অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ গল্পের লিংক || জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ১ 
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

পরনে স্কুলের সাদা ইউনিফর্ম। দুপাশে দুটো লম্বা বিনুনি ঝুলছে। চোখেমুখে মুগ্ধতার ছড়াছড়ি। আকাশে এক খন্ড কালো মেঘ জমেছে। ঝড়ের পূর্বের নিস্তব্ধ পরিবেশ মনের ভেতরকার হাহাকার দূর করা এক ভীষণ ভালোলাগা অনুভূতির জন্ম দিচ্ছে। উত্তেজনায় লাফিয়ে উঠছে ছোট্ট হৃদয়। অরু আর মুন দুজনই খোলা রাস্তায় লাফিয়ে উঠলো।

খানিক সময়ের মাঝেই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলো। যা মিনিট দু-য়েক সময়ের ব্যবধানে ঝুম বৃষ্টিতে রূপ নিলো। ব্যাগের ভাঁজে লুকানো ছাতাখানা যত্ন করে ব্যাগের ভেতরই পড়ে রইলো। জনমানবহীন রাস্তায় কেবল ঝুমঝুম বৃষ্টি ছন্দ ঝংকার তুলছে সাথে দুই কিশোরীর প্রাণবন্ত হাসি। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে দৌড়ে, নেচে-কুঁদে বাড়ি ফিরছে দুজন।
স্মৃতি খানা মানসপটে ভেসে উঠতে অজান্তেই খিলখিল শব্দে হেসে উঠলো অরু। বাইরে এখনো বৃষ্টি হচ্ছে সেদিনকার মতো। পার্থক্য শুধু বয়সে। সেদিন ছিল অবুঝ কিশোরী আর আজ প্রাপ্তবয়স্ক যুবতী। সেই ছোটোবেলাকার অল্পতে রেগে বোম হয়ে যাওয়া অরু একদমই বদলায়নি। তবে বুঝতে শিখেছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

পড়ার টেবিলে এক কাপ চা ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকতে থাকতে শরীরটা বড্ড ক্লান্ত। জানালায় চোখ রেখে বৃষ্টি দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে। বইয়ের পাতা বন্ধ করে নাকের ডগার চশমাটা ঠেলে চা হাতে ঠিক জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় অরু। মাঝেমাঝে প্রেম করতে ইচ্ছে করে। পরক্ষণেই পড়ার চাপে প্রেম করার ভীষণ শখটাকে জলাঞ্জলি দিতে হয়। মেডিকেল স্টুডেন্টদের জীবনে প্রেম থাকতে নেই।

থাকলেও বড়োজোর দশ-পনেরো মিনিটের কথা হয়। এতে কি আর তৃপ্তি পাওয়া যায়? বেচারার সাথে কথা বলতে না পারার টেনশনে আধপাগল মাথায় তখন আর পড়া ঢোকানো যায়! এতসব চিন্তা করেই আর অরুর প্রেম করা হয়না। কখনো আফসোস হয়! কখনো অন্যদের প্রেম ঘটিত প্যারা দেখে মনটা লাফিয়ে ওঠে। বলে ওঠে ‘বড্ড ভালো করেছিস অরু।

প্রেম ভালো মানুষ করে? যাদের যেচে পড়ে পাগল হতে ইচ্ছে করে, তারাই শুধু প্রেম করে’। ভেবে ভেবে অরু আবার হাসলো। এক সময় এই পাগল সে নিজেও ছিল। স্কুল জীবনে অল্পবিস্তর প্রেমের গল্প আছে তার। তারা দুজনই অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। কখনো যদি হুট করে সেই ক্লাসমেটের সাথে দেখা হয়ে যায়, অরু আর সে দুজনই লজ্জা পেয়ে হেসে ফেলে। টুকটাক আলাপ হয়ে ফের দুজন দু-পথে হাঁটে।

বাসা থেকে আসাযাওয়া করে পড়া গেলেও অরু ইচ্ছে করেই হলে উঠলো। টুপ করে তরীর কাছে বসে গল্প করার অদম্য ইচ্ছেটা তার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটায়। তখন আর চাইলেও নিজেকে বইয়ের মাঝে আটকে রাখা যায়না। এই যেমন এখন তার ভীষণ ইচ্ছে করছে তরী আপুর সাথে গল্প করতে! ইচ্ছে করলে ফোনে কথা বলে নিতে পারে। কিন্তু অরু তেমনটা করবেনা। তখন মনের ভেতরের ভালোলাগা, ছটফট ভাব হারিয়ে যাবে। প্রিয় মানুষের প্রতি ছটফটনো ভাব মুছে যেতে নেই। এই ছটফটানিতে আনন্দ মেশানো থাকে।

অরুকে অবাক করে দিয়ে তার মুঠোফোন তীব্র শব্দে বেজে উঠলো। অধর প্রসারিত হলো তার। তরীর কল।
“কেমন আছিস টিয়াপাখি?”
অরু কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,
“ভীষণ চাপে আছি। পড়তেই ইচ্ছে করছেনা।”
তরী ঠাট্টা করে বলল,
“তাহলে বিয়ে দিয়ে ফেলি? তোর জন্য তো আমার ভাসুর একপায়ে খাঁড়া। তুই বেচারাকে পাত্তাই দিচ্ছিস না।”
অরু নাকমুখ কুঁচকে বলল,
“আমার চোখ হাই কোয়ালিটিতে আটকায়। ভাঙাচোরা জিনিস পছন্দ নয়।”
তরী বলল,

“যাহ্ বাবা, ভাইয়াকে এখনো কত ফিট দেখাচ্ছে। আর তুই বলছিস ভাঙাচোরা? বেচারা তোর এমন অপ*মান নিতে না পেরে দুদিন তরকারি ছাড়াই চোখের জলে ভাত খাবেন।”
অরুর চোখজোড়া ক্ষীণ হয়ে এলো। গলায় খানিকটা হতাশা বের হলো যেন!
“আচ্ছা তুমি কি সত্যিই আমার বোন? বুঝেশুনে পক্ষ নিচ্ছো তো?”
তরী মুহূর্তেই হেসে ফেললো। বলল,
“তোকে চোখে চোখে রাখার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছি আমি।”
“হয়েছে আর আদিখ্যেতা দেখাতে হবেনা। যত যা দোয়া পড়ে ফুঁক দাও না কেন! তোমার বুড়ো ভাসুর নামক সফটওয়্যার ইন্সটল হবে না আমার জীবনে।”

“বাসায় আসবি?”
“না, বাসায় গেলেই আর হলে ফিরতে ইচ্ছে করেনা। বাসায় পড়াও ঠিকমতো হয়না।”
তরী দীর্ঘশ্বাস ফেললো। বলল,
“আজ একটু রান্নার ঝামেলা আছে। এখন রাখছি।”
“কীসের এত ঝামেলা?”
“রামি আসবে ছুটিতে।”
“আমার পুঁচকে কেমন আছে?”
তরীর আর্তনাদ শোনা গেল। বলল,

“ঠিক তোর মতো দুষ্টু হয়েছে রে অরু। ভীষণ পাজি। আগে তুই জ্বালিয়েছিস, এখন এই পুঁচকে আমার হাড়-মাংশ জ্বালিয়ে খাচ্ছে। রামি ফিরলে তাকে আরও বেশি বাঁদরামোর প্রশিক্ষণ দেয়। কী যে বি*প*দে আছি!”
অরু খিলখিল করে হেসে উঠলো। বলল,
“দেখতে হবে না, ছেলেটা কার?”
“হয়েছে, আর বলতে হবেনা। রাখছি আমি।”
কল কাটতেই জুমান বলল,
“নাস্তা করবি না অরু?”
“না, আমার মন খারাপ! বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে।”

জুমান আর কথা বাড়ালোনা। কিছুক্ষণ পর এই মেয়েটাই হেসে লুটোপুটি খাবে। তার মন খারাপ দীর্ঘস্থায়ী হয়না। কীভাবে যেন নিজের মন ভালো করে ফেলে। জুমান একদিন অরুর কাছ থেকে শিখে নেবে কীভাবে ঝটপট মন ভালো করা যায়।

তরী, ইরা রান্নাঘরে কাজ করছে। ঈশিতা পেছনে এসে দাঁড়ালো।
“আম্মু, আমার রাবার খুঁজে পাচ্ছি না।”
ইরা কাজে হাত চালাতে চালাতেই বলল,
“খুঁজে দেখ্।”
“পাচ্ছি না তো।”

ইরা চোখ গরম করে তাকাতেই হাত-পা ঝাড়া মে*রে চলে যাচ্ছিল ঈশিতা। বসার ঘরে গিয়ে তার চোখ ছানাবড়া। পছন্দের এই কালার রাবারটা অমি দাঁত দিয়ে কামড়াচ্ছে। ঈশিতাকে দেখেই সবগুলো দাঁত বের করে হাঁসলো। ফ্যালফ্যাল করে কেঁদে ফেললো মেয়েটা। এই অমিটা ভীষণ দুষ্টুমি করে। কীভাবে তার পছন্দের রাবারটা নষ্ট করে দিল!
গোসল সেরে ছাদে জামাকাপড় মেলে দিতে গিয়েই পাশের ছাদে তাকালো তরী।

তারা সকলেই এখন ঢাকায় থাকে। বাবা পুরনো বাড়িটা বিক্রি করে দিয়ে পাশাপাশি বাড়িতে থাকছেন দু’টো পরিবার। মাহমুদরা তিনভাই এই বাড়িটি করেছে আর পাশেরটা বাবা মিঠুর জন্য করেছেন। ছেলেটাকে নিয়ে তরী বড্ড চিন্তায় থাকে। পলিটিক্সের সাথে জড়িয়ে পড়েছে সে। যেন তার সর্বস্ব জুড়ে পলিটিক্স। বিয়ে করে ঘরে বউ আনতে বললে সেটাও করছেনা। বুয়া এসে সকাল থেকে শুরু করে দুপুরের রান্না পর্যন্ত কাজ করে দিয়ে যায়। রাতের রান্না তরী করে দিয়ে আসে।

মাহমুদ কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে তরীকে দু’হাতে আলিঙ্গন করে নিতেই অমি এসে উপস্থিত। সে বাবার কোলে চড়বে। এসে প্রথমেই তাকে কোলে নিয়েছে মাহমুদ। এখন আবার কোলে নিতে হবে। তরীর দিকে করুন চোখে তাকিয়ে অমিকে কোলে তুলে বেরিয়ে গেল সে। পেছন থেকে তরীর রিনিঝিনি হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। পড়াশোনা শেষ দিয়ে যখন চাকরিতে মন দিয়েছে, সব ঝামেলা মুক্ত। তখন অমি গর্ভে।

সে পৃথিবীতে আসার পর তরী নিজ থেকেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। চাকরি, সংসার, বাচ্চা সব মিলিয়ে সে কুল পাচ্ছিল না৷ এখন এই ছেলের পেছনেই তরীর সবটুকু সময় কেটে যায়। চার বছরের এই ছেলে তার দাদু আপুকে পানের সাথে অনেকখানি জর্দা মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছে। নাতি পান দিয়েছে, আয়েশা সুলতানা খুশিমনে মুখে দিলেন। গেলার পরই টাল হয়ে পড়ে রইলেন। পৃথিবীটা কেমন গোল হয়ে ঘুরছে। দিনে এমন কতশত অঘটন যে ঘটায় ছেলেটা! মাঝেমাঝে হাঁপিয়ে ওঠে তরী। যখন অমি একটু অসুস্থতায় চুপচাপ হয়ে যায়, তখন বাসার সবার কেমন শূন্য শূন্য লাগে। তরী বেশি অস্থির হয়ে পড়ে।

সন্ধ্যার পর বাড়ির সবাই হৈ চৈ এ মেতে রইলো। রামি এসেছে আধাঘন্টা হবে। পোশাক পরিবর্তন করে গোসল নিয়ে সোজা নিচে নেমে এলো। একপাশে ঈশিতা অন্যপাশে মা। অমি সবার আগে কোল দখল করে বসেছে। কিশোর রামি আর বর্তমান রামির মাঝে বিস্তর ফাঁরাক। এই রামি সৌষ্ঠব পুরুষ। চেহারায় একটা তীক্ষ্ণ ভাব এসেছে। বেশ লম্বাচওড়া দেখতে। সে পাইলট হলেও মিঠু পলিটিক্সে পা বাড়ালো। স্কুল জীবন শেষে কলেজে পা রেখেই এসবে জড়িয়েছে। কোন চাকরিবাকরি করছেনা। সারাদিন এসবের পেছনেই সময় ব্যয় করে। রামি ছুটি পেলেই ছুটে বাসায় চলে আসে। পরিবারের সাথে সময় কাটায়। অথচ মিঠু কাছে থেকেও পরিবারকে সময় দিতে পারেনা।

ঘুম ভাঙলো পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে। অরু হাই তুলে আড়মোড়া ভেঙে বসলো। তার রুমমেট জুমান এখনো ঘুমাচ্ছে। ফ্রেশ হয়ে এক কাপ চা বানিয়ে নিলো ঝটপট। লুকিয়ে-চুরিয়ে ইলেকট্রিক কেটলিতে চা বানিয়ে ঘন্টা দু-য়েক পড়াশোনা করলো। ততক্ষণে জুমান উঠে পড়েছে। তৈরি হয়ে দুজনই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বের হলো। যাওয়ার সময় ক্যান্টিনে নাস্তা করে নেবে। ক্লাস শেষ করে বের হতেই একজন সিনিয়র পেছন থেকে ডাকলেন। তিনি এ বছরই ইন্টার্নি করে বের হয়েছেন। অরু পা থামিয়ে দিল। তিনি এসে কুশলাদি সেরে জানতে চাইলেন,

“ফ্রি আছো? কফি চলবে?”
একটু পরিচিত লোকেদের হুট করেই কোন কিছুতে না করা যায়না। অরু সময় দেখল। অতঃপর সৌজন্যতার খাতিরে মৃদু হেসে বলল,
“দশমিনিট।”
তিনি মাথা ঝাঁকিয়ে বললেন,
“যথেষ্ট সময়।”
জুমান হলে ফিরে গেল। অরু আবীর নামক ছেলেটির সাথে কফির আড্ডায় বসলো। এক পর্যায়ে তিনি অরুকে প্রেম নিবেদন করে বসলেন। গতকালও বৃষ্টির সময় বড্ড প্রেম করতে ইচ্ছে করছিল অরুর। এখন আর ভালো লাগছেনা। বলল,

“চলুন বিয়ে করে ফেলি।”
অরুর এমন জবাবে আবীর একটুখানি ভড়কালো। কেশে উঠলেন তিনি। সাধারণত প্রেমের প্রস্তাবে মেয়েরা একটু লজ্জা পায়, কিন্তু অরু সরাসরি বিয়েতে যেতে চাচ্ছে। অরু পানির গ্লাস এগিয়ে বলল,
“আপনি বরং পানি পান করে গলা ঠিক করুন। আমাকে ফিরতে হবে।”

আবীর আর কথা বলার সুযোগ পেলেন না। কফিশপ থেকে বেরিয়ে সোজা হলে ফিরলো অরু। প্রথমেই বিয়ের কথা বললে ছেলেরা একটু সময় নেয়। কেউ কেউ সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে, তখন প্রেম করার ইচ্ছেটা আর থাকেনা তাদের।
কিন্তু কে জানতো অরুর ধারণা মিথ্যে হবে! আবীর অরুর বাড়িতে পরিবার দিয়ে প্রস্তাব পাঠালো। বাবা ফোন দিয়ে বাসায় যেতে বলেছেন। তিনি ভেবে বসে আছেন আবীরের সাথে অরুর সম্পর্ক আছে। তরীর সাথে যেমন ঘটেছে, অরুর সাথে আর তেমনটা হতে দিতে চাচ্ছেন না। অরুর পছন্দের ছেলে হলে বিয়েতে অমত করবেন না।
বাসায় এসে প্রথমেই তরীর সাথে দেখা করতে এলো অরু। ছড়া শুনে থেমে গেল সে। প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হচ্ছে এই মুহূর্তে।

রামি ছড়া বলছে।
“ঐ দেখা যায় তালগাছ
ঐ আমাদের গাঁ
ঐ খানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা।”

যদিও অরুর সাথে এই ছড়ার মিল নেই। তবুও তার ধারণা রামি কা*না শব্দটা তাকে খোঁচানোর জন্যই উচ্চারণ করছে। নাকের ডগার চশমাটা একটু উপরের দিকে ঠে*লে কিছু বলতে নেবে, তখনই রামি তার চুমুক দেওয়া কফি মগ বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“কিরে অরু, কফি খেতে ইচ্ছে করছে? নে খেয়ে দেখ। আমি ছেঁকে দেখার পর কফির স্বাদ একশ লেবুর শক্তির মতো বেড়ে গিয়েছে। দেখ্ দেখ্।”
মুখ ঝামটা দিয়ে অরু বলল,
“তোমার কফি তুমি খাও। আর খবরদার! কা*না বলবেনা।”
“আমি ছড়া বলছিলাম। তোকে কখন কা*না বললাম আমার তো মনে পড়ছেনা।”
নিষ্পাপ চেহারায় কথাখানা বলেই মিটিমিটি হাসলো রামি।

অরু বড়ো বড়ো শ্বাস ফেলে রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। রামি আরেক ধাপ রাগ বাড়িয়ে দিতে বলল,
“বড়ো ভাইয়ার সাথে দেখা করতে এসেছিস? কিন্তু ভাইয়া তো বাসায় নেই।”
অরু নাকের পাটা ফুলিয়ে বলল,
-“দেখ, আমি তোমার সাথে এখন ঝগড়া করার মুডে নেই। আর তোমাদের বাসায় এসে পড়ে থাকারও আমার শখ নেই।”
রামি ভুরু নাচিয়ে বলল,

“আমি তো দেখতে পাচ্ছি আমাদের বাসার ভাত তোকে ছাড়ছেনা। তোর মতলবটা কী বলতো? উপরে উপরে তেতে যাচ্ছিস। ভেতরে ঠিকই ভাইয়াকে দেখার জন্য চলে আসছিস আমাদের বাসায়।”
অরু কথা না বাড়িয়ে ধুপধাপ পা ফেলে রামিকে এড়িয়ে গেল। এই মুহূর্তে সে ঝগড়া করে মুড খারাপ করতে চায় না। মাথা ঝাঁকিয়ে হাসলো রামি। এখনো তার সেই বাঁদরামো অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি।
রাতে খাবার টেবিলে তরীর মুখে শুনতে পেল অরুকে দেখতে আসছে কাল। খাওয়া থামিয়ে তরীর দিকে তাকালো রামি। ভীষণ আশ্চর্য হয়ে বলল,

“অরুর বুদ্ধিসুদ্ধি হয়েছে না-কি? হাতে পায়েই বড়ো হলো। এখনো তো ছোটোবেলার মতোই রাগি আর ঝগড়ুটে আছে। ওঁকে তোমরা বিয়ে দেবে!”

(প্রথম থেকেই জানিয়ে দিচ্ছি গল্প একদিন পরপর পাবেন। সময়ের স্বল্পতা আর ইদানীং একটু বেশিই অসুস্থ থাকি। ভুল-ত্রুটি শুধরে দেবেন।)

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ২