সাতরঙা প্রজাপতি পর্ব ৮

সাতরঙা প্রজাপতি পর্ব ৮
লেখনীতে: মাশফিত্রা মিমুই

ধরিত্রীতে অন্ধকার নেমেছে। সোডিয়ামের আলোয় রাস্তাঘাট স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে। রাস্তা দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে দুয়েকটা গাড়ি চলছে। অবশ্য মেইন রাস্তা নয় বলেই গাড়ির সংখ্যা কম। রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছে দুজন মানব মানবী।হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যথা হয়ে গেছে জ্যোতির। ক্লান্ত কণ্ঠে শুধালো,”আর কত দূর?”
শোভন না বোঝার ভান ধরে উল্টো প্রশ্ন করল,”কী?”

“নার্সারি।”
“আমরা তো নার্সারিতে যাচ্ছি না।”
হাঁটা থামিয়ে দিলো জ্যোতি। বিষ্মিত হয়ে বললো,
“তাহলে কোথায় যাচ্ছি?”
“তোমার জন্য গাছ চুরি করতে।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

শোভনের কথাটা সত্যি ভেবে নিলো জ্যোতি। দাঁড়িয়ে রইলো পূর্বের স্থানে। শোভন পেছনে ঘুরে ধমকের সুরে বললো,”দাঁড়িয়ে আছো কেন এভাবে? তোমার জন্য কী আজ সারারাত রাস্তায় থাকব?”
“চুরি করা মহাপাপ। আমার গাছ লাগবে না চলুন বাড়ি ফিরে যাই।”
“এখন এ কথা বললে তো হবে না। গাছ না নিয়ে আজ বাড়িতে ফেরা হচ্ছে না। চলো তাড়াতাড়ি।”

জ্যোতির হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে সামনে হাঁটতে লাগলো শোভন। আরো কিছুক্ষণ হাঁটার পর নার্সারি দেখতে পেলো দুজনে। জ্যোতিকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো শোভন। জ্যোতি বললো,”আপনি না বলেছিলেন চুরি করতে যাবেন। তাহলে এখানে যে?”

দীর্ঘশ্বাস ফেললো শোভন। ভাবলো,”এই মেয়েটা তো দেখছি চরম বোকা। মজা করে একটা কথা বললাম তাই কিনা বিশ্বাস করে নিলো?”
উত্তরের আশায় তাকিয়ে আছে জ্যোতি। মনের কথা মনের ভেতরেই চাপিয়ে রেখে শোভন বললো,”কোন কোন গাছ নিবে দ্রুত দেখে পছন্দ করো।”

জ্যোতি চুপচাপ নার্সারির ভেতরে চলে গেলো পছন্দসই গাছ নেওয়ার জন্য। শোভন আর ভেতরে গেলো না। বাহিরে দাঁড়িয়ে রইলো। গাছগুলো দেখে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে গেলো জ্যোতির। গোলাপ, জুই সহ বেশ কয়েকটি গাছ বাছাই করল। বাহিরে আসতেই শোভন প্রশ্ন করল,”নেওয়া‌ শেষ?”

“হুম।”
গাছের দাম পরিশোধ করে একটি অটো ডাকলো শোভন।নার্সারির লোকেরাই অটোতে গাছগুলো তুলে দিলো।
সকালের অর্ধেক পড়া খবরের কাগজের বাকি অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ছেন রাউফুন খাঁন। আনোয়ারা বেগম গলা পরিষ্কার করে বললেন,

“বড়ো বউ ফোন করেছিল।”
মুখের সামনে থেকে কাগজটি গুটিয়ে নিলেন রাউফুন খাঁন। চোখেমুখে রোদের মতো ঝলমলে খুশি ঝিলিক দিয়ে উঠল। আনোয়ারা বেগম আড়চোখে স্বামীর মুখখানা দেখে নিলেন। বললেন,”সব নাকি ঠিকঠাকই আছে। নতুন সংসারের গোছগাছও প্রায় শেষ।”
“এত তাড়াতাড়ি গোছগাছ হয়ে গেছে!”

“ছেলে আমাদের দায়িত্ববান তা তো জানোই তারপরেও প্রশ্ন করছো কেন?”
আহ্লাদি স্বরে বললেন,”তাও ঠিক।একদম ওর মায়ের মতো হয়েছে। জানো ওর মাও না __” এতটুকু বলেই থেমে গেলেন রাউফুন খাঁন। স্ত্রীর দিকে দৃষ্টি যেতেই অপ্রস্তুত হাসলেন। তোতলাতে তোতলাতে বললেন,
“আসলে আমি বলতে চেয়েছিলাম কি।”

হাতের ইশারায় স্বামীকে থামিয়ে দিলেন আনোয়ারা বেগম। বললেন,”আমি অবুঝ নই যে আমাকে যা তা বলে বোঝ দিবে। এই গুনগুলো যদি শুরুতে চোখে পড়তো তাহলে হয়তো আজ এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। বসে বসে আফসোসের সুর তুলতে হতো না।”
রাউফুন খাঁনের মুখ মলিন হয়ে গেলো। নিচের দিকে চোখ নামিয়ে নিয়ে বললেন,”বারবার অতীতের করা ভুলটা মনে না করিয়ে দিলেই কী নয়?”
“তুমি যদি বারবার আমায় মনে করাও আমাকেও তো করাতেই হয়।”

রাউফুন খাঁন প্রতিত্ত্যুরে বলার মতো কিছুই পেলেন না। পূর্বের মতো আবারো খবরের কাগজে দৃষ্টি দিলেন।
শোভন ও জ্যোতি বাড়ি ফিরেছে খানিকক্ষণ আগে। ফ্ল্যাটে ঢুকতে না ঢুকতেই গাছগুলো নিয়ে বারান্দায় চলে আসে জ্যোতি। শরীর থেকে এখনও বোরকা খোলেনি। গাছগুলো ঠিক করে রাখার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।নার্সারি থেকেই টবে করে মাটি নিয়ে এসেছে তারা। হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য নিরবে দেখে যাচ্ছে শোভন আর ভাবছে, মেয়েদের ধৈর্য শক্তি কতটা প্রখর হলে এতটা পথ আসা যাওয়া করেও আবার কিনা হাত দিয়ে মাটি ধরছে গাছ লাগাচ্ছে।
জ্যোতি নিজের কাজ করতে করতে ঘাড় ঘুরিয়ে শোভনের দিকে তাকিয়ে বললো,”কটা বাজে? খিদে পেয়েছে আপনার? খাবার দিয়ে নিবো?”

“উহু তুমি তোমার কাজ শেষ করো। তারপর না হয় খাওয়া যাবে।”
জ্যোতি মুচকি হেসে আবারো কাজে মন দিলো। শোভন সরে গেলো সেখান থেকে। গাছে পানি দিয়ে ঘরে এলো জ্যোতি। পোশাক বদলে হাতমুখ ধুয়ে ফ্যানের নিচে বসে একটু জিরিয়ে নিলো।

সেদিনের রাতটা পার হলো কোনোভাবে। শোভন ফজরের নামাজ পড়তে বের হবে।তৎক্ষণাৎ গতকাল জ্যোতির বলা কথাটি মনে পড়ল তার। জ্যোতি বলেছিল, ফজরের নামাজের সময় যাতে তাকে ডেকে দেওয়া হয়। শোভন বিছানায় বসে ঘুমন্ত স্ত্রীর দিকে তাকালো। নাহ অতটা খারাপ লাগছে না বরঞ্চ দেখতে বেশ ভালোই লাগছে। যে যেমনই হোক না কেন ঘুমালে প্রতিটি মানুষের মুখশ্রীতেই এক সৌন্দর্য এসে ভর করে। ঘুমন্ত ব্যক্তিটিকে তখন দেখলে মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্পাপ মানুষই যেনো সে।

ঘুমন্ত জ্যোতিকে দেখে হুট করেই শোভনের ভেতরে এক অদ্ভুত অনুভূতি হলো।ইচ্ছে করল ফোলা ফোলা গাল দুটো টেনে দিতে। কিন্তু কাজটি করতে পারলো না।ভেতরের কোথাও থেকে অদৃশ্য এক বাঁধা পেলো। সঙ্গে সঙ্গে নিজের এমন ইচ্ছেকে ধিক্কার জানালো। জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস ফেলে মৃদু স্বরে ডাকলো,
“এই যে শুনছো? জ্যোতি!”

জ্যোতি পূর্বের মতোই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। কোনো কথা তার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। শোভন জ্যোতির মাথায় হাত দিলো। চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে বললো,”সেই কখন ফজরের আজান দিয়েছে।নামাজের সময় তো চলে যাচ্ছে। কী হলো ওঠো ঘুম থেকে। এই জ্যোতি!”
চোখ জোড়া বন্ধ রেখেই ঘুমঘুম কণ্ঠে উত্তর দিলো,
“আরেকটু ঘুমাই না।”

“নামাজ পড়ার পর না হয় আবার ঘুমানো যাবে এখন ওঠো। জ্যোতি।” শেষে ধমকের সুরেই নামটা উচ্চারণ করল শোভন।
লাফিয়ে উঠল জ্যোতি। শোভন উঠে দাঁড়ালো।বললো,”কাল তো ঠিকই অভিযোগ করলে আমি তোমায় ডেকে দেই না সে কারণেই নাকি নামাজ কাযা হয়। তাহলে আজ ডাকার পরেও এত বাহানা কেন? তাড়াতাড়ি ওযু করে এসো।”
মুখ ভার করে জ্যোতি বিছানা থেকে নামলো। শোভন মসজিদে যাবে। ঘর থেকে বের হতে যাচ্ছিল তখনি পেছন থেকে গোমড়া মুখে জ্যোতি বললো,”স্ত্রীর সঙ্গে ভালোবাসা নিয়ে হেসে হেসে কথা বলা সুন্নত।”

কপালে কয়েকটি ভাঁজ পড়ল শোভনের। চমকানো দৃষ্টি নিয়ে পেছনে ঘুরতেই দ্রুত বাথরুমে ঢুকে গেলো জ্যোতি। মুচকি হেসে ঘর থেকে বের হলো শোভন।
জায়েদা খাতুন ঘুমিয়ে আছেন হাসপাতালের বেডে। হাতে স্যালাইন চলছে। আশেপাশে মানুষজনের কথাবার্তার অনেক শব্দ, তাতেও উনার কোনো হুঁশ নেই। ডাক্তার ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে গেছে উনাকে।সম্পা শাশুড়ির শিউরে বসে আছে। জাহিদ ওষুধ নিয়ে এগিয়ে এলো। চেয়ার টেনে বসে বললো,

“মায়ের অবস্থা তো তেমন ভালো না।জ্যোতিকে তো সবটা জানানো উচিত।”
সম্পা নাকোচ করে বললো,”এত খারাপও না যে জ্যোতিকে জানাতে হবে। ওকে জানালেই আসার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠবে। এদিকে সপ্তাহও পার হয়নি যে স্বামীর সঙ্গে ওখানে গেছে।এখনি চলে এলে হবে? নতুন সংসারটা তো গোছাতে হবে নাকি।”
“কিন্তু?”

“কোনো কিন্তু নয়। মায়ের অসুস্থতার কোনো খবর যেনো জ্যোতির কান পর্যন্ত না যায়। যদি অসুস্থতা বেড়ে যায় তখন না হয় জানানো যাবে।”
জাহিদ আর স্ত্রীর উপরে কথা বললো না। আজ দুদিন ধরে সদর হাসপাতালে ভর্তি জায়েদা খাতুন। প্রেশার বেড়েছে, খাবার খেতে পারেন না তিব্র জ্বরে ভুগছেন।

বেশ কয়েকদিন কেটে গেলো। রোজকার মতো অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরেছে শোভন। সদর দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজালো বেশ কয়েকবার। সঙ্গে সঙ্গে দরজা না খোলায় ক্লান্ত শরীর নিয়ে বেশ বিরক্ত হলো। দুই মিনিট পর কাঙ্ক্ষিত মানুষটি দরজা খুলে দিলো। কিছু একটা বলার জন্য ঠোঁট প্রসারিত করতেই বিষ্মিত হলো সে।

শোভনের এমন দৃষ্টিতে লজ্জা পেলো জ্যোতি। মাথা নিচু করে নম্র স্বরে বললো,”দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ভেতরে আসুন।”
ধ্যান ভঙ্গ হলো শোভনের। নিঃশব্দে ভেতরে প্রবেশ করল।জ্যোতি দরজা লাগিয়ে পেছনে ঘুরতেই স্বামীর প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টি দেখে ভয় পেয়ে গেলো।

শোভন প্রশ্ন করল,”কোথাও গিয়েছিলে নাকি?”
“কোথায় যাবো? আমি কী এখানকার কিছু চিনি নাকি?”
“তাও ঠিক।”
“হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেন?”
“না হঠাৎ এমন সাজগোজ তো তাই মনে হলো।”

কথাটা বলে ঘরে যাওয়ার জন্য অগ্ৰসর হলো শোভন। লাল রঙের কালো পাড়ের শাড়ি পরিধান করেছে জ্যোতি। পায়ে রূপার নূপুর, শরীরে সোনার গহনা। চোখে গাঢ় কাজল। এতেই যেনো সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। শোভনের পেছন পেছন যেতে লাগলো। নূপুরের ঝনঝন শব্দে দীর্ঘশ্বাস ফেললো শোভন। স্মিত হেসে জ্যোতি প্রশ্ন করল,
“আমায় কেমন লাগছে?”
পেছনে না ঘুরেই যেতে যেতে শোভন উত্তর দিলো,
“ভালো না।”

নিমিষেই অধরের মিষ্টি হাসিটা বিলীন হয়ে গেলো। ওখানেই দাঁড়িয়ে পড়ল সে। ততক্ষণে শোভন ঘরে চলে গেছে। ইভার পরামর্শে এই প্রথম শোভনের জন্য এত সেজেছিল জ্যোতি। সাজগোজের পর আয়নাতে বেশ কয়েকবার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজেকে দেখেছে অথচ যার জন্য এত সাজ সেই কিনা বলে ভালো লাগছে না? নিজের পছন্দের উপর চরম সন্দেহ বাসা বাঁধলো। কিছুক্ষণ পর মন খারাপ করে ঘরে এলো জ্যোতি। ঘরে শোভন নেই।বাথরুম থেকে পানির শব্দ আসছে।

আর একটুও দেরি না করে আলমারি থেকে থ্রী পিছ বের করে অন্য ঘরে চলে গেলো জ্যোতি। পোশাক বদলে ফেললো।পরনের গহনাও খুলে ফেললো। মুছে ফেললো চোখের কাজল। আবারো আগের বেশভূষা ধারণ করল। ফ্রেশ হয়ে শোভন ড্রয়িং রুমে এলো কিন্তু জ্যোতির দেখা পেলো না। রান্নাঘরে গেলো সেখানেও নেই। আবারো ঘরে এলো শোভন। বারান্দায় উঁকি দিলো কিন্তু হতাশ হলো। মনে মনে বললো,”মেয়েটা জ্বিন পরী নাকি? মুহূর্তেই কোথায় গায়েব হয়ে গেলো?”
তখনি ড্রয়িং রুম থেকে ডাক এলো,”খেতে আসুন।”

আর এক মুহূর্তও দেরি না করে ড্রয়িং রুমে এলো শোভন। স্ত্রীকে দেখে প্রাণ ফিরে এলো তার। কিন্তু মুখশ্রী গোমড়া হয়ে গেলো। চেয়ারে বসে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো স্ত্রীর পানে। জ্যোতি শোভনের দিকে তাকালো।বললো,”কী হলো খাচ্ছেন না কেন?”
খেতে লাগলো শোভন। আড়চোখে বেশ কয়েকবার জ্যোতির দিকে তাকালো কিন্তু জ্যোতির সেদিকে খেয়াল নেই। দৃষ্টি তার প্লেটের দিকে। চুপচাপ খাবার খাচ্ছে। ইতস্ততা দূর করে মুখে গাম্ভীর্য ফুটিয়ে শোভন বলেই ফেললো,”সাজ আবার বদলে ফেললে কেন?”

জ্যোতির সোজাসাপ্টা উত্তর,”এমনি।”
মুখে স্বাভাবিক ভাবে ছোট্ট একটি উত্তর দিলেও ভেতরে ভেতরে মন খারাপ করে আছে জ্যোতি। মনে মনে বললো,”নিজেই বললো দেখতে ভালো লাগছে না আবার এখন কিনা নিজেই প্রশ্ন করছে সাজ বদলালে কেন?”
খাওয়া শেষে এঁটো বাসন নিয়ে রান্নাঘরে গেলো জ্যোতি। শোভনও তার পেছন পেছন সেখানেই গেলো। জ্যোতির তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। নিজের কাজ করে যাচ্ছে। প্লেট ধুয়ে শোভনের উদ্দেশ্যে বললো,

“আপনার রান্নাঘরে কোনো দরকার আছে?”
“না তো। কেন?”
“না লাইট নেভাতাম।”
“তুমি যাও আমি নিভিয়ে দিবো।”

সঙ্গে সঙ্গে ঘরে চলে গেলো জ্যোতি। শোভনও লাইট নিভিয়ে ঘরে এলো। ততক্ষণে জ্যোতি এসে শুয়ে পড়েছে। দরজা আটকে কিছুক্ষণ বিছানার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো শোভন। তারপর চলে গেলো বারান্দায়।
বারান্দায় দুজন বসার মতো একটা দোলনা লাগিয়েছে শোভন তবে জ্যোতির ইচ্ছায়। সেখানেই এই মুহূর্তে সে বসলো। ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করল। সিগারেট ধরানোর সময় হঠাৎ করেই জ্যোতির বলা সেদিনের কথাগুলো মনে পড়ল। আর খেতে ইচ্ছে করল না সিগারেটটি। বারান্দার একপাশে ফেলে দিলো প্যাকেটটি।

সাতরঙা প্রজাপতি পর্ব ৭

চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলো। বিড়বিড় করে বললো,
“এ জীবনে কেউ আমায় বুঝতেই চাইলো না। বুঝতে চাইলো না যে আমারও একটা মন আছে। আমারও কষ্ট লাগে। সবাই শুধু নিজেদেরটাই বুঝলো।নিজেদের ইচ্ছে গুলো চাপিয়ে দিলো আমার উপর।আর আমি একাই রয়ে গেলাম। সবার থেকে দূরে।”

সাতরঙা প্রজাপতি পর্ব ৯