মেঘের আড়ালে রোদ পর্ব ২২

মেঘের আড়ালে রোদ পর্ব ২২
লেখিকা Sabihatul Sabha

মাথা ঝিমঝিম নিয়ে উঠে বসল মহুয়া। আশেপাশে তাকিয়ে নিজেকে একটা রুমে দেখে কিছু সময় বসল তারপর রুম থেকে বের হয়ে বাহিরে পা রাখতেই ফুলবানুর সামনে পরল।
ফুলবানু এক গাল হেঁসে পান চিবিয়ে থুুতু ফেললো৷ মহুয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে মিষ্টি করে বললো,’ ঘুম ভাঙছে.?’
মহুয়া ভয়ে ভয়ে আশেপাশে তাকিয়ে বললো, ‘ জ্বি আন্টি।’

ফুলবানু মহুয়ার দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললো,’ কাউরে খুঁজতাছ.??’
মহুয়াঃ জ্বি আন্টি পলাশ কোথায়.?
ফুলবানুঃ পলাশ কাজি আনতে গেছে আজ তোমাদের এহানে বিয়া হইব।
মহুয়া কিছু বললো না, মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।
ফুলবানু একটা মেয়েকে ইশারা করে কাপড় নিয়ে আসতে বললো।কাপড় আসতেই মহুয়ার হাতে দিয়ে বললো,’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হউন

কাপড় পইরা সুন্দর কইরা রেডি হইয়া লও।একটু পর পলাশ চইলা আইব।
মহুয়া কাপড় গুলো হাতে নিল।খুব সুন্দর একটা গোলাপি শাড়ি।
ফুলবানুঃ কাপড় পড়তে পাড় তো.?
মহুয়া চুপচাপ মাথা নিচু করে নিল। সে শাড়ি পড়তে পাড়ে না। এখন উনি শুনলে নিশ্চয়ই বলবে, পলাশ এ কেমন মেয়ে বিয়ে করতে আনছে সামান্য শাড়ি পড়তে পাড়ে না! আবার এই মেয়ে সংসার সামলাবে কিভাবে!.?
মহুয়ার চুপ থাকা দেখেই ফুলবানু বুঝে নিল। ইশারায় পাশে দাঁড়ানো মেয়েটাকে মহুয়ার সাথে যেতে বললো।
মহুয়া শাড়ি পড়ে বসে আছে। মেয়েটার এমন আজব অদ্ভুত কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছে না।

মেয়েটা মহুয়ার গালে হাত রেখে বললো,’ ভালোবাসা অন্ধ,আর তুমি দুইটা সুন্দর চোখ থেকেও ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গেছ। আর এখন বার বার সেই ভালোবাসা বদলাবে কিন্তু অন্ধকার পথ হাতরে আলোর পথ আর খুঁজে পাবে না। আবারও একটা পবিত্র ফুল অপবিত্র হতে যাচ্ছে। নিজেকে সুন্দর করে তৈরি করে নাও।’
মহুয়াঃ কি বলছ.?কিসের অপবিত্র আর কিসের অন্ধ পথ!! আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
~ একটু পর সব বুঝতে পারবে।

মেয়েটা বের হয়ে গেল।মহুয়া আর বেশি এই বিষয়টা ভাবল না। মেয়েটার ব্যাবহার ভীষণ আজব।
সময় যাচ্ছে, সেকেন্ড, মিনিট,ঘন্টা পেরিয়ে যাচ্ছে প্রেমিক আর আসছে না।
মহুয়া অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেল।লোকটার কিছু হল না তো.? কোথায় গেল.? হাজারটা চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

হঠাৎ মনে হলো কেউ ওর শাড়ির আঁচল সরিয়ে নিচ্ছে।মহুয়ার ঘুম অনেক হাল্কা কেউ রুমে আসলেই ঘুম ভেঙে যায়।
মহুয়া চোখ খুলে সামনে পুরুষের অবয়ব দেখে ভয় পেয়ে গেল। উচ্চ সুরে বলে উঠলো, ‘ পলাশ! পলাশ! পলাশ ভাই…? ‘
কোনো উত্তর না পেয়ে ভয়ে কিছুটা গুটিয়ে গেল।শাড়ির আচল টান দিয়ে নিজের হাতে নিয়ে বললো,” কে আপনি.? কে!.?
রুমে ড্রিম আলো।

লোকটা মহুয়ার দিকে এগিয়ে যেতেই মহুয়া ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে নেমে গেল পেছন থেকে ওর শাড়ীতে আবার টান পরলো। মহুয়া দৌড় দিয়ে দরজার সামনে গেল। দরজার পাশে লাইটের সুইচ চাপ দিতেই রুম আলো হয়ে গেল। নিজের সামনে একটা অচেনা পুরুষ দেখে ভয়ে কাঁদতে শুরু করলো।

~ এ্যাঁই ব্যা*** এতো অভিনয় না করে কাছে আয়। টাকা দিয়া অভিনয় দেখতে আহি নাই।
মহুয়া কি বলবে? কান্নার জন্য মাথায় কিছুই আসছে না। দরজার ছিটকিনি খুলতে গেলে লোকটা ওর হাত শক্ত করে ধরে ফেলে। খুব বাজে দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।
মহুয়ার ঘা গুলিয়ে বমি আসে।

লোকটা টেনে হেঁচড়ে বিছানায় ফালায় মহুয়া, আন্টি! পলাশ বলে চিৎকার শুরু করে।
লোকটা আস্তে আস্তে বিশ্রী হাসি দিয়ে ওর উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়।কিন্তু তার আগেই মহুয়া সরে যায়।তাতে লোকটা রেগে যায়।
~ এখানে ডাবল টেহা দিয়া আইছি। তুই ও মজা নিবি আমিও নিব এতো চিৎকার চেচামেচি করবি না। চুপচাপ কাছে আয়।

~ আপনার আল্লাহর দুহাই লাগে আঙ্কেল আমার কাছে আসবেন না। আমি আপনার মেয়ের মতো।
~ এতোগুলা টেহা দিছি কি দূরে থাহার লাইগা। এদিকে আয় আমার কাছে, ইসস মনে হইতাছে সাক্ষাত পরী।
মহুয়া দরজার কাছে ছুটে গেলে লোকটা ওর কাছে চলে আসে। ওর হাত ধরতে গেলেই মহুয়া পাশে একটা কাঁচের বোতল দেখতে পায়। লোকটা ওর হাত ধরতেই মহুয়া ঘৃণায় বোতলটা আরেক হাত দিয়ে তুলে নেয় শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে লোকটার মাথার মাঝ খানে আঘাত করে সাথে সাথে ফিরকি দিয়ে রক্ত ছুটে। বোতল মাঝ খান দিয়ে ভেঙে যায় মহুয়া হাতের বাকি অংশ লোকটার বুকে ঢুকিয়ে দেয়।

মহুয়ার চোখের সামনে লোকটা হাত পা ছুটাছুটি করে মারা যায়। একটা জড়বস্তুর মতো মহুয়া তা দেখে।
মহুয়ার হাতে রক্ত দেখে চমকে যায় ফুলবানু।
মহুয়ার হাতে, শাড়িতে রক্তে মাখামাখি।
~ এই পুরি এতো রক্ত কই থাইকা.??
মহুয়া কিছু বলে না, নিচে বসে এক দৃষ্টিতে ফ্লটের দিকে তাকিয়ে থাকে।

~ এই মাইয়া কথা কস না কা.!!
মহুয়ার ঘর থেকে একটা মেয়ের চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে যায়।ফুলবানু একবার মহুয়ার দিকে আরক বার রুমের দিকে তাকিয়ে ছুটল রুমে।
লোকটার রক্তাক্ত লাশ নিচে পড়ে আছে। এই প্রথম হলো ফুলবানুর পল্লিতে এমনটা।
সেই দিনের ঘটনা খুব সুন্দর করে আড়াল করে নিয়ে ছিল ফুলবানু।তারপর থেকে মহুয়া একটা রুমে আটকানো। সে নিজ থেকেই সেই রুম থেকে বের হচ্ছে না ঠিক মতো কিছু খাচ্ছে না।

ফুলবানু আজ পাঁচ দিন পর এই ঘরে ঢুকল। মহুয়ার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ এই মাইয়া রেডি হইয়া নে।’
মহুয়া পাঁচ দিন পড়েও মুখ খুললো না। সেই আগের মতো চুপ করে আছে।জীবনের প্রথম এমন ভয়ংকর কাজ ওকে ভেতর থেকে শেষ করে দিয়েছে।
ফুলবানু রেগে মহুয়ার গাল চেপে ধরে বললো,’ একটা নতুন নাগর আইছে বহুত বড়লোক, একটা তোর মতো টকটকে মিষ্টি চায়। খুব সুন্দর কইরা রেডি হইয়া ল।’

মহুয়া এতোদিনে খুব ভালো করে বুঝে গেছে এখানে কি করা হয়! কেন মেয়েদের চলাফেরা এমন!! পলাশকে ও ভালোবেসে ছিল,বিশ্বাস করে ছিল আর সে আজ এর পরিনাম এভাবে দিল.? টাকার জন্য ভালোবাসার মানুষটিকে বিক্রি করে দিল.? প্রতিদিন যেই মেয়েটি ওকে খাবার দিতে আসে সেই মেয়েটিও এক সময় পলাশের এমন বোলা ভালা চেহারার ফাঁদে পড়ে ছিল। ভালোবেসে সব ছেড়ে ওর হাত ধরে ছিল আর তার ফলাফল হিসেবে জায়গা হলো এই পতিতা পল্লীতে।

এই পাঁচ দিন কান্না করতে করতে চোখের নিচে কালি বসে গেছে।নিজের প্রতি ঘৃণা হতে শুরু করলো। সে অপবিত্র হয়ে গেছে, এই হাত দিয়ে খু*ন করেছে, এখন সে খু*নি!!।
মহুয়া আবার কাঁদতে শুরু করলো। কি বিষাদ সেই কান্নায়, এক প্রতারক কে ভালোবাসল! ঘর ছাড়ল আজ সে কোথায়!.? বুক ফেটে কান্না আসল, আমি বাঁচতে চাইনা আল্লাহ এমন জীবন নিয়ে। আত্নহত্যা কেন পাপ আল্লাহ!..?? আমি যে আত্মহত্যা ও করতে পারছি না।
ঘন্টা খানেক পর ফুলবানু আবার আশে।

মহুয়াকে আগের মতো বসে থাকতে দেখে রেগে যায়।~ তোর রেডি হওয়া লাগব না চল আমার সাথে।
মহুয়া হাত ছাড়াতে চাইলে ফুলবানু ওর গালে থাপ্পড় মেরে চুলগুলো পেছন থেকে শক্ত করে ধরে বলে,’ অনেক নাটক করছস এখন আমি আমার এতো টাকা লস হতে দিমু না। চুপচাপ যেভাবে বলে ঠিক সেভাবে করবি। যেই নাগরের লগে আইছস সে তো হালায় চইলা গেছে।
মহুয়াঃ আন্টি চুল ছাড়ুন আমি বাড়িতে যাব।

ফুলবানু হাসতে হাসতে বলে, ‘ এখানে যে একবার আসে সে আর ফিরে যেতে পারে না।’
মহুয়া কাঁদতে কাঁদতে উনার পায়ে পড়ে। পা জড়িয়ে অনুরোধ করে। কিন্তু ফুলবানুর তাতে কোনো হেলদোল হয় না। মহুয়াকে হেঁচড়ে একটা রুমে নিয়ে আসে।মহুয়া বার বার সাইফ কে ডাকে,মাইশার কথা মনে করে। জীবন এমন কেন.??আজ আপনাকে আপনার বোনের ভীষণ প্রয়োজন ভাই!!

একটু পর এক মাতাল হেলতে দুলতে রুমে আসে। রুমের দরজা বাহির দিয়ে আঁটকানো ছিল।
মহুয়া দৌড়ে বের হয়ে যেতে নিলে ফুলবানু বাহির দিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়।
মহুয়া দরজা ধরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।

মাতাল ওর সাথে দস্তাদস্তি শুরু করলে মহুয়া মাতাল ছেলের বুকে লাথি বসায়।মাতাল রেগে মহুয়াকে মারতে শুরু করে। মহুয়ার চিৎকার বাহিরে তীরের মতো সবার কানে বিঁধে। কিছু মেয়ে বলতে শুরু করে খালা মাইয়াডারে মনে হয় মারতাছে। এতো মিষ্টি মাইয়াডারে মাইরা ফেলব।
~ দয়া কইরা খালা দরজাডা খুইলা দেও।মাইয়াডা মইরা যাইব।

একটু পর সব ঠান্ডা হয়ে যায়। না ভেতর থেকে কোনো শব্দ আসে আর না বাহির থেকে।
প্রায় দুই ঘন্টা পর দরজা খুলে ভেতরে উঁকি দেয় ফুলবানু।সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে আবার তাকায়।
চুল এলোমেলো, ঠোঁটের পাশ কেটে রক্ত শুকিয়ে আছে, হাতে লাল লাল দাগ পড়ে গেছে, গালে একটা আচর খেয়ে কেঁটে গেছে।কাপড় একটু এলোমেলো নিচে এক দৃষ্টিতে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে মহুয়া।
বিছানার উপরে তাকাতেই দম আঁটকে আসল। আজও এই ছেলেটাকে মে*রে ফেলেছে!!.

ফুলবানু দৌড়ে গিয়ে ছেলেটার নাকে হাত দিলো। না নিশ্বাস ফেলছে না। ফুলবানু রেগে মহুয়াকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করলো। নিজের রুম থেকে চাবুক এনে ইচ্ছে মতো মারল কিন্তু মহুয়া একবারও টু শব্দ করল না। সেই আগের মতো স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো। বাহির থেকে সব মেয়েরা ভয়ে গুটিয়ে গেল।

একটা রুমে হাত পা বেঁধে ফেলে রাখল মহুয়াকে এটা ওর শাস্তি। এক সপ্তাহ ওকে কোনো খাবার দেওয়া হবে না। নিজ থেকে যতক্ষন না এই কাজ করতে রাজি হইব ততক্ষণ ওর খাবার নাই।
ফুলবানু প্রতিদিন মহুয়াকে মারতে শুরু করল। এক ফুটা পানি নেই আশেপাশে । পানির পিপাসায় দম আঁটকে আসছে। একটা মেয়ে লুকিয়ে এসে ওকে এক গ্লাস পানি খাওয়াল। ওর দিকে তাকিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। মেয়েটা দেখতে খুব রূপবতী।

মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো, ‘ রাজি হইয়া যাও বইন তোমার কষ্ট আর দেখতে পারছি না।আমিও যে একদিন তোমার জায়গায় ছিলাম। আমাকেও এই ভাবে অত্যাচার করে রাজি করাইছে।’
মহুয়া কিছু বলে না, শুধু শূন্য দৃষ্টিতে মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
মেয়েটা চোখের পানি মুছে ফিসফিস করে বলে,” আমি দেখি তোমার জন্য একটু খাবার আনতে পারি কি না!”
আজ পাঁচ দিন। মহুয়ার শরীর খুব ক্লান্ত খুদার্ত চোখ বার বার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ফুলবানু পানি এনে ওর সামনে রেখে বললো,’ তোর আশিক তোরে এখানে বেঁচে দিছে, আর কখনো আসব না। বাঁচতে চাইলে রাজি হইয়া যা। যা চাইবি তাই পাইবি শুধু কাস্টমাররে খুশি করাইলেই হইব।
চোখে পানির ছিটা পড়তে চোখ খুলে মহুয়া। উঠে দেখে হাতের পায়ের বাঁধন খুলা। দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।
ফুলবানু ওর জন্য শাড়ি পাঠালো।সাথে বিভিন্ন খাবার। আজ যে ফুলবানুর খুশির দিন।মহুয়া রাজি হয়েছে।

মহুয়া শাড়িটার দিকে তাকিয়ে হাসল। এতো জলদি হার মেনে নেওয়ার মেয়ে নয় মহুয়া। লড়াই করতে হলে শক্তি প্রয়োজন সাথে বুদ্ধি। মহুয়া পালাবে,হ্যাঁ সে এই পল্লী থেকে পালাবে যেভাবেই হোক। পলাশের জন্য হলেও পালাবে, ওকে শাস্তি দিবে, এতোটা জঘন্য শাস্তি দিবে কোনো পুরুষ বিশ্বাস, ভালোবাসা নিয়ে পুতুল খেলার আগে একশো বার ভেবে নিবে।
মহুয়া শাড়ি পড়ে বের হতেই ফুলবানু খুশিতে লাল দাঁত বের করে তৃপ্তির হাসি হাসল।আজ থেকে এই পল্লী জমজমাট।

মহুয়া চুপচাপ ফুলবানুর সামনে দাঁড়াতেই। কিছু ছেলে খুলবানুর সাথে কথা বলতে আসল।
আস্তে আস্তে কিছু মেয়ের ছবি তুলে নিল। সেই মেয়েদের মধ্যে মহুয়ার ছবিও তুলা হলো। শাড়ি পড়া এই নারীকে দেখলে একটা মাতালও প্রেমে পড়তে যেন বাধ্য। সব ছেলেরা লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মহুয়ার দিকে।
ছবিগুলো কারো কাছে পাঠিয়ে ফুলবানুর সাথে কথা বললো। একটু পর কল আসলে ফুলবানু কারো সাথে ভয়ে ভয়ে কথা বললো। তারপর ছবিতে থাকা কিছু মেয়েদের ডাকল। মহুয়াকে ইশারায় দূরে চলে যেতে বললো।

মোট চৌদ্দ জন মেয়ে গাড়িতে বসালো। গাড়ি ছাড়ার আগে আবার কল আসল। একটা ছেলে দৌড়ে আবার ফুলবানুর কাছে গেল। ফুলবানু মনে মনে বিরক্ত হলেও উপরে প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে রাখল।
ওই পাশের লোকটা এমন কাউকে চাইল যা শুনে ফুলবানু শক্ট হয়ে গেল। উনার এতোদিনের আশায় একজগ পানি ঢেলে দিলো কেউ। ফুলবানু কিছু বলার আগেই কল কেঁটে গেলো।

মেঘের আড়ালে রোদ পর্ব ২১

দ্বিতীয় বার কল দিয়ে নিষেধ করার মতো সাহস ফুলবানুর নেই। অগত্যা কোনো ইচ্ছে না থাকলেও থমথমে মুখে মহুয়াকে গাড়িতে তুলে দিল। মহুয়া আশেপাশে এই পনেরো দিনে দেখা তিনটা মেয়েকে দেখে ভ্রু কুঁচকে ফেললো। মেয়েরা কাঁদছে!! কই এতোদিন তো কাঁদতে দেখিনি। এমন কি জায়গা যেখানে যাচ্ছে শুনে প্রত্যাকের চোখে পানি.??

মেঘের আড়ালে রোদ পর্ব ২৩