অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ২৮

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ২৮
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

গোসল দিয়ে জামা কাপড় কাঁচতে গিয়েই মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। তার পরীক্ষা চলছে। আগে পরীক্ষা এলেই মা বলতেন,
-“তোর কাজ করতে হবে না। পড়ায় মন দে।”
পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মুখে খাবার তুলে দিয়ে যেতেন। রান্নাঘর থেকে হাঁক ছেড়ে বলতেন,
-“গোসল দিয়ে জামা-কাপড় রেখে দে। আমি ধুয়ে রাখবো। তুই পড়তে বস।”

মায়ের কথা ভাবতে ভাবতেই দু-চোখ ফেটে অশ্রু গড়ালো। জামাকাপড় ধুয়ে চোখেমুখে পানি দিয়ে বেরিয়ে এলো। কলিং বেলের শব্দ শুনে তরী দৌঁড়ে গিয়ে দেখলো বাবা দরজা খুলে দিয়েছেন। তিয়াসের বাবা আর মা হাসিমুখে ভেতরে ঢুকলেন। হাতে ফল-মূলের অভাব নেই, সাথে মিষ্টির প্যাকেট। সোফায় বসতে দেওয়া হলো উনাদের। চাচি তরীকে টে*নে কাছে বসালেন। মুখে হাত দিয়ে আফসোস করলেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-“মেয়েটা শুকিয়ে কেমন কাঠ হয়ে গিয়েছে। এবার মেয়েটাকে আমার কাছে নিয়ে যাবো।”
তরীর ভেতরে ভয় ঢুকলো। ভড়কে গেল সে। তিয়াসের বাবা গলা ঝেড়ে বললেন,
-“রুবিনার মৃ*ত্য*র কারণে বিয়ের তারিখ পিছিয়ে গেল। এখন তো আর সমস্যা নেই। কাল নাহয় বিয়েটা হয়ে গেল। তরী আমাদের বাসায় আসা-যাওয়া করবে। পরে তিয়াস আসলে অনুষ্ঠান হবে।”

তরীর বাবার চেহারা থমথমে। তরী চোয়াল কঠিন করে নিলো। আজ সে চুপ করে থাকবেনা। মিঠু বাসায় ছিল। সবার আলাপ-আলোচনার মাঝখানেই তার উপস্থিতি ঘটলো। তাচ্ছিল্য হেসে বিদ্রুপ করে বলল,
-“যারা আমাদের দুঃসময়ে পাশে থাকেনি, তাদের কাছে আমার বোন নিরাপদে থাকবে? আমি কিছুতেই এই বিয়ে মানবোনা।”
বাবা গম্ভীর স্বরে বললেন,

-“মিঠু, বড়োদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানোনা?”
-“আমি খা*রা*প কিছু তো বলিনি। যা সত্যি সেটাই বললাম।”
তরী চাচির পাশ থেকে উঠে পড়ল। অনড় গলায় বলল,
-“আমি বিয়ে করবো না, বাবা। তিয়াস ভাইয়াকে ছোটো থেকেই ভাই হিসেবে জেনে এসেছি আমি।”
তিয়াসের মা-বাবা দুজনেরই চোখমুখ শক্ত। অপমানিত বোধ করলেন উনারা। তিয়াসের বাবা বললেন,

-“তিয়াস তোমার আপন ভাই নয়।”
অতঃপর তরীর বাবার উদ্দেশ্যে বললেন,
-“তুই কিছু বলছিস না কেন?”
তরীর বাবা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
-“এই ব্যাপারে পরে কথা বলি আমরা!”
তিয়াসের বাবা গর্জে উঠলেন।

-“তুই কি আমাদের এড়িয়ে যেতে চাইছিস? ছেলে-মেয়ে দুটো আমাদের মুখের উপর বে*য়া*দ*বে*র মতো কথা বলছে। তুই কিছুই বলছিস না?”
মিঠু অল্প বয়সি ছেলে। মেজাজ গরম হয়ে গেল তার। মাথার রগ ধপধপ করে উঠলো৷ রুক্ষ গলায় বলল,
-“বে*য়া*দ*ব*কে ঘরের বউ বানানোর এত ইচ্ছে কেন, আপনাদের?”
বড়ো ভাইকে সম্মান করলেও মনের মাঝে কিছু তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে তরীর বাবার। তবুও বাবা মিঠুকে ধমক দিলেন। যতোই হোক সে বে*য়া*দ*বি করছে।
-“মিঠু! ঘরে যা।”

ঘাড়ত্যাড়া মিঠু দাঁড়িয়ে থেকে বলল,
-“আমি তো ভুল কিছু বলিনি বাবা। আমাদের ভাইবোনকে বে*য়া*দ*ব বলে আবার কিভাবে আমার বোনকে চাচ্ছে? মায়ের অসুস্থতার সময় হাসপাতালে দৌঁড়ঝাপের সময় পাশে ছিল? অথচ তারা আমাদের আপনজন, আমাদের রক্ত। তখন পাশে ছিল দূরের মানুষগুলো। যাদের সাথে আমাদের আত্মীয়তা নেই, রক্তের সম্পর্ক নেই, তবুও আপনজনের মতো মাকে নিয়ে তোমার সাথে দৌঁড়েছে। তখন তো আমাদের নামমাত্র আপনজনরা কাজের দোহাই দিয়ে সরে পড়েছে।”
বাবা আবার ধমক দিলেন।

-“মিঠু তোকে যেতে বলেছি।”
তরীও ঘরের পথে পা বাড়াতে গিয়ে আরেকবার বলে গেল,
-“আমি কিছুতেই তিয়াস ভাইকে বিয়ে করবোনা।”
থামতে হলো তিয়াসের বাবার কথায়।
-“তো কাকে বিয়ে করবে? ওই ছেলেকে? দুদিন পাশে ছিল বলে সে আপন হয়ে গেল? না-কি তলে তলে প্রেম চলছে?”
তরী ঠান্ডা গলায় বলল,

-“আমি আপনাদের সাথে বে*য়া*দ*বি করতে চাইনা চাচা-চাচি। আমি কী করছি না করছি সেটা দেখার জন্য আমার বাবা আছেন। শাসনের জন্যও আমার বাবা যথেষ্ট।”
তরী আর থামলোনা। চলে গেল ঘরের ভেতর। তরীর বাবা নিশ্চুপ বসে রইলেন। স্ত্রী যাওয়ার পর থেকেই কেমন চুপচাপ হয়ে যাচ্ছেন তিনি। তিয়াসের বাবা-মা উনার নত মুখের দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে গেলেন। মিঠু জোর গলায় বলল,
-“আপনাদের ফল, মিষ্টি নিয়ে যান।”
তিয়াসের বাবা রাগে থরথর করে কাঁপছেন। আবার ফেরত এসে সব নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে তরীর বাবার উদ্দেশ্য বলে গেলেন,

-“কেমন ছেলের সাথে মেয়েকে বিয়ে দিবি, আমিও একবার দেখতে চাই।”
এবারও কিছুই বললেন না তরীর বাবা। দোকান-পাট, রাস্তা-ঘাট সব জায়গায়, আত্মীয়রাও উঠেপড়ে লেগেছেন উনাকে বিয়ে করাতে। তিনি চাইছেন না বিয়ে করতে। কিছু মানুষের যুক্তিও ভুল নয়, তরী আপাতত সংসার সামলাবে। কিন্তু কতদিন? তাকে বিয়ে দিয়ে পরের ঘরে বিদায় দিতে হবে।

তখন ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে দুটোকে কে দেখবে? যদি বিয়ে করেনও তাদের কথা ভেবে, তবে ওই নতুন নারী যদি তার ছেলেমেয়েদের কাছে টা*ন*তে না পারে? উনার আড়ালে-আবডালে যদি অরুকে অত্যাচারিত হতে হয়! মিঠু নাহয় সারাদিন বাইরে বাইরেই কাটালো। সে সন্ধ্যা ছাড়া বাসায় খুব কমই থাকে। অরুকে তো বাসায় থাকতে হবে। এসব ভেবেই শরীর ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে আসছে। সোফায় শরীর এলিয়ে চোখ বুজে রইলেন। কোথায় হারিয়ে গেল এই একরোখা মানুষটির তেজ, জেদ! যার দাপটে স্ত্রী, সন্তান কেঁপে উঠতো, মানুষ কথা বলতে একশবার ভাবতো!

তরীর পরীক্ষা শেষ হলো অনেকদিন হয়েছে। মায়ের মৃ*ত্যু*র চারটি মাস গড়িয়ে গেল। সংসারের ভার এখন তার কাঁধে। চাচা-চাচির সাথে অদৃশ্য রেষারেষি চলছে তাদের। তরী বাবার অবস্থা দেখেই মাহমুদের কথা বলার সাহস পায়না। সে আগের তরী নেই। ধীরে ধীরে বদলেছে সব। মায়ের মৃ*ত্যু নরম মেয়েটাকে শক্ত বানিয়ে দিয়েছে। অরু এখনো মাকে মনে করে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে। তরী টের পেয়ে সে ও কাঁদে। আশেপাশের মানুষজন বাবাকে বিয়ে করার জন্য বলছে এগুলো তরীর কানে আসলেও সে নির্লিপ্ত রইলো। বাবা যখন বিয়ে করতে চাইবেন কিংবা বলবেন তখন সে কথা বলবে। যেখানে বাবা চুপ সেখানে তার কথা বলাটা বেমানান।

মাহমুদ কয়েকদিন ধরেই তরীকে দেখছেনা। তরীর পরীক্ষা শেষ হওয়াতে ভার্সিটি আসা-যাওয়া বন্ধ। সংসারের ভারে দু-দন্ড জিরোবার ফুরসত নেই মেয়েটার। সকাল থেকেই মাহমুদের মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠেছে একবার তরীকে দেখার জন্য। তাদের বাসায় যাওয়া সম্ভব নয়। তরী এখন একা থাকবে বাসায়। অরুকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে। তরীর ব্যস্ততা আকাশ ছুঁই ছুঁই। ফোনকলেও পাওয়া যাচ্ছে না মেয়েটাকে।

হয়তো ফোন চেইক করার সময় পায়নি৷ মাহমুদ সহজে মেজাজ গরম করেনা বলেই হয়তো এতটা শান্ত আছে। নয়তো ফোন না ধরার অপরাধে তরীর উপর ভীষণ রেগে থাকতো। এখন আছে কেবল অস্থিরতা। তার ব্যাকুল মনকে শান্ত করতেই তরীর ফোন এলো। রিনরিনে কন্ঠ কানে ঝংকার তুললো। বুকের উথাল-পাতাল ঢেউ থামিয়ে দিতে এই মেয়েটিই যথেষ্ট৷ সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে অনিমন্ত্রিত ভাবে তাদের এই প্রেম।

মাহমুদ ভাবেনি সেদিনের মেয়েটার প্রতি একটু একটু ভালোলাগা প্রেমের জোয়ার বইয়ে দিবে। তুলবে প্রেমের তরঙ্গ। সৃষ্টি হবে বিশাল এক নদী। তটিনীতে ভেসে যাবে সে। এখন ভ*য় পরিস্থিতির কারণে তাদের প্রেমনদী না শুকিয়ে যায়। তরী হবে তার একমাত্র খেয়াতরী! এই মেয়েটাকে ছাড়ার কথা মাথাতেই আনতে পারেনা মাহমুদ। এবার তরীর বাবার কাছে যদি সবচেয়ে বেহায়া ছেলে হতে হয়, তাও হবে মাহমুদ। তরীর জন্য সব করা যায়। তরী হ্যালো বলেই থেমে গেল। মাহমুদ ঘন ঘন শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলো। দেহে বয়ে গেল শীতল শ্রোত। অন্যসব প্রেমিকের মতো সে তার উৎকণ্ঠা ঠিকঠাক প্রকাশ করতে জানেনা। মাহমুদ বেশ খানেক সময় নিয়ে অভিযোগ করলো,

-“কোথায় ছিলে, তরী। সকাল থেকে একবারও কি আমায় মনে পড়েনি?”
ওপাশ থেকে তরীর ক্লান্ত স্বর ভেসে এল।
-“পড়েছে। কাজ করছিলাম বলে সময় পাইনি।”

-“তুমি কেমন আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছো, তরী! আমার ভ*য় তোমাকে নিয়ে। তুমি কখনো আমায় ছেড়ে যেও না। আমি আমার চোখে আমাদের মতো দু-জোড়া মাহমুদ তরীর বিচ্ছেদ দেখেছি, তরী। তারাও একে এপরকে ধরে রাখার জন্য আমাদের মতো লুকিয়ে বিয়ে করিয়ে নিয়েছিল। মেয়ে দুটোর সাথে একই ঘটনা ঘটেছে। বাবা মা ভ*য় দেখিয়ে ডি*ভো*র্স করিয়ে নিয়েছে। তুমি কখনো এমন করো না তরী! আমি এটা মানতে পারবোনা।”
মাহমুদের কাতর গলায় অনুরোধ ঝরে পড়লো।

অস্থিরতায় ক্রমশ পায়চারি করছে সে। যার ধপ ধপ শব্দ স্পষ্ট। ওপাশ থেকে তরী শান্ত স্বরে বলল,
-“আপনি শান্ত হয়ে বসুন। ভ*য় আমারও আছে। আমিও পারবোনা আপনাকে ছেড়ে থাকতে। বাবার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। আমি ভ*য় পাচ্ছি এই মুহূর্তে বাবাকে জানাতে। আল্লাহ ভরসা, আমি জানি আল্লাহ ভালো কিছুই করবেন।”
-“যেই ভালোতে বিচ্ছেদ লেখা, সেই ভালো আমি চাইনা তরী।”
তরী নিশ্চুপ। তার দিক থেকে কোনরূপ শব্দ এলোনা। ভেসে এলো কেবল শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ। মাহমুদ ছটফটিয়ে উঠে বলল,

-“কথা বলছো না কেন, তরী?”
বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর তরীর জবাব এলো,
-“আমিও আপনাকে চাই, মাহমুদ। তবে বাবার বিরুদ্ধে গিয়ে নয়।”
অরুর কথা শোনা যাচ্ছে।
-“হয়েছে?”
মাহমুদ জিজ্ঞেস করলো,
-“অরু কী বলছে?”

-“হোম ওয়ার্ক করছে। সেটাই দেখাচ্ছে আমায়।”
তরীর জবাব শুনে মাহমুদ বলল,
-“ওর কাছে ফোন দাও তো।”
অরু ছোটো ছোটো বুলি আওড়ালো,
-“কে বলছেন?”
মাহমুদ হাসলো। বলল,
-“আমি ওই বুড়ো লোক বলছি। শীঘ্রই তোমায় নিতে আসবো আমি।”
অরু তেতে উঠলো,
-“অ*স*ভ্য বুড়োলোক। আমি কি তোমায় বিয়ে করবো? কক্ষনো না। আমাদের বাসায় একবার এসে দেখো। ঠ্যাং ভেঙে দেবো।”

মাহমুদ হো হো করে হেসে ফেললো। বহুদিন পর আগের অরুকে ফিরে পেল। মেয়েটা আগের তুলনায় বেশ চুপচাপ হয়ে গিয়েছে। আজ আবার আগের রূপে ফিরে তাকে কেমন হু*ম*কি দিলো! মাহমুদ গম্ভীর স্বরে বলল,
-“আমি আজই আসবো। তোমায় কে বাঁচাবে আমি দেখবো।”
-“জ্বালিয়ে দেবো তোমায়। সেই ছাঁই দিয়ে দাঁত মাজবো আমি।”

তরীর খিলখিল হাসির শব্দ ভেসে আসছে। দুজনের কথপোকথন সে বেশ উপভোগ করছে, তা বোঝা যাচ্ছে। মাহমুদ তৃপ্ত হলো। বহুদিন পর তরীও এমন প্রাণ খুলে হাসলো। মাহমুদ অরুকে জবাব দিল,
-“আমি খুব ভ*য় পেয়েছি, ম্যাডাম। আমার ভুল হয়ছে। প্লিজ আমায় জ্বালিয়ে মা*র*বে*ন না!”
অরু ভাব দেখিয়ে বলল,
-“মনে থাকে যেন।”
অতঃপর তরীর হাতে ফোন দিয়ে দিল। তরী হাসছে নিঃসংকোচে। মাহমুদ ও হাসছে।

স্কুল থেকে ফিরছে রামি আর মিঠু। এখন প্রকৃতিতে শীতের আমেজ বিদ্যমান। তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যাচ্ছে স্কুল। দুটো মেয়ে মুখে একগাদা মেকাপ করে কোথাও যাচ্ছে। যা অতিরিক্ত মনে হচ্ছে। রামি মিঠুকে খোঁচা দিয়ে বলল,
-“দেখ দেখ। আমাদের আপুরা চাঁদের মতো উজ্জ্বল হতে গিয়ে সূর্যের মতো উত্তাপ ঢালছে, দ্বিতীবার তাকানোর ইচ্ছে হবেনা।”

মিঠু তাকালো একবার। রামির কথায় প্রথমে চুপ রইলো, অতঃপর হেসে লুটোপুটি খেলো। সাথে রামিও যোগ দিল। হাসির শব্দ এতটা বেশি ছিল যে, অনেকেই তাকালো তাদের দিকে। মেয়ে দুটো কেমন বাঁকা চোখে তাকালো। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে, তাদের উদ্দেশ্য করেই হাসছে। একটি মেয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-“আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছো কেন?”
রামি বলল,

-“মেটাকাটাপ বিটেশি হিটয়ে গিটিয়েটে।”
রামির কথা না বুঝে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো মেয়ে দুটো। মিঠু, রামি হাসতে হাসতে একজন অপরজনের গায়ে ঢলে পড়ছে। “মেকাপ বেশি হয়ে গিয়েছে“ কথাটা নির্ঘাত বুঝেনি মেয়ে দুটো। নয়লে জুতো পড়তো তাদের দুই বন্ধুর গালে।

তরী ছাদে কাপড় শুকাতে গেল। একজন ভাড়াটিয়া আন্টি তাকে দাঁড়াতে বলল। তিনি ওর বাবার ব্যাপারে কথা তুললেন।
-“তোমার বাবার বিয়ে করা উচিত। তুমি কয়েকদিন পর পরের ঘরে চলে যাবে। তখন সবকিছু কে সামলাবে বলো? সবটা তুমি নিজেই চিন্তা করে দেখ।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ২৭

তরী কষ্ট পেলেও মুখে প্রকাশ করলোনা। শুধু শক্ত গলায় বলল,
-“আমার বাবা যদি বিয়ে করতে চান, তবে আমি কখনোই বাঁধা দেবো না।”
অতঃপর ধপধপ করে সিঁড়ি বেয়ে নেমে পড়লো।

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ২৯