প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২১ || সুমাইয়া জাহান

প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২১
সুমাইয়া জাহান

নীরের আজ বড্ড বেশি অভিমান হয়েছে তূবার উপর তাই সে আজ একটি বারের জন্য তূূবা খোঁজ নেই নি কেনই বা নিবে।সে কি তার কথা শুনেছে?না শুনেনি নিজের জেদ বজায় রেখে চলে গেছে। তাহলে কেন নিবে খোঁজ?তার তো উচিৎ ছিলো নিজে থেকে খোঁজ নেওয়া কিন্তু না সে নেই নি।তাই নীরও আজ নিবে হুম!এইটাই পন করে গাল ফুলিয়ে বসে আছে নীর।কিন্তু স্থির হয়ে বসে থাকলেও মন কিন্তু স্থির হতে পারেনি।মন তার প্রেয়সীর কাছেই পরে আছে।কেমন আছে তা জানার জন্য ছটফট করছে।একবার ভাবছে সব অভিমান ভেঙ্গে একটার ফোন করতে! ফোন হাতে নিয়ে তূবার নাম্বার টা ডায়াল করতে নিয়েও করতে করলো না।বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। এতোক্ষণ তূবাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে সেদিকে খেয়ালই ছিলো নীরের।বেলকনির দরজাটা খোলা থাকার কারনে কিছুটা বৃষ্টি উপচে এসে পড়ছে পরছে নীরের গায়ে।নীর তাড়াতাড়ি বসা থেকে উঠে দরজাটা বন্ধ করতে গেলো।আকাশ ঘনো কলো আকার ধারণ করে আছে।প্রচন্ড বৃষ্টি আর থেকেই বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে সাথে মেঘের গর্জন তো আছেই।বাইরের এই অবস্থা দেখে নীরের কপালে চিন্তার সূক্ষ্ম ভাজ পড়লো।দ্রুত রুমে এসে ফোন টা হাতে নিয়ে লাগাতার ফোন দিতে লাগলো।কিন্তু ওপাস থেকে কোনো সারা নেই। বেজে বেজেই কেটে যাচ্ছে কেউ ফোন তুলছেই না।এতে করে নীরের সন্দেহ টা আরো দৃঢ় হলো।আর এক মুহূর্ত দেরি না করে দ্রুত বেরিয়ে পরলো।

মন মেজাজ দুটোই এখন ভিষণ ফুরফুরে লাগছে।লাগবেই তো কতোদিনের অপেক্ষার পর এমন একটা দিন পেলাম।একদিক থেকে আজ এই বাড়িতে ভালোই হয়েছে।ইচ্ছে মতো বৃষ্টি বিলাস করতে পারছি।ওবাড়িতে থাকলে নির্ঘাত আমার আর বৃষ্টির মাঝখানে নীর বাঁধা হয়ে দাঁড়াতো। অবশ্য এখানেও একজন কড়া পাহারাদার আছেন মানে ভাইয়ু।কিন্তু আজ আর সে নিজের ঘর থেকে বেরোবে বলে মনে হচ্ছে না।দুপুর সেই যে ডাইনিং টেবিল থেকে মানে মানে কেটে পরেছে তারপর থেকে আর নিজের রুম থেকে বের হয়নি।রাতের খাবারও সার্ভেন্টদের দিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে খেয়েছে।তখনকার কথাগুলো মনে পরলেও দম ফাটা হাসি চলে আসে।তখন অবশ্য হাসতে পারিনি বাবা সামনে ছিলো আর বেচারা আবদুল কে দেখে একটু মায়া হচ্ছিলো।কিন্তু রুমে এসেই এক ঘন্টার মতো হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা করে ফেলছি।তাই আজ কোনো চিন্তাই নেই ইচ্ছে মতো বৃষ্টিতে ভিজতে পারবো।ভাগ্য ভালো যে আমার বেলকনির উপরে কোনো ছাঁদ নাই ফলে বেলকনিতেই ভিজতে পারছি। না হলে এই রাতের অন্ধকারে ছাঁদে গিয়ে ভিজতে যেতে হতো।চোখ বন্ধ করে ভিজছি আর বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা অনুভব করছি।যদিও বা টিনের চালের বৃষ্টির সেই ঝুমঝুম আওয়াজের কাছে এই টপটপ করা বৃষ্টির আওয়াজের কোনো তুলনাই হয়না তবুও একটুকু অনুভব করতেই ভালোলাগা ছেঁয়ে যাচ্ছে। আমার বৃষ্টি মানেই ভালোলাগা ময় একটা সময়।কিন্তু এই সুখ বোধহয় আমার কপালে বেশিক্ষণ সইলো না।বাড়ির সামনেই কোনো একটা গাড়ি এসে থামলো।যার আলো আমার চোখে এসে পরলো সঙ্গে মৃদু শব্দও।বৃষ্টির কারণে আওয়াজ টা মৃদুই হলো।কিন্তু বাড়ির সামনে গাড়ি এলে তো এই বেলকনিতে আসার কথা না।তাই অতি আগ্রহ নিয়ে সেই আলোর সন্ধান করার জন্য সেই দিকে তাকালাম।তাকাতেই চোখ জোড়া আমার ছানা বড়া হয়ে এলো।কারণ আগন্তুক আর কেউ নই সয়ং নীর।নীরই ইচ্ছে করে আমার বেলকনি বরারার একটা টর্চ মেরেছিলো হয়তো আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। তাই তো আমি ওর দিকে তাকাতেই টর্চ টা নামিয়ে নিলো।কিন্তু এবার আমার ও তাকাতেই আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো।কারণ নীরের চোখ গুলো টকটকে লাল হয়ে আছে।চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে।আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যে চোখ দিয়েই ভস্ম করে দিবে।গাড়ি থেকে নেমে পরলো নীর।এতোক্ষণ গাড়ি তেই বসে ছিলো।হাতে কি যেন একটা আছে অন্ধকারে তেমন ভালোভাবে দেখতেও পারছি না।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

গাড়ি থেকে টর্চ টা আবার বের করে হাতে থাকা সেই জিনিস টার উপর ধরলো।ওটা আসলে একটা বোর্ড যেখানে স্পষ্টভাবে বড়ো বড়ো করে লেখা আছে,
” এখুনি বেলকনি থেকে একটা দড়ি ফেল।যদি না ফেলিস তাহলে সোজা মেইন ডোর দিয়ে তোর রুমে আসবো।মাইন্ড ইট!”
ব্যস এইটুকু লেখাই আমার অবস্থা নাজেহাল করার জন্য যথেষ্ট। এখন যদি দড়ি না ফালাই আমি নিশ্চিত যা বলছে তাই করবে।এই ছেলেকে একদম বিশ্বাস নেই। এই মুহূর্তে যদি ও এমন কিছু করে তাহলে কতো টা রিক্স তা বলে বোঝাতে পারবো না।সব প্লান নষ্ট হয়ে যাবে।কোনোদিনও ওদের ধরতে পারবো না। বরং ওরা ওদের প্লানে সাকসেস হয়ে যাবে।কথা গুলো ভেবেই এক একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে দড়ি মতো কিছু একটা আনতে রুমে ঢুকলাম।কিন্তু এখন বিপদ পরেছি কোনো দড়ি নেই। রুমের বাইরে যাওয়া যাবে না সবাই সন্দেহ করবে।কিন্তু এখন তাহলে কি করবো?এখানে তো আবার কোনো শাড়িও নেই যে শাড়ি দিয়ে দড়ির কাজ চালিয়ে নেব।হঠাৎই ফোনটা বেজে উঠলো।এমন টা হঠাৎ হওয়াতে আমি কিছুটা ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠেছি।যতটা ভয় এখন পেলাম তারথেকেও বেশি ভয় পেলাম স্কিনে থাকা নীরের নাম টা দেখে!আমার দেরি হতে দেখে ফোন করেছে এখন নির্ঘাত আচ্ছা মতো ঝাড়বে আমাকে।ফোন ধরবো না ধরবো না সেই নিয়েই দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছি। ধরলেই তো বকুনি খেতে হবে।আবার না ধরলে যদি সত্যি সত্যি মেইন ডোর দিয়ে ঢুকে যায়!নাহ্ বাবা তার থেকে একটু বকুনি খেলে কিচ্ছু হবে না।মাঝে মাঝে বকুনি খাওয়া স্বস্থের পক্ষে উপকার এই বলে৷ নিজের মনকে শান্তনা দিয়ে ভয়ে ভয়ে ফোন টা রিসিভ করলাম।আর সাথে সাথেই,

—– একটা দড়ি আনতে কতক্ষণ সময় লাগে?তারমানে তুই চাস আমি মেইন ডোর দিয়ে সসম্মানে বাড়িতে ঢুকে যাই!ওকে ফাইন তোর ইচ্ছে টাই পূরন করি।
খুব রেগে বললো নীর।প্রথমে চোখ বন্ধ করে ওর রাগটা হজম করেছিলাম কিন্তু শেষের কথাটা শুনে তড়িৎ গতিতে বলে উঠলাম,
—– এই না না না! আমি দড়ি এখুনি আনছি। একমিনিট দাঁড়া!
আমার কথায় ফোঁস একটা শ্বাস ফেললো নীর।ফোনের ওপাশ থেকে স্পষ্ট শোনা গেলো।দু সেকেন্ড চুপ থেকে বললো,
—- এক মিনিট যেন এক মিনিটই হয়! এক সেকেন্ড এদিক ওদিক যেন না হয়!
কথাটা বলে একমিনিটও অপেক্ষা না করে ফোনটা কেটে দিলো।বলেতো দিলাম একমিনিটের মধ্যে দড়ি নিয়ে আসছি কিন্তু এখন দড়িটা পাবো কোথায়?নিজের দিকে একবার তাকাতেই “পেয়ে গেছি” বলে লাফিয়ে উঠলাম।তারপর আলমারি থেকে আমার বেশ কয়েকটা ওড়না বের করে একটার সাথে আরেকটা গিট দিতে লাগলাম।এভাবেই ওড়না দিয়ে বেশ লম্বা একটা দড়ির মতো বানিয়ে বেলকনিতে এসে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দিলাম।নীর ওইটা ধরেই উপরে উঠে গেলো।

নীর উপরে এসেই আমার কপালে হাত দিলো।এতেই আমার চোখ গুলো বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়েছে। নীর সেদিকে পাত্তা না দিয়ে হাত ওলোট পালোট করে আমার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
—– আমি জানতাম এমন কিছু একটা ঠিক করবি।তাই তো আমি বারবার করে বলেছি এখানে আসতে না।আমরা বুঝে নিবো ওদের। আমার কথা শুনলি না তো এখন বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাঁধালি কেন?
চোখ বন্ধ করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে করলো কিছুক্ষণ। তারপর আবার চোখ খুলে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
—- আগে এই ভিজে জামা কাপড় চেঞ্জ করে আয় তারপর তুর ব্যবস্থা করছি!কি হলো দাঁড়িয়ে আছিস৷ কেন যা!!!
নীরের ধমক খেয়ে তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে জামা কাপড় নিয়ে ওয়াস রুমে ঢুকে পরলাম।

চেঞ্জ করে ওয়াস রুম থেকে বেড়িয়ে দেখি নীর হাতা ভাজ করে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।বোঝাই যাচ্ছে রাগ কন্ট্রোল করছে কারণ ওর কাপালের রগ গুলো ফুলে উঠছে।এতোক্ষণ খেয়াল করিনি ও ভিজে গেছে।চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে।এই ছেলে সবদিকে খেয়াল রাগতে পারে অথচ নিজের দিকেই খেয়াল রাখতে ভুলে যায়।আমাকে ধমক দিয়ে ভেজা কাপড় চেঞ্জ করালো অথচ দেখো নিজেই ভিজে রেয়েছে।আমি বরং ভাইয়ুর থেকেই ওর জন্য কিছু নিয়ে আসি।নাহলে এই ভিজে গায়ে থাকলে জ্বর আসবে।তাই আমি বেরোনোর জন্য দরজার দিকে এগোতে লাগলাম।
—- আর এক পাও ওইদিকে দিবি না!

আমি দুই পা এগোতেই কথাটা চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায়ই বললো নীর।উফফ সব সময় মাঝ পথে থমিয়ে দেওয়াই বোধহয় এর কাজ।যার দরুন চোখ বন্ধ করেই সেই কাজ থেকে বিরত হলো না।এখন আমার অবস্থা টা ঠিক এমন যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর।আমি তো ওর ভালোর জন্যই বেরো যাচ্ছিলাম তার মাঝেই ওর বা হাতটা ঢুকানো লাগবে।বিরক্ত হয়ে বললাম,
—- আমি তোর জন্যই শুকনো কাপড় আনতে ভাইয়ুর কাছে যাচ্ছি। নিজের দিকে একবার খেয়াল করে দেখ কাক ভেজা হয়ে আছিস।
—- তোকে আমার চিন্তা করা লাগবে না।নিজে তো সারাদিন আমাকে টেনশনে রাখিস।এখন আইছে আমার চিন্তা করতে!এখন তোর সাথে ঝগড়া করতে আসি নাই এখুনি লাগেজ গুছিয়ে নে। কুইক!
—- কিকিকিকি????
নীরের কথায় প্রচন্ড অবাক হয়ে বললাম।নীর বিরক্ত হয়ে সাথে সাথেই বললো,
—- বাংলাতেই তো বললাম শুনতে পাসনি?ওকে আবারও বলছি এখুনি লাগেজ গুছিয়ে নে।না পারলে এমনিতেই চল!
—- তুই খুব ভালো করে জানিস আমি এখানে আসার উদ্দেশ্য কি?তারপরও তুই এসব কেন বলছিস?তোর মাথা ঠিক আছে?
প্রচন্ড অবাক হয়ে বললাম।হঠাৎ করেই নীর আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ঝাঁঝালো গলায় বলতে লাগলো,

—– তুই আমার সাথে এখুনি যাচ্ছি।ইট’স ফাইনাল!ওখানে বসে আমি টেনশন করবো আর তুই এখানে বসে এসব কাজ করে বেড়াবি। নো ওয়ে।সেটা তো হবে না! ফোন করলে ফোন রিসিভ করবি না।এগুলো আমি কিছুতেই হতে দিবো না।তাই আমার সাথে এখুনি চল!
আকস্মিক এমন হওয়াতে আমি হকচকিয়ে গেলাম।ঘটনাটা বুঝতে আমার পাক্কা ত্রিশ সেকেন্ড লেগেছে।
—- আচ্ছা আমি আর বৃষ্টিতে ভিজবো না।আর সাথে সাথেই ফোন রিসিভ করবো।তুই যা বলবি তাই করবো।কিন্তু এখন এখান থেকে যেতে বলিস না প্লীজ! তুই জানিস আমি এখানে কেনন এসেছি।
নীরকে আস্বস্ত করার জন্য বললাম।কিন্তু তাতেও কাজ হলো না ও এখন জেদ ধরে রেখেছে আমাকে নিয়ে তারপরই যাবে অনেক বুঝানোর পরও যখন ব্যর্থ হয়ে ভাইয়ুকে ফোন করে ওর কথা বলি।ভাইয়ু তো শুনেই সাথে সাথেই আমার রুমে চলে এসেছে।নীরকে দেখেই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—- নীর তুই এখানে কি করছিস?
—- আমারও তো সেটাই প্রশ্ন? তুমি থাকতে আমি এখানে কেন?
ভাইয়ুর প্রশ্নের পাল্টা প্রশ্ন করে ভাইয়ুর দিকে প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ভাইয়ু তো নীরের কান্ডে প্রচন্ড অবাক। কিছু বুঝতে না পারলো না।
—- মানে?? কি বলছিস নীর আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

তারপর ভাইয়ুকে আমার বৃষ্টি ভেজার কথা বললো।ব্যস আরেক ধাপ বকা খেলাম ভাইয়ুর থেকে।
—- আমি জানতাম না এই রাত দশটার সময়ও ও বৃষ্টিতে ভিজতে যাবে।কিন্তু তোরও এইভাবে আসাটা ঠিক হয়নি।তুই তো আমাকে একটা ফোন করতে পারতি!আচ্ছা এখন যখন এসেই পরেছিস তাহলে এখন এখান থেকে তাড়াতাড়ি যা।আর আমার একটা ট্রি শার্ট আর প্যান্ট দিচ্ছি।চেঞ্জ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যা মামনী চিন্তা করবে।আর ওর ব্যবস্থা আমি করছি।
শেষের কথাটা আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো ভাইয়ু।আমি শুকনো ঢোক গিললাম। এবার আমার কপালে শনি রবি সব একসাথেই আছে।তারপর ভাইয়ু গিয়ে একটা ভাইয়ুর একটা ট্রি শার্ট আর প্যান্ট এনে নীরকে দিলো।কিন্তু নীর তাও নিজের জেদ ধরে রাখলো। সে আমাকে নিয়ে তারপর এখান থেকে যাবে।ভাইয়ু বহু কষ্টে ওকে বুঝিয়ে সুজিয়ে যেতে রাজি করালো।যাওয়ার আগে অবশ্য আমার দিকে কড়া চোখে ওয়ার্নিং ভুললো না।ও যেতেই লম্বা একটা শ্বাস নিলাম।এতোক্ষণ যেন শ্বাস আটকে ছিলো।

প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২০

—- ডেড তুমি খবরটা শুনেছো?
খুশিতে আত্মহারা হয়ে বললো রাতুল।রঞ্জন ছেলের এতো আনন্দ পেতে দেখে ভ্রু কুঁচকে তার পানে তাকালো।এমনিতে রাতুল তেমন একটা হাসে না কিন্তু আজ এতো আনন্দ পেতে দেখে কিছুটা অবাক হলেন রঞ্জন।কিন্তু তার এই অবস্থায় এমন আচরণ করাতে বেশ বিরক্ত হলেন রঞ্জন।
—- না আমি কোনো খবর পাই নাই।এমনিতে আমাদের কালো ব্যবসা গুলো সব ডুবে যাচ্ছে আর তুই এখানে আনন্দ করছিস!
বেশ বিরক্ত নিয়েই কথাটা বললো রঞ্জন।কিন্তু তাতেও রাতুলের খুশি একটুও কমলো না বরং আরো ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বললো,

—- খবর টা শুনলে তুমিও আমার মতোই খুশি হয়ে যাবে।আমাদের এইবারের প্লান টা সাকসেস হয়েছে।মানে নীর চৌধুরীকে তূবা ভুল বুঝেছে।ওকে এখন ঘৃণা করে।এমনকি ও চৌধুরী বাড়ী ছেড়ে চলে এসেছে।এবার আমরা তূবাকে আমাদের হাতের পুতুল বানাতে আর কোনো বাঁধা নেই।
—- সত্যি বলছিস??
রঞ্জনের কথাটা বিশ্বাস করতে বেগ পেতে হলো।কিন্তু রাতুল আগের মতোই ওভার কনফিডেন্স নিয়েই বললো,
—- একদম পাক্কা খবর।আমি নিজে তূবাকে সিকদার বাড়িতে ডুকতে দেখেছি।
—- তাহলে তো কাজে লেগে পরতে হবে।
কথাটা বলতেই একটা বিশ্রী হাসি ফুটে উঠলো রঞ্জনের মুখে। সঙ্গে রাতুলের মুখেও।

প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২২