অতঃপর প্রেমের আগমন সিজন ২ পর্ব ১১

অতঃপর প্রেমের আগমন সিজন ২ পর্ব ১১
ইরিন নাজ

আজ শুক্রবার। দ্বীপের জন্মদিন। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়। মাগরিবের আজান হতেই মসজিদে চলে গেলো আদ্রিশ। নামাজ পড়ে আসার পর রওনা দিবে তারা।
নামাজ শেষে দ্রুত বাড়ি ফিরলো আদ্রিশ। রুমে ঢুকে দেখলো আয়ানা হিজাব পড়ছে। তার প্রয়োজনীয় সকল জিনিস বিছানায় গুছিয়ে রেখেছে আয়ানা। সেদিকে তাকিয়ে একটু হাসলো সে। অতঃপর দ্রুত পোশাক পাল্টাতে চলে গেলো।

আদ্রিশ ফ্রেশ হয়ে পোশাক পাল্টে বাইরে এসে দেখলো আয়ানা রেডি হয়ে বসে আছে। অন্যান্য দিনের মতোই একেবারে সিম্পল ভাবে রেডি হয়েছে সে। সেদিকে একবার তাকিয়ে দ্রুত রেডি হয়ে নিলো আদ্রিশ নিজেও। তারপর অনু বেগম কে জানিয়ে বেরিয়ে পড়লো দুজন। পথিমধ্যে একটা শপিংমলের সামনে গাড়ি দাঁড় করালো আদ্রিশ। এখান থেকে তারা দ্বীপের জন্য কিছু একটা উপহার নিবে তারা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আজ শুক্রবার, ছুটির দিন হওয়ায় মলে বেশ ভিড়। তাই আয়ানার হাত শক্ত করে মুঠোয় পুরে নিলো আদ্রিশ। সেদিকে তাকিয়ে লাজুক হাসলো আয়ানা। আদ্রিশ আর আয়ানা পছন্দ করে একটা ঘড়ি নিলো দ্বীপের জন্য। ফের রওনা করলো দ্বীপের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
দ্বীপের বাড়ির কাছাকাছি আসার পর আয়ানা ফোন করলো দ্বীপ কে। দ্বীপ জানালো সে বাসার নিচে আসছে। আরও একটু দূর যাওয়ার পর একটা বাড়ির সামনে দ্বীপ কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো। দ্বীপ কে দেখে সেই বাড়ির সামনে গাড়ি থামালো আদ্রিশ।

তিন তলা বাড়ি দ্বীপদের। তারা তৃতীয় তলায় থাকে। বাকি দুই তলা ভাড়া দেয়া। দ্বীপদের বাসার ভেতর প্রবেশ করতেই এতো এতো মানুষ দেখে ভড়কালো আয়ানা। দ্বীপ আয়ানার এক্সপ্রেশন দেখে বোকা বোকা হাসি দিয়ে বললো,
— “বাইরের কেউ নাই বোন। আমার বিশাল গুষ্টির সদস্যরা আছে শুধু। প্রতি বছর আমার জন্মদিনে তারা সব হাজির হয়।”
দ্বীপ থামতেই মিথি দৌড়ে আসলো। আদ্রিশের সাথে কুশল বিনিময় করে আয়ানার হাত ধরে অন্যদিকে নিয়ে যেতে লাগলো। পেছন ফিরে অস্থির চোখে আদ্রিশের দিকে চাইলো আয়ানা। এতো এতো অপরিচিত মানুষ দেখে ভীষণ নার্ভাস ফীল করছে সে। আয়ানার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে চোখের ইশারায় তাকে শান্ত হতে বললো আদ্রিশ।

— “এই যে যতো বড়, ছোট পোলাপাইন দেখতেসোস এরা সব দ্বীপের কাজিন। ওর পাঁচটা মামা, দুইটা খালা, চারটা চাচা, তিনটা ফুফু। এইসব তাদের বাচ্চা পোলাপাইন।”
ফিসফিসিয়ে বললো মিথি। বলতে বলতে এক প্রকার হাপিয়ে উঠেছে সে। আয়ানা গোল গোল চোখে আশেপাশের সবাই কে দেখতে লাগলো। একেবারে হাপর পারা বাচ্চা থেকে শুরু করে তাদের তুলনায় বড়রাও এখানে উপস্থিত। আয়ানা কৌতূহল ধরে রাখতে না পেরে জিজ্ঞাসা করলো,

— “ইনারা সবাই কি আজ এখানেই থাকবে?”
— “আরে নাহ। কি বলোস? এদের মধ্যে কয়েকজনের বাসা কাছে। তারা নিজেদের বাসায় ফিরে যাইবো সাথে করে এখানের কিছু মানুষরেও নিয়ে যাইবো। যে যার বাসায় যাইতে চায় আরকি। এদের সবার মধ্যে প্রচুর মিল বুঝলি….”

মাথা ঝাকালো আয়ানা। এর মধ্যে দ্বীপের বড় কিছু কাজিনরা এসে গোল হয়ে বসলো। ওদের মধ্যে থেকে একটা মেয়ে আয়ানা কে দেখিয়ে মিথির কাছে পরিচয় জানতে চাইলো। মিথি সকলের সাথে আয়ানার পরিচয় করিয়ে দিলো। বেশ কিছুক্ষণ গল্প করলো সবাই মিলে। সবার মধ্যে রাইমা মেয়েটাকে বেশ ভালো লাগলো আয়ানার। মেয়েটা তাদের তুলনায় প্রায় চার বছরের বড়। কিন্তু এতো মিষ্টি করে কথা বলে মেয়েটা!

— “এই সবাই ছাদে চল। কেক কাটবো না আমি! কখন কাটবো! আমার পয়দা দিবস শেষ হয়ে যাচ্ছে তো…”
হুট করে দ্বীপ এসে এভাবে বলায় হো হো করে হেসে উঠলো সবাই।

দ্বীপদের বাড়ির ছাদ টা জন্মদিন উপলক্ষে বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। খাওয়ার ব্যবস্থাও এখানে করা হয়েছে। মানুষ বেশি বলে হয়তো। একে একে কেক কাঁ’টা হলো, খাওয়াও হলো। সবকিছু এতো ভালো ছিলো যে তৃপ্তির ঢেকুর তুললো সবাই। খাওয়ার পাট চুকে যাওয়ার পর বড়রা এবং একেবারে ছোট বয়সী সবাই নিচে চলে গেলো।

ওরা সবাই যাওয়ার পর বাকি থাকা সবাই যে যার মতো গল্প করতে লাগলো। এতদিন পর সবার সাথে সবার সাক্ষাৎ হয়েছে বলে কথা। আদ্রিশের ফোনে কল আসায় রিসিভ করে ছাদের সাইডে গেলো সে। আয়ানা তাকালো সেদিকে। ওমনি তার নজরে আসলো দ্বীপের এক কাজিন বোন আদ্রিশের কাছে যাচ্ছে। মেয়েটাকে এর আগেও দুই একবার আদ্রিশের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছে সে। কিন্তু তখন ভেবেছিলো এমনি তাকিয়েছে হয়তো। কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে অন্য কিছু।

ওই পে’ত্নী মেয়ে দেখি তার জামাইয়ের দিকে নজর দিচ্ছে ভেবেই গা জ্ব’লে উঠলো আয়ানার। লাফ দিয়ে বসা থেকে উঠে গেলো সে। ওই মেয়ে আদ্রিশের সাথে কথা বলার আগেই আদ্রিশের কাছে গিয়ে তার হাত জড়িয়ে ধরলো আয়ানা। চমকালো আদ্রিশ। পাশে তাকিয়ে দেখলো আয়ানা মিষ্টি হেসে তাকিয়ে আছে। আয়ানার হঠাৎ এমন আচরণে ভ্যাবাচ্যাকা খেলো আদ্রিশ। তবে মিনিট খানেকের ব্যবধানে তার লাজুক বউয়ের হঠাৎ এমন সাহসী হয়ে ওঠার কারণ ধরতে পারলো সে।
আয়ানা এবার আদ্রিশের উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকালো। দেখলো দ্বীপের কাজিন বোন তাদের দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে। আয়ানা মিষ্টি হেসে বললো,

— “আরে আপু আপনি এখানে যে?”
— “এমনি এসেছিলাম। উনি কে হয় তোমার? এভাবে হাত ধরলে কেনো?”
অনেক টা কড়া কণ্ঠেই শুধালো মেয়ে টা। মেয়েটার চোখে, মুখের হালকা রা’গে’র আভাস দেখতে পেলো আয়ানা। তার ও ভেতর ভেতর রা’গ হলো ভীষণ। বিড়বিড় করে করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

— “আমার জামাইয়ের হাত আমি ধরবো না তো কি পে’ত্নী তুই ধরবি!”
নিজের রাগ নিজের ভেতরে দাবিয়ে রেখে পুনরায় হাসলো আয়ানা। বললো,
— “আমার হাসব্যান্ড আপু। তখন দ্বীপের সাথে ছিলো তো তাই আপনাদের সাথে পরিচয় করানো হয় নি।”
আয়ানার জবাবে মুখ টা ভোঁ’তা হয়ে গেলো মেয়েটার। মাত্রই ক্রাশ খেয়েছিলো আবার সাথে সাথে ছেকা ও খেলো তাই হয়তো।

— “আচ্ছা থাকো তুমি। আমি যাই।”
বলে চলে গেলো মেয়ে টা। সেদিকে তাকিয়ে বিশ্ব জয় করা হাসি দিলো আয়ানা। মুখ বাকিয়ে মনে মনে ভাবলো,
— “কতো বড় সাহস! আমার জামাইয়ের দিকে নজর দিতে আসে হুহ….”
আয়ানার মুখের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসলো আদ্রিশ। যাক তার নম্র ভদ্র বউয়ের জেলাসি ও আজ দেখা হয়ে গেলো। আদ্রিশ মাথা ঝুকিয়ে আয়ানার কানের কাছে মুখ নিয়ে ধীর স্বরে শুধালো,

— “জেলাস? এতো জেলাস?”
চমকালো আয়ানা। পরোক্ষনেই লাজে রাঙা হলো সে। এই প্রশ্ন টা করার কি খুব বেশি দরকার ছিলো আদ্রিশের! অবশ্যই সে জেলাস। সামনে দাঁড়ানো আদ্রিশ নামক পুরুষ টা তো শুধুমাত্র তার, লোকটার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকানোর অধিকারটাও শুধুমাত্র তার। সেখানে অন্য কেউ তার সেই পুরুষের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকালে অবশ্যই সে জেলাস ফীল করবে। কথাগুলো মনে মনে আওড়ালেও মুখে আর উচ্চারণ করা হলো না আয়ানার। নীরব রইলো সে। খেয়াল হতে দেখলো এখনো আদ্রিশের হাত জড়িয়ে ধরে আছে সে। দ্রুত নিজের হাত ছাড়ানোর প্রয়াস করলো আয়ানা। হুটহাট এমন সাহসী, নির্লজ্জ বান্দা যে সে কি করে হয়ে যায়! আয়ানা হাত ছাড়াতে চাইলেও ছাড়লো না আদ্রিশ। আয়ানা আড় চোখে তাকিয়ে ধীর স্বরে বললো,

— “হাত ছাড়ুন প্লিজ। কেউ দেখলে কি ভাববে?”
— “কেউ কিছু ভাববে না। তোমার হাসব্যান্ড তোমার হাত ধরেছে। কোনো পরপুরুষ নয়।”
গম্ভীর স্বরে বলে উঠলো আদ্রিশ। আদ্রিশের কথার পিঠে ‘টু’ শব্দ টা করলো না আয়ানা। এমন সময় মিথি বসা থেকে দৌড়ে আসলো আয়ানাদের কাছে। আদ্রিশ কে উদ্দেশ্য করে বললো,

— “এটা কোনো কথা ভাইয়া? কই আমাদের সাথে একটু গল্প করবেন তা না এখানেও বউয়ের সাথে চিপকে আছেন!”
— “কি করবো বলো, একটামাত্র বউ আমার। তার থেকে দূরে থাকতে পারি না।”
মিষ্টি হেসে বললো আদ্রিশ। ফিক করে হেসে দিলো মিথি। আদ্রিশের এরূপ জবাবে লজ্জায় কুঁকড়ে উঠলো আয়ানা। মিথি এবার তাড়া দিয়ে বললো,
— “আপনারা জলদি আসুন ভাইয়া। দ্বীপ গিটার আনতে গিয়েছে। এখন সবাই একটুআকটু গান করবে। এটাই আসল বিনোদন। চলুন, চলুন।”

ফ্লোরে গোল হয়ে বসেছে সবাই। দ্বীপ গিটারে সুর তুলছে। বেশ ভালো গিটার বাজাতে পারে সে। একে একে সেই সুরের তালে গান গাইতে লাগলো সবাই। কেউ কেউ বেশ ভালো গাইতে পারে। বিশেষ করে রাইমা মেয়ে টা অনেক সুন্দর গান পারে। আবার কেউ কেউ এমন কণ্ঠে গান গেয়েছে যে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খেয়েছে সবাই। এবার সিরিয়াল আসলো আদ্রিশের। সবাই অনুরোধ করতে লাগলো যেনো সে একটা গান শোনায়। আদ্রিশ দুই হাত তুলে বললো,

— “সরি এভরিওয়ান। আমি গান গাইতে পারছি না। আমার কণ্ঠে গান শোনার অধিকার শুধুমাত্র আমার মিসেস এর। বুঝোই তো ম্যারিড মানুষ আমি।”
আদ্রিশ থামতেই হই হই করে উঠলো সবাই। একেক জন একেক কথা বলতে লাগলো। লজ্জায় গুটিসুটি হয়ে মাথা নিচু করে বসে রইলো আয়ানা। তার লজ্জা লাগছে আবার ভালো ও লাগছে। আদ্রিশ যেহেতু গান করে নি তাই আয়ানাকেও কেউ আর গাইতে বললো না। এমনিতেও গাইতো না আয়ানা। গানটান সে পারে না। আদ্রিশ আয়ানা কে বাদ দিয়ে এবার সিরিয়াল আসলো দ্বীপের। সবাই কে তার দিকে তাকাতে দেখে বোকা বোকা হাসলো দ্বীপ। গিটার একটুআকটু বাজাতে পারলেও গান গাইতে পারে না সে। দ্বীপের মুখের অবস্থা দেখে শ’য়’তানি হাসি দিলো মিথি। বললো,

— “নে, শুরু কর। তোর কাউয়া কণ্ঠে গান শুনায় আমাদের মুগ্ধ কর।”
মিথির কথায় হো হো করে হেসে উঠলো সবাই। রা’গী চোখে মিথির দিকে তাকালো দ্বীপ। মিথি আরেকটু রা’গি’য়ে দিয়ে বললো,

— “জীবনে তো তোর কম জ্বা’লা’তন সহ্য করি নাই, কম হোমওয়ার্ক, এসাইনমেন্ট করে দেই নাই। এখন এই মিষ্টি, ভালো আমিটাকে ডেডিকেট করে একটা গান গেয়ে শোনা।”
রা’গার বদলে এবার কিছু একটা ভেবে শ’য়’তানি হাসি দিলো দ্বীপ। দাঁত কেলিয়ে বললো,
— “ওক্কে।”
গিটারে টুংটাং শব্দ তুলে নিজের ফাটা বাঁশ গলায় গেয়ে উঠলো সে,

~”বান্ধবী তোর ব্যবহার টা আজও
ভুলিনি,
বান্ধবী তোর ব্যবহার টা আজও
ভুলিনি,
জানতাম না তোর মনের মাঝে এতো
শয়তানি,
জানতাম না তোর মনের মাঝে এতো
শয়তানি।”

দ্বীপ থামতেই ছাদ কাঁপিয়ে হেসে উঠলো সবাই। একেক জনের গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। আর মিথি বেচারি, সে তো গান শুনে বো’মে’র রূপ ধারণ করেছে। যেকোনো সময় ফা’ট’বে বুঝতে পেরে গিটার ফেলে দৌড় দিলো দ্বীপ।
— “দ্বীপের বাচ্চা, আজকে তুই শ্যাষ…”
চিৎকার করে বললো মিথি। অতঃপর ধাওয়া করতে লাগলো দ্বীপ কে। গান শুনে আর ওদের মা’রা’মা’রি দেখে হাসতে হাসতে একেকজনের পেট ব্য’থা হয়ে গিয়েছে তবুও হাসি থামছে না। পা’গ’লের মতো হাসছে সব। এই মুহূর্তে হঠাৎ করে যদি নতুন কারোর আগমন ঘটে আর সে যদি এই অবস্থা দেখে তাহলে নিশ্চিত সে ভাববে সে পা’গ’লা’গা’র’দে চলে এসেছে।

আদ্রিশ আয়ানা যখন দ্বীপদের বাড়ি থেকে বের হলো তখন রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজছে। আদ্রিশ এক মনে গাড়ি চালাচ্ছে, আয়ানা উইন্ডো দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ সে আবদারের সুরে বললো,
— “গ্লাস টা নামিয়ে দিবেন প্লিজ?”

অতঃপর প্রেমের আগমন সিজন ২ পর্ব ১০

আদ্রিশ এক পলক চাইলো আয়ানার দিকে। তারপর এসি অফ করে গাড়ির গ্লাস টা নামিয়ে দিলো। ওমনি ফুরফুরে বাতাস গাড়ির ভেতর প্রবেশ করলো। চোখ বন্ধ করে শ্বাস টানলো আয়ানা। এখন ভালো লাগছে খুব। চোখ খুলে মুগ্ধ হয়ে রাতের শহর দেখতে লাগলো সে। এর আগে কখনো রাতের শহর দেখা হয় নি তার। আজ দেখছে সে, মুগ্ধ হয়ে দেখছে।

অতঃপর প্রেমের আগমন সিজন ২ পর্ব ১২