রেখেছি তারে মন পিঞ্জিরায় গল্পের লিংক || সালসাবিল সারা

রেখেছি তারে মন পিঞ্জিরায় পর্ব ১
লেখনীতে: সালসাবিল সারা

–“অতুল ভাই বলেছেন,আমি ভালো মেয়ে না।তোমার মতো বড়লোক ছেলেকে হাত করার অপেক্ষায় আমি।এটাও বলেছেন আমি লোভী,মুখোশধারী,আমার কপালে সুখ নেই।”
নাক টানে তাহুরা।চোখ অল্প ভিজে আসলেই তার সর্দি আসে।সুতির ওড়নার কিনারায় ডান নাকের সর্দিকে থামানোর চেষ্টায় মেয়েটা।

বোনের এমন বোকাসোকা কথায় দৃষ্টি তুলে সুনেরা। সন্ধ্যার আবছা আলোতে তার ছোট বোনের রক্তিম মুখশ্রী স্পষ্ট।মাথায় কাপড় দেওয়া অমায়িক ভঙ্গিতে দাঁড়ানো তাহুরা।দেহাবশেষ যেনো রশ্মি ছড়াচ্ছে।তার বোনের গায়ের রং অতিরিক্ত শুভ্র।সুনেরা উঠে বোনের পাশে যায়।তার কাঁধে হাত রাখে।এগিয়ে বসে পুকুরের পাড়ে।সিমেন্টের তাক বানানো আছে পুকুরের পানির কিঞ্চিৎ গভীরতা অব্দি।সেথায় পা ডুবিয়ে দেয় তাহুরা বোনের দেখাদেখি।
সুনেরা অতি আদুরে ভাবে মাথা রাখে তাহুরার কাঁধে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–“ঐ বজ্জাত তোকে পেলো কই?”
–“কোচিং শেষে আসছিলাম।বাজে কথা বলেছে আরো।”
উল্টোহাতে গাল মুছে তাহুরা।
–“তুই জিজ্ঞাসা করিসনি তাকে,সে বড়লোক হওয়া সত্বেও তুই তাকে পছন্দ করিস না কেনো?”
সুনেরার গলায় রাগের আভা।
–“সাহস হয়নি আপু।”

তাহুরা দুহাত গুঁজে বুকের সাথে ঠেকায়।মুখেমুখে তর্ক করার চেয়ে তাহুরা মূর্ছা যাওয়াকে বেছে নিবে।
–“শুন,অতুল ভাই আমাদের এলাকার প্রভাবশালী হলেও উনার চরিত্রের দাগ অসংখ্য।তাই আমি উনার প্রস্তাবে সাড়া দিইনি কখনো।আমাকে হাত করতে না পেরে তোর পিছে লেগেছে।এই লোকের সাথে রাস্তায় দেখা হলে,ভুলেও দাঁড়াবি না।অমানুষের শেষ পর্যায়ে কেউ না গেলে আমার অসহায়,সরল বোনটাকে এমন বাজে কথা বলতো না।বুঝেছিস আপুর কথা?”
নিজের কড়া ভাষা প্রয়োগ শেষে সুনেরা বোনের পিঠে হাত রাখে।সরল মনের এই বোনকে তার সবটা দিয়ে ভালোবাসে।
–“বুঝেছি আপু।আমি দাঁড়াব না আর।সেই লোকের কথাও শুনবো না।”

তাহুরার কণ্ঠ স্বাভাবিক পর্যায়ে আসে। স্বস্তি পায় সুনেরা।
বোনের কথায় তাহুরার মনটা কেমন হালকা।ঝাপসা দৃষ্টি পরিষ্কার হয়।কান্না থামে তার।দৃষ্টি পৌঁছায় মনোরম পুকুরের পানিতে। অক্টোবরের শেষ দিকে হালকা শীতের আমেজে পানি হিম।তাও কান্নার দরুণ উষ্ণতায় ছেয়ে থাকা পা জোড়া আরাম অনুভব করছে।এই পুকুরঘাট তাহুরার ভীষণ প্রিয়।চারিদিকে বেষ্টিত গাছপালা পরিবেশকে আকর্ষিত করেছে প্রখরভাবে।

–“তোদের কি আক্কেল জ্ঞান বেঁচে খেয়েছিস?মাগরিবের আজান দিলো এখনো ভেতরে আসার নাম নেই।কার অপেক্ষা করছিস? জ্বীন এসে তোদের নিয়ে যাওয়ার?”
শিউলি হাক ছাড়লো গমগম সুরে।মায়ের কণ্ঠে দুই বোন বিচলিত।তাহুরার হাত ধরে সুনেরা দরজার সম্মুখে দাঁড়ায়।
–“আসলাম তো মা।”
তাহুরা হাসার চেষ্টায়। মেয়ের ফুলো মুখ দেখে ভ্রু কুঁচকে আসে শিউলির।মেয়ের থুতনিতে হাত ঠেকে শুধায়,

–“হলো কি? কান্না করছোস কেনো?”
–“কিছু না মা।পেট ব্যথা হচ্ছিলো ওর।”
সুনেরা অযথা মিছে বলে।নাহলে মা ঐ অতুলের ঘরে গিয়ে এক কান্ড বাজাতে দেরী করবে না। মা-বাবার নিকট দুই মেয়েই যে সবচেয়ে বেশি দামী।
শিউলি বুকে টেনে নেয় তাহুরাকে।আদুরে গলায় বলে,
–“মা এখন নাস্তা খাইয়ে ঔষধ দিবে কেমন?”
তাহুরা ভয় পায়।দুদিকে মাথা নাড়ায়,

–“নাহ নাহ,নাস্তা খেলে ঠিক হবে,মা।”
শিউলি হেসে মেয়ের কথায় সায় দেয়।বাল্যকাল হতে মেয়েটা ঔষধকে যম মনে করে।
নাস্তা শেষে তাহুরা পড়তে বসে।সামনের মাসে এইচএসসি টেস্ট।পড়ার চাপ প্রচুর।পড়ার পাশাপাশি বাটন মোবাইল চেক করছে ক্ষণে ক্ষণে।তার বান্ধুবি চৈতালি মেসেজ দিবে। কাল সে কলেজে গেলে তাহুরাও যাবে।বিড়বিড় করে পড়া অবস্থায় লক্ষ্য করে সুনেরা রুমে এসেছে।

চুপচাপ থেকে বইয়ের আড়াল হতে মোবাইল নিয়ে আলগোছে কানে চেপে ধরে।তাহুরার সমেত দৃষ্টি মিললে ইশারায় পড়তে বলে সুনেরা।মাথা দুলে সেও বইয়ে দৃষ্টি গোপন করে।তাহুরা জানে তার বোন কার সাথে কথা বলছে! তার বোনের একমাত্র পরাণ লোকটা।নাম জুবায়ের।আমেরিকায় থাকে।তাদের প্রণয়ের সময়কাল দুই বছর।সুনেরার কলেজ জীবনের এক বড়ভাই এই ছেলে।পূর্ব হতে পরিচয় ছিলো তাদের।তবে,ছেলেটার সম্পূর্ণ ডিটেইলস জানেনা তাহুরা।বোনও আগ বাড়িয়ে বলেনি কিছু। এতে তাহুরার মাথা ঘামানোর সময় কই?সে তার বোনের ভালো চায় সবসময়।তাই তো,দিব্যি উপভোগ করে সে তার হাস্যোজ্জ্বল বোনের এমন ভালোবাসাময় আলাপের সঙ্গী হওয়া।

তাহুরার বাবার মুদি দোকান আছে। দোকানটি তাদের চারজনের পরিবার সচ্ছল জীবন যাপনের জন্যে যথেষ্ট।তাহুরার দুই চাচা আশেপাশের এলাকায় থাকে।তারা আবার অঢেল সম্পত্তির মালিক।কিন্তু,তাদের সংসারে যতো অশান্তি, এই সেমিপাকা ঘরে বিদ্যমান মানুষেরা হাজারগুণ ততো সুখী।

বাড়ি হতে কলেজের দূরত্ব বেশ। বাসের সহযোগিতায় যাতায়াত করে তাহুরা।সাতসকালে পড়ার মাঝে টের পায় চৈতালি মেসেজ দিয়েছে।আজকের ইংরেজি ক্লাস কোনোভাবে মিস দেওয়া যাবে না। মেসেজ দেখে মুখশ্রীতে আঁধার চেপে আসে তাহুরার। ইংরেজি গাইড বের করে।গ্রামারের রুলসে দৃষ্টি মেলে চোখ বুঁজে আয়ত্বের চেষ্টায়।কোনো ভাবে ভুলে গেলে চলবে না।ইংরেজি স্যার তাহুরা সহ সকলের আতঙ্ক।দুইমাস হলো এই স্যার এসেছে তাদের কলেজে।

সময় গড়ালে তাহুরা উঠে পড়ে। তৈরী হয়।সাদা কামিজের উপর সাদা কলেজ অ্যাপ্রন।শুভ্র ওড়না সমান্তরালে ছড়িয়ে দেয় ।লম্বা বেণীতে আবিষ্ট করে নিজের ঘন কেশ।মুখের সম্মুখে দুই গোছা চুল দুদিকে দোল খায়। সুনেরা এই চুলগুলো কেটে দিয়েছিল।ছোট বোনকে সর্বদা সবদিকে সাহায্য করে বড় বোন।
কাঁধের বামপাশে ব্যাগ চেপে বেরিয়ে যায়।নাস্তা বাবা দিয়ে গিয়েছিল পড়ার টেবিলে। মুন্সী মিয়া মেয়েকে রিক্সায় তুলে দেয়।এলাকার মোড় হতে বাস পাওয়া যায়। রিক্সা হতে নেমে বাসে উঠে তাহুরা।

গন্তব্যে পৌঁছায়। ব্যস্ত সড়ক পার হবে সে এখন।ব্যাগে বিদ্যমান বাটন মোবাইল বাজছে সমানতালে।হতদন্ত রূপে ব্যাগ হতে মোবাইল বের করতে নিলে সুরক্ষার সহিত এক প্রাইভেট কার থামে তাহুরার সম্মুখে।হঠাৎ এমন দৃশ্যে মেয়েটার বুক কাঁপে।হাতের অস্থিরতা বাড়ে।মুহূর্তেই মুঠোফোন রাস্তায় ভাঙে।দু টুকরো হয়।
নয়নে ভেসে আসে অশ্রু।চারিদিকে কিছু মানুষের কটু কথা তার উদ্দেশ্যেই বলা। ভাঙা মোবাইল হতে নজর সরিয়ে কালো রঙের গাড়িটির পানে চায়।

বেরিয়ে আসে তার কলেজের ইংরেজি শিক্ষক।পাশাপাশি বেরুতে দেখে নিবরাসকে।তাহুরা যে ফুটপাত ছেড়ে রাস্তায় নেমেছিলো,একদণ্ড বুঝেনি।ভরা রাস্তায় স্যার নিশ্চয় ধমকে তাহুরার রুহ বের করবে?
কাঁদকাঁদো তাহুরার গাল ভিজতে আরম্ভ করে।নিবরাস তার পানে এগোয়,
–“তুই দেখে হাঁটবি তো।ব্যথা পেয়েছিস?”
পরপর প্রশ্ন করে তার ইংরেজি স্যার উমাইর,
–“ঠিকাছো?”

ছোট্ট একটা শব্দ অথচ হৃদয়খানা কাঁপলো তাহুরার।এই প্রথম উমাইরের মুখের নরম ভাষা শুনেছে।লোকটার ভাষা নরম হওয়াটাও কি স্বাভাবিক?
–“জ্বী।সরি।”
তাহুরা মাথা উঠায় না।দ্রুত বসে মোবাইল নেয়।
পেছনে জ্যাম হওয়ার সম্ভাবনা আছে।তাহুরা তড়িৎ বেগে হাঁটতে নিলে উমাইর ফের বলে,
–“দাঁড়াও,গাড়িতে বসো।মেন্টাল কন্ডিশন ঠিক নেই তোমার।বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।”
–“আয় আয়,দোস্ত।”

নিবরাস তাড়া দেয়।কিঞ্চিৎ দুলায়মান শরীর নিয়ে গাড়িতে বসে তাহুরা।এইযে রাস্তা পার হয়ে সামনের গলিতে পাঁচ মিনিট হাঁটলে তাদের কলেজ।অত্র ঘটনায় তাহুরা এখনো তাজ্জব।
এরচেয়ে বেশি শঙ্কিত সে উমাইরের গাড়িতে বসেছে তাই। এটা কি বাস্তব না নিছক কল্পনা?
মনের সাহস জুগিয়ে তাহুরা মাথা উঠায়।পেছনের সিট হতে দৃশ্যমান উমাইরের অবয়ব।প্রশস্ত কাঁধের একাংশ দেখা যাচ্ছে।মাথার চুলগুলো সুন্দর ভাবে কেটে রাখা।একদম পরিপাটি।একটা চুলের নড়চড় নেই।ফর্সা কান হালকা লাল।রোদের তেজে বুঝি!

দৃষ্টি ফেরায় বাহিরের দিকে।ক্লাসের কথা মনে আসলে আওড়াতে থাকে গ্রামার রুলস।উমাইর আজ ছোট্ট ক্লাস টেস্ট নিবে।নাম্বারে উনিশ বিশ হলে কথা শুনাবে নিশ্চয়!
গাড়ি পার্কিংয়ের দিকে নেওয়ার পূর্বে নামিয়ে দেয় উমাইর তাদের।বিলম্ব না করে দ্রুত গতিতে সাবধানে গাড়ি চালিয়ে সম্মুখে যায়।

নিবরাস,তাহুরা পাশাপাশি হাঁটছে।ভালো বন্ধু তারা।মূলত ছোটবেলা হতে একই স্কুলে পড়েছিলো সুবাদে তাদের গভীর বন্ধুত্ব।অন্য সব ছেলের মতো নিবরাস হাতে মশকরা করে না বিধায় বন্ধু হিসেবে তাহুরার উত্তম মনে হয় নিবরাসকে।ছেলেটা নিঃসন্দেহে মেয়েদের সম্মান করে।
চৈতালি এবং স্বাগতা ক্লাসে উপস্থিত।তাদের দুজনকে দেখে এগিয়ে আসে অত্র দুজন।স্বাগতা স্নেহের নজরে স্বাস্থ্যবান লম্বাকৃতির নিবরাসকে পর্যবেক্ষণ করে।মেয়েটা আবার নিবরাসের জন্যে ভালোবাসা বুনে হৃদয়ে কিন্তু,মুখ ফুটে বলে না কোনোদিন।পরিবারের ব্যাবধান যে অনেক!স্বাগতা বেশ দূরত্ব রেখে চলে নিবরাস হতে।মুখ খুলে চৈতালি,

–” এই নিবরাস তাহুরার কি হলো?”
তাহুরা টিস্যু দ্বারা নাক মুছতে ব্যস্ত। এইভাবে হালকা কান্নায় সর্দি এসে যায়।
–“গাড়ির তলে পড়তে পড়তে বাঁচলো।”
নিবরাস উত্তর দিতে দিতে সেথায় উপস্থিত হয় ক্লাসের কয়েকটা ছেলে।নিবরাস বুঝে তাহুরার অস্বস্তি বাড়ছে।মেয়েটা যে বড্ড লাজুক। ছেলেগুলোরও নজর সুবিধার নয় তেমন।তাদের কাঁধে হাত দিয়ে বাকি কথা শেষ না করে ক্লাসের গভীরতায় যায় নিবরাস।আরচোখে শ্যামা বর্ণের স্বাগতাকে দেখতে ভুলেনি।

চৈতালি চিন্তিত সুরে প্রশ্ন করে,
–“ব্যথা পেয়েছিস?”
–“নাহ।”
তাহুরা ছোট্ট জবাবে বেঞ্চে বসে।অন্য ব্যাপারে টুকটাক কথা হয়।
আজ দুইটা ক্লাস তাদের।প্রথমটার পর আধা ঘণ্টা বিরতি।সেই বিরতিতে কিছু খেয়ে পুনরায় ক্লাসে ফিরে সকলে।
নির্দিষ্ট সময়েই উমাইরের আগমন।ব্যাচেলর স্যারদের মাঝে উমাইর নিঃসন্দেহে সবচেয়ে সুদর্শন।তার উচ্চতা নজরকাড়া,দৈহিক কাঠামো চওড়া, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।কুনুই পর্যন্ত বটে রাখা শুভ্র হাতের রগ স্পষ্ট।এই দৃশ্য বেশ মনোরম।ব্যাচেলর স্যার মানে রমণীদের মনে অন্যরকম অনুভূতি। অনেকে ইতিমধ্যে নিজেদের বাচনভঙ্গি বদলাচ্ছে।
হুহু কথা বলার শব্দে উমাইর বিরক্ত।টেবিলে সজোরে বারি দেয়,

–“দুমাসে একটাকেও মানুষ করতে পারলাম না।পেপার,প্রশ্ন দিচ্ছি,লিখা শুরু করবেন সবাই।”
তাহুরা অধর চেপে বসে।মাথা উঁচু হলেও দৃষ্টি নিচে।দেখতে পায় তার সম্মুখে খাতার,প্রশ্নের স্তূপ।ফর্সা হাতে কালো রঙের চেইনের ঘড়ি।
–“একটা করে নিয়ে পেছনে পাস করুন।হারি আপ।”
তাহুরার গলা শুকিয়ে আসে।পরীক্ষার জন্যে তার মস্তিষ্ককে উত্তেজনা।দ্রুত মাথা তুলতেই দেখে উমাইর এখনো তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে। চোখাচোখি হতেই তাহুরা অন্তর জ্বলে।স্যারের চোখ অত্যধিক চকচকে।ভ্রু জোড়া সমান্তরাল।দৃষ্টি সরিয়ে সে মিনমিন সুরে জবাব দেয়,

–“জ্বী,স্যার।”
উপর নিচ মাথা নাড়ে উমাইর।অতঃপর সরে যায়।পুরো ক্লাস টেস্টে কেউ মাথা তুলে তাকায়নি।যে যেমন পারলো পরীক্ষা শেষ করলো।ঘণ্টা শেষ হলে উমাইর তাড়াহুড়ো ভঙ্গিতে সকল হতে পেপার নিয়ে পড়া দিয়ে কক্ষ ত্যাগ করে।
তাহুরা আর তার সইয়েরা ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে। তাহুরার কান বেশ প্রখর।তাদের পেছনের সিটে বসা মেয়েটার ফিসফিস সুর শুনে সে নিমিষেই,

–“উমাইর স্যারের বডি দেখলে না আমার উনাকে জড়িয়ে ধরতে মন চায়।অন্যান্য স্যার কেমন রসিকতা করে বিবাহিত হয়েও।আর উনি ব্যাচেলর হয়েও এমন স্ট্রেট ফরোয়ার্ড কেনো?”
–“চুপ থাক।কেউ শুনলে স্যারকে যদি জানায়,আমাদের পড়ালেখা বন্ধ হবে চিরতরে।”
ব্যস নিজের কানকে ছুটি দেয় তাহুরা।হতবিহ্বল হয়ে বেরিয়ে যায় ক্লাস হতে।

ভাঙা মোবাইলকে জোড়া লাগানোর শত চেষ্টা করেও কাজ হচ্ছে না।মোবাইল বন্ধ।বাটন কাজ করছে না, নাকি অন্য সমস্যা আয়ত্বে আসছে না তাহুরার।মুখটা মলিন।এখন নতুন মোবাইল কেনা মানে অনেক টাকা খরচ।আঁখি তখনো ভরে আসছে মেয়েটার।বারংবার হাত দ্বারা মোবাইলে আঘাত করছে।একটাবার যদি চালু হতো?স্বাগতা এবং চৈতালি চলে গেলো মিনিটখানেক আগে।তখনো মেয়েটা জানতো না মোবাইলের এমন বাজে অবস্থা।বাবাকে ফোন দিতে বের করেছিলো মোবাইল।
তাকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে অবলোকন করে এগিয়ে এলো ফারহান।ছেলেটা তাহুরার সাথে কথা বলতে পথ খুঁজে সদা।

–“কি ব্যাপার?কোনো সমস্যা?”
তাহুরা ভরকে যায়।কষ্টের পাশাপাশি যোগ হয় অস্থিরতা।মেয়েটা কেনো জানি এই ছেলেগুলোর আশপাশ উপস্থিতি সহ্য করতে পারে না।
–“কিছু না।”
বহুকষ্টে মুখ দিয়ে শব্দ বেরোয়।ফারহান আলগোছে মোবাইল হাত থেকে নিতে চায় তাহুরার।সে দেয়নি। হাত উপরে উঠায়।রেগে যাচ্ছিলো ফারহান।হাত উঁচু করতেই শুনতে পায় ভারিক্ষি স্বর,

–“কি হচ্ছে এইখানে!”
উমাইর দাঁড়িয়ে।পকেটে ডানহাত।অন্যহাতে চতুর্ভুজাকৃতির ব্যাগ।
–“স্যার,আমি শুধু ওর ভাঙা মোবাইলটা ঠিক করতে চেয়েছি।”
ফারহান জবাব দেয়।
–“তাহুরা বলেছে আপনাকে সাহায্য করতে?”
প্রশ্ন করা অবস্থায় উমাইরের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় তাহুরায়।মেয়েটা কুঁকড়ে যাচ্ছে যেনো।টিস্যু দ্বারা অনবরত নাক মুচছে।
–“বলেনি স্যার।”
–“বাড়ি যান।”

উমাইরের নির্দেশে ফারহান দ্রুত পায়ে এগোয়।আজও ভস্ম হলো মায়াময়ী মেয়েটার সাথে ভাব জমানোর স্বপ্ন।
তাহুরাকে প্রশ্ন করার পূর্বে গাড়ি নিয়ে হাজির হয় নিবরাস।উমাইরের আজ অনার্স লেভেলের কোনো ক্লাস না থাকায়,ভাইকে চাবি দিয়ে বলে গাড়ি বের করতে।সামনের গেইটে থাকবে সে।দুতলা হতেই লক্ষ্য করেছিল সে তাহুরাকে।
নিবরাস হর্ন দিলে হাতের ইশারায় থামতে বলে উমাইর।তার গাড়িতে উমাইর এবং নিবরাস দুইজনেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে।চাচাতো ভাই হলেও বেশ স্নেহ করে উমাইর নিবরাসকে।তাই তো নিজের সবচেয়ে পছন্দের গাড়িটা চালাতেও মানা করেনি একদণ্ড।

–“মোবাইল দেখি?”
উমাইরের প্রশ্নে আতঙ্কিত হয় তাহুরা।হাত এগিয়ে দেয় উমাইর।তাহুরা মিনমিন সুরে বলে,
–“স্যার…”
–“বাড়তি কথা কেনো?”
মেয়েটা মিইয়ে যাচ্ছে যেনো।স্যার কি বকবে তাকে?ভালো লাগছে না তাহুরার।তাও হাত এগিয়ে দিলো।উমাইরের হাত বড়সড়,আকর্ষণীয়।
নাড়াচাড়া করে উমাইর বেশক্ষণ।ঠাণ্ডা সুরে বলে,

–“মোবাইল আমার জন্যে ভেঙেছে।আমি ঠিক করিয়ে দিচ্ছি।সময় বেশি লাগবে বলে মনে হয় না।আসো আমার সাথে।”
–“স..সমস্যা নেই স্যার।আমার দোষে…”
–“আমার দেরী হচ্ছে।বাড়তি আলাপের সময় নেই।”
হালকা ধমকের রেশ উমাইরের কণ্ঠ জুড়ে।

গাড়িতে উঠলে নিবরাস সৌজন্য হেসে বুড়ো আঙ্গুল দেখায়।তাহুরা হাসার চেষ্টায়।ভাবুক হয় তার অন্তর।উমাইরের অন্য সকলের সম্মুখে তাকে “আপনি” সম্বোধন করলেও তারা দুজন একা থাকলে বা নিবরাস তাদের সামনে থাকলে “তুমি” সম্বোধন করে।অথচ,বাকি সকল স্টুডেন্টকে সদা সে “আপনি” বলেই কথা বলে।
ভাবুক মনটা উড়ুউড়ু।উত্তর মিললো না।
উমাইরের হাতে তাহুরার মোবাইল।জীর্ণশীর্ণ অবস্থা।এই মোবাইল ঠিক হবে বলে মনে হয় না। সিম আলগোছে বের করে।
মোবাইলের শোরুমে গিয়েও পা আটকে যায় তাহুরার।এমন শোরুমে তার কাজ কি?উমাইর তাহুরার গতি লক্ষ্য করে বলে,

–“তোমার ঐ মোবাইল অকেজো।আমি আবার কারো দায় নিয়ে বেড়ায় না।”
–“আমার জন্যে বাটন মোবাইল ঠিক ছিলো।আপনার এমন কষ্ট করা লাগবে না।আমি বাবাকে বলবো।”
তাহুরা চটপটে ভঙ্গিতে কথা একটু বেশি বলে।এইযে এখনো।একনাগাড়ে মনের ভাবনা ব্যক্ত করে থামে উমাইরের শীতল দৃষ্টি অনুভব করে।

–“মোবাইল ভেঙেছি আমি।দায়ভার আমার।আমি কি মোবাইল কিনে দিবো এটাও আমার উপর।”
তাহুরা মনে মনে খুন হয়।এমন মার্কেট প্লেসে তার কান্না করার ইচ্ছে নেই।শোভা পায় না।তাও নাক পিটপিট করছে। বুকটায় ভূমিকম্প হচ্ছে।
–“ভাই বলছে মেনে নে।ভাই কারো দায় রাখে না। বুঝলি?”
নিবরাস হেসে জবাব দেয়।তাহুরা অসহায় চোখে তাকায়।উমাইর দাঁড়ায় না।ভেতরে যায়।ভালো দামের অ্যান্ড্রয়েড কিনে দেয়।সিমটাও সেট করে।প্যাকেট হাতে দিয়ে বলে,

–“দায়মুক্ত হলাম।”
–“সরি স্যার।আসছি।”
মাথা খানিক নুইয়ে তাহুরা হতদন্ত হয়ে ছুটে।রিক্সা ডেকে উঠে পড়ে।নিবরাস ডাকলো শুনলো না সে।রিক্সায় হুড উঠিয়ে দেওয়া অবস্থায় আরেকবার বামপাশে ফিরে তাহুরা।দৃষ্টি মিলে যায় নিবরাস হতে উচ্চতায় লম্বা উমাইরের পানে।তার দৃষ্টি এখনো তীক্ষ্ণ।স্পষ্ট দেখলো তাহুরা।

–“যাহ বাবা,শুনলো না।মোবাইল ভেঙেছো তুমি,আর সরি বললো সে।আবার কিনে দিলে তুমি,তখনো সরি বললো সে।”
হাসলো নিবরাস।
উমাইর হাঁটে।সকাল হতে সকল দৃশ্য মস্তিষ্কে বিচরণ করে।অস্ফুট স্বরে বলে,
–“মাথামোটা, বোকা একটা।”
পরপর দেখা মিলে তার অধর টানা হাসি।সেকেন্ড পরে তা বিলীনও হলো।

বাবাকে মোবাইল দেখিয়ে সকল ঘটনা খুলে বলে তাহুরা।বাবাকে বিশ্বাস করানোর জন্যে নিবরাসের সহিত কথা বলালো সে।তার বাবা নিবরাসকে চিনে বহুকাল হলো।সেই সুবাদে এই ছেলেকে বিশ্বাস করা যায়।এছাড়া স্যার দিয়েছে,এরচেয়ে বড় বিশ্লেষণ আর কি হতে পারে?
বোনকে শেয়ার করলো সব তাহুরা।সুনেরা সব শুনে খুশি হলো।পরপর এক সুসংবাদ দিল সে।তার প্রেমিক আসছে আগামী বছর।বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।দুবোন আলিঙ্গন করে।অতঃপর খুনসুটিতে মেতে উঠে।

ভাইয়ের সাথে ফুটবল খেলে ক্লান্ত উমাইর।তাদের নিজস্ব ক্লাব আছে ফুটবলের।তাদের বাপ,চাচা মিলে করেছে এই ক্লাব।তাদের মতো বিত্তশালী পরিবারের ছেলেরা এই ক্লাবের সদস্য।মূলত তাদের সাথেই দফায় দফায় ম্যাচ খেলে সুযোগ হলে।উমাইরের বাইকের পিছে নিবরাস বসে।ক্লান্ত শরীরে দ্রুত বাসায় ফেরার তাগিদ।কার চালাতে দিলেও,নিজ মোটর বাইকে হাত লাগাতে দেয় না উমাইর। পাছে যদি ভাই অসাবধানতায় পড়ে যায়?মিনিট পনেরো বাদে বাড়িতে পৌঁছে তারা।বাবা,চাচা বাড়ি নেই।বিজনেস ট্যুরে দেশের বাইরে।উমাইরের চাকরির দরকার হয় না। এইভাবেই সব তার হাতের মুঠোয়।তবে,তার ধারণা অন্যরকম।এত পড়াশোনা করে বাবার টাকা উড়িয়ে কি লাভ?এরচেয়ে ভালো চাকরি করে সুনাম অর্জন করা,নিজ মেধাকে কাজে লাগানো।

ছোট চাচী দিলরুবা দুই ছেলেকে লেবু শরবত এগিয়ে দেয়।দুজনে বিনা দ্বিধায় শেষ করে গ্লাস।তম্মধ্যে উপস্থিত হয় আফিয়া। দিলরুবার ছোট মেয়ে।তার হাতে তাওয়াল।একটা উমাইরের পানে এগিয়ে অন্যটা নিবরাসের।সে তাওয়াল নিলেও নেয়নি উমাইর।
–“ভাইকে দিয়ে কি লাভ?সে নিবে না।”
ঠাট্টা করে নিবরাস।

–“কেনো?উমাইর ভাইয়া তুমি তাওয়াল নিবে না?ঘেমে আছো।এসির পাওয়ার কমিয়ে দিবো আরো?”
–“চাচী আপনার মেয়েকে এই বাড়ির কাজের আন্ডারে রেখেছেন?”
একবাক্যে কুপোকাত আফিয়া।অপমানে মুখ রক্তিম।নিবরাস হাসে শব্দ করে।রসিকতা ভেবে দিলরুবাও হাসে।
আফিয়াকে পূর্বে বোনের ন্যায় স্নেহ করতো উমাইর।অতঃপর তার ইতি টানে আফিয়ার করা এক বেয়াদবিতে।আফিয়া অনার্স প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় প্রেমের প্রস্তাব দেয় উমাইরকে।

চড় দেওয়ার সাথে ব্যাপক শাসায় সে আফিয়াকে। সেদিনের পর ভুলক্রমেও এই মেয়ের দিকে তাকায়নি উমাইর।তার চাচাতো বোন আছে এই কথা সে ভুলেই গেলো যেনো।
উমাইর সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে।ছলছল দৃষ্টি আফিয়া কেবল তাকিয়ে রয়।উমাইরকে ভাই মানেনি সে বুদ্ধি হওয়ার পর হতে।অথচ উমাইর কিছু বুঝে না,বুঝতেও চায় না।আক্রোশে ফেটে পড়ে আফিয়ার স্থব্দ হৃদয়।

গোসল সেরে বেরিয়েছে উমাইর।উদাম শরীর।ঘাড়ের তাওয়াল ঝুলছে বুকের দুই প্রান্তে। পড়নে ট্রাউজার।হেঁটে যায় ব্যালকনিতে।বাহারি রঙের ফুলের গাছ ব্যালকনির একপ্রান্তে।এরমাঝে লাল গোলাপের চারার দিকে বিশেষ আকর্ষণ তার।এইযে গতমাসে জন্মদিনে ব্যাপক দামী উপহারের মাঝে এই অসাধারণ লাল গোলাপের চারার প্রতি ছিল তার ঢের যত্ন।তাহুরা দিয়েছিলো এই চারা।সেই জন্মদিনে কলেজের সকলের তরফ হতে অহরহ উপহার পেলেও,এই গোলাপের চারাতে তার মন নিবদ্ধ।সাথে ভেসে উঠে তাহুরার ভয়ার্ত মুখশ্রী।জড়তার মাঝে ফুলের চারাটুকু নিয়ে যখন উমাইরের কেবিনে যায় মেয়েটা,তখন উমাইর আসল কাহিনী ধরতে পারেনি।ভ্রু উচুঁ করে প্রশ্ন করেছিলো,

–“কি চাই?”
উমাইর স্পষ্ট দেখছিল মেয়েটার হাতে সুন্দর লাল গোলাপের তাজা চারা।
–“স্যার আসলে…”
তাহুরা কিছু বলতে চাইছিলো।
–“কাম ইন।”(ভেতরে আসো)
জুতাজোড়া খুলে তাহুরা ভেতরে গিয়েছিল। চারা রেখেছিল টেবিলের উপর,

–“শুভ জন্মদিন স্যার।আসলে আমি জানতাম না আজকে আপনার জন্মদিন।সবাই অনেককিছু কিনেছে,আপনাকে দিয়েছেও।তাই আমি এটা কিনেছি এখন কলেজের পাশের নার্সারি হতে।এরচেয়ে বেশি কিছু কেনার টাকা নেই স্যার।সরি স্যার।”
উমাইর চেয়ে রয় কেবল।পরক্ষণে বলে,
–“থ্যাঙ্ক ইউ।যাও।”
তাহুরা অপ্রস্তুত।হাসার চেষ্টা করে। হাসেও।মুহূর্তে দুইগালে পাশে গর্তের সৃষ্টি হয়।ভয়ার্ত চেহারার হাসিটা কি অমায়িক ছিলো!

উমাইরের ছোট্ট বাগানের পরিচর্যার জন্যে রাখা টুলবক্স হাতে নেয়।সেথা হতে কাঁচি নিয়ে গোলাপ গাছের আলগা আগাছা ছাতে।কয়েকটা ফুল বেশ মোটাতাজা।উমাইর হাত দিতে চায় আবার ধরে না।মলিন হাসে কেবল।
কাজ শেষে উঠে সে। তাওয়াল দ্বারা মাথা মুছে।ধূসর রঙের ফুলহাতা টিশার্ট গায়ে চড়ায়।সোনালী রঙের আলোতে রুমের সৌন্দর্য অবলোকন করা যায় সহজেই।মাঝারি সাইজের সোফায় বসে টিভি দেখতে উদ্যত হলে শুনে দরজার খটখট শব্দ।গম্ভীর সুরে সে শুধায়,

–“কে?”
–“আমি আব্বা।”
মায়ের সুর।দরজা খুলে দেয় উমাইর।মা নাস্তা নিয়ে আসলো।
–“বাহ, পিঠা।কিন্তু এত অয়লি কেনো?”
উমাইর একটা পিঠা উঠায়।
–“খাও আব্বা।”
মেঘলা বেগম ছেলের পাশে বসে।
–“কিছু বলবে?”
উমাইরের নজরে সন্দেহ।মা নাস্তা দিয়ে চলে যায় সচরাচর।
মেঘলা বেগম মাথা নাড়ায় উপর নিচ,

–“হ্যাঁ।বলছি কি,জুবায়ের তো বসে আছে আমেরিকায়।কবে আসবে কিজানি।তুমি নাহয় বিয়েটা…”
খাওয়া থামায় উমাইর।মাও চুপ করে যায়।উমাইর হাত মুছে টিস্যু দ্বারা,
–“তোমার ছেলে আসছে আগামী বছরে।মেয়েও ঠিক আছে শুনলাম।আগে বড় ছেলের বিয়ে দাও।”
চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে মেঘলা বেগমের।খুশিমনে আওড়ায়,
–“সত্যি আসবে?মেয়ে দেখেছিস?মেয়ে কি করে?নাম কি?থাকে কই?সুন্দর?”
–“পরের বউ আমি কেনো দেখবো?নিজেরটা দেখে কূল পাই না।”
শেষ বাক্যটা আওড়ায় সে গোপন মনে।মেঘলা বেগম শুনলোই না তা।

–“শুনে খুশি হলাম।ছেলে আমার দেশে আসুক।আর যেতে দিবো না। ঐখানে কাজ কিসের?এইখানে তোর বাবার অফিসে রেখে দিবো।”
বললেন মেঘলা বেগম।
–“আচ্ছা।”
উমাইরের সহজ জবাব।
–“জুবায়ের এর পর তোমার বিয়ের জন্যে আমি তাড়া দিবো কিন্তু।”
–“তাড়া দিয়ে লাভ নেই,মা।সময় হলে সব হবে।”
কফির কাপে চুমুক লাগায় উমাইর।ভেতরের অন্তঃস্থল হতে এক সুর যেনো গুনগুনিয়ে উঠে,
–“বোকাটা আগে বড় হোক,আমাকে বুঝতে শিখুক!”

প্রথম পর্ব,তাই অনেককিছু অজানা থাকবে।কেমন হয়েছে গল্প অবশ্যই জানাবেন আমাকে।এবং এই উপন্যাস উৎসর্গ করলাম সকল সহজ সরল মনের অধিকারিণীদের।যারা অল্পতেই ছিঁচকাদুনে আর ইমোশনাল হয় ঠিক তাদের এই লেখিকার মতো।ভালোবাসা অনেক।

রেখেছি তারে মন পিঞ্জিরায় পর্ব ২