Infinite Love golper link || Writer: Onima

Infinite Love part 1 +2+3
Writer: Onima

রাত 12.30। দরজা জানালা সব বন্ধ করে খাটের এককোণে গুটিশুটি মেরে বসে আছি। দরজার ওপাশ থেকে বারবার আঘাত করার আওয়াজ আসছে, কিন্তু আমিতো দরজা খুলবো না যাই হয়ে যাক, আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যেনো হরর ফিল্মের সাদা চুল ওয়ালী খুনখুনে বুড়ি কিংবা হারিকেন হাতে এক চোখ কানা বা এক ঠ্যাং খোরা কোনো এক মাঝবয়সী মামার মত কেউ একজন আমাকে সাবধান করে গেছে, খাট থেকে নামলেই সর্বনাশ, থুরি সারে সর্বনাশ। তাই আমিও নামবো না আর দরজাও খুলবোনা decision final।

আমি অনিমা। Actually ব্যাপারটা হলো কাল আমার রেসাল্ট পাবলিস্ট হবে। SSC বা HSC না ওই দুই ভয়াবহ দিন আলহামদুলিল্লাহ পার করে গেছি, বাট এইবার কী হবে I really don’t know.. কারন এইবার আমার এডমিশন টেস্ট এর রেসাল্ট, মেডিকেল এর জন্য কোচিং করেছি যদিও ভার্সিটিতেও এডমিশন টেস্ট দিয়েছি এবং চান্স ও হয়ে গেছে.. বাট আমার লক্ষ্য তো মেডিকেল, আব্বু আম্মুর ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছে যে তাদের একমাত্র মেয়ে ডাক্তার হবে। আর আব্বুর মুখ থেকে এই পেশা সম্পর্কে শুনতে শুনতে এর ওপর অসম্ভব এক ভালোলাগা আর আগ্রহ তৈরী হয়েছে। আর এখন ডাক্তার হওয়াটা আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দারিয়েছে। প্রাইভেট মেডিকেল এ পড়ানোর সামর্থ যে আমার আব্বুর নেই তা কিন্তু না। কিন্তু আমি প্রাইভেটে পরবোনা, আমি ঠিক করে নিয়েছি প্রয়োজনে ডাক্তারি পরবনা কিন্তু প্রাইভেটে পরবোনা। ছোটো বেলা থেকেই এটা আমার বিরাট সমস্যা আত্নসম্মান আর ইচ্ছের সাথে আমি কোনো আপোষ করিনা।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

যেটা একবার ঠিক করব সেটাই করব। কিন্তু এখন মাথার মধ্যে একটাই চিন্তা কাজ করছে চান্স হবেতো? না হলে কী হবে? ডাক্তার হওয়া কি হবে না আমার? দুপুর থেকে এসব চিন্তায় আমি খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে আছি। আর আমার বাড়ির সকলেই সেই দুপুর থেকে দরজায় করা নেড়ে যাচ্ছে। যেহেতু এখন অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে এখন দরজা ধাক্কানোটা বিরতিহীন ভাবে চলছে। সকলেই নানা রকমের অভয় দিয়ে আমাকে দরজা খোলার জন্য বলে যাচ্ছে কিন্তু বিশাল আফসোস যে তাদের এত কষ্টের রেসাল্ট জিরো। কারন আমিতো দরজা খুলবোনা কিছুতেই না।

উফ! ড্যাম! ওদের দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত, কিন্তু ওনাদের মধ্যে ক্লান্তির ক ও নেই। ধাক্কাচ্ছেতো ধাক্কাচ্ছেই। ওরাকি বুঝতে পারছেনা যে আমি এখন দরজা খোলার মুডে নেই? আপাদত আমি টেনশন করতে ব্যাস্ত? এসব ভাবতে ভাবতে আম্মুর গলার আওয়াজ পেলাম
আম্মু : সোনা দরজাটা খোলো, দেখ যা হবে খুব ভালো হবে, কিছু খেয়ে নাও বাবু।
আব্বু: হ্যা মামনি। আর তাছাড়া চান্স না হলেইবা কী? আমি তোকে দেশের বেস্ট প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি করব। তুই চাইলে তোকে এবরোট পাঠাবো। তবুও দরজাটা খোল দুপুর থেকে কিচ্ছু খাসনি, কিছু খেয়ে নে এবার।

আমি: ( আব্বুর কথা শুনে আমিতো অবাকের শেষ স্টেপে। Like Really? এই আব্বুই এডমিশন টেস্ট এর আগে পর্যন্ত বলেছে যে পাবলিকে চান্স না হলে নাকি আমাকে আর পড়াবেই না, প্রাইভেটে উনি আমাকে পড়াতে পারবে না, প্রাইভেটে পরার যোগ্যতা না থাকলে পড়তে হবেনা। ব্লা ব্লা ব্লা। আর এখন উনিই এসব বলছে? যদিও এটা নতুন না। প্রত্যেক পরীক্ষার আগেই আব্বু এরকম হুমকি ধমকি দেয়। পরে রেসাল্টের সময় সবচেয়ে বেশি শান্তনা উনিই দেন। কিন্তু বরাবরের মত এবারেও ওনার সান্তনার রেসাল্ট জিরো।) আব্বু আপনি আবার এসব বলছেন? You know আমি প্রাইভেটে পরবনা। আর এখন আমি দরজা খুলতে পারবনা। কারন আমি টেনশন করতে ব্যাস্ত।
বড় ফুপ্পি: Baby please দরজাটা খোলো। it’s high time মা। বারো ঘন্টার বেশি হয়ে গেছে তুমি না খেয়ে আছো। এবারতো অসুস্হ হয়ে পরবে। তোমার ফুপা তোমার জন্যে তোমার favorite restaurant থেকে বিরিয়ানি এনেছে। খেয়ে নাও সোনা।

আমি:( বিরিয়ানির কথা শুনেতো পেটে নেচে বেরানো ডাইনোসর আরো জোরে নাচছে। বাট আপাদত সেই Dance টাকে টেনশন দিয়ে পজ করে দিলাম) সুলতানাপ্পি(বড় ফুপ্পি) আমার গলা দিয়ে এখন পানিও নামবে না তাই please তোমরা যাও এখান থেকে।
আব্বু: সুলতানা ও কতদূর এসছে? এখন একমাত্র ওই পারবে মেয়েটাকে বার করতে।
সুলতানাপ্পি: এখনি এসে পড়বে দাদা। আমি কিছুক্ষন আগে ফোন করেছিলাম বলল এসে পরেছে কাছাকাছি।
এরপর কারো গলার আওয়াজ পেলাম এই ডাক শুনতে দেরি আমার ছূট্টে গিয়ে দরজা খুলতে দেরি নেই কারন এই মানুষটার ডাক ইগনোর করার ক্ষমতা আমার নেই। দরজাটা খুলেই মানুষটিকে জরিয়ে ধরলাম সেও ব্যাগ ফেলে আমার ধরলো।
আমি: দেখোনা ওরা আমাকে বারবার খাওয়ার জন্য জোর করছে। ওরাকি বুঝতে পারছেনা আমি কী পরিমান টেনশনে আছি? যদি চান্স না হয় তাহলে কী করব আমি? ওদের যেতে বলো Please আপি।

আপি: Cool sweetheart don’t cry. Look আমি এসে গেছি।
( ইনি হলেন আমার মামাতো বোন হিয়া। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ইকোনমিকস ডিপার্টমেন্টে আছে। ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। ভার্সিটির সুবিধার জন্য আমাদের বাড়িতেই থাকে। আমার বড় বন হবার সাথে সাথে আমার বেষ্ট ফ্রেন্ডও। আমার সব আবদার পূরন করে আর আমিও ওর সব কথাই শুনি। আমরা আমাদের সব কথা একে অন্যের সাথে শেয়ার করি।)
আম্মু: দেখ হিয়া কী পাগলামো শুরু করেছে।
আপি: ময়নাপ্পি(আমার আম্মু) চিন্তা করোনা আমি এসে গেছিতো। অনেক রাত হয়েছে যাও সবাই গিয়ে এবার শুয়ে পর। আমি দেখছি। (আম্মুয হাত থেকে খাবার প্লেট নিয়ে)

তারপরে আপির হাতে খাবার দিয়ে সবাই নিশ্চিন্তে ঘুমোতে চলে গেলো কারণ এই মেয়েটার হাতে আমাকে দিয়ে পুরো নিশ্চিন্তে থাকা যায়, শুধু আমাকেই না আপির কাছে যেকোনো কোনো দায়িত্ব দিয়েই নিশ্চিন্তে থাকা যায় কারন ও খুবই Responsible একটা মেয়ে। কিন্তু এই দিক দিয়ে আমি এক্কেবারেই জিরো, কারন আমি নিজের দ্বায়িত্বটাই ঠিকভাবে নিতে পারিনা আর অন্যকিছুর। এরপর আপি আমাকে নিয়ে খাটে এসে বসল।
আপি: তুমিকি কখনো বড় হবেনা? শুনলাম সেইযে সকালে নুডলস খেয়েছো আর কিছুই খাও নি? কটা বাজে হুম? এরকম বাচ্চামো একদম করবেনা। এগুলো আমি টলারেট করবোনা।
আমি: আপি আমি এমনিতেই টেনশনে আছি আর তুমি বকছ? যাও কাট্টি।
আপি: কাম অন! এত্ত টেনশনের কী আছে বলতো? তুই নিশ্চিত চান্স পাবি। ( আপি আমাকে কখনো তুই কখনো তুমি বলে depends on her mood)

আমি: হবেনা দেখ।
আপি: তুইতো তোর SSC আর HSC এর রেসাল্ট এর দিনো এসব বলেছিলি, A+ ও নাকি আসবেনা বাট শেষমেশ Golden A+ পেয়ে গেলি… শুধু শুধুই টেনশন করছিস আমার তো মনে হয় তুই ঢাকা মেডিকেল এই চান্স পেয়ে যাবি।
আপি: রাখোতো তোমার ঢাকা মেডিকেল। আর তুমিও কম কি হুম? মনে আছে ঢাকা ইউনিভার্সিটির রেসাল্টের এর দিন কী টেনশন করছিলে? বলছিলে চান্স হবেনা শেষেতো 47 তম হলে তারবেলা?
আপি: হয়েছে এবার ওফ যা। এবার খেয়ে নে আমি খাইয়ে দিচ্ছি। আর একদম টেনশন করবিনা যা হবে ভালো হবে। ( খাইয়ে দিতে দিতে)

আমি: আচ্ছা আপি তোমারতো কাল আসার কথা ছিলো college tour থেকে আজ চলে এলে যে? (খেতে খেতে)
আপি: কেন আবার তোমার জন্যে।
আমি: মানে?
আপি: মানে তুমি দরজা লাগানোর পরেই ময়নাপ্পি আমাকে ফোন করে জানিয়েছে। তারপর সাথে সাথেই আমি বেরিয়ে এসেছি। Do you have any idea কতটা টেনশনে ছিলাম? এরকম কেউ করে?
আমি: (এমনিতেই রেগে আছে মূখ খুললেই বিপদ তাই চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছি)
খাওয়া শেষে শুয়ে পরলাম, আপি আজকে আমার রুমেই শুয়েছে বলাতো যায়না কখন আবার কাদতে বসি। আমিও আপিকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলাম।

পরেরদিন সকালে খুব দেরি করেই ঘুমটা ভাঙলো পাক্কা এগারোটা বাজে তাও আপির ডাকে। চোখ খুলে দেখি আপি কফি হাতে দাড়িয়ে আছে। মুচকি এক হাসি দিলাম আপিকে দেখে।
আপি: Good morning sweetheart.
আমি: Good morning. তা sweetheart আজ এতো দেরিতে ডাকলে যে? রোজ তো সক্কাল সক্কাল ডেকে দাও। (কফির মগটা আপির হাত থেকে নিয়ে)
আপি: আসলে তুই এমনিতেই খুব টেনশনে আছিস। আগে ডাকলে বেশি টেনশন বেশি করতিস তাই দেরিতে ডাকলাম। ( কফিতে চুমুক দিতে দিতে)
আমি: বাহ! লজিকটা ভালো বাট রেসাল্ট তো দুপুরের পরে আসবে রাইট?
আপি: হুম দুপুর দুটোর পর। But don’t worry আমি দেখে নেবো।
আমি: আপিগো টেনশন হচ্ছেতো খুব..
আপি: আবার?

আমি: Sorry
আপি: Come on Ani. তুই একজন ব্রাইট স্টুডেন্ট। SSC HSC দুটতেই Golden GPA5, SSC তে জেলায় টপ করেছিস HSC তে বোর্ড এ fifth পজিশনে ছিলি। কোচিং এ ও always top 3 এর মধ্যে ছিলি, তবুও তুই টেনশন করছিস? Like seriously?
আমি: হুম
আপি: নট হুম। চলো খেতে যাবে। বাড়ির সবার Breakfast done শুধু তুমি আর আমি বাকি। তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছি।
আমি: এ আর নতুন কী? Let’s go…
( আপি আর আমি বাড়িতে থাকলে একসাথে খাই। আপি এবার ওনার্স ফাইনাল ইয়ার মানে চার বছর যাবত আপি আমাদের বাসায় আছে আর এই চার বছরে এর হেরফের হয়নি। আমরা খাবার সময় একে অন্যের জন্য ওয়েট করি। যদিও আমাকে খুব একটা ওয়েট করতে হয়না আপিই বেশি করে)

আমি আর আপি ডাইনিং এ গিয়ে বসলাম। আম্মু খাবার আনলো।
আম্মু: এখন আর Breakfast কেন করবে তোমরা? একটুপরতো আবার lunch করবেই। ( serve করতে করতে)
আমি: উফফ, আম্মু পেটে গেলেই হলো। দুই ঘন্টা আগে খেলে আমার পেটে যেতো এখন ঠিক আমার পেটেই যাচ্ছে। Only খাওয়া is real. ( খেতে খেতে)
আম্মু: এক চর মারবো আমার সাথে ফাজলামি করছো? একটা মারকুটে ছেলে দেখে তোমার বিয়ে দিয়ে দেবো, উনিশ থেকে বিশ হলেই যে মারবে, তখন বুঝবে। তখন মনে হবে Only মাইর is real.
আপি: হা হা হা

আমি: আপি… আম্মু আমাকে একটা অত্যাচরি জামাই গিফট করবে বলছে আর তুমি হাসছ?
(এতক্ষন আমাদের কথা শুনে আপি শুধু মুচকি মুচকি হাসছিলো কারন এটা নতুন না আম্মু আর আমি সবসময়ই এরকম খুনসুটিময় ঝগড়া করি। আর সবাই নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।আম্মুর নাম গোলশানারা ময়না। আম্মু একজন শিক্ষিতা গৃহিনী আগে একটা এনজিয়োতে কাজ করলেও এখন করেনা। বাড়ির সকলের খেয়াল রাখে আর আমরা সবাই ওনাকে খুব ভালোবাসি)
হাসি থামিয়ে আপি বলল।
আপি: ময়নাপ্পি, তোমার মেয়েকে যে বিয়ে করবে তাকে আগে Child care এর একটা কোর্স করতে হবে। নইলে তোমার মেয়েকে সামলাতে পারবে না।

আমি কিছুই বললাম না কারন বলার মত কিছু নেই তাই গাল ফুলিয়ে রেখে খাওয়াতে concentrate করলাম।
এরপরেই আব্বু এসে চেয়ার টেনে বসল।
(আজ আমার রেসাল্ট তাই আব্বু আর অফিস যায়নি। আব্বুর পুরো নাম মো: কামরুল হাসান, পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আব্বু এমনিতে খুব ফ্রি আবার ভীষন স্ট্রিকট, যা আমার ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য।)
আম্মু আব্বুর জন্য চা নিয়ে এলো। এটা আব্বুর অভ্যাস। সারাদিনেযে কত কাপ খায় নিজেও জানেনা। আব্বুকে চা বানিয়ে দিতে দিতে আম্মু এখন বিরক্ত।
আব্বু: Good morning মামনি। ঘুম কেমন হল?
আমি: Good morning আব্বু। খুব ভালো।
আব্বু: টেনশন কমেছে?

আমি: রেসাল্ট না পাওয়ার আগে কমবেনা আব্বু। আপনি জানেন সেটা।
আপি: ফুপা আপনার মেয়েকে যে কলকে কীভাবে সামলেছি জাস্ট আমিই জানি।
আব্বু: হুম একমাত্র তুই পারিস ওকে সামলাতে।
এরপরেই বেট হাতে ঘোরাতে ঘোরাতে এন্ট্রি নিলো আমার একমাত্র ছোট ভাই কাব্য, যে কীনা ভুল করে বাদর হতে গিয়ে মানুষ হয়ে গেছে। সারাদিন আমার পেছনে লাগাটাই ওর কাজ। এমন মনে হয় ও যেনো এই কাজের বেতনভূক্ত নিষ্ঠাবান কর্মচারী। ক্লাস সেভেন এ পরে কিন্তু এমন মনে হয় জেনো ভার্সিটির রেগুলার পল্টিবাজ। Just irritating… এসেই শুরু করল
কাব্য: আরেব্বাস মিস নটাঙ্কি নিচে? চোখের পানির stock over নাকি? (বেট টা চেয়ারে লাগিয়ে রেখে)

আমি: ওয়ে লেজ ছাড়া বাদর What’s your problem হ্যা? আমি যেখানে খুশি সেখানে যাবো, যা খুশি করব তোর কী হ্যা?
কাব্য: নানা আমার আবার কী? কিন্তু শত হলেও এই অপ্রিও সত্যিটাকে তো আর অস্বীকার করতে পারিনাযে তুই আমার বড় বোন তাই। By the way. আজ তো তোর রেসাল্ট মনে তো হয়না তোকে কোনো মেডিকেলে জায়গা দেবে
আমি: না দিলে তোর বাপে.. ইয়ে I mean তোর কী হ্যা? oil your own machine.
আপি: কাব্য তুই ওর পেছনে লাগছিস কেনো বলত? মার খাবি আমার হাতে।
কাব্য: পেছনে কোথায় লাগছি? আমিতো দেশের উন্নয়নের কথা ভাবছি। এই পাটের কাঠি যদি ডাক্তার হয় তবে দেশের কী হাল হব্বে বলোতো?

আব্বু: কাব্য এবার তুই সত্যিই মার খাবি আমার হাতে। আমার মামনিকে জালাবিনা।
(ব্যাস কাব্য চুপ কারন কাব্য আর আমার মধ্যে ঝগড়া হলে আব্বু কাব্যকেই থামিয়ে দেয় দোষ যারি থাক)
এরপর ড্রয়িং রুমে সবাই সোফায় বসে আছি রেসাল্ট এর টাইম ঘনিয়ে আসছে তাই আমি আবার ওপরে গিয়ে দরজা বন্ধ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু আপির জন্য পারিনি অগত্যা নিচে বসে টেনশন করছি। ওপর থেকে বড় ফুপা আর সুলতানাপ্পি নেমে আমাদের জয়েন করল।
ফুপা: কী বেপার অনি এখনো টেনশন?
সুলতানাপ্পি: ওকে এসব বলোনা লাভ নেই। রেসাল্ট এর আগ পর্যন্ত ওর কাপাকাপি কমবেনা।
আমি: ফুপা ওহি আসেনি স্কুল থেকে?
ফুপা: না এইতো এখন আমি আনতে যাচ্ছি। বাই।
আমি: বাই
ফপা চলে গল।

আমি: সুলতানাপ্পি আবার ভাইউ (সুলতানাপ্পির ছোট ছেলে) টা কোথায়?
সুলতানাপ্পি: ও ঘুমাচ্ছে।
আমি: ওহ আজকে ওদের দুজনে একজনের সাথেও দেখা হলোনা।
সুলতানাপ্পি: একটুপরেই তোমার ভাই উঠে যাবে আর ওহিও চলে আসবে।
কাব্য : ওহ হো আব্বু তোমাকে একটা নিউস দিতে ভলে গেছি ইউ কে থেকে মানিক আঙ্কেলের ছেলে আসছে। কালকে বাংলাদেশে ল্যান্ড করবে।
আব্বু: তাই নাকি? আমাকেতো জানালোনা এখনো?
আম্মু: হয়তো ব্যস্ত আছে। দেখ এই ফোন এলো বলে।
কাব্য: আমিতো Super Excited..
আপি: তোর এত excited হবার কী হল?

আমি: ওর তো সব কিছুতেই over excitement. কথায় আছে পাগলের খুশি মনে মনে।
কাব্য : তুই চুপ কর তো কী জানিস তুই? জানিস উনি কত্ত ভালো ক্রিকেট খেলে? আমিতো ঠিক করেই নিয়েছি আমি ওনার কাছেই ক্রিকেট শিখবো। আর যা সুন্দর দেখতে না এক্কেবারে বলিউড স্টার। I’m his die heart fan…
আপি: ক্রিকেটের কথা জানিনা। তবে দেখতে যে খুব সুন্দর এটা শুনেছি, স্পেশেয়ালি হাসিটা নাকি মারাত্নক । আর খুব ব্রাইট স্টুডেন্ট নাকি? অনেক প্রাইজ ট্রাইজ ও নাকি পায়?

আমি: হাহ! থামোতো ধপবাজি! এমনও ছেলে হয়? এক্কেবারে রূপে গুনে অলরাউন্ডার? এটাকি গল্প নাকি
কাব্য: তোর মতো এলিয়েন যেই দুনিয়ায় আছে সেখানে সবি সম্ভব।
আপি: ধুর। যদি সত্যিই এতো ভালো ক্রিকেট খেলতো তো এতোদিনে কোনো ইন্টারনেশনাল টিমের মেমবার। আর যদি এতই সুন্দর হতো তো নিরঘাত বলিউড করে ফেলতো। আর এত ব্রিলিয়ান্ট হলে নবেলটাও পেয়ে যোতো।
আপি: তুই আসলেই একটা যাই হোক আমি একটু কিচেনে গেলাম
কাব্য: শোন ভাইয়া চাইলে না এই সবি হতে পারতো আর পারবে। তুই এসব বুঝবিনা। So leave..
বলে উনি চলে গেল যাগ্গে আমার কী?

But it this ture? সত্যিই একটা ছেলের মধ্যে এতগুলো গুন থাকতে পারে? দেখতেও কী এতটাই সুন্দর? আপি বলল হাসিটা নাকি মারাত্নক?সত্যিই তাই?আচ্ছা হাইট কেমন? ধূর যা ইচ্ছে হোক আমার কী? এসব ভাবতে ভাবতে দেয়াল ঘরির দিকে তাকাতেই চোখ চরাকগাছ। Its 2 pm মানে রেসাল্ট, এবার আমি নিশ্চিত হার্ট ফেইল করব। আপি.. কোথায় তুমি?
But is this ture? সত্যিই একটা ছেলের মধ্যে এতগুলো গুন থাকতে পারে? দেখতেও কী এতটাই সুন্দর? আপি বলল হাসিটা নাকি মারাত্নক?সত্যিই তাই?আচ্ছা হাইট কেমন? ধূর যা ইচ্ছে হোক আমার কী? এসব ভাবতে ভাবতে দেয়াল ঘরির দিকে তাকাতেই চোখ চরাকগাছ। Its 2 pm মানে রেসাল্ট, এবার আমি নিশ্চিত হার্ট ফেইল করব। আপি.. কোথায় তুমি?
আপি: কী সমস্যা? চিৎকার করছ কেন?

আমি: আপি লুক দুটোর বেশি বেজে গেছে। (অসহায় লুক নিয়ে দাত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে)।
আপি: ওহ তাইতো এতোক্ষনে হয়তো রেসাল্ট পাবলিস্ট হয়ে গেছে।
তখনি আবার আমার মহান ভাইয়ের আগমন। ড্যাম্ এই ছেলে ঠিক তখনি এনট্রি নেয় যখন আমায় জালানোটা সহজ।
কাব্য: আরে আপি কষ্ট করে কেন রেসাল্ট দেখবে বলোতো? ও এমনিতেও চান্স পাবে (একটু থেমে) না।
মেজাজটা চরম খারাপ হলো ইচ্ছে করছে ওকে ধরে হারপিক দিয়ে ধুয়ে দেই কিন্তু আপাদত এতই টেনশন হচ্ছে যে ঝগড়া বা তর্ক করার কোনো এনর্জিও পাচ্ছিনা। তাই নরম গলাম বললাম।
আমি: ভাই এভাবে কেন বলছিস? আমি না তোর বোন? যদি তোর বন্ধুরা শোনে তোর বোন পরীক্ষা দিয়ে চান্স পায়নি। তোর সম্মানটা কোথায় যাবে বুঝতে পারছিস? It will be very embracing…
কাব্য: My dearest sister.. for your kind information আমার কোনো বন্ধু এটা জানেইনা যে আমার একটা বড় বোন আছে।

আপি: What? কিন্তু কেন?(ভ্রু কুচকে)
কাব্য: এরকম এলিয়েন আমার বোন সেটা আমি আমার বন্ধুদের বলে বেড়াবো? Are you crazy?
আমি: আপি…. দেখ কীভাবে অপমান করছে, কে বলবে যে আমি ওর বড় বোন?
আপি: কাব্য চুপ করবি তুই? অনি যাও গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে এসো আমি হাতের কাজটা সেরে এসে রেসাল্ট চেক করছি।
আমি: আপি আমার পা এখন চলবেনা খুব টেনশন হচ্ছে কাব্যকে বলোনা প্লিস।
আপি: হ্যা কাব্য যাতো ভাই ল্যাপটপ টা নিয়ে আয়।

কাব্য: হুহ দেবেতো একটা রেসাল্ট এতো কাপাকাপির কী আছে বুঝিনা
মুখ বাকিয়ে ওপরে আপুর রুমে চলে গেল ল্যাপটপ আনতে আর আপিও কাজে চলে গেলো আর আমি বসে বসে ভাবছি কী হবে। মনে মনে একটা কথাই বলছি আল্লাহ চান্সটা যাতে হয়ে যায়। হঠৎ আপুমনি বলে ডাকতে ডাকতে ওহি চলে এলো আমার কাছে। ওহি ক্লাস ফোর এ পরে। অলওয়েজ ফার্স্ট হয় আমিও ওকে তুলে পাশে বসিয়ে বললাম
আমি:কি ব্যাপার আপুমনি আজকে এত্ত খুশি?
ওহি: কারন আজকে নাকি তোমার রেসাল্ট দেবে ? মিষ্টি খাবোতো।
আমি: ( হায়রে চান্স পেলে তবেইনা মিষ্টি খাবি?) ওহ এই ব্যাপার? তা শুধুইকি মিষ্টি নাকি আইসক্রীম ও চলবে?
ওহি: দুটোই।

আমি: ওল্লে। Done Baby ( বলেই ওকে জরিয়ে ধরলাম আর ও আমাকে)
আমি: আচ্ছা তোমার আব্বু কোথায়?
ফুপা: এইতো আমি। আসলে আমি কার পার্কিং করছিলাম। তা রেসাল্ট এলো?
আমি: নাহ গো কাব্য গেছে ল্যাপটপ আনতে। Allah knows কী হবে।
ফুপা: Don’t worry যা হবে ভালো হবে।

কাব্য ল্যাপটপ এনে টি টেবিলে রেখে পাশে ব্যাট হাতে প্রাকটিস করছে। আমি গালে হাত দিয়ে বসে আছি। ফুপা ওপরে চেন্জ পর্যন্ত করতে যায়নি। সুলতানাপ্পি অন্তকে নিয়ে বসে আছে। অন্ত সুলতানাপ্পির ছেলে আমার ভাইউ। বয়স দুই বছর। আদো আদো কথা বলে। অন্য সময় হলে। অন্ত অহি আর আমি দুষ্টুমি আর হই হই করে বাড়ি উঠিয়ে ফেলতাম। ওহির সাথে মজা করা সেটা শুনে অন্তর খিলখিল করে হাসা। ওহি আর আমার সারাবাড়ি দৌরে মারামারি খুনশুটি লেগেই থাকে। কিন্ত এখন সেসব আপাদত বন্ধ কারন আমার রেসাল্ট এর টেনশন ছাড়া মাথায় এখন কিছুই আসছেনা। এরমধ্যে আব্বু আম্মু এসে বসল। এখন খালি আপির আসার অপেক্ষা। বলতে বলতে আপিও এসে হাজির আপি এসে সোফায় বসল টি টেবিল থেকে ল্যাপটপটা কোলে নিয়ে ওয়াইফাই্ ওন করে ব্রাউজারে ঢুকলো। কয়েক মিনিটের মত ঘাটাঘাটি করল। একমনে ল্যাপটপ দেখছে আপি কারো দিকে তাকাচ্ছেনা। নিরবতা ভেঙ্গে আমিই বললাম

আমি: আপি চান্স হয়নি?
আপি আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার আম্মুর দিকে তাকালো।
আম্মু: হিয়া বলছনা কেন?
আব্বু: কিরে বল?
আপি সুলতানাপ্পি কে উদ্দেশ্য করে বলল ফুপি তোমার কোন ফ্রেন্ড এর Roll no আছেনা তোমার কাছে? দাওতো একটু দেখি কি খবর ওদের, আর আমার কাছেও কয়েক জনের আছে দেখছি ওদের হলো কি না।
আমার রাগ এখন চরমে পৌছে গেছে, কী হচ্ছে কী? আমার রেসাল্ট না শুনিয়ে উনি এখন গুষ্টিশুদ্ধো সবারটা দেখছে।আরে চান্স না হলে না হয়েছে বলবেতো নাকি?
আমি: আপু আমার কী চান্স হয়নি? বলছোনা কেন? ( almost কেদে দিয়েছি)
আপি উঠে দাড়াল আমার সামনে এসে হঠাৎ আমাকে জরিয়ে ধরল। আর বলল।
আপি: Congratulation sweetheart now you are also a member of Dhaka Medical College.

আমিতো আমার কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিনা। তাই আপিকে সোজা করে মুখের দিকে তাকালাম। নাহ! আপিকে দেখেতো মনে হচ্ছেনা মজা করছে। তাই আমি আবার বললাম।
আমি: সত্যি?
আপি: Yes baby…
আমিতো খুশিতে কেদে দিয়েছি যতই হোক সপ্ন বলে কথা। তার ওপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ? ভাবতেই পারছিনা।
আব্বু: দেখলে আমি জানতাম আমার মামনি পারবে।
এরপর আব্বু কাকাই কে ফোন করে জানালো। আর আম্মুতো সব্বাইকে জানিয়েছে।
সুলতানাপ্পি আমাকে জরিয়ে ধরে congress করলো আর ফুপাও অভিনন্দন জানালো। ওহিতো দারুন খুশি, খুশিতে সারা বাড়ি লাফাচ্ছে।

আমি কাব্যকে পিনচ করে বললাম কে জেনো বলেছিল আমায় নাকি কোথাও জায়জা দেবেনা? শেষমেষ তো DMC তেই হলো।
কাব্য: এটা দেশের দুর্ভাগ্য আমি আর কী বলি বলব?
আমি: হুহ। এখন আর কিছু বলার মুখ নেই তাই এগুলোইতো বলবি।
এরমধ্যেই চাচু এসে হাজির। চাচুর নাম উজ্জ্বল। বয়স ত্রিশ,এখনো বিয়ে করেনি। পাত্রি দেখা চলছে।এমনিতে নিজেকে সিঙ্গেল বলে কিন্তু কতটা সত্যি আল্লাহ আর চাচুই ভালো জানে।
হঠাৎ কলিং বেল এর আওয়াজ পেলাম। চাচুই গেল খুলতে গিয়ে দেখলো মিষ্টি নিয়ে এসছে একজন।
চাচ্চু: দাদা আপনি মিষ্টি ওরডার করেছেন?

আব্বু: নাহ তো। ওমা এত মিষ্টি কে ওরডার করেছে?
সবাই ওবাক আমরা কারন রেসাল্ট একটু আগে দিল। রেসাল্টের পরপর ওরডার দিলেও এতো তাড়াতাড়ি আসার কথা না। that means অনেক আগেই ওরডার করেছে।
আব্বু: কী হলো বলুন কে ওরডার করেছে?
লোকটি: তেরো চৌদ্দ বছরের একটি ছেলে। বিল দিয়ে দিছে আমি যাই।
লোকটি চাচুর হাতে মিষ্টিগুলো দিয়ে চলে গেল।
আমাদের সবার নজর এখন কাব্যর দিকে কারন একমাত্র ও ছাড়া এই বাড়িতে এই বয়সের কেউ নেই। সবাইকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে কাব্য বলল

কাব্য: What? এভাবে তাকানোর কী আছে? হ্যা আমিই করেছি ওরডার আসলে আমি জানতাম এদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, ও মেডিকেলে চান্স পাবেই।তাই সকালেই ওরডার করে এসেছি।কী আর করার। দুর্ভাগ্য বরই দুর্ভাগ্য।
আমরা কেউ কাব্যের কথা শুনে ওবাক হলামনা। কারন আমরা সবাই জানি ও সারাক্ষণ আমার পেছনে লাগলেও ও আমাকে কতটা ভালোবাসে। এতটাই ভালোবাসে যে ও সিওর ছিলো আমি চান্স পাবোই, তাই সেই সকালেই মিষ্টি ওরডার করে রেখেছে! ভাবা যায়? যেখানে আমার নিজেরি কনফিডেন্স ছিলোনা।
আব্বু: টাকা কোথায় পেলি? এখানেতো বেশ অনেক টাকার মিষ্টি। আমরা কেউতো তোকে টাকা দেই নি?
কাব্য: জমানো ছিলো আব্বু, ওইগুলো দিয়েই করেছি।

আমি কিছু না বলে ওকে গিয়ে জরিয়ে ধরলাম ওও ধরল। কিছুক্ষন দুজনেই চুপ করে আছি। নিরবতা ভেঙ্গে কাব্য বলল
কাব্য: ওয়ে ড্রামা কুইন এবার ওফ যা। এত্তো ইমোশনাল হবার কিছু নেই এসব না করলে বন্ধুদের কাছে প্রেসটিজ থাকতোনা, ওরা কীভাবে যেনো জেনে গেছে আমার একটা এলিয়েন আপু আছে সে আবার মেডিকেলেও চান্স পেয়েছে।তাই ওদের কাছে ইমেজ বাচাতে এসব করা।তাই করেছি। নইলে তোর মত এলিয়েনের জন্য এসব করতে আমার বয়েই গেছে।
সবাই হেসে ফেলল ওর কথা শুনে সাথে আমিও।
এরপর সবাই মিলে এক সাথে লান্চ করে নিলাম মহা আনন্দে। এর মধ্যে সকল আত্মীয়রাই ফোন করে খবর নিলো। আপির সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে রুমে গিয়েই ইসরাতকে (আমার বেস্টি) ফোন করলাম।
ইসরাত: কীরে ফইন্নি চান্স পেয়ে গেলিতো? শুধুই নাটক করছস। By the way ট্রিট কবে দিবি?
আমি: এহ আসছে? আমরা দুজনেই একি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি, আমি একা ট্রিট কেন দেব?
ইসরাত: ওকে বাইরে ঘুম পাচ্ছে রাতে ম্যাসেন্জার এ আলোচনা করব।

আমি: ওকে বেবি বাই।
ইসরাত: বাই বেবি।
ইসরাত আমার বান্ধবী খুব কাছের বান্ধবী। ওর সাথে ইন্টারে দেখা। তারপর খোব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এরপর ঘুমিয়ে পরলাম।
ঘুম থেকে উঠে দেখলাম সন্ধ্যে হয়ে গেছে। আমি ফ্রেস হয়ে নিচে গেলাম গিয়ে দেখি আব্বু আম্মু আপি ওহি আর সুলতানাপ্পি বসে আছে।
আমি: আরেহ! সব্বাই এখানে আড্ডা দিচ্ছো আমাকে ডাকলেনা যে?
সুলতানাপ্পি: ওইতো আমাদের হবু ডাক্তার সাহেবা চলে এসছে।
আপি: আসলে তুই ঘুমচ্ছিলি তাই ডিসটার্ব করিনি।
আব্বু: মামনি আয় বসতো।
আমি গিয়ে আব্বুর পাশে বসলাম।

আব্বু: তুই আজ আমার সপ্ন পূরন করেছিস বল কী চাই তোর যা চাইবি তাই দেব।
আমি: সপ্ন পূরন কোথায় হলো আব্বু? সবেতো মেডিকেলে চান্স হলো এরপর ডাক্তারি পাশ করতে হবে, ভালো একজন ডাক্তার হতে হবে তবেই তো আপনার সপ্ন পূরন হবে। দিল্লি এখনো বহুত দূর।
আব্বু: সবই হয়ে যাবে দেখে নিস।
আম্মু: সেই। এখন বলো কী লাগবে তোমার?
তোমার সুইটসি হাতের কিউটসি পাকোড়া খাইয়ে দেও তাহলেই হবে।
আম্মু: পাগলি। বসো বানিয়ে আনছি।
আম্মু কিচেনে চলে গেল।
আমি: আচ্ছা চাচ্চু, ফুপা,ওহি ওরা কই? দেখছিনাতো?
সুলতানাপ্পি: একটু বাইরে গেছে এখনি এসে যাবে। আইসক্রীম খাবে বলে জেদ করছিল ওহি তাই ওদের নিয়ে আইসক্রীম আনতে গেছে।

আমি: অন্ত? ওও গেছে?
সুলতানাপ্পি: হুম ওও বায়না করছিলো তাই গেছে।
আমি: আর কাব্য? সে কই?
কাব্য: কেউ আমার খোজ করছিলো বুঝি?
আমি: শয়তান কা নাম লিয়া তো শয়তান হাজির।
আপি: অনি এবার কিন্তু তুমি ওর পেছনে লাগছো।
কাব্য: বাদ দাও আপু রাস্তাঘাটে যেতে আসতে কত পাগল কত কথা বলে সেসব শুনতে গেলেতো আমি শেষ।
আমি: Same to you..
আব্বু: খুবতো ডায়লগ মারছিস, আপুর কিন্তু মেডিকেলে চান্স হয়ে গেছে আপনার পড়ার কী খবর?
কাব্য: as usual আব্বু।

আব্বু: তাহলেই হবে ( আব্বুর এই কথা বলার কারন ক্লাসে ও সবসময় টপ থ্রি এর মধ্যেই থাকে)
এরমধ্যেই চাচু আর ফুপা ওহি অন্তকে নিয়ে চলে এলো। ওহি ছুটে এসে আমার আর আপির মাঝে বসে আইসক্রীম খেতে শুরু করল।
আর অন্ত আমাকে দেখেই হাত বারিয়ে দিল আমিও ওকে কোলে তুলে নিলাম। ফুপা আর চাচু সোফায় বসল।এরপর ওহিকে বললাম
আমি: বেবি আমাকে আইসক্রীম দেবেনা? একাই খাবে?
ওহি: আব্বু আর মামা তোমাদের জন্য এত্তগুলা এনেছে। ওখান থেকেই খাও।
আমি: কিন্তু বেবি আমারতো তোমার কাছ থেকেই খেতে ইচ্ছে করছে?
ওহি: জানো আমিনা তোমাকে দিতামি দিতাম কিন্তু আনার সময় এটাতে পচা পরে গেছে। আর পচাটা খাওয়াতো ভালোনা। তাই তোমার খাওয়া লাগবেনা।

সবাই মুচকি হাসছে। আপিতো জোরেই হেসে দিলো।
আমি: ওহহ। বিরাট সমস্যা। ওকে বেবি তুমিই খাও আমি খাচ্ছিনা। হঠাৎ অন্ত হেসে উঠল।
আমি: কী বেপার ভাইউ তুমি হাসছো কেন কী বুঝলে হ্যা? (ভ্রু নাচিয়ে)
অন্ত: অা..পি.. কি..ল..ম(আধো গলায়)
আমি: ও তুমি খাবে?
মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বলল। আর আমি একটা নিয়ে খুলে খানিকটা খাইয়ে দিলাম বাকিটা নিজে খেলাম।
এরমধ্যেই আম্মু সবার জন্য পাকোরা আর চা নিয়ে এলো। সবাই খাচ্ছি মজা করছি আর আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ আব্বুর ফোন বেজে উঠল।
আম্মু : কে ফোন দিল এই সময়?
আব্বু: মানিক ফোন করেছে।
আম্মু: বলেছিলামনা ফোন এল বলে? দেখ নিশ্চই ছেলেটার দেশে আসার কথাই বলবে। লাউডে দাও ফোন শুনি কী বলে।
আব্বু ফোন লাউডে দিয়ে রিসিভ করলো।
আব্বু: হ্যা মানিক কী খবর বল?

আঙ্কেল: ভালোই। বাড়িতে সবাই কেমন আছে?
আব্বু: হ্যা ভালো। ওদিকে সবাই ভালোতো?
আঙ্কেল: ভালো। আমার অনিমা মামনি নাকি মেডিকেলে চান্স পেল?
আব্বু: হ্যা ভাবিকে তো সাথে সাথেই জানিয়েছি ফোনে তুই ছিলি না।
আঙ্কেল: হ্যা ব্যাস্ত ছিলাম একটু। তা আমার ছেলেটা দেশে ফিরছে শুনেছিস?
আব্বু: হ্যা কাব্য বললতো। তা বাবু সাহেব ফিরছেন তবে?
আব্বু: হ্যা তিন বছর আগে এসছিলো একবার। তোদের বাসায় গিয়েছিল তোর সাথে দেখা করতে কিন্তু ভেতরে না ডুকেই চলে এলো আর পরদিনি ইউ কে ব্যাক করল।

আব্বু: হ্যা বলেছিলি তুই কিন্তু বাড়ির গেট অবধি এসে কিচ্ছু না জানিয়ে ফিরে কেনো গেলো বুঝতে পারছিনা।
আঙ্কেল: ওর মনে কখন কী চলে ও আর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা। এবারেও ও এলে ওকে নিয়ে আসব তোর বাসায়।
আব্বু: হ্যা তাতো অবশ্যই।
আঙ্কেল: অনিমিকে আমার হয়ে কনগ্রাচুলেট করে দিস একটু ব্যস্ত আছি। রাখি।
আব্বু: হ্যা অবশ্যই। আর রাখ।
আব্বু ফোন রেখে দিল। আর আমি ভাবছি বাড়ির গেটের কাছে এসেও ফিরে গেছিলো কিচ্ছু না জানিয়ে? strange very strange.

আম্মু: কী বলল নিয়ে আসবেতো ছেলেটাকে? সেই ছোট বেলায় দেখেছি কী কিউট ছিলো, এখন দেখতে নাকি খুব সুন্দর হয়েছে?
ফুপা: আচ্ছা ও ইউ কে তে কী পড়ছিলো এতদিন?
চাচু: ইন্জিনিয়ারিং। সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার।
বাবাহ ওই ছেলে ইন্জিনিয়ার? তারমানে সত্যিই ব্রিলিয়ান্ট?
সুলতানাপ্পি: Not only that.. ইউ কে তে ওর ত্রিশ টারো বেশি প্রজেক্ট আছে আর তার ম্যাক্সিমাম প্রজেক্ট এ ন্যাশনাল ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ পেয়েছে। He is a gold medalist..
আমিত শুনে পুরো থ… বলে কী? আপুও অবাক হয়েছে বোঝা যাচ্ছে।
ফুপা: ওয়াও এত অল্প বয়সেই এতটা সাকসেস্?
আব্বু: শুধু তাই না boxing champion ও। almost সব রকমের গেম এ পারদর্শী
কাব্য: specially cricket তাইনা আব্বু?

আপি: তুই থামতো। Seriously ফুপা এও সম্ভব?
আব্বু: প্রত্যক্ষ সাক্ষি না হলে আমিও বিশ্বাস করতাম নাহ
ফুপা: ছেলেটাকে দেখার জন্য অস্হির হয়ে উঠছি।
আম্মু: আসছেই তো আমরা সবাই দেখতে পাবো ওকে।
আমি এতক্ষন ওনাদের কথা শুনছিলাম আর ভাবছিলাম একটা মানুষকে নিয়ে এত আদেক্ষেতা করার কী আছে? হয়তো একটু বেশি ট্যালেনটেড So what? এতটাও বাড়াবাড়ির কিচ্ছু নেই। হুহ।
এরপর ধিরে ধিরে যে যার যার রুমে চলে গেলাম…

আপির সাথে গল্প করতে করতে ডিনারের সময় হয়ে গেলো সেখানেও সবাই ওই ছেলের গুন কির্তন করছিলো অসহ্য। কোথায় আমি DMC তে চান্স পেলাম সবাই আমাকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকবে? তা না কোন উগান্ডার প্যাচাল পারছে? প্রচন্ড বিরক্তি লাগছে।
রাতে খাটে আধশোয়া হয়ে ভাবছি সবার বলা কথাগুলো।আচ্ছা সবাই সব বলল ছেলেটার নামতো বললনা? কী নাম ওনার? দূর! এত কিছু বলল নামটা বলতে পারলনা? আজব নাম জেনে আমি কি করব আমি কেন এত ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছি? But এত So called talented একটা ছেলের নাম কী হতে পারে? What’s his name?

রাতে খাটে আধশোয়া হয়ে ভাবছি সবার বলা কথাগুলো।আচ্ছা সবাই সব বলল ছেলেটার নামতো বললনা? কী নাম ওনার? দূর! এত কিছু বলল নামটা বলতে পারলনা? আজব নাম জেনে আমি কি করব আমি কেন এত ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছি? But এত So called talented একটা ছেলের নাম কী হতে পারে? What’s his name?যতই বলিনা কেন,যে কোন ইন্টারেস্ট নেই কিন্তু আমারো জানতে ইচ্ছে করছে ছেলেটা দেখতে কেমন? সবাই যেভাবে ওর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছেলেটাকে দেখার অদম্য ইচ্ছেটাকে কিছুতেই দমাতে পারছিনা। আগেতো এরকম হয়নি? কখনো কারো সম্পর্কে নূন্যতম কিছু জানার ইচ্ছে ছিলোনা আমার। কোন জায়গায় কোন অনুষ্ঠান বা রাস্তাঘাটে কেউ যদি যেচে কথা বলতে আসলে আমার রিপ্লেগুলো শুনে পুরোদমে দমে যেত, মানে পুরাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যেত। একবার আমি পারার এক বিয়ে বাড়িতে গেছিলাম তো সেখানে একটা ছেলে এলো আলাপ করতে।

ছেলে: Hi I’m Mahbub.
আমি: So what can i do?
মাহবুব একটু ঝটকা খেল তবুও বলল
মাহবুব: No actually পরিচিত হতে এলাম। Nice to meet you.
আমি: not for me..
মাহবুব: too much attitude.. আচ্ছা নামটাকি বলা যাবে?
আমি: আমি আমার নামের Advertise দিচ্ছি না যে জনে জনে নাম বিলি করে বেরাবো? Excuse me
বলে চলে এলাম। পেছনে না তাকিয়েও বুঝেছিলাম যে ও পুরো বেকুব বনে গেছে..
কিন্তু এখন আমার হয়েছেটা কী? যেখানে আমি কোন সেলিব্রিটির Wikipedia পর্যন্ত ঘাটিনি সেখানে এই ছেলের ফুল বায়োডেটা জানতে ইচ্ছে করছে। সত্যিই কী ছেলেটা সেরকম? যেরকমটা সবাই বলছিল?
এরমধ্যেই আপি এলো এসে আমার পাশে খাটে হেলান দিয়ে বসে একটা টেডি কোলে নিয়ে এক হাতে ফোন স্ক্রল করতে করতে বলল
আপি: কী বেপার কী ভাবো?

আমি: মানিক আঙ্কেল এর ছেলের কথা।( আনমনে)
আপি ফোন থেকে চোখ সরিয়ে অবাক হয়ে আমায় দেখছে যেনো ও পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য দেখছে। আপুর ওমন অবাক দৃষ্টিতে বুঝতে পারলাম আমি কী বলেছি।তাই কনোরকমে বললাম
আমি:না মানে সবাই এতো আলোচনা করছে তো ওকে নিয়ে তাই.. (আর কিছু বলতে পারলাম না মাথা নিচু করে রইলাম। কারন আমি জানি এখন আর কোনো লেইম এক্সকিউস খাটবেনা)
আপি: তুমি ভাবছ? তাও একটা ছেলেকে নিয়ে? তাও সেই ছেলে যাকে তুমি দেখইনি? Like seriously?
আমি: (কি বলব ভাবছি)

আপি: যেই তুমি কিনা কেউ তোমার সামনে নাচনাচি করলেও এইটুকু ইন্টিরেস্ট দেখাওনা যে লোকটা কেনো নাচছে? সেই তুমি কী না কাউকে নিয়ে ভাবছ? interesting..
আমি: তো কী করব আপি? সেই সকাল থেকে এই বাড়িতে শুধু ওই ছেলের গুনগানই গাইছে সবাই ছেলে তো না যেনো কোথাকার কোন রাজ্যের মহান রাজা। এইজে আমি মেডিকেলে চান্স পেলাম সবাই আমার গুনগান করবে তা না? কোথাকার কোন ছেলের কীর্তন শুরু করল সবাই। isn’t it disgusting?

আপি: Okay cool… এতো হাইপার হচ্ছিস কেন? দেখ ছেলেটার পারসোনালিটি ভালো ট্যালেন্টেড, ফিসিকালি ফিট এতোদিন পর দেশে আসছে।তার ওপর আমাদের known Person একটুতো আলোচনা হবেই।
আমি: এটা একটু? ট্যালেন্ট কী আমাদের কারো মধ্যে নেই নাকি? তুমি, কাব্য আমি আমরা কম কিসে? মানছি উনি একটু বেশিই ট্যালেন্টেড তাই বলে এত বাড়াবাড়ির কী আছে?
আপি মুখ টিপে হাসছে তা দেখে আমি ভ্রু কুচকে বললাম
আমি: এই তুমি হাসছ কেন?

আপি: তুই যে এত হিংসুটে হয়ে গেছিস আগে জানতাম না তো?
আমি: মোটেই না আমি কেবল ফ্যাক্ট টা বলছি।
আপি: Okay fine। তা তুমি কী শুধুই বিরক্ত হচ্ছ? নাকি অন্যকিছু?
আমি: দেখোনা সবাই এত কিছু বলল অথচ নামটাই বললনা ভাললাগে?
কিছু না ভেবেই বলে দিলাম কথাটা
আপি: ওওওও এই তবে বিরক্তির কারন?
আমি: তেমন কিছু না আসলে..
আপি: থাক বলতে আর হবে না। ছেলেটার details চাই?
আমি: আছে তোমার কাছে? (উত্তেজিত হয়ে)
আপি: বাহবা এত্ত Interest?

আমি: আমার কেন interest থাকতে যাবে বলোতো? এমনিই বললাম আরকি। তুমি কোথায় পেলে ওর ডিটেইলস?
আপি: আসলে তুমিতো জানোই আমি এসব বিষয়ে কত কৌতুহলি তাই সবার মুখে ওর কথা শুনেই সোসাল সাইন ইন্টারনেট থেকে ওর ডিটেইলস জোগার করেছি।
আমি: ওর ডিটেইলস ইন্টারনেটেও আছে?
আপি: Yup sweetheart… actually Uk তে ও যেসব প্রজেক্ট লঞ্চ করেছে তারমধ্যে অনেকগুলোই বেশ important ideas দিয়েছে। যেগুলো Software improvement এবং ICT এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ ভূমিকা রাখবে তাই একটু popular হয়েছৈ। যদিও ও কোনো Press meeting করে না আর বেশি পাবলিসিটিও পছন্দ করেনা।

আমি: হুহ ভাব বুচ্ছ ভাব। আচ্ছা শুনি কী ডিটেইলস?
আপি: তোমার নাকি ইন্টারেস্ট নেই শুনে কী করবে?
আমি: (কী বলব এখন?) আমি কখন বললাম আমার ইন্টারেস্ট আছে? আমি তো জাস্ট এমনিই জানতে চাইলাম। ওকে না বললে নাই।
আপি: সেই আসলে ডিটেলস পেয়েই ভাবলাম তোমার সাথে ডিসকাস করি। But as you are not interested then leave..
আমি: (Damn আমিতো এমনি ভাব দেখিয়ে বললাম ইন্টারেস্ট নেই ভেবেছিলাম আপি বলে দেবে But why don’t api understand যে আজ ওনার ডিটেইলস না জানলে আমার ঘুম হবেনা) interested না হলে কী বলা যায়না নাকি?
আপি: কেন বলব? তুমি যদি interested না হও তাহলে যেনে কী হবে?(ভ্রু কুচকে)
আমি: তবুও…

আপি: কোন তবুও টবুও নয় আমি গেলাম।
আপি যেতে নিলে আমি তারাতারি হাতটা ধরে ফেলি।
আমি: আপি এমন করছ কেন বলে যাওনা।
আপি: আজবতো তুই বলছিস তুই ইন্টারেস্টেড না আবার তোর শুনতেই হবে? যেকোনো একটা বল।
আমি: Okay fine i am interested এবারতো বল। (হাত জোর করে দাতে দাত চেপে)
আপি: হয়েছে হয়েছে হাত জোর করতে হবে না বলছিতো শোন।
আমি: হ্যা বলো।
আপি: হুম। এই one minute তোদের ভর্তি কনফার্ম কবে করবি?
আমি: এইতো এই সপ্তাহেই। তুমি বলো।
আপি: বলছি। আর শোন ইসরাত আর তুই একসাথেই যাস ভালো হবে।
আমি: ওকে ওকে যাবো এবার continue করো না
আপি: করছিতো বাবা কিন্তু ঐশ্বর্য আর রিম এর খবর ও নিয়ে নিয়েছিস।
মেজাজটা প্রচুর খারাপ এমন কেন আপি?
আমি: আপি… তুমি এত কথা বলা কবে থেকে শিখলে বলোতো? ডিটেইলস বলো।
আপি: আরেহ আমিকি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি? বলছিতো। তুই ইন্টারেস্ট নেই ইন্টরেস্ট নেই বলে এখন তো শোনার জন্য অস্হির হয়ে উঠছিস।

আমি: আপু তুমিকি বলবে? কখন থেকে আজে বাজে কথা বলছ আসল কথাটা বলো না?
আপি: কী আসল কথা?
আমি: লও ঠ্যালা। জানোনা কী কথা? ছেলেটার ডিটেইলস বলো আমাকে।
আপি: ও হ্যা। আগে বলো কী দিয়ে শুরু করব?
আমি: উমম নাম দিয়েই শুরু কর। কারন সবাই almost সবি বলেছে নামটা ছাড়া।
আপি: আচ্ছা শোন তাইলে?
আমি: উফফ আপি তুমি শুরু করতো খালি বলছি শোন এসব বলে যাচ্ছ।
আপি: বাপরে রাগ করছিস কেন বলছি
ছেলের নাম আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের। বয়স 25। Height 6’2″. Weight জানা নেই তবে রেগুলার জিম করে, So well body fitness. ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে ইন্জিনিয়ারিং কম্প্লিট করেছে।
আমি: বাহ! আর?

আপি: ওর Discover গুলো সম্পর্কে তো জানোই। আর হ্যা Boxing championship তো আছেই।
আমি: আর?
আপি: অন্যান্য খেলাতেও বেশ ভালো তাতো শুনেছই।
আমি: হুম আর?
আপি: আর একটা ছোট বোন আছে এবার ইন্টার ফার্সট ইয়ারে পড়ে।
আমি: বোনের কথা শুনে কী করব? ওর কথা বলো।
আপি একটু অবাক হলো তবুও নিজেকে সামলে বলল
আপি: হুম ওর একটা গবেষনা ল্যাব ও আছে সেখানে ও রিসার্জ করে আর ডিসকভার ও করে।
আমি: ওহ আর?

আপি: (ভ্রু কুচকে) ও ছেলে রচনা না যে শুরু হলে শেষ হতে চাইবে না।
আমি: আমি কখন বললাম সেটা, তাছাড়া আমার জানার কোন শখ নেই শুধুই এতো পেচাল পারলা।
আপি আহাম্মকের মত কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
আপি: তাই? ভালো But do you know ও কিন্তু কাল বাড়িতে আসছে।
আমি: কী? সত্যি?
আপি: Why are you being so exited? তুমিতো ইন্টারেস্টেড না?
আমি: কে excited কোথায় excited?
হঠাৎ কাব্য এলো বলল আব্বু আব্বু ডাকছে আমাদের আমরা দুজনেই গেলাম।
আমি: আব্বু আসব
আব্বু: হ্যা আয় এডমিট কবে হবি?
আমি: এই সপ্তাহেই আব্বু।

আম্মু: আচ্ছা বস এই বিষয়ে কিছু আলোচন আছে।
আমি আর আপি বসলাম হঠাৎ কর এলো আব্বুর ফোন এলো।
আম্মু : কে ফোন করল এখন?
আব্বু: আদ্রিয়ান মানিকের ছেলে।
শুনেই বুকটা ধক করে উঠল। কেন তা জানা নেই আমার।
আব্বু ফোন রিসিভ করে কথা বলল কতখন লাউডে নেই তাই শুনতে পেলাম না। ফোনে কথা বলা শেষে আম্মু বলল
আম্মু: কী বলল?
আব্বু: কাল আসছে বাসায় সেই নিয়েই কথা বলল।

এরপর কিছুক্ষন কথা বলে রুমে চলে এলাম। এসে শুয়ে শুয়ে ভাবছি ছেলেটার কথা কী নাম আদ্রিয়ান আবরার জহায়ের? ওনাদের পদবিতো খান মানে পুরো নাম দারাচ্ছে আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের খান? হাসি পেল খুব কারন ওর নামটা ওরি মতো পুরাই রচনা। ফেসবুক ঘাটছি হঠাৎ “people you may know” অপশনে একটা আইডি এল ‘Adrian Abrar Zuhaer’ বাট আইডিতে এমন কিছুই নেই যার দারা বোঝা যায় এটা ওনারি আইডি কিনা, প্রফাইল পিক ও নিজেরটা দেয় নাই scientific কিছু একটার পিক দিছে, হুহ আসছে বিজ্ঞানি আমার। হঠাৎ দেখলাম মেচুয়াল ফ্রেন্ড আপি তাই মোটামুটি সিওর হলাহ ইনিই তিনি।
যাই হোক এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলাম খুব excited লাগছে আজকে কেন তা জানিনা। নিচে চলে গেলাম।গিয়ে দেখি আপি বসে বই পড়ছে। আমাকে দেখে বলল
আপি: Good morning কী ব্যাপার এত সকালে?
আমি: morning.আসলে ঘুম ভেঙ্গে গেল তাই।
আপি: তোর ঘুম নিজে থেকে ভাঙ্গলো? seriously.
আমি: আজব ভাঙতে পারেনা?
আপি: হুম বস কফি আনছি তোর জন্য।
আমি: Better
আপি চলে গেল কফি আনতে। তারপর দুজন একসাথে কফি খেয়ে গল্প করতে করতে ব্রেকফাস্ট এর সময় হয়ে গেল। টেবিলে বসে খেতে খেতে বললাম
আমি: আচ্ছা ওরা কখন আসবে?
আম্মু: ওরা কারা?

আমি: ইয়ে.. আদ্রিয়ানরা।
আমার কথা শুনে সবাই আমার দিকে এমনভাবে তাকালো যেনো আমি অদ্ভুত কিছু একটা বলে ফেলছি। কী এমন বললাম?
আম্মু: দুপুরে খাবে বললতো।
আমি: ওহ।
কাব্য: আমি নাকি সব বেপারে over excitement দেখাই? এখন তুই কী দেখাচ্ছিস?
আমি: আজব? আমিতো জাস্ট জানতে চেয়েছি হুহ।
আব্বু: হয়েছে থামো সবাই।
এরপর সবাই চুপ করে গেল। ব্রেকফাস্ট করার পর পাইচারি করছি, হঠাৎ মাথায় এলো ওনার গার্লফ্রেন্ড আছে কীনা তা তো জানা হলোনা? আপি এতকিছু বলল ওটাই বললনা? কিছুতেই কৌতুহলটা দমাতে পারছিনা তাই নিচে গেলাম দেখলাম আপি সোফায় বসে ফোন দেখছে। জিজ্ঞেস করব? করেই ফেলি কী আর হবে? আমি গিয়ে আপির পাশে বসলাম।
আমি: আপি?

আপি: বলো। (ফোন টিপতে টিপতে)
আমি: আচ্ছা ওনার কী গার্লফ্রেন্ড আছে?
আপি: কার? (ফোনে চোখ রেখেই।
আমি: আ.. আদ্রিয়ানের।
আপি ফোন থেকে চোখ সরিয়ে যথারীতি সেই অবাক দৃষ্টি।
আপি: তা জেনে তুমি কী করবে?( মুখে দুষ্টমির হাসি দিয়ে)
আমি: না মানে এমনি।
আপি: Personally আছে কীনা জানিনা But according public information he is not single.
কেন জানি একটা ধাক্কা খেলাম। গলা আটকে এল কিন্তু কেন তা জানিনা।
আমি: মা..ননে?
আপি: মানে He is pure single..( হেসে দিয়ে)
এবার অনেকটা হালকা লাগলো নিজেকে উফফ। আবার সন্দেহ হলো এরকম একটা ছেলে বিদেশে পড়েছে অথচ কোন গার্লফ্রেন্ড নেই? এর পেছনে কি কোন কারন আছে?

আপি: হঠাৎ তুমি এসব জিজ্ঞেস করছ কেন?
আমি: না আসলে এমনি।
বলে ওখান থেকে চলে এলাম নইলে আপি জেরা করবে।
দুপুর প্রায় হয়ে গেছে তাই গোসল সেরে একটা লাল গোল জামা পরলাম আসলে গেষ্ট দের সামনে তো আর টিশার্ট প্লাজো পরে যেতে পারবোনা।
রেডি হয়ে নিচে এসে দেখি আম্মুর রান্না হয়ে গেছে আহ কত পদ।
আপি: বাহ সুন্দর লাগছে তোকে।
আমি: Thank you sweetheart.
এবার সবাই নিচে নেমে এল। আব্বু, ফুপা, সুলতানাপ্পি, চাচু ওহি। অনন্ত ঘুমে আছে।সবার ইন্টারেস্ট একটাই আদ্রিয়ান।সবাই অধির আগ্রহে ওর অপেক্ষা করছে।
হঠাৎ কলিং বেল বাজল। আম্মু: ওই এসেছে বোধ হয়। অনি যাও খুলে দেও।
আমি: আমি?
আব্বু: হ্যা জলদি যা ওরা দাড়িয়ে অাছে।
আপি: কী হল যা

আমি কাপাকাপা পায়ে দরজাটা খুলতে যাচ্ছি এতক্ষন যাকে নিয়ে এত কল্পনা জল্পনা সে এখন আমার সামনে হবে? বড্ড ইচ্ছে করছে আয়নায় একবার নিজেকে দেখতে কিন্তু তা সম্ভব না। আচ্ছা উনি আমায় দেখে কীভাবে রিয়াক্ট করবে? দূর কী ভাবছি উনিতো আমায় চেনেই না, আগে কখনো দেখেইনি এসব ভাবাই অবান্তর। তাই কোন রকম বুকে ফু দিয়ে দরজাটা খুললাম দরজা খুলেতো আমি অবাক।

Infinite Love part 4+5+6