You are mine part 7 || bangla golpo

You are mine part 7
Poly Anan

মনের মাঝে ভয় দ্বন্দ থাকা সত্তেও হাসিনের ফোনটি রিসিভ করে নেয় ঈশা।
“হ্যালো হাসিন ভাইয়া কেমন আছো?
” ভালো থাকতে কি তুই আর দিলি?
“ক..কেন আমি কি করেছি(চোখ ব ন্ধ করে)
” একদম নাটক করিবিনা না ঈশা।তুই ঈশানকে বিয়ে করেছিস। তা আমাদের একবার জানালিও না। কিভাবে পারলি তুই এতো বড় একটা কান্ড ঘটাতে।
“ভ..ভাইয়া আমাকে মাফ করে দাও প্লিজ! (কান্না করে)
” আমি মাফ করার কে হ্যা। তুই আমাদের ঠকিয়েছিস মামাকে ঠকিয়েছিস।তুই যানিস মামা হার্টের রোগি তোর এই কথা যানলে মামার কি হবে ভেবে দেখেছিস?
“ভাইয়া(অস্পুষ্ট স্বরে)

” একদম ভাইয়া ডাকবি না। আমি ওই দিনি বুঝেছিলাম ঈশান আর তোর মাঝে কিছু চলছে না হলে ঈশান তোর দিকে এইভাবে তাকিয়ে ছিল কেন?আর তুই ও ঈশানকে দেখে কেন ভয় পেয়ে গেছিলি!
মোবাইলের কথা গুলো পাশ থেকে ঈশান ও শুনছে মোবাইল রিসিভ করার সময় ঈশান স্পিকার টা অন করে দেয়।ঈশা চকিতে ঈশানের দিকে তাকায়।আর ঈশান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে আছে।
“ভাইয়া ব..বাবা কি যানে(ঢোক গিলে)
” কোন মুখে যানাবো মামা কে তোর এই কথা। তুই যানিস মামার তোকে নিয়ে কত আশা ছিল। আর বায় দা ওয়ে তোর একটা কথা জেনে রাখা ভালো মামা তোর বিয়ে চার মাস আগেই ঠিক করে রেখেছিল।তার কানাডার বন্ধুর ছেলের সাথে। সামনের মাসে তোদের এনগেজমেন্টের কথা চলছিল কিন্তু তুই কি করলি?মামার সম্মানের কথা তুই একবারো ভাবলিনা। কাজটা তুই ঠিক করিস নি ঈশা।মা কাদছে সকাল থেকে। ভালো থাকিস ওই গুন্ডাটার সাথে।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

হাসিন খট করেই ফোনটা কেটে দেয়। এদিকে ঈশা হাটু মুড়ে ফ্লোরে বসে কান্না শুরু করে।ঈশার চোখের প্রতিটি জল কণা ঈশানের বুকে ঝড় তুলছে। নিজেকে সামলে ঈশার পাশে গুটিয়ে বসে ঈশান।
“ঈশা কেদোনা সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাকে একটু সময় দাও আমি নিজেই সবটা ঠিক করে দেবো।আচ্ছা এখন নিচে চলো।
খাওয়ার টেবিলে বেশ আয়েশি ভঙিতে খাচ্ছে ঈশান। হুট করেই তার মা এমন একটি কথা শুনালো যার ফলে ঈশানের খাওয়াটাই বন্ধ হয়ে গেলো।
” ঈশান শুন তোর বড় জেঠিমা আসবে তুই আবার কোন গন্ডগোল পাকাস না।
“কি?উনাকে কে খবর দিয়েছে মা?
” আমি দিয়েছি কেন কি হয়েছে।সবাই যানে তোর বিয়ে হয়েছে তাকে জানানো হবেনা কেন?
“তুমি যানো মা আমি ওই মহিলাকে সহ্য করতে পারি না তারপরেও কেন এই বাড়িতে আসতে বললে তাকে।

” চুপ কর ফাজিল ছেলে আমি যানি ভাবি একটু কটু কথার মানুষ কিন্তু তুই ও কম না মুখে মুখে সারাদিন তর্ক লেগে থাকিস।
ঈশা চুপ চাপ মাথা নিচু করে দুই পক্ষের কথা শুনে যাচ্ছে কিন্তু তার মাথায় কিছুই ডুকছে না। ঈশানের সাথে আবার তার জেঠিমার কি সমস্যা।
“লিসেন মা, জেঠিমা সবাইকে নিয়ে কটু কথা বলে যা তোমরা আমাকে সহ্য করতে বলো।যদিও আমার সহ্য হয় না।তিনি তো আমার পেছনে চুইংগামের আঠার মতো এমনিতেই লেগে আছে কিন্তু এবার যদি আমার বউয়ের পেছনে লাগে আই সোয়্যার মা সব কিছু ধ্বংস করে দেবো আগেই বলেছি ওই মহিলা সুবিধার না আমার সংসারে যেন কোন আগুন না লাগায়। বাবা তোমাকে ও বলে রাখলাম। (আবিদ কে লক্ষ্য করে)
ঈশান খাওয়ার টেবিল থেকে উঠে গিয়ে ঈশার দিকে তাকিয়ে একটি আদেশ বাণী ছুড়ে দেয়।
” ঈশা খাওয়ার শেষ করে রুমে আসবে কুইক।আমি যেন তোমাকে উলটা পালটা কিছু করতে না দেখি।
ঈশা ভয়ে একবার ঢোক গিলে মাথা নেড়ে সায় দেয়।ঈশানের বাবা আদিব মনে মনে হাসতে থাকে তিনি যানেন তার ছেলে একটি আগুন।
ঈশান খাওয়ার টেবিল ছেড়ে আড়ালে তাদের বিশ্বস্ত বহু পুরনো সার্ভেন্ট রহিমাকে ডাকে।

“ভাইয়া কিছু বলবেন?
” শুন তোকে কয়েকটা কথা বলি!আমি শুনেছি জ্যাঠিমা আসবে তুই একটু তোর ভাবির দিকে নজর দিস।এই মহিলার বিশ্বাস নেই কখন কি বলে ফেলবে ঈশাকে।তুই একটু ঈশাকে চোখে চোখে রাখিস।আমি তো আর সব সময় বাড়ি তে থাকবো না!
“আচ্ছা ভাইয়া দেখে রাখবো।
ঈশানের জেঠিমা এসেছে প্রায় ২০ মিনিট হতে চললো আসার পর থেকেই সারা বাড়িতে যেন আগুন ঝরছে।
” কিরে মাহমুদা তোর পুত্র বধু কই। দেখি তাকে একবার তার চেহারা খানা দেখিয়ে আমাদের উদ্ধার করুক।
“আসছে একটু অপেক্ষা করুন ভাবী।
ঈশানের জেঠিমার নাম লিপি বেগম।তিনি দেখতে মধ্যেম বয়সের মহিলাদের মতোই। চেহারায় যেন এখনো টগবগে যৌবনের রঙ ঝরছে।স্বভাবের দিক থেকে তিনি একটু ঝাঝালো টাইপের। কারো সাথে তেমন ভালো করে কথা বলেন না এবং কি নিজের স্বামী সন্তানের সাথেও না। লিপির হাসবেন্ড সবসময় তার কথা অনুযায়ী চলেন এক কথায় ঘরময় রাজত্য শুধু লিপির একার।দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া তার মাত্র একজন মেয়ে আছে।আগে থেকেই হরমন সহ বিভিন্ন সমস্যার কারনে লিপির বাচ্চা জন্মাতে সমস্যা হচ্ছিলো।অনেক সাধনার পরে জন্ম নেয় তার মেয়ে লিজা।লিজা সম্পূর্ণ তার মায়ের বিপরীত। সে হাসি খুশি সবার সাথে মিলে মিশে চলতেই পছন্দ করে।
ঈশাকে সিড়ি দিয়ে উপর থেকে নামতে দেখে এগিয়ে আসে লিজা।

” ওমা কি সুন্দর বউ! আমার ঈশান ভাইয়া তবে ঠিক বলেছে তার বউ হবে চাঁদের মতো। যার মায়ায় সহযে ডুব দেওয়া যায়।
ঈশা মুচকি হেসে লিজার দুগাল টেনে দেয়। কিন্তু লিপির কথা শুনে ভড়কে যায় সে।
“এই বেয়াদপ মেয়ে আগে এসে মুরব্বিদের সালাম করো!তারপর খোশ গল্পো করো।
ঈশা বাধ্য মেয়ের মতো লিপির সামনে গিয়ে মুখে সালাম করে।
” কিরে মাহমুদা তোর ছেলে একটা বেয়াদপ মেয়ে বিয়ে করে এনেছে মুরিব্বিদের যে পায়ে ছুয়ে সালাম করতে হয় তা কি সে যানে না।নাকি কেউ কিছু শেখায় নি?
ঈশা ড্যাবড্যাব চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকে লিপির দিকে। তার জীবনে এতো জঘন্য কর পরিস্থিতি আগে আসেনি।কিন্তু হুট করেই কোথা থেকে কি হয়ে যাচ্ছে সে সবকিছুর তালগোল পাকিয়ে ফেলছে।
“এই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে কি দেখছো সালাম করো পা ছুয়ে!
ঈশা মাথা নত করে পা ছুয়ে সালাম করতে নিলে কোথা থেকে ঈশান এসে তার হাতটা খপ করে ধরে নেয় আর ঈশার দিকে একটু রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।

” যে যা বলবে তুমি তাই করবে?রিডিকিউলাস!
“কিরে ঈশান তুই তোর বউকে সালাম দিতে বাধা দিলি কেন?
” জেঠিমা আসসালামু আলাইকুম। আমার বউকে আমি কখনো আমার নিজের পা ছুয়ে পর্যন্ত সালাম করতে দিনি তাহলে আপনাকে দেবে কোন সাহসে।যার তার পায়ে হাত আমার বউ দেবে না।
ঈশা চকিতে তাকায় ঈশানের দিকে। এই মানুষ্যটা মাঝে মাঝে এমন কথা বলে, যেনো তেকে সে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে।
“কিরে মাহমুদা তোর ছেলে দেখছি বিয়ে করতে না করতেই বউয়ের আচঁলে মুখ লুকিয়েছে। ছেলেকে সামলা পরে হাত ফসকে বেরিয়ে যাবে।
মাহমুদা প্রতিটা কথা হজম করে নিচ্ছি। কিন্তু তিনি ঈশানের চোখের দিকে তাকাতে সাহস পাচ্ছে না। কারন ঈশান আগেই বলেছে ঈশাকে নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি হলে সে ছেড়ে কথা বলবেনা।
“বউয়ের আচঁলে মুখ লুকানোর মতো আমি কিছু করিনি জেঠিমা।আমার একমাত্র বউ তাকে প্রটেক্ট করা আমারি দায়িত্ব।

” লিজা(লিজাকে উদ্দেশ্য করে ঈশান)
“হ্যা ভাইয়া বলো?
” তোর ভাবিকে নিয়ে উপরে যা। সেখানে গল্প কর।
“যাচ্ছি!
ঈশা যেতে নিলেই আরেক হুংকার বাণী ছুড়ে দিলেন লিপি!
” এই মেয়ে ড্যাংড্যাং করে উপরে যাচ্ছো কেন?যাও আমার জন্য চা করে আনো?
ঈশা পেছনে ঘুরে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালে এক ধমক দেয় ঈশান।
“এই তোমাকে আমি উপরে যেতে আদেশ করেছি!
” হুম(ভয়ে ঢোল গিলে)
“তাহলে ওইদিকে কি? খবরদার আবারো বলছি ঈশা আমার আদেশ নির্দেশ ছাড়া যদি অন্যকারো আদেশ শুনেছো তবে হাত পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো।
বেচাঁরি ঈশা দুইদিকেই ফেসেঁছে সে কোন দিকে যাবে বুঝে পায় না।মাহমুদার দিকে একবার তাকালে তিনি উপরে চলে যেতে ঈশারা করে।
” আর জেঠামা আপনাকে বলছি কোন বেয়াদপের হাতের চা আপনার পান করা প্রয়োজন নেই।আপনাকে বরং আগে যেভাবে আমাদের সার্ভেন্টদের হাতের চা পান করতেন এবারো করুন।
ঈশান তার মায়ের দিকে একপলক তাকিয়ে সরে আসে।
ঈশান বেরিয়েছে প্রায় অনেক্ষন হয়েছে এদিকে রুমে বসে খোশ গল্পে মেতে উঠেছে ঈশা আর লিজা।এমন সময় একটা অচেনা নাম্বার থেকে ঈশার ফোনে কল আসে।

“হ্যালো কে বলছেন?
” ঈশা আমি লিমন।
লিমন নামটা শুনেই বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠে ঈশার। আজ এতোক্ষনে সে লিমনের বউ হয়ে থাকার কথা ছিল কিন্তু সে এখন কোথায়।
“তুই কেমন আছিস
” তোকে ছাড়া আমি ভালো নেই ঈশা প্লিজ ফিরে আয়।
লিজার সামনে কথা বলতে কিছুটা অসস্তি বোধ করছে সে, লিজা বুঝতে পেরে বারান্দার দিকটায় চলে যায়।
“আমিও প্লিজ তুই আমাকে নিয়ে যা।আমার এখানে একটুও ভালো লাগছেনা প্লিজ লিমন আমি তোর কাছে যেতে চাই।
” তোকে আমার কাছে খুব শীঘ্রই নিয়ে আসবো তুই শুধু আমার সাথে যোগাযোগ রাখিস প্লিজ।
“আচ্ছা।পরে কথা বলবো।
রাতের খাওয়াত টেবিলে বসে আছে ঈশান ঈশা,মাহমুদা, আবিদ, লিজ আর লিপি।লিপি একের পর এক খোচা দিয়ে কথা বলে যাচ্ছে আর সে সব দাতে দাত চেপে সহ্য করছে ঈশা।

” ঈশান আমি আগেই বলে রাখি তুই ফেসেঁ গেছিস।এই মেয়ে তোকে তার রুপের ঝলকে পাগল করছে। নাহলে আমাদের ঈশান এতো সহযে কোন মেয়ের জন্য পাগল হওয়ার কথা না।তাছাড়া আমার তো সন্দেহ হয় এই মেয়ের কোন বংশ পরিচয় আছে কি না। আজ সারাদিন গেলো কই তার পরিবারের একটা সদস্যকেও এই বাড়িতে দেখলাম না।আসলে এরা রাস্তার মেয়ে যেই বড়লোক ছেলে বাগে পায় ওমনি সেই ছেলেকে পাগল বানিয়ে ছাড়ে। তাই বলছি সময় আছে ওই মেয়েকে তালাক দে।
আর কোন কথা শোনার সহ্য ক্ষমতা ঈশার নেই।অনেক কষ্টে চোখের কোটরে জমিয়ে রাখা অবাধ্য জল চোখের কার্নিশ বেয়ে টুপটাপ নিচে নেমে আসে।কিন্তু ঈশান সবটা মুখ বুঝে কি করে সহ্য করে নিচ্ছে ভেবে পায় না সে।অর্ধেক মাখানো ভাত কিছুতেই আর গলা দিয়ে নামছেনা তার। কলিজাটা যেন আজ ছিন্ন বিন্ন হয়ে গেছে। আজ তাকে এই প্রথম রাস্তার মেয়ে বলে বিবেচনা করা হলো!বাহ আর সবটা মুখ বুঝে সহ্য করে নিচ্ছে আশে পাশে থাকা বাড়ির বাকি সদস্য রা।

ঈশান গম্ভীর হয়ে প্লেটের ভাত গুলোকে খুটে খুটে দেখছে।আবিদ আর মাহমুদা বুঝতে পারছে ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে ঈশান। কেননা সে ঠান্ডা মাথায় সবটা সহ্য করে নিচ্ছে।
“আহ ভাবী এই ভাবে কথা বলছেন কেন?সংসার আমার ছেলে করবে তাই যেমনি হোক আর ঈশা যেমন তেমন ঘরের মেয়ে না,সে যথেষ্ট ভালো ঘরের মেয়ে।বরং এইসব কথা বলে আপনি নিজে আপনাকে ছোট মনের পরিচয় দিচ্ছেন।(এক নিশ্বাসে আবিদ)
” হ্যা ঠিক বলেছো ঈশানের বাবা, ভাবী এতোটা বাজে ভাবে কথা না বললেও পারেন। আমার ছেলের তাকে পছন্দ আমাদের তাকে পছন্দ তাতে আপনার সমস্যা কোথায়।(মাহমুদা)
“বাহ ;বাহ এখন বুঝি আমার দেওর ও আমার মুখের উপর কথা বলবে।আমি বলে রাখছি এই রাস্তার মেয়ের জন্য তোরা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবি।যতসব রাস্তার নোংরা মেয়ে। বাপ,মার পরিচয় ঠিক করে যানে কি না জিজ্ঞেস কর।

ঈশার কানে এক এক টা কথা আগুনের ফুলকির মতো লাগছে সে খাওয়ার টেবিল ছেড়ে উঠতে নিলেই ঈশান গম্ভীর কন্ঠে ধমক দিয়ে উঠে,,
” ঈশা খবরদার যদি খাওয়ার রেখে যাও আমার থেকে খারাপ কেউ হবেনা।এই খাওয়ার গুলো যার তার টাকার কেনা না এগুলো তোমার শশুড় এবং হাসবেন্ডের টাকায় কেনা।যদি খাওয়ার ছেড়ে যাও আই সোয়্যার এমন চড় দেবো আর কানে শুনতে পাবেনা।
“য..যদি এই চড় টা আগে দিতেন তবে হয়তো আমাকে আর এইসব কথা শুনতে হতো না। কেননা আপনার চড়ে আমি তো আর কানেই শুনতে পেতাম না।(মাথা ঘুরিয়ে)
কথাটা বলেই ছুটে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় ঈশা।
ঈশানের দৈর্য্যর সীমা আজ পেরিয়ে গেছে নিজেকে সংযোত রেখে লিপির দিকে কঠিন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।ঈশানের দৃষ্টি দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায় লিপি।চোখ জোড়া লাল টক টকে হয়ে আছে। চোয়াল শক্ত করে নিজেকে সংযোত করছে।
” লিজা তুমি তোমার রুমে গিয়ে শুয়ে পরো(শান্ত কন্ঠে ঈশান)
লিজা চলে গেলে ঈশান এবার নিজের মুখ খুলে,

“প্রথমত, আপনি কি বলেছিলেন?আমি ফেসেঁ গেছি! হ্যা আমি সত্যি ফেসে গেছি তার চোখের মায়ায় সরলতায়,ভীতিকর চাহনীতে আমি সত্যি ফেঁসে গেছি।এতোটাই ফেঁসেছি যে দুনিয়া উল্টালেও আমার তাকে চাই।আমি তাকে ভালো বাসি মানে আমার তাকেই চাই অন্যকাউকে না।যদি সত্যি আমি তার মাঝে নিজেকে না ফাসাতাম তবে দুনিয়ার সব মেয়ের সাথে আমি হাসি খুশি আগের মতো হয়ে যেতাম। কিন্তু আমি তার কাছে ফেঁসে গেছি তাই আমার আর এখন অন্য কাউকে ভালোলাগেনা।তাই আবারো বলছি তাকে চাই মানে আমার তাকেই লাগবে এবার সে যেই হোক।
দ্বিতীয়ত,আপনি বলেছেন, এই ঈশান সহযে কোন মেয়ের প্রতি পাগল হওয়া এতো সোজা না।
হ্যা ঠিক ধরেছেন ওই মেয়ের মাঝে কোন বিশেষ্যত্ব আছে বলেই আমি তারপ্রতি পাগল।আমি তারপ্রতি এতোটাই পাগল যে সে আমাকে মানসিক শারীরিক এতো বার আঘাত করা শর্তেও আমি সবটা হাসি মুখে মেনে নিয়ে তার মাঝে আবার ডুবে যাই।

তৃতীয়ত, আপনি বলেছেন ওই মেয়ের কোন বংশ পরিচয় নেই। ওই মেয়ের বংশ পরিচয় দিয়ে আপনার কি?আপনি তো তার বাবার নখের সমান ও না। দেশ বিদেশে ব্যবসা করে নিজের সমরাজ্য গড়ে তুলেছেন।আর সেই রাজ্যের রাজ কন্যা একমাত্র তার মেয়ে ঈশা। আর আমি সেই রাজকন্য টাকে তুলে এনে চুরি করে বিয়ে করেছি।তাই কে রাস্তার মেয়ে ভেবে চিন্তে কথা বলবেন।আর রাস্তার মেয়ে আপনি নিজেই এইসব অসভ্য ভাষা ব্যবহার করে নিজেকে রাস্তার মেয়ের পরিচয় দিচ্ছেন।
চতুর্থত,আপনি বলেছেন আমার বউকে যেনো সময় থাকতে তালাক দি।মানে ছেড়ে দি।আরে আপনি তো এটাই যানেন না আমি পারলে তাকে কোন অদৃশ্য শক্তি দিয়ে আমার কাছে বেধেঁ রাখি।সে নিজেই আমার কাছ থেকে পালিয়ে বাচঁতে চায়। সে আমার কাছে থাকতে চায় না কিন্তু তবুও তাকে আমার কাছেই থাকতে হবে এই ঈশান শাহরিয়ারের রাজ্যর রানী হয়েই থাকতে হবে।প্রয়োজনে শেকল দিয়ে বেধে রাখবো তবুও আমার কাছে তাকে থাকতেই হবে।

আরেকটা কথা সকালে আপনি তাকে বেয়াদপ বলে গালি দিয়েছেন। গালিটা মূলত তাকে দেননি আমাকেই দিয়েছেন।কেননা ঈশা আর ঈশান দুজনের এক প্রাণে দুই দেহ তাই তাকে যা বলবেন তা কিন্তু আমাকেও বলা হবে।আর আপনি তার হাতের চা টেস্ট করতে চান। সেই কথাট ভদ্র ভাবে বললেই তো পারতেন এমন নোংরা আচরন করলেন কেন?তার বাবা তার জন্য বাড়িতে সার্ভেন্টের অভাব রাখেনি।তাই কখনো নিজের হাতে এক কাপ চা করেছে বলে আমার মনে হয় না।আর আপনি তার সাথে রাস্তার কুত্তার মতো আচরন করেন!স্ট্রেচঞ্জ।
এই কথা গুলো আমি আপনাকে ঈশার সামনেই জবাব দিতে পারতাম কিন্তু আমি চাইনা, আমার বউয়ের সামনে আপনি আর অপমানিত হন।
“ওমা ওমা বাপ ছেলে আমাকে সমান তালে অপমান করে যাচ্ছে ভালো কথা বলছি তাই তোদের সহ্য হচ্ছে না।

You are mine part 6

এবার ঈশান নিজের দৈর্য্যর সিমানা হারিয়ে ফেলে।সামনে থাকা কাচের জগটাকে মেঝেতে একটা আছাড় দেয়।
” কি ভালো কথা বলেছেন আপনি হ্যা কি ভালো কথা বলেছেন।আমি তো দেখিনি কোন ভালো কথা আপনি বলেছেন।
ঈশান একে একে সব ছুড়ে ভেঙ্গে ফেলে,ডাইনিং টেবিল টাকে উপড় করে ফেলে দেয়। কাচের সব জিনিস একদম ছিটকে এদিক সেদিক চলে যায়।কাচের টি-টেবিল টাকে নিজের হাতে সাথে বাড়ি দেয়। টেবিল ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায় সাথে ঈশানের হাত কেটে গল গল করে রক্ত ঝরতে থাকে।ঈশানের বাবা,মা এগিয়ে আসতে নিলেই সে হাত দিয়ে ঈশারা করে।আজকের রাগটা তার কিছুতেই কমছেনা। খালি পায়ে সমস্ত কাচের উপর হেটে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে কিছু কাচঁ তার পায়ের সাথে আটকে যায় কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে খুড়ে খুড়ে ঈশার রুমের দরজায় করাঘাত করে,

“ঈশু প্লিজ দরজা খোলো,রাগ করে না ঈশা প্লিজ।
এভাবে আরো কিছুক্ষন যায় কিন্তু ঈশা দরজা খোলার নামি নিচ্ছে না ঈশান রেগে দরজা ভাঙ্গার সিধান্ত নেয়,
“কসম ঈশা আমি কিন্তু দরজা ভেঙ্গে ফেলবো,।
দুই তিনবার ধাক্কানোর ফলে ভেতর থেকে ঈশা ভয় পেয়ে যায় আর তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দেয়।কিন্তু দরজা খুলে ঈশানের অবস্থা দেখে ঈশা অবাক না হয়ে পারলো না।

You are mine part 8