হৃদয়ের স্পন্দন গল্পের লিংক || নন্দিনী চৌধুরী

হৃদয়ের স্পন্দন পর্ব ১
নন্দিনী চৌধুরী

–~তোর মতো একটা কয়লার ড্রামকে আমি বিয়ে করবো এটা তুই ভাবলি কিভাবে শুভ্রতা।তোর কি কোনো যোগ্যতা আছে এই সায়ান খানের বউ হবার।না আছে রুপ না আছে গুন কিসের যোগ্যতায় তুই আমার বউ হতে চাস।”

নিজের হবু বরের মুখ থেকে এমন একটা কথা শুনে চমকে গেলো শুভ্রতা।যার সাথে আর কিছুক্ষন পর একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হবার কথা সেই এই কথাগুলো বলছে তাকে।
শুভ্রতা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সায়ানের কাছে গেলো।সায়ান দরজার সামনে দাঁড়ানো।শুভ্রতা সায়ানের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

শুভ্রতা:সায়ান ভাই আপনি এগুলা কি বলছেন।আপনিতো আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চেয়েছেন তাইনা।তাহলে এখন এসব কথা বলছেন কেন।
সায়ান শুভ্রতার কথায় হেসে দিয়ে বললো,

সায়ান:ভালোবাসা তাও আবার তোকে।হাহাহাহ,শোন তোকে আমি কোনো ভালোটালো বাসিনা।সব ছিলো অভিনয়।তোর মতো কালিকে আমি ভালোবাসবো কোন দুঃখে।আয়নায় নিজের চেহারা দেখছিস একবার।এই সায়ান খানের বউ হতে হলে রুপ যোগ্যতা দুটোই থাকতে হবে।কোনটা আছে তোর মাঝে।না আছে রুপ না আছ্র যোগ্যতা।তুইতো ভিক্ষারি।

সায়ানের কথাগুলো শুনে শুভ্রতা বার বার চমকে যাচ্ছে নিজেকে বারংবার সামলে নিচ্ছে।
শুভ্রতা:সায়ান ভাই এমন করছেন কেন।আমি কি কোনো ভুল করেছি।ভুল করলে আমাকে বকেন।কিন্তু এমন বলবেন না।আপনিতো আমায় ভালোবাসেন।তাহলে কেন এসব বলছেন।
সায়ান:আরে পাগল নাকি বাংলা কথা বুজিস না যে তোকে আমি ভালোবাসিনা।
শুভ্রতা:ভালোবাসিনা মানে তাহলে এই দুই বছর কি ছিলো ওসব?

সায়ান:টাইম পাস বেবি।তোর সাথে টাইম পাস করেছি।তোর মতো মেয়ের সাথে জাস্ট টাইম পাস করা যায় বিয়ে করা যায়না।
শুভ্রতা এবার সায়ানের কথায় রেগে গেলো রেগে সায়ানের শার্টের কলার ধরে ঝাকিয়ে বলতে লাগলো,
শুভ্রতা:আমার মতো মেয়ের সাথে টাইম পাস করা যায় মানে কি হ্যা।দুইবছর ধরে আমার সাথে রিলেশন করে এখন এসব কথা বলছেন কোন কারনে।কেন মিথ্যা ভালোবাসা দেখালেন বলেন।কেন আমার সাথে ছলনা করলেন।কি দোষ করছিলাম আমি বলেন।

সায়ান শুভ্রতাক্র ধাক্কা মেরে শরিয়ে দেয় তারপর চিৎকার করে বলে,
সায়ান:ফকিন্নির বাচ্চা তোর সাহস হয় কিভাবে আমার গায়ে হাত দেওয়ার।তোর মতো মেয়েদের সাথে সায়ান খান কোনো ভালোবাসা করেনা।তোরা শুধু আমার এক রাতের বেড পার্টনার হবার যোগ্যতা রাখিস।আর বললি না কেন তোর সাথে এমন করলাম প্রতিশোধ নিয়েছি তোর থেকে।মনে আছে কলেজের অনুষ্টানের দিন তুই সবার সামনে আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলি।সেদিন থেকে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছি।তোর জন্য কলেজের সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছে।সেদিন ঠিক করেছিলাম তোকেও আমি একদিন সবার সামনে অপদস্ত করবো।তাই জন্য এই দুই বছর তোর সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেগেছি।

সায়ানের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো শুভ্রতা।সামান্য একটা থাপ্পরের কারণে সায়ান তার সাথে এতোবড় প্রতারণা করলো।তাও সেই থাপ্পড়টা ভুল করে দিয়েছিলো সে।মাফ চেয়েছিলো সে অনেকবার।সায়ান বলেছিলো মাফ করেছে তাকে।তার মানে ওইসব মিথ্যা ছিলো।
শুভ্রতা এভার সায়ানের পা জরিয়ে ধরলো আর বললো,

শুভ্রাত:দোহাই লাগে সায়ান ভাই বলেন আপনি যা বলছেন সব মিথ্যা।বিশ্বাস করেন আমি কিছু মনে রাখবোনা।বলেন না যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন।আপনিতো বলেছিলেন শুভ্রতা তোর গায়ের রং আমার কাছে কিছুনা আমি তোকে ভালোবাসি।আপনি তো কথা দিয়েছিলেন সারাজীবন আমাকে আগলে রাখবেন কষ্ট দেবেন না তাহলে কেন আজ আমাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছেন। সায়ান ভাই বললেন না আপনি এসব মজা করছেন।আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি অই একটা থাপ্পড়ের বদলে আপনি আমাকে ১০০টা থাপ্পড় মারুন তবুও আমাকে ছেড়ে যাবেন না দয়া করে।আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি।

সায়ান শুভ্রতাকে পা থেকে ঝারা মেরে সরালো।তারপর হাসতে হাসতে বললো,
সায়ান:শোন শুভ্রতা তোকে না আমার ঘরের কাজের লোকের জায়গাটা দেওয়া যাবে কিন্তু আমার ঘরের বউ করা যাবেনা।আর তাছাড়াও আমি প্রিয়া কে ভালোবাসি।চার বছরের রিলেশন ওর সাথে আমার।খুব শিগ্রই আমি ওকে বিয়ে করবো তাহলে তোকে কিভাবে আমি বিয়ে করবো বল।হ্যা তবে তুই চাইলে আমি তোকে আমার রক্ষিতা করে রাখতে পারি।সেই জন্য তোকে বিয়ে করতে পারি।সমাজে তোর পরিচয় হবে সায়ানের রক্ষিতা হিসাবে।বল এতে রাজি তুই তাহলে তোকে আমি এখোনি বিয়ে করে নিচ্ছি।

সায়ানের কথা গুলো শুনে ঘৃণা হচ্ছে শুভ্রতার।এ কাক্র ভালোবেসেছে সে কতটা নোংড়া তার মানসিকতা।শুভ্রতা এভার উঠে দাঁড়ালো।চোখের পানি গুলো মুছে সায়ানের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
শুভ্রতা:আজকের পর থেকে আমি আপনাকে ঘৃণা করি সায়ান ভাই ঘৃণা করি।যতোটা ভালোবেসেছিলাম আপনাকে ঠিক ততটাই ঘৃণা করি আপনাকে।আল্লাহ না করুক সায়ান ভাই ভালোবাসা না পাওয়ার কষ্ট যেনো আল্লাহ আপনাকে না দেয়।একটা মন ভাংগা একটা মসজিদ ভাংগার সমান।আজকে আপনি আমাকে যেভাবে অপমান করলেন সেটা সারাজীবন আমি মনে রাখবো।আমি প্রমান করে দেবো কালো বলে আমি তুচ্ছ নই।নিজেকে যোগ্য করে আপনার সামনে আসবো।

কথা গুলো বলে শুভ্রতা আর একটুও দাঁড়ালো না দৌড়ে চলে আসলো।আজকে তার মন ভেংগে টুকরোটুকরো হয়ে গেছে।যাকে ভালোবেসে কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করতে চলেএসেছিলো। সেই মানুষুটা শুভ্রতাকে কতটা কষ্ট দিলো।কত অপমান করলো।

নৌশিন আহমেদ শুভ্রতা।মা বাবার এক মাত্র আদরের ছোট মেয়ে।শুভ্রতা নামেই শুধু শুভ্রতা দেখতে সে শুভ্রতামই নয় কারন তার গায়ের রং কালো।সমাজের মানুষ তাকে এটা নানা ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে তুই শুধু নামেই শুভ্রতা দেখতে তুই অসুন্দর।শুভ্রতার বাবা মারা যান শুভ্রতা ৮বছর থাকা কালীন।শুভ্রতার মা বাবার প্রেমের বিয়ে ছিলো।কিন্তু তাদের কে শুভ্রতার মায়ের পরিবার মেনে নেয়নি।এমনকি শুভ্রতা হবার পরেও কোনো যোগাযোগ তারা করেনি।

শুভ্রতার বাবা মারা যাওয়ার পর। শুভ্রতার নানাবাড়ির সবাই শুভ্রতা আর তার মাকে তাদের কাছে নিয়ে আসে।শারমীন ভেবেছিলো হয়তো এখন তাদের রাগ শেষ কারন শুভ্রতার বাবাই যে আর নেই।শুভ্রতার নানা দুই বছর যাওয়ার পর শুভ্রতার মা শারমিনের আবার বিয়ে দিতে চান।কিন্তু শারমিন তাতে রাজী ছিলেন না। কিন্তু মেয়ের দোহাই দিয়ে বিয়েতে রাজী করান শারমনিকে।শুভ্রতা মায়ের বিয়ের পর তার মামার কাছে থাকতো।

শারমিন তাকে নিতে চাইলে শুভ্রতাকে তার নানা দেয়না বলে আগে তুমি ওখানে সংসার করে স্থায়ী হয়ে নেও তারপর মেয়েকে নিও।কিন্তু শারমিন তাতে রাজী ছিলোনা এমনকি শারমীনের স্বামী জাকির সেও না।সে শারমীনকে বিয়ে করেছে মেয়ের জন্য তাহলে মেয়েকে কেন দেবেনা।কিন্তু শারমীন তার বাবার সাথে পেরে ওঠেনা তাই বাধ্য হয়ে মেয়েকে রেখে যেতে হয়।শুভ্রতা তার মামার সাথে থাকতো।শুভ্রতার তিন মামা বড় মা নাসির আহমেদ,মেঝ মামা সজিব আহমেদ ছোট মামা আজমির আহমেদ।

শুভ্রতার বড় মামারা থাকতেন দেশের বাহিরে।মেঝ মামা আর ছোট মামা থাকেন দেশে।শুভ্রতার মেঝ মামি আর ছোট মামি কেউ তাকে দেখতে পারেনা।ছোট থেকেই তাদের বকা খেয়ে আসছে সে।শুভ্রতাকে দিয়ে বাড়ির সকল কাজ করানো শুরু করে তার মামিরা।একবারের জন্য ভাবেনা অইটুকু মেয়ে কিভাবে এতো কাজ করবে।এরপর শুরু হলো মামিদের হাতে মার খাওয়া।সামান্য কারনেও মার খেতে হতো শুভ্রতাকে।

এসব সয্য করতে করতে মায়ের প্রতি এক চাপা অভিমান তৈরি হয় শুভ্রতার।তার ধারনা তার মা সুখে থাকার জন্য আরেকটা বিয়ে করে চলেগেছে তাকে রেখে।শুভ্রতার নানা প্রথমে এসবের বিহীত করলে পরে সেও চুপ হয়ে যায়।গায়ের রং কালো বলে শুভ্রতাকে ছোট থেকে অবহেলা করা হয়।নানা ধরনের কথা শুনানো হয়। শুভ্রতার সব কাজিনরা ওকে দেখলেই ওকে নিয়ে মজা করতো।কেউ ওর সাথে খেলতোনা মিশতোনা।তাদের ধারনা শুভ্রতার সাথে মিশলে তারাও কালো হয়ে যাবে।শুভ্রতার স্কুলেও কোনো বন্ধুবান্ধুবি ছিলোনা।বেচারি সবটা সময় একা কাটিয়েছে।

বাড়িতে মামা মামিদের অত্যাচার স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের তামাশার বস্তু হয়েছিলো সে।শুভ্রতার একটা দিক খুব ভালো ছিলো সে যেকোনো কাজ দেখেই শিখে যায়।তাইতো সব ধরনের কাজ সে পারে।স্টুডেন্ট হিসাবেও শুভ্রতা খুব ভালো।সব সময় টোপ করে।শুভ্রতার মা শুভ্রতাকে তার বিয়ের দুই বছর পর নিতে আসলে শুভ্রতা যাবেনা বলে জানিয়ে দেয় আর এটাও বলে তার নাকি মা চাইনা।মা তাকে নিজের সুখের জন্য ফেলে দিয়ে চলেগেছে।শারমীনের তখন কোলে ১ বছরের জাহিদ।

জাকির অনেক চেষ্টা করেছিলো শুভ্রতাকে বোঝানোর কিন্তু সে আসবেনা মানে আসবেই না।শারমীন সেদিন জাকিরের বুকে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলো”আমার মেয়েটা আমার পর হয়ে গেলো জাকির আমার মেয়ে আমার পর হয়ে গেলো।”এভাবেই শুভ্রতার জীবন চলতে লাগলো।শুভ্রতা এখন কলেজে উঠেছে।কিন্তু তার জীবনের কিছুই পাল্টাইনি।প্রতিনিয়ত তাকে গায়ের রং এরজন্য কথা শুনতে হয়।সায়ান শুভ্রতার মামাতো ভাই।মেঝ মামার ছেলে সায়ান।সায়ান আর শুভ্রতা একই কলেজে পড়াশুনো করে।সায়ান শুভ্রতার জীবনে খুব অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এসেছিলো।

সেদিন ছিলো কলেজের নবীনবরন অনুষ্ঠান।শুভ্রতা একটা সবুজ কালার থ্রিপিজ পরেছিলো।গায়ের রং কালো বলে সে সাজতেও ভালোবাসতোনা।তাহলেও সবাই অনেক কথা শুনাতো তাকে।কলেজে এসে শুভ্রতার একটা বান্ধুবি হয়েছে নাম সারা।শুভ্রতা এসে অপেক্ষা করছিলো সারার জন্য।তখন একটা ছেলে এসে ওর হাতে একটা চিরকুট দেয়।শুভ্রতা চিরকুট খুলে দেখে খুব বাজে কথা লেখা তাতে আর নিচে সায়ানের নাম লেখা।শুভ্রতা এটা দেখে রেগে লাল হয়ে যায়।দ্রুত পায়ে সায়ানদের ক্লাসে এসে দেখে সায়ান বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।শুভ্রতা গিয়ে সবার সামনে সায়ানকে একটা থাপ্পড় মেরে বসে।উপস্থিত কেউ কিছু বুঝে উঠবে তার আগে শুভ্রতা চেঁচিয়ে বলে,

–“আপনার সাহস কিভাবে হয় আমাকে এতো বাজে কথা লেখার।বোন হইনা আপনার।তাহলে এসব কেন লিখেছেন আমাকে।লজ্জা করেনা আপনার সায়ান ভাই”।
শুভ্রতার কথা শুনে কি বলবে বুজতে পারছেনা সায়ান।সায়ানের বন্ধু হাসিব শুভ্রতার হাত থেকে চিরকুট নিয়ে দেখে তাতে কি লেখা তারপর সে শুভ্রতার দিকে তাকিয়ে বলে,
–“এটা আমাদের সায়ান না। এটা জুনিওর সায়ান।যে ফার্স্ট ইয়ারে পরে।তুমি না জেনে সায়ানকে মারলে এটা ঠিক করলেনা।

হাসিবের কথা শুনে চমকে যায় শুভ্রতা।হাসিব গিয়ে ফার্স্ট ইয়ার থেকে সায়ানকে আনে।সায়ান মাথা নিচু করে স্বিকার করে এটা সে।শুভ্রতা খুব লজ্জা পায়।সে না জেনে সায়ানকে মারলো।শুভ্রতা তখনই সাথে সাথে সরি বলতে থাকে সায়ানকে।কিন্তু সায়ান কোনো কথা বলেনা।এরপর ১মাস পরে সায়ান শুভ্রতাকে কলেজের সবার সামনে প্রপোজ করে।সেদিন শুভ্রতা অনেক অবাক হয়েছিলো।তার মতো কালো মেয়েকে সায়ান প্রপোজ করলো।শুভ্রতা সেদিন রাজী হয়নি।

কিন্তু পরে সায়ানের কেয়ারিং ভালোবাসা দেখে সেও ভালোবেসেফেলে সায়ানকে।সায়ানের সাথে সম্পর্কটা বেশ ভালো যাচ্ছিলো তার।একদম সপ্নের মতো।বাড়িতে কেউ জানতোনা সায়ান শুভ্রতার কথা।শুভ্রতা সবার অত্যাচার সয্য করতো আর সায়ানের ভালোবাসা নিয়ে তা ভুলে যেতো।রিলেশনের ২ বছরের মাথায় সায়ান তাকে হুট করে বলে বিয়ের কথা।শুভ্রতা প্রথমে রাজী হতে চায়নি।

কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করাটা ঠিক হবেনা বলে তার মনে হয়।কিন্তু সায়ান তাকে নানা রকম কথা বুজিয়ে আজকে বিয়ের জন্য রেজিস্টারি অফিসে আসতে বলে।শুভ্রতা যথা সময় সেখানে আসে।বিয়ের সাক্ষ্যি হিসাবে সায়ানের বন্ধুরা এসেছিলো।শুভ্রতা আসার পর সায়ানকে বিয়ে করার কথা বললে সায়ান তাকে অপমান করা শুরু করে।সবার সামমে সায়ান তাকে অপমান গুলো করেছে।

বাড়িতে এসে রুমে ডুকে কান্না করছে শুভ্রতা।যাকে এতো ভালোবাসলো সে তাকে এভাবে কষ্ট দিলো।চিৎকার করে কান্না করতে চাইছে শুভ্রতা কিন্তু তা পারছেনা।শুভ্রতা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আর বলছে,

কি হতো আল্লাহ যদি গায়ের রং কালো না হতো।তাহলে আমাকেও সবাই ভালোবাসতো।আচ্ছা আল্লাহ কালো সাদা সবতো তুমিই বানাও তাহলে কেন মানুষ গায়ের চামরার রং নিয়ে ভেদাবেদ করে।ছোট থেকে আমি কালো বলে কারো আদর পাইনি।এক মাত্র আমার বাবাই আমাকে ভালোবাসতো।কিন্তু কপাল থেকে তার ভালোবাসাও চলে গেলো।সার্থপর মা আমাকে রেখে বিয়ে করে নিলো।কেউ আমাকে ভালোবাসেনা।ভেবেছিলাম সায়ান হয়তো আমায় ভালোবাসে কিন্তু না সেও আমাকে ধোকা দিলো।আমার কপালে সুখ নামক জিনিশটা নেই।

সায়ান বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।আজ সে অনেক খুশি অবশেষে সে আজ শুভ্রতাকে চরম অপমান করতে পেরেছে।তার গায়ে হাত তুলেছিলো শুভ্রতা।এভাবে কিভাবে মাফ করে দেবে সে তাকে।তাইতো এসব করলো সে।সায়ানের বন্ধু রাজ এসবের খেলাফ ছিলো তার কথা ছিলো বাচ্চা মেয়ে ভুল করেফেলেছে তার সাথে এমন না করা।কিন্তু সায়ান কারো কথা পাত্তা দেয়নি।

রাজ:সায়ান তোর এমন করা উচিত হয়নি।মেয়েটাত কত কষ্ট পেলো।
সায়ান:তোর দেখি ওর জন্য মায়া গলে গলে পরতাছে।বেশি মায়া লাগলে ওর তুই নিয়া বসে থাক।ওর মতো কয়লাকে আমি গোনায় ধরিনা।জাস্ট প্রতিশোধ নিতে এতোদিন সয্য করেছি।
রাজ:এতো অহংকার ভালোনা।অহংকার পতনেত মুল।আল্লাহ না করুক তোর এই অহংকার তোর পতনের কারন না হয়।(মনে মনে)

অনেকক্ষন কান্না করার পর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রুমের বাহিরে শুভ্রতা।এখনো রান্না চাপায়নি সে উনুনে।আজকে মামির হাতে মাইর খেতে হবে নিশ্চিত।শুভ্রতা জলদি গিয়ে উনুনে ভাত আর ডাল বসিয়ে সবজি কাটা শুরু করলো।তখন পিছন থেকে তার মামি বলে উঠে,
–“কোথা থেকে আসা হলো নবাবজাদী।

হৃদয়ের স্পন্দন পর্ব ২