শেষ থেকে শুরু পর্ব ১০ || নন্দিনি চৌধুরী || SA Alhaj

শেষ থেকে শুরু পর্ব ১০
লেখিকা নন্দিনি চৌধুরী

নিজের অফিসের চেয়ারে বসে ল্যাপ্টপে কাজ করছে মেহের।ফাঁকে ফাঁকে একটু করে কফি খাচ্ছে।মেহেরের অফিসের ম্যানেজার মেহেরের কেবিনে আসলো।
ম্যানেজার:May I coming Sir?
মেহের:Yes Coming.
ম্যানেজার:স্যার আপনার কথা মতো ArS কম্পানির সাথে আমাদের +অন্যসব কম্পানির ডিল ক্যান্সেল করিয়ে দিয়েছি।এখন আগামি ৫মাসেও তারা কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবেনা।
মেহের:আগামি ৫মাস কেন আমি চাই তারা রাস্তায় নেমে যাক।সেই ব্যাবস্থা তুমি করো।কোনো এশিয়ান কাম্পানি জেনো ওদের সাথে ডিল না করে।

ম্যানেজার:জি আচ্ছা স্যার আমি এখন আসছি।
ম্যানেজার যাওয়ার পর মেহের চেহারে হেলান দিয়ে বসে বলতে লাগলো,
মেহের:”আরিশ তুই আমার বোনের চোখের পানি ঝরিয়েছিস।আমার বোনকে অপমান করেছিস।তোকে আমি রাস্তায় নামিয়ে আনবো।মিসেস সালমার যেই অর্থের জন্য তোর কাছে মেয়েকে লিলিয়ে দিছে অই অর্থই আমি কেড়ে নেবো।তুই জানোস না আমার বোন আমার কাছে কি।আমার বোনের চোখের পানির দাম তো তোকে আর সায়মাকে দিতেই হবে।Just wait And Watch Mr.Arish.”

নিজের রুমে বসে চোকলেট খাচ্ছে মুগ্ধ আর কার্টুন দেখছে।এক সপ্তাহে অনেক সুস্থ হয়ে গেছে মুগ্ধ পাশাপাশি নিজের আগের জীবনে ফিরে আসছে সে।মেহের রুহি এটা দেখে খুব খুশি।যে অবশেষে মেয়েটা ঠিক হচ্ছে।মুগ্ধ চোকলেট খাচ্ছে এর মাঝে ওর ফোনে কল আসে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে বোবা ভুত লেখা।মুগ্ধ চোখ মুখ কুচকে বলে উঠে,
আজকেও উফফ!
মুগ্ধ কল রিসিভ করে হ্যালো বললো,
মুগ্ধ:হ্যালো।কে? আচ্ছা আপনি কথা বলেন না কেন ফোন দিয়ে হ্যা বোবা নাকি আপনি?বোবা হলেও তো একটু পুতপুত আওয়াজ করে তাও তো করেন না।নাকি বোবা ভূতে ধরছে আপনাকে কোনটা।শুনেন এরপর যদি কল দেন তাহলে একদম খবর করে দেবো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কথা গুলো বলেই মুগ্ধ কল কেটে দিলো।বিগত এক সপ্তাহ ধরে এই নাম্বারটা থেকে কল আসে কিন্তু কেউ কথা বলেনা।প্রথমে মুগ্ধ ভাবতো হয়তো তাকে কেউ চেতানোর জন্য এমন করছে কিন্তু প্রত্যেকদিন কল আসে কিন্তু কেউ কথা বলেনা।মুগ্ধ একদিন রেগে কল ধরছিলোনা কিন্তু ফোনদাতা ফোন দিয়ে যাচ্ছিলো তো দিয়েই যাচ্ছিলো।শেষমেষ বাধ্য হয়ে কল রিসিভ করে মুগ্ধ সেই চুপ থাকে।তাই মুগ্ধ এর নাম দিয়েছে বোবা ভূত।মুগ্ধ ফোন হাত থেকে রাখতে যাবে দেখে ফোনে বোবা ভূতের ম্যাসেজ আসছে,
বোবাভূত:আগামিকাল নীল জামাটা পরে আসবা কলেজে ওকে।

মুগ্ধ ম্যাসেজ দেখে অবাক।বোবা ভূত দেখি কলেজ ও চিনে।কিন্তু এই বেটার কথা আমি শুনুম কেন পরমুনা নীল জামা হুহ।মুগ্ধ নিজের মনে মনে এসন আওড়াতে আওড়াতে নিচে চলে আসলো।
রুহি বসে বসে আচাড় খাচ্ছে।রুহিকে আচাড় খেতে দেখে মুগ্ধ ওর পাশে এসে বসে বলে,
মুগ্ধ:উহুম উহুম কি আমাদের বাসায় কি জুনিওর মেহের আসছে নাকি।
রুহি মুগ্ধের কথা শুনে লজ্জা লাল হয়ে যায়।রুহিকে লজ্জা পেতে দেখে মুগ্ধ খুশি হয়ে বলে,
মুগ্ধ:ভাবিপু সত্যি?

রুহি:হুম?।
মুগ্ধ:ইয়েস আমি ফুপি আম্মু হবো।উফ আমার এখোনি কি যে ভাল্লাগছে।ভাইয়াকে জানাবে কখন?
রুহি:বাসায় আসলেই।
মুগ্ধ:আচ্ছা।
কথা বলার মাঝে মেহের বাসায় আসে।হাতে তার দুই প্যাকেট ছানার মিষ্টি।বাসায় ডুকে মিষ্টি গুলো রেখে রুহিকে কোলে তুলে নেয় মেহের।রুহিতো লজ্জা শেষ?‍♀️।মুগ্ধ মুখ টিপে হাসছে।সে আসতে করে রুমে চলে আসলো।
মেহের রুহিকে কোল থেকে নামিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বললো,
মেহের:ধন্যবাদ আমাকে এতো বড় উপহার দেওয়ার জন্য।
রুহি:তুমি!
মেহের:তোমার রিপোর্ট ডাক্তার আমার কাছে পাঠিয়েছে আমি আগেই জেনেছি।
রুহি:ভালোবাসি।
মেহের:ভালোবাসি বউ।

মুগ্ধ নিজের রুমে হাসতে হাসতে চলে আসলো।আজকে তার ভাই কত খুশি।ইসস তার ও এরকম হ্যাপি একটা ফ্যামিলি হতে পারতো। কিন্তু তার ভাগ্যে হয়ত সেই সুখ নেই।মুগ্ধ একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।টেবিলে রাখা মায়ের ফোটো ফ্রেমটা বুকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়লো।যখন মুগ্ধ ছোট ছিলো তখন খেলতে গিয়ে ব্যাথা পেলে কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কোলে মুখ লুকাতো।রাতে মা তাকে ভাইকে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতো।কত আদর করতো।কিন্তু মাকে আল্লাহ নিয়ে গেলো।মুগ্ধ মায়ের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো।মেহের ফ্রেশ হয়ে এসে বোনের রুমে দেখে মুগ্ধ ঘুম।মায়ের ফোটো ফ্রেম বুকে জরিয়ে ঘুমিয়ে গেছে।মেহের আসতে করে ফোটো ফ্রেমটা সরিয়ে কাথা গায়ে দিয়ে দিলো।ড্রিম লাইয় জ্বালিয়ে মুগ্ধের কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলো।
সকালে,

মুগ্ধ উঠে নামাজ পরে নিলো।হালকা পড়া পরে রেডি হলো কলেজের জন্য।একটা হলুদ কালারের কূর্তি পরলো সাথে নেবিব্লু কালারের স্ক্রাফ বাদলো মাথায়।রেডি হয়ে নিচে এসে তাড়াতাড়ি নাস্তা করে বেরিয়ে পরলো।আজকে রিকশা করে যাবে মুগ্ধ।মেহেরকে খুব কষ্টে রাজি করিয়েছে।মেহেরতো ওকে একা ছাড়তেই রাজিনা।তবুও খুব কষ্টে রাজি করিয়ে এসেছে।মুগ্ধ রোডে দাঁড়িয়ে রিকশা খুজতেছে গতকাত রাতে বৃষ্টি হইছে তাই রোড সব কাদা পানিতে ভোরা।মুগ্ধ এক কোণায় দাঁড়িয়ে রিকশা খুজতেছে তখন একটা গাড়ি একদম ওর পাশ থেকে এসে ওর জামায় কাদা ছিটিয়ে দিলো।মুগ্ধ তা দেখে অবাক হয়ে রেগে চিৎকার করে বলে,

মুগ্ধ:এই চোখে দেখে গাড়ি চালাতে পারেন না। আমার জামাটা নষ্ট করে দিলেন।
মুগ্ধের চিৎকার শুনে গাড়িওয়ালা গাড়ি থামিয়ে বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে।গাড়ি থেকে সাদাফকে নামতে দেখে আরো অবাক হয় মুগ্ধ।একটু অভিমান ও হচ্ছে এই এক সপ্তাহে সাদাফ আর একবার ও আসেনি ওকে দেখতে সাদিয়া সাদিয়ার বাবা মা এসেছিলো কিন্তু সাদাফ আসেনি।সাদাফ চোখের সানগ্লাসটা খুলে পকেটে রেখে মুগ্ধের দিকে এগিয়ে এসে বলে,
সাদাফ:ইইইইই যা আপনার ড্রেসতো নষ্ট হয়ে গেলো মিস মুগ্ধ।এখন কি হবে।
মুগ্ধ:আপনার জন্যই তো হলো।গাড়ি দেখে শুনে চালান না কেন স্যার।
সাদাফ:ইস আমি সরি রিয়েলি সরি।এক মিনিট দাঁড়ান।
সাদাফ আবার নিজের গাড়ির কাছে গিয়ে গেট খুলে একটা ব্যাগ বের করলো তারপর আবার মুগ্ধের কাছে এসে ব্যাগটা হাতে দিয়ে বললো,

সাদাফ:এইখানে একটা ড্রেস আছে।এটা সাদিয়ার জন্য নিছিলাম এখন আপনি এটা চ্যাঞ্জ করে পরে নেন।
মুগ্ধ:আমি কি এটা এখানে চ্যাঞ্জ করবো।এখানে কই আছে চ্যাঞ্জ করার জায়গা?
সাদাফ:মিস মুগ্ধ আপনি মনে হয় চোখে কম দেখেন আপনার হাতের পাশেই তো একটা মল।ওখানে গিয়ে চ্যাঞ্জ করে নেন।
মুগ্ধ সাদাফের কথা শুনে পাশে তাকিয়ে দেখে আসলেই একটা শপিংমল মুগ্ধ তাড়াতাড়ি সেখানে গিয়ে চ্যাঞ্জ করে নিলো।একটা নীল রং এর কামিজ।মুগ্ধ চ্যাঞ্জ করে বেরিয়ে আসে। সাদাফ তখন রাস্তায় গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো।মুগ্ধকে দেখে ঠিক হয়ে দাঁড়ায়।নীল জামার সাথে নীল স্কাফ কোনো সাজ নেই তবুও দেখতে ভালো লাগছে।সাদাফ মুচকি হাসি দেয়।মুগ্ধ এসে দাঁড়াতেই সাদাফ একটা রিকশা ঠিক করে দেয় তারপর মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে বলে,

সাদাফ:সাদু নানা বাসায়।ও কলেজে আসবেনা কিছুদিন।তো এখন কয়েকদিন বান্ধুবিকে ছাড়া ক্লাস করতে হবে।নেন এখন যান।আর হ্যা সাবধানে আবার কারো গাড়ি দিয়ে কাদা মাখাইয়েন না।
মুগ্ধ সাদাফের কথা শুনে রাগে গজগজ করতে করতে রিকশায় উঠলো।
নিজেই কাদা ছিটালো।আমার দেড়ি করালো।আর এখন বলে সাবধানে যেতে।দেইখেন আপনার কপালে একটা সাতচুন্নি জুটবে হুম।
বকবক করতে করতে মুগ্ধ চলে যায়।আর সাসাফ সেখানে দাঁড়িয়ে হেসে বলে,
“যতোটা মুগ্ধতা নিয়ে আমি তোমার দিকে তাকিয়ে তোমাকে দেখি মেহুরানী,ততোটা মুগ্ধতা নিয়ে আমি ওই দুর আকাশের দিকেও তাকাইনি”।
মনে মনে কথাটা বলে সাদাফ গাড়ি নিয়ে চললো কলেজের পথে।

নিজের রুমে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে আরিশ।তার জীবনের সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।তার নিজের অংশ পৃথীবিতে আসার আগেই চলেগেলো।এখন বিজনেসে লোস শুরু হয়েছে।সব দিক থেকে সে কেমন শেষ হয়ে যাচ্ছে।একসপ্তাহ আগেও সব কত ভালোছিলো বাচ্চাটাকে নিয়ে আরিশ কত এক্সসাইটেড ছিলো।কিন্তু সব শেষ হয়ে গেলো।এক সপ্তাহ আগে সায়মা ওর মায়ের বাসায় যাওয়ার পরের দিন ওর মা কল করে জানালো সায়মা ওয়াশরুমে পা পিছলে পরে গেছে এখন হাসপাতালে।আরিশ দ্রুত হাসপাতালে যায় কিন্তু ততোখনে সব শেষ বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে গেছে জানায় ডাক্তার।সায়মা অনেক কেঁদেছিলো আরিশের হাত ধরে আর মাফ চেয়েছে।আরিশ অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে সায়মাকে সামলেছে।এরপর সায়মা ওর মায়ের কাছেই আছে।ওখানে থাকলে সায়মা নরমাল থাকবে আরিশের মনে হয়।এরপর এখন বিজনেসের লোস এতো টাকার লোস হয়ে গেলো এখন কিভাবে কি করবে সে কিছুই বুজতে পারছেনা।সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে তার।

নিজের রুমে আয়েস করে বসে কফি খাচ্ছে সায়মা আর সালমা।অন্তত একটা ঝামেলা মিটলো।এই বাচ্চার ঝামেলা না মিটলে সায়মাকে আরিশ তো চোখের আড়াল করতোই না।এখন ফাইনালি না আছে বাচ্চা আর না এখন আরিশ সায়মাকে চোখে চোখে রাখবে।
সায়মা:উফ মা তুমি বাঁচিয়ে দিলা।হাপিয়ে গিয়েছিলাম এই প্রেগন্যান্ট হবার নাটক করতে করতে।
সালমা:হুম এখন আর আরিশ তোকে পাহারা দেবেনা।
সায়মা:হুম তো কিছু ভাবলে সামনে কি করবে?
সালমা:ভাবছি কি করবো।তোর বাপ তো আজ রাতে আসছে।
সায়মা:অহ আচ্ছা।
সালমা:হুম।

মেহের বাসায় আজকে কারন আজ তার কোনো জরুলি কাজ নেই।মেহের বসে কাজ করছিলো তখন বাসার দাড়োয়ান আসলো।
দাড়োয়াম:স্যার আপনার জন্য চিঠি আসছে।
মেহের:আমার জন্য?
দাড়োয়ান:জি স্যার আপনার জন্য।
মেহের:কে দিলো?
দাড়োয়ান:জানিনা পোষ্টমেন আইসা দিয়া গেলো।
মেহের:আচ্ছা দেও আমাকে।
দাড়োয়ান:এই লোন।
দাড়োয়ান মেহেরকে চিঠি দিয়ে চলে আসলো।মেহের চিঠির খামে দেখলো কিছু লেখা নেই।তাই খাম খুলে চিঠি বের করলো।চিঠিটা খুলতেই অবাক হয়ে গেলো মেহের।

নিস্তব্ধতাময় পরিবেশ চারদিকে।আগরবাতির ঘ্রান ছড়িয়ে আছে চারদিকে।পরিবেশ পুরাই থমথমে।সোফার এক কোণে মাথা হাত দিয়ে বসে আছে সালমা তার পায়ের কাছে বসে মায়ের কোলে মাথা রেখে কাঁদছে সায়মা।আরিশ পাশের সোফায় বসা।মুগ্ধ বসা সামনের সোফায় তার পাশের বসা মেহের আর রুহি।মুগ্ধের চোখেও পানি।মেহের একদম চুপচাপ বসে আছে।কিছুক্ষন আগে মেহেরাবের জানাজা দিয়ে আসছে তারা।হ্যা মেহরাব তাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে।নিরবতা ভেংগে মেহের কথা বলে উঠলো,

মেহের:সব কাজ তো শেষ। মিস্টার মেহেরারবের জানাজা দেওয়াও শেষ।আমাদের এখন যাওয়া দরকার।রুহি মুগ্ধ চলো।
রুহি:এভাবে এখানে ওনাদের একা রেখে যাওয়া ঠিক হবে?
মেহের:গার্ডস আছে সার্ভেন্টস আছে আর তার মেয়ে মেয়ের জামাই আছে সমস্যা হবেনা।চলো মুগ্ধকে সাথে নিয়ে আসো আমি গাড়িতে আছি।
বলেই মেহের বেরিয়ে গেলো।রুহি আসতে করে মুগ্ধের কাছে গেলো।
রুহি:পাখি চল মেহের যেতে বলছে।
মুগ্ধ:হুম ভাবি চলো।

এরপর রুহি মুগ্ধ দুজনে বেরিয়ে আসে।বাসায় ফিরতে ফিরতে সকাল ৮টা বেজে গেলো।কাল সারারাত তারা ওই বাসায় ছিলো।মেহের, রুহি,মুগ্ধ তিনজনে এসে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
মুগ্ধ ফ্রেশ হয়ে এসে বারান্দায় গিয়ে বসলো।মায়ের মৃত্যুর পর বাবার সাথে তার তেমন সম্পর্ক ছিলোনা।ছোট মা আসার পর বাবা তার খোঁজ নিতোনা।সে বেঁচে আছে না মরে গেছে সেই খবর রাখতোনা।কিন্তু এই মানুষটাই আজকে চলে যাওয়ায় আজ মুগ্ধের খুব কষ্ট হচ্চে।বাবাতো মেয়েদের প্রথম ভালোবাসা তার বাবা।তাদের সুপারহিরো তাদের বাবা।সেই বাবা আজকে চলে গেছে ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে তার।
গতকাল,,,,

মুগ্ধ ক্লাস করে বাসায় আসে।বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে খেতে আসে।খাওয়ার সময় মেহের মুগ্ধকে বলে,,
মেহের:আরিশের প্রোপার্টির ৪০% তোর নামে আছে এখনো?
মেহেরের কথা শুনে চমকে যায় মুগ্ধ খাওয়া বন্ধ করে কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে,

মুগ্ধ:না নেই ওটা আমি আরিশের নামে করে দিয়েছি।আরিশ আমার বিয়ের পর আমি জানতে পারি আরিশের বাবা একটা উইল করে গেছেন আরিশের স্ত্রীকে তিনি সম্পত্তির ৪০% দিয়েছেন।কিন্তু আমার কোনোদিন ওই সম্পত্তির প্রয়োজন ছিলোনা।আমি ভাবতাম আমার এই সম্পত্তি আমার মানে আমার স্বামীর।তাই আমি ভেবেছিলাম সম্পত্তি আমার নামের থেকে আরিশের নামে করে দেবো।সেই জন্য আমি আরিশের বাবার উকিলের সাথে কথা বলেছিলাম।কিন্তু তিনি বলেন,যে আজকাল তো মানুষের ঠিক থাকেনা আপনি সম্পত্তি রেখে দেন।আরিশেএ সাথে ছাড়াছাড়ি হলে কাজে লাগাতে পারবেন।

ওনার কথা শুনে মেজাজ খারাপ লাগে পর আমি অন্য একটা উকিলের সাথে যোগাযোগ করি।তিনি আমাকে জানান যে আমি জেনো কাউকে না জানাই আমি সম্পত্তি আরিশের নামে করে দিচ্ছি।আমিও অনার কথা মতো কাউকে জানাইনি।ওনার সাথে বাসায় না কথা বলে ক্যাফেতে গিয়ে কথা বলতাম।উনি আমাকে হেল্প করেন।আমার আরিশের ডিভোর্সের আগেই সব ফাইল ঠিকঠাক হয় কিন্তু যেদিন আমি আরিশকে দেবো এটা ঠিক করি সেদিন আরিশ আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।তবে আরিশকে আমি ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছি পরশু আজকে বা কালকের মধ্য হাতে পাবে ও সেটা।কিন্তু তুমি কেন জিজ্ঞেশ করলে এই কথা।

মেহের:কিছুনা খা তুই।[তার মানে সায়মা এখন চাইলেও প্রোপার্টি পাবেনা।কারণ প্রোপার্টি অলরেডি আরসিশের নামে হয়ে গেছে।এবার আসবে মজা যেই প্রোপার্টির জন্য এতোকিছু সেই প্রোপার্টি হাতেই পাবেনা ওরা।]
খাবার খাওয়া শেষ করে মুগ্ধ বিছানায় এসে বসলো।তখন তার ফোন বেজে উঠলো স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে বোবা ভূত লেখা।সায়মা বিরক্ত হয়ে কল রিসিভ করে।
মুগ্ধ:হ্যালো।
………………
মুগ্ধ:ভাই আপনি কি বোবা না কালা কোনটা বলেনতো?
……………
মুগ্ধ:দূর ছাই ইদুরের ছানা কল দেয় কথা বলেনা কি অবস্থা।
মুগ্ধ রেগে কল কেটে দিলো।তারপর শুয়ে পরলো।আর এদিকে সাদাফ দাঁত বের করে হাঁসছে।
সাদাফ:আমি বোবা নাকি কালা তা খুব তাড়াতাড়িই জানবে।তখন নিজেই বোবা হয়ে যাবে।
সাদাফ আবার ফোন লাগায় তবে এবার মুগ্ধকে না অন্য কাউকে।
সাদাফ:হ্যা সব ইনফোরমেশন কালেক্ট করেছো।দেখো কোনো ভুল যেনো না হয়।
সাদাফ আর মাত্র কিছুদিন এরপর জানা যাবে কে ছিলো এতো বড় খেলাটার পিছনে।
রাতে,,,,,

মেহের, মুগ্ধ,রুহি সোফায় বসে টিভি দেখছে তখন মেহেরের ফোনে কল আসে।Unknown নাম্বার থেকে কল আসে।মেহের কল রিসিভ করে।
মেহের:হ্যালো।
ফুলি:মেহের ভাইজান আমি ফুলি।মেহের ভাইজান বড় সাহেব আর নাই বড় সাহেব আর নাই। বলেই কান্নায় ভেংগে পরে ফুলি।
মেহের কথাটা শুনে স্তব্দ হয়ে যায় পুনরায় আবার জিজ্ঞেশ করে,
মেহের:কি বলছিস ফুলি তুই এসব?
ফুলি:ভাইজান সত্যি।বড় সাহেবের লাশ এই মাত্র বাসায় আইছে।আপনারা তাড়াতাড়ি আহেন।
বলেই কল কেটে দিলো ফুলি।মেহের চুপ করে যায়।পাশ থেকে রুহি মুগ্ধ জিজ্ঞেশ করেই যাচ্ছে কি হয়েছে।কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর মেহের বলে,
মেহের:মিস্টার খান মারা গেছেন।

রুহি:কি?
মুগ্ধ:কি বলছো ভাইয়া।
মেহের:হুম আমাদের অই বাসায় যেতে হবে।
রুহি:চলো।
এরপর মেহের,মুগ্ধ,রুহি তিনজনে চলে আসলো খান বাসায়।এসে দেখে কফিনে করে রাখা মেহেরাব খানের লাশ।মেহের,মুগ্ধ,রুহি তিনজনে আসতে করে ভিতরে আসে।মেহের খানের পি.এ মেহেরদের দেখে ওদের কাছে আসে।মেহের লোকটাকে চেনে তাই তাকে জিজ্ঞেশ করে,
মেহের:এসব কিভাবে হলো?

পি.এ:স্যারের ব্রেইনটিউমার ছিলো।লাস্ট স্টেজে ছিলো।আমি স্যার কে শুরু থেকে বলেছিলাম ট্রিটমেন্ট করাতে কিন্তু তিনি রাজি হয়নি।দিনের পর দিন ধুকে গেছে এই রোগটা নিজের শরীরে নিয়ে।এক সপ্তাহ আগে বিজনেস এর একটা কাজে আমরা চিটাগাং যাই।ওখানে স্যার অনেক অসুস্থ হয়ে পরে।পরে আমরা স্যার এর অপারেশন করাতে বাধ্য হই।আমি স্যারকে বলেছিলাম বাসায় জানাতে।কিন্তু স্যার কাউকে জানাবেনা বলে ঠিক করেন।অপারেশনের দুইদিন ভালো গেলোও আজকে স্যারের অবস্থা খারাপ হয়ে যায় আর উনি…..।স্যার কাউকে কিছু বলতে না করলেও আপনাকে একটা চিঠি পাঠিয়েছে।বলছে হাজার ঘৃণা তার উপর করলেও চিঠিটা একটু পড়তে বলেছে।
মেহের আর কিছু বলেনা চলে আসে কফিনের কাছে।মুগ্ধের চোখে পানি পড়ছে।কিন্তু কিসের একটা বাধায় যেতে পারছেন বাবার লাশের কাছে।লাশ সারারাত বরফ দিয়ে লাশ রাখা হয়।ভোরে জানাযা দেওয়া হয় মেহেরাবের।

বর্তমানে,,,
নিজের রুমে ইজি চেয়ারে বসে আছে মেহের।হাতে তার বাবার দেওয়া চিঠি।গতকাল চিঠিটা দেখে মেহের পড়েনি।চিঠি খুলে মেহেরাবের নাম দেখে রাগে চিঠিটা অভাবেই রেখে দিয়েছিলো।ভেবেছিলো ছিড়ে ফেলেদিবে কিন্তু পরে আবার কিভেবে ছিরেফেলেনি।মেহের চিঠিটা অনেক সময় নিয়ে খুললো।পড়া শুরু করলো চিঠিটা।
প্রিয় মেহের।
যখন তুই এই চিঠিটা পাবি ততোখনে হয়তো আমি দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবো।তবে যাওয়ার আগে কিছু কথা তোকে জানানো খুব দরকার।যা এতোগুলো বছরে কাউকে আমি জানাইনি।জানি এই কথাগুলো শুনলে তুই আমাকে আরো ও ঘৃণা করবি।কিন্তু তাও আমাকে বলতে হবে আজ।

আমি আমার বেচোলোর লাইফে অনেক বেশি ছন্নছাড়া টাইপ ছিলাম।সারাদিন ফ্রেন্ডসদের সাথে আড্ডা রাতে নাইটক্লাভে গিয়ে ড্রিংক মেয়েদের সাথে ফ্লাট করতাম।আমার বাবা সেগুলা মেনে নিতে পারছিলোনা।তাই ঠিক করে আমাকে বিয়ে দেবে।তোর মাকে আমার বাবা নিজে পছন্দ করে আমার জন্য ঠিক করেছিলো।আমি বিয়েতে রাজি ছিলাম না কিন্তু বাবা জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয় আমাকে।বিয়ের পর তোর মাকে আমার একটু ও সয্য হতোনা।রাতে এক বিছানায় আমরা মিলিতো হলেও তোর মায়ের প্রতি আমার কোনো ভালোবাসা ছিলোনা।কিন্তু তোর মা আমাকে অনেক ভালোবাসতো।

বিয়ের পরেও আমার জীবন যাপন আগের মতোই ছিলো।বাবা তাই সকল সম্পত্তি তোর মায়ের নামে করে দেয়।বাবা জানে আমি এভাবে চললে এই সব সম্পত্তি আমি লাটে উঠিয়ে দেবো।তোর মা আমাকে ভালো করার অনেক চেষ্টা করে।কিন্তু বিনিময় আমার থেকে মার,গালি,অত্যাচার এসব পায়।এরপর একদিন তুই আসার খবর দিলো তোর মা আমাকে।আমি চাইছিলাম না এখন কোনো বেবি নিতে কিন্তু তোর মা নিবেই নিবে।আর নিলো তোকে।পুরুষমানুষ একটা চাহিদাতো থাকে। একদিন ক্লাভে দেখা হয় সালমার সাথে।জানতে পারি সালমা মেহেজাবিনের বান্ধুবি।প্রথম পরিচয় বন্ধুত্ত এরপর ওর সাথে আমি সম্পর্কে জরিয়ে যাই।তুই হবার পর তোর মায়ের সাথে সম্পর্ক আরো তিক্ত হতে লাগলো।তোর মায়ের সাথে সম্পর্ক বিছানা পর্যন্ত ছিলো।এর মাঝে বাবা মারা গেলো।

এখন না চাইলেও বিজনেসে আমাকে ডুকতে হলো।সালমার সাথে সম্পর্ক তখনো আমার ছিলো।এভাভে কেটে যায় দুই বছর মেহেজাবিন আবার প্রেগন্যান্ট হয়।তখনো আমি ওকে অত্যাচার করতাম যেনো ও আমাকে ছেড়ে দেয়।ও জেনে গেছিলো আমার আর সালমার কথা।সেদিন অনেক কেঁদেছিলো আমার পা ধরে কিন্তু আমার মন সেদিন গোলেনি।মুগ্ধ হবার পর সালমা আমাকে অনেক চাপ দেয় বিয়ের জন্য হুমকি দিচ্ছিলো সুইসাইড করবে বলে।কিন্তু মেহেজাবিন আমাকে ছাড়ছিলোনা।তাই সালমা একটা উপায় বলে যে মেহেজাবিনকে মেরে ফেলার।কিন্তু আমি রাজি ছিলাম না আর যাই হোক কাউকে মারতে চাইনা না চাইলেও মেহেজাবিন আমার সন্তানদের মা।কিন্তু সালমার চাপে।

বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে যাই।মেহেজাবিনকে মারার আগে আমি স্বাভাবিক ব্যাবহার করতে থাকি ওর সাথে।এরপর একদিন মুগ্ধ খুব কান্না করছিলো বাহিরে যাওয়ার জন্য সেদিন আমি মেহেরকে নিজের কাছে রেখে মেহেজাবিনকে বলি মুগ্ধকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসতে।মেহেজাবিন ও মুগ্ধকে নিয়ে যায় মুগ্ধের নানুবাড়ি।সেদিন আমি সালমার কথা মতো গাড়ির ব্রেক নষ্ট করিয়ে দেই।মেহেজাবিন বাসায় ফেরার পথে এক্সসিডেন্টে হয়।আমি জানতাম মেহেজাবিনের বাড়ির লোক মানতে চাইবেনা এটা যে এক্সিডেন্ট।তারা পুলিশের কাছে গেলো।আমরা পুলিশকে টাকা খাইয়ে কেস বন্ধ করিয়ে দিলাম।

এরপর তোর নানা তোদের নিয়ে গেলো তাদের কাছে।এক বছর পর আমি সালমাকে বিয়ে করলাম।যাতে কেউ সন্দেহ না করে।বিয়ের পর আমি তোদের নিয়ে আসতে চাইলে তুই আসবিনা আমার কাছে জানিয়ে দিলি।কিন্তু আমি মুগ্ধকে নিয়ে আসি।সালমা মুগ্ধকে আগলে নেয়।এটা দেখে আমার ভালোলেগেছিলো।আমি যে এতো বড় একটা অপরাধ করেছিলাম সেটা ভুলেই গেছিলাম।এভাবে কেঁটে যায় আরো ও দুইবছর কাজের ব্যাস্ততায় মুগ্ধের কথা আমি ভুলে যাই।যে আমার একটা মেয়ে আছে তার আমাকে দরকার আছে।এরপর সালমা মা হবে জানতে পারলাম।দেখতে দেখতে সায়মা হলো।সালমা বদলে যেতে শুরু করলো।আমি এসব দেখতাম কিন্তু কিছুই করতাম না।

এভার তোকে একটা চরম সত্য বলি আমার জীবনের সায়মা আমার সন্তান না।সায়মা সালমা আর ওর প্রেমিকের সন্তান।সালমার প্রেমিক ওকে ছেড়ে দিয়েছিলো।আমার আড়ালে ওদের রিলেশন ছিলো।এটা আমি জানতে পারি ছেলেটার মুখেই।সালমা আমার থেকে এটা লুকিয়েছিলো।আমি সালমার কাছে এর কারন জানতে চাইলে আমাকে বলে,
আমি প্রতারক হলে তুমি কি? তুমি নিজেও তো প্রতারক নিজের বউকে রেখে আমার কাছে এসেছিলে।তাই নিজের দিকে আগে তাকিয়ে আমাকে প্রতারক বলো তারপর।

আমি সেদিন বুজতে পেরেছিলাম কত বড় ভুল আমি করেছিলাম যার মাসুল আমাকে সারাজীবন দিতে হবে।লজ্জায় আমি মুগ্ধের দিকে তাকাতে পারতাম না।সালমার অত্যাচার বেরেই চলেছিলো।মেয়েটা যখন জোরে জোরে মা মা বলে কাঁদতো।বুকটা আমার ফেটে যেতো।আমার অপরাধে আমার মেয়ে মা হারা হয়েছে।এরপর সায়মা বড় হলো।সায়মার মুগ্ধের প্রতি খোব ঝারা শুরু করে।মেয়েটাকে সালমা পরতেও দিতোনা ঠিক মতো।তিনবার ফেল করেছে মুগ্ধ এক ক্লাসে কারন মুগ্ধ না স্কুকে যেতে পারতো না বাসায় পরতে পারতো।সায়মার পড়াশুনা ঠিক চলছিলো বয়সে সায়মা মুগ্ধের ছোট হলেও ক্লাসে এগিয়ে গেছিলো সায়মা।

শেষ থেকে শুরু পর্ব ৯

এরপর মুগ্ধের এসেসির পর বিয়ে ঠিক হয় মুগ্ধের।জোর করেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হলো আরিশের সাথে।আমার প্রথমে মত না থাকলেও সালমা জোরাজুরিতে রাজি হয়ে যাই।সায়মা তখন ক্লাস নাইনে।ভেবেছিলাম এভার হয়তো মেয়েটা সুখে থাকবে।কিন্তু না সালমা আমার মেয়েকে সুখে থাকতে দিলোনা।যেভাবে ও মেহেজাবিনের ঘর ভাংলো সেভাবে নিজের মেয়েকে দিয়ে মুগ্ধের ঘরটা ভাংলো।আরিশ আমার মতো ভুলটা করলো।আমি জানতাম না যে সালমা মুগ্ধকে আরিশের কাছে বিয়ে দিচ্ছে সম্পত্তির জন্য।সেই সম্পত্তি পাওয়ার জন্য যে সায়মাকে মুগ্ধের ঘর ভাংগতে ব্যবহার করবে বুজতে পারিনি।আমি সায়মাকে চাইলেও কিছু বলতে পারতাম না।কারন আমি সায়মাকে কিছু বললে তার ঘাটা মুগ্ধের উপর গিয়েই পরবে আমি জানতাম।বাপ হয়ে দেখেগেলাম চুপ করে মেয়ের ঘর ভাংগন।আমি জানতাম আমার মেয়ের পাশে আর কেউ না থাকলেও তুমি থাকবে।তুমি ওকে আগলে রাখবে।

আমার পাপের ভোজা অনেক বেশি হয়েছে তাই আল্লাহও আর আমাকে এই দুনিয়ায় রাখতে চাননি।ওপারে নেওয়ার ডাক পাঠিয়েদিলেন।ব্রেইন টিউমার ধরা পরলো।আমার হাতে বেশি সময় নেই জানি।তাই তোমাকে সব জানিয়ে যেতে চাইছিলাম।মুগ্ধকে আগলে রেখো সালমা সায়মাকে একদম ওর মতো ভয়ংকর বানিয়েছে।সায়মা সালমার থেকে ওকে সামলে রেখো।আমাকে মাফ করো আমি বলবোনা।আমি যা করেছি তার শাস্তি আল্লাহ আমাকে পদে পদে দিয়েছে।ভালো থেকো বোনকে নিজের স্ত্রীকে নিয়ে।

ইতি
তোমার অপরাধী বাবা।
চিঠিটা পুরা মেহেরের চোখের পানিতে ভিজে গেছে।মেহের জানতো তার বাবা মাকে ঠকিয়েছে।কিন্তু তাকে সেই মেরেছে এটাসে ভাবেনি।হাউমাউ করে কাঁদছে মেহের।ছেলেদের কাঁদতে নেই।কিন্তু অতি কষ্টে ছেলেরাও কাঁদে।যেমন আজ মেহের কাঁদছে।

শেষ থেকে শুরু পর্ব ১১