বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৯ || Asfiya Zannat Turfa

বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৯
Asfiya Zannat Turfa

এদিকে তুর এবং আবিদ দুজনই নিখোজ! সবাই সমান তালে খুজছে ওদের। অবশেষে তুরকে পার্কিং এরিয়ার পেছনের দিকটায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। রোদ্দুর অনেক আগেই এসেছিলো অফিসে। তুরকে খুজে না পেয়ে ওর অবস্থা তাহমিনার থেকেও খারাপ। তাহমিনা রোদ্দুরের পাগলামি দেখে হাসবে নাকি তুরের নিখোজ হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করবে বুঝতে পারছে না। তুরকে নিয়ে আর একমুহূর্তও অফিসে থাকে না রোদ্দুর। বাড়ি এসে দরজা লাগিয়ে তুরের পাশে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকে ও। দাঁত দিয়ে নখ কামড়াচ্ছে, চিন্তায় কপালের শিরাগুলো ফুলে উঠেছে।

খানিকক্ষণ পরই তুরের জ্ঞান ফিরে আসে। তুর চিন্তিত চোখে এদিক ওদিক চায়। এরপর উঠে বসে। পাগলের মতে চারদিক চোখ বুলিয়ে রোদ্দুরের দিকে তাকায়। রোদ্দুর নির্নিমেষে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। চোখমুখ শুকিয়ে গিয়েছে। তুর রোদ্দুরের গালে হাত দিয়ে জিজ্ঞাসাসূচক ভ্রু নাচায়। রোদ্দুর তুরের অস্থির মন শান্ত করতে বলে,
– ” কি হয়েছে? এই প্রশ্নটা তো আমার করা উচিত। ধরলাম না, ছুঁয়ে দেখলাম না, কিছু করলাম না, তাও চক্কর খাও কিভাবে? কিছু করলে নাহয় বুঝতাম আমার বাবা হওয়ার সময় হয়েছে, তাই ঘুরে ঘুরে পড়ছো,, কিন্তু তা তো নয়। কাহিনি কি বলো তো? ”
তুর সন্দিগ্ধ চোখে রোদ্দুরের দিকে তাকায়। মনে করার চেষ্টা করে কি হয়েছে ওর সঙ্গে। ঘাড়ে একটু ব্যাথা আছে, কিন্তু আয়নায় তাকিয়ে দেখলো সেখানে কোনো দাগ কিংবা চিহ্ন নেই। আবিদ কোথায়? ও তো আবিদের সঙ্গে ছিলো। তুর মৃদু হেসে বলে,

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

– ” আমি কোথায় ছিলাম? ”
– ” গাড়ির সারির পেছনে। চিপায় কি করছিলা? ”
– ” চিপায় কি করে মানুষ? ”
– ” আমি ছাড়া কি করছিলে? আমি থাকলে নাহয় বিস্তারিত বলতাম, জানতাম। একা একা কি করছিলে? ”
– ” গাড়ি, গাড়ির চাবি হারিয়ে ফেলেছিলাম তাই খুজতে গিয়েছিলাম। ”
– ” এরপর থেকে একা একা যাবে না। কোথায় কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলো, এক কাজ করো! আজ থেকে বাড়ির বাইরেই যাবে না। কোথাও যেতে ইচ্ছে করলে আমায় বলবে আমি নিয়ে যাবো। ”
তুর রোদ্দুরের দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসে।
– ” বাথরুমে যাবো। নিয়ে যাবেন নাকি? ”
– ” কেন নয়? ”
বলেই তুরকে কোলে তুলে নিলো রোদ্দুর। তুর মজা করে বলেছিলো কথাটি কিন্তু রোদ্দুরের প্রতিক্রিয়ায় ও হকচকিয়ে যায়। নিচু স্বরে বলে,
– “আহা! নিচে নামান। আমি মজা করে বলেছি। ”
– ” স্যরি রোদ্দুর সেটা করতে পারবে না। সে এখন তার বউ এর সঙ্গে একটা মিনিট পনেরোর শাওয়ার নিবে। আপনার যা বলার সেটা পনেরো মিনিট পরে বলুন, ধন্যবাদ। ”
– ” নো, গোসল তাও আপনার সাথে? ইমপসিবল! আপনি শুধু আমায় পানিতে চুবান! আদর করতে মানা করেছিলাম সেই শাস্তিস্বরূপ। আমি যাবো না। ”
– ” আচ্ছা আজ চুবাবো না। রোম্যান্টিক মুডে আছি। সো রোম্যান্স করবো, তুমিও তো মনে মনে সেটাই চাও”

– ” কি? আমি এসব চাই? নিজের চাওয়াটা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন আবার বলছেন আমি চাই? ”
রোদ্দুর তুরের দিকে আড়চোখে তাকালো। কঠোর স্বরে প্রশ্ন করলো,
– ” ভেবে বলো, চাও না? যদি না চাও তাহলে এই রোদ্দুর আর কখনও তোমার কাছে আসবে না। ”
তুর রাগি গলায় বললো,
– ” ব্লাকমেল করে ‘হ্যাঁ’ বলিয়ে নেওয়া কাকে বলে সেটার জলজ্যান্ত উদাহরণ আপনি। জেনেশুনে এমন প্রশ্ন করেছেন যেন আমি হ্যাঁ বলি তাইনা? চালাকি করে কথা আদায় করছেন, ”
– ” বোকাদের সাথে একটু চালাকি না করলে চলে না বোকাজান। ”
রোদ্দুর তুরকে নিয়ে শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে শাওয়ার ছেড়ে দিলো। রোদ্দুরের গাল বেয়ে পানি টপটপিয়ে তুরের মুখের ওপর পড়ছে। তুর রোদ্দুরের দিকে একনজর তাকিয়ে সামনে তাকালো, ভেতরে এক অদ্ভুত অস্থিরতা কাজ করছে। রোদ্দুর তুরের ঠোটে নিজের ঠোট ছোঁয়াতেই তুরের হুশ ফিরে আসলো। রোদ্দুরকে একবার বাঁধা দিতে যেয়েও দিলো না। অনেক তো অপেক্ষা করিয়েছে ওকে, আজ না হয় সব অপেক্ষার অবসান হোক।

আবিদদের সেই ভিলায়, আবিদের সামনে বসে আছে শুভ্র। আবিদের নিস্তেজ শরীর দেখে কিঞ্চিত মায়া অনুভব করলো ও। মৃত্যুপথযাত্রী মানুষকে কিছু কথা বলা যেতেই পারে। এতে সেও একটু শান্তি পাবে আর শুভ্র নিজেও শান্তি পাবে। শুভ্র বলতে আরম্ভ করে,

– ” তুরের পরিবারের সঙ্গে আমার চেহারা দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিস তাইনা? ভেবেছিস ওটা আমি। কিন্তু না, ওটা আমি নই! ওটা আমার ভাই রোদ্দুর! আমার ছোট ভাই, যে আমাকে নিজেরই বাবা-মায়ের হত্যাকারী ভাবে। যে আমাকে মেরে, রাগের বশে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় নদীতে! এবার ভাবতে পারিস তাহলে আমি কেন তার সাথে জানের বিয়ে হতে দিলাম। কারন জান কখনও আমার ছিলো না। আমি জানতাম আমার ভালোবাসার পরিণতি কি! রোদ্দুর ছোট থেকে জানকে ভালোবাসে, জানও তাকে পছন্দ করতো, কারন রোদ্দুর ওকে ‘মেরি জান’ বলে ডাকতো। আর আমি শুভ্রময়ী! পিচ্চি জান বুঝতো না শুভ্রময়ী কে?কিংবা কি? রোদ্দুরের ‘মেরি জান’ এর সাথে নিজের নামের মিল খুজে পাওয়ায় ও সবসময় রোদ্দুরেই সঙ্গেই থাকতো! আমি আড়ালে থেকেই চাইতাম ওকে। তোরা কেউ জানতিস না যে আরহাম জুহায়েরের জময সন্তান ছিলো, তোরা জানতিস তার একটাই ছেলে আহনাফ যে নদীতে পড়ে গিয়েছে এবং মারা গিয়েছে। তাই এতোদিন এই জুহায়ের বংশের কথা চিন্তা করিস নি। রোদ্দুর শুধুমাত্র তুরের কথা ভেবে ডাক্তারি পড়তে শুরু করে, তুরের মেমরি লসের কথা ভেবে ও প্রথমে সাইক্রিয়াটিস্ট হতে চেয়েছিলো, পরে যখন জানতে পারলো যে তুরের স্মৃতি কখনই ফিরবে না তখন ও মানুষের হৃদয় নিয়ে পড়তে আরম্ভ করে, আর আমি আসি তোদের মাঝে শুভ্র হয়ে। আহ’হা তোদের তো আমাদের নামই বলা হয়নি, আমি আহনাফ জুহায়ের শুভ্র! রোদ্দুর জুহারের তুর্য আমার ভাই, আর আরহাম জুহায়ের আমাদের বাবা। ‘হত্যাকারী’ তকমা যেহেতু আমার গায়ে আগেই লেগেছে সুতরাং তোদের সবগুলোকে আমি নিজ হাতে শেষ করবো। যেই পাঁচজনকে গর্ত থেকে তুই টেনে এনেছিস সেই পাঁচ গোখরো সাঁপের বিষদাঁত ভেঙে ওদের শেষ করবো। যদের জন্য আমার শুভ্রময়ীর অনুরাগ বিষাক্ত হয়েছে তাদের নির্মূল না করলে যে আমার শুভ্রময়ী আগের মতো স্বাভাবিক হতে পারবে না। ”

এইটুকু বলে দম নিলো শুভ্র! হাতে থাকা বন্দুকটি ঘুরিয়ে পরপর তিনটা গুলি করলো আবিদের বুকে। এরপর সেই ছবি পাঠিয়ে দিলো তুরের ফোনে। সাথে ছোট্ট একটা ম্যাসেজ, ‘ তোমার কাজগুলো আমায় সম্পন্ন করতে দেবে? জানি দিবে না তাই তোমায় না জানিয়েই সবটা করছি! ওদের ছ’জনকেও আমি মারবো। না তুমি বাঁধা দিতে পারবে, না ঠেকাতে পারবে আমায়। তাই এদের চিন্তা না করে নিজের জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করো। নিজেকে নিয়ে এবং পরিবার নিয়ে ভাবো, আমি কে? কি চাই জানার আগ্রহ জন্মাচ্ছে তাইনা? আমি হলাম শুভ্রময়ীর শুভ্র! চাওয়াটুকু হলো তোমাদের সুন্দর জীবন। ভালো থেকো রোদ্দুরকে নিয়ে। ‘
তুর সবে বাথরুম থেকে বেড়িয়েছে। রোদ্দুর এখনও শাওয়ার নিচ্ছে, তুর চুল মুছতে মুছতে ফোন অন করতেই ছবিসহ ম্যাসেজ চোখে পড়ে ওর। তুরের কপালে সূক্ষ্ম ভাজ পড়ে। শুভ্রময়ীর শুভ্রটা আবার কে? প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত তুর! উত্তর পাওয়া দুষ্কর। রোদ্দুর বের হয়ে তুরের চিন্তিত মুখ দেখে শঙ্কিত হয়,

– ” কি হয়েছে? ”
তুর রোদ্দুরের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে,
– ” টাওয়াল সামলান, খুলে পড়ে গেলো তো। ”
রোদ্দুর ভ্রু কুঁচকে তাকায়, তুর কথা এড়িয়ে গেলো কেন? তুর ঘর থেকে বেড়িয়ে করিডোরে এসে দাড়ায়।কোনো সমীকরণ মিলছে না! কে শুভ্র? কেন করছে এগুলো? ওর সাথে শুভ্র’র কি সম্পর্ক? রোদ্দুর দাদির কাছে এসে দাদির কোলে মুখ লুকাতেই দাদি বলে উঠলেন,
– ” মিষ্টি কিছুর গন্ধ পাচ্ছি মনে হচ্ছে! এবার কি মিষ্টি খাওয়ার জন্য দিন গুনতে পারি? ”
– ” অবশ্যই বউ! কিন্তু জান নিজেকে আমার থেকে বারবার লুকাচ্ছে। কিছু একটা চলছে ওর মাঝে যেটা আমায় বলছে না। কেন বলছে না? আমি তো ওর সবথেকে কাছের মানুষ হওয়ার পূর্ণচেষ্টায় আছি। ও কি এখনও আমায় আপন ভাবতে পারছে না? ”
দাদি রোদ্দুরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন সন্তর্পণে! তাহমিনা দরজার কাছে এসে দাড়িয়েছে। রোদ্দুরের কথা শুনে এবার ও ভেতরে আসলো,

– ” রোদ্দুর!”
– ” আম্মু জান কেন আমাকে বিশ্বাস করতে পারে না? কেন সবটা বলতে পারে না? আমি কি এতোটাই অযোগ্য? ”
– ” এমন নয় বাবা, জানোই তো ও ওর বাবার মৃত্যুর খবর মেনে নিতে না পেরে,, ওদিকে তুমি শুভ্রকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলে সেটা জান নিজের চোখে দেখেছিলো, তারপর ওর এক্সিডেন্ট! এতোকিছুর পর যে ও এখনও আমাদের মাঝে আছে, বেঁচে আছে। এটাই অনেক নয় কি? তাছাড়া জান তো শুধু তোমার! তাহলে এতো চিন্তা কিসের? ”
– ” কি জানি? হঠাৎ শুভ্র’র কথা মনে পড়লো! আমার মা-বাবার হত্যাকারীর কথা মনে পড়লো। মরে গিয়েও শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না আমাদের। ”

তিন-চারদিন পর তুর আর রোদ্দুর অফিসে আসে। আবিদের অনুপস্থিতিতে তুরই অফিসের সকল দায়িত্ব পালন করবে। রোদ্দুর তুরকে রেখে হসপিটালে চলে যায়। তুরের টেবিলের সামনে অনামিকার সেই লালবক্সটা দেখে তুর বিষ্মিত হয়। কৌতুহলী হয়ে বক্সটা হাতে নিলো ও। একটা ছোট চিরকুট!
– ” ইউ উইল বি ফিনিশ্ড জান! হ্যাভ এ সুইট, সফ্ট, ক্লিন ডেথ। ”
তুর আবারও পড়ে চিরকুটটি! এরা ভাইবোন সব সময় অন্যের ক্ষতি ছাড়া ভালো কিছু ভাবতে পারে না নাকি? তুরের ফোনে একটি ম্যাসেজ আসে,
” শুভ্রময়ী! কেমন আছো? তোমার জন্য একটা সার্প্রাইজ প্লান করেছি আমি। তোমার জীবনের সবথেকে বড় গিফট! সেই পাঁচজন। যারা এখন আমার কাছে। তুমি ওদের মরতে দেখতে চাও তাইনা? অনামিকাকেও এনেছি আমার কাছে! আজ রাতে সব হিসাব চুকিয়ে দিবো! আসবে তুমি? তোমার শুভ্র’র কাছে। গাড়ি পাঠাবো? ”

তুর সাথে সাথে ম্যাসেজ দিলো,
– ” কে আপনি? কেন করছেন এগুলো? কি চান? ”
– ” আমি কে? কি চাই সেটা তো আগেই বলেছি। আর এগুলো করার কারন, ওরা আমারও শত্রু! তাই এগুলো আমায় করতে হচ্ছে। বিশেষ কোনো কারন নেই। গাড়ি কখন পাঠাবো? ”
– ” এখন। ”
– ” নাহ, রাতে এসো। রোদ্দুরের সঙ্গে! তোমায় একা একা বের হতে হবে না।”
– ” ঠিকানা দেন! ”
– ” শুভ্রময়ী! এভাবে জোর করো না আমায়, আমি তোমার কথা ফেলতে পারবো না। রাতে গাড়ি পাঠিয়ে দিবো, তখন এসো। টেক কেয়ার! ”
তুর ম্যাসেজ পাঠালো কিন্তু সেন্ট হলো না, কল দিয়ে দেখলো ফোন বন্ধ! আজব! তুর অপেক্ষা করতে লাগলো রাতের জন্য। একবছর ধরে ও এইদিনটার জন্যই অপেক্ষা করেছে, কবে সেই পাঁচজনের খোজ পাবে, কবে বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবে, কবে জানবে এসব হওয়ার কারন কি?
রাতে রোদ্দুর আসে তুরকে নিতে, তুর তখন নিজের কেবিনে একটা মিটিং’য়ে ব্যস্ত। গেটের বাইরে রোদ্দুরকে দেখে ও দ্রুত মিটিং শেষ করে বাইরে বেড়িয়ে আসে। রোদ্দুর তুরকে নিয়ে লিফটে ঢুকে পড়ে! লিফটের দরজা বন্ধ হতেই রোদ্দুর তুরকে জড়িয়ে ধরে।

বিষাক্ত অনুরাগ পর্ব ৮

– ” উফ কতক্ষণ পর তোমায় পেলাম। তুমি আমার সাথে সবসময় থাকতে পারো না? যতটুকু সময় থাকো তখন নানা কাজ দেখিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে থাকো! এভাবে আর কতদিন চলবে, মেরি জান! ধরা তো তোমায় দিতেই হবে। ”
তুর নির্লিপ্ত কন্ঠে বলে,
– ” হ্যাঁ! দিতে হবে। সময় এসেছে আপনাকে সবটা জানানোর। এখুনি, এইমুহূর্তে সবটা বলবো আপনাকে। আমি একজন খুনি! যে কথায় কথায় রেগে যায়, মানুষের জীবন নিতে যার হাত কাঁপে না। আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম যাদের জন্য আমার বাবা মারা গিয়েছেন। আহনাফের পরিবার এমনকি আহনাফও মারা গিয়েছে। ”
‘আহনাফ’ নামটি শুনতেই রোদ্দুরের হাত আলগা হয়ে আসে। ও চট করে তুরকে ছেড়ে দিয়ে দাড়ায়। প্রশ্ন করে,

– ” আহনাফের পরিবার মানে? আহনাফ তো নদীতে পরে মারা গিয়েছিল। আর ওর পরিবারের মৃত্যু হয়েছে গাড়ি ব্রেকফেল হওয়ায়, যে গাড়ির তার আহনাফ কেটে ফেলেছিলো খেলার ছলে। ”
তুর ফোঁড়ন কেটে বলে,

– ” না! আহনাফ কিছু করেনি! ও তো সবাইকে বাঁচাতে চেয়েছিলো। গাড়ির ব্রেকের তার তো সেই পাঁচজনের মধ্যে একজন কেটেছিলো। একদিন আবিদ নিজে ফোনে একথা বলেছিলো। আর চারদিন আগে আবিদও মারা গিয়েছে। শুভ্র নামে একজন মেরেছে ওদের। কিন্তু আপনি আহনাফের পরিবার সম্পর্কে কিভাবে জানেন? ”
শুভ্র নাম শুনে রোদ্দুর আরেক দফা বিষ্মিত হলো। লিফটের দরজা খুলতেই তুর বেড়িয়ে যায়। রোদ্দুরও তুরের পিছু পিছু যাচ্ছে। গেটের সামনে একটা কালো গাড়ি দাড়িয়ে আছে। তুর চটজলদি রোদ্দুরকে বলে,
– ” শুভ্র আমাদের জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে। জলদি আসুন আমাদের যেতে হবে। ”

বিষাক্ত অনুরাগ শেষ পর্ব