লুকানো অনুরক্তি পর্ব ১৫

লুকানো অনুরক্তি পর্ব ১৫
রূপন্তি রাহমান (ছদ্মনাম)

এবার বিদায় নেবার পালা অবনির। পরিচিত স্থানে নতুন ভাবে, নতুন রূপে পদার্পণ করবে সে। পরিচয় বদলে গেছে তার। মেয়ে থেকে হয়েছে বউ। হয়েছে কারো ঘরের রাণী, মনের রাণী। একটা সংসারের সম্মান সে। একটা সংসার সামলানোর দায়িত্ব পড়বে কাঁধে। ‘কবুল’ বলার সাথে সাথে জীবন বদলে যায়। জীবনের মানে পরিবর্তন হয়ে যায়। ঠিকানা পরিবর্তন হয়।সূচনা হয় এক নতুন অধ্যায়ের। ওই একটা শব্দের জন্য আমূল পরিবর্তন ঘটে জীবন নামক মহাকাব্যের।

মামুনুর রশীদ অবনিকে শহিদুল হকের হাতে তুলে দিতেই অবনি দু’হাতে গলা আঁকড়ে ধরে বুকে মাথা রাখে উনার।
পর পর হেঁচকি দিয়েই যাচ্ছে সে। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বার করতে পারছে না। তিনি মেয়ের মাথায় সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। মেয়ের কান্নার মৃদু নিনাদ, হেঁচকির কম্পনে নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারলেন না। কঠিন থেকে কঠিন মানুষেরও মেয়ের বিদায় বেলা বুক ভারী হয়। চোখ হয়ে উঠে অবাধ্য। আড়াল করে রাখা চোখের পানি পাতা ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘মেয়ে হয়ে জন্মাতে নেই। মেয়েরা পর হয়ে যায়। ওরা বাবার বুকটা খালি করে অন্য একটা ঘরকে আলোকিত করে। আরেকটা ঘরকে করে পূর্ণ। একটা বাবার সম্পদ তার সন্তান। আর সেই সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে বাবারা নিঃস্ব হয়ে যায়। এতো কষ্ট হবে জানলে কখনো চাইতাম না আমার অবনি বড় হউক। দুই ঝুটি করে তিরিং বিরিং করে হাঁটা আমার সেই ছোট্ট অবনিই ভালো ছিল। সন্ধ্যার পর কথার ফুল ঝুড়ি নিয়ে বসা আমার সেই অবনি আজ অন্যের ঘরে চলে যাচ্ছে। যখন তখন বায়না করা অবনি কেন বড় হলো? বাবার বুকটা খালি করার জন্য? মেয়েরা তাড়াতাড়ি বড় কেন হয়ে যায়?’

মামুনুর রশীদও কান্নার জন্য কথা বলতে পারলেন না। নৈঃশব্দ্যে উনার গাল গড়িয়ে ঝরছে অশ্রু।
অবনি বাবার বুকের সাথে লেপ্টে রইল। সে তো এর আগেও একই বাসায় গিয়েছে। মা বাবা ছাড়া থেকেছে। তবে আজ যে বেশি কষ্ট হচ্ছে। কেন? বিয়ে হয়েছে বলে?
অবনিকে ছাড়িয়ে সস্নেহে চোখের পানি মুছে দিলেন তিনি। নিজেকে সামলে বলেন,

‘মেয়েরা কাঁদলে যে বাবার কষ্ট হয় মা। বাবার বুক ভেঙে আসে।’
কথাটা বলতে দেরি পুনরায় উনার বুকে অবনির ঝাপিয়ে পড়তে দেরি না। কান্নার গতি বেড়েছে তার।
‘আমি কোথাও যাবো না বাবা। ওদের চলে যেতে বলো।’

ছেলেমানুষী কথায় ভেজা চোখে হেসে উঠলেন মামুনুর রশীদ।
হাত ভাঁজ করে তীক্ষ্ণ চোখে অবনির কান্না দেখছে মাহফুজ।
‘দেরি হচ্ছে মা। ঢাকা পৌঁছাতে আবার রাত হয়ে যাবে।’
মামুনুর রশীদের বুক থেকে মাথা তুলে অবনি। এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে খুঁজে। কিন্তু দেখা মিলে না। ভাঙা গলায় জানতে চায়,
‘মা?’

‘ফাতেমা তুমি এখানে? অবনি তোমায় খুঁজছে।’
ফাতেমা আমিন এর চোখ দুইটা লাল। চোখের কোণে লেপ্টে থাকা পানি।
‘আমার মেয়েটাকে আপনার হাত তুলে দিলাম আপা। ছোট মানুষ তো কোনো ভুল করলে একটু সামলে নিয়েন।’
‘তুমি ওখানে যাবে না?’
‘সাহস হচ্ছে না।’

‘আচ্ছা তোমরা এমন কেন করছো? অবনি কি এর আগে আমাদের বাসায় যায়নি?’
‘তখন তো আর আপনাদের বাড়ির বউ ছিলো না।’
‘আচ্ছা হয়েছে। এখন চলো। মেয়েটা তোমার অপেক্ষা করছে।’
বলে টানতে টানতে জনসম্মুখে এসে উপস্থিত হন তিনি।
ভারী শাড়ি সামলে ফাতেমা আমিন এর সামনে এসে দাঁড়ায় অবনি। আগের মতো সাজটা আর তার নেই। কিঞ্চিৎ এলোমেলো হয়েছে। ফাতেমা আমিন মলিন স্বরে বলেন,

‘পার্লারের মহিলা নিশ্চয়ই ভালো প্রডাক্ট দিয়ে সাজায়। কালো লাগছে। নতুন বউ দেখতে আসলে বলবে কালো।’
ঠোঁট কামড়ে কান্না নিবারনের চেষ্টা চালিয়েও পারে না। ফাতেমা আমিনকে জড়িয়ে ধরে শব্দযোগে কাঁদতে লাগে।
রাফিয়া খাতুন আবিদ কে কোলে নিয়ে এলে হাত বাড়ায় অবনি। কোনো ভণিতা ছাড়াই অবনির কোলে চলে গেল। মিশে রইল অবনির বুকের সাথে।
‘ অবনকে মনে পড়বে?’

মাথা তুলে তাকায় সে একবার। তারপর আবারও মিশে রয় বুকে। র’ক্তের টান হয়তে একেই বলে।
অবনিদের গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। গাড়িতে অবনি, মাহফুজ, নাদিয়া আর ড্রাইভার। গাড়ি চোখের আড়াল হতেই মামুনুর রশীদ শহিদুল হকের হাতটা ধরেন। পুনরায় বলেন,
‘দুলাভাই আমার মেয়েটাকে আপনার আমানতে দিলাম। আর কিছু বলবো না।’
তিনি কিছু বলেন না। মামুনুর রশীদের কাঁধে রেখে কেবল নীরবে সান্ত্বনা দেন।
অবনি যাওয়ার পরপরই আরো কান্নায় ভেঙে পড়েন ফাতেমা আমিন।

‘তোমরা যদি ছোটদের মতো ব্যবহার করো তাহলে হয়? মেয়ে বড় হয়েছে বিয়ে দিবে না? আমাদেরও তো যেতে হবে।’
বিদায় নিয়ে আসার পথে দু’জন বয়োজ্যেষ্ঠ নারীর কথা শুনে পা থেমে যায় আফসানা খানমের।
‘মা কি পোলার বিয়া খাইতে আসে? কোন দিনকাল আইলো রে।’
বয়সের দিকে তাকিয়ে জবাব দিতে ইচ্ছে করল না উনার। পা চালিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেন। কি ভেবে আবারও তাদের সম্মুখে এসে দাঁড়ান।

‘ছেলেরে পেটে ধরলাম। বড় করলাম। আজ ছেলে নতুন জীবন শুরু করবে আর আমি মা হয়ে দেখবো না? আগের কালের নিয়ম নীতি নিয়ে আমি বসে থাকবো না। সন্তানের জীবনের প্রতিটা ধাপ আমি মা হয়ে উপভোগ করতে চাই।’
হকচকিয়ে গেলেন তারা। আফসানা খানম যে কথাটা শুনে ফেলবে এটা তাদের ধারণাতীত ছিলো।

গাড়ি চলছে আপনগতিতে। কাঁচা রাস্তা ছেড়ে মেইনরোডে গাড়ি উঠলেও অবনির কান্না এখনো থামেনি। ফোপাঁচ্ছে সে।
বিরক্তি ভরা চাহনি নিক্ষেপ করে মাহফুজ। ক্যাটক্যাটে স্বরে নাদিয়া কে উদ্দেশ্য করে বলে,
‘এ আমাদের বাসায় আর থাকেনি? প্রথমবার যাচ্ছে? এখানে কান্নার কি হলো? এমন ভাবে কাঁদছে যেন আমরা নিয়ে ওকে পাচার করে দিবো। না হয় মে’রে মাটি চাপা দিবো। একে থামতে বল। সেই কখন থেকে কাঁদছে। চোখের পানি কি শেষ হয় না?’

‘তোমাদের মাঝে আমায় টানছো কেন? তুমি নিজেই বলো।’
নাদিয়ার কথাকে সেভাবে পাত্তা দিল না কেউ।
অবনি নাক টেনে জবাব দেয়,
‘তখনকার যাওয়া আর এখনকার যাওয়ার মাঝে অনেক পার্থক্য। তখন,,,,’
‘কোনো পার্থক্য নেই। আমার মাথায় শিংও গজায়নি। আর পিঠে ডানাও হয়নি। পার্থক্য শুধু আগে ছিলি মায়ের ভাইঝি হয়ে। যেটা ছিলো অস্থায়ী। আর থাকবি মায়ের পুত্রবধূ হয়ে। যা স্থায়ী। আগে ঘুমাতি নাদিয়ার সাথে।’
তারপর একটু ধীর গলায় বলে,

‘ এখন ঘুমাবি আমার সাথে আমার রুমে। আমার বু,,’ সম্পূর্ণ করে না কথা। মনোযোগ দেয় ছুটে চলা রাস্তায়।
শেষের কথা শুনে হতবিহ্বল অবনি। অপ্রস্তুত হলো ভীষণ। কান্না আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে গেছে তার। আড়চোখে নাদিয়া আর ড্রাইভারের দিকে তাকায় সে। তারা কি শুনেছে? শুনলে কি ভাববে? অভিমানে কোথায় কি বলতে হয় সব বিবেকবুদ্ধি লোপ পেয়েছে লোকটার?

দূরত্ব বাড়িয়ে জানালা ঘেঁষে বসে সে। দুজনের মাঝে এক হাত সমান দূরত্ব। বিয়ের পর বরেরা বউকে বুকে জড়িয়ে নেয়। এটা ওটা বলে সান্ত্বনা দেয়। যেন কান্না না করে। অথচ তাকে পা*গল পা*গল হয়ে বিয়ে করা ছেলেটা তার সাথে ঝগড়া করছে। তাকে অপ্রস্তুত করছে। চোখমুখ কালো করে সেও দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বাইরে।

ফুলের সুবাসে মম করছে কক্ষ। ফুল সজ্জিত খাটের মধ্যিখাণে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে অবনি। এখানে আসার পর সব নিয়মকানুন পালন করে নাদিয়া তাকে এই রুমে বসিয়ে দিয়ে গেছে ঘন্টা হতে চলল।
পরিচিত বাসা। পরিচিত ঘর। আর পরিচিত মানুষ। তারপরও বুকের ভেতরে এক নতুন অনুভুতির সূচনা হচ্ছে অবনির। এর আগেও এই কক্ষে অবনি এসেছে। তবে এখানকার অনুভূতি আর তখনকার অনুভূতির মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ । একটু ভালো লাগা, একটু ভয় আর একটু জড়তা সব মিলিয়ে মিশ্র অনুভূতি। পুরো কক্ষে নজর বুলায় সে। আজ থেকে মানুষটার পাশাপাশি এই কক্ষের মালিক সে নিজেও।

খট শব্দে নড়েচড়ে বসে সে। মাহফুজ এসেছে। থমথমে, গম্ভীর মুখ। অবনি আড়চোখে একবার তাকিয়ে তৎক্ষনাৎ দৃষ্টি নামিয়ে নেয়। মাহফুজ গায়ের পাঞ্জাবি টা খুলে একটা তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
ইদানীং গরম পড়েছে ভীষণ। মাহফুজের ওয়াশরুমে যাওয়া দেখে অবনিরও ইচ্ছে সব ছেড়ে ছুড়ে সারারাত ঝর্নার নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে। এতো ভারী সাজে তার অস্বস্তি হচ্ছে।

মিনিট বিশেক বাদে চুল মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো মাহফুজ। ওয়ারড্রব খুলে ছোট্ট একটা বক্স খুলে অবনির সামনে রাখে। তারপর কি মনে করে আবার খুলে রাখে সে বক্সটা। ছোট্ট একটা পাথরের আংটি। অবনি হাত বাড়ানোর আগেই প্রস্থান করে মাহফুজ। রুমের সাথে লাগোয়া ছোট্ট বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মিনিটের পর মিনিট।
মাহফুজের এমন অদ্ভুত আচরণে অবনি হতচকিত। কি করবে বুঝে উঠতে পারল না। সারাদিনের ক্লান্তি, গরম, না খাওয়া, ঘুম একসাথে জড়ো হয়েছে। তারপরও এই ভারী সাজ, আর ভারী কাপড় নিয়ে বসে রইল সে। সেও এভাবেই থাকবে। জেদ বাড়ল তার।

রাত তখন দুইটা। অবনি ঘুমিয়ে পড়েছে ভেবে রুমে এলো মাহফুজ। কিন্তু রুমে এসে চোখ ছানাবড়া তার। অবনি আগের মতো বসে আছে। চমকায় মাহফুজ। তারপরও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলে,
‘সং সেজে এখনো বসে আছিস কেন?’
অবনি দূর্বল গলায় জবাব দেয়,

‘যার জন্য সং সেজে গরম সহ্য করে এতো রাত অব্দি বসে আছি সে তো দেখল না। সে তৃপ্তি নিয়ে না দেখলে এগুলো ধুই কিভাবে? সেজেছি তো কেবল তার জন্য।’
‘দরদ দেখাচ্ছিস?’ কথাটা বলতে গিয়েও বলে না মাহফুজ। হজম করে নেয়। নিরেট গলায় বলে,
‘সামনে রাখা আংটি টা তোর।’
কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না অবনি। নিশ্চল বসে রইল। অবনিকে নিষ্ক্রিয় দেখে কাছে এসে বসে মাহফুজ। আংটি টা অবনির আঙুলে পড়িয়ে দিয়ে বলে,

‘ এসব রাগ জেদ অন্য কাউকে দেখাবি। আমাকে না। এসব আমি সহ্য করবো। আজকের পর যেদিন এটা আঙুলে না থাকবে সেদিন বুঝাবো আমি কি। ঘুমিয়ে পড়। একটু পরে আজান দিবে।’
আবার বারান্দার দিকে পা বাড়ালে অবনি মুখ খুলে,
‘আমার সমস্ত রাগ, জেদ, অভিমান তোমাকে না দেখালে আর কাকে দেখাবো? আবার আমার বিয়ে দিবে বুঝি? তাহলে কি সেই বরকে রাগ আর জেদ দেখাবো?’

পা থেমে যায় মাহফুজের। ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায় অবনির মুখের দিকে। তীক্ষ্ণ চাহনি, কুঁচাকনো ভ্রু।
দাঁতে দাঁত পিষে রুক্ষ স্বরে কিছু বলার আগেই অবনি পুনরায় বলে,
‘নিজ জায়গায় থেকে বিচার করে অভিমান করে থাকবে? একটা বার আমার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেখো। আমি কি করতাম? আমি কিছু বললে মা ভাবতো তোমার আর আমার হয়তো সম্পর্ক ছিল। সবটা আরো ঘেঁটে যেত।’
অবনির চোখে মুখে ক্লান্তি। চোখ জোড়ায় অসহায়ত্ব। অসহায় মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আচমকাই নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিল অবনিকে।

ভড়কে গেল অবনি। আকস্মিক ঘটনায় হকচকিয়ে গেল সে। নির্বোধের মতো রইল সে।
এক সেকেন্ড এক সেকেন্ড করে কত মিনিট পার হলো গুনা হয় না অবনির। কাঁধে গরম পানির অস্তিত্ব টের পায় সে। মানুষটা কাঁদছে? তার জন্য কোনো পুরুষ কাঁদছে? বিশ্বাস হয় না তার। কোনো এক পুরুষের অভিমান পানি হয়ে ঝরছে। নিজেও চোখ বন্ধ করে নেয়। তার চোখও হয়েছে ঝাপসা। দু’হাত মাহফুজের কাঁধে রাখে।

‘শেষ মুহূর্তে এসেও মনে হয়েছে এই বুঝি হারিয়ে ফেললাম। বুকের মাঝে যত্ন করে গড়ে তোলা ভালোবাসা এই বুঝি কেউ নিয়ে গেল। মনে মনে কতবার আল্লাহ কে ডেকেছি জানি না। তোর উপর ভীষণ রাগ হয়েছে। অভিমান হয়েছে। মামিকে কিছু না বলে চুপ করে থাকলি। মানানোর চেষ্টা করলি না। এক ফুটে কিছু বললি না। অভিমান জিইয়ে রাখার জন্য বাইরে ছিলাম। পুরুষ মানুষ এই একটা জায়গায় নিরুপায়। প্রিয় মানুষের সাথে অভিমান করা যায় না। তাকে দেখলে অভিমান গলতে শুরু করে।’

তারপর মাহফুজ চুপ হয়ে যায়। একদম চুপ। কথা বলতে তার মোটেও ইচ্ছে করছে না। অর্ধাঙ্গিনীর আলিঙ্গনে বুকের উত্তাল ঝড় কমতে শুরু করেছে। একটুখানি ছোঁয়ায় অভিমান মিলিয়ে গেছে হাওয়ায়। এবার উপভোগ করার পালা। প্রিয় মানুষের সাথে সুন্দর মুহুর্ত গুলো।
দেয়াল ঘড়ির ডংডং শব্দে ঘোর কা*টে মাহফুজের। ঘড়ি জানান দিচ্ছে তিনটা বাজে। হাতের বাঁধন হালকা হয় তার। ওষ্ঠ জোড়ার উষ্ম ছোঁয়া দেয় অবনির কানে। তারপর ফিসফিসিয়ে বলে,

লুকানো অনুরক্তি পর্ব ১৪

‘ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি। কঠিন খোলসে আবৃত করে রাখা মেয়েটাকে। সে কি বাসে?’
উত্তরের আশায় রইল মাহফুজ। কিন্তু রসকষহীন অবনি মাহফুজের আবেগে এক বালতি জল ঢেলে মৃদুস্বরে বলে,
‘ভীষন খিদে পেয়েছে আমার। আমি খাবো।’

লুকানো অনুরক্তি পর্ব ১৬

1 COMMENT

Comments are closed.