সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১১ || Fatema Khan

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১১
Fatema Khan

আরিশের বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে তাহিয়া।আরিশ তার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে আর তাহিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।পরে তার কপালে নিজের ঠোঁট ছুয়ে দেয়।তারপর আরিশও ঘুমিয়ে পরে।
সকালে তাহিয়ার ঘুম ভেঙে যায়,সে তার উপর ভারি কিছু অনুভব করতেই কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায়।তাকিয়ে দেখে আরিশ বাচ্চাদের মত মুখটা হালকা খোলা রেখে ঘুমাচ্ছে।তাহিয়া আরিশের মুখটা বন্ধ করে পাশে থাকা আরিশের শার্ট পরে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
১ঘন্টা লম্বা শাওয়ার নেয়ার পর তাহিয়া বের হয়ে দেখলো আরিশ এখনো ঘুমিয়ে আছে।তাহিয়া তাকে উঠতে বলে-
তাহিয়াঃআরিশ উঠো, তোমার তো কাজ আছে উঠো।যাবে না?
আরিশ আরমোরা ভেঙে আমার দিকে তাকিয়ে বললো –
আরিশঃআজ যে তোমায় ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না।
তাহিয়াঃআগে কাজ বাকিসব পরে।এবার উঠো।
আরিশঃকই তুমি আমাকে বলবে না যাওয়ার জন্য, আর তুমি কিনা আমাকে ঠেলে পাঠিয়ে দিচ্ছো।
তাহিয়াঃবুঝতে পারছি এবার তুমি উঠো আর শাওয়ার নিয়ে আসো।
(তাহিয়া জোর করে আরিশকে উঠিয়ে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিলো)

সকাল ৮ঃ০০।
তূর্যঃবাবা তাহিয়া কেমন আছে এখন?ওর সাথে তো কথাও হয় না ভালো করে।
আরমানঃতোমার কাছে সময় আছে নাকি তোমার বোনদের খবর নেয়ার।আমার বিজনেস ছাড়া কি এমন কাজ করো যার জন্য আমাদের কারো সাথে তোমার ভালো করে দেখাও হয় না।
আফসানাঃআহা ছেলেটা খেতে বসেছে তুমি আবার শুরু করে দিলে।
আরমানঃওর একটা পরিবার আছে তাদের জন্যও তার সময় বের করার দরকার।
তূর্যঃআমি চেষ্টা করি নিজেকে ফ্রি রাখার, তা বললে না তাহিয়া এখন কেমন আছে?
আরমানঃভালো আছে।আর ও এখন কক্সবাজারে আছে আরিশের সাথে ঘুরতে গেছে কিছুদিন।
তূর্যঃভালোই হলো কয়েকদিন ঘুরে আসলে ভালো লাগবে।
আরমানঃ হুম।আচ্ছা আমি উঠছি।
তূর্যঃঠিক আছে।
আফসানাঃতুই খা বাবা তোর বাবার কথা শোনে না।উনি তো এমনই।(তূর্যের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

রায়হানঃআরিশ কল করেছে?ওদের কি খবর এখন?
নীলিমাঃকরেছিলো,সকালে কল করেছে তাহিয়া ওরা ভালো আছে।
রায়হানঃতোমাকে একটা কথা বলা হয়নি,আমাদের ৭০০ব্যাগ গার্মেন্টস প্রোডাক্ট দুবাই ডেলিভারি হয়েছে তা ওইখানে কাস্টমারদের কাছে খুব পছন্দ হয়েছে।
নীলিমাঃএটা তো খুব ভালো কথা।আরিশ যানে?
রায়হানঃআরিশই আমাকে এই খবরটা দিয়েছিলো।কিন্তু সেদিনই তাহিয়া ছাদ থেকে পরে যাবার ফলে আমার মাথা থেকে বের হয়ে গেছে।
নীলিমাঃতাহিয়া আমাদের আরিশের জন্য খুব লাকি বলো।ও আসার পর থেকেই সব ভালো হচ্ছে।কিন্তু ওকে মারতে কে চায় বলোতো।
রায়হানঃসেটা কিভাবে বলব বলো,কিন্তু খারাপ লাগে এই পিচ্চি মেয়েটারও বুঝি শত্রু আছে।এত সুন্দর একটা মেয়েকে মারতে কারো হাত কাপে না।
নীলিমাঃকি বলবো বল।আচ্ছা তুমি কফি খাবে?
রায়হানঃ হুম মন্দ হয়না।

“আরিশ শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে আয়নার সামনে নিজের চুল হাত দিয়ে ঠিক করছেন।আমি তার দিকে তাকিয়ে আরেকদফা ক্রাশ খেলাম।ওনার শরীরে বিন্দু বিন্দু পানি,চুল থেকে ফোটা ফোটা পানি পরছে।মেয়েরা সদ্য গোসল কিরে আসলে তাদের নাকি রূপবতী লাগে।ছেলেদেরও যে এতটা আকর্ষনীয় লাগতে পারে তা আমার এই মিস্টার অসভ্য নামক বরটাকে না দেখলে যানতেই পারতাম না।
আরিশঃতোমার বর আমি এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার কি আছে,সামনে নিয়ে বসে ভালো করে দেখো।
“আরিশের কথা শুনে লজ্জায় চোখ নিজে থেকেই নিচে নেমে গেলো।ছিঃ কি বেহায়ার মত করছি আমি।নিজের বরের দিকে কেউ এভাবে তাকায়”
আরিশঃকি এত ভাবছো,চল নাস্তা খেয়ে নিবে।
তাহিয়াঃ ঠিক আছে চলো খেয়ে নিই তুমি যাবা কখন যাবে?
আরিশঃএইতো নাস্তা করে বের হয়ে যাবো।
(তারপর দুইজনে নাস্তা করার পর আরিশ তৈরি হয়ে চলে যায়,আর তাহিয়া ফেসবুকে স্ক্রল করতে ব্যাস্ত হয়ে পরে)

১০ঃ৩০ কলেজে,
এই তাহসিন দাড়া।(তাহসিন কিছুটা দূরে ছিলো বলে একটু জোরে ডেকে উঠলো তনিমা)
তাহসিনঃআরে তনিমা,আমি ভাবছিলাম তুই আজ আসবি না।
তনিমাঃআমি তো আসতে চাইনি, কিন্তু আমার হিটলার জামাই জোর করে পাঠিয়ে দিলো।
“তাহসিন এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে তাহিয়াকে খুজে চলছে।”
তনিমাঃকাকে খুজছিস?তাহিয়াকে তাই না।
তাহসিনঃওরে খুজতে যাবো কেনো? ইদানীং তুই একটু বেশি কথা বলিস।আর তাহিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে,আমি অনেক খুশি কারণ তাহিয়া সুখে আছে।(বলতে গিয়ে গলা ধরে এলো,চোখের কোণায় পানি জল এসে গেলো তাহসিনের)
তনিমাঃ সত্যি তোর মত কয়জন ভালোবাসতে পারে যে কিনা ভালোবাসার মানুষটিকে খুশি দেখে নিজের কষ্টগুলো ভুলে থাকতে পারে।
তাহসিনঃসেসব বাদ দে,আগে বল তাহিয়া এখন কেমন আছে,ওর শরীর এখন ঠিক আছে তো?
তনিমাঃআগে থেকে বেটার আছে।আর ও আজ দুইদিন হলো কক্সবাজারে আছে।
তাহসিনঃহানিমুনে বুঝি।
তনিমাঃআরে না আরিশের কাজ আছে তাই তাহিয়াকে সাথে নিয়ে গেছে।
তাহসিনঃওহ ভালোই হলো,একটু ঘুরে আসলে ওর মনটাও ফ্রেশ লাগবে।আচ্ছা চল ক্লাসে।
তনিমাঃসেই চল ক্লাসের দেরি হয়ে যাবে।

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১০

৫দিন পর,
আজ আমরা ঢাকা চলে আসবো,এই সাতদিন আমরা খুব এনজয় করছি।আজ একটু খারাপ লাগলেও আনন্দও লাগছে।কতদিন পর আবার সবার সাথে দেখা হবে।
আমরা বাসায় এসে পৌছাই রাত ৯ঃ০০ টার দিকে।তারপর আমরা দুইজনে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পরি।খুব ক্লান্ত ছিলাম তাই তারাতাড়ি ঘুম চলে এলো

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আরিশ আমার পাশে নেই।ওয়াশরুমের দিকে তাকিয়ে দেখি আরিশ সেখানেও নেই।তাহলে মনে হয় নিচে গেছে।আমি ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের চুল ঠিক করছি।ঠিক সেই সময় নিচে থেকে অনেক শব্দ আমার কানে আসতে লাগলো।কৌতুহল থেকে নিচে নেমে আসি।নেমে আমি যা দেখলাম আমি তা কল্পনাও করি নাই।

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১২