প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২০ || সুমাইয়া জাহান

প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২০
সুমাইয়া জাহান

ডাইনিং টেবিলে আজ নানা পদের খাবারের পরিপূর্ণ। এখানে অন্তত বিশজনের খাবার রেয়েছে।অথচ মানুষ মাত্র তিনজন! এতো খাবার সামনে থাকা সত্বেও আরমান সিকদারের মনে হচ্ছে অনেক অল্প! তার মন কিছুতেই যেন সম্পুর্ণ হচ্ছে না।পারে না যেন পুরো পৃথিবীটা তুলে আনে।এতোটাই আনন্দে আছে সে আজ!আজ যে তার অতি প্রিয় মেয়েটা তার সামনে আছে ভালো আছে।এতোদিন যার চিন্তায় চোখের পাতা এক করতে পারতো না।যাকে হারানোর ভয় সব সময় খুকরিয়ে থাক হতো সেই মেয়েটাকে আজ চোখের সামনে পেয়ে কতোটা যে শান্তি পাচ্ছে আরমান সিকদার তা শুধু তিনিই জানেন।আকাশের চাঁদ হাতে পেলে যতোটা আনন্দ পাওয়া যাবে তার থেকেও বেশি আনন্দ বোধহয় আজ আরমান সিকদারের মনে।আজ মেয়ের জন্য নিজ হাতে এতো গুলো রান্না করেছেন।তাতেও যেন তার মন ভরছে না!নিজের সবটুকু উজার করে দিতে চান তিনি!মেয়েকে যে বড্ড বেশি ভালোবাসেন।নীলাশার শেষ স্মৃতি! তার থেকেও বড়ো ব্যাপার তূবার অনেকেই টাই নীলাশার মতো দেখতে।তার জন্য তূবার দিকে তাকালেই আরমান সিকদারের মনে তূবাকে হারানোর ভয় টা জেঁকে বসে। নীলাশার সেই মৃত মুখ টা তার সামনে ভেসে উঠে।

আজ সকালেই আমি সিকদার বাড়িতে আসি।বাড়িতে ঢোকা মাত্রই বাবার সাথে দেখা হয়।বাবা আমাকে দেখা মাত্রই খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান।এতোটাই খুশি হন যে খুশিতে বাবার চোখে জল এসে পরে।বাবা বোধহয় তখন অফিসের কোনো মিটিংয়েট জন্য বের হচ্ছিলেন।আমি আসাতে বাবা ফোন করে সব মিটিং ক্যান্সেল করে দেন।তিনি নাকি আজ সারাদিন বাড়ি থাকবেন।বাবা বেশিরভাগ সময়টাই অফিসে কাটান।আজ পর্যন্ত কোনো মিটিং বাদ দেননি অথচ আজ সেই বাবা আমার বাড়ি ফিরে আসাতে আজকের সব মিটিং ক্যান্সেল করে সারাদিন আমার সাথে সময় কাটাবেন বলেছেন।এটা যে আমার কাছে কতো বড়ো পাওনা তা বলে বোঝাতে পারবো না।আমি সবসময় চাইতাম বাবার সাথে সময় কাটাতে কিন্তু অফিসের কাজে এতো ব্যস্ত থাকতো যে দুবেলা ডাইনিং টেবিলে দেখা ছাড়া তেমন একটা আমাদের দেখা হতো না।বলতে গেলে বাবা নিজেকে কাজের মধ্যেই আটকে রাখতে চেয়েছিলেন সব সময়।হয়তো মায়ের মৃত্যুর বেদনা এখনো ভুলতে পারেননি সেই জন্য!আমি অবাক হয়ে যাই যখন বাবা বললো নিজে রান্না করে আমাকে খাওয়াবে!সেই থেকেই বাবা রান্নায় লেগে পরেছিলো।কাউকে রান্না ঘরে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি।নিজে একা একা সব রান্না করেছে।বলাবাহুল্য বাবার নাকি রান্নার হাত খুব ভালো।আগে মাঝে মধ্যেই রান্না করতেন সবার জন্য। ভাইয়ুর থেকে শুনেছি।মায়ের মৃত্যুর পর থেকে ভাইয়ু বাবাকে আর কখনো রান্না করতে দেখিনি।আমি ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসি একটা শব্দে!রান্না শেষ পদ টা টেবিলে রাখলেন বাবা।সেটার শব্দ হলো।হাসি মুখে বললেন,

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

—- মামনি এবার তুমি খাওয়া শুরু করো!তূর্য তুইও বা হাত গুটিয়ে বসে আছিস কেন?তোকেও কি নতুন করে বলতে হবে নাকি!শোনো মামনি এখানে যা যা আছে সব কিছু শেষ করতে হবে!একটা কিছুও বাকি থাকা চলবে না!
বাবার কথা শুনে আমি শুকনো ঢোক গিললাম।আমার সামনে যা খাবার আছে তা আমি গোটা একমাসেও খেয়ে শেষ করতে পারবে কিনা যানি না। আর বাবা বলছে একটা কিছুও বাকি রাখা যাবে না!এর থেকে যদি কেউ আমাকে সাতদিন না খেয়েও থাকতে বলে তাতেও আমি রাজি কিন্তু এতো এতো খাবার আমি কিছুতেই আমার এই পুচকি ছোট্ট পেট টাতে চালান করতে পারবো না!আমার পাশেই ভাইয়ু বসে আছে বসে ছিলো।ভাইয়ুকে আমার এই অসহায় অবস্থা বুঝাতে ভাইয়ুর দিকে তাকালাম।কিন্তু ভাইয়ুর দিকে তাকাতেই আমি চুপসে গেলাম কেননা ভাইয়ুর রিয়াকশনও আমার মতোই। অথাৎ ভাইয়ুর পক্ষেও এগুলো পেটে চালান করা সম্ভব না।বাবা আবারও বলে উঠলেন,

—- মামনি মন খারাপ করো না আসলে এখন একটু টায়ার্ড ছিলাম তাই এরথেকে বেশি কিছু রান্না করতে পারিনি!তবে চিন্তা করো না রাতে আমি তোমাদের জন্য এরথেকেও ডাবল রান্না করবো।
বাবা কথাটা বলার সময় ভাইয়ু পানি খাচ্ছিলো।মুখে কিছুটা পানি নিয়েছিলো কিন্তু পানিটুকু আর গলা দিয়ে নামতে পারলো না।তার আগেই বাবা কথা শুনে মুখের সব পানি পিচকিরি মতো করে বেরিয়ে আসলো।আর ভাইয়ুর পাশেই আবদুল দাঁড়িয়ে ছিলো।যার দরুন পানিটুকু গিয়ে বেচারার মুখে আর জামায় গিয়ে পরলো।আবদুল আমাদের বাড়িতে কাজ করে। আমার থেকেও একটু ছোটো হবে।বেচারার মুখে পানিগুলো পারাতে চোখ মুখ খিঁচে দাঁড়িয়ে আছে।বাবার কথা শুনে আর এই ঘটনা দেখে কি রিয়াকশন দিবো বুঝতে পারছি না।ভাইয়ুও এমন আকস্মিক ঘটনায় থতমত খেয়ে গেছে।আর বাবা তো অকাক হয়ে তাকিয়ে আছে।কিছুটা রেগে ভাইয়ুকে ধমক দিয়ে বললো,

—- পানি টাও ঠিক করে খেতে পারো না?
—- বিশ্বাস করো বাবা আমি ইচ্ছে করে করিনি !
অসহায় ফেস করে বললো ভাইয়ু।বাবা আরো কিছু বলতে যাওয়ার আগেই পরিস্থিতি সামলাতে আমি বলে উঠলাম,
—- আবদুল ভাই তুমি রুমে গিয়ে মুখটা ধুয়ে জামা বদলে নেয়েও!
—- ঠিক আছে ছোটো মেডাম।
মাথা নেরে কথাটা বলেই দ্রুত পায়ে হেঁটে গেলো আবদুল। আবদুল চলে যেতেই আমরা যে যার খাওয়ায় মন দিলাম।ইচ্ছে না থাকলেও কিছুটা তো পেটে চালান করতেই হবে।তাই খাওয়া শুরু করেছি। বাবাই আমাকে খাবার বেড়ে দিয়েছে।খেতে খেতেই বাবা বললেন,
—- তূর্য শোন আমি তোর জন্য একটা মেয়ে দেখেছি। তোর তো বয়স কম হলো না!তাই এবার বিয়ের কাজ টা সেরে ফেলতে চাই। মেয়েটা…….

বাবা আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই ভাইয়ুর আগের বারের মতো মুখ থেকে পানিটুকু পিচকিরির মতো বেরিয়ে গেলো।দুর্ভাগ্য বসতো আবদুলও জামা পাল্টে সেই সময়ই ভাইয়ু পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।আর তার গায়ে গিয়ে আগের বারের মতোই পানি গুলো দিয়ে পরলো।বেচারা আবদুল তো এবার কাইন্দা দেওয়ার মতো অবস্থা। মাত্র শার্ট পাল্টে এসেছে। আর সাথে সাথেই আগের বারের মতো ভাইয়ু ভিজে দিলো।বাবা তো চোখ গরম করে ভাইয়ুর দিকে তাকিয়ে আছে।ভাইয়ুর অবস্থাও এখন করুন।বোকা হেসে বললো,

—– হে হে হে আবদুল কান্দিস না।দেখ শার্ট টা দেখতে ভালো লাগছিলো না।তাই তো আমার নিষ্পাপ মুখ পানি ছিটাইয়া ভিজিয়ে দিয়েছে।তুই চিন্তা করিস না আমি তোকে পাঁচ টা ভালো শার্ট কিনে দিবো।কিন্তু বিশ্বাস কর ভাই আমি ইচ্ছে করে কিচ্ছুটি করেনি!সবই আমার এই কপালের দোষ!
কথাটা বলতে বলতেই ভাইয়ু কপালে হাত দিলো।আমি মুখ ফুটে আবদুল কে আবারও জামা বদলাতে যাওয়ার কথা বলার আগেই আবদুল হাত দেখিয়ে কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে উঠলো,
—- যাইতাছি ছোটো মেডাম।
তারপর আবারও চলে গেলো।ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস সারলাম।ভাইয়ুরও এখানে কি বা দোষ!রিমি থাকতে বাবা আবার অন্য মেয়ের কথা বলতে এমন হওয়া টা স্বাভাবিক। তাই এনিয়ে আর বেশি খাটলাম না।বাবা এক কথায় দু কথা আবার বললেন,

—- ওহ্ তূর্য আমি আর চাই না চৌধুরী বাড়ির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকুক।তূবা মামনি যখন নিজে থেকেই বেরিয়ে আসতে পেরেছে ওই বাড়ি থেকে তাই এখন অফিসিয়ালি ওই বাড়ির সাথে আমাদের সম্পর্ক টা একেবারে শেষ করে দিতে হবে।তুই কালকে গিয়ে নীর চৌধুরীর থেকে ডিভোর্স পেপারে সাইন করিয়ে আনিস। আমি আগেই ডিভোর্স পেপার রেডি করে রেখেছি।এখন শুধু তুই ওর থেকে সাইন টা আনলেই……
বাবার কথাগুলো শুনে আমি কিছু বলতে যাবো তার আগে ভাইয়ু আবারও মুখ থেকে পিচকিরির মতো করে পানি বের করে দিলো।এবারও নিশ্চয়ই একি কান্ড ঘটেছে সেই ভেবেই আমি কপালে এক হাত দিয়ে বিরক্তি সূচক মাথা নিচু করলাম।আগের বার নাহয় ভাইয়ুর ব্যাপারে কথা হচ্ছিলো।কিন্তু এইবার তো আমার ব্যাপারে কথা হচ্ছিলো তারপরেও ভাইয়ুর এমন রিয়াকশনে আমি সত্যি খুব বিরক্ত। বেচারা ছেলেটাকে কইবার ভিজিয়ে দিলো।কিন্তু আমার ধরনা একদম ভুল প্রমানিত হলো যখন আবদুলের খুশির চিৎকার কানে এলো।

—- ইয়েয়ে!এইবার আর ভিজাইতে পারে নাই ছোটো সাহেব!
আবদুল মুখের সামনে একটা ট্রে নিয়ে দাঁড়িয়ে কথা খুলো আনন্দে গদগদ হয়ে বললো।বিশ্ব জয় করার মতো হাসি ফুটে উঠলো তার মুখে।শুধু আবদুলের মুখেই হাসি ফোটে নি আরো একজনের মুখেও হাসি ফুটলো।সে আর কেউই না আমার অনলি ওয়ান ভাইয়ু।এবার আর তাকে বাবার ধমক খেতে হলো না।সময় মতো মুখের সামনে ট্রে টা না ধরলে আগের বারের মতোই ঘটনা ঘটতো।কিন্তু মুহূর্তেই আমাদের হাসি মুখ বিস্ফোরিত হয়ে গেলো আবদুলের আরেকটা কথা শুনে।
—- আমি আগের থেইকা পিপাডেট ছিলাম বইলা কথা!
খুব গর্ব নিয়ে কথাটা বললো আবদুল। কিন্তু আমাদের মুখ গুলোর ওর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো ও আসলে বললোটা কি?ভাইয়ু ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
—- ভাই এইডা কোনো দেশি ভাষা কইলা?এই শব্দ টার অর্থই বা কি?
আবদুল অবাক হয়ে ভাইয়ুর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো।ভাইয়ুর মুখ থেকে এই কথাটা শুনে যেন আসমান থেকে পরলো এমন একটা ভঙ্গিমায়।
—- ছোটো সায়েব এইডা আমনে কি কন?এইডা তো আমনেই জানবেন কোন দেশি ভাষা কারণ এইডা তো আমি আপনের থিকাই শিকছি।

—- ভাইয়ু এই ধরনের আজগুবি শব্দ আবদুল কেন শিখাইছো?
দাঁতে দাঁত চেপে ভাইয়ুর দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললাম।ভাইয়ু কাঁদো কাঁদো ফেস করে বললো,
—- বিশ্বাস কর পরী আমি জীবনে প্রথম এই শব্দ টা শুনলাম।
কিন্তু আবদুল ভাই তো কখনো মিথ্যে বলে না তাহলে কি ভুল শব্দ বলে ফেলছে।আমি একবার আবদুল ভাই কে পরক করে দেখলাম।হাতে একটা ট্রে দেখতেই বুঝে গেলাম কি বলতে চেয়েছে।
—- আবদুল ভাই মনে হয় প্রিপেইড বলতে চেয়েছিলো।
—- হ ছোটো মেডাম হেইডাই কইছিলাম।
আমার কথার সাথে সাথেই আবদুল বলে উঠলো। বাবা আবারও কিছু একটা বলতে নিলে আমি দ্রুত বলে উঠি,
—- প্লীজ বাবা কিচ্ছু বলো না ভাইয়ুর আজকে পিচকিরি মারার রোগে ধরেছে। তুমি কথা বললেই ভাইয়ুর রোগটা শুরু হয়ে যাচ্ছে। প্লীজ কিছু বলোনা।বাবাও আর কিছু বললো না।এতোক্ষণ বাবাও ভাইয়ুর উপরে খুব বিরক্ত হয়ে গেছে।ভাইয়ুর অবস্থা এখন এখন খুব খারাপ। মারে না মাটিতে মিশে যেতে।একটু পরেই তাড়াতাড়ি খেয়ে মানে মানে কেটে পরলো ভাইয়ু।

আকাশে কালো কালো মেঘ জমেছে। অনেকটা অন্ধকারও হয়ে গেছে।একটু পরই হয়তো বৃষ্টি নামবে।ঠিক আমার মনের মতো অবস্থা।এখানে থাকলেও মনটা পরে আছে নীরের কাছে।বারবার নীরের কথা মনে পরছে।ওকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।কিন্তু কি করবো আমি ইচ্ছে করেই তো ওর থেকে এতো দূরে আছি।ভেবে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললাম।আচ্ছা নীরেরও কি এখন আমার কথা মনে পরছে? আমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে?হয়তো পরছে!হয়তো বা না!ইসস এখন নিজের উপরই রাগ হচ্ছে কেন যে তখন ওগুলো বলতে গেলাম।কিন্তু এগুলো ছাড়াও তো কোনো উপায় নেই। থাকুন না।একটু বিরহ আমাদের মধ্যে! ক্ষতি কি?শুনেছি দুরত্বই কাছে আসার আনন্দ শতো গুণ বাড়িয়ে দেয়।হয়তো আমাদের ক্ষেত্রেও তাই হবে।
কি কারনে তূবা সিকদার বাড়ি তা জানতে হলে আমাদের যেতে হবে ফ্লাশব্যাকে যেতে হবে।
ফ্লাশব্যাক………..

প্রেমের সাতকাহন পর্ব ১৯

চোখের পানি মুছে নিয়ে ভাইয়ু আর নীরের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে দুজেই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো।অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক কারণ এতো কিছু শোনার পরও আমি এতোটা স্বাভাবিক। ওদের অবাকের মাত্রাটা আরো বেড়ে গোলো যখন আমি বললাম,
—- কাল সকালেই আমি বাবার কাছে চলে যাবো।
—– হোয়াইট????
চিৎকার দিয়ে উঠে নীর আমার দুই ঝাঁকিয়ে বললো,
—- তুই কি বলছিস তোর কোনো ধরনা আছে?আমরা তোকে কতো কষ্ট করে ওই বাড়ি থেকে বের করলাম।আর তুই কিনা বলছিস আবার সেই বাড়িতেই ফিরে যাবি!সব কিছু জানার পরও!তুই ওই বাড়িতে থাকলে একদম সেইভ না। রঞ্জনের লোকেরা তোর ক্ষতি করার জন্য উঠে পরে লেগেছে।ওই বাড়িতে তোকে ওরাা খুব সহজেই হাতের কাছে পেয়ে যাবে।কারণ কাকুর এখন সব থেকে ভরসা করেন ওই রঞ্জন কে! বলতে গেলে চোখ বন্ধ করে অন্ধ বিশ্বাস করে।আর তুই কিনা….তুই জানিস ওই বাড়িতে না দেওয়ার জন্য কাকুর সাথে আমি কতোটা খারাপ আচরণ করেছি?
তারপরই নীরের সাথে সেইদিনের বাবার সাথের সব কথপোকথন গুলো বললো।আমি সেগুলো শুনে কিছুটা রেগে বললাম,

—- নীর বাবার সাথে তোর এগুলো করা একদম ঠিক হয়নি।কতোটা কষ্ট পেয়েছেন উনি!
—- আমি জানি কাকু খুব কষ্ট পেয়েছে এইভাবে অপমান করে কথানা বললে কাকু কখনোই যেতো না।কাকু কে আমি চিনি তোকে না নিয়ে কখনো যেতো না তাই আমার এগুলো করা।বিশ্বাস কর এগুলো করে আমি নিজেও খুব কষ্ট পেয়েছি।
—- হুম বুঝলাম।কিন্তু আমাকে এখন ওই বাড়িতে যেতেই হবে।কারণ ওদের জালেই ওদের ধরতে চাই।
কথাটা বলেই একটা বাঁকা হাসি দিলাম।কিন্তু তাও ভাইয়ু আর নীর কিছুতেই আমাকে ওই বাড়ি যেতে দিতে রাজি না।নীর তো এক পায়ে খাড়া আমাকে কিছুতেই যেতে দেবে না।অনেক কষ্টে আমি রাজি করালাম দুজন কে।এরজন্য আমাকে অনেক নাকানিচুবানি খেতে হয়েছে অবশ্য!

প্রেমের সাতকাহন পর্ব ২১