অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ৮

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ৮
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

ভোররাতে ঘুম ভাঙলো এলার্মের শব্দে। খোলা চুল হাত খোঁপায় বেঁধে নিলো তরী। জানালায় চোখ রেখে দেখে নিলো প্রতিটি বিল্ডিং এ আলো জ্বলছে মিটিমিটি। দূর থেকে মনে হয় একঝাঁক জোনাকি পোকা দলবেঁধে আছে। কি অপরূপ দৃশ্য। যা কেবল রমজান মাসেই দেখা যায়। তরীদের বিল্ডিং এ একটা নিয়ম তরীর ভীষণ ভালোলাগে। ভোররাতে যে ফ্যামিলিই আগে জাগবে, তারা প্রতি তলায় গিয়ে কলিংবেল চাপ দেবে। দরজা না খোলা পর্যন্ত বেল দিতেই থাকে। দরজা খোলার পরই সবাই উঠে পড়েছে নিশ্চিত হয়ে ঘরে ফেরে।
মা তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করছেন। তরী একে একে সবগুলো খাবার টেবিলে এনে রাখলো। বাবা বললেন,

-“তটিনী, আমার মা কে ডেকে তোলো।”
মিঠু ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখ নিয়ে খাবার টেবিলে বসেছে। বাবার আদেশ পেতেই তরী চলে গেল অরুকে ডেকে তুলতে। আহ্লাদী অরু ঘুম থেকে উঠলেও পণ করলো সে ব্রাশ করবেনা। না মানে না। এসেই বাবার কোল দখল করে বসেছে। ছোট্ট হাত দুটো বাবার গলা জড়িয়ে ধরলো। ঘাড়ে মাথা রেখে চুপটি করে রইল অরু।
দুষ্টুমি না করলে মিঠু কিছুতেই শান্তি পায়না। তার এতক্ষণের ঢুলুঢুলু ঘুম পালিয়ে গেল। অরুকে খোঁচা মে*রে বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-“আমার বাবার কোল থেকে এক্ষুণি নাম। তুই এসে আমাদের দুই ভাই-বোনের আদর-ভালোবাসা সব কেঁড়ে নিয়েছিস। কাল সকালেই তোকে যেখান থেকে দয়া করে নিয়ে এসেছি, সেখানে দিয়ে আসবো।”
অরু বাবার ঘাড় থেকে মাথা তুলে গরম চোখে তাকালো। গলায় তীব্র ক্ষোভ মিশিয়ে বলল,
-“মিঠু পঁচা কুমড়া। আমরা দুই বোন। রাস্তায় শুয়ে শুয়ে কাঁদছিল এক গরিব ছেলে। আমি আর আপু বাবাকে বলে দয়া করে তাকে নিয়ে এসে নাম দিয়েছি মিঠু।”
মিঠু মিটিমিটি হেসে বলল,

-“বাবা তুমিই বলো, আমাকে কুড়িয়ে পেয়েছো না-কি অরুকে?”
অরু বড়োবড়ো চোখ করে বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো। বাবা কিছুই বলছেন না। মিটিমিটি হাসছেন শুধু। চালাক অরু নিজের পক্ষে বাবাকে টে*নে নিতে অল্পস্বল্প ঘু*ষ দিলো । তুলতুলে নরম হাত দুটো বাবার গলা ছেড়ে গালে এসে ঠেকেছে। বাবার পুরো মুখ চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে তুলে আদুরে গলায় বলল,
-“বলো বাবা, বলো মিঠু পঁচা কুমড়াকে কুড়িয়ে পেয়েছো।”

ভীষণ যত্নে দেওয়া আদর পেয়ে বাবা অরুর পক্ষে রায় দিলেন। মহাখুশি অরু। মিঠুকে ভেংচি কাটছে বারবার। মিঠুও থেমে নেই। এটা-ওটা বলে অরুকে ক্ষে*পি*য়ে যাচ্ছে।
সেহরি শেষ করে ফোন হাতে নিলো তরী। চোখের পাতায় ঘুম ধরা দিচ্ছে না। একবার উঁকি দিলো সোস্যাল মিডিয়ায়। অসংখ্য আইডির পাশে সবুজ বাতি জ্বলজ্বল করছে। কিছুক্ষণ ফেসবুক স্ক্রল করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো। তখনই টুংটাং শব্দে বার্তা এলো।

❝এখনো ঘুমান নি কেন, তরী?❞
ফোনের আলো চোখে পড়তেই তরীর মনে হলো লোকটি স্বয়ং তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সেই তীক্ষ্ণ নজরে প্রশ্ন ছুঁড়ছে তাকে। গাল দুটো ধীরে ধীরে আরক্তিম হলো। তরী জবাব দিলোনা। ফোন উপুড় করে রেখেই বড়ো বড়ো শ্বাস নিলো। চোখ বুজে রইলো মিনিট খানেক। ঝাপসা ঝাপসা মনে পড়লো সেদিনের ঘটনা। মাহমুদের উৎকন্ঠা, যত্নে আগলে রাখা। বেশ খানেক সময় পর নিজেকে ধাতস্থ করে ফোন হাতে নিলো তরী। কি-বোর্ডে হাত চলল বড্ড ধীর গতিতে।
❝ঘুম আসছে না।❞

লিখেই সেন্ড করলো। সিন হলো সাথে সাথেই। মাহমুদ কিছু লিখছে। তরীর বুকের ভেতর হাতুটি পেটার শব্দ হচ্ছে। ভয়া*নক অস্থিরতা থেকে বাঁচতে ওয়াই-ফাই কানেকশন অফ করে দিল। শুয়ে থেকেই আন্দাজ করতে পারছে তার শরীর মৃদু মৃদু কাঁপছে। বুক ধুকপুক করছে।

আধার ডিঙিয়ে আলো ফোটলো। দূর থেকে ভোরের পাখি ডাকছে মধুর সুরে। আকাশ কাঁপিয়ে হুট করেই ঝরঝরে বৃষ্টি নামলো। তরী আর ঘুমাতে পারলোনা। একছুটে বারান্দার দরজা খুলে ঠিক দরজায় দাঁড়ালো। ভারিবর্ষণের সাথে সাথে বিকট শব্দে বজ্রপাত হচ্ছে। তরী কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠলেও ভোরের বৃষ্টি হওয়া দেখলো। দু-এক ফোঁটা বৃষ্টি এসে ছুঁয়ে দিচ্ছে তার দেহখানা। মাহমুদের ঘর তিনতলায় তরীর ঘরের ঠিক বিপরীতে। কোনাকুনি বারান্দায় তাকাতে বেশ সুবিধা হলো। পকেটে হাত গুঁজে গভীর মনযোগে তরীকে অবলোকন করলো মাহমুদ। ওদিকে যে সে ভিজে একাকার সেই দিকে ধ্যান নেই। হুট করেই ডেকে উঠলো,

“তরী!”
দুই অক্ষরের ছোট্ট নামটি ঝংকার তুললো তরীর কানে। বৃষ্টির তালে তালে ছন্দিত হলো নামটি। শব্দের উৎস বরাবর তাকালো তরী। মুখোমুখি দুজনের চোখাচোখি হয়ে গেল। মাহমুদ তন্ময় হয়ে তাকিয়ে রইলো। তরীর নজর পড়লো অর্ধ ভেজা মাহমুদের শরীরে। জড়তা ভেঙে গলার স্বর বাড়ালো।
-“ভিজে যাচ্ছেন তো আপনি।”

কিছু বলছে তরী, বৃষ্টির কারণে স্পষ্ট শুনতে পারছেনা মাহমুদ। তরীর দু-ঠোঁট নাড়ার চমৎকার দৃশ্যে আটকে রইলো সে। মনে প্রাণে চাইলো তুমুল বর্ষনের এই স্নিগ্ধ সকালটা থেমে যাক। সময় না গড়াক। মাহমুদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে তরী খুব বেশি দেরি করলোনা, দ্রুত ঘরে ফিরলো। ফোন হাতে নিয়ে বার্তা পাঠালো,

❝বৃষ্টিতে ভিজছেন কেন আপনি?❞
মাহমুদের পাঠানো পুরনো বার্তাটি একবার পড়ে নিলো।
❝ঘুমিয়ে পড়ুন, তরী। শরীর খা*রা*প করবে যে!❞
ফোন রেখে চোখ বুজলো তরী। রাজ্যের ঘুম এসে তার চোখের পাতায় ভীড় জমিয়েছে।
তরী সরে যেতেই সংবিৎ ফিরে পেলো মাহমুদ। নজরে পড়লো নিজের ভেজা শরীর। আনমনেই হেসে ফেললো সে। জামাকাপড় বদলে দোয়ালেতে চুল মুছে নিলো। এখন আর ঘুম হবে না তার। ফোন হাতে নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বার্তা পেয়ে ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি ফোটে উঠলো। চোখ বুজে ঠোঁট নাড়িয়ে দু’বার উচ্চারণ করলো,

-“তরী! তরী!”
অধর কোণে লেপ্টে রইলো সুখ সুখ হাসি।
ইদের বাকি অল্প কিছুদিন। ব্যাগপত্র গুছিয়ে গতকালই বাড়ি ফিরে গেল মাহমুদরা সকলেই। ইদের ছুটি কাটবে বাড়িতে, সবার সাথে।
আয়েশা সুলতানা বারবার করে বলে গিয়েছেন তরী, অরু, মিঠুকে ইদের দিন মাহমুদ নিতে আসবে। তারা যেন তৈরি থাকে। প্রথমে তরীর বাবা নারাজ ছিলেন। তিন-চারমাসের পরিচিত ভাড়াটিয়ার বাড়িতে একা একা ছেলেমেয়েকে যেতে দেওয়া কেমন বেমানান। আয়েশা সুলতানা সবটা সামলে নিলেন। কথার মারপ্যাঁচে ফেলে ঠিকই রাজি করিয়ে নিলেন তরীর বাবাকে।

যথারীতি ইদের দিন বিকেলে এসেই হাজির মাহমুদরা তিনভাই। আসার সময় বড়ো ভাইয়াকেও নিয়ে এসেছে। তিনিও বেশ হাসিখুশি মানুষ। সহজেই সবার সাথে মিশে গেলেন। যেন পূর্ব পরিচিত সবাই। মাহমুদের পিপাসু দৃষ্টি খুঁজে যাচ্ছে তরীকে। কোথায় গিয়ে ঘাপটি মে*রে আছে মেয়েটা। অরুকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। গোলাপি রঙের একটা ফ্রক পরেছে। লম্বা চুল পিঠের উপর ছড়ানো। মাহমুদ টুক করেই কোলে তুলে নিলো তাকে। তরী নেমে যেতে চাইলো। তার ভেতরে এখনো ভ*য় রয়ে গিয়েছে। এই বুঝি মাহমুদ তাকে বুড়োলোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। অনেকটা সময় নিয়ে শান্ত করলো তাকে। হাতের মুঠোয় সালামি গুঁজে দিয়ে বলল,

-“এবার আমার সালামি দাও।”
অরু বড়োবড়ো চোখ করে তাকালো। ফোলা ফোলা গাল নিয়ে বলল,
-“আমিতো এইটুকুন ছোটো। ছোটোরা কি সালামি দিতে পারে?”
-“পারে।”
-“কিভাবে?”
-“তুমি আমার গালে আদর দিয়ে দাও। তাহলে সালামি দাওয়া হয়ে যাবে।”
অরু টুপ করেই চুমু দিলো মাহমুদের গালে। খিলখিল করে হেসে বলল,

-“দিয়েছি সালামি।”
মিঠু আগে থেকেই রামির সাথে যুদ্ধে নেমেছে। মিশন সালামি। একে অপরের কাছে সালামি চেয়ে ঝ*গ*ড়া শুরু করে দিয়েছে। রামি বলল,
-“আমি ছোটো মানুষ। জলদি জলদি সালামি বের কর।”
মিঠু রান্নাঘরে ছুটলো। অরুর ছোটোবেলার পিডার হাতে নিয়ে পানি ভর্তি করে আগের জায়গায় এলো।
-“নে ছোটো বাচ্চা পিডার খা। তুই ছোটো বাচ্চা, তুই পিডার না খেয়ে সালামি চাইবি কেন? চ*ড়ি*য়ে এই মাড়ির দাঁত ওই মাড়িতে নিয়ে যাবো।”

রামি ক্ষে*পে গেল। এতবড়ো অপমান সে বরদাস্ত করবেনা। কিছুতেই না। প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে বলে উঠলো,
-“আমাদের বাসায় যাওয়ার সময় তোর চান্দি ছিলা করে কু*ত্তা*ধু*না দেবো। তোর এত বড়ো স্পর্ধা, তুই আমাকে অ*প*মা*ন করিস?”

-“তুই আমাকে কী কু*ত্তা*ধু*না দিবি? আমি এখনই তোকে বল বানিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে ফুটবল খেলবো।”
অবশেষে তরীর দেখা মিললো। নাস্তা হাতে সামনে এসে সালাম দিলো। সকালে বান্ধবী আর মেহমানের ভীড়ে ঘোরাঘুরি হয়নি তার। মাহমুদ চোখের পলক ফেললোনা। নিঃসংশয়ে তাকিয়ে রইলো। তার দৃষ্টিতে স্পষ্ট মুগ্ধতা। তরী আড়চোখে একবার তাকিয়েই বুঝতে পারলো লোকটি বিভোর হয়ে তাকেই দেখছে। অস্বস্তি নিয়ে এদিকওদিক তাকালো তরী। মাহমুদের বড়োভাই টুকটাক কথা বলছেন। তরী জবাব দিচ্ছে জড়তা নিয়ে। তিনি ফট করেই বলে ফেললেন,

-“তুমি দেখছি একেবারেই লাজুক, তরী। বড়োভাই ভেবে কথা বলো। দেখবে আর জড়তা কাজ করছেনা। তুমিতো আমার ছোটোবোনের মতোই।”
তরী অমলিন হেসে সহজ হওয়ার চেষ্টা করলো। হুট করে অপরিচিতদের সাথে মিশতে পারেনা সে।
সবাইকে নাস্তা নিতে বলেই একপাশে দাঁড়ালো তরী। মাহমুদ নাস্তা হাতে নিতে নিতেই নিচু স্বরে বলল,
-“ইদ মোবারক।”

তরী ভুলে যাওয়ার ভঙ্গিতে জিহ্বায় কামড় দিলো। লজ্জায় জবুথবু হয়ে সেও মাহমুদকে ইদের শুভেচ্ছা জানালো। তরীর বাবার সাথে কথা বলে তরী আর মিঠুকে নিয়ে বের হলো তারা। বাবা অরুকে যেতে দিলেন না। অরু ছোটো মানুষ। তাছাড়া সবগুলো ছেলেমেয়ে চলে গেলে বাড়িটা ফাঁকা হয়ে যাবে।
মাহমুদের পেছন পেছন হেঁটে গাড়ির কাছে এসে দাঁড়ালো তরী। মিইয়ে যাওয়া গলায় বলল,

-“শুনুন।”
চোখ বুজে হাসলো মাহমুদ। পিছু ফিরে তরীর মুখোমুখি দাঁড়ালো। গভীর স্বরে বলল,
-“বলুন না, তরী।”
তরী ইতস্তত করে বলল,
-“আমি জানালার পাশেই বসবো।”
-“জানালার পাশের সিট খালিই আছে। আপনি সেখানেই বসবেন।”

তরী আঙ্গুল তাক করে দেখালো রামি আর মিঠুর দিকে। দুজনে মা*রা*মা*রি করে দুটো জানালার পাশের সিট দখল করে আছে। মাহমুদ রামিকে সরিয়ে পেছনে পাঠিয়ে দিলো। মুখ অন্ধকার করে পেছনে বসলো রামি। মিঠু তাকে বিদ্রুপ করে হাসছে। গাড়ি দশমিনিটের রাস্তা পার হওয়ার পরই রামি উঠে দাঁড়ালো। মিঠুর মাথার কাছে মুখ নিয়ে বমি করার চেষ্টা করছে। মিঠু পেছন ফিরে ঠা*স করে থা*প্প*ড় বসিয়ে দিলো রামির মাথায়। তাদের দুজনের কাজে বিরক্ত হয়ে মাহমুদ মিঠুকেও পেছনে পাঠিয়ে দিলো।

-“দুজনে পেছনে থেকে যা ইচ্ছে কর।”
রামি তৃপ্তির হাসি হাসছে। মিঠুর দিকে দু- হাত বাড়িয়ে বলল,
-“আসো শ*য়*তা*নে*র নানা। নানা, দাদা মিলে কোলাকুলি করি।”
-“তোর মতো শ*য়*তা*নে*র মুখে থু মা*রি থু।”
তরী জানালার বাইরে মুখ বাড়িয়ে আছে। তার মাথা পেছনে টে*নে নিলো মাহমুদ। তরী প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকাতেই মাহমুদ শান্ত চোখে তাকিয়ে নরম স্বরে বলল,

-”মাথা ভেতরে রেখে বসুন। যদি কিছু হয়ে যায়?”
তরী দ্বিরুক্তি করলোনা। দৃষ্টি নিচু করে মাথা ভেতরে ঢুকিয়ে বসলো। মাহমুদের দৃষ্টি এখনো অবিচল। যেন শত বছরের দেখার স্বাদ সে এই মুহূর্তে মিটিয়ে নিতে চায়। মাহমুদ কোমল গলায় ডাকলো,
-“তরী।”
-“হু।”
-“আপনার বাবা যেন আপনায় কী নামে ডাকে?”
-“তটিনী।”
-“আপনি জানেন কি? তটিনী নামের মতোই আপনি যে-কাউকে স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
আমিও যে ভেসে যাচ্ছি, তরী।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ৭

থমকে গেল তরী। চোখজোড়া বিচরণ করছে মাহমুদের আবেশিত চোখে। বড়োভাই সামনে বসেছেন ড্রাইভারের সাথে। মাহমুদ সবার অগোচরে তরীর নরম চিকন হাত নিজের হাতর মুঠোয় নিয়ে নির্লপ্ত ভঙ্গিতে বসে রইলো। জমে গেল তরী। তার চোখেমুখে আতঙ্ক। বুকের ভেতর শিরশির করা অনুভূতি হচ্ছে। বারবার সামনে তাকিয়ে দেখছে কেউ দেখছে কি-না!
মাহমুদ সামনে দৃষ্টি রেখেই মৃদু স্বরে বলল,
-“কেউ দেখছে না, তরী।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ৯