বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৮ || Romantic Love Story

বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৮
Asfiya Zannat Turfa

ঘুম থেকে উঠে বরাবরের মতো তুরের কপালে নিজের ঠোট ছোঁয়ালো রোদ্দুর। এরপর বাথরুমে ঢুকে গেলো শাওয়ার নিতে। রোদ্দুর চলে যেতেই তুর নিজের ফোন চালু করে। একটা লোকেশন ট্রাক করছে সে। লোকেশন চিনতে চিনতে প্রায় আধাঘন্টা কেটে গেলো। কিন্তু রোদ্দুর এতোক্ষণ ধরে গোসল করছে? ও তো পাঁচমিনিটেই গোসল, জামাকাপড় পড়া, চুল আচড়ানো সবকিছু করে ফেলে। তুর আবিদকে ফোন দেয়,

– ” ভাইয়া কই তুই? ভুলে গিয়েছিস নাকি আজ আমাদের কম্পানির নিউ প্রডাক্ট লঞ্জ হবে। এতোক্ষণ ধরে কেউ ঘুমায়? জলদি আয়।আমিও আসছি। ”
– ” বোন তুই বের হ। আমি আসছি। ”
– ” হ্যাঁ, জলদি আয়। আর শোন আমার সাথে রোদ্দুরও আসবে। পরে অবশ্য চলে যাবে, কিন্তু জামাই মানুষ ওর খাতিরদারি করার জন্য তো যাকে তাকে বলতে পারি না। প্রথমবার ও অফিসে যাবে তুই থাকিস প্লিজ। ”
– ” আচ্ছা আমি থাকবো। তুই চিন্তা করিস না। মামি কেমন আছে? অনেকদিন তোদের বাড়িতে যাওয়া হয়নি। ”
– ” ভালো। অনাপি কেমন আছে রে? ওকেও নিয়ে আসিস। তোদের সবার সাথে রোদ্দুরের আলাপ করিয়ে দেবো।
– ” আচ্ছা। রাখ তাহলে। ”

তুর ফোন রেখে আবার পাঁচমাস আগের ঘটনায় নিজের মস্তিষ্ক নিয়ে গেলো, সেদিন আবিদের কাছে একটা ফোন এসেছিলো, আবিদের বলা কথাগুলো এমন,
– ” হ্যাঁলো! হ্যাঁ সব পার্ফেক্ট, আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবেই সবটা হচ্ছে, তুর কিংবা মামি টের পায়নি, তুরকে কে বা কারা গুলি করেছে। মামি তো নিজের মেয়ের চিন্তায় কেসটাই ক্লোজ্ড করে দিয়েছে।”
-………………
– ” পাঁচমাস লাগতে পারে নিউ প্রডাক্ট লঞ্জ করতে, ”
-……………..
– ” এতোদিনে তো সম্পত্তি আমার হাতেই চলে আসতো। এই তুর কাকে না কাকে ধরে এনেছে, বিয়ে করেছে বললো। ”
-……………..
– ” মেবি ছেলেটার নাম রোদ্দুর।”
-……………..
– ” কি বলছেন? রোদ্দুরকে মেরে ফেলবো মানে? এমন কেন হবে? তুর মরলে ওর সম্পত্তি তো আমাদের হাতেই আসবে। রোদ্দুর কেন পাবে? ”
-………………
– ” নাহ তুর, রোদ্দুরের নামে কিছু লিখে দেয়নি, সব ওর নামেই আছে। তাছাড়া সম্পত্তি আমার হাতে আসলে আমার দু-মিনিটও লাগবে না রোদ্দুরকে নিজের পথ থেকে সড়াতে। ”
-………………
– “তুর আমাকে বিশ্বাস করে অনেক। ও কখনও আমাকে সন্দেহ করবে না।”
-……………….
– ” আপনারা পাঁচজন সেই প্রডাক্ট লঞ্জের দিনই আসুন। ওই দিন তুর ব্যস্ত থাকবে, টের পাবে না কিছু। ”
-………………
– ” ইয়াহ! হ্যাভ এ নাইস ট্রিপ! কাম ব্যাক সুন, আই আ’ম মিসিং ইউ এ লট। ”

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

রোদ্দুর খট করে দরজা খুলতেই তুর চোখ মেলে তাকায়। রোদ্দুর আয়নার সামনে দাড়িয়ে স্টাইল মারছে দেখে তুর ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
– ” টাওয়াল পরে অর্ধনগ্ন হয়ে ভাব মারছেন যে? হসপিটাল নেই? কাজকাম নেই? জলদি তৈরি হয়ে নিন। হসপিটাল থেকে আবার অফিসে যেতে হবে। ছুটি নিয়েছেন তো? ”
রোদ্দুর বিরক্ত হয়ে প্যান্ট পড়তে পড়তে বলে,
– ” শো অফ করছিলাম। দেখছিলাম আনরোম্যান্টিক জানের ভেতর রোম্যান্টিকতার ‘র’ উঁকি টুকি মারছে কিনা! মারে না, ব্যাড লাক! বাট একদিক থেকে বেনিফিট আছে, মনে আছে তো? ”
তুর ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
– ” কি? ”
– ” পাঁচমাস পূর্ণ হতে আর মাত্র একদিন দুই ঘন্টা বাকি। সো বি রেডি ফর দ্যাট স্পেশাল নাইট। ”
– ” অনলি নাইট? ”
– ” নট এট অল জান! আমি রেডি হয়ে গিয়েছি। এবার তুমি তৈরি হয়ে নাও। তোমায় অফিসে রেখে আমি হসপিটালে যাবো। ”
– ” দাদি আর আম্মুকে অফিসে নিয়ে যাবে কে? ”
– ” আমি লোক পাঠিয়ে দেবো। চিন্তা করো না।”

অফিসে নিজের কেবিনে ঢুকে তুর ল্যাপটপ অন করলো। পুরো অফিসের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করছে ও। অনামিকা এসেছে, হাতে একটা লাল বক্স। আবিদ খাবারের ডেকোরেশন দেখছে। তুর তর্জনি আঙ্গুল নিজের কপালে ঠেকিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আবিদকে পর্যবেক্ষণ করছে। আবিদ সাদাগুড়ো জাতীয় কিছু একটা শরবতের গ্লাসে মিশিয়ে সেটা নিয়ে ওরই কেবিনের দিকে আসছে। তুর হাসে! ল্যাপটপ বন্ধ করে তুর হাতে নেইলপলিশ দিতে লাগলো, যদিও ক্ষনিকের জন্য তবে ভালো লাগে তুরের নিজেকে লালরঙে সাজাতে। আবিদ এসে নক করলো দরজায়। তুর বিহিত কন্ঠে বলে,
– ” হু’স দেয়ার? কাম ইন! ”
আবিদ ঢোকে। তুর চেয়ার থেকে দাড়িয়ে হেসে বলে,
– ” আরে ভাইয়া তুই? নক করা লাগে? এটা তো তোরই অফিস! আয় বস। শরবত? ম্যাংগো ফ্লেবার? ”
আবিদ মৃদু হেসে বলে,
– ” হুম। তোর ফেবারিট! তোর পছন্দমতো বানিয়ে এনেছি। খাবি তো? ”
– ” অফ কোর্স! তুই এনেছিস আর আমি খাবো না? এমনটা হতে পারে? আমার একমাত্র ফুপাতো ভাই তুই, বাই দ্যা ওয়ে তোকে ছাড়া আমি কিভাবে খাই? এটা তুই খা আমি আরেকটা আনিয়ে নিচ্ছি। ”
আবিদ চটজলদি উত্তর দেয়। ” নাহ “। তুরের হাসির রেখা দীর্ঘ হয়। কৌতুকের স্বরে বলে,

– ” কেন কিছু মিশিয়ে এনেছিস নাকি? ”
কথাটি আবিদের কানে পৌঁছানো মাত্র আবিদ সচকিত দৃষ্টিতে তুরের দিকে তাকালো, আবিদের কপালে ঘাম জমতে শুরু করেছে, হাতসহ গ্লাস কাঁপছে অনবরত। তুর এগিয়ে এসে আবিদের হাত থেকে গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে গিলে ফেললো সবটা। আবিদ ‘ তুই থাক আমি আসছি ‘ বলে চলে যেতেই তুর মাথা কাত করে তাকায় দরজার দিকে।
– ” ব্লাডি ফুল। ”
তুরের টেবিলের নিচ থেকে বেরিয়ে আসলো একটা ছেলে। তুর নিজের ব্যাগ থেকে এক বান্ডিল টাকা বের করে ওর হাতে দিলো,
– ” থ্যাংকস! ফর ইনফর্মিং মি দিস নিউজ। আর হ্যাঁ আবিদকে ড্রাগের বদলে পাউডার দেওয়ায় এটা আমার তরফ থেকে তোমার জন্য ছোট্ট একটা উপহার, এখানে কুড়িহাজার টাকা আছে, তোমার বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবে।বইখাতা কিনবে, বাকি চল্লিশ হাজার তোমার বউ এর অপারেশনের জন্য। ছেলে হয়েছে নাকি মেয়ে সেটা আমায় জানিও। ”
– ” থ্যাংক ইউ ম্যাডাম।”
– ” যাও, আবিদের সামনে পড়ো না। তাহলে নানা প্রশ্ন করবে তোমায়। দেরি হয়ে যাবে হসপিটালে পৌঁছাতে। ”

ছেলেটি চলে যেতেই, তুরও বেড়িয়ে আসে। আবিদ ওকে ম্যাসেজ দিয়েছে ছাদে আসার জন্য, তুর ছাদে গেলো। আবিদ আর কিছু ক্লায়েন্টসহ তাহমিনা বেগম দাড়িয়ে আছেন। তাহমিনা তুরের আগমন দেখে আবিদকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলো,
– ” মিস্টার আবরার, ও হলো আবিদ। আমার ননদের ছেলে, ভারি মিষ্টি এবং ব্রাইট স্টুডেন্ট! এই কম্পানির সব দায় ও একাই নিজের কাধে নিয়েছে। ওর বোন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। ওর বাবা-মা নেই, একটা এক্সিডেন্টে মারা গিয়েছেন। আমি চেষ্টা করি ওদের ভালো রাখতে কিন্তু মা-বাবার অভাব পূরণ করা যে আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তাই ওরা ওদের দাদুবাড়িতেই থাকে। ”

আবিদ তাহমিনাকে আলতো জরিয়ে ধরে বলল,
– ” নো মিস্টার আবরার! আমার মামি আছে, যে আমায় ছোট থেকে নিজের ছেলের মতো দেখেছেন, আজ আমি যতটুকু হতে পেরেছি সবটা মামির জন্য। ”
তুর চেয়ার টেনে বসে! নাটকটা বেশ ভালোই লাগছে ওর।
– ” যেই মায়ের কলিজা তোরা সেই মায়ের কলিজা নিতে এতোটা ভুগতে হচ্ছে তোদের, বেচারা! ”
তুর উঠে আবরারের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করে। প্রডাক্ট লঞ্জের সময় হয়ে এসেছে। আবিদ শুধু তুরের অজ্ঞান হওয়ার অপেক্ষাতে আছে। তুর সিড়ি দিয়ে নামার সময় সামান্য টলে যায়, যেটা দেখে আবিদের বিষাদময় চেহারায় খুশির ঝলক ফুটে ওঠে। তুর এরপর বাইরে বেড়িয়ে যায়। আবিদও পিছু পিছু গেলো। তুর গাড়ির সামনে গিয়ে নিজেকে রিফ্রেশ করতে লাগলো ন্যাচেরাল হাওয়ায়! শীতলতায় এক অদ্ভুত শিহরণে আমোদ অনুভব করলো।

তুর পেছনে আবিদকে লক্ষ করে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে পড়ে যেতেই আবিদ ধরে ফেলে ওকে! এরপর গাড়িতে উঠিয়ে ওকে নিয়ে আসে এক নির্জন রাস্তায়। তুরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তা বেয়ে ও জঙ্গলের পথে নামতে আরম্ভ করলো। হুট করে আবিদের ঘাড়ে ব্যাথা অনুভব করতেই আবিদের হাত আলগা হয়ে আসে। তুরকে ফেলে দিয়ে ও নিজেও লুটিয়ে পড়লো মাটিতে। আবিদকে পড়ে যেতে দেখে তুর হকচকিয়ে উঠে বসে। আবিদের ঘাড়ে সূচ জাতীয় কিছু একটা ফুটে আছে, ক্ষতস্থান নীলচে বর্ণ ধারণ করেছে। চারিদিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য তুর উঠে দাড়ালো। সেই সাথে নিজের ঘাড়েও ব্যাথা অনুভব করলো ও। সামনের আলোকিত দৃশ্যগুলো ঝাপসা হতে শুরু করে। তুর টাল সামলাতে না পেরে হাটু গেড়ে বসে পড়ে। ঘাড়ের কাছে কারোর ভারি নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ছে। ব্যাথা অংশে কেউ গভীরভাবে ঠোট ছোঁয়াচ্ছে।

আবিদের জ্ঞান ফিরতেই ও নিজেকে এক বন্ধনিতে আবদ্ধ থাকতে দেখে। আবিদদেরই পুরাতন ভিলার এক স্তম্ভের সাথে ওকে বেধে রাখা হয়েছে। আবিদ চিৎকার করে ডাকলো,
– ” কোথায় সব? নিখিল, সবুজ। ”
পেছন থেকে এক আগন্তুকের কন্ঠ ভেসে আসলো আবিদের কানে।
– ” কেউ নেই। ”
– ” কে তুই? সাহস থাকলে সামনে আয়। ”
আগন্তুক আবিদের সামনে এসে দাড়ায়। মুখে কালো মুখোশ পড়া, কালো প্যান্ট, শার্টে আবৃত তার দেহ। আগন্তুককে দেখে আবিদ ভীত কন্ঠে বলে,
– ” তুই এখানে? ”
– ” অবাক লাগছে আমায় দেখে? আমারও অবাক লেগেছিলো যখন আমার বেস্টফ্রেন্ড আমার ভালোবাসাকে মারার চেষ্টা করেছিলো, আজও ওকে এখানে আনার চেষ্টা করেছিলো মারবে বলে। কেন করলি এমন? তুই তো জানতিস আমি জানকে কতটা ভালোবাসি। ”
– ” দেখ তুই ভুল বুঝছিস আমাকে। তুর তোকে ভালোবাসে না। ওর তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ও রোদ্দুর নামে একজনকে ভালোবাসে। ”

– ” সেটা ম্যাটার করে না, তোকে মারার জন্য একটা কারনই যথেষ্ট ‘তুই আমার জানকে মারতে চেয়েছিস’। আর আমি আমার জানের শত্রুকে এই পৃথিবির বুকে শান্তিতে শ্বাস নিতে দেইনা। ”
– ” আমাকে মেরে কি লাভ? তুই তো তুরকে কখনও পাবিনা। এতোদিনে ও অন্যকারোর হয়ে গিয়েছে। অন্যের ব্যাবহার করা জিনিস তো তুই পছন্দ করিস না তাইনা? তুরের মতো হাজারটা মেয়ে তোর সামনে এনে দেবো, তবুও আমায় মারিস না শুভ্র। ”
– ” শুভ্র’র শুভ্রময়ীকে চিনতে ভুল করেছিস তুই! আর জানকে? জানকে কখনও চিনতেই পারিসনি। আমি তোকে না মারলেও জান তোকে ঠিকই মারবে, কারন জান সবটা জানে, তোর সব খেলা। ও শুধু অপেক্ষা করেছে সেই পাঁচজনের জন্য। ”
– ” পাঁচজন? তুর সব জানে? তাহলে তুরই তোকে ভাড়া করেছে আমায় মারতে! ”
– ” না তো! আমি নিজেই এসেছি তোকে মারতে। আমার জান ছোট মানুষ, রাগের বশে যদি কোনো ভুল করে ফেলে? তখন ওর শুভ্র চরিত্রে এবং মুখশ্রীতে তোদের মতো শয়তানের কালো ছাঁয়া পড়বে না বল? তাই তোকে এবার আমি শান্তিতে অনন্তর কাছে পাঠাবো। ”

বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৭

– ” অনন্ত? ”
– ” আরেহ হ্যাঁ! তোকে তো বলতেই ভুলে গিয়েছি। তোর বোনের সেই একদিনের বয়ফ্রেন্ড অনন্ত!যে অনন্দ নিখোজ ছিলো, নিখোজ? না মৃত!তাকে তো কবেই জান মেরে দিয়েছিলো লাশটা অবশ্য আমি গুম করেছি। কারন অনামিকার সহজ মৃত্যু চাইনা আমি। তোরা ভাইবোন মিলে আমার জানকে যতটা কষ্ট দিয়েছিস তার দ্বিগুণ ফেরত পাবি। ”
– ” শুভ্র এমন করিস না। ”
– ” স্যরি রে বন্ধু! শুভ্র সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। শেষবারের মতো তোর বোন অনার চেহারা দেখবি? এক কাজ কর সবার চেহারাই দেখ। অনা, তোর মামি, তোর সোনার ডিমপাড়া হাঁস ওরফে জান, এন্ড তার স্বামীসহ দাদি। ”
– ” তুই এতোকিছু? ”
– ” এতোকিছু কিভাবে জানি? তাইনা! জানকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সবটা জানতে হয়েছে। ”
শুভ্র এক এক করে সব ছবি দেখালো। শেষের ছবিটা দেখতেই আবিদের হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়ার উপক্রম। আবিদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই শুভ্র আবিদের পেটে ঘুসি মারে, জিব্হা বেড়িয়ে আসতেই শুভ্র ছুরি দিয়ে জিভ কেটে নিলো। ব্যাথায় দাপাদাপি করতে আরম্ভ করে আবিদ। একজন গার্ডস এসে শুভ্রর হাতে গরম তেল দিয়ে পাশে দাড়ালো, শুভ্র তেলটুকু উপুর করে ঢাললো আবিদের শরীরে।

– ” আজ রাতের আগে যেন আবিদ না মরে। রাতে এসে আমি নিজে ওকে মারবো। ওকে এভাবে তড়পাতে দাও।”
শুভ্র এসে তুরকে কোলে তুলে নিজের গাড়িতে বসালো। তুরের মাথায় অধর ছুঁইয়ে বললো,
– ” কষ্ট হচ্ছে তাইনা জান? এইতো আর মাত্র ঘন্টাখানেক। তারপরই সব ঠিক হয়ে যাবে। তুমি শুভ্রের শুভ্রময়ী হয়েই থাকবে। কোনো তিমির তোমায় স্পর্শ করতে পারবে না। হও, তুমি রোদ্দুরের জান কিন্তু আমার অনুরাগ বিন্দুপরিমানও কমবে না। তোমার এই বিষাক্ত অনুরাগকে আমি শুভ্রময় অনুরাগে পরিনত করবো যেখানে ছেঁয়ে থাকবে একরাশ মুগ্ধতা, শুভ্রতা! তার জন্য যদি তোমার সব বিষাক্ত স্মৃতি আমার হয়, তবে সেটাই হোক। শুধু তুমি ভালো থাকো। ”

তুরের ঘাড় এন্টিসেপ্টিক দিয়ে পরিষ্কার করে দিলো শুভ্র। ধারালো সূচের ভেঙে যাওয়া এক সেন্টিমিটারের মতো অংশ তুরের ঘাড়ে গেঁথে আছে। শুভ্র নিজের দাঁত তুরের ঘাড়ের কাছে নিয়ে সূচটা টেনে তুলে ফেললো। গাড়ি চলছে আপন গতিতে, গন্তব্যস্থল #TI ইন্ডাস্ট্রি!

বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৯