিল।তাতেই যত গন্ডগোল লেগেছে।পরের দিন ইশফা অসুস্থ থাকার কারনে সান এর ফেমেলির লোক আর ইশফাকে দেখতে যেতে পারেনি।সান এর ফেমেলির লোক ইশফাকে দেখতে যাওয়া,সান এর সাথেই যে ইশফার বিয়ে হচ্ছে ইশফাকে সারপ্রাইজ দেবার জন‍্য কেউ ইশফাকে বলেনি।অবস‍্য সারপ্রাইজ বলা চলে না।কেননা বিয়ের আগে সবাই বলেছিলো ইশফাকে ছেলে দেখে ছেলের সাথে কথা বলে নিতে।কিন্তু সে করেনি।তাই আর কেউ সান এর কথা জানায়নি।
বর্তমানেঃ
ইশফা চুপচাপ বসে রয়েছে।সবার মুখে সবটা শুনে নিজেই স্তব্দ হয়ে রয়েছে।ওর পিঠপিছে ওকে নিয়েই কতো কিছু হয়ে গেছে অথচ ওই কিছু জানে না।ইশফা কি রিয়েক্ট করবে তাই বুঝতে পারছে না ওদের কাজে খুশি হবে নাকি রাগ করবে?

ভার্সিটির মাঠের মধ‍্যে এলির গালে পর পর দু থাপ্পড় পরায় সামনের মানুষটার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে রয়েছে এলি।সামনের মানুষটা আর কেউ না ইশফা।ইশফা রাগি চোখ এমন ভাবে এলির দিকে তাকিয়ে রয়েছে মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই সে এলিকে ভস্ম করে দিবে।মাঠের সবাই অবার হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।এলি পুরো মাঠে একবার চোখ বুলিয়ে তেজি গলায় বলল…..
—ইউ….তোমার সাহস হয় কি করে আমাকে থাপ্পড় মারার?
কথাটা শেষ করতে না করতেই এলির গালে আরেকটা থাপ্পড় পরল।এলি চেচিয়ে বলল……
—ইউ ছোটলোক তুমি আবার আমাকে থাপ্পড় মারলে?ইউ তুমি জানো আমি তোমার কি হাল করতে পারি?
ইশফা রাগি গলায় বলল….
—শুধু তো থাপ্পড় মেরেছি।ইচ্ছে তো করছে তোর এই সুন্দর গাল দুটো থাবরিয়ে লাল বানিয়ে ফেলি।
এলি চেচিয়ে বলল…..

—তোমার সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার?তোমাকে আমি?
এলি ইশফাকে থাপ্পড় মারার আগেই ইশফা এলির হাত ধরে হাত মুচরে দিয়ে রাগি গলায় বলল…..
—সাহস আমার বরাবরই একটু বেশি।এখন অব্দি তো সাহসের কিছুই দেখিস নি।আগেই বলেছিলাম আমার সাথে লাগতে আসিস না।শুনিসনি তো আমার কথা।আমি ভালোর ভালো খারাপের জম।
এলি হাতে ব‍্যাথা পেয়ে ব‍্যাথায় কুকরে উঠে শব্দ করতে লাগলো।ইশফার হাত থেকে হাত ছাড়ানোর জন‍্য চেষ্টা করছে।কিন্তু কিছুতেই হাত ছাড়াতে পারছে না।ইশফা তাসি‍ল‍্য হেসে বলল……
—এতটুকেই এই অবস্থা।যার একটু ব‍্যাথা সহ‍্য করার শক্তি নেই সে অন‍্যকে কিভাবে ব‍্যাথা দেয়।
কথাটা বলেই ইশফা এলির হাত ঝাড়া মেরে ছেড়ে দিল।

সান এর কানে মাঠের খবর পৌচ্ছানোর পর সান এক মুহূর্ত দেড়ি না করে সাথে সাথে মাঠে চলে আসে।সান সেখানে এসে দেখে এলি ইশফা তর্ক করছে।সান গম্ভীর গলায় বলল……
—কি হচ্ছে এখানে?
এলি সানকে দেখে ন‍্যাকা কান্না করে বলল…..
—দেখো না সান এই মেয়েটা সবার সামনে আমার সাথে মিস বিহেব করছে।জানো জান এ না আমাকে থাপ্পড়ও মেরেছে।
সান ইশফার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল……
—কি হয়েছে?
ইশফাঃকি হয়েছে আমাকে জিগ্যেস না করে আপনার এই গুনধর চেলাকে জিগ্যেস করুন না কি করেছে সে।
সান এলির দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাতেই এলি থতমত খেয়ে বলল…..
—আমি কিছু করিনি সান।বিশ্বাস কর আমি সত‍্যি বলছি।আমার কথা বিশ্বাস না হলে মাঠে তো বাকিরাও আছে তাদের জিগ্যেস করো।ইশফা হুট করে এসেই আমাকে থাপ্পড় মেরেছে।
ইশফা তেড়ে বলে উঠল…..

—চোরের মায়ের বড় গলা। মিথ‍্যে বললে একেবারে জিভ টেনে ছিড়ে ফেলবো।
সান এলির দিকে তাকিয়ে বলল……
—আমাকে বলবে তো কি হয়েছে?কি করেছে এলি?
এলি কাদো কাদো হয়ে বলল…..
—সত‍্যি বলছি সান আমি কিছুই করিনি।শুধু শুধু ইশফা আমাকে…..
এতটুকু বলেই এলি ডুকরে কান্না করতে লাগলো।
ইশফা দাতে দাত চেপে বলল…..
—একদম মিথ‍্যে কথা বলবি না আর এই কুমিরের কান্না তো একদমি কানবি না।
রিধি ইশফাকে সান্তনা দিয়ে বলল……
—ইফু মাথা ঠান্ডা করে কি হয়েছে সেটা তো বল।
ইশফাঃকি ভাবে মাথা ঠান্ডা করবো বলতে পারিস? এর সাহস কি করে হয় আমার কলিজার টুকরো বোন এর গায়ে হাত দেবার।
সানঃমানে?

ইশফাঃমানে হল আপনার এই চেলা ইরুকে সিড়ি থেকে থাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
কথাটা শোনার সাথে সাথে সান এর চেহারার রং পাল্টে গেলো।
এলি তুতলিয়ে বলল……
—মি-মিথ‍্যে কে-কেন বলছো।আমি তো তোমার বোনকে চিনিই না।আর সিড়ি থেকে ধাক্কা মারার কথা তো প্রশ্নই উঠে না।
ইশফা চেচিয়ে বলল…..
—ওহ্ আচ্ছা আপনি কিছুই করেননি তাহলে কাল কে ইরুকে বাজে কথা বলেছিল? সিড়ি থেকে থাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল?আপনার ভূত নাকি আমার মত আপনারো জমজ বোন আছে?

(ইশফা সব জানার পর তুশি,রিধি, ইশরার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল।কারো সাথেই সে কোন প্রকার কথা বলে নাই।সেদিন ভার্সিটি থেকে সোজা তাদের বাসায় না গিয়ে তার বাবার ফ্লাটে গিয়ে ওঠে।সবাই যখন এক সাথে মিলে মজা করেছে তাই এক সাথে সরি বলার জন‍্য ইশরা কালকে তুশির সাথে যোগাযোগ করে ভার্সিটিতে এসেছিল।এলি ইশরাকে দেখে ইশফা ভেবে অনেক বাজে ব‍্যবহার করে।ইশরা সেদিন সবার সামনে এলির সাথে মজা করার সাহস করলেও একা দেখে কিছুটা দমে রয়েছিল।এলির বাজে ব‍্যবহারের মাত্রা বেড়ে যেতে দেখে তুশির এলিকে ইশরার পরিচয় দিতে এলি তার দলবল নিয়ে ইশরার সাথে আরো বাজে ব‍্যবহার করে।ইশরা তাদের কথাকে উপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলো।সিড়ি দিয়ে নামার সময় এলি এসে ইশরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।

ইশরার অসুস্থতার খবর পেয়ে বাসার যাবার পর ইশরা,তুশির কাছে সব শুনতেই ইশফা রাগে ফেটে পরেছিলো।কাল কিছু করতে না পারলেও আজ ভার্সিটিতে এসে নিজের রাগ দমিয়ে রাখতে না পেরে এলির উপর রাগ ঝেরে বসে।)
এলিঃকি প্রমানের ভিত্তিতে তুমি আমার নামে এসব বলছো?তাছাড়া ভার্সিটিতে তুমি পড় তোমার বোন কেন এসেছিলো?
ইশফাঃভার্সিটি তো আপনার কেনা সম্পত্তি নায় যে আপনাকে তার জবাবদিহি করতে হবে ও কেন ভার্সিটিতে এসেছিলো।আর প্রমান তা পেয়ে যাবেন। সব সিড়ি কোটার মধ‍্যে যে সিসি ক‍্যামেরা আছে সেটা মনে হয় ভুলে গেছেন।
সিসি ক‍্যামেরার কথা শুনে এলি ঘামতে লাগলো।সে তো জানেই না যে ভার্সিটিতে সিসি ক‍্যামেরা লাগানো আছে।
ইশফা,এলির ঝগড়া দেখে সবাই কানাঘুষা করতে লাগলো।সান সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে রাগি গলায় বলল……

—রিধি ইশফাকে নিয়ে যাও।এ নিয়ে পরে কথা হবে।
সান এর কথা শুনে ইশফা সান এর দিকে রাগি চোখে তাকালো।সান এর কথাটা যে ইশফার পছন্দ হয়নি তা সান ইশফার তাকানো দেখেই বুঝতে পারল।ইশফা সানকে কিছু বলার আগে রিধি ফিসফিস করে করে অনুনয়ের সুরে বলল…..
—প্লিজ ইফু আর কোন ঝামেলা করিস না।দেখ ভাইয়া ভার্সিটির ভিপি।এখন এখানে বেশি ঝামেলা হলে পরে ভাইয়ার সমস‍্যা হতে পারে।ভাইয়ার জন‍্যই একটু মাথাটা ঠান্ডা করে চল এখান থেকে প্লিজ ইফু।
ইশফা এলির সামনে চুটকি বাজিয়ে বলল…..

—এই যে মিস এলি।লাষ্ট বারের মত বলছি আমার আর আমার কাছের মানুষদের থেকে দুরে থাকবেন।যদি তাদের কোন ক্ষতি করা তো দূর বিন্দু মাত্র কষ্টের কারন হন তখন বুঝবেন এই ইশফা খান কি?আমার সম্পর্কে কিছু না জানলে আমার কলেজে গিয়ে খোজ নিয়ে নিবেন।বেশি কষ্ট করতে হবে না সুনামি ইশফা খান বললেই সবাই চিনে যাবে।কেননা সেখানে সবাই আমাকে সুনামি বলেই ডাকে।মাইড ইট।(চোখ রাঙিয়ে)

মনের পিঞ্জরে পর্ব ২৬+২৭+২৮

কথাটা বলে ইশফা সান এর দিকে আরেকবার রাগি চোখে তাকিয়ে সেখান থেকে গটগট করে হেটে চলে গেলো।
ইশফার এই রুপ দেকে সবাই থ’ হয়ে রয়েছে।এমন শান্ত চুপচাপ কম কথা বলার মেয়েটা যে এতোটা রাগি হবে তা কেউ ধারনা করতে পারেনি।সান ইশফার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল….
—এতোদিন তো দূর থেকে তোমার এই রুপ দেখেছি আজ তো সরাসরি দেখে আমি নিজেই রিয়েক্ট করতে ভুলে গেছি।বাঘিনী কি আর আমি সাধে ডাকি।ঘুমন্ত বাঘিনী জেগে উঠে সবাইকে আজ তাক লাগিয়ে দিয়ে গেল।আর আমি তো ছোট খাট হার্ট এর্ট‍্যাক করতে করতে বেচেছি।প্রাইড অফ ইউ মাই বাঘিনী।

ইশরা বেডের মধ‍্যে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে রয়েছে।সারাদিন শুয়ে বসে থাকতে থাকতে বেচারি অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে।পায়ে ফ্রেকচার হওয়ার কারনে লাফালাফি,ফালাফালি করতে না পারায় তার দিনটাই যেন পানসে হয়ে গেছে।
রুমে কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে চোখ খুলে সামনের মানুষটাকে দেখে ধরফরিয়ে উঠতে গিয়ে পায়ে ব‍্যাথা পেয়ে পা ধরে শব্দ করতেই ভেসে এল……..
—একটা থাপ্পড় লাগাবো ফাজিল মেয়ে।
তিড়িং বিড়িং না করলে ভালো লাগে না?

মনের পিঞ্জরে পর্ব ৩২+৩৩+৩৪