অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৬

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৬
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

বাইরে ঝকঝকে রোদের আলো। গ্লাসের ভেতর থেকেই স্পষ্ট রাস্তায় মানুষের চলাচল দেখা যাচ্ছে। মুখোমুখি বসে আছে আবির, অরু। অরুর চোখেমুখে স্পষ্ট রা*গ ফোটে উঠলেও আবির অনেকটা বিস্ময় প্রকাশ করলো,
“কী মি*থ্যা বলেছি আমি?”
অরু গলা চড়িয়ে প্রশ্ন করলো,

“আমরা বিয়ে করেছি ? আবার একসাথে সংসারও করছি। কবে থেকে?”
অরুর প্রশ্নে আবির চুপ করে গেল। যথাযথ উত্তর এই মুহূর্তে তার কাছে নেই। কিন্তু অরুর তীক্ষ্ণ দৃষ্টির নড়চড় হলোনা। প্রশ্নসূচক চাহনি অবিচল রইলো। আবির গলা ঝেড়ে বলল,
“বিয়ে হয়নি, কিন্তু হবে তো!”
অরু বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আপনাকে আমি কী বলেছি? একমাস সময় নিয়েছি, মনে আছে তো? বিয়ে না হতেই আপনি আমাকে সবার কাছে আপনার বউ বলে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কেন? এতে আমার ভবিষ্যতে যে প্রভাব পড়বে না, তার কী নিশ্চয়তা আছে? বিয়েটা যে হবে, তারও তো নিশ্চয়তা নেই।”
আবির স্থির থাকতে পারলোনা। প্রথমে বিরক্তি হলেও তা একসময় রাগে পরিণত হলো। গলা চড়িয়ে বলল,
“তোমার সমস্যাটা কোথায় অরু?”
অরু ঠান্ডা গলায় বলল,

“আপনি সময় নিন আবির। আমাকে কেন বিয়ে করতে চাইছেন সেটাও আমি জানতে পেরেছি। একবার আমার ভাইয়ের কানে কথাগুলো গেলে সে নিজেই বিয়ে হতে দেবেনা।”
ভুরু কুঁচকে গেল আবিরের। কিছুই তার বোধগম্য হলোনা। তাই প্রশ্ন করলো,
“মানে? কীসের সময় নেব আর তোমাকে বিয়ে করার কারণ বলতে কী বোঝাতে চাইছো?”

“আপনার ব্রেকআপ হয়েছে দুমাস হলো। গার্লফ্রেন্ডের অন্যত্র বিয়ে ঠিক করা। আর আপনিও তাকে দেখানোর জন্য বিয়ে কিংবা এমনই একটা সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছেন আমার সাথে। আমি জে*দে*র বশে গড়া সম্পর্কে জড়াতে চাইনা আবির। আপনি সময় নিন, আমরা কিছুদিন পর কথা বলি?”
অরু বিন্দুমাত্র উত্তেজিত হলোনা। শান্ত মেজাজে বুঝালো আবিরকে। আবির জানতে চাইলো,

“আমার গার্লফ্রেন্ড ছিল তা অস্বীকার করছি না। কিন্তু তাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য আমি কেন তোমাকে বিয়ে করতে চাইবো? মানুষ কি লাইফে মুভ অন করতে পারেনা? তোমাকে কি আমার ভালোলাগতে পারেনা? নিধিকেই কেন আমাদের মাঝে টে*নে আনতে হবে?”
“মুভ অন করা দো*ষে*র কিছু নয়। কিন্তু আমি আপনার জে*দে*র শি*কা*র হতে চাইনা।”
আবির রুক্ষ গলায় বলল,

“তোমার তুলনায় নিধি হাজার গুণ বেটার। সে অন্তত ম্যাচিউর ছিল, বারবার কথা প্যাঁচাতো না।”
অরুর মে*জা*জ খা*রা*প হয়ে গেল। তার নিজের তুলনা একমাত্র সে নিজেই। অন্য কারো সাথে তুলনা দেওয়া সে ভালোভাবে নিতে পারেনা। ব্যক্তিটি যেই হোক না কেন অরু তা বরদাস্ত করবেনা। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“আজ বলেছেন, এরপর যেন আপনার মুখে আমাকে অন্যের সাথে তুলনা করার কথা না শুনি। এটা আমার একেবারেই অপছন্দের কাতারে।”

বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো আবির। এখন মনে হচ্ছে মেয়েটাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে সে বড্ড ভুল করে ফেলেছে। মুখের উপর জবাব দেওয়া মেয়ে তার পছন্দ নয়। অরু ঠিক সেটাই করছে। দিনে দিনে নিধির মতোই রূপ বের হচ্ছে তার।
অরু ব্যাগ কাঁধে তুলে বেরিয়ে গেল লম্বা কদম ফেলে। অবহেলায় পড়ে রইলো কফি মগ। ধীরে ধীরে উষ্ণ কফি বরফ শীতল হয়ে পড়লো। আবির বিক্ষিপ্ত মনে বিল মিটিয়ে অরুর পিছু পিছু বেরিয়ে এলো।
পথেই অরুর সাথে দেখা হলো হৃদয়ের। রামি, মিঠুর সাথে ভালো বন্ধুত্ব থাকায় প্রায়শই অরুদের বাড়ি আসা যাওয়া হতো তার। অরুকে দেখে চমৎকার হেসে জিজ্ঞেস করলো,“অরু না-কি রে? কেমন আছিস?”

প্রত্যুত্তরে অরুও মিষ্টি করে হাসলো। বলল,
“আমি বেশ আছি। তুমি কেমন আছো? ভাবি সুস্থ তো?”
“হ্যাঁ আমি ভালো আছি। তোর ভাবিকে চেকআপের জন্য নিয়ে এসেছি। তাকে হসপিটালে রেখে একটু দরকারে বেরিয়েছিলাম।”
তাদের টুকটাক আলাপ দূরে দাঁড়িয়ে দেখলো আবির। অরুর হাস্যজ্জ্বল চেহারা বলে দিচ্ছে এই ছেলেটার জন্যই অরু তাকে রিজেক্ট করতে চাইছে। তীব্র ক্ষো*ভে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো আবিরের। হৃদয় বিদায় নিয়ে চলে যেতেই আবির দ্রুত হেঁটে অরুর পাশাপাশি এগিয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলো,

“ছেলেটি কে?”
অরু অবাক হলো আবিরকে দেখে। জবাব দেওয়ার পূর্বেই আবির তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল,
“তোমার বয়ফ্রেন্ড? এই ছেলে যেহেতু আছে তাহলে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে বললে কেন? তোমার স্বভাবটাও দেখছি নিধির মতোই। তোমায় অন্তত ভালো ভেবেছিলাম। তুমি আমাকে রিজেক্ট কী করবে, আমিই তোমাকে রিজেক্ট করছি। আল্লাহ হাফেজ।”

মুখের উপর রিজেক্ট ছুঁ*ড়ে চলে গেল আবির। অরু হতবিহ্বল চাহনিতে তাকিয়ে দেখলো আবিরের চলে যাওয়া। তবে নিজের পক্ষে সাফাই দিতে ইচ্ছে হলোনা। এমন ট*ক্সি*ক মানুষ নিজ থেকেই সরে গিয়েছে এটাই বা কম কীসের? নিধিও তাদেরই মেডিকেলের স্টুডেন্ট। আবিরের প্রাক্তন। আবিরের সাথে বিয়ে হওয়ার গুজব শুনে অরুর সাথে নিজ থেকেই দেখা করলো মেয়েটি। আবিরের অন্যকোন খা*রা*প দিক নেই।

একমাত্র অতিরিক্ত স*ন্দে*হ করে ট*ক্সি*সি*টি ছড়ানোই তার সাথে ব্রেকআপ করার মূল কারণ হিসেবে জানিয়েছে নিধি। ব্যাপারটা কিছুদিন মাথায় ঘুরাঘুরি করছিল। আবিরের সাথে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেললো অরু। যার প্রভাবে গত কয়েকদিন এক প্রকার ইগনোর করেছে আবিরকে। একেবারে অনিচ্ছাকৃত। মনের উপর কারো জোর চলেনা। তবুও সে নিধির কথার উপর বিশ্বাস করে আবিরকে বিচার করতে চাইলোনা।

সময় নিয়ে আবিরকে ভালোভাবে জানতে চাইলো। আজ আবির নিজ থেকেই নিধির কথার সত্যতা প্রমাণ করে দিয়ে গেল। অরুর মনে হলো বুক থেকে ভারী পাথরটা নেমে গেল।
আবিরের বাড়ি থেকে প্রস্তাব ফিরিয়ে নেওয়া হলো। তাতেই অরুর বাবা রে*গে আগুন হয়ে গেলেন। উনার মেয়ে কি স*স্তা না-কি? অরু বাবাকে সবটা খুলে বললো আবিরের ব্যাপারে। নিজ থেকেই মিঠু আর বাবা শান্ত হয়ে গেলেন।

বিষন্ন দুপুর। বাড়িতে শোকের ছায়া। সকলের চোখে জল মুখে আহাজারি। বুক চাপড়ে কাঁদছেন আয়েশা সুলতানা। তরী জ্ঞান হারিয়েছে। মাহমুদকে না চাইতেও শক্ত থাকতে হচ্ছে। অথচ ভেতরটা ঘুণপোকার আক্রমণে গুড়িয়ে গিয়েছে। ইরা, সাদাদ, ঈশিতা কেউ বাদ নেই। দু-ঘন্টা যাবত অমিকে পাওয়া যাচ্ছেনা। মিঠু মিটিং ছেড়ে ছুটে এসেছে। অরুও বাদ রইল না। অমির নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপার ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। হারানো বিজ্ঞপ্তিতে মাইকিং করা হচ্ছে। অথচ কোথাও দেখা মিলছেনা বাচ্চাটির।

ছাদ, বাথরুম, ঘরের আনাচকানাচে সব জায়গায় খোঁজা শেষ। অরু টর্চ হাতে খাটের নিচটা দেখতেও বাদ রাখলোনা। এক মুহূর্তের জন্য অরুর বুকটা ধ্বক করে উঠলো। অমি খাটের তলায় উপুড় হয়ে আরামসে ঘুমাচ্ছে। গালের নিচে হাত ভাঁজ করে রেখেছে। এদিকে তাকে খুঁজতে সবাই বাড়ি ছুটে এসেছে, মাইকিং করা হচ্ছে। অরু অমিকে বের করলো না। সবাইকে ডেকে এনে দেখালো। মাহমুদ ছেলেকে বের করে বুকে শক্ত করে চেপে ধরলো। নড়াচড়া আর সকলের গমগম শব্দে ঘুম হালকা হয়ে এলো অমির। টুকটুক করে চেয়ে দেখলো সবাইকে। মাহমুদের বুক কাঁপছে। নরম স্বরে শুধালো,

“বাবা, তুমি এখানে কী করছিলে?”
ঘুমন্ত শিশুর সদ্য জেগে ওঠা ভাঙা গলা। অমি বলল,
“আমার রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি খাটের নিচে চলে গিয়েছে। তাকে খুঁজতে খাটের নিচে ঢুকেছি। ঘুম পেয়ে গেল তাই ঘুমিয়ে পড়েছি।”
তার সরল জবাবে হতভম্ব হয়ে রইলো সকলে। অরু স্তব্ধ হয়ে বলল,

“ব্যাটা আমাদের হয়রানিতে রেখে পড়ে পড়ে কুম্ভকর্ণের মতো ঘুম দিচ্ছে। ভাবা যায় এগুলো?”
তরীকে এতক্ষণ কেউ জাগানোর চেষ্টা করেনি কেঁদেকেটে আরও অস্থির হয়ে পড়বে বলে। এবার তরীর চোখেমুখে পানির ছিটা দিলো অরু। দাদুআপুর কোলে বসে আছে অমি। তরীর হুঁশ ফিরতেই অমির খোঁজ করলো। পাশ ফিরেই ছেলেকে দেখতে পেয়ে লাফিয়ে উঠলো। তার অনেকবছরের সাধনা’র ফল এই ছেলে। বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললো। আয়েশা সুলতানা বললেন,

“কোথায় পেয়েছি জানো? তোমার ছেলে খাটের তলায় ঘুমাচ্ছিল।”
কান্নার মাঝেই তরী ফিক করে হেসে ফেললো।

পরবর্তী ছুটি মিলতেই রামি ছুটে এলো। পরনে এখনো সেই সাদা শার্ট কালো প্যান্ট, গলায় ঝুলছে কালো টাই। বুকের কাছে ❝জুলকার নাঈন❞ নামটি চকচকে দেখাচ্ছে। মাথায় কালো হ্যাট পরা। বুকের কাছে দু-হাত ভাঁজ করে চমৎকারভাবে হাসলো। তাকে দেখে অরু এগিয়ে এলো। প্রফুল্লচিত্তে হাসলো। গলায় বিস্ময় ঝরে পড়লো তার।
“কখন এলে?”
রামি একই ভঙ্গিতে হাসলো। বলল,

“এখনই বাসায় যাচ্ছিলাম । গাড়ি থেকে তোকে দেখেই নেমে এলাম। চল তোকে হলে পৌঁছে দিচ্ছি।”
এই ইউনিফর্ম অরুকে অজানাভাবেই আকর্ষণ করে। না চাইতেও তার একটা দুর্বলতা কাজ করে।
রামিকে অনেকবার এমন পোশাকে দেখেছে অরু। সে যতবার হাসে, অরু ততবারই মুগ্ধ হয়ে দেখে। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। রামি লুকিং মিররে অরুর দৃষ্টি দেখে ঠোঁট এলিয়ে হাসলো।

এবার ছুটিতে তার বাড়ি আসার কোন ইচ্ছেই ছিলোনা। যখনই শুনেছে আবিরের পরিবার বিয়েতে না করে দিয়েছে, তখনই মত বদলে নিল। ভেবেছিল অরুর চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারবে। কিছুদিন দূরে থাকলেই সামান্য ভালোলাগার অনুভূতি কেটে যাবে। ভুল ছিল সে। প্রতিটি মুহূর্তে সে অরুকে অনুভব করেছে। এবার বড়োসড়ো একটা রিস্ক নিতেই হবে।
রামি হুট করেই ডাকলো,

“অরু।”
অরুর ধ্যান ভঙ্গ হলো। চমক কাটতেই “হু?” শব্দ করে উঠলো।
রামি জিজ্ঞেস করলো,
“তোর কেমন ছেলে পছন্দ?”
অরু ভাবলো খানিক সময়। অতঃপর ধীরস্থির ভাবে বলল,
“আমি জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে কোন চাহিদা রাখিনি। একটা মানুষের চরিত্র হলো আসল। যার চরিত্র সুন্দর, আমার সাথে বোঝাপড়া ভালো হবে, তাকেই আমার পছন্দ।”

“আর ভালোবাসার সংজ্ঞা কী?”
“আমার কাছে ভালোবাসা মানে স্বস্তির জায়গা। যেখানে আমি আমার খা*রা*প থেকে ভালো সবটা জানিয়ে কারো আপন হয়ে থাকতে পারবো।
কিন্তু তুমি আমায় কেন এসব জিজ্ঞেস করছো?”
অরুর সন্দিহান কন্ঠ শুনে রামি ঠোঁট ভিজিয়ে মিটিমিটি হাসলো। বলল,
“বিয়ে করবো, তাই।”

“মানে?”
অরুর চেহারায় স্পষ্ট কৌতুহল।
“আমার বয়স হচ্ছে, আর কতদিন একা থাকবো? বিয়ে করতে হবে তো। সেজন্যই তোর কাছ থেকে সবটা জেনে নিলাম।”
অরু অবাক হয়ে বলল,
“তোমার বিয়ের সঙ্গে আমার মতামতের কী সম্পর্ক?”
অরুর নাক টিপে দিলো রামি। বলল,

“তোর এতকিছু বোঝার দরকার নেই। পড়াশোনা বুঝলেই হবে।”
নাক ধরতেই ছ্যাৎ করে উঠলো অরু। নাকমুখ কুঁচকে রামির পিঠে কি*ল বসিয়ে বলল,
“তোমাদের সবার এই অভ্যাস কেন? নাক, গাল ধরবে না বলে দিলাম।”
রামি নিঃশব্দে শরীর দুলিয়ে হাসলো।

টা*না তিনদিন পর সুহা অফিসে এলো। শরীরে এখনো জ্বর দাপাদাপি করছে। এতদিন অফিস কামাই দিলে চাকরি থাকবেনা। তাই বাধ্য হয়েই অফিসে এলো। চোখ দুটো জ্বরের তাপে জ্বালা করছে ভীষণ। সামনের জনাকীর্ণ রাস্তা ঝাপসা দেখাচ্ছে। পা দুটো চলছেনা। এগোতে গিয়েও এগোতে পারলোনা। ধপ করে পড়ে গেল রাস্তায়। উঠে পড়ার মতো শক্তিটুকু শরীরে অবশিষ্ট নেই। মিঠুর যাতায়াত এই রাস্তা দিয়েই বেশি হয়। সিগন্যালে দাঁড়িয়ে পড়া গাড়ি থেকে নেমে পড়লো সে। দ্রুত পা চালিয়ে সুহার সান্নিধ্যে এলো। নিচু হয়ে বসেই হাত বাড়িয়ে বলল,

“আমার হাত ধরুন, সুহা।”
সুহা উঠতে গিয়েও পারলোনা। গলগল করে বমি করে নিজের শাড়ি ভিজিয়ে ফেললো। অসাড় হয়ে এলো শরীর। বন্ধ হয়ে আসা চোখের পাতা টে*নে খোলার চেষ্টা করছে। মিঠু রিয়াজকে পাঠালো পানি কিনতে। প্রথমেই সুহার দিকে পানি এগিয়ে দিল পান করার জন্য। চোখেমুখে পানি দিয়ে সুহা নিজেই কোনভাবে শাড়ির নোংরা অংশ ধুয়ে নিলো। মিঠু নম্র গলায় বলল,
“আমার হাত ধরে ওঠার চেষ্টা করুন। আপনাকে বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি।”

সুহা দ্বিরুক্তি করলোনা। এই মুহূর্তে একা বাসায় পৌঁছানোর মতো সক্ষমতা তার নেই। মিঠুর হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। সুহাকে নিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল মিঠু। রিয়াজ ড্রাইভারের সাথে বসলো। সুহাকে নিয়ে পেছনেই মিঠু উঠে পড়লো। গাড়ির গ্লাস নামিয়ে দিতেই সুহার চোখেমুখে এসে বাতাসের ঝাপটা লাগলো।

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৫

ক্লান্ত শরীরটা খানিক বিশ্রাম খুঁজলো। হেলান দিয়ে চোখ বুঁজে নিলো সে। সামনে রাস্তায় গতিরোধক লাইন আসতেই ঘুমন্ত সুহার মাথা হেলে পড়লো মিঠুর কাঁধে। একপলক তাকিয়ে মিঠু শান্তভাবে সুহার মাথাটা আবার সিটে সোজা করে দিল।

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৭