সবটাই তুমিময় পর্ব ১২ || লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

সবটাই তুমিময় পর্ব ১২
লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

-প্লিজ অদ্রি।কল কেটো না।প্লিজ?এতোরাতে তোমার মনিমা ঘুমিয়ে পরেছে হয়তো।ডোরবেল বাজিয়ে ডিস্টার্ব করতে চাইনা তাকে।তুমি শুধু ব্যালকনির দরজাটা খোলো।জাস্ট দু মিনিট নেবো।টু মিনিটস্!আই প্রমিস!প্লিজ?প্লিজ অদ্রি?
ফোনটা কানে নিয়ে শ্বাস আটকে দাড়িয়ে রইলাম।এভাবে আমার বারান্দার দরজা খুলতে বলছেন কেনো অঙ্কুর?তবে কি উনি এসেছেন?কেনো?এমন অসহায়ের মতোই বা করছেন কেনো উনি?এতো আকুতি কিসের ওনার?
-অদ্রি প্লিজ!প্লিজ ওপেন দ্যা ডোর!প্লিজ!আমি….
-খুলছি।

কোনো ভনিতা না করেই এটুক বলে ফোন ছেড়ে ব্যালকনির দরজা খুললাম।ভালো লাগছিলো না তার নাটকীয় কথা শুনতে।দরজা খুলে কিঞ্চিত হতবাক না হয়ে পারলাম না।একদম এলোমেলোভাবে অঙ্কুর দরজায় দাড়িয়ে।সত্যিই এসেছেন উনি।চুল,শার্টের হাত,বোতাম সব অগোছালো।দরজা খোলা পেতেই হাসি ফুটলো তার মুখে।ভেতরে ঢুকেই জাপটে জরিয়ে ধরলেন আমাকে।একহাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে আরেকহাতে আমার মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলেন উনি।তার হৃদস্পন্দনের আওয়াজ এতোটা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি যেনো বুকের ভেতরটাতে মিশিয়ে নিয়েছেন আমাকে।খুব বেশিক্ষন সময় না নিয়ে ছেড়ে দিয়ে দুগাল ধরে বললেন,

-বলেছি দু মিনিট সময় নেবো।ইটস্ ওয়ান এন্ড হাফ।বাকি ত্রিশ সেকেন্ডস্ শুধু দেখবো তোমাকে।
বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইলাম তারদিক।ঠোটে তৃপ্তির হাসি তার।ভ্রুর পাশের তিলটায় চোখ আটকে গেলো আমার।উনি এগিয়ে আমার কপালে ঠোট ছোয়ালেন।চমকে উঠে চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি।হাতে থাকা ঘড়িটা বিপ শব্দ করতেই আমাকে ছেড়ে বারান্দার দরজা খুলে বেরিয়ে গেলেন অঙ্কুর।তার এ হেন কাজে আটকে ছিলাম অনেকক্ষন।ধুকতে ধুকতে বিছানায় এসে বসলাম অনেকটা সময় পর।কি ঘটেছে তা মস্তিষ্ক স্পষ্টভাবে জানান দিতেই টুপ করে দুফোটা নোনাজল বেরিয়ে এলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

উনি বলেছিলেন,জোর করবেন না আমাকে।তা বলে এভাবে এতোরাতে বারান্দা টপকে দেখা করতে এসে কি বোঝাতে চান উনি?আমাকে মিস করছিলেন?উনি আমার প্রতি দুর্বল?যাতে আমিও তার প্রতি,তার স্পর্শে দুর্বল হয়ে পরি?তারপর যেনো তার কথায় সম্মত হই?এতোটা ঘৃন্য পরিকল্পনা তার?
নাক টেনে হাতের পিঠে চোখের পানি মুছে ফেললাম।যদি তাই হয়ে থাকে,তবে আপনাকে আমিও বোঝাবো অঙ্কুর,আপনি সার্থক।আপনার সব চেষ্টা সার্থক।আমিও দেখবো,আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পরেছি আমি।স্বীকার করে নেবো আপনার স্বামীত্ব।যা আপনি চাইছেন তাই হবে।জোর করতে হবে না আপনাকে।কিন্তু পরিশেষে?পরিশেষে সবটার দাম দিতে হবে আপনাকে অঙ্কুর।আমার সবটা শেষ করে দিয়ে হলেও আপনাকে আমি এক্সপোজ করবো মিস্টার এএসএ!করবোই!

সকালে এলোমেলোভাবে আমার রুমেই খুজে পেলাম নিজেকে।চটজলদি উঠে আগে মনিমাকে ঘুমন্ত দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।ফ্রেশ হয়ে মনিমাকেও ডেকে দিয়েছি।ডোরবেল বাজতেই খুলে দিলাম দরজা।তানহা সকাল সকাল খাবার প্যাক করে গাড়ি নিয়ে চলে এসেছে।সোজা ডাইনিং টেবিলে খাবার সাজাতে সাজাতে বললো,
-আন্নু?ভার্সিটি যাবি তো?
-হুম।কিন্তু আগে তুই এটা বল এইসব খাবারদাবার…..
-আমি আনবোই!জানিস তো এটা তুই আন্নু!তবুও এটা নিয়ে আরেকটা কথা বলবি তো বেরিয়ে যাবো!
হতাশার শ্বাসত্যাগ করলাম।মনিমা এসে চেয়ার টেনে বসে বললো,
-তান্নু?আজ বিকেলে আর খাবার আনিস না তুই।আমি তো ঠিকাছি।কিচেনে যেতে পারবো।
-হ্যাঁ।যাবে তো কিচেনে।তবে আরো দুটো দিন পর!
-কিন্তু আমি এখন ঠিকাছি তো!
-তবুও যাবে না তুমি কিচেনে!

-ওভাবে বলিস না তান্নু।কতোদিন আন্নুকে রান্না করে খাওয়াই না!আমার ভালো লাগছে না এমন!
তানহা আমার দিকে তাকালো।আমি মাথা নেড়ে বোঝালাম মনিমার কথা মেনে নিতে।ও গাল ফুলিয়ে বললো,
-আচ্ছা বেশ!রেধে খাইয়ো তোমার আন্নুকে!তান্নু তো ভাসমান,ওকে নিয়ে ভাবতে হবে না!
মনিমা উঠে ওর থুতনি ধরে বললো,
-ওমা।তুই অভিমানও করতে পারিস?আচ্ছা!তাহলে অভিমান ভাঙানোর জন্য স্পেশাল ম্যাকারনি খাওয়াবো।চলবে?
তানহা খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলো মনিমাকে।উৎফুল্লভাবে বললো,
-আরেহ্!দৌড়াবে বস!
হাসিখুশিভাবে ব্রেকফাস্ট শেষ করে ভার্সিটির জন্য তানহার গাড়িতেই বেরোলাম।গাড়ি থেকে নেমে দেখি আস্থা গাদা ফুলের মালা হাতে গেইটে দাড়িয়ে।কপাল কুচকে এগোলাম ওর দিকে।ও দাত কেলিয়ে মালাটা আমার গলায় পরিয়ে দিয়ে বললো,

-ওয়েলকাম বেব!
-এসব কি আস্থা?
-ইয়ে আন্নু?এএসএকে….
অঙ্কুরের নাম শুনতেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো আমার।মালাটা খুলে ফেলতে যাবো আস্থা আটকে দিলো।তারপর সেই সুর তুলেই বললো,
-আরে আরে,করছিস কি?আ’ম জোওওওওকিং!এতোদিন পর ভার্সিটি আসলি,এজন্যই মালা পরিয়েছি ইয়ার!তাছাড়া এমন করছি যেনো মালার বিনিময়ে তোর বরকেই চেয়ে বসবো!
তানহা বললো,
-চাইতেও পারিস।চারদিন হলো সিঙ্গেল কিনা!
-ঠিক বলেছিস।জাস্ট পারছি না ইয়ার!এমন মনে হচ্ছে যেনো এই হাইফাই লুকেও কয় জন্ম ধরে মুরগী পটছে না!মানে এইটা সহ্য হয়?

-মুরগীকে মানুষ ভাবতে শেষ,তাহলেই পটবে।ইনফ্যাক্ট মাথায় করে রাখবে।
-অ!আচ্চা!তারপর???
এবার আমিই তানহাকে ধমকে বললাম,
-স্টপ ইট তান্নু!ভেতরে চল!
-আমাকে কেনো বলছিস?শুরু তো করলো পাস্তা!
আস্থা বললো,
-ও কি বলবে রে আমাকে?ও মরছে ওর মরমে!বেচারী বিয়ে করে বাসর ছেড়ে মাতৃসেবায় নিয়োজিত।আয় হায়,বাসরটা কি বারবার আসে?
কিছুটা জোরেই বলে উঠলাম,
-এইসব বিয়ে বাসর নিয়ে কথা বলার হলে বল তোরা।আমি আসছি।বাসায় যাবো!
আস্থা একটু অবাক হয়ে তাকালো।ওকে চিনি বলে ওর কথায় রিয়্যাক্টগুলোও মজার ছলেই দেই আমরা।কিন্তু আজকে‌ হয়তো বেশিই বলে ফেললাম।গলা নামিয়ে আবারো বললাম,
-আস্থা,আমি….
-চল ভেতরে!

ও ভেতরে পা‌ বাড়ালো।হাত টেনে ধরে জরিয়ে ধরলাম ওকে।দোষটা তো ওকে দেওয়া চলে না।এক বান্ধবীর স্বাভাবিক নিয়মে বিয়ে হলে বাকি বান্ধবীরা স্বাভাবিকভাবে লেগপুল করতে আসবেই।কিন্তু আমার তো না বিয়েটা স্বাভাবিক ছিলো,না বর নামক লোকটা।তাহলে তোর এই ব্যবহার কি করে মানবো আমি আস্থা?কি করে?তাই ওমন ব্যবহার করে ফেলেছি।আস্তেধীরে বললাম,
-মনিমার অসুস্থ্যতার জন্য কি বলছি,কি করছি কিছুই মাথায় ঢুকছে না আস্থা।আ’ম সরি।মাফ করে দে!
-তাহলে বল আমার এই সেমিস্টারের সব এসাইনমেন্ট তুই লিখে দিবি?
ওকে ছেড়ে চোখ বড়বড় করে তাকালাম ওর দিকে।আস্থা হেসে দিয়ে বললো,
-আ’ম জোওওওকিং!
ওর হাসিটা দেখেই সব খারাপ লাগা শেষ হয়ে গেলো।আবারো জরিয়ে ধরলাম ওকে।তানহাও পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।আস্থা‌ বললো,

-আজকে কোনো হাগ ডে না!ছাড় আমাকে!লজ্জা তোদের নেই,আমার আছে তো!
ওকে ছেড়ে চুল টেনে দিয়ে তিনজন একসাথে হাসিখুশিভাবে ভেতরে ঢুকলাম।তিহান আসেনি ভার্সিটিতে।ক্লাস শেষে তানহার গাড়ি করে ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম আঙ্কেলকে দেখতে।ওর পরিবারে ওর বাবা,মা আর একটা নাইনে পড়ুয়া,ওরই মতো ব্রিলিয়ান্ট ছোটবোন।আঙ্কেল স্কুলমাস্টার ছিলেন।তার পেনশন আর তিহানের টিউশনির টাকায় ওদের সংসার চলে।বাকিসব স্বাভাবিক থাকলেও,আমরা যতোক্ষন ছিলাম,পুরোটা সময় চুপচাপ ঠোটে তাচ্ছিল্যের হাসি ঝুলিয়ে মাথা নিচু করে বসে ছিলো তিহান।তবে যে কয়েকবার চোখাচোখি হয়েছে,শুধু ঠোটের ওই হাসিটা নয়,তারসাথে ওর জল ভরা চোখটাও দেখেছি।

দুদিন হয়ে গেলো।তিহান এ দুদিনে ভার্সিটি আসে নি।তানহা নিজের বাসা থেকে গাড়ি নিয়েই আসে।আর আমি রিকশা করে।তবে সবসময় মনে হতো কেউ পিছু করছে আমার।খুজেছি তাকে।কিন্তু প্রতিবারই সেটা মনোভ্রম প্রমানিত হয়েছে।দুক্লাস শেষে মাঠেই বসে ছিলাম তানহা,আমি আর আস্থা।অনেকক্ষন যাবত তিনজনের নিরবতা বলে দিচ্ছে মনটা কারোরই ভালো নেই।একসময় আস্থা বলে উঠলো,
-ওই গর্দভটা পড়াশোনা বাদ দিলো নাকি?
তানহা বললো,

-ওর মতো একবার রেজাল্ট করে তারপর ওকে গর্দভ বলতে আসিস।
-ওয়াহ্!রাব নে বানা দি জোডি!ও গর্দভ,আর তুইও প্রমান করে দিলি,তুই ওই গর্দভের গাধী!আমি কি ওর রেজাল্টের জন্য ওকে গর্দভ বলি?ওর কাজকর্মের জন্য ওকে গর্দভ বলি।গাধা একটা!জল তো ঘোলা করে খাবেই!আর সেই জলে তুইও ডুবছিস!
-থামবি তুই?

-হ্যাঁ হ্যাঁ।থামছি।ভুলেই গেছিলাম,তোর তো আবার ওর বিরুদ্ধে কিছু সয় না!আই ওয়াজ জোওওওকিং!এবার ঠিকাছে?
এরমধ্যে তিহান এসে আস্থা তানহার মাঝে কিছুটা পিছনে বসলো।ঘামে ভিজে থাকা কপালটা বৃদ্ধাঙ্গুলে মুছতে লাগলো ও।ও বরাবরই আমার আর আস্থার পিছনে বসতো।তানহা কতোবার বলেছে আমাকে,তিহান নাকি ওভাবে পিছনে বসে নিরবে শুধু আমার চুল দেখে দেখে আড্ডার সময় পার করে দিতো।আজ তানহার পিছনে বসেছে বলে শত মন খারাপের ভীড়েও মন ভালো হয়ে গেলো আমার।হাসিমুখে বললাম,

-আঙ্কেল কেমন আছে তিহান?
না তাকিয়ে ওর হাতের একটা ফাইল খুলে দেখতে দেখতে বললো,
-আগের চেয়ে বেটার।
তানহা বললো,
-এ দুইদিন ভার্সিটি আসলি না যে?
-কাজ ছিলো।
আস্থা বললো,

-আজ এলি তো এলি গর্দভের মতো দুপুরে দু ক্লাস পরে কেনো?
-ক্লাস করবো না।একটা ইন্টারভিউ আছে।ওখানেই যাবো।
সবাই আবারো চুপচাপ হয়ে গেলো।তিহান ফাইল দেখতে দেখতে বললো,
-তা সদ্য বিবাহিত মিসেস আরিয়ান সার্ফরাজ অঙ্কুর তার আলিশান শশুড়বাড়ি ছেড়ে এখনো মনিমার বাসায় কেনো?
ভ্রুকুচকে তাকালাম ওর দিকে।কথাটা বলেও কোনোদিক পাত্তা নেই ওর।বললাম,
-মনিমা অসুস্থ্য।তাই উনিই বলেছেন মনিমার কাছে থাকতে।
-ও।বুঝলাম।তা আমাদেরকে কেনো মানা করলো তোদের বিয়ের বিষয়টা পাব্লিক না করতে?
তানহা বললো,

-একই কারন।এখন সবাই জানলে প্রেস মিডিয়ার চাপে আন্নুকে নিয়ে যেতে হবে তাকে তাইনা?
তিহান তাকালো তানহার দিকে।আর কিছু বললো না।ফাইলে মনোযোগ দিলো ও।আস্থা বললো,
-তিহান?একটা হেল্প করবি?
তিহান চুপ।আস্থার হেল্প করা মানে ঠিক কি তা জানে ও।এসব কথার জন্যই ওকে পছন্দ করে না ও।আস্থা আবারো বললো,
-কিরে?বলনা!করবি হেল্প?তোর এই মিস ওয়ার্ল্ড বান্ধবীটা আর কতোদিন সিঙ্গেল থাকবে বল?

-কিরে?কি বললাম তোকে?দেখনা!আমার জন্য একটা ছেলে দেখনা!প্রেম করায়া দে না ভাই!তোর নজরে আছে কোনো ছেলে?
তিহান ফাইল থেকে চোখ তুলে বললো,
-আছে।আমার নজরে আছে একজন।
তিনজনই অবাক হলাম।এসবে থাকার মতো ছেলে ও নয় আমরা জানি তা।তাহলে এ কথা বললো কেনো?আস্থা চকচকে চোখে উৎসাহ নিয়ে বললো,

-কে ভাই?অতপর আমার আবারো প্রেম হবে?আমিও রিলেশনে যাবো?আবার আমার মুড সু…..
-আমার নজরে এএসএ আছে আস্থা।আন্নুর সাথে ওর বিয়েটা হয়ে গেছে।ও যতোবড় ক্রিকেটারই হোক না কেনো,আন্নুর চোখের জলের কারন ও হলে,আমি ওকে ছাড়বো না!কোনোভাবেই না!
পুরো কথাটা আমার দিকে তাকিয়েই বললো ও।তানহার দিকে তাকালাম।ঘাস ছিড়তে ছিড়তে অদ্ভুতভাবে হাসছে ও।রাগে উঠে দাড়িয়ে গেলাম আমি।জোরেসোরে বললাম,
-স্টে ইন ইওর লিমিটস্ তিহান!উনি আমার বর হন!

-জানি।বারবার বলে মনে করাতে হবে না।তবে এটাই মানতে কষ্ট হচ্ছে,তোদের লাভ ম্যারেজ।আর তবুও এএসএ তোকে দুরে রাখছে,বিয়ের বিষয়টা পাব্লিক করাতে চাইছে না।
-আমি কাকে ভালোবাসবো,কাকে ভালোবেসে বিয়ে করবো,বিয়ের বিষয়টা কখন পাব্লিক করবো,কাকে বলবো,কাকে বলবো না সেসব নিতান্তই আমার ব্যাপার তিহান!নিতান্তই আমার আর আমার বরের ব্যাপার!সেটা নিয়ে তোর বলার কোনো অধিকার নেই।আর অঙ্কুরকে নিয়ে কোনো কথা তো নয়ই।তুই আমার বন্ধু!শুধুই বন্ধু!তাই নিজের সীমার মধ্যে থেকে কথা বল!
তিহানও উঠে দাড়ালো।বললো,

-আমি আগেও বলেছি,আজও বলছি।তোর সুখের সময় তুই না চাইলে আমি কখনোই সামিল হতে আসবো না।কিন্তু বন্ধু হিসেবেই তোর প্রতিটা খারাপ সময়ে আমি তোর পাশেই থাকবো।তোর সে খারাপ সময়গুলোর কারন যে হবে,তাকে আমি ক্ষমা করবো না!আর এটাতে কেউ আটকাতে পারবে না আমাকে।তুইও না!
লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেলো ও।মাথা ধরে আবারো ঘাসের উপর বসে পরলাম।তানহা কাধে হাত রাখলো আমার।আস্থা বললো,

সবটাই তুমিময় পর্ব ১১

-এ কাকে ভালোবেসেছিস তুই তান্নু?ওর নাকি অনেক আত্মসম্মান?তাহলে আন্নুর মানা করা সত্ত্বেও কেনো ওর বিষয়ে এতোটা মাথা ঘামাচ্ছে ও?হোয়াই?আমিও তো আন্নুর ফ্রেন্ড!আমি যখন এএসএ’র বিষয়টা পজিটিভলি নিতে পারছি,ও কেনো পারছে না বলতো?এএসএ আর আন্নুর বিয়েটা মানতে পারছে না,কষ্ট হচ্ছে ওর,এসব কেনো বারবার বোঝাচ্ছে ও?এখন আত্মসম্মানে লাগছে না ওর?
তানহা শান্তভাবে বললো,

-ওর পয়েন্ট অফ ভিউ তোর থেকে আলাদা আস্থা।তুই ওর কথাটা বুঝিসনি।ও বিয়েটা মানছে,বিয়ের অস্বাভাবিকতা নয়।কোনোভাবেই আন্নুর এতোটুকো কষ্ট দেখতে চায়না ও।কারনটা এএসএ হলেও একচুল ছাড় দেবে না ও,এটাই বুঝিয়ে গেলো।ওর আন্নুর হাসিমুখ চাই!আন্নুকে খুশি দেখতে চায় ও!যেকোনো জায়গায়,যেকোনোভাবে!

সবটাই তুমিময় পর্ব ১৩