শুভ্ররাঙা ভালোবাসা পর্ব ৭

শুভ্ররাঙা ভালোবাসা পর্ব ৭
তানিয়া মাহি

” অভীককে আমি ভালোবাসি শুভ্রতা।”
আবিরার কথায় বইয়ের পৃষ্টা থেকে চোখ তুলে আবিরার দিকে তাকায়।
শুভ্রতা সকালে জানালার পাশে বসে ক্লাশে যাওয়ার আগে নিজের পড়া কমপ্লিট করছিল। আবিরার এমন একটা কথা শুনে দরজার দিকে ঘুরে তাকায় সে। আবিরা তাড়াতাড়ি করে শুভ্রতার দিকে এগিয়ে এসে বিছানায় বসে। শুকনো একটা ঢোক গিয়ে বলে,

” আমি গতরাতেই তোকে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু নেহা আসায় আর বলতে পারি নি। ”
” কি বলছো আপু, অভীক কে?”
” আমার বান্ধবীর ভাই, বান্ধবীর বিয়েতেই পরিচয় তারপর থেকেই কথাবার্তা। আমি ওকে ভালোবাসি শুভ্রতা।”
” ভালোবাসো ভালো কথা, সেটা আমাকে কেন বলছো?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” নিহান ভাইয়া আমার বিয়ের জন্য ছেলে ঠিক করেছে আজকে তার সাথে দেখা করতে বলেছে মা। ”
শুভ্রতা একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলে, ” ওহ আচ্ছা।”
আবিরা বিছানা থেকে উঠে গিয়ে শুভ্রতার হাত ধরে অনুরোধ করে বলে, ” আমাকে একটু সাহায্য করবি শুভ্রতা?”
” কি সাহায্য আপু?”

” তুই যদি ভাইয়াকে বলিস যে আমাকে কেউ পছন্দ করে, আমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে ভাইয়া তোর কথা ঠিক শুনবে। আমার বিয়ের কথা যার সাথে হচ্ছে তাকে যেন নিষেধ করে দেয়।”
” এসবে আমাকে না জড়ালে হয় না আপু? তুমিই বড়মাকে বলো ভালো হবে।”
” আমি বললে যদি কাজ হতো তাহলে তো বলতামই। তুই প্লিজ আমাকে সাহায্য কর।”
” আপু আমার অতীত তো জানোই, তুমি আর ওদিকে পা বাড়িও না বাদ দাও নাহয়।”
” আমি ওকে খুব ভালোবাসি শুভ্রতা। আর এমন তো নয় আমি যাকে তাকে বিয়ের কথা বলছি, সে ভালো একটা অবস্থানে আছে।”

” কি করে উনি?”
” ডাক্তার।”
” ওহ আচ্ছা। তুমি নিশ্চিত, সে তোমাকে ভালোবাসে অন্যকে কাউকে না?”
” হ্যাঁ। ”
” আগে বাড়িতে বলার আগে তোমার টেস্ট করে নেওয়া উচিৎ ওই ছেলেকে। তারপর দেখো যদি ভালো হয় তাহলে নিহান ভাইকে বলা যাবে। সারাজীবনের ব্যাপার এটা।”

” কীভাবে টেস্ট করা যায়?”
” শোনো আমি বলি……”
শুভ্রতা আস্তে আস্তে কিছু কথা বলে আবিরাকে। আবিরা ভ্রু কুচকে মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিয়ে যাচ্ছে। অতঃপর শেষে হাসিমুখে বলে, ” ঠিক আছে, আমি রাজি। ও সফল হলেই কিন্তু তুই নিহান ভাইকে বলবি।”

শুভ্রতা তাড়াহুড়ো করে ডিপার্টমেন্টের দিকে ছূটছে। অলরেডি পাঁচ মিনিট লেইট। কে জানে নতুন স্যার ক্লাসে ঢুকতে দিবে কি না! পা চালিয়ে ক্লাসের দিকে যেতে থাকে। রাস্তার পাশে থেকে একটা মেয়ে বলে ওঠে, ” সংসার টিকিয়ে রাখতে না পেরে এখন আবার প্রতিদিন ক্লাস করতে আসছে। দেখিস না এখন আবার কি উড়নচণ্ডী হয়েছে যেখানে যাবি সেখানে ও।”
শুভ্রতা একটু থামলো মেয়েটাকে দেখে নিল।

এই মেয়ে তার প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ি এলাকার। সে কথাটা শুনে মুচকি হেসে আবার পা বাড়ায়। এখন মেয়েরাই মেয়েদের বড় শুত্রু। তারা ভাবে ডিভোর্স হয়েছে,মেয়ে বাড়িতে শুয়ে বসে কান্না করবে, খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেবে তার কয়েকমাস পরেই একটা বা দুইটা বাচ্চা আছে এমন লোকের সাথে বিয়েতে বসবে, এটাই তাদের জীবন। এর বাহিরে যদি মেয়েরা একটু ভালো থাকতে চায় তাহলেই হয়ে যায় সমস্যা। কিছুদূর গিয়েই শুভ্রতা আবার পিছিয়ে মেয়েটার সামনে এলো। তার দিকে তাকিয়ে বলল,

” আমি কি দোয়া করে দেব যে আমি তোমার প্রতিবেশী ভাইয়ের সাথে যেমন ছিলাম তোমার ভাগ্যেও যেন ওরকম বর জোটে?”
” নিজের দোষ সবাই ঢাকে। সংসার তো ভেঙেছেন আপনি। হয়তো কারো আশায় ভেঙেছেন।”
কথাটা শুনেই প্রচন্ড রাগ হয়ে যায় শুভ্রতার। মেয়ে হয়েও বোঝে না একটা মেয়ের সংসার ঠিক কোন পর্যায়ে গেলে তা ভেঙে যায়। সে এবার আরেকটু কাছে এসে নরম গলায় বলে,

” দোয়া রইল আমার শাশুড়ির মতো শাশুড়ি, আমার ননদের মতো ননদ, আমার বরের মতো বর, আমার শ্বশুরবাড়ির মতো শ্বশুরবাড়ি যেন তোমার না হয়। আমি প্রায় তিন বছর কষ্টটা সহ্য করেছি তা যেন তোমার সহ্য করতে না হয়। তুমি আমার কষ্ট না বুঝতেই পারো সবাই সবকিছু বোঝে না। ”

কথাটি বলেই মন খারাপ করে শুভ্রতা সেখান থেকে ক্লাশের দিকে চলে যায়। মনে মনে ভাবতে থাকে পৃথিবীর সবাই কেন মন খারাপ করে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে বসে আছে? তারা কেন বোঝে না ভাঙা হৃদয়ে আবার আঘাত করতেই থাকলে যে সেটা একদম অচল হয়ে যাবে। কেন বোঝে না সবাই, ডিভোর্সীদেরও ভালোভাবে বাঁচতে ইচ্ছে হয়!
শুভ্রতা গিয়ে ক্লাশের দরজায় দাঁড়ায়। সাহিল স্যার ক্লাসে চলে এসেছেন, রোলকল করছেন তিনি। শুভ্রতা মলিনমুখে জিজ্ঞেস করে “ম্যেয় আই কাম ইন স্যার?”

সাহিল শেখ সেদিকে কান না দিয়ে রোলকল করেই যাচ্ছে। ফাউজিয়া অসহায় চোখে শুভ্রতার দিকে তাকিয়ে আছে কারণ সাহিল স্যার খুবই কড়া মেজাজের মানুষ, তার প্রমাণ তিনি আজ ক্লাসে এসেই দিয়ে দিয়েছেন। তিনি এসেই জানিয়েছেন যার যার ক্লাশ করার ইচ্ছে তারা যেন ক্লাশ শুরু হওয়ার আগেই আসে। এক মিনিট দেরি করলেও ভেতরে নেওয়া হবে না৷ কিছুক্ষণ আগে একটা মেয়ে এসেছে পাঁচ মিনিট দেরি করে তাকে বলে দিয়েছে পরবর্তী দিন থেকে এমন হলে যেন ক্লাশে না আসে। এদিকে শুভ্রতা পনেরো মিনিট দেরি, তাকে ঢুকতে দেওয়া হবে কি না সেটা নিয়েই ফাউজিয়া চিন্তা করছে।
সাহিল শেখ এবার দরজার দিকে তাকালেন। শুভ্রতাকে দেখে আবার ঘড়ির দিকে তাকালেন।

” আপনি সতেরো মিনিট দেরি করেছেন। সেটা কেন?”
” স্যার গাড়ি পাচ্ছিলাম না।”
” বাড়ি থেকে আগে আগে বের হলেই তো পারেন৷ ”
” স্যার আমি কি ভেতরে আসব?”
শুভ্রতার কথাটা কেমন ভারী শোনালো। রাস্তার সেই মেয়েটা সকাল সকাল তার মন মেজাজ দুটোই খারাপ করে দিয়েছে। এখন আর কোন কথাই তার শুনতে ইচ্ছে করছে না।
” না। ”

সাহিল শেখ ঝটপট শুভ্রতার কথার জবাব দিয়ে দেন৷ তিনি ভাবেন শুভ্রতা হয়তো এবার বলবে স্যার আজকের মতো ভেতরে ঢুকতে দিন আগামী ক্লাশ থেকে ঠিক সময়ে উপস্থিত থাকব। সাহিল স্যার যা ভেবেছেন বিষয়টা তেমন ঘটলো না। শুভ্রতা সাহিল শেখ আর ক্লাশের সবাইকে অবাক করে দিয়ে দরজার সামনে থেকে পাশের ক্লাশরুমের দিকে চলে গেল। শুভ্রতা চলে যাওয়ার সাথে সাথে ফাউজিয়ার মুখটা আরো কালো হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে শুভ্রতার মনটা আজ ভালো নেই। স্যার ও তো বেশি কথা বলে নি যে রাগ করে চলে যেতে হবে, নিশ্চয়ই আগে থেকে তার মন খারাপ তাই স্যারের সাথে কথা বাড়াতো না।

সাহিল ব্যাপারটাকে বাহিরে তেমন পাত্তা না দিলেও ভেতরে ভেতরে ঠিকই ভাবলো মেয়েরাও এমন করে নাকি শুধু ওই মেয়েটাই এমন করে! কিছুক্ষণ আগে আসা মেয়েটা তো ঠিকই দ্বিতীয়বার অনুরোধ করেছিল। তিনি ভাবনাটা টেনে লম্বা না করে সেখানেই ভাবনার সমাপ্তি ঘটিয়ে পড়ানো শুরু করেন।

ক্লাশ শেষ করে সাহিল শেখ বের হতেই ফাউজিয়া তাড়াহুড়ো করে শুভ্রতার কাছে ছুটে আসে। পাশের রুমে এক কোণে কয়েকটা মেয়ে আড্ডা দিচ্ছে আর সে জানালার পাশের বেঞ্চিতে মাথা নিচু করে বসে আছে। সাহিল শেখ বারান্দায় দাঁড়িয়ে কয়েকটা স্টুডেন্টের সাথে কথা বলছিলেন ফাউজিয়া পাশ কা*টিয়ে রুমে প্রবেশ করে। শুভ্রতার সামনের বেঞ্চে বসে তার মাথায় হাত দিতেই চমকে ওঠে শুভ্রতা। তাকিয়েই দেখে ফাউজিয়া তার দিকে মলিন মুখে তাকিয়ে আছে। শুভ্রতা জোর করে শুকনো একটা হাসি দেয়। ফাউজিয়া বলে,

” তোর কিছু হয়েছে?”
” না তো! কি হবে?”
” আমি বেশ বুঝতে পারছি তোর মন খারাপ। কি হয়েছে আমাকে বলবি না?”
” মন খারাপ না তো, মন খারাপ কেন হবে?”
” আমার কাছে কিছু লুকাবি না। বল কি হয়েছে? তোর মন খারাপ না হলে ঠিকই স্যারের সাথে এটা ওটা বলে ক্লাশে আসতি। আসলি না কেন?”

” কথা বাড়াতে ভাল্লাগছিল না।”
” সেটা তো বুঝেছি এবার বল তো কি হয়েছে?”
” কিছু হয় নি। চল ক্লাশে যাই নইলে পরের ক্লাশ ও মিস করতে হবে।”
শুভ্রতা উঠে বের হতে লাগলে ফাউজিয়াও উঠে বের হয়ে আসে। হাত ধরে বলে, ” আমাকে কেউ বন্ধু ভাবে না কেন বল তো? আমি বেশি চুপচাপ তাই?”

শুভ্রতা বুঝতে পারে এই মেয়ের থেকে কিছু লুকোনো সম্ভব না সে হয়তো মন পড়ে নিতে পারে। ফাউজিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে, ” ডিভোর্সীদের মন খারাপে পাত্তা দিতে নেই৷ ওদের যখন তখন মন খারাপ হয়। কখনো এমনি এমনি পুরোনো কথা মনে পড়ে মন খারাপ হয় কখনো বা কারো খোঁচানিতে ক্ষ*ততে পঁচন ধরে ব্যথার সৃষ্টি করে। এ জগতের মানুষ ব্যথা দিতে অভ্যস্ত, উপশম ঘটাতে না।”

ফাউজিয়া এবার আসল ঘটনা বুঝতে পারে। কেউ হয়তো ডিভোর্স বা তার অতীত জীবন নিয়ে কিছু বলেছে তাই মন খারাপ। ফাউজিয়া আর কথা বাড়ায় না ওসব নিয়ে। শুভ্রতা আবার বলে,
” আমার সাথে আজ একটু শপিংয়ে যাবি?”
” কি কিনতে হবে? আর শাকিরা আসে নি আজ?”
” না, শাকিরা ওর নানুবাড়ি গেছে।”
” কি কিনবি?”
” বোরখা।”
” বোরখা! তুই বোরখা পরবি?”
” হ্যাঁ কাল থেকে বোরখা পরে আসব।”

ফাউজিয়া বেশ উচ্ছ্বাস নিয়ে বলে, ” আমার বোরখার মতো বোরখা কিনবি। একই রঙ, এই কালো রঙ। দুজন একই রকম বোরখা পরব, কত্তো মজা হবে ভাবতো!”
” ঠিক আছে।”
” নামাজ শুরু করেছিস? তোর নিষিদ্ধ সময় শেষ হয় নি?”
” সবকিছু আগামীকাল থেকে শুরু করব ইন শা আল্লাহ। ”
” তুই ফজরে না উঠলে আমি ডেকে দিব ঠিক আছে?”

” মা -বাবা ওঠে। তোর কষ্ট করতে হবে না। বাবাকে বলব, মসজিদে যাওয়ার সময় যেন ডেকে দিয়ে যায়।”
” ঠিক আছে তাহলে ফজর পর থেকেই দুজন পড়া শুরু করব। আরেকটা কথা, আমার একটা আবদার রাখবি?”
শুভ্রতা ভ্রু কুচকে ফাউজিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে, ” কি আবদার শুনি?”

” আমাদের ম্যাম তো মনে করে অবিবাহিতরাই শুধু পড়াশোনা করে, বিবাহিত বা অন্যরা পড়া করতে পারে না তাদের দ্বারা কিছু হয় না। প্রতি ক্লাশে কি পরিমাণ লেকচার দেয়! তুই তার কথা খণ্ডণ করবি। ক্লাশে সবার চেয়ে তোর ভালো রেজাল্ট করতে হবে। এমনকি তোকে আমার চেয়েও ভালো রেজাল্ট করতে হবে।

আমি কিন্তু তোকে ছাড় দেব না, আমি টপার হওয়ার জন্যই পড়ব, আর তুই আমার জায়গা বিচ্যুত করবি। আমি চাই দুই মাস পর যে পরিক্ষা ওখানে তুই টপার হবি।”
শুভ্রতা ফাউজিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। কোন মেয়ে এমনও হয়! বান্ধবী যতই কাছের হোক না কেন পরিক্ষায় সে যদি নিজের থেকে ভালো রেজাল্ট করে তাহলে মন খারাপ হয় আর ফাউজিয়া কি না নিজেই এসব বলছে! এই মেয়ে মাঝেমাঝে বেশ অবাক করে দেয়। শুভ্রতা মুখে হাসি নিয়ে বলে,

” তোকে একবার জড়িয়ে ধরি? তোকে জড়িয়ে ধরলে তুই কি কিছু মনে করবি?”
ফাউজিয়া শুভ্রতার হাতে মিছেমিছি চাটি মেরে জড়িয়ে ধরে। শুভ্রতা বুঝতে পারে সে নিশ্চিত ভাগ্যবতী তাই তো ফাউজিয়াকে বন্ধু হিসেবে পেয়েছে।

পাশেই কারো গলা খাকাড়ির আওয়াজ শুনে দুজন দুজনকে ছেড়ে দেয়। পাশে তাকিয়ে দেখে সাহিল স্যার।
” রাস্তায় এভাবে বান্ধবীকে জড়িয়ে না ধরে পরদিন থেকে ঠিক সময়ে ক্লাশে আসার চেষ্টা করবেন মিস…..”
নামটা আর বলতে পারলো না। গত ক্লাশে নাম জেনে নিলেও সে আজ নাম বলতে আটকে গেল।
” শুভ্রতা, আমার নাম শুভ্রতা। ”

” জি, মিস শুভ্রতা। এখন বাহিরে দাঁড়িয়ে না থেকে ক্লাশে যান নইলে পরের ক্লাশ ও কপালে জুটবে না।”
কথাটা বলেই সাহিল তাদের সামনে থেকে চলে আসে। যেতে যেতে মুচকি হাসে সে, নামটা মনে ছিল ঠিকই শুধু নামের মালিকের কাছে থেকে শুনতে হতো।

শুভ্ররাঙা ভালোবাসা পর্ব ৬

সে ভাবে মেয়েটা এবার নিশ্চয়ই তাকে গালাগা*লি করছে, এটা ভেবে নিশ্চিন্ত হয় যে শুভ্রতা তাকে মনে মনে বকতে ব্যস্ত থাকলেও মন খারাপের কারণ মনে করে আর এখন মন খারাপ করবে না কারণ সাহিল সেখানে দাঁড়িয়ে স্টুডেন্টদের সাথে কথা বলার সময় শুভ্রতা আর ফাউজিয়ার কথোপকথন শুনে নিয়েছিল।

শুভ্ররাঙা ভালোবাসা পর্ব ৮